#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্ট_১৫
,
,
,
,
,
নির ঘুম থেকে উঠে দেখে আদ্রি তার হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমুছে।সূর্যের আলো আদ্রির সারা মুখে বিচরণ করছে আলাদা এক সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে আদ্রির সারা মুখ জুরে। ঘুম ভেংগেই আদ্রির নিশ্বপাপ মুখ খানি দেখে নির এর মন টাও ফুরফুরা হয়ে গেলো
নিরঃভালোবাসি আদর পাখি।কবে সে দিন আসবে যেদিন প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তোমাকে দেখবো ঘুমাতে যাওয়ার সময় তোমার মাথা টা নিজের বুকে নিবো।
অনেক শীগ্রই তোমাকে আমার নীড়ের রানী করে নিবো শুধু কিছু দিনের অপেক্ষা। আগে আমি আমার বাবা মার হত্যার প্রতিশোধ টা নিয়েনি জানিনা আদর পাখি আমি আদৌ সে মিশান থেকে ফিরে আসবো কি না দেখতে পাবো কি না কিন্তু আমি নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। জানো আদর পাখি যখন ভাবি তোমার মুখটা আর দেখতে পাবোনা মারা গেলে তখন মনে বেচে থাকার ইচ্ছা টা আরও বেড়ে যায়।আমি খুব লোভী যানো তো আদরপাখি। তোমার সাথে বাচার খুব লোভ।তুমি যে আমার মনে মস্তিষ্কে গভির ভাবে চেপে বসেছ।
নির আরও কিছু বলতে যাবে তার আগেয় আদ্রি পিটপিট করে চোখ খুলে।নির দ্রুত নিজের চোখের পানি মুছে নেয়।আদ্রি চোখ খুলে নির কে দেখে অবাক হয়ে আর সাথে ভয় ও পেয়ে যায় কালকে রাতের কোন কিছুই তার মনে নেয়।চটজলদি উঠতে যেয়ে স্যালাইন লাগানো হাতে টান পরায় রক্ত বের হয়ে যায় সেটা দেখে নির রেগে আদ্রির দিকে তাকাতেই আদ্রি ভয়ে চুপসে যায়।
নিরঃমিস আদর আপনার সমস্যা কি আমাকে বলবেন কখনো রাস্তার মাঝে ফাজলামো করা শুরু করেন কখনো আবার হাত থেকে রক্ত বের করেন ছোট বাচ্চা আপনি। (রেগে ধমক দিয়ে)
আদ্রি ধমক সহ্য করতে না পেরে নিশব্দে কেদে দেয় সেটা দেখে নির নিজের কপাল নিজে চাপড়ায়
নিরঃভালো একটা অস্ত্র পেয়েছো যেমনি একটি ধমক দিবো কেদে কেটে নাহয় অভিমান করে বসে থাকবা পরে দোষ যার ই হোক গিলটি ফিল করতে হবে আমাকে। জানো চোখের পানি সহ্য করতে পারিনা তোমার(চোখের পানি সুন্দর করে মুছে দিয়ে)
আদ্রিঃধমক দিলে কান্না করবোনা বুঝি।আপনি অনেক খারাপ খালি আমাকে ধমক দেন কিন্তু কেনো (ঠোঁট উল্টে)
নিরঃনেশা এখনো কাটেনি তাই না (রক্ত মুছে দিয়ে বেড টা হালকে উচু করে দেয়)
আদ্রিঃনেশা মানে(অবাক হয়ে)
নিরঃকেন ভুলে গেছো নাকি কালকে কি কি করেছো ওয়াইন খেয়ে(দুষ্টু স্বরে)
আদ্রি নির এর বলার ধরন দেখে ভয় পেয়ে যায় আদ্রি নির কে জিজ্ঞেস করতে যাবে যে সে কি করেছে তার আগেয় সেখানে একজন নার্স খাবারের ট্রলি নিয়ে প্রবেশ করে। নির আদ্রিকে কোলে করে ওয়াসরুমে নিয়ে যেয়ে ফ্রেশ করায় এনে বিছানায় বসায়।
