#হৃদয়ে_প্রণয়ের_বাস
#পর্ব_০৪
লেখনীতেঃ রোদসী রঙ্গন
“মৃধার বাচ্চা মৃধা! ঐ আবিরের সাথে যদি তুই দেখা করিস তাহলে কিন্তু আমার চাইতে খারাপ আর কেউ হবে না বলে দিলাম।”
মৃধা বোকার মতো হতবিহ্বল নজরে তাকিয়ে থাকল নিশীথের দিকে। কালো রংয়ের একটা শার্ট পরিহিত,হাতা গুলো কনুই অব্দি গুটানো আছে। চুলগুলো কিছুটা কপালে এসে ঝুঁকে আছে।মৃধা কয়েক পলক চাইল ৷ দেখে মনে হচ্ছে কোথাও যাওয়ার জন্য তৈরি হয়েছে নিশীথ। পরমুহুর্তে ফুস করে শ্বাস ফেলে শুধাল,
“ তোর ঢং দেখে তো কথাই বলতে পারলাম না বেচারার সাথে। আশ্চর্য! কফির মগটা তখন এভাবে ফেললি কেন? ”
নিশীথ ভ্রু উঁচু করল। প্রশ্ন ছুড়ল,
“ বেচারা? বাহ! ”
“ কি? ”
নিশীথ ব্যঙ্গ করে বলল,
“ আমিও তোর ঢং দেখছি। ”
মৃধা নাক ফুলিয়ে বলে উঠল,
“ ঢং করছি না আমি। তুই যে কফির মগটা ফেলে ভেঙ্গে ফেললি আন্টি যদি রেগে যায় এবার আমার উপর? ”
নিশীথ পাত্তা দিল না। বরং বলল,
“ রেগে গেলে রেগে যাবে৷ সমস্যা কি? ”
কথাটুকু বলতে বলতেই রুম ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল নিশীথ। মৃধা বাঁধা দিয়ে পেছন থেকে বলল,
“ সকালে নাস্তা না করে তৈরি হয়ে কোথায় বেরুচ্ছিস? ”
“কাজ আছে। ”
মৃধা ফের জিজ্ঞেস করল,
“ কি কাজ? ”
নিশীথ এবারে বিরক্ত হলো যেন। কপাল কুঁচকে বলে উঠল,
” কি আশ্চর্য! টিপিক্যাল হাজব্যান্ডদের মতো সব কৈফিয়ত আমি তোকে দিব এখন? ”
মৃধা নিরস স্বরে জানাল,
“ দিস না, কিন্তু খেয়ে তো যা। তোর আম্মা যদি আমার দোষারোপ করে এবারে? ”
নিশীথ ঠোঁট নাড়িয়ে বিনিময়ে উত্তর দিল,
“ আমার আম্মা তোর নির্বোধ নয়। ”
.
নাস্তার টেবিলে নীলাদ্রী, নিবির সহ মৃধাও আছে। মাহমুদ সাহেবের ঘর থেকে কিছুটা আওয়াহ ভেসে ভেসে আসছে যা তারা তিনজনই শুনছে। মৃধা হতাশ হয়ে চাইল। শোনা গেল নিশীথের আম্মুর গলা,
“ ছেলেটার জীবনটা নিজে বাপ হয়েই শেষ করেছো। দেখেছো ছেলের রাগ? সকাল সকাল রাগারাগি করে মগ ভেঙ্গেছে।আর এখন না খেয়েই বেরিয়ে যাচ্ছে। আমার ছেলের এমন ছন্নছাড়া জীবনের জন্য কে দায়ী? তুমি না? শুধু তুমি না? ”
মাহমুদ সাহেব রাগ দেখালেন না। তবে শান্ত গম্ভীে স্বরে উত্তর করলেন,
“ কয়েকটা দিন যাক। আশা করি তোমার ধারণা বদলাবে। ”
নিশীথের আম্মু ফের রাগ দেখিয়ে বলল,
“ কয়েকটা দিন কেন যেতে হবে? আমি জানি না আমার ছেলে কেমন? ”
“ জানো না। ”
ফের তেজি স্বরে উত্তর এল,
“ জানি। একশোবার জানি। মৃধা আর নিশীথ সবসময় বন্ধুই ছিল। বন্ধুত্বের মাঝে তুমি এই বিশ্রী খেলাটা না খেললেই পারতে। শেষে ওদের বন্ধুত্বটাও না নষ্ট হয়। ”
মাহমুদ সাহেব শীতল স্বরে বললেন,
“ হবে না। ”
“ তুমি তো সব জেনে বসে আছো তাই না? আমি আমার ছেলের জন্য পছন্দ করে মেয়ে দেখে বিয়ে করাতাম। কত শখ ছিল আমার! তা না, উনি আমার জন্য পুত্রবধূ এনেছেন। আরেহ ওরা সমবয়সী। টিকবে বিয়েটা? ”
মাহমুদ সাহেব গাঢ় কন্ঠে বললেন,
“ অবশ্যই টিকবে। ”
মৃধা তখন মাহমুদ সাহেবের রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। নিজের জন্য এক দম্পতির মাঝে এভাবে ঝগড়া তা সহ্য হচ্ছিল না। তাই তো এগিয়ে আসল। নরম স্বরে বলে উঠল,
“ আন্টি? নিশীথ যদি আমার জন্যই ছন্নছাড়া হয়ে আছে তাহলে একটা সমাধাণ বলি? আমি বরং আমার বাড়িতে চলে যাই। মাঝখানে এই বিয়েটা আমরা দুইজনে ভুলে গেলেই তো সমস্যা শেষ। ”
নিশীথের আম্মু তাও নাকোচ করলেন। মুহুর্তেই বলে উঠলেন,
“ না! তা কি করে হয়? তুই যেভাবেই হোক এ বাড়ির বউ এখন মৃধা। আমি এতোটা অসভ্য নই যে বাড়ির বউকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দিব। ”
.
