সুগন্ধি ফুল পর্ব-৪৩

0
297

#সুগন্ধি_ফুল
#পর্ব_৪৩
#জান্নাত_সুলতানা

আব্রাহাম এর ফোনকল এলো দুপুরে নাগাদ। যা দেখে বিস্ময় হতভম্ব হয়ে গেলো মেহরিন। কল কেনো করলে আবার? আগে তো কখনোই করে নি? ভাবতে ভাবতে কল রিসিভ করে। ওপাশ থেকে গুরুগম্ভীর স্বরে আব্রাহাম বলে উঠলো,

-“শরীর ঠিক আছে?”

মেহরিন ছোট করে জবাব দিলো,

-“হু।”

-“দুপুরে খাওয়া হয়েছে?”

-“হু।”

আব্রাহাম পরপর প্রশ্ন করেই গেলো। মেহরিন শুধু ছোট ছোট করে জবাব দিলো। আব্রাহাম ফের জিজ্ঞেস করলো,

-“কি করছো এখন?”

-“শুয়ে।”

আব্রাহাম নিজের ক্যাবিনের জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। সেখান থেকে রাস্তা স্পষ্ট দেখা যায়। রাস্তার ওপাশে একটা পার্ক আছে। উঁচু বিল্ডিং থেকে সেটা সরাসরি দেখতে পাওয়া যায়। সেখানে কয়েক জোড়া কপোত-কপোতী দেখে তার এক অদম্য ইচ্ছে হলো। আচমকাই প্রশ্ন করলো,

-“বাড়ি আসবে?”

-“এভাবে?”

আব্রাহাম কিছু সময় চুপ করে রইলো। আসলেই তো। কিভাবে আসবে এই মেয়ে? একা? না তো এভাবে আসবে কেনো? বাড়ির বউ একা-একা আসবে যাবে? আব্রাহাম বেশ গম্ভীর স্বরে বলে উঠলো,

-“না। বউ সাজিয়ে নিয়ে আসবো।”

এরপর কল কেটে দিলো। মেহরিন ফোন তারপরও কানে চেপে ধরে রইলো। বারবার যেনো কানে প্রতিধ্বনিত হলো, “বউ সাজিয়ে নিয়ে আসবো” বিড়বিড় করে নিজেও আওড়াল,

-“আব্রাহাম খানের বউ।”

“বউ বউ” বারবার উচ্চারণ করে বোকা-সোকা মেহরিন লজ্জা পেয়ে গেলো। বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে পরলো।

——–

বাড়িতে মিলন খান ইলা বেগম ফিজা। সবাই সর্বোচ্চ ব্যাস্ত রাখার চেষ্টা করছে ফিজা কে। কিছু দিন আগেই অনেক বড়ো একটা এক্সিডেন্ট হলো। একটা মেয়ের জন্য, একজন মায়ের জন্য এই শোক ভয়াবহ।
তারউপর আবার একটা এমন ঘটনা। বিপদ যেনো মেয়ে টার শেষ ই হচ্ছে না। আবার স্বামী নামক পুরুষ টা নেই কাছে। মেন্টালি সাপোর্ট টা যে খুব করে কারোর থেকে পাচ্ছে তেমন টাও নয়। মিলন খান সেইজন্য অফিস যায় নি আজ। স্ত্রী আর নিজে মিলে পুত্রবধূকে নিয়ে রান্নার কাজে ব্যাস্ত আছে। বাহিরে আজও ঝুম বৃষ্টি। মিলন খান রান্নায় বেশ পারদর্শী। খিচুড়ি চুলায় বসিয়ে ফিজা কে বললো,

-“বুঝলে আমাদের বিয়ের পর তোমার দাদিজান খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেন। ইলা তখন রান্না পারে না। যদিও চেষ্টা করতো। তবে আগে কখনো এই কাজ না করায় তেমন গুছিয়ে করতে পারতো না। একদিন অফিস থেকে ফিরে দেখলাম নিজে নিজে রান্না করতে এসছে। কাজের বুয়ার রান্না মজা নয়। সেদিন হাতে গরম তেল ফেলে কি এক হুলুস্থুল কান্ড। এরপর থেকে প্রায় আমি রান্না কর নিতাম। মাঝেমধ্যে আম্মা করতো। বান্দা তবুও বুয়ার রান্না খাবে না।”

