হৃদয়স্পর্শী মায়াবিনী পর্ব-০৯

0
127

#হৃদয়স্পর্শী_মায়াবিনী
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর (মিমি)
#পর্বঃ৯

এখানে কি হয়েছে কিছুই দেখোনি তোমরা কথাটা মাথায় থাকে যেনো। এবার এখান থেকে যাও গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠলো আরফি।

যাওয়ার কথা শুনে যেনো প্রাণ ফিরে পেলো ফারিসতা আর রাশফিয়া। ওরা আর এক সেকেন্ড ও ওখানে না দাঁড়িয়ে এক প্রকার ছুটে সেখান থেকে চলে গেলো। রাশফিয়া যাওয়ার আগে কৃতজ্ঞতার চোখে তাকালো আরফির দিকে। এই ছেলেটার জন্য আজ যেনো হিংস্র বাঘের থাবা থেকে বেঁচে ফিরলো।

ফারিসতারা যেতে সাব্বির বলে উঠলো ভাই এটা কি করলেন ওই মেয়েকে ছেড়ে দিলেন?

সাব্বিরের কথায় তাজ কোনো প্রতিত্তোর করলো না তা দেখে আরফি বলে উঠলো মেয়ে মানুষ বাদ দে…

বনি বলে উঠলো ভাবী বলে ক.. আর কিছু বলার আগে তাজ চোখ গরম করে তাকাতে বনি বলতে চাওয়া কথাটা ঢোকের সাথে গেলে ফেলল।

পাপন তাজের দিকে আরে চোখে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলল, এই ছেলের দ্বারা এই জীবনে মিঙ্গেল হওয়া সম্ভব না। মেয়েটাকে যেভাবে ধমকেছে এই মেয়ে পটবেতো দূরের কথা ওর ছায়া দেখলেও পালাবে।

এদিকে ফারিসতা আর রাশফিয়া লেক পার্ক থেকে বেরিয়ে বড় বড় করে নিঃশ্বাস নিতে লাগলো। রাশফিয়া হাঁপানোর স্বরে বলে উঠলো,
বাঘের থাবা থেকে বেঁচে ফিরলাম। তাজ চৌধুরীকে নিয়ে মিডিয়ায় অনেক আলোচনা সমালোচনা করতে দেখেছি। বাট বাস্তবে উনি এতো ভয়ংকর হবে দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। এই জন্যই তাকে নিয়ে এতো সমালোচনা যে একজন ডক্টর হয়েও তার ডক্টরের পেশার চেয়ে ক্ষমতা, রাজনীতি, দাপটের প্রতি ঝোঁক বেশি। ডক্টরের মতো সম্মানিয় পেশার সাথে তার এই পেশা যায় না। তাজ চৌধুরী কাউকে পরোয়া করে না৷ তার ভয়ে রীতিমতো সবাই কাঁপে এমন নানা ধরনের সমালোচনা। জানতাম উনি খুন রাগী সবাই তাকে ভয় পায় কিন্তু বাস্তবে যে এতটা ভয়ংকর স্বপ্নেও ভাবিনি। এই জন্য লোকজন তাকে এতো ভয় পায়।

রাশফিয়ার কথায় ফারিসতার শুকনো গলা আরো শুকিয়ে গেলো। ফারিসতা কোনো রকম গলা দিয়ে কথা বের করে বলল,

দোস্ত আমাকে আগে এক গ্লাস পানি খাওয়া আর নাহলে নিঃশ্বাস আঁটকে মা/রা যাবো।

ফারিসতার কথায় রাশফিয়া ফারিসতার দিকে তাকাতে দেখলো ফারিসতা বড় বড় করে নিঃশ্বাস টানছে তা দেখে রাশফিয়া দ্রুত রাস্তার অপজিট পাশের একটা দোকান থেকে পানি এনে খাইয়ে দিলো ফারিসতাকে। পানি খেয়ে ফারিসতা স্বাভাবিক হতে দুজন সামনে আগাতে নিবে তখন কিছু একটা মনে পড়তে রাশফিয়া বলে উঠলো এক মিনিট। তাজ চৌধুরী তখন তোকে বলেছিলো সব জায়গায় ঝামেলা করতে তুই উড়ে যাস। তার মানে তাজ চৌধুরী তোকে চেনে। আর ঝামেলা মানে? তুই তাদের সাথে কিসের ঝামেলায় জড়িয়েছিস? আঁতকে উঠে বলে উঠলো রাশফিয়া।