একটা অত্যাধুনিক রেস্টুরেন্ট। এককোণায় টেবিলে দুই দইজন যুবক বসা। একজনের বিপরীতে অপর জন। এর মাঝে একজন নিশীথ। অপর জন মৃধার সাথে যার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল, অর্থ্যাৎ আবির। নিশীত সরু চাহনিতে এতক্ষন আবিরকে পর্যবেক্ষন করছিল। অবশেষে বলল
“ চ্যালেঞ্জ হেরেছেন আপনি। মেনে নিন মিস্টার আবির! এভাবে বেহায়াদের মতো অন্যের বউকে কল ম্যাসেজ কেন করছেন?”
আবির উত্তরে হালকা হাসল। যা দেখে নিশীথে গা জ্বলে উঠল। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“দেখুন সিনিয়র ভাই হিসেবে সম্মান করছি। নয়তো এতক্ষনে আপনাকে কি যে করতাম…”
আবির দৃঢ় চোখে চাইল। ব্যঙ্গ সুরে বলল,
“ কি করতে? ”
নিশীথ রাগে চোয়াল শক্ত করল। হাত নিশপিশ করছে। তবুও শুধাল,
“ অন্যের বউয়ের দিকে হাত বাড়ান কোন অধিকারে? ”
“ জোরপূর্বক বউ করেছো তাকে তুমি। ”
নিশীথ ভ্রু উঁচাল। জিজ্ঞেস করল,
“ আপনি শিওর জোরপূর্বক? ”
আবির শান্তভাবে চাইল। উত্তর দিল,
“ আমায় আটকে না রাখলে বিয়েটা নিশ্চয় তোমার সাথে হতো না নিশীথ। ”
নিশীথ এবারে হাসল। ব্যঙ্গ করা হাসি। আবিরের ভাবনা চিন্তা এতোটা বোকা হবে বোধহয় সে ভাবেনি। তাই তো হাসি আসল। পরমুহুর্তে বলল,
“ বিয়েটা আমার সাথেই হতো, যেভাবেই হোক। আপনি ভাবলেন কি করে ওর বিয়েটা আমি আপনার সাথে হতে দিতাম? ”
আবিরের গলাটা এবার নরম হয়ে এল। অনুরোধের স্বরে বলল,
“নিশীথ! শুরুটা জাস্ট প্রতিশোধের জন্য হলেও এখন আমি মৃধাকে ভালোবাসি। তোমার মনে হয় না প্রতিশোধের খেলায় ভালোবাসা না জড়ানোই ভালো? ”
নিশীথ এবারে বাঁকা হাসল। শুধাল,
“ বড়ভাইয়া? ইমোশনাল খেলা খেলতে আসবেন না আমার সাথে প্লিজ! আপনি কি ভেবেছেন আমি এখনো বাচ্চা আছি? বাচ্চাকালে যেভাবে সবচেয়ে ভালোবাসার জিনিসটা আপনাকে দান করেছি এবারেও তা হবে ভাবলে ভুল করছেন আপনি। ”
আবির অসহায়ের মতো চাইল। পুণরায় বলল,
“ নিশীথ? প্লিজ! আমার মনে হয় এই খেলাটার এবার সমাপ্তি ঘটুক। প্লিজ! এতোটা রাগ আমার উপরই কেন তোমার? আমি নিশ্চয় অতীতের সেই ঘটনার জন্য দায়ী ছিলাম না? তাহলে? আমার কি দোষ?”
