সূখতারার খোজে পর্ব-১৪+১৫

0
450

#সূখতারার_খোজে
#লেখক:আর আহমেদ
পর্ব ১৪

অভ্র নিখোঁজ প্রায় তিন ঘন্টা। তখন বেড়িয়েছে এখনো তার হদিস পাওয়া যায়নি। অভ্র মঞ্জিলের অতীত-ইতিহাসে এমন ঘটনা ঘটেনি। আর না কেউ এ কান্ড অভ্রের দ্বারা আশা করেছিলো। অভ্র ফোনও রিসিভ করছে না। সায়নকে ফোন করার পর সে খুজতে বেড়িয়েছে প্রায় দেড় ঘন্টা! ফোন শেষে উত্তর হাইওয়েরর ধারে চালু ছিলো অভ্রের। ট্রাক করার পরপর’ই সায়ন চলে গেছে। মাসখানেক সে চাকরি পেয়েছে পুলিশে। এখনো কেউ খোঁজ দিতে পারলো না। ইরা ঘরে নির্শব্দে কেঁদে চলেছেন।আমির পাগলের মতো ছুটেছেন। তিনজন যেন নেটওয়ার্কের বাইরে চলে গেছে!

_______

পুরো এখতেয়ার বাড়ি আজ স্তব্ধ! ইলিমা কেঁদে অস্থির! তনয়া অনবরত বাম হাতের উল্টোপিঠ দিয়ে চোখ মুছছে। তূরকে পাওয়া যাচ্ছেনা তারার নিখোজের আগ থেকেই। সেই বেড়িয়েছে এখনো কেউ এসে পৌঁছায়নি! না এসেছে কোন ফোনকলস্! কবিতা একে একে তার জানা মতে সবাইকে ফোন করতে ব্যাস্ত! কেউ কোন খবর দিতে পারছে না তারার। সকলে চিন্তিত ভগ্নহৃদয় মুখ করে বসে! এখতেয়ার গেছেন তারাকে খুজতে! যেখানে তূর আগে বেড়িয়েছিলো তাহলে তূরের সাথে তারার থাকার কথা নয়। আর যদি থেকেও থাকে তাহলে কেউ ফোন রিসিভ’ই বা করছে না কেন?

রাত ঠিক এগারোটার কাছাকাছি! এখতেয়ার পাগলের মতো খুজেও পেলো না কাউকে। বেজার মুখ নিয়ে বাড়ির দ্বারে পা রাখতেই কবিতা ছুটে গেলো ওনার সামনে। সাথে তনয়া,ইলিমাও।কবিতা মুখপানে তাকিয়ে বললো,

-তারা? কোথায় ও? পাওয়া যায়নি তাকে? আর আপনার ছেলেই বা কই? পেয়েছেন কোন খবর?

এখতেয়ার হঠাৎ হেঁচকি তুলে কেঁদে ওঠেন। উপস্থিত সকলে অবাক হলো কিছুটা। যে মানুষটা এতটা দিন অপেক্ষা করেছে তারা আর তারার মা’কে বিদেয় করতে অথচ সে আজ কাঁদছে! তাও কার জন্য? তারা! তিনি এলোমেলো পায়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলেন। কবিতাও ফিরে হাটতে লাগলো। এখতেয়ারের ফোন পেতেই চলে আসেছিলো কবিতা।
ইলিমা ছুটে গেলো এখতেয়ারের কাছে। কন্ঠ নিষ্প্রান ইলিমার,

-তারাকে পাও নাই? কোন হদিস পাওয়া যায় নাই না?

এখতেয়ার নিচু স্বরে বললেন,

-না।

-তূরেরও পাওয়া যায় নাই?

-না!

-তাইলে গেলো কই দুইজনে? তারা তো কখনোই কোথাও এত রাত করে না।

-ও কোচিং এ যায়নি! খবর নিয়েছি আমি।

ইলিমা কিছু একটা ভাবলেন। এরপর বলে উঠলেন,

-তুমি বরং পুলিশের সাহায্য নাও।

কবিতা ইলিমার কথায় সায় দিয়ে বললো,

-জ্বি আঙ্কেল। আপনি বরং পুলিশের কাছে মিসিং ডায়েরি করেন। আমার মনে হয় তারা নিজে কোথাও যায়নি। কেউ ওকে তুলে নিয়ে গেছে!

