#সে_আমার_বৌপ্রিয়া
#নুসাইবা_ইভানা
#পর্ব-২
নো কিস মিস মিরহা। ইউ নো আমার ঠোঁটের ভার্জিনিটি বিয়ের আগে নষ্ট করবো না।
‘লল মিস্টার ফারজাদ আমি কখন বললাম আপনার ঠোঁটের ভার্জিনিটি নষ্ট করবো! আমি তো বলতে চেয়েছিলাম
‘এভাবে সামনে আসছেন কেনো মিস আমার ইজ্জত হরণ করতে!
‘ওলেলে মিস্টার ফারজাদ আপনার আবার ইজ্জত ও আছে?
‘ফারজাদ খানিকটা সরে যেয়ে বলে,সুন্দরী মেয়েরা এতো ডেঞ্জারাস হয় আগে জানা ছিলো না তো?
‘মিরহা দু কদম সামনে এসে বলে,আই লাইক ইট মিস্টার ফারজাদ। লাভ ইউ ডিয়ার ভিতুরাম।
‘প্লিজ একটু স্পেস দিয়ে কথা বলুন আমার কেমন গরম গরম লাগে আপনি কাছাকাছি আসলে।
‘ এটা হচ্ছে ভালোবাসর উষ্ণতা কানের থার্মোমিটার দিয়ে তাপ মাত্রা মেপে দেই?
‘ফারজাদ এক ছুটে সেখান থেকে চলে যেতে যেতে বলে,সুন্দরী মেয়েদের আমি পছন্দ করি না। তারা ছেলেদের ইজ্জত নিয়ে টানাহেঁচড়ার করে।
‘অর্ক এসে বলে মিরহা তুই চাচ্ছিসটা কি?
‘প্রেম করতে চাইছি?
‘মাসে ভার্সিটিতে আসিস দু একবার এরমধ্যে প্রেম! তাও এই হাঁদারাম কে!
‘সি ইজ সো ইনোসেন্ট এন্ড সো সো সো কিউট। এমন বয়ফ্রেন্ড তো পুরো পৃথিবী খুঁজেও পাবো না। প্রেম করলে আমি এর সাথেই করবো।
‘ফারজাদ গাড়িতে এসে হাসতে হাসতে বলে,পাখি টোপ গিলছে এবার সুযোগ বুঝে খাঁচায় বন্দি করার পালা৷
‘রাফিন বলে,বন্ধু তুই আবার ওর প্রেমে পরে যাবি না তো সত্যি! তারপর তোর দেয়া কথা ভুলে যাবি।
‘ফারজাত সিকদার নিজের দেয়া কথা ভুলে না৷ তোর আমানত তোর কাছেই এনে দিবো৷
পুরোনো দৃশ্যগুলো চোখের সামনে স্পষ্ট হতেই ফারজাদ মাথা তুলে সামনের দিকে তাকায় । এই মূহুর্তে ইচ্ছে করছে রাফিনকে খু’ন করতে কিন্তু আপাতত তাকে পালাতে হবে৷ যেভাবেই হোক মিরহাকে বাঁচাতে হবে৷ কোনভাবেই একটা মেয়ের জীবন তার জন্য নষ্ট হতে দেবে না। দরকার পরলে সারাজীবন মিরহার কাছে নিজেকে বিলীন করে দেবে।
বারবার ফাঁকফোকর খুঁজতে লাগলো ফারজাদ।
‘রাফিন পুলিশকে ডেকে বলে,স্যার আমার মনে হচ্ছে ফারজাদ পালানোর চেষ্টা করছে।
নাহহ কোন ভাবেই পুলিশ ভ্যান থেকে পালাতে পারলো না ফারজাদ।
থানায় এনে লকাপে রাখা হলো রাফিন আর ফারজাদকে৷। ফারজাদ রক্ত চক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে রাফিনের দিকে৷।
‘তোর মত একটা কু’কু’রের কাছে মেয়েরা আসলেই সেইভ না।
তুই না আমাকে বলেছিলে তুই মিরহাকে ভালোবাসিস! নিজের ভালোবাসার মানুষের সাথে কেউ এমন জানোয়ারের মত আচরন কিভাবে করে!