______
ছাদে মুখ ভার করে দাঁড়িয়ে আছে মেহের। চোখের পাপড়ি এখনো ভিজা। ফর্সা গালে দাগ বসে আছে অশ্রুর দেখে যে কেউ বলতে পারবে অনেকক্ষন যাবত কান্না করার ফলে দাগ টা বসে গেছে নাক এর ডোগা লাল হয়ে আছে।চুল গুলো এলোমেলো হয়ে আছে।
ছাদের দরজার কাছে দাঁড়িয়ে আছে রিয়াজ মুখটা অপরাধীদের ন্যায় মাথা নিচু করে আছে।
আজ থেকে প্রায় ৪ বছর আগে রিয়াজ এর সাথে মেহের এর দেখা প্রথম দেখাতেই দুইজনার মাঝে আলাদা এক সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে যায় বিভিন্না বাহানায় দুইজন প্রায় দেখা করতো এক সময় দুইজন একে অন্যকে ভালোবেসে ফেলে তখনো কেউ কারো ব্যাপারে ভালো করে জানতোনা। মেহের জানতো রিয়াজ নির এর বেস্টফ্রেন্ড আর রিয়াজ জানতো বাবা-মা হারানো এক মেয়ে যে নির এর ফ্যামিলি ফ্রেন্ড হয় তার বোনের মতো।
দুইজন একে অন্যকে এতোটাই ভালোবেসে ফেলেছিলো যে একে অন্যকে ছাড়া নিজেদের কল্পনা করতে পারতোনা। ভালোয় যাছিলো তাদের দিন।কিন্তু হঠাৎ এক রাত সব কিছু উল্টোপাল্টা করে দেয় দুইজনার জীবনে
সেদিন সব সীমানা অতিক্রম করে দুইটি দেহ এক হয়েছিলো।মেহের কিছুতেই সে কথা মানতে পারেনি একটা মেয়ের কাছে তার সতীত্ব সবার উপরে। মেহের এর কান্না থামাতেই সেদিন দুইজনে বিয়ে করে নেয়।
বিয়ে করে দুইজন সংসার শুরু করে কিন্তু ভিন্ন জায়গায় থেকে। রিয়াজ বিজনেস এর কাজে চলে যায় সাউথ কোরিয়া আর আর মেহের থেকে যায় বাংলাদেশ কিন্তু এতোটা দুরুত্ব থাকার সর্তেও ভালোবাসার কোন কমতি ছিলোনা তাদের মাঝে।
দেশে ফিরে রিয়াজ তার মা বাবা কে জানায় মেহের এর কথা। কিন্তু রিয়াজ এর ফ্যামিলি কিছু তেই রাজি হয়না বাবা মা মরা মেয়েকে নিজের বাড়ির ছেলের বউ করতে।
রিয়াজ অনেক বুঝায় কিন্তু তাদের একই কথা বাবা মা মরা মেয়ে কোথায় বড় হয়েছে কিভাবে বড় হয়েছে কেমন শিক্ষা পেয়েছে কোন ঠিক নাই এমন মেয়েকে কিছুতেই মেনে নিবেনা তারা।
রিয়াজ বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কথা বললে রিয়াজ এর মা তাকে নিজের কসম দিয়ে থামায় দেন। জন্মদাত্রী মা এর কথা অমান্য করার সাহস ছিলোনা রিয়াজ এর
সেদিন থেকে মেহের এর কথা বাসায় বলেনি রিয়াজ। কিন্তু মেহের এর সাথে দেখা করতো সে ঠিকই সেটা কোন ভাবে জেনে যায় রিয়াজ এর বাবা।আর রিয়াজ কে বিজন্যাস এর অযুহাত দিয়ে পাঠায় দেয় দেশ থেকে দূরে।কাজের প্রেশার টাও এতোটা দিয়ে দেয় যে নিশ্বাস ফেলার মতো সময় পর্যন্ত পায়না সে এদিকে রিয়াজ এর সাথে কথা বলতে না পেরে না দেখে মেহের থাকতে পারছিলোনা। প্রথমে বাবা মা ছেড়ে চলে যায় তারপরে রিয়াজ প্রচন্ড ভেংগে পরে এক প্রকার ডিপ্রেশন এ চলে যায় সে সময় টা নির অনেকটা হেল্প করেছিলো তার।