এখতেয়ার কিছুটা সময় বসে রইলেন। গরিব ঘরে এমন পুলিশ আনতে হবে তিনি কখনোই ভাবতে পারেননি। এরপর উঠে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলেন।

____

রাত বারোটা ছুইছুই। উত্তর হাইওয়েতে সিবিলে একলা পা রাখলো সায়ন। গুটঘুটে অন্ধকার চারপাশ।সায়ন নিশাচরী চতুর প্রানীর মতো চারপাশ পরখ করেই রিভলবার বের করলো জ্যাক থেকে। সামনে সুবিশাল এক পরিত্যাক্ত কলোনি। বড়বড় গাছগুলো থেকে ঝড়া পাতা হাটু সমান! সায়ন ধির পায়ে এগোলো কলোনির ভেতরে। এগুলো এখন সরকারের জমি। বিশাল এক নটিস ঝুলানো কলোনির দরজায়। সায়ন আরও একবার লাইটের আলোয় রাস্তাটা দেখলো। কেউ হেঁটে গেছে তা বোঝা যায়। সায়ন কলোনির দরজা খুলে ভেতরে গেলো। বুক ধুকপুক করছে সায়নের। বুকে বাজছে দামামা। প্রিয় বন্ধুর জন্য তাকে এতটুকু যে করতেই হবে। কপালের রগগুলো বরংবার দপদপ করছে! ঘামে লেপ্টে গেলো সায়ন। কলোনিতে মোট সাতটি ঘর গোল করে বাঁধাই করা। সায়ন চক্ষুড়ালে যেতে একঘরের গলিতে ডুকে পড়লো। কেউ পাহারায় থাকতে পারে।

অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি গলি! কোন এক বাড়ির ভেতরে থেকে গোঙানির আওয়াজ ভেসে আসতেই হকচকিয়ে উঠলো সায়ন! এক্ষুনি যেন তার জান উড়ে যাচ্ছিলো।সায়ন চোখজোড়া বড় বড় করে কানদুটি খাড়া করে শুনতে লাগলো শব্দের উৎস কোথায়। একটু এগোলো সায়ন। হাটার গতি বাড়তে সে আওয়াজ বাড়ছে ক্রমশ দ্বীগুন গতিতে। বুকে দামামা বাজছে সায়নের। শহরের প্রায় শেষপ্রান্তের হাইয়েতের উত্তরে পরিত্যাক্ত কলোনিতে রাত্রী বারোটায় সায়ন, ভাবলেই গা ঝিমঝিম করে ওঠে সায়নের। অভ্রের শেষ লোকেশন পাওয়ায় এখানেই কোথাও। সায়ন আর একটু এগোতেই গোঙানির আওয়াজ হঠাৎ থেমে গেলো। বছর পরিত্যক্ত বাড়িগুলো বেশ ভুতুড়ে! সায়ন একপা একপা করে এগোতে গিয়েই থেমে গেলো। আর কোন আওয়াজ আসছে না! সে রিভলবার শক্তহাতে ধরে ভ্রু শক্ত করে তাকালো একবার চারপাশে। নিশাচরী প্রানীরা উড়ে গেলো মাথার উপর দিয়ে। সায়ন আর এক মুহুর্ত না দাড়িয়ে ছুটে গেলো শব্দ আসা ঘরে। তিনতলা বাড়ি! একতলা থেকে দোতলায় যেতেই গোঙানির মৃদু আওয়াজ ভেসে আসলো কানে। হাতের টর্চ হাতমুষ্টি করে কমালো আলোর তেজ! সায়ন শব্দের উৎস খুজতে চলতে লাগলো।

একটি ঘরের সামনে গিয়ে থেমে গেলো সায়ন। মনে তোলপাড় চলছে সায়নের। সায়ন শুকনো ডোগ গিলে দরজায় হাত দিলো। না! ভেতর থেকে লাগানো। সায়ন ছুটে চলে হাতের সোজা পিঠে ধাক্কা দিলো। পুরোনো দরজা পুরোটা হুড়মুড় করে ভেঙে পড়লো ঠিক উল্টোদিকে। সায়ন সঙ্গেসঙ্গে রিভলবার উঁচিয়ে বললো,

-হ্যান্ডস্ আপ!