‘ভালোবাসা মাই ফুট। মিরহা আমার জেদ ও ভরা ভার্সিটিতে সবার সামনে আমার গালে ঠাসসস ঠাসসস করে চারটা থাপ্পড় দিয়েছিলো। আমাকে রিজেক্ট করেছিলো৷ আমি শুধু ওর কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলাম।
‘তোকে আমি মেরেই ফেলবো শা’লা।….
দুজনের মধ্যে মারাত্মক মারপিট শুরু হলো।
কনস্টবল দুজনকে দুই লকাপে আটকে রাখলো।
এরমধ্যেই জিসান এসে শুধু রাফিনের নামে ধর্ষনের চেষ্টা করার অভিযোগ দায়ের করে মামলা করে।
‘পুলিশ ফারজাদকে ছেড়ে দেয়।
ফারজাদ জিসানকে বলে,মিরহা ঠিক আছে? ওর এখন কি অবস্থা? কোথায় আছে ও? আমাকে একবার ওর সাথে দেখা করার সুযোগ করে দাও।
‘ভুলেও মিরহার নাম মুখে আনবেন না মিস্টার ফারজাদ সিকদার। আর কোনদিন মিরহার আশেপাশে দেখলে আপনাকে পুঁতে ফেলবো৷
ফারজাদ নিজের রাগ সংযাত করে বলে, ইউ নো তুমি কার সাথে কথা বলছো?যাস্ট ভুলটা আমার তাই সহ্য করছি৷ আমাকে একবার দেখা করার সুযোগ করে দাও। যাস্ট একবার।
‘স্যরি মিস্টার ফারজাদ আমার পক্ষে আপনার মত চিটারকে হেল্প করা সম্ভব নয়।
‘জিসান চলে গেলো।
ফারজাদ একটা চায়ের দোকানের বেঞ্চে বসে আছে। বাসায় তো তার মা তাকে প্রবেশ করতে দিবে না। তাহলে কোথায় যাবে এখন?
পকেটে হাত দিয়ে দেখে তিন/ চার হাজারের মত নগদ ক্যাশ আছে৷ ক্রেডিট কার্ড আছে দুটো। ফারজাদ উঠে এসে বুথ থেকে টাকা তোলার চেষ্টা করলো। কাজ হলো না। বুঝে গেলো তার মা হয়তো তার একাউন্ট সিল করে দিয়েছি। দোকানে এসে সিগারেট কিনলো দুইটা সাথে একটা দিয়াশলাই। সিগারেটে আ’গু’ন ধরিয়ে হাতের ফাঁকে নিয়ে টান দিতে লাগলো। ফারজাদ সিগারেট খায় না বলতে গেলে তবে মাঝে মধ্যে বন্ধুদের সাথে খাওয়া হয়।
ফারজাদ নিকোটিনের ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে যখন কোথায় থাকবে সে বিষয়ে চিন্তামগ্ন।
তখন পাশ থেকে একজন বললো, সিগারেট হাতে নিয়ে যখন টান দেও তখন তোমাকে “Nice and Attractive” লাগে।
ফারজাদ সামনে তাকিয়ে বলে বয়স কত তোমার?
‘তা যতহোক তোমার বৌ হওয়ার জন্য পার্ফেক্ট।
‘রাস্তাঘাটে দাঁড়িয়ে এসব অসভ্যতা করতে লজ্জা লাগে না।
‘সামনে যদি দাঁড়িয়ে থাকে ক্রাশ,আমি তখন অসভ্যতার ব্রাশ।
‘বেয়াদব যাহহহ এখান থেকে।
‘মামি কে বলে দিবো তুমি রাস্তায় দাঁড়িয়ে সি’গারেট টানছো৷
‘তুই কলেজ রেখে এখানে কেনো এসেছি? ওয়েট ফুপিকে কল করে এখনি জানাচ্ছি৷
‘আচ্ছা শোধবোধ তুমি বলবা না আমিও বলবো না৷ তা দেবদাসের মত চেহারা করে রাস্তায় মজনুর মত সি’গারেট কেন টানছো?