১ টা বছর পরে ফিরে এসেছে রিয়াজ কিন্তু একা না মায়ের ফর্মাশ সাথে নিয়ে তার মা তার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে তার বোনের মেয়ের সাথে।
মেহের কি করে জানলো সেটা আসুন জেনে নেয়
এতো মাস পরে ভালোবাসার মানুষ কে দেখে প্রচন্ড খুশি হলেও অভিমান ও ছিলো প্রচুর কিন্তু ভালোবাসার মানুষ টার সামনে বেশিক্ষন কি অভিমান করা সম্ভব। মেহের ও পারেনি রিয়াজ ও প্রিয়তমার অভিমান ভাংগাতে ভালোবাসায় ভরিয়ে দেয় এতো মাস পরে স্বামির স্পর্শ পেয়ে মেহের ও উম্মাদ হয়ে যায়।ভালোবাসা ময় একটা রাত পারি দিয়ে সারারাত আর ঘুম ধরেনি মেহের এর।এতো মাস না দেখার কোটা টা একটা দিনে পূরন করতে সারারাত জেগে মানুষ টাকে দেখেই গেছে।
হঠাৎ ফোনের স্ক্রিন জ্বলে উঠায় নিজের ফোন মনে করে না দেখেয় রিসিভ করে নেয় আর যা শুনে তাতে ওর চোখের সামনে অন্ধকার ছেয়ে যায় চোখ কোড়া ছল ছল করে উঠে পানিতে।
রিয়াজ এর আম্মুঃরিয়াজ তুই অনেক জেদ দেখিয়েছিস আমি জানি তোর কাজ শেষ আর আমি চায় তুই দেশে ফিরে আয়। সামিহা আর কতোবছর তোর আশায় বসে থাকবে তাড়াতাড়ি চলে আয় তুই আসলেই এনগেজমেন্ট করে ফেলবো।
ব্যাস এই টুকু শুনেই মেহের এর আর বুঝতে বাকি নায়।কোন রকম টলমল পা য়ের ধাপ ফেলে ছাদের দিকে রওনা হলো।
ছাদে যেয়েই হাউমাউ করে কান্না করে দিলো সে জানে রিয়াজ তার ফ্যামিলিকে কতোটা ভালোবাসে তার মায়ের কথায় যে সে মেহের কে ছেড়ে দিবেনা সেটার কোন গ্যারেন্টি নেয় তার।
ভালোবাসার মানুষ টাকে চিরতরে হারানোর ভয় কুরে কুরে খাচ্ছে মেহেরকে।
রিয়াজ এ ঘুম ভাংগতেই সে পাশে মেহের কে না দেখে চিন্তিত হয়ে যায় মেহের কে ফোন করার উদ্দেশ্য ফোন হাতে নিতেই মায়ের নাম্বার থেকে ফোন দেখে ভ্রু কুচকে যায় রিয়াজ এর ফোন রেকডিং শুনে কিছু মহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে ছুট লাগায় ছাদের দিকে।
বর্তমানে,,
রিয়াজ মেহের এর পিছনে দাঁড়িয়ে ওকে পিছন থেকে জরায় ধরে।কিন্তু মেহের কোন প্রতিউত্তর করেনা।
——-
নির আদ্রিকে নিয়ে তার বাসার রাস্তার দিকে এগুচ্ছিলো তখনি নির এর ফোনে তার নানুর ফোন আসে ব্লুটুথ এ কানেক্ট করে ফোন রিসিভ করে যা শুনে সেটা শুনে হোয়াট বলে চিল্লিয়ে উঠে আর নানুকে বলে আমি তাড়াতাড়ি আসছি বলে ফোন কেটে দেয়।
দুইজনে রেজওয়ান বাসায় এসে অবাক হয়ে যায়,,,,
চলবে!!!!