একহাতে রিভলবার অন্যহাতে টর্চ আলোয় পর্যবেক্ষন করলো পুরো রুমটা। ঘরে কেউ নেই। সায়ন রিভলবার নামিয়ে একটু এগোতেই মুখে কাপড় বাঁধা একটি মেয়েকে দেখতে পেলো। গুটিয়ে রয়েছে একদম। তখনি খপ করে কিছুর আওয়াজ শুনতে পেলো সায়ন। সেদিকে খেয়াল না দিয়ে সায়ন ছুটে মেয়েটার কাছে চলে গেলো। মেয়েটি যেন ভয়ে কুঁকড়ে গেলো আরও। সায়ন শান্তনা দিয়ে বললো,

-আমি কিছু করবো না। ডোন্ট ওয়ারি। তোমায় বাঁচাতে এসেছি আমি।

তারা মৃদু আলোয় তাকাতেই চেনা মুখটি জ্বলজ্বল করে উঠলো।সেদিন হাইওয়েতে দেখার পর আর তাদের দেখা হয়নি। মাঝেই তো কেটে গেলো প্রায় তিন মাস! তারা উমম উমম করে মুখের বাঁধন খুলতে বললো। সায়ন কাপাকাপা হাতে খুলে দিলো মুখের বাঁধন। তারা দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল! সায়ন তারাকে দেখেই হতভম্ব হয়ে পড়লো। অবাক স্বরে বলে উঠলো,

-স্টাররর?তুমি এখানে?

-আমার একটা কথা রাখবেন?

কথার প্রতিত্তোরে তারার এমন কথা আশা করেনি সায়ন। মাথা কিছুটা ঝাকিয়ে বললো,

-বলো!

-একটা আশ্রয়স্হল দিতে পারবেন? আমি আর পারছি না।

-কিন্তু তুমি এখানে কেন? কে আনলো?

-আনা হয়েছে। সব বলবো। আগে প্লিজ এখান থেকে চলুন।

আড়ালে ছবি ক্যাপচার করলো কেউ! মুখে বিশ্বজয়ের তৃপ্তিরত হাসি তার!

তার’ও পর কেটে গেলো চারদিন। তারা এখনো নিখোজ! পুলিশে বলার পর’ও পাওয়া গেলো না তাকে। জেনে গেলো সবাই। নিখোজ বিজ্ঞপ্তি ছড়ানো হলো নেট দুনিয়ায়। পাশে দাড়ালো অনেকে। তূর বাড়ি ফিরেছিলো সে রাতের ফজরে! পুলিশ তাকে সন্দেহ করছে। এদিকে চারদিন পর কবিতা ফেজবুকে আসতেই একটি পোস্ট দেখতে পেলো। যা তার ভূমিদ্বয় কাঁপিয়ে তুললো। ছবি ক্যাপশন আরও জটিলোতর!

#চলবে..