ফিজা আঁড়চোখে শাশুড়ির দিকে তাকায়। যে আপাতত ডিম ভাজতে ব্যাস্ত। গায়ে খয়েরী রঙের একটা জামদানী শাড়ি জড়িয়ে আছে। ফরসা শরীরে বেশ চমৎকার মানিয়েছে সেই রঙ। কাপড় পড়ার স্টাইল বেশ নজরকাঁড়া। সাথে মানুষ টাও। এক দেখায় যে কেউ বলে দিবে বেশ সৌখিন মানুষ তিনি।

দেখলে মনে হয় না এক এক করে তিন সন্তানের জননী তিনি। বয়সের একটা ছাপ মুখে পরেছে যদিও। ফিজা শ্বশুর এর পাশে দাঁড়িয়ে খিচুড়ি রান্না দেখে। এই মানুষ গুলো তাকে নিজের মেয়ের চেয়ে ও বেশি প্রায়োরিটি দেয়। মিষ্টি কে আজ কত মাস হলো হোস্টেল রেখে দিয়েছে সামনে এসএসসি দিবে বলে। পড়ালেখা নিয়ে কোনো কম্প্রোমাইজ করতে রাজি নয় তারা। বাবা-র বিশাল ধনদৌলত আছে তো কি হয়েছে? আত্মনির্ভরশীল হতে হবে। পরনির্ভরশীল হয়ে থাকা যাবে না। তাছাড়া বাবামায়ের মতো করে কেউ রাখে না। আল্লাহ না করুক ভবিষ্যতে কোনো অঘটন ঘটলে একাডেমিক কোনো সার্টিফিকেট থাকলেও নিজের জন্য কিছু করা যাবে। তবে ফিজা ঠিক করলো আবরাজ ফিরলে এবার গিয়ে মিষ্টি কে বাড়ি নিয়ে আসতে বলবে।

দুপুরে রান্না বান্না শেষ ফিজা বাদে সবাই গোসল দিতে গেলো। ফিজা কাজের লোকের হাতে হাতে খাবার টেবিল গুছিয়ে নিচ্ছে। তখন বাড়ির কলিং বেল বাজলো। ফিজাই গেলো। সদর দরজা খুলতেই আব্রাহাম এর দেখা পেলো। বৃষ্টি মাথায় বাড়ি এসছে। অল্প একটু ভিজে গিয়েছে। হয়তো গাড়ি থেকে নেমে এই পথ টা আসার সময়। ফিজা হাসি হাসি মুখে আব্রাহাম কে বললো,

-“ফ্রেশ হয়ে খেতে চলে এসো। আব্বু নিজে আজকে রান্না করেছেন।”

-“ওয়াও। তাহলে দারুণ কিছু হবে। আচ্ছা দশ মিনিটে আসছি।”