রাশফিয়ার করা প্রশ্নে ফারিসতা ঢোক গিলে কাঁদো কাঁদো ফেইস করে বলল

আমি জানতাম নাকি এই দানবদরা এতটা ভয়ংকর? দোস্ত আমি না চাইতেও বার বার এই দানবদের ক্ষপ্পড়ে জড়িয়ে গিয়েছি বলে দাঁত দিয়ে নখ কামড়াতে লাগলো।

ফারিসতার কথা শুনে রাশফিয়া চোখ গোল গোল করে মৃদু চিৎকারে দিয়ে বলে উঠলো কি…? কি করেছিস তুই?

ফারিসতা দাঁত দিয়ে নখ কাটতে কাটতে নিভু স্বরে বলে উঠলো,

এই একসপ্তাহ ধরে যা যা ঘটেছে সব কিছু ওনাদের সাথেই।

ফারিসতার এবারের কথা শুনে আকাশ থেকে পড়লো রাশফিয়া। রাশফিয়া ভয়ে আতঙ্কে বলে উঠলো তার মানে আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওনাদের কাছেই বন্দী ছিলি তুই?

ফারিসতা নখ কামড়াতে কামড়াতে উপর নিচ মাথা দুলালো তা দেখে রাশফিয়ার মাথা ঘুরে ওঠার মতো অবস্থা হলো। রাশফিয়া আতঙ্কে জর্জরিত হয়ে বলে উঠলো,

তোকে হাজার বার বলেছি কোনো ঝামেলায় জড়াবি না। তুই সেই কথা শোনার মেয়ে তো না এই উল্টো এমন মানুষদের সাথে ঝামেলায় জড়িয়েছিস যে এখন থেকে কতটা রিক্সি লাইফ লিড করা লাগবে তোর ধারণা আছে? প্রথমদিন পাকনামি করে আন্টিকে আগে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে একা একা গিয়ে ওনাদের ক্ষপ্পড়ে পড়েছিস। শুধু ওইটুকুতেই এনাফ না তুই আজ এমন ভয়ংকর মানুষদের সাথে যেচে ইচ্ছে করে লড়াই করতে গিয়েছিস। এনাদের যেই ক্ষমতা তারা চাইলে আজ তোকে মে/রে গুম করে দিতে এক মিনিট সময় লাগতো না। এ কাদের ঝামেলায় জড়িয়েছিস তুই?

ফারিসতা জ্বিভ দিয়ে শুকনো ঠোঁট ভিজিয়ে ঠোঁট উল্টে বলে উঠলো,

আমি জানতাম নাকি ওই ছেলে গুলো ওই দানবটার লোক।

যা আরেকটু মানবতার ফেরিওয়ালা হ। একজনের জীবন বাঁচাতে যেয়ে নিজের জীবনটা কোথায় নিয়ে ঠেকিয়েছিস বুঝতে পারছিস?

ফারিসতা মাথা নিচু করে মিনমিনিয়ে বলে উঠলো, অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই সেটা সবাই জানিস। জানিনা সকালের ওই বৃদ্ধার কোনো দোষ ছিলো কিনা। যদি বৃদ্ধা নির্দোষ হয়ে থাকে তাহলে তার জীবন বাঁচানোর বদলে নিজের জীবন ঝুঁকিতে পড়তে আফসোস থাকবে না আমার। আফসোস তখন হতো যদি আমি এর প্রতিবাদ না করতাম। মুখ বুজে অন্যায় সয়ে যেতাম।

ফারিসতার কথা শুনে রাশফিয়া নীরবে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো ফারিসতার দিকে। এই মেয়েটা সব সময় অন্যের কথা চিন্তা করে যায়। অন্যের জন্য জীবনে বহুবার নিজের লাইফটা রিক্সে ফলেছে তবুও কোনো অন্যায় মুখ বুজে সহ্য করেনি। এমন লয়াল মেন্টালিটির মেয়েটাকে সৃষ্টিকর্তা হেফাজত করুক মন থেকে চাইলো রাশফিয়া। রাশফিয়া এবার ফারিসতার কথায় রাগান্বিত না হয়ে ফারিসতার কাঁধে হাত রেখে শান্ত গলায় শুধালো,