#সূখতারার_খোজে🧚‍♀️
#লেখক:আর আহমেদ
পর্ব ১৫

সূর্য ডোবার সীমিত সময় বাকি। সূদুরে ঝাকেঝাকে পাখিগুলো নিজডানায় ভর করে বাড়িমুখে যাচ্ছে। আকাশ লাল! সেই লাল আভার দিকে অপলকচোখে তাকিয়ে তারা। পৃথিবীতে সবার সবাই নিজের নিয়ে ব্যাস্ত।সার্থ কতটুকু আজ সে হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। কাছের মানুষগুলো তাকে নানাভাবে কোলঠাসা করতে ব্যাস্ত! নেট দুনিয়া ছাড়খাড় তার ঘুম হওয়ার কারনে। এদিকে সায়ন আর তার ছবি যেন দৃষ্টান্তমূলক ঝড় তুলেছে ফেসবুক,ইউটিউবে! নষ্টা,কলঙ্কিনী আরও কত কি বলা হচ্ছে তাকে। টানাহেঁচড়ায় আছে সায়নের চাকরিটাও। তারা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। সন্ধ্যা গাঢ় হচ্ছে। তারা ছাদের বেলকনিতে হাত দিতেই ফোনটা বেজে উঠলো। সায়ন তাকে নতুন আশ্রয় করে দিয়েছে। আগের সিমদুটি বন্ধ করা হয়েছে। নতুন সিম নিয়েছে তারা। তারা দেখলো সায়ন ফোন করেছে। সে তড়িঘড়ি রিসিভ করলো ফোনটা,

-কি করছো?

তারা নতজানু কন্ঠে বললো,

-কিছুই না।

-কিছু লাগবে তোমার?

-না তো। আমি ঠিক আছি।

-আমি ইব্রাহিম এর হাতে প্রয়োজনীয় কিছু পাঠিয়ে দিবো। আর কিছু টাকাও দিয়ে দিবো। কিছু লাগলে কিনে নিও?

-আচ্ছা। তাহলে রাখছি?

-শুনেন…

সায়ন কিছুটা থামলো। এরপর বললো,

-কি?

-আজ আমি সবার সামনে যেতে চাই। আমি আর আপনার ক্যারিয়ার ধ্বংস হতে দিতে চাই না।

-তুমি পাগল হয়ে গেছো নাকি?

-আর আপনি?

-তুমি থাকো আমি আসছি।

-কিন্তু..

তারার কোন কথা না শুনেই কেটে গেলো ফোন। এদিকে তারা বেশ উদ্বিগ্ন! সেদিন রাতে তারার বলায় একটি আশ্রয়ের ব্যাবস্হা করেছিলো সায়ন। কিন্তু তার পরদিনই অন্ধকারের আবছা আলোয় সায়ন সমেত তারার ছবি ইন্টারনেটে দেওয়া হয়। এখতেয়ারে ডায়েরি করার আজ সায়ন বেশ মুছিবতে পড়েছে। তূরের প্রতি সন্দেহ পুলিশের আর নেই বললেই চলে। সায়ন আর তারা কল্পনাদৃশ্যেও ভাবতে পারেনি কোথাকার খবর কোন দিক দিয়ে কোথায় ঠেকবে। সায়নের সাথে তারাকে দেখা যাওয়ায় সায়নকে আজ ভোর থেকে অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তারার খুব অসস্তি লাগছে। তার ভাবনা মতে এই গ্যাংস্টার অভ্র। তাহলে ছবি ই বা তুললো কে? কেন? নিজের বন্ধুকে অভ্র এভাবে ফাঁসাবে?

মাগরিবের আযান শোনা যায়। তারা ছাঁদ থেকে নেমে আসে।

_______

কবিতার সামনে কয়েকপাতার সম্পর্ক ছেদের নামা পড়ে আছে। সামনে রয়েছেন কবিতার মামা। কবিতার পুরো বাড়ির মানুষ দাড়িয়ে একদিকে। অন্যদিকে অভ্রের পরিবারের লোক। ইরা বাদে এসেছে সকলে। কবিতা চুপটি করেই বসে রইলো। অভ্র একবার তাকালো কবিতার দিকে। না! কবিতা একটিবারও তাকালো না। অভ্র চোখ সরিয়ে নিলো। সামনে দু’পক্ষের দুজন লয়ার। ডিভোর্স পেপার সামনে নিলো জর্জ সাহেব। হঠাৎ কবিতার মামা বলে উঠলেন,

-এ বিচ্ছেদের কারন?