#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১৬
,
,
,
,
,
নির আদ্রি বাসায় এসে দেখে আদ্রিয়ান বর সেজে সোফায় বসে আছে। নওমিও তার পাশে লাল শাড়ি পরে বউ সেজে বসে আছে। নির এর পা থমকে গেলো তার পিচ্চি বোন টাকে শাড়ি পড়া অবস্থায় যে এতোটা সুন্দর আর মহোনীয় লাগবে সে কোন দিন ও ভাবেনি এমন টা।চোখের সামনে এক এক করে ভেসে উঠতে লাগলো ছোট থেকে বড় হওয়ার নানান স্মৃতি সব খুনশুটি হাসি কান্না পাগলামো।
নওমি তার ভাইকে দেখে দৌড়ে তার কাছে গেলো আর ঘুরে ঘুরে নিজেকে দেখাতে লাগলো।
নওমিঃভাইয়া দেখো আমাকে কতো সুন্দর লাগছে তাই না,আদি দিয়েছে।
(খুশি হয়ে)
নির কিছুনা বলে বোনকে বুকের মাঝে জরায় নিলো
শেষ কবে বোন এর সাথে দুই দন্ড কথা বলেছে সেটা মনে পড়েনা প্রথমে পড়াশুনার চাপ তারপরে আবার বিজনেস নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জেদ বাবা মার মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়ার নেশা তাকে অন্ধ করে দিয়েছিলো ফ্যামিলি বোন এই সব তো ভুলেই বসেছিলো হাসি মজা সব তো পুনরায় শিখলো আদ্রির জন্য।
নিরঃতুই এই ভাবে কেনো।(নিজেকে সামলে নিয়ে)
নওমিঃওমা কেনো তুমি জানোনা আজকে না আমার বিয়ে উম তুমি কি করে জানবা তোমার কি আর সময় আছে আমার জন্য। (মন খারাপ করে)
নিরঃরেগে আছিস ভাইয়ার উপর ভাইয়া সময় দেয়না তাই।(নিচু করা মাথা উপরে তুলে)
নওমিঃউহুম করিনি। আদি আমাকে বুঝায়েছে যে তোমার অনেক কাজ আর সে জন্য তুমি আদি কে আমার কাছে পাঠায়েছ আমার সাথে কথা বলার জন্য খেলার জন্য।(আদ্রিয়ান এর হাত জরায় ধরে)
নিরঃতুই এখানে বস আমি আদ্রিয়ান এর সাথে কথা বলে আসি ঠিক আছে।
নওমিঃআচ্ছা।(মাথা ঝাকিয়ে)
নির সোজা নিজের রুমের দিকে হাটা ধরে। আদ্রিয়ান ও তার পিছনে যায়।আর রুমে যেতেই নির আদ্রিয়ান এর কপাল বরাবর বন্দুক তাক করে ধরে।
আদ্রিয়ান সেটা দেখে হেসে দেয় সে জানতো নির এমন কিছুটাই করবে সে এটার জন্য প্রস্তুত ছিলো।
নিরঃকি উদ্দেশ্য আমার বোনকে বিয়ে করার।(গম্ভির স্বরে)
আদ্রিয়ানঃকেনো আবার তোমার টাকার লোভে।(ঠাট্টার স্বরে)
নিরঃএটা আমার বোনের জীবনের প্রশ্ন কোন মজা না।
