হৃদয়স্পর্শী মায়াবিনী পর্ব-২৯+৩০

0
124

#হৃদয়স্পর্শী_মায়াবিনী
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর (মিমি)
#পর্বঃ২৯

ফারিসতা ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো বেডের পাশে। তাজ যে এতো সহজে ওকে বেড দিয়ে দিবে বুঝে উঠতে পারেনি। এমনিতেই ওর শোয়ার জন্য জায়গা বেশি লাগে। সোফায় শুলে নির্ঘাত সোফা থেকে পড়ে নাক ফাটাতো। নাক ফাটানো থেকে বাঁচিয়ে তাজ বেড দিয়ে দিতে তাজের প্রতি সন্তুষ্ট হলেও সেটা প্রকাশ না করে চুপচাপ বিছানার সাথে শরীর এলিয়ে দিলো। ঘুমানোর জন্য চোখ বুঁজে নিতে টের পেলো শরীরের ভিতর অস্বস্তি হচ্ছে। সারাদিন গোসল করা হয়নি তার উপরে সেই দুপুর থেকে শাড়ি পড়া। এখন অন্তত শাড়িটা পাল্টানো প্রয়োজন। কিন্তু জামা কাপড় পাবে কোথায়? জামা কাপড় নেই ভেবে ফারিসতা হতাশ নিঃশ্বাস ছেড়ে ঘুমানোর চেষ্টা করে গেলো কিন্তু ঘুমাতে পাড়লো না উল্টো শরীরের অস্বস্তি বাড়তে লাগলো। ফারিসতা কিছুক্ষণ এদিক ওদিক মোচড়ামুচড়ি করে আর না পেরে উঠে বসলো।

অনেকক্ষণ যাবত ফারিসতার মোচড়ামুচড়ি করা খেয়াল করে অনেকটা সময় পর ভাবার পরে ফারিসতার অস্থিরতা কারণ অনুমান করে তাজ উঠে কাভার্ড খুলে একটা টি শার্ট আর ট্রাউজার বের করে নিয়ে ফারিসতার পাশে রেখে বলল,

আপাতত এর চেয়ে বেশি কিছু দিতে পারছি না। এটা দিয়ে ম্যানেজ করে নেও আজ রাতের জন্য। কাল যা যা প্রয়োজন কিনে নিও।

ফারিসতা আরো চোখে একবার টি শার্ট আর ট্রাউজারের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বলল, তোয়ালে হবে?

তাজ বেলকনি থেকে নিজের তাওয়াল এনে ফারিসতার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে নম্র কণ্ঠে বলল নেও….

ফারিসতা তাজের হাত থেকে তোয়ালে নিয়ে ওয়াশরুমে যেতে হঠাৎ তল পেটে চিনচিন ব্যথা অনুভব করলো। অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু টের পেতে মাথা চক্কর কেটে উঠলো ফারিসতার। এমতাবস্থায় কি করবে বুঝে উঠতে পারলো না মেয়েটা। ফারিসতা কি করবে না করবে ভেবে না পেয়ে চিন্তিত অবস্থায় শাওয়ার নিয়ে তাজের টি শার্ট পড়তে নাকে ভেসে আসলো একটা সুঘ্রাণ। মাথা ভর্তি চিন্তা, জড়তা, অস্বস্তির পাহাড় থাকায় এই সুঘ্রাণের উৎস খোঁজা হলো না। ফারিসতা চেঞ্জ করে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো কি করবে এখন। এভাবে ওয়াশরুমেই বা কতক্ষণ থাকবে ভাবতে ফারিসতা নিজের দিকে তাকাতে আরো অস্বস্তিতে পড়ে গেলো। তাজের বলিষ্ঠ দেহের টিশার্টের এক কোনায় পড়ে আছে ও। তার উপরে ওড়না নেই এভাবে বাহিরে যাবে কিভাবে ভাবতে ফারিসতার গলা শুকিয়ে আসলো। এদিকে পেট ব্যথা ক্রমশ বাড়তে চলেছে এভাবে আর দাঁড়িয়ে থাকাও সম্ভব না। অনেক ভেবে চিন্তে ফারিসতা মাথা থেকে তোয়ালে খুলে সেটা গলার দুই পাশ দিয়ে সামনে এনে রেখে একরাশ অস্থিরতা নিয়ে দরকা খুলে বের হলো।