কবিতার পক্ষের উকিল উঠে দাড়ালো। তাদের কোর্টে নেওয়া হয়নি। তিনি বললেন,

-মাই লর্ড, আজ দুর্ভগ্যবসত আমার ক্লাইন্ড প্রতারিত হয়েছে। কারো পাগলামির জন্য সে প্রায় দু’মাস নিজের বাপের বাড়িতে রয়েছে। যেখানে বাদি পক্ষের ক্লাইন্ট কাউকে দেখানোর জন্য বিয়ে নামক একটি বিশেষ সম্পর্ককে সাজিয়ে গুছিয়ে নাটকের খাতায় নামযোগ করেছে,সেখানে তো কেউ কেন চাইবে তার সাথে থাকতে? মিথ্যে সম্পর্ক নিয়ে বাঁচতে? আমার ক্লাইন্ট অরফে কবিতা এ সম্পর্কের বিচ্ছেদ চায়। তিনি এ সম্পর্ক এতটুকু এগোতে আর রাজি নন মাই লর্ড!

মোঃমোশরেখ(জর্জ) কবিতার দিকে তাকালেন। বললেন,

-কাউকে দেখানোর জন্য মানে?

লয়ার বললেন,

-মিথ্যে সম্পর্ক মানে হলো বাদি পক্ষের ক্লাইন্ট অলিভ অভ্র বিয়ের আগে প্রায় দু মাসের সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন। তাদের মধ্যো কোন অনাকাক্ষিত সমস্যা হওয়ায় তিনি ওই মেয়েটারই বন্ধবী আমার ক্লাইন্ট কবিতাকে বিয়ে করেন সবকিছু না জানিয়ে! বিয়ের আসরে সে মেয়ে এসব দেখে ফেলে। শুধুমাত্র বান্ধবীর জন্য সেও সব লুকিয়ে ফেলে মাই লর্ড। একমাস পর কবিতা সবকিছু জেনে ফেলে দূর্ঘটনাবসত। মেয়েটির নাম তারা। সিটি কলেজের শিক্ষার্থী, অনার্স সেকেন্ড ইয়ার। আর সে’ই মেয়েটিই এখন নিখোজ। তার সাথে দেখা গেছে এই অভ্রের বন্ধু সায়নকে। এটা সবারই জানা মাই লর্ড। আমার তো এটাও মনে হয় মেয়েটির ঘুম হওয়ায় অভ্রেরও হাত আছে।

-অবজেক্টশন ইউর অর্নার। আমার বিপরিত বন্ধু আমার ক্লাইন্টের উপর এভাবে কোনরকম প্রুভ ছাড়া এত বড় দোষারোপ করতে পারেন না।

অপরপক্ষের কথায় সায় দিলেন জর্জ। বললেন,

-অবজেকশন সাসটেইন! আপনি মূল বিষয় থেকে সরে যাচ্ছেন ফারুক।

ইয়াসিন ফারুক বললেন,

-সরি ইউর অর্নার।

মোঃমোশরেক অভ্রের দিকে সন্দিহান দৃষ্টিতে চাইলেন! বললেন,

–উনি যা বললেন তা সত্যি?

অভ্র অপরাধীর স্বরে বললো,

-হ্যা। সবটা সত্য।

জর্জ সাহেব দু পক্ষকেই বললেন

-কবিতা,অভ্র তুমি একবার ভাবতে পারো! বা ছয়মাস দেখতে ও পারো। হতেও তো পারে তোমরা স্বাবাভিক হতে পারো।

কবিতা অভ্রের দিকে তাকিয়ে শক্ত গলায় বললো,

-নো ইউর অর্নার। আমি চাইনা এ সম্পর্ক!

জর্জ অভ্রের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,

-অভ্র তুমি?

অভ্র মাথা নত করলো। বেশ কিছুটা সময় পর এপাশ ওপাশ করে মাথা ঝাকিয়ে নোঝালো সেও রাজি নয়।
মোঃমোশরেখ ডিভোর্স পেপার লয়ারের মাধ্যমে সামনে দিলেন। সইস্হান দেখাতেই কাঁপাকাপা হাতে সই করে দিলো কবিতা। অভ্র একটানে নিজের নামটি লিখে দিলো পেপারে। কবিতা বুক যেন মোচড় দিয়ে উঠলো। ভালোবাসা সত্যিই নিষ্ঠুর৷ হয়তো ভালোবাসায় কখনোই সুখ নেই!

#চলবে…