‘চুপচাপ বাসায় যা সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে। বেশি কথা বললে কানের নিচে ঠাটিয়ে দিবো এক৷
‘রাহনুমা রাহা এবার কলেজে ভর্তি হয়েছে। ফারজাদের ছোট মামার মেয়ে। রাহা একটা সিএনজি ডেকে সেটাতে উঠে পরলো।
‘ফারজাদ হাতে থাকা সি’গারেট পায়ে পিষে নিজেও উঠে বসলো।
‘তুমি আমার সাথে যাচ্ছো? বাসায় সবাই তো ভাববে আমাদের মধ্যে হয়তো কিছু চলছে।
‘ফরজাদ মোবাইলে একটা পিক বের করে বলে, ভালো করে তাকা এ হলো আমার বিয়ে করা বৌ আর তোর ভাবি৷ আর একটাও উল্টোপাল্টা কথা না বলে চুপচাপ বসে থাক।
🌿
মিরহার আজ রাতে ফ্লাইট। সব ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিচ্ছে ঠিকমত।
‘পুস্প বলে ইয়ার তোর মত যদি কপালে পাইলট জুটতো তাহলে এই ক্যাম্পে আর ফিরে আসতাম না। আর তুই কিনা পাইলটে রেখে পালিয়ে এসেছিস!
‘পাইলটের নাম্বারটা আমার কাছে আছে তোকে দেবো? সেটিং করে তারে নিয়ে মনের শহরে ফ্লাই কর।
‘আমার কপালে প্রেম নেই। বাবার স্বপ্ন আমাকে আর্মি বানাবে তাই নো অপশন আমার কাছে। আর তাছাড়া প্রেম করতে ঠান্ডা মেজাজ লাগে। আমার মেজাজ গরম তেলের মত মূহুর্তে মূহুর্তে ছ্যাত করে উঠে৷
‘লিজা বললো থাক কাঁদিস না আর দেড় বছর পর বিয়ের ছুটি পাবি তখন একটা শান্তশিষ্ট হাবা টাইপ ছেলে দেখে বিয়ে করে নিস।
‘রুমের বাকি সবাই আর মিরহা উচ্চ শব্দে হাসাহাসি করছে।
‘এরমধ্যেই মিরহার ফোনটা বেজে উঠলো৷ মিরহা কল রিসিভ করে বলে, কিরে ওদিকের খবর কি? তোর পাইলটের সাথে তোর কাজিনের বিয়ে দিয়ে দিয়েছে।
‘আমার পাইলট! আমার ছিলো বেকার৷ শা’লা আমার মনের সাথে নয় ছয় খেলে দিলো! আম্মুর খেয়াল রাখিস। আর ওই হিটলারের দিকেও নজর রাখিস।
‘তুই যাকে সো ইনোসেন্ট ভেবে প্রেম করেছিস। যাকে হাঁদারাম ভাবতিস সে আসলে সিকদার গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রির কর্ণধার। তাদের একমাত্র ছেলে ফারজাদ সিকদার।
‘হোয়াট! আমি জানতাম ওর সিকদার বংশ কিন্তু এতো ধনী সেটা তো জানতাম না।
‘তো কি দেখে নিজের বিয়ের আসর ছেড়ে পালিয়ে আসলি?
‘তুই বু্ঝবি না। প্রেমের চোখ অন্ধ। কিন্তু এর লাইফস্টাইল আর চলাফেরা এতো সাদাসিধে কিভাবে!
‘ওটা একটা ট্রাপ ছিলো তোকে ফাঁসানোর৷ সারাদিন বলে বেড়িয়েছিস তোর কেমন ছেলে পছন্দ৷ আর হুট করে ঠিক সেরকম একজন পেয়ে গেলি সাথে সাথে দুনিয়া ভুলে গেলি।
‘আরেহহহ ইয়ার আমি ফারজাদকে সত্যি ভালোবাসে ছিলাম। বুঝতে পারিনি আমি এভাবে ঠকবো। একদিন ঠিক ও বুঝবে সেদিন আমি আর ফিরবো না৷ কবুল পড়ে আল্লাহ তায়ালা বিধান মোতাবেক আমাদের বিয়েটা হয়েছে। আমি সারাজীবন এই বিয়ে মানবো৷ তবে ওর কাছে ফিরবো না৷
মিরহা কলটা কেটে দিয়ে বলে,কেনো করলেন আমার সাথে এমন? আমার কোমল হৃদয়টাকে এভাবে ক্ষতবিক্ষত না করলেও পারতেন মিস্টার ফারজাদ।
#চলবে