সে আমার বৌপ্রিয়া পর্ব-২৩+২৪

0
23

#সে_আমার_বৌপ্রিয়া
#নুসাইবা_ইভানা
#পর্ব -২৩

‘বৌ আমার খুব চুমু পাচ্ছে।
‘ঠোঁট কাটা লোক একটুও লজ্জা নেই তোমার!
‘বৌয়ের সাথে আবার লজ্জা! ওসব তোমার কাজ। এ-ই আমি চলে আসি বাসায়, প্রমিস দশটা চুমু খেয়ে ফিরে আসবো ।
‘উঁহু এসব খেতে হবে না । ডিনার করে ঘুমিয়ে পড়ো।
‘এ-ই জান, জান শুনছো।
‘শুনছি তো বলো।
‘জান চুমু।
‘নাহহহ এখন কোন চুমু টুমু হবে না।
‘আচ্ছা জান আমি ভিডিও কল করি তুমি চুমু দাও। চুমু না খেলে ঘুম আসবে না আজ।
‘আমি ঘুমাবো। তুমি জেগে জেগে তারা গননা করো৷ ঘুম থেকে উঠে সকালে কিন্তু জিজ্ঞেস করবো আকাশে কতগুলো তারা ছিলো। বলেই কল কেটে দিলো মিরহা।
‘আনরোমান্টিক বৌ একটা।
‘তুই আমার বাসায় আমার মতো সিঙ্গেল ছেলের সামনে বৌয়ের সাথে প্রেম করিস লজ্জা করে না?
‘এতো বড় দামড়া ছেলে এখনো বিয়ে করিসনি তোর লজ্জা করে না! আমাকে দেখ কয়েকদিন পর বাবা হয়ে যাবো৷
‘রাহাত বললো, আমি তোকে আগেই বলেছিলাম তুই মিরহাকে ভালোবাসিস৷ আমারে দুইটা ঝাড়ি দিয়ে চুপ করিয়ে দিয়েছিস৷ এবার হলো তো আমার ধারনা সত্যি?
‘ইয়ার তখন আমি বুঝতেই পারিনি আমি আসলেই ভালোবেসে ফেলেছি এ-ই তিড়িংবিড়িং মেয়েটাকে।
‘প্রথম কবে রিয়েলাইজ করলি?
‘রাফিনের বাসায় যেয়ে যখন ওর লেহেঙ্গার ওড়নাটা ফ্লোরে পরে থাকতে দেখেছি। আমার দুনিয়া মূহুর্তে উল্টে গেলো! ইচ্ছে করছিলো রাফিনকে পুঁতে ফেলি। আমার ভেতর থেকে তখন অনুভব করলাম এ-ই মেয়েটা আমার শুধুই আমার প্রেয়সী। আমি ছাড়া আরও কারো অধিকার নেই ওকে টাচ করার।
‘পুরা রোমিও হয়ে গেছিস!
‘ভালোবাসায় মানুষ রোমিও,মজনু, দেবদাস সবাই হতে পারে। এমনকি পৃথিবীর সবচেয়ে নির্লজ্জ হতে পারে শুধু মাত্র ভালোবাসা পাওয়ার জন্য।
‘আমি আগেই বুঝেছিলাম তোর সাথে ওর কেমিস্ট্রি ডিপ হচ্ছে দিনদিন। তোরা একে অপরের সাথে জড়িয়ে পরছিস ভেতর থেকে। কিন্তু তোর উপরের মানুষটা সেটা বিশ্বাস করতে নারাজ ছিলো।
‘যা হয় ভালোর জন্য হয়।না মিরহা রাফিনকে রিজেক্ট করতো, না আমি প্রেমের নাটক করতাম। আরও না এতো কিউট একটা আদুরে বৌ পেতাম।
‘রাফিন কিন্তু তোর কাছ থেকে একটা ধন্যবাদ পাওনা৷
‘শা’লারে পেলে হাড়ি গুড়ো করে দেবো। সাহস কত বড় আমার বৌয়ের নামে উল্টোপাল্টা কথা বলে!
‘বাদ দে ছাগলের কাজই ঘাস খাওয়া৷ তাই বলে কি সারাক্ষণ ছাগলের পিছনে টাইম ওয়েস্ট করবো?
‘ছাগল ঘাস খাবে খাক, ঘাস রেখে বাড়িতে মুখ দিতে চাইলে,সোজা জাবাই করে রোস্ট করে খেয়ে ফেলতে হবে৷
‘কিরে আন্টি আমাকে কল করছে!তোর ফোনে কি হইছে?
‘ব্লক করে দিয়েছি।
‘ফোন রিসিভ কর আরও কথা বল।
🌿
রুবিনা সিরিয়াসলি তুমি রাফিনের মতো ছেলের কথা বিশ্বাস করেছো!
‘না করার কি আছে? ছেলেটার সাথে প্রথমে সম্পর্কে ছিলো মেয়েটা।
‘বাহহহ তাই নাকি! তা তোমাকে এ কথা করে বললো?
‘রাফিন নিজেই বলেছে।
‘আমি যদি তোমাকে বলি আমি একজনকে খুন করেছি তুমি সাথে সাথে বিশ্বাস করবে?
‘কি বলতে চাও?
‘আমার বংশের সম্মান আমার ছেলের বৌ। আমি গতকাল তার ব্যাপারে ডিটেইলসে সবাই খবর নিয়েছি। সাবেক সেনাপ্রধানের একমাত্র মেয়ে। ঢাকাতে বাড়ি আছে। অর্থ সম্পদ মান সম্মান সবাই দিক থেকে উচ্চ স্তরের। তাছাড়া অত্যান্ত ভদ্র,ভালো চরিত্রের একজন মায়ের চরিত্রবান মেয়ে। প্রেম বিয়ে যা করেছে সবই তোমার ছেলের সাথে। তাও আবার মেয়েটা জানতো না আগে তোমার ছেলে কোন উচ্চ বংশের বা ধনী পরিবারের ছেলে।
‘কিন্তু রাফিন যে বলল,মিরহার গর্ভে ওর সন্তান।
‘বলল আরও তুমি বিশ্বাস করলে!ও ছিলো জেলে তাহলে ওর সন্তান কি করে হয়!তোমার ছেলে অস্ট্রেলিয়া থেকে হানিমুন সেরে আসছে। সে খবর রাখো?
‘স্যরি আমার একদম উচিৎ হয়নি বদমাশ ছেলেটাকে বিশ্বাস করা।
‘আমাকে স্যরি না বলে,ছেলেকে ডেকে নিজের ভুল স্বীকার করো। আগামীকাল বেয়াই বাড়িতে চলো, সামাজিক ভাবে ধুমধাম করে অনুষ্ঠান সেরে যোগ্য বৌকে যোগ্য সম্মান দিয়ে ঘরে তুলে আনি।
‘মেয়েটা দেখতে মাশা’আল্লাহ। রাফিন ছেলেটাকে আমি ছাড়বো না। মানহানীর মামলা দেবো। ওর জায়গা জেলে।

🌿
আম্মু তুমি আমার কথাটা বোঝার চেষ্টা করো।
‘তোর কোন কথাটা আমি বোঝার চেষ্টা করিনি?
‘যখন যা বলেছিস সেটাই তোর সামনে হাজির করেছি। যে ভাবে চাস সেভাবে বেড়ে উঠতে দিয়েছি। তাই বলে তার ফল স্বরূপ আমাকে এইদিন উপহার দিলি!
‘আম্মু তুমি হুট করে আমার বিয়ে ঠিক করলে। আমাকে কিছু বলার সুযোগ দাওনি। কতবার বলেছি আমি এ-ই বিয়ে করবো না। তবুও আমাকে জোর করলে একপ্রকার। আমি ফারজাদকে ভালোবাসতাম ভরসা করতাম।তাই বিশ্বাস করে ওর হাত ধরার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সবাই ঠিক ছিলো কাজি অফিসে আমাদের বিয়েটাও হলো। ভেবেছিলাম তোমার সামনে আসবো ফারজাদের হাত ধরে। তুমি বকো মারো যা করো ক্ষমা করবেই। কিন্তু আমার ভাগ্যে ছিলো খারাপ কিছু। আমি জানতাম না ফারজাদ আমাকে ওপর বন্ধুর জন্য বিয়ে করেছে। আচ্ছা আম্মু তুমিই বলো এতো নিখুঁত অভিনয় কেউ ধরতে পারে! আমি ঠকে গেলাম হেরে গেলাম। কোন উপায় না পেয়ে চলে গেলাম ক্যাম্পে। কিন্তু ফারজাদ সেখানেও উপস্থিত। একটা মানুষ যাকে তুমি পাগলের মতো ভালোবাসো। সে যত অন্যায় করুক তাকে অসহায় অবস্থায় একা ছাড়া যায় না। আমিও পারিনি।নিজেকে সামলে নিতে নিতে ক্লান্ত হয়ে ওপর কাছে সমর্পণ করেছি। ভালোবাসার মতো অসহায় বস্তু পৃথিবীতে আর নেই। এ-ই একটা শব্দ মানুষকে বেহায়া করে তুলে। নয়তো এতো কিছুর পরেও ওর সুইসাইড করার টেক্সট পরে নিজেকে আটকে রাখতে পারিনি। চলে গিয়েছিলাম সব ভুলে। তখন শুধু মনে হয়েছিলো আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও ওপর জীবন চাই। আমি তবুও কঠোর হয়ে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলাম৷ কারন ফারজাদের ভুল বোঝার বাতিক আছে৷ কিন্তু শেষমেশ আমার গর্ভে ওর অনাগত সন্তান আমাদের ভালোবাসার চিহ্ন। আমাকে বাধ্য করলো ওর কাছে ফিরতে৷ বিশ্বাস করো আম্মু আমি চেয়েছিলাম আমার সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখাবো না৷ কিন্তু আমি পারিনি আমার নিজ হাতে আমার সন্তানকে হত্যা করতে৷ চলে এসেছি সবাই ফেলে শুধুমাত্র নিজের সন্তানের অধিকারে জন্য। আমি ফারজাদকে ছাড়া বাঁচতে পারবো৷ কিন্তু আমি চাইনা আমার সন্তান তার বাবার আদর ছাড়া বড় হোক। আমি অসহায় আম্মু। আমার সন্তানের অধিকারের কাছে নিজের ভালোবাসার কাছে। আমাকে যা শাস্তি দাও আমি মাথা পেতে নেবো। তবুও আমাকে দূরে ঠেলে দিও না৷
‘তারমানে এ-ই ছেলেটা সেদিন সত্যি বলেছিলো?
‘কোনদিন আম্মু।
‘যেদিন তুমি বলেছিলে একে আমি চিনিনা৷ এবার তোমার শ্বশুর শ্বাশুড়িকে আসতে বলো তোমাকে বিদায় করতে হবে তো।
‘মিরহা শিরন বেগমকে জড়িয়ে ধরে বলে,সত্যি তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছো!
‘তোমার যে সন্তান দুনিয়ায় আসেনি তার জন্য এতো ভালোবাসা? আর আমার সন্তানের প্রতি আমার বুঝি কমে ভালোবাসা!
‘আম্মু তুমি বেস্ট।
‘এ-ই তোর কয়মাস?
‘মিরহা লজ্জা পেয়ে বলে দুইমাস চলে৷
‘চোখের পানি মোছ এখন থেকে তোর ডাবল খেয়াল রাখতে হবে।
‘তুমি আছো তো সবাই তোমার দ্বায়িত্ব।
‘তবে তুই যেমন তেমন জামাই আমার মনের মতো৷
‘ওহহ এখন আমাকে বাদ দিয়ে জামাইয়ের ভক্ত। দুজন কথা বলছিলো তখন একটা ছাড়িয়েছে সেই মূহুর্তে কলিং বেল বেজে উঠলো।
‘কিরে এতো রাতে কে আসলো!
‘মিরহা মনে মনে বলে,চুমুখোড় আপনি ছাড়া আর কেউ না৷
‘তুই দাঁড়া আমি দরজা খুলে দেখি।
‘আম্মু তুমি বসো আমি দেখি। দরজা খুলেই মিরহা চিৎকার দিলো।……….
#চলবে

#সে_আমার_বৌপ্রিয়া
#নুসাইবা_ইভানা
#পর্ব -২৪

মিরহার চিৎকার শুনে, শিরিন বেগম দ্রুত দরজার কাছে আসলেন৷ যুবক বয়সের একটা ছেলে হাতে ছু*রি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ কপাল থেকে র*ক্ত ঝরছে মুখে বিশ্রী হাসি৷
‘ কে তুমি? এখানে কি চাও?
‘এ-ই বুড়ি একদম চুপ। আমি শুধু আমার ডার্লিংকে চাই৷
‘আম্মু এরসাথে কথা বইলো না সাইকো একটা।
‘হ্যা আমি পাগল। পাগলের কাজ জানিস তো? পাগলের কাজ পাগলামি আমিও পাগলামি করবো৷ তোকে আর তোর বাচ্চাকে দুনিয়ায় থেকে বিদায় করবো। আমি বেঁচে থাকতে তোকে অন্য কারো বাচ্চার মা হতে দেবো না।

মিরহা পিছু হটলো। এসব সামলানো তার কাছে বা হাতের খেল। কিন্তু সে এখন গর্ভবতী। চাইলেই লড়াই শুরু করে দিতে পারে না। আমি কে এখন নিশ্চয়ই জেনে গেছিস মেরে তক্তা বানিয়ে দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখবো৷
‘মিরহা, মিরহা তোরে আমি ভালোবেসেছিলাম এটাই কি আমার দোষ! তুই আমাকে ভালোবাসতে পারলি না কিন্তু আমার ফ্রেন্ড ফারজাদকে ভালোবাসলি! কেনো? কি কমতি ছিলো আমার?

‘ভালোবাসা আর পাগলামির মধ্যে পার্থক্য আছে। ভালোবাসা কেউ জোর করে আদায় করতে পারে না৷ আর তাছাড়া এখন আমি অন্য কারো বৌ প্লিজ আমাদের শান্তিতে বাঁচতে দিন নিজেও শান্তিতে থাকুন।
‘শান্তি! বলে পাগলের মতো হাসতে শুরু করলো। শান্তি এখন তোর রক্তে ভেজা লাশ দেখতে। শান্তি এখন ফারজাদের একাকীত্ব দেখতে। এইটুকু হলেই আমি শান্ত হবো৷
‘বাবা তোমার কাছে আমি হাত জোড় করছি প্লিজ আমার মেয়ের কোন ক্ষতি করো না৷ শান্ত হও আমরা বসে কথা বলি।
‘আম্মু তুমি ফারজাদকে কল করো।
‘শিরিন বেগম সামনের দিকে পা বাড়াতেই রাফিন মিহির গলায় ছুড়ি ধরে বলে, ডিয়ার না হওয়া শ্বাশুড়ি আম্মা আপনার কল ওর ফোনে ঢোকার আগেই আপনার মেয়ে এ-ই দেহ থেকে প্রাণ ত্যাগ করবে। কল করতে না যেয়ে বরং শেষ কিছু কথা বলে নিন মেয়ের সাথে।
‘শিরিন বেগম বলেন, দয়া করে এমন কিছু করো না আমি কাউকে কল করবো না৷ তুমি যা চাও তাই হবে তবুও আমার মেয়ের কোন ক্ষতি করো না।
‘আপনার মেয়েকে মুক্তি দেবো। শান্তিতে ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দেবো। এরপর আর কোন কষ্ট থাকবে না আপনার মেয়ের।
‘ফারজাদ মিরহার ফোনে কল করেই যাচ্ছে রিং হচ্ছে কিন্তু রিসিভ হচ্ছে না।
‘রাহাত ফারজাদের হাত থেকে ফোনটা নিয়ে বলে,ঘুমাতে দে ভাবিকে। বিরক্ত করছিস কেন!
‘ও এখানো ঘুমায়নি আমি জানি কিন্তু ফোনটা রিসিভ করছে না কেনো!সব ঠিক আছে তো?
‘ভাগ্যিস বিয়ে টিয়ে করিনি নয়ত তোর মতো অবস্থা হতো৷
‘ফারজাদ ফোনটা নিয়ে শিরিন বেগমের মোবাইলে কল করলে রিং হয়ে কেটে যাচ্ছে কেউ রিসিভ করছে না৷ ফারজাদ জিসানের মোবাইলে কল করে।
‘দুলাভাই প্রেমে ডিস্টার্ব করার কারন কি?
‘আমার বৌয়ের খোঁজ পাচ্ছি না। বাসায় কোন সমস্যা হলো নাতো?
‘রাত আড়াইটা বাজে আপনি আপনার বৌয়ের খোঁজ করছেন শালার প্রেমে ডিস্টার্ব করে?
‘প্রেম পরে করো আগে আমার বৌয়ের খোঁজ দাও।
‘ওয়েট বৌ পাগল দুলাভাই।
‘জিসানও কল করে কাউকে পেলো না। সাথে সাথে দারোয়ানকে কল করলো৷ দারোয়ান কল রিসিভ করছে না। এবার জিসানেরও ভয় ঢুকলো মনের মধ্যে সবাই ঠিক আছে তো? দ্রুত ফারজাদকে কল করলো।
‘কোন খোঁজ পেলে?
‘আপনি কোথায় আছেন? এ-ই মূহুর্তে বাসায় যেতে কতটা মিনিট লাগবে?
‘রাহাতের বাইক আছে সর্বোচ্চ বিশ থেকে পনেরো মিনিট।
‘দ্রুত বের হোন। আমার মনে হচ্ছে বাসায় কোন সমস্যা হয়েছে। দারোয়ানের নাম্বারে কল করেছি রিসিভ করছে না।
‘আমি এক্ষুণি বের হচ্ছি তুমি অন্য কারো নাম্বার থাকলে ট্রাই করো।
‘ফারজাদ দ্রুত বেরিয়ে পরলো। কল দেয়া বন্ধ করেনি কল করেই যাচ্ছে।
‘রাহাত বলল,তোর সাথে লাস্ট কি কথা হয়েছে।
‘এমন কোন কথা হয়নি যার কারনে এতোবার কল করার পরেও রিসিভ করবে না। বাইকের গতি সর্বোচ্চ বাড়িয়ে দে।
🌿 এতো বারবার ফোনের রিংটোনে আইরিনের ঘুম ভেঙে গেলো। চোখ ডলে ঘুম থেকে উঠে, মামি মামি বলে ডাকতে ডাকতে রুমে এসে মিরহার ফোন বাজতে দেখে রিসিভ করলো।
‘এতোক্ষণ ফোন কেন রিসিভ করছিলে না! কমন সেন্স নেই তোমার? কি হলো চুপ করে আছো কেন?
‘জিজু আমি আইরিন।
‘মিরহা কোথায়?
‘জানিনা আমার মাথা ব্যথা ছিলো তাই ঘুমের মেডিসিন খেয়ে পাশের রুমে ঘুমাচ্ছিলাম। বারবার রিংটোনের আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেলো রুমে এসে মামিকেও দেখছি না। মিরহাকেও দেখছি না।
‘সামনের রুমে যাও দেখো কোথায় আছে?কল কাটবে না। ফোনটা হাতে রাখো এমন ভাবে ধরো যাতে কেউ বুঝতে না পারে।
‘আইরিন হল রুমে এসে স্তব্ধ হয়ে গেলো। কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,কে আপনি? আপুর গলায় এভাবে ছু*রি কেন ধরে রেখেছেন!
‘তুমি কে গোল মামুনি? বাসায় আর কে কে আছে?
‘আপনি ছু*রি সরান।
‘চুপ একদম চুপ। এ-ই ধর থেকে মাথা আলাদা না করে আমি নড়ছি না।
‘ফারজাদ কন্ঠ শুনে বুঝে গেছে কি ঘটছে এখানে। গালি দিয়ে বলে তোকে আমার হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না।
‘রাহাত বলে,রাফিন?
‘হুম দ্রুত চল হাতে বেশি সময় নেই।
‘রাফিন হালকা করে মিরহার গলায় একটা টান দিতেই চামড়া কেটে রক্ত ঝড়া শুরু হয়। মিরহা চিৎকার করে উঠে।
‘বেবি এতোটুকুতেই চিৎকার করলে হবে? তোমাকে তো আমি আরো কষ্ট দিয়ে মারবো। ছু*রিটা পেটের সামনে ধরে বলে,এ-ই গর্ভে আমার সন্তান থাকার কথা ছিলো৷ আমি হতাম এ-ই সন্তানের বাবা৷ তোকে নিশানা করলাম আমি আর মধু খেলো অন্য কেউ। এটা তো অন্যায় ভারি অন্যায়। তোর আর এ-ই বাচ্চার এ-ই পৃথিবীতে বাঁচার কোন অধিকার নেই৷
‘আইরিন বারবার মোবাইলের দিকে তাকাচ্ছে। দরজা বন্ধ ভেতরে তিনজন মেয়ে মানুষ একজন পুরুষের হাতে জিম্মি।
‘মিরাহা কাতর কন্ঠে বলে,আমাকে মেরে ফেলে কি পাবে তুমি? যদি মারতেই হয়ে তাহলে মেরে ফেলো।
‘ ছু*রি ঠোঁটের উপর ধরে বলে,চুপ একদম চুপ। কোন শব্দ করবি না। এ-ই ঠোঁট দিয়ে তুই ফারজাদকে স্পর্শ করেছিস? ছুড়ি হাতের কাছে এনে হাতে হালকা ভাবে টান দিয়ে বলে,এ-ই হাত দিয়ে আমাকে চড়ে মেরেছিস। চামড়া কেটে রক্ত বের হতে লাগলো। পাগলের মতো হেসে বলে,তোর রক্ত দেখে আমার কেমন শান্তি শান্তি লাগছে। একহাত দিয়ে পেটে কাছে ছুড়ি ধরে রেখে মিরহার কাটা হাতে জিহ্বা লাগিয়ে রক্ত চুষে খেতে লাগলো।
‘ মিরহার গা গুলিয়ে বমি চলে আসলো৷ হরহর করে বমি করে দিলো। মনে হচ্ছে এখনি চোখ বন্ধ হয়ে আসবে। চারপাশ সব অন্ধকার হয়ে আসছে।
‘শিরিন বেগম একটা ফুলের টব নিয়ে রাফিনের মাথায় আঘাত করলো।
‘রক্ত ঠোঁট, চোখ বড়ো করে শিরিন বেগমকে স্বজরে ধাক্কা দিয়ে ফেলো দিলো।
‘মিরহা আম্মু বলে চিৎকার করে সামনে এগিয়ে আসতে চাইলে রাফিন শক্ত করে হাত ধরে রেখে বলে,তোর খেল খতম। তোর রক্ত খেয়েছি এবার গোসল করবো। বলেই ছুড়িটা মিরহার পেটে ধরে।
‘মিরহার চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। কোনমতে বলে,আমার সন্তানের জন্য আমার জীবন ভিক্ষা দাও।
‘রাফিন অট্টহাসি দিয়ে বলে,তোমার জীবনের সমাপ্তি।
ফারজাদ সিড়ি বেয়ে দরজার কাছে এসে রক্ত দেখে দরজায় লাথি দিতে থাকে।
‘ততক্ষনে পুলিশ এসেও হাজির হয়। দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকতেই ফারজাদ মিরহা বলে চিৎকার করে ছুটে যায়…

#চলবে।