#হলুদ_বসন্ত
#পার্ট_আট
জাওয়াদ জামী জামী
” তো, এই পরিকল্পনা ছিল তোর? আমার মায়ের মন জয় করে, তাকে দিয়েই আমাকে জয় করার পরিকল্পনা! জায়গামত চাল দিয়েছিস একদম। অবশেষে তোরই জয় হয়েছে । কিন্তু তোর ভাবনা ভুল। তুই আমাকে জয় করেছিস ঠিকই, কিন্তু আমার মন কোনদিনও জয় করতে পারবিনা। আমার সাথে ছলচাতুরী করার শাস্তি তোকে আমি দেব। পেয়েও হারানোর কষ্ট কাকে বলে জানিস? এবার থেকে বুঝবি সেটা কি। তুই জানতিস রিশা আমার কাছে কি। তুই সবকিছু জেনেশুনেও কি নিখুঁত পরিকল্পনা করেছিস গোপনে গোপনে! আমিও বোকা তোকে এতগুলো বছর চোখ বুঁজে বিশ্বাস করে এসেছি। ”
ইশরাকের কথায় হতভম্ব হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে থাকে অবনী। ওর বিশ্বাসই হচ্ছেনা আজ থেকে ওর পরিচয় ও ইশরাক আজাদের স্ত্রী। আর পাঁচটা বিয়ের মত ওর বিয়েতে কোন ধুমধাম নেই, নেই মানুষের ভীড়, সাজানো হয়নি বাসর। অবশ্য এসব আশাও করেনি অবনী। হুট করেই বড়মা আর বড় চাচা ওদের বাড়িতে গিয়ে বাবা-মা’ র সাথে কিছুক্ষণ কথা বলল। এরপর ওকে ডেকে জানাল, আজই ইশরাকের সাথে ওর বিয়ে। ঘটনার আকস্মিকতায় হকচকিয়ে গেলেও অবনী বারবার সবাইকে বোঝাল এটা কিছুতেই সম্ভব নয়। কিন্তু বড়মা ওর কোন আপত্তিই কানে নেয়নি। দুই ঘন্টার মধ্যে কাজি ডেকে ওদের বিয়ে পড়ানো হল। কলেরপুতুলের মত প্রত্যেকের কথামত কাজ করে গেছে অবনী। সেই সাথে ভেবেছে নিজের ভবিতব্য। ও এতটুকু বুঝতে পেরেছিল, ভাইয়া এই বিয়েটাকে স্বাভাবিকভাবে নিবেনা। রিয়্যাক্ট সে করবেই। হলোও তাই। ইশরাকের ভুল ভাঙতে চাইল অবনী। হযতো সে বিশ্বাস করবেনা। কিন্তু চেষ্টা করতে দোষ কি?
” তুমি ভুল ভাবছ, ভাইয়া। সত্যিই আমি কিছু জানতামনা। বিশ্বাস কর। ”
অবনী কথা শেষ করতে পারলনা, তার আগেই ইশরাকের হাত চেপে ধরল ওর দু গাল।
” তোকে বিশ্বাস করব আমি? এতটাও পাগল আমি নই। লোভ জন্মেছিল তোর মনে? আমাদের অর্থবিত্ত দেখে নিজেকে সামলাতে পারিসনি তাইনা? তুই ভালো করেই জানতিস, হাজার চেষ্টা করলেও তোর বাবা আমার বাবার সমকক্ষ হতে পারবেনা। ভেবেছিলি, একবার আমার বউ হতে পারলে, আর পেছন ফিরে তাকাতে হবেনা। তোর সাথে সাথে তোর পরিবারেরও দ্বায়িত্ব নেবে বাবা। এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছিস তুই। আর নিজের পরিকল্পনায় সফলও হয়েছিস তুই। লোভী মেয়ে, এতটা নীচ তোর মন-মানসিকতা? নিজেকে আর পরিবারের মানুষকে একটু ভালো রাখার আশায় এতবড় খেলা খেললি আমার সাথে? এখন থেকে নিশ্চয়ই তোর বাবাকে আর মাঠেঘাটে পরিশ্রম করতে দিবিনা? ইনিয়েবিনিয়ে আমার মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজের বাড়িতে দিবি? টাকাও পেলি আবার প্রতিশোধও নেয়া হলো? ”
