হলুদ বসন্ত পর্ব-১১

0
63

#হলুদ_বসন্ত
#পার্ট_১১
জাওয়াদ জামী জামী

” আমি এসেছি জন্যই তুই নিজেকে আড়াল করে রেখেছিস, অবনী! একে-তো আমার সাথে ছলচাতুরী করেছিস, তবুও আমি সেসব ভুলে যেতে চাচ্ছি। কিন্তু তুই আমাকে দূরে ঠেলে দিতে চাচ্ছিস! তুই কি আমাকে দূরে ঠেলে দিবি? আমিই চলে যাব তোর থেকে অনেক দূরে। চাইলেও আমাকে দেখতে পাবিনা তুই। তোর এই আশা আমি অবশ্যই পূরণ করব। ” রাগে সারারাত উঠানেই কাটিয়ে দিল ইশরাক। একটু পরপর তাকাচ্ছে অবনীর ঘরের জানালার দিকে। কিন্তু অবনী একবারের জন্যও জানালার পাশে আসেনি কিংবা ঘর থেকেও বের হয়নি।

ফজরের আজান দিলে আব্দুর রহিম নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে রওনা দিলে উঠানে বসে থাকতে দেখল ইশরাককে। ইশরাক আমড়া গাছে হেলান দিয়ে বসে আছে। তিনি অবাক হয়ে গেলেন।

” দাদু ভাই, তুমি এখানে বসে আছ কেন? ”

দাদুর গলা শুনে চোখ খুলল ইশরাক। বড় একটা হাঁই তুলে উঠে দাঁড়াল।

” বসে বসে বাড়ি পাহারা দিচ্ছিলাম। আমার ডিউটি শেষ, এবার ঘুমাতে যাব। ”

দাদুকে অবাক করে দিয়ে ইশরাক বাড়ির ভেতরে চলে গেল।

অবনী জানতনা ইশরাক সারারাত বাহিরে বসে ছিল। ফজরের নামাজ আদায় করে চলে গেল বড়মার কাছে। ইশরাক জানতনা অবনী এই সময় ওদের বাড়িতে আসে। অবনী রান্নাঘরে ঢুকে সকালের নাস্তা তৈরীর আয়োজন করছে। নাজমা আক্তার নিজের ঘরে কুরআন তিলাওয়াত করছেন।

” মা, আমাকে কড়া করে এক কাপ চা দিওতো। ” রান্নাঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে ঘুমঘুম গলায় বলল ইশরাক। কথাটা বলেই ও নিজের রুমের দিকে পা বাড়িয়েছে। রান্নাঘরে কে আছে সেটা একবারও দেখলনা। ও ধারনা করেই নিয়েছে ওর মা আছে।

এদিকে ইশরাকের গলা শুনে জমে গেল অবনী। ও জানতনা ইশরাক জেগে আছে। হাতে থাকা ময়দার পাত্র রেখে চুপিসারে রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে দৌড়ে বাড়িতে গেল। ততক্ষণে ইশরাক ওর রুমের দরজায় পৌঁছে গেছে। অবনী ওর পেছনের দিকটা দেখতে পেয়েছে শুধু। আর তাতেই বুঝল, ইশরাক দাঁড়িয়ে আছে।

নিজের রুমে ঢুকতেই কুরআন তিলাওয়াত শুনতে পেল। মায়ের রুম থেকে আসছে। ইশরাক ভ্রুঁ কুঁচকে তাকায় মায়ের রুমের দিকে। ও ভাবল, মা যদি রুমে থাকে তবে রান্নাঘরে কে? সাথে সাথে বুঝল, ঐটা অবনী ছিল। ইশরাক দৌড়ে রান্নাঘরে গেল৷ কিন্তু রান্নাঘর ফাঁকা। চুলার পাশে একটা বাটিতে ময়দা দেখতে পেল। রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। দরজা খোলা দেখেই বুঝে গেল অবনী বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে। রাগে ইশরাকের পুরো শরীর কাঁপছে। ইচ্ছে করছে ঐ বাড়িতে গিয়ে অবনীকে টেনে ঘর থেকে বের করে দুইটা থাপ্পড় বসিয়ে দিতে। কিন্তু নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করল। সব রাগ ঝাড়ল দরজার ওপর।

