সীমাহীন পর্ব-১+২+৩

0
15

#সীমাহীন
পর্ব ১
#Aradhya Ariya

কোথা থেকে আরিয়ান এসে আরাধ্যার চুলের মুঠি ধরে এক চড় দিল।আরাধ্যা তো হতভম্ব হয়ে গালে হাতে দিয়ে তাকিয়ে আছে আরিয়ানের দিকে।
আরিয়ানঃ খুব শখ না রাস্তার ছেলেদেরকে চুলগুলো দেখানোর? আরাধ্যার দিকে রাগে কটমট করে তাকিয়ে বলল কথাটা।
আরাধ্যাঃ আসলে স্যার আজকে বৃষ্টি হওয়াতে আমার ওড়না টা ভিজে গেছে, তাই আর মাথায় দেই নি।
আরিয়ানঃ আমাকে বুঝাও?এতো বোকা লাগে আমাকে?কাল থাকে বোরখা পরে কলেজে যাবে। না হলে বাইরে এক পাও রাখা নিষেধ।
আরাধ্যা কিছু বলতে যাবে,এর আগেই আরিয়ান
বলে উঠে এটাই শেষ কথা। এই নিয়ে আর কোনো কথা বলার ইচ্ছে নেই আমার।

কি পেয়েছে লোকটা আমার সাথে যা খুশি করবে? আজ যদি আম্মু আব্বু বেচে থাকতো তাহলে এদিন দেখতে হতো না।আমাকে নিয়ে গেলে না কেন তোমাদের সাথে?নিজের রুমে বসে এসব বলছিল আরাধ্যা।আর চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে তার।

তখনি রিধিতার আগমন।
রিধিঃ কিরে? আজও ভাইয়া তোকে বকা দিছে?
আরাধ্যাঃ শুধু বকা তে আজ সীমাবদ্ধ ছিলো না,চড়ও দিছে। আমি তোদের বাসায় আছি বলে এমন করে না রে?
রিধিঃ না আরু তুই ভুল ভাবছিস।ভাইয়া যা করে বা বলে সব তোর ভালোর জন্যই। তুই ঠিক একদিন বুজবি।

ঠিক তখনই কিছু ভেংগে যাওয়ার শব্দ শুনে ওরা। আর নিচে গিয়ে যা দেখে তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না আরাধ্যা।
চলবে…………….

#সীমাহীন
#Aradhya_Ariya
#পর্ব ২
ওরা দুজন নিচে গিয়ে দেখলো,
আরাধ্যার ফোনটা আরিয়ানের পায়ের কাছে পড়ে আছে। টুকরো টুকরো হয়ে।
আরিয়ানের আম্মু আব্বু বোন রেশমী আর রিধিতা ও আরাধ্যা সবাই এখন নিচে আছে।
এসির ভেতরে ও আরিয়ান ঘামছে, চোখ দুটো রাগে লাল হয়ে আছে।
.
.
.
.
আরিয়ানঃ নীল কে? কেন কল দেয় তোমাকে?কি দরকার তোমার কাছে?কি চায় ও?
এক নিশ্বাসে সব কথা বলল আরাধ্যার দিকে তাকিয়ে।সবার আগে গল্প পড়তে আমাদের নীল ক্যাফের ভালোবাসা পেজের সাথেই থাকুন.
আরাধ্যা ভয়ে কাঁপছে, নিচে দিকে তাকিয়ে আছে।আর চোখের পানি পড়ছে অনবত।
আরিয়ানঃ চুপ করে আছো কেন?উত্তর দাও আমাকে।
(ধমক দিয়ে)
আরাধ্যাঃ আসলে স্যার
নীল আমার সাথেই পড়ে। একটা সাবজেক্টে ওর প্রবলেম, তাই ও আমাকে ফোন দিছে। ওকে একটু হেল্প করার জন্য।
আরিয়ানঃ ক্লাসে আর কেউই কি নেই তুমি ছাড়া?তোমাকেই ফোন দিতে হবে কেন?