ইশরাকের হাতের চাপে ব্যথায় ককিয়ে উঠল অবনী। কিন্তু ইশরাকের হাত ওর মুখ চেপে রাখায় শব্দ করতে পারলনা। দু গাল ব্যথায় টনটন করছে। সেই সাথে ব্যথা করছে মাথা। দুফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ল দু-চোখ বেয়ে। ইশরাক সেটা দেখলওনা। সে তো ব্যস্ত নিজের রাগ মেটাতে। একনাগাড়ে কথা বলেই চলেছে সে।
” আমার মা কখনোই তোদের আলাদা চোখে দেখেনি। তোদের দু বোনের প্রয়োজনিয় সকল কিছু তোরা না চাইতেই পেয়ে গেছিস। আমরা যা খেয়েছি, তোদেরকেও সেগুলোই দিয়েছে। এতেও মন ভরেনি? বড় পরিসরে সবকিছু পেতে চেয়েছিলি? লোভী মেয়ে। বেড়িয়ে যা আমার রুম থেকে। তোকে স্ত্রী হিসেবে ভাবতেও আমার শরীর ঘিনঘিন করছে। ইশরাক আজাদের স্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা সবার থাকেনা। তোরও নেই। তুই আমার কাছে দুই পয়সার একটা মেয়ে বৈ আর কিছুই নয়। কথাটা কানে ভালোভাবে ঢুকিয়ে নে। আর কোনদিনও আমার রুমে আসবার চেষ্টা করবিনা। আমার আশেপাশে ঘেঁষার চেষ্টা করবিনা। তোর ছায়াও যেন আমার শরীরে না লাগে। যা বেরিয়ে যা। ”
ইশরাক টেনে রুম থেকে বের করে দিল অবনীকে। ওকে ছুঁড়ে ফেলল ড্রয়িংরুমের মেঝেতে। শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে বন্ধ করল রুমের দরজা। অবনী কাঁদতে কাঁদতে সবটা দেখল। ও জানত ইশরাক ওর সাথে রাগ দেখাবে। কিন্তু এতটা ঘৃণ্যভাবে ওর সাথে কথা বলবে এটা বুঝতে পারেনি। কাঁদতে কাঁদতে উঠে দাঁড়াল অবনী। বাড়িতে যাওয়ার জন্য দরজার সামনে গিয়ে দেখল ভেতর থেকে তালা দেয়া। এই বাড়িতে এক মুহূর্ত থাকতে ওর ইচ্ছে করছেনা। অসহ্য লাগছে সবকিছু। এদিকওদিক তাকিয়ে চাবি খোঁজার চেষ্টা করল। সম্ভাব্য সব জায়গায় খুঁজে দেখল। কিন্তু হতাশ হতে হল ওকে। বাধ্য হয়ে ফাঁকা আরেকটা রুমে গেল। সিদ্ধান্ত নিল রাতটা এখানেই কাটিয়ে, সকাল হলেই বাড়িতে চলে যাবে। কিন্তু সকাল হলেও ওর আর নিজের বাড়িতে যাওয়া হলোনা। নাজমা আক্তার ফোন করে কয়েকজন কাছের মানুষকে দাওয়াত দিলেন। স্বামীকে পাঠালেন বাজারে। অবনী যে আরেকটা রুমে রাত কাটিয়েছে সেটা তিনি দেখেও না দেখার ভান করলেন। এমনকি অবনীকে কোন প্রশ্নও করলেননা। সকাল থেকেই তিনি অবনীকে নিজের কাছেই রেখেছেন।