ওয়াশরুমের দরজার খোলার শব্দে তাজ সেদিকে তাকাতে হঠাৎ বুকের ভিতর ধক করে উঠলো। সদ্য গোসল করে আসা মেয়েটার স্নিগ্ধতায় থমকে গেলো তাজের হার্টবিট। ভেজা চুল বেয়ে মুক্তর মতো ফোঁটা ফোঁটা পানি চুইয়ে পড়ছে ফ্লোরে। শুভ্র টি শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত নেমেছে। ট্রাউজার পায়ের পাতায় যেয়ে ঠেকে ফ্লোরের সাথে গড়াগড়ি খাচ্ছে। এক কথায় ওর পোশাকের এক কোনায় পড়ে আছে ফারিসতা। এমন বড় ড্রেস পড়ায় মেয়েটাকে জোকারের মতো লাগার কথায় ছিলো কিন্তু হলো উল্টো। এমন ড্রেসআপে যেনো ফারিসতার সৌন্দর্য আরো কয়েক গুণ বেড়ে গেলো। মনে হচ্ছে এ যেনো সদ্য ফুটে ওঠা স্নিগ্ধ এক কাঠগোলাপ। যার স্নিগ্ধতায় বুকের মাঝে অন্যরকম একটা শান্তি বয়ে গেলো তাজের।

তাজকে এমন করে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে অস্তিতে গাঁট হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো ফারিসতা। শুকিয়ে আসলো গলা। ফারিসতা কাঁপা কাঁপা পায়ে বেডের উপরে বসে হাসফাস করতে লাগলো। পেট ব্যথা ক্রমশ বাড়ছে তার উপরে এখন কি করবে না করবে ভাবতে ফারিসতা ঘামতে লাগলো। ঠোঁট কামড়ে ধরে ব্যথা সয়ে নিলেও অস্বস্তিতে পুরো শরীর অবশ হয়ে আসছে। ধীরে ধীরে স্নিগ্ধ মুখে ফুটে উঠলো স্পষ্ট ব্যথার ছাপ।

হঠাৎ করে ফারিসতাকে এমন হাসফাস করতে দেখে তাজের ভ্রু গুটিয়ে গেলো। তাজ পূর্ন দৃষ্টিতে ফারিসতাকে অবলোকন করতে চোখের সামনে ভেসে উঠলো ফারিসতার ব্যথার্ত মুখশ্রী। তাজ চটজলদি সোফায় শোয়া থেকে উঠে বলল, এনি প্রবলেম?

তাজের প্রশ্নে ফারিসতার অস্বস্তি আরো বেড়ে গেলো। লজ্জায় মাথা নত করে কোনো উপায় না পেয়ে আমতা আমতা করে বলল, একটু রুশা আপুকে ডেকে দিবেন?

এত রাতে রুশাকে ডাকতে বলায় আশ্চর্য বনে গেলো তাজ। তাজ চোখ ছোট ছোট করে ফারিসতার দিকে তাকাতে খেয়াল হলো ফারিসতার এক হাত পেটের কাছে। সাথে সাথে তাজের মস্তিষ্ক সচল হলো। তাজ হাত থেকে চোখ সরিয়ে ফারিসতা মুখের দিকে তাকাতে তাজ ফারিসতার ব্যথার্ত মুখ দেখে বুঝতে সক্ষম হলো আসলে প্রবলেম কোথায়। তাজ ফারিসতার থেকে চোখ সরিয়ে এনে তাকালো ফোনের দিকে। রাত বাজে প্রায় একটা। এই সময় ফার্মেসি খোলা পাওয়াটা দুঃসাধ্য তাও তাজ কোনো কথা না বলে উঠে ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে ওয়ালেটটা নিয়ে রুম থেকে বের হতে হতে বলল, রুশাকে ডাকার প্রয়োজন নেই আমি আসছি।

তাজ যেতে ফারিসতার অস্বস্তি আরো কয়েক গুণ বেড়ে গেলো। কিছু না বলতেও লোকটা সব ধরে ফেলেছে বুঝতে লজ্জায় ফারিসতার কান কোন দিয়ে গরম ধোঁয়া বের হতে লাগলো। এমন বাজে একটা সিচুয়েশনে পড়ে মেয়েটার অবস্থা শোচনীয়। আরেকদিকে পেট ব্যথায় বার বার নিঃশ্বাস আঁটকে আসছে। ফারিসতা চোখমুখ খিচে ঠোঁট কামড়ে ধরে ব্যথা সয়ে নেওয়া চেষ্টা চালিয়ে গেলো।

প্রায় বিশ মিনিট পর তাজ বাসায় ফিরলো। এত রাতে কাছের সব ফার্মেসি বন্ধ ছিলো তাই ফিরতে একটু দেরি হলো। তাজ হাতে একটা প্যাকেট নিয়ে রুমে প্রবেশ করতে চোখে পড়লো ফারিসতা বেডের সাথে হেলান দিয়ে চোখমুখ খিঁচে বড় বড় করে নিঃশ্বাস নিচ্ছে। তাজ শব্দহীন পায়ে ফারিসতার কাছে যেয়ে প্যাকেটটা বাড়িয়ে দিয়ে বলল, নেও।