আব্রাহাম বেশ উচ্ছ্বাস নিয়ে আওড়াল। জুতো খুলে হাতে নিয়ে নিলো। কাদামাটি আছে জুতোর তলায়। আব্রাহাম যেতেই ফিজা দরজা লক করে নিজেও রুমের দিকে এলো।
আবরাজ এর দেওয়া শাড়ী গুলো একটা পড়ার জন্য মন টা আকুপাকু করছিলো। তবে যার জন্য পড়বে সেই তো বাড়ি নেই। ফিজা মন খারাপ করে শাড়ী গুলো নেড়েচেড়ে দেখতে গিয়ে মনে হলো শাড়ী এখানে কম আছে। বেশ চিন্তায় পড়লো৷ যেই আলমারি টা প্রায় সম্পূর্ণ টা শাড়ী দিয়ে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল সেখানে এখন হাতেগোনা বিশ টা শাড়ী ও নেই। চিন্তায় অস্থির হয়ে এদিক-ওদিক ওয়ারড্রব সব জায়গায় দেখলো কিন্তু নেই। মেয়ে টা এবার কেঁদে ফেললো। একবার শাড়ী দিলো সব পুড়ে গেলো। আবার দিলো এখন সেগুলো হারিয়ে গেলো? তার সাথে কেনো এমন টা হচ্ছে? আবরাজ কে বারকয়েক কল করলো। কিন্তু ফোন বন্ধ। ফ্লোরে হাঁটু গেঁড়ে বসে হাঁটুর ভাজে মুখ গুঁজে কাঁদতে লাগলো মেয়ে টা। প্রায় আধঘন্টা পর শাশুড়ির ডাকাডাকিতে সে কান্না বন্ধ করলো। নিজে কে স্বাভাবিক করে ওয়াশ রুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে এলো। শাওয়ার সকাল নেওয়া হয়েছে। তাই শুধু ড্রেস চেঞ্জ করে নিচে এলো। হঠাৎ মেয়ে টার চোখ মুখ ফুলে গিয়েছে। ইলা বেগম বেশ চিন্তিত হলেন। আবার কিছু হলো কি মেয়ে টার? জিজ্ঞেস করলেও ফিজা কিছু ই বললো না। আব্রাহাম আসার পরই খাবার খেতে বসলো সবাই। রান্না দারুণ হয়েছে। সবাই প্রসংশা করলো মিলন খান এর। আব্রাহাম বাবা-র সাথে তেমন ফ্রী নয়। তবে মায়ের সাথে যথেষ্ট ফ্রী। তাই মা’কে আগে বললো,

-“আম্মু মেহরিনের অনার্স ফাইনাল ইয়ারের ফাইনাল এক্সাম খুব বেশি দূরে না।”

আব্রাহাম এর কথা মন দিয়ে শুনলেন ইলা বেগম এবং মিলন খান। ছেলের কথার ইঙ্গিত বুঝে। মিলন খান খাবার খাওয়া প্রায় শেষ। ইলা বেগম স্বামীর দিকে একবার তাকিয়ে ছেলের দিকে তাকালো। ফের বললো,

-“এক্সাম টা দিয়ে নিক। মাস্টার্স ও করে নিবে না-হয়।”

আব্রাহাম মায়ের কথায় বেশ অসন্তুষ্ট। সে বোঝাতে চাচ্ছে কি আর মা তার বুঝে কি! সে বউ আনতে চাচ্ছে আর মা বউ না আনার বুদ্ধি দিচ্ছে। বড়ই আহত হলো সে। বললো,

-“সে তো করতে হবে।”

-“তো অনার্স এক্সাম এর পর গিয়ে তাহলে আমরা মেহরিন কে নিয়ে আসবো। যেহেতু এক্সাম। এখন বিয়েসাদীর দখল মেয়ে টার রেজাল্ট খারাপ হতে পারে।”

আব্রাহাম কথা শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে মিলন খান বলে উঠলো। আব্রাহাম এর বিস্ময় লেগে গেলো। সবেমাত্র সে খিচুড়ি মুখে দিয়েছিলো। খাবার তালুতে উঠে গেলো। কাশি শুরু হলো আচমকাই। ফিজা ভদ্রতার সহিত পানির গ্লাস দিলো। ইলা বেগম অস্থির হলেন বটে। আব্রাহাম পানি খেয়ে খাবার প্লেট ঠেলে দিলো। তার খাওয়ার রুচির পোস্টমর্টেম করতে তার বাবা-র কথাই যথেষ্ট ছিলো। সে কিছু না বলেই ওঠে চলে গেলো। মিলন খান থমথমে মুখে তখনও খাবার খাচ্ছে। ইলা বেগম স্বামীর এমন স্বাভাবিক ভাবসাব দেখে আশ্চর্য হলো। বললো,

-“ছেলে টা অন্য কিছু বোঝাতে চাচ্ছিলো। আপনি বেশি বুঝেন। এখন হলো তো! আবার ক’দিন না খেয়ে থাকবে কে জানে। আল্লাহ আমার হয়েছে যতো জ্বালা।”