আদ্রিয়ানঃতুমি জানো আমি তোমার বোনকে ঠিক কতোটা ভালোবাসি তুমি সব সময় এখানে না থাকলেও তোমার কাছে এখানকার সম্পূর্ণ খোঁজ থাকে তোমার। কালকে যখন তোমার নানাকে আমি আমাদের বিয়ের কথা বলেছি সেটাও তোমার অজানা ছিলোনা। ঠিক সেই মহূর্তেই যে তুমি তোমার লোকদের আমার পিছনে লাগিয়েছিলা সেটাও আমার জানা।
নিরঃবাহ ভালোই তো আমার ব্যাপারে ভালোই খোঁজ নিয়েছো ইম্প্রেসিভ। (বন্দুক টা নামিয়ে)
আদ্রিয়ানঃআফটার ওল আমার বোন এর বস প্লাস ওয়ান সাইডার লাভার এর ব্যাপারে এইটুকু খোঁজ রাখতেই পারি। (বিছানার উপর আরামসে বসে)
নিরঃমানে?(ভ্রু কুচকে)
আদ্রিয়ানঃতুমি কি মনে করেছো ফার্স্ট মিট এ তোমার চোখে ফুটে উঠা রাগ আমি খেয়াল করিনি। হ্যা তুমি বুঝতে পারোনি আমরা ভাই বোন যায় হোক। বাট তারপরে আবির নামের ছেলেটার হাত ভাংগা সব খোঁজ আমিও রাখি মিস্টার চৌধুরী। আমার আদরের বোন হ্যা সেভাবে তাকে আগলে রাখতে পারিনি সেটা আমার ব্যার্থতা।(শেষের কথাটা নিচু সুরে বলে উঠে)
নির বুঝতে পারলো আদ্রিয়ান কিছু একটা বলতে যেয়েও বলতে পারছেনা হয়তো বিবেক এ বাধা দিচ্ছে নয়তো অন্য কোথাও। নির আর কথা বারায় না আদ্রিয়ান কে নিয়ে নিচে নেমে যায়। কাজিও এসে যায় ততক্ষনে।
দুই পক্ষের মতামত এ বিয়ের কাজটা সম্পুর্ণ হয়। কিন্তু পুরোটা সময় আদ্রি চুপচাপ এক সাইডে দাঁড়ায় ছিলো শুধু সাক্ষির সিগনেচার এর সময় সাইন টা করে আবার সেখান থেকে সরে গেছে।আদ্রিয়ান বিষয় টা লক্ষ্য করে কিন্তু কিছু বলেনা সে সময়।
ছাদের এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে সে। বিয়ের কাজকর্ম শেষ হয়ে গেছে। নওমি টায়ার্ড থাকায় অনেক তাড়াতাড়ি ঘুমায় পরে।নির আর তার নানু কিছু নিয়ে ডিসকাস করছে।আর তার নানি নাত জামাই এর জন্য রান্না করছে।আদ্রি বাসায় চলে যেতে চেয়েছিলো কিন্তু তার নানি তাকে যেতে দেয়নি।
আদ্রিয়ান আদ্রির পিছনে যেয়ে দাঁড়ায়। আদ্রি বুঝতে পারে হয়তো রক্তের টান তাইতো শুধু আজকে না যখন ই আদ্রিয়ান আদ্রির আশেপাশে থাকে তখন আদ্রি সেফ ফিল করে।
আদ্রিয়ানঃকি হয়েছে আমার বুড়িটার। আমার পিচ্চিটার মুখের হাসি কই হুম?(নিজের দিকে ফিরিয়ে)
আদ্রিঃআমার হাসি কান্না কোন দিকে আপনার কোন খেয়াল ছিলো কোন দিন না।আমাকে তো আপনারা নিজের মনে করেননি আর হাসি কান্না সেটাও যাদের ভালোবাসে তাদের হাসির খেয়াল রাখে।(তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে)
আদ্রিয়ানঃআমার বুড়িটার এতো অভিমান কেনো হয়েছে হুম?