ওকে আর কিছু বলল না আমি। ফোন ব্যবহার করা নিষেধ তোমার।
এ বাড়িতে কেউ যদি ওকে ফোন ব্যবহার করতে দেয়,
তবে তার শেষ দিন হবে এ বাড়িতে।
কথা টা বলেই রাগে গজগজ করতে করতে উপরে চলে যায় আরিয়ান।
.
.
.
.
কেউ কিছু বলল না সবাই বেশ ভয় পায় আরিয়ানকে।
এ বাড়িতে ওর কথাই শেষ কথা। সবাই চলে গেল নিজ নিজ কাজে।
.
.
.
আরাধ্যা নিজের রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিল।
কেন এমন করছ আমার সাথে আল্লাহ?
কি দোষ আমার?
এসব ভাবছে আর কাঁদছে আরাধ্যা।
.
.
.
কিছুক্ষণ পরে সে ভাবলো,
আমি এ বাড়িতে না থাকলেই হয়তো এসব সহ্য করতে হবে না।আমিই সবার বোঝা।
.
.
.
বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছয় বছর আগের অতীতে ডুব দিল আরাধ্যা।
চলবে……..
.
.
সীমাহীন
#Meherika_Ayat (আরাধ্যা)
Part 3

আরিয়ানদের পরিবারের সাথে আরাধ্যাদের পরিবারের অনেক ভালো সম্পর্ক আগে থেকেই ছিল।
.
.
.
সেদিন খুব বৃষ্টি হচ্ছিল।সকাল থেকে তো সব ঠিক ছিল। দুই পরিবার ঘুরতে বেরিয়ে ছিল এক সাথে।বিকেলে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়।
.
.
.
আফজালঃ আমাদের এখানে থাকা ঠিক হবে না মনে হয়? তোমরা কী বল?
(আরিয়ানের বাবা)
আবরারঃ তুই ঠিক বলছিস। বাড়িতে যাই সবাইকে নিয়ে এটাই ভালো হবে।এই ঝড় বৃষ্টিতে বাচ্চাদের অসুখও হতে পারে।(আরাধ্যার বাবা)
.
.
.
দুই গাড়ি নিয়ে এসেছিল সবাই।বাচ্চার বায়না ধরলো ওরা এক সাথে যাবে।
এক গাড়িতে আফজাল সাহেব ও ওনার স্ত্রী আর আবরার সাহেব ও ওনার স্ত্রী
আরেক গাড়িতে আরাধ্যা আরিয়ান, রিধিতা,রেশমী।
ভালোই যাচ্ছিল সবাই।হঠাৎ এক ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগে আফজাল সাহেবর গাড়ির।সামনের সিটে আবরার ও আফজাল ছিলেন। আফজালকে বাচাতে আবরার তার সামনে চলে আসে। আর গাড়ি কাচ আবরারের বুকে…….
দুদিন হাসপাতালে থাকেন সালেহা বেগম(আরাধ্যার মা)
স্বামীর শোকে তিনি ও চলে গেলেন দুদিন পর।
.
.
.
ছয় বছর কেটে গেল, আরাধ্যা এই পরিবারে থাকে।সবাই বেশ ভালোবাসে ওকে।
ফাতেমা বেগমকে মামণি বলে ডাকে (আরিয়ানের মা)
আরাধ্যা।
সবার বেশ আদর যত্ন পেলেও আরিয়ান উল্টো
এই ভালো, এই খারাপ।
আর আজ তো সীমার বাইরে চলে গেছে। এভাবে আর কত দিন বোঝা হয়ে থাকবে এ বাড়িতে। তাই ভাবছিল আরাধ্যা।
কেঁদে কেঁদে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে মেয়েটা। ফর্সা গাল লাল হয়ে গেছে একেবারে।
.
.
.
ভয়ংকর সুন্দরী আরাধ্যা।ঘন কালো চুলগুলো হাটুর নিচে পড়ে।ঠোঁট দুটো হালকা গোলাপি, আর চোখগুলো টানা টানা, সব মিলে কোনো পরির চেয়ে কম না সে। একটু কাঁদলেই লাল হয়ে যায় মুখটা। আজকে তো সারাদিন কেদেই চলেছে।
.
.
.
এদিকে আরিয়ান ভাবছে ,
আজকে বড্ড বেশি করে ফেলেছে সে।এমন টা না করলেও পারতো।বুঝিয়ে বলতো আরাধ্যা কে। রাগ টা একদম কন্ট্রোল করতে পারে না।কি যে করা যায়,
কি ভাবে কথা বলবে আরাধ্যার সাথে।
.
.
.
ফাতেমা বেগম রিধিকে বললেন। আরাধ্যার কাছে যেতে।
.
.
.
দরজায় কারো নক পেয়ে,
রুমে গেল আরাধ্যা।খুলে দেখলো।
চলবে……