তাজের কণ্ঠস্বর কানে যেতে ফারিসতা চোখ তুলে তাকাতে তাজ চোখের ইশারায় প্যাকেটটা নিতে বলল। ফারিসতা কাঁপা কাঁপা হাতে প্যাকেটটা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। ব্যথার যন্ত্রণায় ভুলে গেলো লজ্জা, জড়তা, অস্বস্তি। কিছুক্ষণ পর ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে কোনো রকম বেডের কাছে এগিয়ে যেতে তাজ এক গ্লাস পানি আর পেইন কিলার বাড়িয়ে দিয়ে বলল, খেয়ে নেও ব্যথা সেরে যাবে।

এই টাইমে পেইন কিলারটা সত্যি খুব প্রয়োজন ছিলো। ফারিসতা কৃতজ্ঞতার চোখে একবার তাজের দিকে তাকিয়ে ঔষধটা খেয়ে নিয়ে নিরবে শুয়ে পড়লো। ফারিসতা শুতে তাজ রুমের লাইট নিভিয়ে দিয়ে যেই সোফায় যেতে নিবে তখন ফারিসতার ফোঁপানো শব্দে বুকের ভিতর ধক করে উঠলো। তাজ ফের বেডের কাছে এসে অস্থির কণ্ঠে বলে উঠলো,

ফারিসতা কোনো সমস্যা? কান্না করছো কেনো? বেশি ব্যথা করছে? অন্য কোনো সমস্যা? মাকে ডেকে দিবো?

তাজের এত প্রশ্নেও ফারিসতার থেকে কোনো উত্তর আসলো না। তাজ ড্রিম লাইটের নীল আলোয় খেয়াল করলো ফারিসতার শরীরের কম্পন। ফারিসতার শরীরের অস্বাভাবিক কম্পন অবলোকন করে তাজ ফারিসতার দিকে ঝুঁকে কপালে হাত রাখতে চমকে উঠলো। এইটুকু সময়ের ভিতরে শরীর কাঁপিয়ে জ্বর উঠেছে।

এদিকে ফারিসতা কপালে হাতের ছোঁয়া পেতে জ্বরের ঘোরে মায়ের হাত ভেবে হাত খামছে ধরে ঠোঁট উল্টে কান্না করতে করতে বিড়বিড় করে আম্মু আম্মু বলে কিছু বলতে লাগলো।

ফারিসতার এমন ব্যথার্ত আর্তনাদে তাজের বুকের ভিতর চিনচিনিয়ে উঠলো। মেয়েটা এখন হুঁশে নেই জ্বরের মেডিসিন খাওয়ানো প্রয়োজন কিন্তু এই অবস্থায় কি করে খাওয়াবে ভাবতে তাজ ফারিসতার খামচে ধরে রাখা হাত ছুটিয়ে হিটারে পানি গরম দিয়ে ওয়াশরুম থেকে ঠান্ডা পানি এনে রুমাল ভিজিয়ে জলপট্টি দিতে লাগলো। হিটারের পানি গরম হলে তাজ কাভার্ড থেকে হট ওয়াটার ব্যাগ এনে সেটার ভিতরে গরম পানি ঢেলে বেডের কাছে আসতে দ্বিধা দ্বন্দ্বে পড়ে গেলো এখন কি করবে। ফারিসতা ব্যথা আর জ্বরের কারণে ছটফট করছে। মেয়েটা হুঁশে নেই এই অবস্থায় গরম পানির ছ্যাক নিজে নিজে দিবে কিভাবে? ফারিসতার ব্যথার্ত মুখের দিকে তাকাতে তাজ দ্বিধা দ্বন্দ্ব সব ভুলে ফারিসতার পাশে বসলো। ফারিসতা এখন ওর বিয়ে করা বউ। পরনারী না যে এতো দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভুগতে হবে। এখন সবার আগে প্রয়োজন ওঁকে সুস্থ করা।

****
দরজায় ঠকঠক শব্দে তাজের ঘুম ছুটে গেলো। তাজ পিটপিট করে চোখ খুলতে দেখলো আধশোয়া হয়ে বেডের সাথে হেলান দেওয়া ও। তাজ চট করে ঘাড় ফিরিয়ে পাশে তাকাতে চোখে পড়লো ফারিসতার ঘুমন্ত মুখশ্রী। তাজের দেখার মাঝে ফের দরজার করাঘাত পড়তে তাজ দ্রুত উঠতে নিবে যাতে দরজায় করাঘাতের শব্দে ঘুম ভেঙে না যায় ফাটিসতার। সারারাত ছটফট করে ভোরের দিকে ঘুম পড়েছে মেয়েটা। তাজ দরজা খোলার জন্য উঠতে নিলে দেখলো ফারিসতা এখনো ওর এক হাত আঁকড়ে ধরে আছে। তা দেখে তাজ স্লান হেঁসে ফারিসতার হাত আলতো করে ছাড়িয়ে দরজা খুলতে তাহমিনা বেগমকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো।

তাজ দরজা খুলতে তাহমিনা বেগম স্মিত হেসে বলল, ফারিসতা উঠেছে ঘুম থেকে?