বলতে বলতে তিনি ও খাবার ছেড়ে ওঠে গেলো। মিলন খান ও পানি খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে রুমের দিকে গেলো। ফিজা অবাক হলো। আবার না খেয়ে থাকবে মানে কি? আগে ও কি এমন হয়েছে? কই ফিজা তো দেখে নি। মনে প্রশ্ন এলেও মুখে কিছু বললো না ফিজা। সবাই মোটামুটি খেয়েছে। ফিজাও খাবার শেষ রুমে চলে গেলো।

——-

আবরাজ এর জন্য অপেক্ষা করে আছে সাব্বির আব্রাহাম। আবহাওয়া খারাপ হওয়ার ফলে কয়েক ঘন্টা সময় বেশি লেগেছে। সকালে এসে পৌঁছানোর কথা থাকলে-ও সেই আসা এসে পৌঁছাল সন্ধ্যায়। আব্রাহাম ভাই কে দেখে বেশ খুশি। নিশ্চয়ই জুনায়েদ এবার নিজের যোগ্য শাস্তি পাবে। গাড়িতে বসে আবরাজ কে বড্ড ক্লান্ত দেখালো। শরীর ছেড়ে সিটে চোখ বন্ধ করে শুয়ে রইলো। সেভাবে থেকে আব্রাহাম কে জিজ্ঞেস করলো,

-“বাড়ি যাবে আমার সাথে?”

আব্রাহাম আমতা আমতা করলো। উত্তর দিতে পারলো না। তবে ঘাড় নেড়ে না বললো। আবরাজ তখন তাকিয়েছে মাত্র ভাইয়ের দিকে। আব্রাহাম এর মুখ কেমন শুঁকনো দেখাচ্ছে। ভ্রু কুঁচকে আবার জিজ্ঞেস করলো,

-“কি হয়েছে? এনি প্রবলেম?”

আব্রাহাম অপ্রস্তুত হলো। তবে ভাইয়ের কাছে না বললে লাভ কিছু হবে না। মেহরিন কে নিয়ে আসার জন্য হঠাৎ মন টা কেমন উতলা হচ্ছে আজ। মনে মনে অপ্রস্তুত থাকলে-ও নিজে কে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করে বলে উঠলো,

-“ভাইয়া আব্বু কে বলো না ও কে যেনো তাড়াতাড়ি নিয়ে আসার জন্য আন্টির সাথে কথা বলে।”

“ও কে” এটা কেমন সম্মোধন? ভ্রু জোড়া বেশ কুঁচকে এলো। বিরক্ত হলো কিছু টা। বললো,

-“ঠিক আছে। কথা বলে নেবো আমি।”

আব্রাহাম জানে ভাই ঠিক ম্যানেজ করে ফেলবে। ইচ্ছে করলো একবার জড়িয়ে ধরতে ভাই কে। তবে তাদের মধ্যে সম্পর্ক তেমন স্বাভাবিক না হওয়াতে সেটা আর করার মতো সাহস হলো না। ইগো তো একটু আছেই বটে। তাই চুপ করে খুশি চেপে বসে রইলো। বাড়িতে ফিরে আবরাজ একবার ভাবলো আগে জুনায়েদ এর সাথে সাক্ষাৎ করবে। তবে পরক্ষণেই সেই চিন্তা বাদ দিলো। বউ কে দেখা বেশি জরুরি মনে হচ্ছে তার কাছে। তাই বাড়ির দিকে এলো। লিভিং রুমে উপস্থিত হতেই চমৎকার একখানা মূহুর্তের সাক্ষী হলো সে। মা-বাবা বউ তিনজন মিলে ডাইনিং টেবিলে খাবার পরিবেশন করতে ব্যাস্ত আছে। বাহারি খাবারে সজ্জিত টেবিল। সবাই জানতো না আবরাজ আসবে। সাব্বির জানিয়েছিল বিকেলে। তখন থেকে সবার আয়োজন শুরু। সাব্বির লাগেজ রেখে গার্ডদের নিয়ে ফিরে যাচ্ছিল তখন ইলা বেগম ডাকলো ওকে। বললো,

-“রাতের ডিনার টা করে যাও সাব্বির।”