(গাল টেনে দিয়ে)
আদ্রিঃআমার আর অভিমান।যার মা থাকেনা তার রাগ অভিমান করার কোন অধিকার থাকেনা।
(নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়)
আদ্রি রুমে যেয়ে জানালার ধারে দাঁড়িয়ে কান্না করে দেয়।কান্না করতে করতে হেচকি উঠায়ে ফেলে।
হঠাৎ করে কাধে কারো গরম নিশ্বাস পরতে কেপে উঠে।চোখ জোড়া বন্ধ হতে লাগে। আলাদা এক অনুভূতিতে কেঁপে উঠে মন।
নিরঃআমার বোনের সাথে বিয়ে হয়েছে বলে এতো কান্না। নাকি আমার বোন মানষিক ভাবে আনস্টেবল দেখে ভাইয়ের প্রতি এতো অভিমান কোনটা
আবেশে বুধ হওয়া চোখ টা খুলে গেলো ভালো লাগার জোয়ার টাও যেনো থেমে গেলো।গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে ইচ্ছা করছে কেন বুঝেনা তাকে কেউ কেনো সবসময় ভুলে বুঝা হয় তাকে সে কি এতোটাই খারাপ।
আদ্রিঃআপনারা আমাকে যতোটা খারাপ ভাবেন ততোটা খারাপ আমি নয় স্যার।আমি নিজেও চাইতাম ভাইয়া যেনো সারাজীবনের জন্য নওমির হাত টা ধরে।আমি খুব খুশি নওমি আর ভাইয়ার বিয়েতে। কিন্তু একটা আফসোস কি জানেন আমার ভাই যে কি না আদৌ কোন দিন আমাকে নিজের বোন মনে করেছে কি না আমি ঠিক জানিনা। কিন্তু ছোট বেলা থেকে তাকেই ভাই বলে মেনেছি। কিন্তু আজকে তার জীবনের এতোবড় একটা দিন সে সবাইকে জানিয়েছে আপনার নানা নানু আপনার সাথেও কথা বলেছে কিন্তু আমি। আমি কি তার লাইফেও এক পার্সেন্ট এর ও ইমপোর্টেন্স রাখিনা যে একটা বার আমাকে বলবে।
চোখ দুইটা দিয়ে অবিরাম পানি পরতে থাকে আদ্রি চোখ জোড়া দিয়ে।পরিবেশ টা কেমন ভারি হয়ে এসেছে নির বুঝতে পারছে সেটা। আদ্রি মনে যে এক আকাশ সমান অভিমান পুষে রেখেছে সেটা সে টের পাচ্ছে ভালোই।বড্ড অভিমানী যে তার আদর পাখি সেটা বুঝতে তার খুব বেশি বেগ পেতে হয়না।
নিরঃএই আদর পাখি রাতের চাঁদ টা দেখেছো কি সুন্দর উজ্জ্বল। চাঁদনী রাত টা উপভোগ করবে এই অধম টার সাথে এই রাতের আকাশে তোমার সমস্ত চোখের পানি আমি আমার নাম করতে চায় দিবে সে সুযোগ একটু বিশ্বাস করে পারি দিবা আমার সাথে ছোট একটা সফরে।
আদ্রি অবাক হয়ে তাকায় নির এর দিকে নির যে এতোটা গুছিয়ে তার কাছে আবদার করবে সেটা সে কোন দিন আশাও করেনি। আপন মনেই হাত টা চলে যায় নির এর হাতের উপর।
নির মুচকি হেসে আদ্রির হাত ধরেই হাটা দেয় চাঁদনী রাত টা উপভোগ করার তাগিদে।
——-
ফাকা রাস্তাই পাশাপাশি হেটে যাচ্ছে নির আর আদ্রি।প্রকৃতি তার কোন সময় পছন্দ ছিলোনা কিন্তু আজকে এই রাতটা তার খুব বেশি ভালো লাগছে কিসের এই ভালোলাগা সে জানেনা কিন্তু তার ভালো লাগছে। পাশে থাকা ব্যাক্তিটির আঙ্গুলের ভাজে নিজের আঙুল গুলো দেখতেও তার ভালো লাগছে। হঠাৎ করে মনের মাঝে জমে থাকা অভিমান জেনো উড়ে গেলো এই ঠান্ডা হাওয়ার মাঝে। শত শত তারাও তার মন ভালো করার জন্যই বুঝি আজকে এতোটা সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছে অন্ধকার আকাশকে…
চলবে…!