ফারু সব অন্যায়ের প্রতিবাদ করার ক্ষমতা আমাদের নেই। তুই দেখ তাজ চৌধুরীর ক্ষমতার কাছে একটা পিঁপড়েও না আমরা। সেখানে তার সাথে লড়ার ক্ষমতা আছে সেটা ভাবা ও বোকামি। তুই একবার ভাব তোর কিছু হলে আন্টির কি হবে? জীবনে ওতো বড় একটা শোক পেয়ে তোকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছে। অন্তত আন্টির মুখের দিকে তাকিয়ে নিজেকে এবার এগুলো থেকে গুটিয়ে নে। অন্যায় মুখ বুজে সয়ে নিতে বলার জন্য আমাকে স্বার্থপর উপাধি দিতে পারিস তাতে আমার সমস্যা নেই কারণ আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের সব অন্যায়ের মোকাবিলা করার ক্ষমতা তেই এটা তোকে বুঝতে হবে।

রাশফিয়ার কথায় ফারিসতা কোনো প্রতিত্তোর করলো না তা দেখে রাশফিয়া হতাশ শ্বাস ফেললো কারণ জানে এই মেয়েকে যতই বোঝাক একটু পর যেই সেই এই হয়ে যাবে তাই রাশফিয়া এই কথা আর না বলে বলল,

অন্য যেকোনো ঝামেলায় খুশি জড়া বইন তবুও এই তাজ চৌধুরীর সাথে আর কোনো প্রকার ঝামেলায় জড়াইস না।

রাশফিয়ার এবারের কথায় ফারিসতার আঁধার মুখে যেনো এক পশলা খুশি নেমে আসলো। ফারিসতা মৃদু দাঁত কেলিয়ে বলে উঠলো আচ্ছা।

ফারিসতার কাজে রাশফিয়া চোখমুখ কুঁচকে ফারিসতার মাথায় গাট্টা মেরে বলে উঠলো, এই জীবনে আর সোজা হবি না তুই। তবে একটা জিনিস দেখেছিস ওই ছেলেটার জন্য আজ তাজ চৌধুরীর ক্ষপ্পড় থেকে বাঁচতে পেরেছি। যদি কখনো ওই ছেলের সাথে দেখা হয় তাহলে অন্তত একটা ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য সে।

রাশফিয়ার কথায় ফারিসতা বলল তা ঠিক বলেছিস। দুপুরেও ওই অজগর সাপটার হাত থেকে উনি এই বাঁচিয়েছে আমায়। কিন্তু প্রথম দিন উনি এই আমাকে
ওমন বাজখাঁই গলায় দুইটা ধমক দিয়েছিলো তাই দুপুরে ওনাকে উল্টা পাল্টা কথা শুনিয়ে চলে এসেছিলাম।

তোর কাজ এইতো সবসময় ঝামেলা বাজানো আর উল্টা পাল্টা কাজ করা।

*****
অন্ধকার রুমে এক অজ্ঞাত ব্যক্তি রকিং চেয়ারে বসে মৃদু দোল খাচ্ছে। তার ঠিক সামনে কয়েকজন লোক ভয়ে রীতিমতো কাঁপছে। তাদের কাঁপুনি আরো বড়িয়ে দিয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তি হুঙ্কার ছেড়ে বলে উঠলো, রাজিব কি করে তাজ চৌধুরীর হাতে পড়লো? তোদের কি নির্দেশ দিয়েছিলাম আমি?

অজ্ঞাত ব্যক্তির হুঙ্কারে কেঁপে উঠে সামনে দাঁড়িয়ে থাকার লোকদের ভিতরে একজন কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলে উঠলো,

বস আপনার নির্দেশ অনুযায়ী আমরা রাজিবকে যেই মারতে যাবো ঠিক তখন কোথা থেকে এসে যেনো তাজ চৌধুরীর সাঙ্গপাঙ্গরা এসে ওকে উঠিয়ে নিয়ে গেলো।

অজ্ঞাত ব্যক্তি সামনে থাকা টেবিলের উপরে সজোরে লাত্তি মেরে হুঙ্কার ছেড়ে বলে উঠলো, তোদের সামনে থেকে কি করে ওর লোক তুলি নিয়ে যায়? তুলে নেওয়ার পর কি হয়েছে মুখ খুলেছে ও?