না ঘুমাচ্ছে এখনো ভিতরে আসো।

তাহমিনা বেগম তাড়া দিয়ে বলল, না না কাজ আছে আমার। এসেছি এই শাড়িটা দিয়ে যেতে। মেয়েটা কাল থেকে এক শাড়ি পড়ে আছে খেয়াল এই ছিলো না। ওর জন্য তো কোনো ড্রেস কেনা হয়নি তাই আপাতত আমার শাড়িটা দিয়ে ম্যানেজ করে নিতে বল। ওদের বাসায় যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় জিনিস সব কিনে দিস এ বলে তাজের হাতে শাড়ি ধরিয়ে দিয়ে তিনি চলে গেলো।

তাহমিনা বেগম যেতে তাজ ফের দরজা লাগিয়ে শাড়িটা বেডের পাশে রেখে তাকালো ফারিসতার ঘুমন্ত মুখশ্রীর দিকে। এক রাতের ব্যবধানে মেয়েটার চোখমুখ শুকিয়ে গেছে। তাজ কিছুটা ঝুকে হাত বড়িয়ে ফারিসতার কপালে রেখে জ্বর চেক করলো। এখনো অনেকটা আছে জ্বর শরীরে। তাজ কিছুক্ষণ ফারিসতার শুকনো মুখের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে থেকে গায়ে ভালো করে কাঁথা টেনে দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। চোখ তুলে দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো ৭ টা বেজেছে। আজ ডিউটি নেই কিন্তু তিফাজ চৌধুরীর কাছে যেতে হবে। তাজ আর না শুয়ে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে ফারিসতার মুখের দিকে একপালক তাকিয়ে নিচে চলে গেলো।

তাজকে এমন সকাল সকাল রেডি হয়ে নিচে নামতে দেখে তাহমিনা বেগম বলল, এই সকাল সকাল কেথায় যাচ্ছিস? ফারিসতাকে নিয়ে ওদের বাসায় যাবি না?

ওর শরীর ভালো নেই রাতে জ্বর এসেছে। এই অবস্থায় জার্নি করলে আরো অসুস্থ হয়ে পড়বে। সুস্থ হলে নিয়ে যাবো। আমি বাবার কাছে গেলাম টেবিলের উপরে মেডিসিন রাখা আছে ঘুম ভাঙলে কিছু খাইয়ে মেডিসিন খাইয়ে দিয়ো কথাগুলো বলে তাজ যেতে নিলে তাহমিনা বেগম উদ্বিগ্ন হয়ে বলল, সেকি মেয়েটা আবার জ্বর বাঁধালো কি করে? আমাকে ডাকলি না কেনো?

ঘুমাচ্ছিলে তাই ডাকিনি, চিন্তা করো না এখন বেশি নেই জ্বর ঠিক হয়ে যাবে আমি আসি এ বলে তাজ চলে গেলো। তাজ হসপিটালে পৌঁছাতে সৌরভ চৌধুরী হসপিটাল থেকে সোজা এসে থামলো খান ভিলায় সামনে। সৌরভ চৌধুরী বাড়িটা একবার অবলোকন করে গাড়ি থেকে নেমে গেটের কাছে যেতে দারোয়ান ভিতরে ঢোকার জন্য বাঁধা দিতে যাবে তখন সৌরভ চৌধুরীকে দেখে সেদিনের কথা মনে পড়তে শুকনো ঢোক গিলে সুরসুর করে গেট থেকে সরে যাওয়ার জায়গায় করে দিলো। সেদিন তাজের হাতে ঘুষি খেয়ে খাঁড়া নাকটা ভেঙে বোঁচা হয়ে গেছে। এখনো নাকের সাথে ঝুলে আছে সাদা ব্যান্ডেজ। এখন যদি বাঁধা দেয় তাহলে যে সেদিনের মতো আবারো একটা নাক বরাবর পড়বে ভাবতে লোকটা আতঙ্ক গেট থেকে সরে দাঁড়ালো।

দারোয়ান গেট থেকে সরে দাঁড়াতে সৌরভ চৌধুরী বাঁকা হেসে ভিতরে প্রবেশ করে কলিংবেল চাপলো। সেদিনের মতো আজ ও দরজা খুলে দাঁড়ালো মিসেস জেরিনা।

#চলবে?

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং…

#হৃদয়স্পর্শী_মায়াবিনী
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর (মিমি)
#পর্বঃ৩০

মিসেস জেরিনা দরজা খুলে ভ্রু কুঁচকে তাকালো সৌরভ চৌধুরীর দিকে। আজ আবার কেনো আসলো উনি বুঝে উঠতে পারলো না।

সৌরভ চৌধুরী মিসেস জেরিনাকে একবার পর্যবেক্ষণ করে গলা খাকানি দিয়ে বলল ডক্টর নাহির খান বাসায় আছে?