অবনী ঘরে এসে বুকে হাত দিয়ে হাঁপাচ্ছে। স্থির হয়ে কিছুক্ষণ বসে থাকল। আরেকটু হলে ইশরাকের মুখোমুখি হত ভেবেই রাগ হচ্ছে ওর। রাগে নিজের চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে। ওকে দেখতে পেলে নিশ্চয়ই ইশরাক ওকে গালাগাল দিত। কথাটা মনে হতেই অবনীর চোখে পানি আসল। সেদিন আর ঐ বাড়িতে গেলনা অবনী। কিছুক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করে মাকে রান্নার কাজে সাহায্য করে কোচিং-এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিল। আজ ও পুরো ক্লাস করবেনা। দুইটা ক্লাস করার পর কয়েকজন ছাত্রী মিলে স্যারের বাসায় পড়তে যাবে। সপ্তাহে একদিন ওরা স্যারের বাসায় পড়তে যায়।

ইশরাক রাগে গজগজ করতে করতে একসময় ঘুমিয়ে পরল। ওর ঘুম ভাঙ্গলো সকাল এগারোটায়। ঘুম থেকে উঠে নাস্তা না করেই বেরিয়ে গেল। অবনীর কোচিং-এ গিয়ে জানতে পারল, সকালে ক্লাস নেয়ার পর অবনী কলেজে গেছে। এখনো ও কোচিং-এ আসেনি। হতাশ হয়ে গেল কলেজের দিকে। এমন কেন করছে সেটা ইশরাক নিজেও জানেনা। ওর শুধু মনে হচ্ছে, অবনীর মুখোমুখি ওকে হতেই হবে। কলেজের সামনে তিনঘণ্টা বসে থাকল ইশরাক। কিন্তু অবনীর দেখা পেলোনা। বাধ্য হয়ে ও আবার কোচিং-এর দিকে গেল। কিন্তু সেখানে গিয়ে শুনল, অবনী এখনো কোচিং-এ আসেনি। কথাটা শুনে ইশরাকের রাগ হল। ও জানতেও পারলনা, বন্ধুরা ওকে জোর করে রেস্টুরেন্টে নিয়ে গেছে। ওর এক বন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে ট্রিট দিচ্ছে। কোচিং-এর সামনে আরও এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকল ইশরাক। কিন্তু অবনী আসলনা। রাগে-দুঃখে ইশরাক বাড়িতে গেল। বিকেলের গাড়িতে ও ঢাকা ফিরবে।

অবনী বাড়িতে এসে শুনল ইশরাক কিছুক্ষণ আগেই চলে গেছে। কথাটা শুনে হাঁফ ছেড়ে বাঁচল মেয়েটা। আগের মত স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারবে ভেবেই শান্তি লাগছে।

***

” আব্বা, ইশরাক ফোন দিয়েছিল। আপনার সাথে কথা বলতে চেয়েছে। একটা খুশির খবর আছে, আব্বা। ” আব্দুর রহিম বড় বউমার চোখে খুশির ঝিলিক দেখতে পেলেন।

” খুশির খবর? কি হয়েছে, বউমা? ”

” ইশরাক স্কলারশিপ পেয়েছে, আব্বা। বার্লিন ইউনিভার্সিটিতে এ্যাপ্লিকেশন করেছিল, সেখান থেকে ওকে ডেকেছে। ”

” আলহামদুলিল্লাহ। সত্যিই মনটা ভালো হয়ে গেল। আল্লাহ আমার দাদু ভাইয়ের সকল স্বপ্ন পূরণ করুন। ওয়াহাবকে খবরটা জানিয়েছ? ”

” আমি প্রথমেই আপনাকে জানাতে এসেছি। আপনার বড় ছেলেও জানেনা। একে একে সবাইকে জানাব, আব্বা। ”

” দেরি করোনা। ইসহাকে সব জানিয়ে মিষ্টি আনতে বল। ছোট বউমা, অবনীকেও জানিয়ে এস। তাড়াতাড়ি যাও। ”

নাজমা আক্তার নিজের রুমে গিয়ে ফোন করলেন ইসহাক আজাদকে। এরপর তিনি গেলেন অবনীর বাড়িতে। অবনী মাত্রই বাড়িতে এসেছে।

” মিনারা আছিস? এদিকে আয়, শুনে যা তোর মেয়ের জামাইয়ের কীর্তি। ”

বড়মার গলা শুনে অবনী বেড়িয়ে আসল ঘর থেকে। মিনারা খাতুনও বেরিয়ে এসেছেন।

” কি হয়েছে, বড় ভাবী? কি করেছে ইশরাক? ”

” ও স্কলারশিপ পেয়েছে। বার্লিন ইউনিভার্সিটি থেকে ওকে ডেকেছে। ”

বড়মার কথা শুনে কোন প্রতিক্রিয়া দেখালোনা অবনী। চুপচাপ নিজের ঘরে চলে গেল। তবে মিনারা খাতুন ভিষণ খুশি হলেন। তিনি সাথে সাথেই ফোন দিলেন স্বামীর কাছে। তাকে খুশির খবরটা দিয়ে, মিষ্টি আনতে বললেন।

নাজমা আক্তার ভেবেছিলেন, জার্মান যাওয়ার আগে ইশরাক বাড়িতে আসবে, কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে ইশরাক জানালো, সে আসতে পারবেনা। ছেলের জন্য মন খারাপ হলেও ছেলেকে কিছুই বললেননা তিনি। স্বামী, দেবর, আর সাদাফকে সাথে নিয়ে ঢাকা গেলেন। সেখানে গিয়ে দেখলেন ইশরাক ভিষণ ব্যস্ত। নানান জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে। ব্যস্ততার দরুন ঠিকমত খাওয়াদাওয়া করতে পারছেনা। ছেলের ব্যস্ততা দেখে নাজমা আক্তারের কষ্ট উবে গেল। তিনি বুঝলেন, তার ছেলে মিথ্যা বলেনি। সত্যিই ও ব্যস্ত। ঢাকায় তিনদিন কাটিয়ে তারা গ্রামে আসলেন। কয়েকদিন পর ইশরাক দেশ ছেড়ে পাড়ি জমাল জার্মান। ওকে বিদায় দিতে গিয়েছিল বাবা, চাচা, দাদু আর সাদাফ।

***

পেরিয়ে গেছে অনেকগুলো মাস। অবনীর এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আগামীকাল ওর রেজাল্ট দেবে। সাদাফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। অর্নি এসএসসি পরীক্ষা দেবে। আগামীকাল যে অবনীর রেজাল্ট দেবে, এতে ওর কোন মাথাব্যথা নেই। ও নিশ্চিত ওর রেজাল্ট ভালোই হবে। রিল্যাক্স মুডে স্টুডেন্ট পড়াচ্ছে মেয়েটা। ওর আত্মবিশ্বাস দেখে অবাক হয়ে যান বাড়ির প্রতিটি মানুষ। এতটুকু মেয়ের দ্বায়িত্ববোধ দেখে অবাক হন সকলেই।

” অবনী, তুই আজকেও পড়াচ্ছিস! ধৈর্য্য আছে তোর। কাছে আয় তোকে সালাম করি। ”

সাদাফ বাড়িতে ঢুকেই দেখল অবনী বারান্দায় ছাত্র/ছাত্রীদের পড়াচ্ছে। বারান্দায় বড় বড় চারটা বেঞ্চ পাতা হয়েছে। সেখানে বিশজনকে একসাথে পড়ায় অবনী। বিকেলে এক ব্যাচ, সন্ধ্যায় এক ব্যাচ ছাত্র/ছাত্রী পড়ায় মেয়েটা। সাদাফ এই মেয়েটার ধৈর্য্য দেখে অবাক হয়। একটা মেয়ের কতটুকু ধৈর্য্য থাকলে নিজের পাশাপাশি সংসারের খরচও বহন করতে পারে, এটা ওকে ভাবায়।

সাদাফকে অসময়ে বাড়িতে দেখে অবাকই হয় অবনী।

” তুমি হুট করে বাড়িতে আসলে যে! বড়মাকে বলোনি তুমি আসবে? ”

” তোদেরকে দেখতে ইচ্ছে করল, তাই চলে আসলাম। মাকেও জানাইনি। চাচা বাড়িতে নেই? চাচী, অর্না ওরা কোথায়? ”

” বাবা মাঠে গেছে। মা বোধহয় পুকুরে হাঁস নিয়ে আসতে গেছে। অর্নি গেছে বান্ধবীর বোনের বিয়েতে। তুমি ভেতরে যাও। বড়মা, দাদু তোমাকে দেখলে খুশি হবে। ”

সাদাফ কিছু একটা ভেবে ভেতরে চলে গেল।

***

নিজের রেজাল্ট শুনে কিছুক্ষণ নির্বাক হয়ে বসে থাকল অবনী। খুশিতে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু মা আর বড়মার জন্য কাঁদতে পারছেনা। ওকে কাঁদতে দেখলে দুই জা হাজারটা প্রশ্ন করবে। আপাতত কারও কোন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মুডে নেই অবনী।

” অবনী, তুই পেরেছিস, মা। আমি নিজে যেটা করতে পারিনি, সেটা তুই করে দেখিয়েছিস। জানি এই পথচলা সহজ ছিলনা। আমি তোকে পেট ভরে খেতে দিতে পারিনি, একটা ভালো জামা কিনে দিতে পারিনি, পড়াশোনার খরচও দিতে পারিনি ঠিকঠাক। এতকিছুর পরও তুই যে এত ভালো রেজাল্ট করেছিস, এটা আমার স্বপ্নেও ছিলনা কোনদিন। আমার ব্যর্থতার জন্য তোর কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, মা। আমি বাবা নামের কলংকিত একজন মানুষ। ” মেয়ের হাত ধরে হু হু করে কেঁদে উঠলেন অবনীর বাবা।

বাবাকে কাঁদতে দেখে অবনীর বুকের ভেতর হু হু করে উঠল। ছোটবেলা থেকেই বাবাকে লড়াই করে বাঁচতে দেখেছে। শত অভাব-অনটনের মধ্যেও বাবাকে ভেঙে পরতে দেখেনি। আজ সেই বাবা নিজেকে দোষারোপ করে কাঁদছে, এটা মানতে পারছেনা অবনী।

” কে বলেছে তুমি কলংকিত পিতা? আমার বাবার মত শুদ্ধ মানুষ কয়জন আছে? তুমি আমাদের জন্য অনেক করেছ৷ নিঃস্ব অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছ লড়াই করে। দিনের পর দিন পরিশ্রম করে পায়ের নিচের মাটি মজবুত করেছ। কয়জন পারে এমনটা করতে? আমরা দুইবোন কোনদিনই কোন অভিযোগ করিনি। সেই সুযোগ তুমি রাখোনি। আমরা মেয়ে হিসেবে, বাবার পরিশ্রমের এতটুকু মূল্য তো দিতেই পারি। এবার আমার লক্ষ্য ভালো কোন ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া। একদিন দেখবে তোমার মেয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করে, সমাজের বুকে তোমার মাথা উঁচু করবে। কেউ আর তোমাকে দেখে বলতে পারবেনা, ওয়াহাব তোর তো কোন ছেলে নেই, দুই মেয়েকে বিয়ে দিবি কিভাবে? তোর সংসার চলে কিভাবে? আমরাই তোমার ছেলের দ্বায়িত্ব পালন করব, বাবা। ”

মেয়ের কথা শুনে খুশিতে কেঁদে উঠলেন ওয়াহাব আহমেদ। একটা সময় তারও ইচ্ছে ছিল ভার্সিটিতে পড়ার। কিন্তু হয়ে ওঠেনি। স্থানীয় কলেজ থেকেই এমএ পাশ করেছেন তিনি। এরপর সুযোগ এসেছিল গ্রামের স্কুলে শিক্ষকতা করার। কিন্তু ভাগ্য তার সাথ দেয়নি। তিনি পরের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করতে শুরু করেছিলেন। খেয়ে না খেয়ে মেয়েদের পড়াশোনা করিয়েছেন। আব্বার কাছ থেকে তিন রুমের মাটির দোতলা বাড়ি ছাড়া আর কিছুই পাননি তিনি। অবশ্য এতে আফসোসও করেননা তিনি। তিনি বিশ্বাস করেন, তার ভাগ্যে যেটা নেই, হাজারবার চাইলেও সেটাকে পাবেননা তিনি।

***

” ইশু, অবনীর রেজাল্ট দিয়েছে। ও বিভাগীয় পর্যায়ে সেরা হয়েছে। ”

ইশরাক ফোন দেয়া মাত্রই নাজমা আক্তার ওকে অবনীর রেজাল্টের কথা জানালেন।

” বল কি! এই মেয়ে দেখছি সবাইকে ছাড়িয়ে যাবে। এবার ওকে এডমিশনের প্রস্তুতি নিতে বল। বুয়েটে চান্স নিতে বল। নইলে মেডিকেলে। ওর যা রেজাল্ট, দুটোর একটাতে হয়ে যাবে। ” ইশরাক আরও কিছুক্ষণ মায়ের সাথে কথা বলল।

ছেলের সাথে কথা শেষ করে নাজমা আক্তার ছুটলেন অবনীর কাছে।

” অবনী, তুই কি এডমিশনের জন্য কোথাও কোচিং করবি? ”

” না, বড়মা। বাড়িতেই পড়ব। কোচিং করতে গেলে আমার অনেকগুলো স্টুডেন্ট হাতছাড়া হয়ে যাবে। আবার আমি কোচিং-এ পড়াই সেটাও ছাড়তে হবে। এটা আমি করতে পারবনা। ”

” টাকার কথা চিন্তা করিসনা, মা। তোর চাচা যাবতীয় খরচ দেবে। তুই শুধু মন দিয়ে পড়াশোনা কর। ভালো জায়গায় ভর্তি হ। ইশরাক বলছিল, তোকে বুয়েট অথবা মেডিকেলে চান্স নিতে। ”

” কারও সাহায্য আমার চাইনা, বড়মা। আমি নিজের খরচ নিজেই বহন করতে পারব। অযথা বড় চাচাকে চাপ দেব কেন? তুমি চিন্তা করোনা। দেখবে কোচিং ছাড়াও এডমিশনে উৎরে যাব আমি। ”

অবনীর ইচ্ছে ছিল মেডিকেলে এডমিশন দেবে। কিন্তু বড়মা যেই বলেছে, ইশরাক চায় ও বুয়েট অথবা মেডিকেলে চান্স নিক। তখনই ওর সিদ্ধান্ত পাল্টিয়েছে। ও চায়না কেউ বলুক, ইশরাকের ইচ্ছেয় ও নড়াচড়া করে। নিজের পড়াশোনা কিংবা ক্যারিয়ার গড়ার ব্যাপারে ইশরাক নামক ব্যক্তির নাম নিজের সাথে জড়াতে চায়না ও। অবনী সিদ্ধান্ত নিল, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। সে মতই ওকে পড়াশোনা করতে হবে।

চলবে…