মুখ এখনো খোলেনি বস। তবে আধমরা হয়ে পড়েছে তাজ চৌধুরীর মার খেয়ে। ওর মুখ থেকে কথা বের করার জন্য শুধু জানে মারেনি এখন ওদের হসপিটালেই ভর্তি আছে।

অজ্ঞাত ব্যক্তি এবার যেনো খুশি হলো তিনি বাঁকা হেঁসে বলে উঠলো তার মানে সুযোগ এখনো হাত ছাড়া হয়নি। যে করে হোক আজ রাতে মধ্যে ওর জবান চিরতরের জন্য মুছে দিবি। এবারের সুযোগ হাতছাড়া হলে একটাও জীবন নিয়ে বাড়ি ফেরার সুযোগ পাবি না।

অজ্ঞাত ব্যক্তির ছোঁড়া হুমকিতে সবাই এক সাথে বলে উঠলো আজকে রাতের ভিতরেই কাজ হয়ে যাবে বস।

*****
ফোনের শব্দে হঠাৎ ঘুম ছুটে গেলো তাজের। তাজ চোখ তুলে জানালা ভেদ করে বাহিরে তাকাতে দেখতে পেলো সবে বাহিরে ভোরের আলো ফুটছে। রাত করে বাসায় এসে নিজের স্টাডি কমপ্লিট করে ঘুমাতে ঘুমাতে প্রায় শেষ রাত হয়ে গিয়েছিলো অবশ্য এটা ওর ডেইলি রুটিন। শেষ রাতে ঘুমিয়ে সকালে একটু লেট করে উঠা। আজ এতো সকাল সকাল কেউ ফোন করে ঘুমের ব্যঘাত ঘটাতে মুহূর্তের মাঝে মেজাজ চটে গেলো। তাজ ফোন তুলে যেই বাজখাঁই গলায় ধমক দিতে যাবে তার আগে ফোনের ওপাশ থেকে আরফি বিচলিত হয়ে কিছু বলে উঠতে তড়িৎ গতিতে উঠে বসে তাজ বলে উঠলো… হোয়াট…? আমি এখনি আসছি বলে ফোন কেটে কোনো রকম ফ্রেশ হয়ে হসপিটালে ছুটলো। হসপিটালে পৌঁছে সবকিছু অবলোকন করে তাজ চোয়াল শক্ত করে বলে উঠলো এসব কি করে হলো?

আরফি তাজের পাশে এসে বলল, জানিনা সকালে হসপিটালে পৌঁছে দেখি এই অবস্থা। রাতের ডিউটিতে যেই কজন ছিলো একজন ও বেঁচে নেই।

সাব্বির বলে উঠলো, ভাই এর পিছে বড় কেউ রয়েছে আর নাহলে একজনকে মারার জন্য এতো রিক্স নিয়ে এতোগুলো গার্ডকে মেরেছে। তার মানে রাজীবের থেকে ইম্পর্ট্যান্ট কিছু জানতে পারতাম আমরা যার জন্য ওকে রাস্তা থেকে এভাবে সরিয়ে দিয়েছে।

তাজ চোয়াল শক্ত করে বলে উঠলো কেউ কিছু টের পাওয়ার আগে এগুলোকে গুম কর। এটা হসপিটাল তাই এখনে কোনো রকম আতঙ্ক সৃষ্টি করা যাবে না। আর সবগুলো সিসি ক্যামেরা চেক কর।

মাহিম আর পাপন কোথাও থেকে হুড়মুড়ি খেয়ে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলে উঠলো, সিসি ক্যামেরা চেক করেছি। রাত ২ টা থেকে ৩ টার ফুটেজ মিসিং। এই এক ঘন্টার ফুটেজ কেউ অতি সপ্তপর্ণে মুছে দিয়েছে।

হোয়াট? সিসি ক্যামেরায় নজর রাখে সেটা কার আন্ডারে ছিলো?