নিশীথ মনে করতে চাইল না সে অতীতটাকে। তবুও মনে পড়ল। বিষাক্ত অনুভূতিতে মাথা গরম হলো যেন। চোয়াল শক্ত করে শুধাল,
“জাস্ট শাট আপ! এত বড় বড় কথা মানাচ্ছে না ঐ পরিবারের ছেলে হয়ে! ”
আবিরও এবারে রাগল। ছোট থেকেই বলা চলে এই নিশীথকে সে সহ্য করতে পারে না। তবুও আজ বিনয়ের সাথে কথা বলেছে এই ছেলেটার সাথে। এটুকই তো যথেষ্ট!কিন্তু ছেলেটা আগের মতোই ঘাড়ত্যাড়া! আবির শুধাল,
“ রাগ তুলছো নিশীথ। বারংবার আমার পরিবার তুলে কথা বলে কি বুঝাতে চাও? কি?”
“ নাথিং! বাট আই হেইট ইউ! আই হেইট ইউর ফেমিলি! ”
কথাটুকু বলেই নিশীথ উঠে আসল। দুই পা বাড়িয়ে পরমুহুর্তেই আবার পিছু ঘুরল। আবিরের সামনে এসে তর্জনী আঙ্গুল তুলে শাসানোর সুরে বলল,
“ এরপর থেকে মৃধার দিকে হাত বাড়ালে খুব খারাপ হবে। বড়ভাই বলে সম্মান দিচ্ছি, সম্মান নিয়েই থাকুন ! লোভীর মতো আমার সব কেড়ে নিতে আসলে আমিও আমার জঘন্য রূপ দেখাব বলে দিলাম। ”
আবির মানল না। বরং দ্বিগুণ জেদ নিয়ে বলল,
“ আমিও দেখলাম নাহয় তোমার খারাপ রূপটা!অপেক্ষায় থাকলাম। তবে মৃধার দিকে হাত তো আমি বাড়াবই নিশীথ। কারণ তুমি যে জাস্ট জেদের বশে তাকে বিয়ে করেছো এটা তার জানা জরুরী! অন্তত তাকে সত্যটা দেখানোর জন্য হলেও আমি তার দিকে হাত বাড়াব। এবং!শেষে সে আমারই হবে নিশীথ! আজ এইমুহুর্তে দ্বিতীয়বার চ্যালেঞ্জ ছুড়লাম। দেখে নিও। ”
নিশীথ বাঁকা হাসল। উত্তরে বলল,
“ একবার হেরে যখন শান্তি হয়নি তখন দ্বিতীয়বার চ্যালেঞ্জ এক্সেপ্ট করলাম নাহয়। হারার জন্য প্রস্তুত থাকবেন সো কল্ড বড়ভাই। ”
.
নিশীথ বের হয়ে আসল রেস্টুরেন্ট ছেড়ে। বাইক নিয়ে ছুট লাগাল ভার্সিটির উদ্দেশ্যে। আসার সময় অবশ্য মৃধাকে জিজ্ঞেস করা হয়নি ভার্সিটি যাবে কিনা। দুইজনেই অনার্স ফোর্থ ইয়্যারে। নিশীথ ভাবতে ভাবতেই রিংটোনের আওয়াজ শুনে পকেট থেকে মোবাইল বের করল।মৃধার কল দেখে কল রিসিভড করল বাইক থামিয়ে। অপর পাশের মৃধা তখন বলে উঠল,
“ নিশীথ? ”
নিশীথের মেজাজ খারাপের রেশ তখনও যায়নি। রুক্ষ কন্ঠে উত্তর দিল,
“ কি?”
” এভাবে কথা বলছিস কেন? রেগে আছিস নাকি?”
“ ওটা তোর জানার বিষয় নাহ। কল করেছিস কেন? ”
মৃধা উশখুশ করে বলবে কিনা ভাবছিল। মাহমুদ সাহেব একটু আগেই বলে গেলেন মন ভালো রাখতে যাতে ভার্সিটি যায় সে৷ তাই নিশীথকে কল করল। কিন্তু নিশীথের কন্ঠে রাগ আর বিরক্তির আভাস পেয়ে বলবে কিনা বুঝে উঠল না। তবুও অবশেষে বলল,
“ ভার্সিটি যাব ভাবছিলাম। আংকেলও তাই বলল। আন্টি বলল তোকে কল করে বলতে। যাতে একসাথে যাই। ”
নিশীথ ফের ত্যাড়া স্বরে বলল,
“ কেন? এর আগে কি তুই আর আমি একসাথে যেতাম ভার্সিটিতে?
মৃধা মৃদু স্বরে বলল,
“ নাহ!”
“ তো?”
