গল্প : সে আমার অর্ধাঙ্গিনী
পর্ব: – 4
লেখক রিহান অরণ্য
আমার বউ হাতে অন্য কেউ আন্টি পরিয়েছে এটা কেমন কথা আপনি এখনই বাসায় গিয়ে ওর হাতের আন্টি খুলে ফেলবেন
যতেদিন না আমাদের ডিভোর্স হচ্ছে, এখনো সে আমার অর্ধাঙ্গিনী, আমার কথা শুনে লুবনার আম্মু চিন্তায় পরে গেলো, বার বার আমার আম্মুর সাথে কথা বলতে চাচ্ছে, আমি বললাম আম্মু কে কেন টানছেন, আম্মু তো বলছে আপনাদের কে ডিভোর্স দিয়ে দিতে এতো দিনে কেন আপনারা সেটা করেন নাই,,
লুবনার আম্মু বললো ঠিক আছে ২/৩ দিন অপেক্ষা করো, তার আগে তুমি লুবনার সামনে গিয়ে পরিচয় দিবে না,ওয় মেয়ে মানুষ ওর সন্মান আছে ওয় একজন ডক্টর,, ওরে আশেপাশে মানুষ সবাই চিনে,আমি বললাম ঠিক আছে আমি ওরে আমার পরিচয় দিবোনা কিন্তুু ডিভোর্স সময় যদি সে জিজ্ঞেস করে তখন কি বলবেন,
লুবনার আম্মু বলতেছে সেইটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না, সে তোমার মতো না যে একটা এক্সিডেন টা মনে রাখবে, তার এখন হাসবেন্ড আছে, সরি সানি হাসবেন্ড না, তবে হবে,ওর সাথে এখন রাত দিন কথা বলেই সময় পার করে, ওনার কথা শুনে আমি আন্টি কে বললাম লুবনা কে আপনি আজকের পর থেকে এই সব করতে না করবেন, কারণ সে এখনো আমার বউ, আপনি বলতে না পারলে নাম্বার দিন আমি বলে দিবো, আন্টি বললো না না তোমাকে কিছু বলতে হবেনা, আমি বলে দিবো,
লুবনার আম্মুর সাথে কথা বলে চলে আসলাম,
এখন যেন অপেক্ষার দিন কাটছে না, বিকালে যাবো লুবনা কে দেখতে,, শুধু দেখেতেই পারি কিন্তুু কথা বলতে পারিনা,,
বিকালে লুবনা কে দেখতে যাবার জন্য রেডি হচ্ছিলাম তখন একটা ফোন আসে অপরিচিত নাম্বার,, ফোনটা রিসিভ করতেই কেউ একজন বলতে লাগলো, আপনার সাথে দেখা করতে চাই,, ( পুরুষ মানুষের কন্ঠ ) আমি বললাম কে আপনি আর কেন দেখা করবেন, ওনি বলতে লাগলো তরে বলছি বেটা দেখা করতে তুই করবি, তর কাবিন নামা নিয়ে আসবি সাথে,, আমি একটু চুপ করে রইলাম বুঝতে বাকি নাই, লুবনার আম্মু না হয় ওর আব্বু নাম্বার দিছে,, আমি তখন রিপলে দিলাম, আপনার নাম বলেন, সে বললো আমি লুবনার ভাই,আমি বললাম কেমন ভাই তুই, বললো মামাতে ভাই তখন আমি বললাম ওহ আচ্ছা তুই তাইলে সেই আমার বউ কে নিয়ে চলে এসেছিলে, তর নামটা জানি কি,,
আপলে ,
স্যার সাথে ওর মামতো ভাইয়ের নামটা ও লিখেন ওয় এখনও আমাকে হুমকি দিচ্ছে, ( লুবনার মামাতো ভাইকে শুনিয়ে বললাম কথা গুলো যাতে মনে করে আমি পুলিশে কমপ্লিন করছি,) এখন লুবনার ভাই নরম সুরে বললো ভাই আপনি কেন ঝামেলা বাড়াচ্ছেন, ফুপি যে হুতু টাইম দিছে তখন তো ডিভোর্স পেয়ে যাবেন আর আমার সাথে দেখা করতে বলছি এই জন্য যে সময় তো লাগতে পারে ডিভোর্স জন্য এতোদিন হোটেলে থাকলে অনেক টাকা খরচ হবে তার চেয়ে ভালো আমাদের বাসায় চলে আসেন,,।