সাব্বির ফিরে এলো। ইলা বেগম এর সামনে দাঁড়িয়ে বেশ নমনীয় স্বরে বলে উঠলো

-“আসলে ম্যাডাম ফাতিহা একা আছে। শরীর টাও বেশি ভালো নয়। একটু তাড়াতাড়ি ফিরতে চাইছিলাম।”

আবরাজ ভ্রু কুঁচকে নিলো। আজ সাব্বির তেমন কথাও বলে নি তার সাথে। কারণ টা এতোক্ষণে বুঝতে পারে সে। ইলা বেগম একজন বুয়া ডেকে খাবার বক্স করে দিতে বললো। সাব্বির না করলো না। না করে লাভ ও নেই।
আবরাজ নিজের রুমে যাওয়ার আগে বললো,

-“সাবধানে যাও। ফিরে আপডেট জানিও। যদি বেশি খারাপ হয় ডক্টর দেখিয়ে এখানে নিয়ে চলে এসো। একা ফ্ল্যাটে রাখতে হবে না।”

সাব্বির মাথা নাড়ে। এখানে তাড়া প্রায় থাকতো আগে। সাব্বির কোথাও গেলে ফাতিহা কে এখানে রেখে যেতো। তাই তেমন অস্বাভাবিক নয় এই কথা। তাদের মধ্যে সম্পর্ক তো তেমন হয়ে গিয়েছে। আবরাজ খান এর সাথে কাজ করার এতো বছরে সবাই তাকে খান বাড়ির একজন সদস্য বলেই সব সময় গণ্য করে।
আবরাজ রুমে যাওয়ার পরপরই ফিজা কে ইলা বেগম তাড়া দিলো। রুমে যাওয়ার জন্য। কতদিন পর এসছে ছেলে টা। ফিজা শাশুড়ির কথা মতো রুমে এলো। আবরাজ রুমে নেই। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে আছে। কথা বলছিলো কারোর সাথে। ফিজার উপস্থিত টের পেয়ে কল কেটে দিলো। ফোন টা সেখানে থাকা ছোট টেবিলের ওপর রেখে নিজের গায়ের স্যুট এর নিচের দিকের বাটন খুলতে খুলতে এগিয়ে এলো ফিজার দিকে। ফিজা তখনও থতমত মুখে দাঁড়িয়ে। কার সাথে কথা বলছিলো এটা নিয়ে তার মাথাব্যথা নেই। কিন্তু সে আসামাত্র কল কেটে দিলো কেনো? সে কি বাহিরের কেউ? আবরাজ ফিজার মুখে ফু দেওয়াতে ভাবনা থেকে বাস্তব ফিরে মেয়ে টা।
ভারী আঁখি পল্লব তুলে চাইলো সুদর্শন পুরুষ টার দিকে। গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি পুরুষ টার সৌন্দর্য যেনো আরও বাড়িয়েছে বৈ কমায় নি। আবরাজ আচমকাই ফিজার দেহ টা আগলে নিলো। বুকের মধ্যে চেপে ধরে নিলো। প্রশান্তি এলো বুকে। অস্থিরতা কমে গেলো। টানা এগারো দিনের ক্লান্তি গ্লানিবোধটুকু তার উবে গেলো। আবরাজ ফিজাকে শক্ত করে বুকের মধ্যে চেপে ধরে স্লো ভয়সে বললো,

-“তুমি জানো সুগন্ধি ফুল, তোমার কাছে এলে মনে হয়। দুনিয়ার সব ঝড় থেমে গেছে। তোমার একটা ছোঁয়াতেই আমার সব ক্লান্তি, সব দুঃখ মুছে যায়। তোমার গন্ধ, নিঃশ্বাস, উষ্ণতা। এই সবটাই আমার বেঁচে থাকার কারণ হয়ে যাচ্ছে। দুনিয়ার সব ক্লান্তি, সব ভয় তোমার কাছে তোমার ছোঁয়া পেয়ে সব হারিয়ে গেলো। এমন মনে হচ্ছে তুমি না থাকলে আমার সমস্ত লড়াই-ই বৃথা। আমি যেনো অসম্পূর্ণ, ভীষণ অসম্পূর্ণ। ডিড আই ফল ইন লাভ উইথ ইউ?”

#চলবে….