মৃধার অভিমান হলো বোধহয়। গলা নামিয়ে বলল,
“ ঠিকাছে। কল রাখছি তাহলে। ”
কথাটুকু বলেই মৃধা কল রাখল। নিশীথ দীর্ঘশ্বাস ফেলল। পরমুহুর্তেই আবার মৃধাকে কল দিয়ে বলল,
“তৈরি তুই?”
“ না, মানে এইতো দশ মিনিটে তৈরি হবো।”
নিশীথ হাসল। মৃধার তৈরি হতে বাকি মেয়েদের মতে সময় লাগে না। বলল,
“আচ্ছা, বিশ মিনিটের মধ্যে আসছি। রেডি থাক।”
“ আচ্ছা! ”
তারপর মিনিট বিশেকের মধ্যে পৌঁছেও গেল নিশীথ বাড়ির সামনে। মৃধা তখন তৈরি হয়ে বসে আছে।নিশীথের ফোন পেতেই দৌড়ে বেলকনিতে গেল। নিশীথ শুধাল,
“ রেডি হয়েছিস? ”
মৃধা জলদি উত্তর দিল,
“ হুম, রেডি! ”
“ নিচে নেমে আয়। ”
মৃধা চুপ থাকল এবারে। কিয়ৎক্ষন চুপ থেকে উশখুশ করে শুধাল,
“ নিশীথ? ”
“হু, বল!”
মৃধা এবারেও উশখুশ করল। পরমুহুর্তে বলল,
“ তুই তো সকালে নাস্তা করলি না। বাসার সামনে এসেছিস যখন বাসায় এসে একটু নাস্তাটা করেই নে। সময় লাগবে না তেমন।”
নিশীথ নাকোচ করে বলল,
“ লাগবে না। লেইট হবে। ”
মৃধা সঙ্গে সঙ্গেই বলল,
“ আরেহ নাহ। আজ তো এমনিতেই ক্লাস করব না। এমনিই মন ভালো করতে যেতে বলেছে আংকেল। তুই আয় না। ”
নিশীথ ফের শুধাল,
“ নাস্তা করার ইচ্ছে নেই আমার। ”
মৃধার মন খারাপ হলো এবারে। মুখ কালো করে বলে উঠল,
“ আন্টিও বলেছে। তুই নাস্তা না করলে আন্টি ও কষ্ট পাবে। ”
নিশীথ এতক্ষন বেলকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটিকে দেখছিল। আকস্মিক মুখ কালো হয়ে যাওয়াটা পর্যবেক্ষন করেই নাকি তার আম্মুর কথা শুনে কিজানি! তবে পরমুহুর্তে সে শুধাল,
“ উহহফ!তোরা মেয়ে জাতি সাংঘাতিক প্যারাময় মৃধার বাচ্চা মৃধা! ”
কথাটুকু বলেই বাইক ছেড়ে নামল নিশীথ। মৃধা তা খেয়াল করে খুশিতে বলে উঠল,
“ আসছিস তাহলে? ”
নিশীথ কিছুই বলল না। সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে এসে বাসায় আসল। খাবার টেবিলে চেয়ার টেনে বসে চেঁচিয়ে বলল,
“ আম্মু খাবার দাও। ক্ষিধে পেয়েছে.. ”
বলতে দেরি কিন্তু নিশীথের আম্মুর ছুটে আসতে দেরি হলো না। এসেই ছেলেকে দেখে বলে উঠলেন,
“ এইতো ছেলেটা আমার। এতক্ষন ধরে না খেয়ে আছে আমার বাচ্চাটা।”
নিশীথ হতাশ হয়ে চাইল। বলল,
“ কতক্ষন আম্মু? তুমি যেভাবে বলছো যেন আমি যুগ যুগ না খেয়ে আছি। ”
নিশীথের মা প্লেটে খাবার দিতে দিতে বললেন,
“ সকালের নাস্তা সকালেই খেতে হয়। বুঝলি? কাল থেকে আর রাগারাগি করবি না।বুঝেছিস?”
নিশীথ মাথা নাড়িয়ে বলল,
“ হ্যাঁ। বুঝেছি।”
তারপর খাবার শেষ করে দুইজনে একসাথে বের হতে গেল। মৃধা যাওয়ার আগে দিয়ে নিশীথের মাকে বলল,
“আন্টি? আসছি তাহলে হুহ?”
নিশীথের মাও দুইজনকে বলল,
“ সাবধানে যাবি দুইজনে। আর হ্যাঁ, ঠিকসময় মৃধাকে বাড়ি ফিরিয়ে দিয়ে যাবি নিশীথ।”
নিশীথ সিঁড়ি বেয়ে নামতে নামতে কেবল বলল,
” না, ওকে তো আমি রাস্তায় রেখে চলে আসব আম্মু। তুমি যেভাবে বলছো! ”
#চলবে….