মিসেস জেরিনা সেদিনের মতো প্রশ্ন না করে শুধু উপর নিচ মাথা ঝাঁকিয়ে দরজার সামনে থেকে সরে দাঁড়ালো। মিসেস জেরিনা সরে দাঁড়াতে সৌরভ চৌধুরী ভিতরে প্রবেশ করতে দেখলো ডক্টর নাহির খান লিভিং রুমে বসে খবরের কাগজে চোখ বুলাচ্ছে। কে এসেছে দেখার জন্য ডাঃ নাহির খান খবরের কাগজ থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকাতে ভ্রু গুটিয়ে গেলো। শক্ত হয়ে আসলো চোয়াল। নাহির খান চোয়াল শক্ত করে তীক্ষ্ণ কণ্ঠে বলে উঠলো, কি চাই? আজ আবার কোন গুন্ডামি করার জন্য বাসায় এসেছেন?

নাহির খানের শক্ত মুখের দিকে তাকিয়ে সৌরভ চৌধুরী রহস্যময় হেঁসে নাহির খানের অপজিট পাশে ধুপ করে বসে পায়ের উপরে পা তুলে বলল,

সেদিন তাজের আচরণে জন্য সরি বলতে এসেছি।

নাহির খান সন্দিহান চোখে সৌরভ চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে শক্ত কণ্ঠ বলল, এতটা বোকা নিশ্চয়ই আমি নই যে সরি বলতে এসেছেন সেটা বিশ্বাস করে নিবো। কোন মতলবে এখানে আবার এসেছেন সেটা বলুন আর নাহলে আমি কঠোর হতে বাধ্য হবো। ভুলে যাবো ডক্টর তিফাজ চৌধুরী আমার পরিচিত।

সবসময় শান্তশিষ্ট রূপে দেখে আসা মানুষটার এমন তীক্ষ্ণ কথা বলায় সৌরভ চৌধুরীর সন্দেহ আরো গাড়ো হলো। সবার চোখের সামনে থাকা সবচেয়ে নম্র ভদ্র স্বভাবের থাকা লোকটার আড়ালে আরেকটা রূপ আছে সেটা তার কথার রুষ্টতায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। একে আরো ঘেঁটে দেখতে হবে ভেবে সৌরভ চৌধুরী বলল, বলতে হবে আপনি খুব বুদ্ধিমান ব্যক্তি আর নাহলে নিজের ভিতরের আরেক রূপকে আড়াল করে সবার সামনে এতটা নম্র এতটা মহান হতে পারতেন না।

সৌরভ চৌধুরীর কথায় চমকে উঠলো নাহির খান। হুঁশ আসলো তার নম্র আচরণের আড়ালে থাকা অন্য রূপে ফিরে এসেছে। সেদিন তাজের হুমকিতে আর তার ভাইকে ওভাবে মারায় এখনো রক্ত টগবগ করছে। তার উপরে সৌরভ চৌধুরীকে বাসায় দেখে রাগে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে গিয়ে নিজের ভয়ংকর রূপ সামনে নিয়ে আসছিলো প্রায় ভাবতে তিনি ঘামতে লাগলো। এরা কি তার আসল রূপ এরা ধরে ফেলেছে ভাবতে তিনি কাঁপা স্বরে বলে উঠলো,

ম… মানে..?

নাহির খানের চমকানো মুখশ্রী দেখে সৌরভ চৌধুরী বাঁকা হাসলো। বুঝতে পারলো লক্ষবস্তুকে কেন্দ্র করেই ঢিল ছুঁড়েছে। সৌরভ চৌধুরী গলা পরিষ্কার করে বলল, খালি মুখেই সব কথা বলবেন নাকি? আপনার বাসায় এসেছি চা নাস্তার তো ব্যবস্থা করুন আগে।

সৌরভ চৌধুরীর এমন গা ছাড়া ভাব কথায় নাহির খানের আবারো রক্ত গরম হয়ে উঠছে কিন্তু সেটা বুঝতে না দিয়ে মিসেস জেরিনার উদ্দেশ্যে বলল, চা নাস্তা আনতে।
নাহির খানের হুকুম পেয়ে মিসেস জেরিনা চপল পায়ে সেই স্থান ত্যাগ করলো যেনো এতক্ষণ এই হুকুমের আশায় এই ছিলো। মিসেস জেরিনা কিচেনে এসে চারপাশে সতর্ক দৃষ্টি বুলিয়ে গ্যাসে চা বসিয়ে খাতা কলম নিয়ে কিছু লিখতে লাগলো৷ লেখার ফাকে বার বার এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো কেউ দেখছে কিনা। চা বানানোর পুরোটা সময় তিনি দ্রুততার সাথে একটা পেইজের উপরে কিছু লিখে সেটা ছোট করে ভাজ করে ট্রেতে চায়ের কাপ রেখে তার নিচে কাগজটা রেখলো। এরপর তিনি লিভিং রুমে যেয়ে একটা কাপ নাহির খানের দিকে বাড়িয়ে দিতে নাহির ধমকে কিছু বলতে যেয়েও থেমে গিয়ে কাপটা হাতে নিলো। সে কাপ নিতে মিসেস জেরিনা সোফার অপজিট পাশে যেয়ে সৌরভ চৌধুরী কাছে আরেকটা কাপ বাড়িয়ে দিলে। সৌরভ চৌধুরী মিসেস জেরিনাকে নীরবে একবার অবলোকন করে স্মিত হেঁসে কাপটা নিতে মিসেস জেরিনা সেখান থেকে চলে যেতে ধীর পায়ে উল্টো ঘুরে হাঁটা দিলো।