আমি বললাম টাকা গেলে আমার যাবে, এটা নিয়ে ভাবতে হবে না, আপনি আপনার বোন কে কিভাবে ডিভোর্স করাবেন সেই চিন্তা করেন, এটা বলে ফোন কেটে দিলাম,
ভাবছি লুবনা কে দেখতে এখন যাবোনা কোন সমস্যা হতে পারে, তাই হোটেল ও পরিবর্তন করার চিন্তা করলাম
আমার সাথে যে এসেছে তারে বাড়ি পাঠিয়ে দিবো আজকে কারণ আমার হয়তো কিছু দিন দেরি হতে পারে,
রাতেই আমার সাথের টা কে গাড়িতে তুলে দিছি আমি ও হোটেল পরিবর্তন করে অন্য জায়গায় গেছি,
বাড়ি থেকে ফোন দিচ্ছে মা৷ ছোট্ট বোন সবাই কারো ফোন রিসিভ করছি না, কতোদিন আর মিথ্যা কথা বলে ওদের কে সান্ত্বনা দিবো, এই ভাবে ২ দিন পার হয়ে গেছে ৩ দিনের মাথায় লুবনার আম্মু ফোন দিয়ে বললো কাল কে লুবনার আব্বু আসবে তুমি রেডি থেকো, আমি বললাম আমি তো রেডি আছি, তখন লুবনার আম্মু বললো তুমি এসব কেন করলে বাবা আমাদের নামে কেন পুলি*শের কাছে নোটিস করলে, আমি আন্টি কে বলালম আন্টি চিন্তা করবেন না
আমি পুলিশের কাছে যায়নি, আর গেলে আরো আগেই যেতাম আমি চাইনা লুবনা আর আপনাদের কোন সমস্যা হোক, ( এই কথা টাই আমার জীবনের কাল হয়ে দাড়িয়েছে,)
আন্টি বললো সত্যি বলছোতো বাবা,আমি বললাম আপনারা কোন টেনশন করবেনা না, এই কথা গুলো লুবনার আম্মু ফোনের লাউডস্পিকার দিয়ে ওদের ফেমিলি মেম্বার দের কে শুনাইছে, এখন ওরা শিওর হলো যে আমি কোন পুলিশে নোটিশ করি নাই,, কথা বলে ফোন কেটে দিলো, ২ ঘন্টা পর আবার কল দিলো,সানি সব কিছু যেহেতু গোপনে ছিলো আর তুমি ও চাও বিষয়টি যেন গোপনে শেষ হয়ে যায় তাইলে বাবা কাল লুবনার বাবার সাথে আমাদের গ্রামের বাড়িতে চলো ওইখানে একটি উকিল নিয়ে ডিভোর্স ব্যবস্থা করে দিবো, তুমি তো জানোই ওর অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক হয়েছে, এখন যদি এইখানে থেকে কিছু করি তাইলে বিষয় টা হয়তো জানাজানি হয়ে যেতে পারে লুবনা কে কমবেশি সবাই চিনে,
আমি বললাম ঠিক আছে, তাইলে কাল কখন যাবেন, আন্টি বললো আমি একটু পর জানাচ্ছি তোমাকে,এটা বলে ফোন রেখে দিলো,
৩০ মিনিট পর আবার ফোন দিলো বললো সানি কাল কে না আজকে রাতে যাবে,আমাদের গাড়ি আছে তুমি আর লুবনার বাবা সাথে আমার ভাইের ছেলে যাবে, আমি আর লুবনা যাবো কাল কে সব কিছু ঠিকঠাক হলে লুবনা কে নিয়ে কাল চলে আসবো,
আমি বললাম আন্টি ঠিক আছে তাইলে আমি রেডি হই,
রাত ৯ টার দিকে আমাকে ফোন দিয়ে তাদের বাসার সামনে আসতে বললো,আমি আসলাম সাতে সব কিছু নিয়ে,ওরা বললো গাড়িতে উঠে বসতে একটা মিনি কারে ,আমি গাড়িতে উঠে বসলাম একটু পর গাড়িতে আরো ৩ জন উঠলো, কিন্তু সাথে লুবনার আব্বু নাই,গাড়ি ছেড়ে দিছে,আমি জিজ্ঞেস করলাম আঙ্কেল কই,ওরা বললো যে পরের গাড়িতে আসবে,
আমি লুবনার আম্মু কে ফোন দিলাম ওনি ফোন রিসিভ করে বললো সানি তুমি যাও লুবনা আমি আর লুবনার বাবা কাল সকালে আসবো,আমি বললাম তারাতারি আসবেন আন্টি,
এটা বলেই ফোন কেটে দিলো,
গাড়ি চলতে থাকলো কোথায় যাচ্ছে বুঝতে পারছিনা চারপাশে অন্ধকার, ওরা গাড়িতে বসে সিগারেট খাচ্ছে আমার বুমি চলে
এসেছে তবুও চুপচাপ আছি কেমন যানি একটা ভয় কাজ করছে, গাড়ি একটু স্পিডে চলছে,এক জন বললো ভাই দেখিতো আপনার ফোনটা কল দিবো আমার ফোনে চার্চ নাই, এই বলে আমি দিবার আগেই ওরা আমার ফোন নিয়ে নিলো হাত থেকে,
পরিস্থিতি যে ভ*য়ংকর হতে যাচ্ছে আমি বুঝতে পারছি,
হঠাৎ করে আমার ডান পাশে যে ছিলো ওনি আমার চোখ বেধে ফেলছে,মুখ ও বেধে ফেলছে আমার সব কিছু ওরা নিয়ে আমাকে তারা তাদের আয়ত্তের ভিতরে নিয়ে গেছে, আমি কান্না করছি কেউ শুনচ্ছে না আসতে আসতে আমার হাত পা সব বেধে ফেলছে, এই রকম অবস্থায় গাড়ি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলো,
একটা সময় কোন এক জায়গায় গাড়ি থামলো, আমাকে চার জন মিলে ধরে একটা রুমে নিয়ে গেলো, যে কাপড় দিয়ে চোখ বাঁধলো সেই কাপড় বেয়ে চোখের পানি ঝরতে লাগলো,
ওরা বলাবলি কতে লাগলো ওর যা আছে সব চেক কর কোন জায়গায় কি আছে, সব কিছু চেক করে লেপটপ আর আমাদের বিয়ের কাজের কপি পাইছে এই গুলা ওরা রেখে দিছে,
এক জন বললো ওর হাত পায়ের বাঁধন রেখে সব খুলে দে,
ওরা আমারে হাত পা বাঁধা অবস্থায় খালি ফ্লোরে ফেলে রাখছে, আরেক জন বলতে লাগলো টাকা কিন্তু এখন ও দেয়নি ছবি পাঠিয়ে দিয়ে বল টাকা দিতে,
আমি ওদের কে বললান ভাই আমাকে ছেড়ে দিন আমি কারো কোন ক্ষতি করিনি আপনাদের পায়ে ধরি আমাকে ছেড়ে দিন,
আমার কথা শুনে আরেক জন বললো মেয়ে ডাক্তারি করে দেখে লোভ সামলাতে পারোস নাই দুনিয়ার এক কোনা থেকে চলে আসলে জামাই পরিচয় দিবার জন্য,
আমি বললাম ভাই আমার ভুল হয়েছে আমি কেন আমার বউের ডিভোর্স জন্য আসলাম, আমি আর আসবোনা কোন দিন আমাকে ছেড়ে দিন, এই কথা বলার পর
একজন আমার গায়ে কাঠের কি দিয়ে জানি আঘাত করলো সাথে সাথে আমি ফ্লোরে গড়াগড়ি করে কান্না করতে লাগলাম
তখন একজন এসে আমার মুখে কাপড় বেধে দিলো,আর বললো একটা সাউন্ড করলে এখনি তরে খ*তম করে দিবো
তার পর ও কান্না থামছে না, অনেক রাত হয়ে গেছে ওরা ২ জন কে বললো তরা থাক আমরা একটু ঘুমাই,ওরা চলে গেলো ২ জনকে রেখে,
আমি চুপ করে পরে আছি ফ্লোরে, গায়ে অনেক জ্বর মনে হয় ওরা মা-রার আগেই আমি ম*রে যাবো,।
বাকি ২ জনের মধ্যে কথা হচ্ছে, এতো দূর থেকে কি কেউ আসে এখন যে বিপদে পরছে, কি দরকার ছিলো এতো দূরে আসা, মেয়ের কি অভাব পরছিলো,, জীবন বেঁচে থাকলে এমন মেয়ে আসবে আর যাবে,এইসব বলে ওঁরা ওঁরা আসফোস করতে লাগলো,
সকাল হয়ে গেছে নাকি রাত এখনো কিছুই বুঝতে পারছি না,
বাহিরের কোন শব্দ, শুনতে পাচ্ছি না,
সাথে যে ২ জন ছিলো ওদের ও কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যায় না,মনে হয় ঘুমাচ্ছে,
আমার চোখে ঘুম নাই কি হবে আমার কপালে, আমার আব্বু নাই আমাকে যদি ওরা মে*রে ফলে কে দেখবে আমার আম্মু আর আমার বোন কে,
এইসব ভেবেই আবার কান্না শুরু করলাম,এখন একজন বললো কান্না থামা তর কান্নার জন্য একটু ঘুমাতে ও পারিনা,
আমি এখন চুপ হয়ে গেলাম,
শরীলে এতো জ্বর আর ব্যথা নিয়ে কখন যে একটু ঘুমিয়ে গেছি টের পাইলাম না,
একটু পর ওরা আমাকে ডেকে খাবার দিলো হাত পায়ের সব বাঁধ খুলে দিলো, শুকনা রুটি আর একটু পানি, আমি খেয়ে ওদের বললাম ভাই আমাকে ছেড়ে দিন আমি বাড়ি চলে যাবো, তখন একজন বললো তরে এখন ছাড়া যাবে না, কখন ছাড়বো, না কি করবো এই সব এখন কিছুই জানি না,আজকে থেকে এই রুমে তুই একা থাকবি আমারা টাইম মতো খাবার দিয়ে যাবো আর যদি কোন চিল্লাচিল্লি করস কোন সাউন্ড করস তাইলে হাত পা বেধে রাখব, এই বলে ওরা চলে গেলো,
রুমের দরজা লাগিয়ে,
এখন দিন না রাত সেটাই বুঝতে পারলাম না, আমার জ্বরে সারা শরীর পুরে যাচ্ছে, আমি দরজায় টুকা দিলাম ২ বার সাথে দরজা খুলে জিজ্ঞেস করলো কি হয়েছে, আমি বলালম ভাই আমাকে গায়ে দিবার একটা কিছু দিতে পারবেন,ওরা বললো দাঁড়া দেখি কিছু পাই নাকি, একটু পর আমাকে একটা ছালার চট( বস্তা ) এনে দিছে,বললো এই নে আর কিছু নাই এটা বলে আবার দরজা বন্ধ করে দিছে,
আমি বস্তা টা গায়ে দিয়ে শুয়ে আছি, খাবার জন্য যে পানি দিছিলো সেইটা দিয়ে একটু পর পর মাথায় দিচ্ছি,
জ্বরের বেহুঁশ মতো পরে আছি, একটু পর একজন আসলো বললো এই নে টেবলেট খেয়ে নে, কিন্তুু লোকটা যখন আমার কাছে ঔষধ দিতে আসলো আমি ওর হাত নিয়ে কপালে দিলাম, ওনি বুঝতে পারছে আমি অনেক অসুস্থ,
_________________________________________
একটু ছোট করে লিখি কারণ যারা ফেসবুক লাইট ব্যবহার করে তাদের যেন সমস্যা না হয়,
গল্পটি যদি ভালো লাগে তাইলে কমেন্ট করবেন, তা হলে পরবর্তী পর্ব দিবো,