মাহিম বলে উঠলো হাকিম চাচা এটার দেখাশোনা করে। মনিটরিং রুমে যেয়ে দেখি উনি জ্ঞান হারিয়ে পড়ে আছে। এখনো জ্ঞান ফেরেনি।

তাজ আঙ্কেল আসছে আতঙ্কিত হয়ে হঠাৎ বলে উঠলো আরফি।

আরফির কথায় হঠাৎ চকালো তাজ। তিফাজ চৌধুরী এখন এখানে আসা মানে ওর সাথে তুমুল যুদ্ধ বেজে যাওয়া কিন্তু এটা হসপিটাল তাই এখানে কোনো রকম সিনক্রিয়েট করা ঠিক হবে না ভাবতে তাজ নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা চালিয়ে গেলো যে তিফাজ চৌধুরী যাই বলুক ও নিজেকে শান্ত রাখবে।

তাজের ভাবনার মাঝে তিফাজ চৌধুরী ওদের কাছে এগিয়ে আসলো। শেষ রাতের দিকে ইমার্জেন্সি রোগী ছিলো যার জন্য ঘুম ফেলে তাকে ছুটে আসতে হয়েছিলো হসপিটালে। রোগীর ট্রিটমেন্টের কাজ শেষ করে বের হতে দূর থেকে চোখে পড়লো তাজ হসপিটালে প্রবেশ করছে। ছেলেকে এতো সকাল সকাল হসপিটালে আসতে দেখে তার মনে খটকা লাগে কিছু একটা হয়েছে কারণ তার গুনধর ছেলের ছায়াও হসপিটালের পাশে পরে না ডিউটির দুইদিন বাদে। সেখানে আজ তাজের ডিউটি নেই তার উপর এত সকাল সকাল ওকে হসপিটালে দেখে তিনি তাজকে অনুসরণ করে তিনতলার একদম পিছন সাইডে এসে দাঁড়িয়ে সব কিছু অবলোকন করে মুহূর্তে মাঝে মাথায় আগুন ধরে গেলো। তিফাজ চৌধুরী চোয়াল শক্ত করে তাজের সামনে দাঁড়িয়ে বলে উঠলো,

গুন্ডামী করার জন্য হসপিটালটাও বাদ রাখনি? কি ভাবো তুমি নিজেকে? এট আমার হসপিটাল। তোমার জন্য আমার হসপিটালে আতঙ্ক সৃষ্টি হলে আমি ভুলে যাবো তুমি আমার ছেলে হও।

তিফাজ চৌধুরীর কথায় তাজ বিরক্তিতে চোখমুখ কুঁচকে ফেললো কিন্তু কিছু বলল না। এখন ওর কিছু বলা মানে পুরো হসপিটাল সজাগ হয়ে যাওয়া। যত যাই হোক এই হসপিটালের ডক্টর ও। এখানে হাজারো রোগীর বসবাস। এর ভিতরে কারো চোখে এগুলো পড়লে পুরো হসপিটালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়বে এতে বিশৃঙ্খল একটা পরিবেশ তৈরি হয়ে যাবে যেটা ও আপাতত চায় না।

তাজকে কোনো কিছু বলতে না দেখে তিফাজ চৌধুরী রাগে হিসহিসিয়ে আরফিদের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,

কোন সাহসে গুন্ডামী করতে আমার হসপিটালে প্রবেশ করেছো? দিন দিন রাগের মাত্র ছাড়িয়ে যাচ্ছো তোমরা। তোমাদের জন্য যদি আমার হসপিটালের রেপুটেশন খারাপ হয় তাহলে আমার চেয়ে খারাপ আর কেউ হবে না কথাগুলো বলে তাজের দিকে আগুন চোখে তাকিয়ে তিফাজ চৌধুরী হনহনিয়ে চলে গেলো।

তিফাজ চৌধুরী যেতে আরফি, মাহিম, পাপন আর সাব্বির যেনো দম নিলো। এই এক মাত্র লোক যে ওদের দেখলেই ধমক আর থ্রেটের মাথায় রাখে।

তাজ সবার দিকে একবার তাকিয়ে গার্ডদের সব কিছু গুম করার হুকুম ছুড়ে সেই স্থান ত্যাগ করলো।

#চলবে?

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং….🥰