সৌরভ চৌধুরী পিরিচ থেকে চায়ের কাপ উঠাতে কাপের নিচে একটা কাগজটা দেখে এটা ক.. বলতে যেয়েও থেমে গেলো।

নাহির খান ভ্রু তাকালো সৌরভ চৌধুরীর দিকে। নাহির খানকে এভাবে তাকাতে দেখে সৌরভ চৌধুরী অতি সপ্তপর্ণ কাগজটা হাতের মুঠোয় নিয়ে চয়ে চুমুক দিয়ে হাসার চেষ্টা করে বলল, আপনার ওয়াইফ খুব ভালো চা বানায়।

সৌরভ চৌধুরী শেষ উক্তিটি শুনে আটকে রাখা নিঃশ্বাস ছাড়লো মিসেস জেরিনা। আরকটু হলে ধরা পরে যেতো ভাবতে ভদ্রমহিলার নিঃশ্বাস আঁটকে এসেছিলো। এবার তিনি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে সেই স্থান ত্যাগ করলো।

নাহির খান ভ্রু কুঁচকে শক্ত কণ্ঠে বলল, খেজুরে আলাপ রেখে যার জন্য এখানে এসেছেন সেই ব্যাপার ক্লিয়ার করুন।

সৌরভ চৌধুরী চায়ে একটা চুমুক দিয়ে সেটা টি টেবিলের উপরে রেখে বসা থেকে উঠতে উঠতে বলল, বেশি কিছু না আপনাকে শুধু সাবধানী বার্তা দিতে এসেছি নিজের ভাইকে জীবন্ত দেখতে চাইলে তাকে সামলে রাখবেন। বুঝিয়ে দিবেন চৌধুরী পরিবারের সাথে ফের লাগতে আসলে নিজের অস্তিত্ব ও খুঁজে পাবে না এ বলে বড় বড় কদম ফেলে যেভাবে এসেছিলো ঠিক সেভাবে চলে গেলে।

সৌরভ চৌধুরী যেতে একজন স্টাফ যে সবসময় মিসেস জেরিনাকে নজরে রাখে সে এসে নাহির খানকে বলে দেয় মিসেস জেরিনা কিছু একটা লিখে সৌরভ চৌধুরীকে দিয়েছে তা শুনে নাহির খানের মাথায় রক্ত উঠে যায়। হুঙ্কার ছেড়ে ডাকে জেরিনাকে। নাহির খানের এমন হুঙ্কারে মিসেস জেরিনা আতঙ্কে নয় বরং ধীর পায়ের নিচে নেমে আসলো কারণ আগে থেকেই জানা আছে এখন তার সাথে কি ঘটবে।

জেরিনা নিচে নামতে নাহির খান তেড়ে যেয়ে গায়ের সব জোর দিয়ে জেরিনার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো সাথে সাথে ঠোঁটের কোনা ফেটে গিয়ে টাটকা রক্ত বেরিয়ে আসলো। শুধু থাপ্পড় দিয়ে ক্ষান্ত হয়নি চুলের মুঠি ধরে রাগে হুঙ্কার ছেড়ে বিশ্রী ভাষায় গা*লি দিয়ে বলতে লাগলো, এতো বড় স্পর্ধা তোর? আজ তোকে খু*ন করে ফেলবো আমি এ বলে চুলের মুঠি ধরে পেট বরাবর ঘু*ষি মে*রে গলা টিপে ধরে নোংরা ভাষায় হুঙ্কার ছেড়ে এক একটা কথা বলতে লাগলো।