***
সেদিন দুপুরেই বাবার বাড়িতে আসল ইশরাকের চার ফুপু। তারা বাড়িতে এসেই হম্বিতম্বি শুরু করে দিল। তাদেরকে না জানিয়ে ছেলের বিয়ে দেওয়ায় নাজমা আক্তারকে ভৎসনা করতেও দ্বিধা করলনা।
” তুমি এমন মানুষ আগে বুঝবার পারিনি। আম্গো না কইয়াই তুমি ইশুর বিয়া দিলা? তাও আবার ঐ ফকিন্নির ঘরের ছেমরির সাথে? তোমার বিবেক দেইখা আমি টাসকি খাইছি। ” আরজু খেঁকিয়ে উঠল।
” আমার বিচার করতে আপনাদের ডাকিনি। আপনাদের দাওয়াত করেছি। আপনারা এসেছেন ভালো কথা। খান-দান, আনন্দ করুন, যে কয়দিন ইচ্ছে বাপের বাড়িতে থাকুন। কিন্তু আমরা কি করলাম, কেন করলাম এসব নিয়ে কোন প্রশ্ন না করলেই ভালো হয়। ”
” তুমি কি কইলা? আমারে তুমি উপদেশ দিতাছ? মুখ বেশি বাইড়া গেছে তোমার। আম্মায় মাঝেমধ্যেই সেই কথা কয়, কিন্তু আমি বিশ্বাস যাই নাই। আইজকা আমার বিশ্বাস হইল। ইশু তোমার একার পোলা নয়, হেয় আম্গোরও ভাতিজা। হের ফুপু হিসাবে আম্গোরও অধিকার আছে ওর বিষয়ে কথা কওনের। তুমি পরের ঘরের মাইয়া আইসা আম্গো বাড়ির বিষয়ে নাক গলাইবা এইডা হয়না। ”
” আমি যদি পরের ঘরের মেয়ে হই, তবে আপনারাও নিশ্চয়ই শ্বশুর বাড়িতে পরের ঘরেরই মেয়ে? কিন্তু আমার জানামতে আপনারা শ্বশুর বাড়ির সবাইকে নিজের হাতের মুঠোয় করে নিয়েছেন। শুনেছি সবাইকে আঙুলে নাচান আপনারা। নিজের শ্বশুর বাড়িতে আপনারা রাজত্ব করবেন এটা দোষের নয়, কিন্তু আমার বাড়িতে আমি নিজের পছন্দমত কাজ করব এটা দোষের হয়ে গেল? ইশু আমার সন্তান। আর সন্তানের ভালোমন্দ দেখবার আপনাদের নয় অধিকার আমার আছে। তাই কথা না বাড়িয়ে এই প্রসঙ্গ বাদ দিলেই ভালো হয়। আরেকটা কথা আপনার মায়ের যদি আমাকে নিয়ে এতই সমস্যা হয়, তবে তাকে আপনারা নিজেদের কাছে নিয়ে রাখুন। আব্বা আমার কাছেই থাকবে। আপনার মা-ও মেয়েদের বাড়িতে গিয়ে সুখ করে আসুক। তারও বোঝা দরকার, কোথায় তার আসল সুখ। ” আজ নাজমা আক্তার একটুও ভয় পেলেননা। শ্বাশুড়ি, ননদের কিছু তিক্ত কথা শুনিয়ে দিলেন। বৃদ্ধ আব্দুর রহিম কিংবা ইসহাক আজাদ কেউই কোন প্রতিবাদ করলেননা। কারন তারা জানেন, একটা সময় এরা মা-মেয়ে মিলে কি অত্যাচারটাই না করেছে নাজমা আক্তারকে।
নাজমা আক্তারের কথা শুনে সকলেই মিইয়ে গেল। আর কোন কথা না বলে সুড়সুড় করে মায়ের ঘরে গেল। ইশরাক রুম থেকে সবকিছু শুনল কিন্তু একবারের জন্যও বের হলোনা।
” অবনী রে, একদিক থেকে তোর ভাগ্য আমার থেকে ভালো। কেন জানিস? তোর কোন ননদ নেই। ননদের বিষবাক্য কখনো তোকে হজম করতে হবেনা। অবশ্য শুধু ননদের কথা বলছি কেন, শ্বশুর বাড়ির কারো কথাই তোকে হজম করতে হবেনা। আমি হতে দেবোনা সেটা। ঢাল হয়ে তোর সামনে গিয়ে দাঁড়াব। ” রান্নাঘরে এসে অবনীকে বললেন নাজমা আক্তার৷
” আমি বাড়ি যাব, বড়মা। ” নাজমা আক্তারের কথা শেষ হতেই বলল অবনী।
” তুই তো বাড়িতেই আছিস। কোন বাড়িতে যাবি শুনি? ”
” আমাদের বাড়িতে যাব, বড়মা। ”
” মেয়ের কথা শোন। গতকাল থেকে এটাই তোর বাড়ি বুঝলি? এরপর থেকে বাপের বাড়িতে বেড়াতে যাবি। কেউ যদি জিজ্ঞেস করে, তোমার বাড়ি কোথায়? বলবি, এটাই তোর বাড়ি। কখনো বলবিনা, এটা তোর শ্বশুর বাড়ি। যখনই বলবি, এটা তোর শ্বশুর বাড়ি, তখনই দেখবি সবাই তোকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবে। নিজের বাড়ি বললে দেখবি মনে জোড় পাবি। ”
” আমি বাড়ি যাব, বড়মা। ” বলেই ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠল অবনী।
অবনীকে কাঁদতে দেখে হকচকিয়ে গেলেন নাজমা আক্তার। তিনি অবনীকে বুকের ভেতর জড়িয়ে নিলেন।
” ইশরাক বকেছে? তাই বুঝি রাগ হয়েছে মেয়ের? শোন মেয়ে, বিয়েটা হঠাৎ করে হওয়ায় হয়তে ইশরাক একটু রেগে আছে। পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া বিয়ে করে কয়জন, হুম? ওকে কয়েকদিন সময় দে, দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে। তোর জন্মের আগ পর্যন্ত আমি একটা মেয়ের জন্য আফসোস করতাম। তুই পৃথিবীতে এসেই আমার সেই আফসোস দূর করেছিস। তোকে পেয়ে আমি একদিনের জন্যও মেয়ের জন্য আফসোস করিনি। সব সময়ই ভাবতাম, আমার ছেলের বউ করব তোকে। এতদিন পর যখন আমার ইচ্ছে পূরন হয়েছে, তবে তুই কেন বেঁকে বসলি, মা? তোর বাবার বাড়িতো আর দশ মাইল দূরে নয়। এই বাড়ির দরজা পেরোলেই তোর বাবার বাড়ি। চাইলে তুই দিনে হাজারবার ঐ বাড়িতে যাবি। কিন্তু একবারে চলে যাওয়ার কথা বলিসনা। তুই চলে গেলে মৃত্যু ছাড়া কোন পথ থাকবেনা আমার। তোর ফুপুরা এসেই যেমন শুরু করেছে, তুই যদি চলে যাস, তবে ওরা আমাকে অপমানে অপমানে ক্ষত-বিক্ষত করবে। ”
নাজমা আক্তারের কথা শুনে কিছুক্ষণ মাথা নিচু করে রইল অবনী। যখন মুখ তুলে চাইল, তখন ওর চোখের পানি গায়েব হয়েছে। চোখমুখে এসেছে দৃঢ়প্রতিজ্ঞার ছাপ।
” আমি দুই বাড়িতেই থাকব, বড়মা। সারাদিন তোমার সাথে থাকব, তোমার হাতেহাতে কাজ করব, তোমার সেবা করব, দাদুর দেখাশোনা করব। কিন্তু রাতে আমি বাড়িতেই গিয়ে থাকব। আর আমাকে তোমরা কখনোই এই বাড়িতে খাওয়ার কথা বলবেনা। আমার কথা না শুনলে, সত্যিই আমি দূরে কোথাও চলে যাব। তোমরা চাইলেও আমাকে খুঁজে পাবেনা। ”
অবনীর মুখের দিকে তাকিয়ে নাজমা আক্তার বুঝলেন এই মেয়ে মিথ্যা বলছেনা মোটেও। তিনি বুঝতে পারছেন মেয়েটা কোন না কোনভাবে কষ্ট পেয়েছে। অবনীর ব্যথাতুর নয়ন তাকেও কাঁদাল। তিনি ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন।
” ঠিক আছে। তোর কথাই থাকবে। তবে তোর কাছে অনুরোধ আমার ছেলেকে একটা সুযোগ দে। ওকে বুঝতে দে, তুই ওর জীবনে কি। ”
বড়মায় কথায় অবনীর ঠোঁটের কোনে সুক্ষ্ম হাসির রেখা দেখা গেল। তবে সেটা সুখের নয় বিষাদের। তার সাথে খানিকটা তাচ্ছিল্যও ছিল।
***
একদিন পরেই ইশরাক পরীক্ষার অযুহাত দিয়ে ঢাকা ফিরে গেল। অবনীর ফুপুরা অবনীকে একা পেতে চাইল, ওকে দু-চার কথা শোনানোর জন্য। কিন্তু নাজমা আক্তার তাদেরকে সেই সুযোগ দিলেননা। তিনি অবনীকে কাছ ছাড়া করলেননা। তারাও দুইদিন পর নিজেদের বাড়িতে ফিরে গেল।
অবনী হুট করেই বদলে গেছে। আগেরমত আর দুরন্তপনা করেনা। হঠাৎ হঠাৎই খিলখিলিয়ে হেসে উঠেনা। ইচ্ছে হলেই ভর দুপুরে পুকুরে নামেনা কিংবা গাছের মগডালে উঠে পেয়ারা খায়না। স্কুলে যাওয়ার আগে বড়মার হাতে-হাত মিলিয়ে কাজ করে। স্কুল থেকে ফিরেও বাড়ির কাজ করে বই নিয়ে বসে। মাঝরাত পর্যন্ত পড়ার টেবিলে কাটায়। মিনারা খাতুন মেয়ের আমূল পরিবর্তন দেখে খুশি হলেও তার ভেতরে একটা খটকা লাগে। অবনী রাতে ঐ বাড়িতে থাকেনা, এমনকি ঐ বাড়িতে খাবারও খায়না। ওকে জিজ্ঞেস করলে বলে, মায়ের কাছে ছাড়া কোথাও খেতে ইচ্ছে করেনা। একই কথা তাকে নাজমা আক্তারও বলেছেন। তার ভেতরে সন্দেহ থাকলেও প্রকাশ করতে পারলেননা।
দেখতে দেখতে অবনীর এসএসসি পরীক্ষা শুরু হল। দেড়মাস হলো ওর বিয়ে হয়েছে। এই দেড়মাসে বাসর রাতেই শুধু ওর সাথে কথা বলেছে ইশরাক। তা-ও অপমানজনক কথায় জর্জরিত করেছে ওকে। সে প্রতিদিন মা-বাবার সাথে কথা বললেও অবনীর সাথে কথা বলেনি। এমনকি অবনীর কথা জিজ্ঞেসও করেনি। অবশ্য অবনী এসব নিয়ে ভাবেনা। ও এখন পড়াশোনায় মনোযোগী হয়েছে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চায়। কিছু কিছু মানুষকে দেখিয়ে দিতে চায়, গরীব বলে ওরা অবহেলার পাত্র নয়। ওদেরও সম্মান আছে। সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে তাল মিলিয়ে বেঁচে থাকার অধিকার আছে। এখন ওর একটাই লক্ষ্য ভালো রেজাল্ট করে কিছু মানুষকে দেখিয়ে দেয়া।
চলবে…