পেটে ঘুষি পড়তেই জেরিনার চোখ দুটো অন্ধকার হয়ে এসেছে। নিঃশ্বাস টেনে ওঠানোর আগেই এভাবে গলা টিপে ধরায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসলো। নিস্তেজ হতে লাগলো পুরো শরীর। এই নিস্তেজ শরীরে ও কান্না না করে মৃদু হাসলো জেরিনা। তার নিজের জীবন নিয়ে তার এক বিন্দু ভয় নেই কিন্তু এই চিঠি সৌরভ চৌধুরী আর তার ভাতিজার হাতে পড়লে বেঁচে যাবে হাজারো প্রাণ। সবার সামনে বেরিয়ে আসবে এই মুখোশধারী লোকদের মুখ। মিসেস জেরিনা আরো আগে থেকেই খোঁজ নিয়ে দেখেছে তাজ আর সৌরভ চৌধুরীর ক্ষমতা আর দাপটের কথা। তবে এই ক্ষমতা আর দাপট নিয়ে তারা খারাপ কাজ করে না বরং দেশের উপকার করে সেই ভরসায় মিসেস জেরিনার পক্ষে যতটুকু সম্ভব চিঠির মাঝে কিছু কথা তুলে ধরেছে। এর ফলে নিজের জীবনের আজ পরিসমাপ্তি ঘটবে আগে থেকেই জানা। অন্তত তার একটা জীবনের বিনিময়ে বাঁচবে নবজাতক শিশুদের প্রাণ। বাঁচবে হাজারো তরুণীদের প্রাণ ভাবতে এই শ্বাসরুদ্ধকর যন্ত্রণায় ছটফট না করে নিজের জীবনের এই ভয়ংকর সমাপ্তিকে মেনে নিলো। আজ থেকে সে মুক্ত কথাটা ভাবতে চোখের কার্নিশ বেয়ে কয়েক ফোঁটা জ্বল গড়িয়ে পড়লো। ধীরে ধীরে নিস্তেজ হতে লাগলো পুরো শরীর। কিন্তু পুরোপুরি নিস্তেজ হওয়ার আগে অনুভব করলো কেউ একজন ছুটে এসে এই হিংস্র মানবকে টেনে তার থেকে ছুটিয়ে নিয়েছে। এর পর আর কিছুই অনুভব করার সুযোগ হলো না। নিস্তেজ হয়ে লুটিয়ে পড়লো মেঝেতে।

সৌরভ চৌধুরী তখন বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠতে যেয়ে খেয়াল করলো তার ফোন রেখে এসেছে তাই আবার বাসায় প্রবেশ করতে স্তব্ধ হয়ে গেলো। তিনি বাতাসের বেগে ছুটে যেয়ে নাহির খানকে জেরিনার থেকে ছুটিয়ে এনে তার কলার টেনে ধরে হুঙ্কার ছেড়ে বলল, কি করছেন কি? ওনাকে এভাবে মারছেন কেনো?

নাহির খান ও কম যায় না সৌরভ চৌধুরীকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে ছাড়িয়ে হুঙ্কার ছেড়ে বলল, আমার ওয়াইফকে আমি যা খুশি করবো তোর বাধা দেওয়ার সাহস হলো কি করে?

তোর আসল রূপ আরো আগেই ধরেছি শুধু তোর আসল রূপ সামনে আনা বাকি ছিলো তা তুই নিজেই এনে ফেলেছিস। এবার রেডি হয়ে যা সামনের ঘটনা মোকাবিলা করার জন্য।

সৌরভ চৌধুরীর কথায় নাহির খান ঘর কাঁপিয়ে হেসে বলে উঠলো,

হ্যা এনেছি নিজের আসল রূপ তোর সামনে? কি করবি তুই? আগে তো এখান থেকে জীবন নিয়ে বের হয়ে দেখা এ বলে গার্ড দের ইশারা করলো সৌরভ চৌধুরীকে ধরতে কিন্তু গার্ডরা সব ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো তা দেখে নাহির খান হুঙ্কার ছেড়ে বলল তোদের কি হুকুম দিয়েছি কানে যায় না?

কানে যাবেও না কোনো কথা কজ ওদের কান আরো আগেই কেটে নিয়েছি সম্মানীয় ডক্টর সাহেব কথাটা বলতে বলতে পকেটে হাত গুঁজে লিভিং রুম প্রবেশ করলো তাজ। আর তার পিছু আরফি, পাপন, মাহিম, সাব্বির।

তাজকে দেখে ছলাৎ করে উঠলো নাহির খানের বক্ষ। এতক্ষণ রাগে কাঁপতে থাকা লোকটা মুহূর্তের মাঝে মিইয়ে গিয়ে। নাহির খান সবাইকে অবলোকন করে শুকনো গলায় বলল, ম..মানে?

তাজ নাহির খানের সামনে দাঁড়িয়ে শান্ত কিন্তু তীক্ষ্ণ স্বরে বলে উঠলো, তোর পোষা গার্ড সব এখন তাজ চৌধুরীর কেনা গোলাম। কি নিখুঁত অভিনয়। তুইতো মেয়েদের ও হার মানালি অভিনয়ে। এই সুশীল নম্র মুখশের আড়ালে নিখুঁত অভিনয়ের মাঝে লুকিয়ে রেখেছিস ভয়ংকর এক রূপ। কি ভেবেছিস তাজ চৌধুরীর নাকের ডগা দিয়ে তুই আড়ালে এত কিছু করে যাবি সেটা তার কানে যাবে না?

তাজের কথায় ঘামতে লাগলো নাহির খান। এসির মধ্যেও কপাল বেয়ে দরদর করে ঘাম চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে। তার এত বছরের নিখুঁত পরিকল্পনা এরা কিভাবে ধরে ফেললো? অসম্ভব এ কিছুতে সম্ভব না ভাবতে তিনি তীক্ষ্ণ কণ্ঠে বলে উঠলো,

কি যা তা বলছো? এখনি আমার বাসা থেকে বেরিয়ে যাও আর নাহলে আমি পুলিশ ডাকতে বাধ্য হবো।

তো ডাকুন না? পুলিশ এসে দেখে যাক মুখশধারী লোকের আড়ালে থাকা আসল রূপ।

নাহির খান এবার দমে গেলো। বুঝলো আর অভিনয় করে লাভ হবে না সব সত্যি এরা জেনে গেছে। তিনি এবার নিজের ভালোমানুষি রূপ ভুলে গিয়ে গর্জে উঠে তার পোষা গার্ডেন উদ্দেশ্যে বলে উঠলো, বিশ্বাসঘাতক তোদের সবাইকে আমি শেষ করে দিবো। তাজ চৌধুরী তোদের কত টাকা দিয়ে কিনেছে? তার চেয়ে তিনগুণ টাকা আমি দিবো এখনো সময় আছে নিজেদের ভালো চাইলে আমার কথা মোতাবেক কাজ কর।

নাহির খানের এই গর্জনেও এক চুল পরিমাণ নড়লো না গার্ডরা তা দেখে তাজ বাঁকা হেঁসে বলল, কালোবাজারি টাকার পাহাড় গড়েও মাত্র তিন গুণ টাকাট অফার করছেন? শুধু তিন গুন কেনো আপনার গড়া কালো টাকার পাহাড় সবটা দিয়ে এদের মুড়িয়ে দিলেও এক চুল পরিমাণ নড়বে না এরা।

নাহির খান এবার আচমকা টেবিলের উপরে থাকা ছু*রি নিয়ে তাজের উপরে অ্যাটাক করতে উদ্যত হতে বলে উঠলো কি করেছিস তুই এদের? আমি তোকে ছাড়বো না। তোর জন্য আমার এত বছরের সব প্ল্যান ধ্বংস হয়ে যাবে সেটা আমি বেঁচে থাকতে কিছুতেই হতে দিবে না এ বলে তাজের দিকে ছুটে যেতে তাজ নাহিরে খানের বুক বরাবর লাত্তি দিতে ছুটকে দেওয়ালের সাথে বারি খেয়ে মেঝেতে লুটিয়ে পড়লো। সব গার্ডরা নাহির খানকে মা*রা*র জন্য ছুটে যেতে নিলে তাজ সবাইকে হাতের ইশারায় থামিয়ে দিয়ে নিজেই নাহির খানের কাছে গিয়ে কলার টেনে উঠিয়ে এলোপাতাড়ি কয়েকটা ঘু*ষি মা*র*তে নাহির খানের চোখ নাক-মুখ দিয়ে র*ক্ত বের হতে লাগলো। তাজ নাহির খানকে ধাক্কা মেরে আরফিদের হাতে দিয়ে রাগে গর্জে উঠে বলল, শু* বাচ্চাকে ক্লাবে নিয়ে উত্তম মাধ্যম দিতে থাক। মুখ থেকে সব বের কর আমি বাকি কাজ শেষ আসছি।

তাজের হুকুমে ওরা সবাই নাহির খানকে টেনে হেচরে র*ক্তা*ক্ত অবস্থা সেখান থেকে নিয়ে গেলো। আরফিরা যেতে মেঝেতে পড়ে থাকা মিসেস জেরিনার পাশে বসে তাজ তার পার্লস চেক করে দেখলো ধীর গতিতে চলছে। তাজ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে সৌরভ চৌধুরীর উদ্দেশ্যে বলল, চাচ্চু ওনাকে কুয়িকলি গাড়িতে আনার ব্যবস্থা করো পর্লস ধীর গতিতে চলছে এ বলে তাজ বড় বড় কদম ফেলে বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে বসতে কিছুক্ষণ পর সৌরভ চৌধুরী মিসেস জেরিনাকে এনে গাড়ির পিছের সিটে শুইয়ে দিয়ে তাজের পাশে যেয়ে বসতে তাজ গাড়ি স্টার্ট করলো।

তাজ গাড়ি স্টার্ট দিতে সৌরভ চৌধুরীর তখনের কাগজের কথা মনে পড়তে পকেট থেকে কাগজটা বের করে পড়তে শুরু করলো।

#চলবে?

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং…