#হৃদয়ে_প্রণয়ের_বাস
#দ্বিতীয়_পরিচ্ছেদ
#সূচনা_পর্ব
লেখনীতেঃ রোদসী রঙ্গন
ঠিক পাঁচ বছর আগে যে মানুষটাকে ভুলার উদ্দেশ্যে রাহি দেশ ছেড়েছিল আজ পাঁচ বছর পর দেশে ফিরে সে মানুষটির বিয়ের সংবাদই সর্বপ্রথম পেল রাহি। রাহির চোখ টলমল করে। গাড়ির জানালায় তাকিয়ে বিরবির করে বলল,
“ জীবন কত অদ্ভুত লিয়ন ভাই! আমি আপনাকে এত করে চাইলাম। অথচ একটাবার আপনাকে ছোঁয়ার অধিকারটুকুও পাইনি জীবনে। আর সে মেয়েটা জানিনা কতোটা ভাগ্যবতী! না চাইতেই সবটা পেয়ে বসেছে। জানি না, ভাগ্য কেন সবসময় আমার সাথেই এত বাজে খেলা খেলে! ”
কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বলেই কান্না লুকাল রাহি। শুকনো ঢোক গিলে মনে মনে ভাবল তার হয়তো জীবনে এটুকুই প্রাপ্য ছিল। এটুকুই। মাকে পেল না, বাবাকে পেল না। পরিবার পেল না৷ আর যার পিছু পিছু একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য এতোটা সময় ঘুরেছিল সে ভালোবাসার মানুষটাকেও পেল না। এইতো৷ জীবন সুন্দর! রাহি মলিন হাসল। গন্তব্যে পৌঁছাতেই ছটফট নেমে পড়ল মৃধা,নিবির আর নীলাদ্রী সহ। তারপর ধীর পায়ে চলে এল নিজের জন্য নেওয়া বাসাটায়। মূলত ফ্ল্যাটটা লিয়নই নিয়েছে মাসখানেক আগে। কিন্তু রাহির জন্য বাসা দেখতে বলায় মৃধা আর নিশীথ সে কথা লুকিয়ে জানাল বাসাটা ভাড়া নিয়েছে রাহির জন্য। তারপর জিনিসপত্র কিনে অল্প অল্প করে সাজানোও হয়েছে এই পুরো মাসটায়। রাহি পুরো বাসাটা দেখে মৃদু হাসে। বলে,
“ এতসব আসবাবপত্র কেনার কি দরকার ছিল? এত বড় বাসা নেওয়ারও কি প্রয়োজন ছিল? সিম্পল বাসা হলেই তো হতো। ”
মৃধা হাসে। রাহিকে বাসা দেখাতে দেখাতে বলে,
“ উহ রাহি?পুরো একটা পরিবার থাকবে এখানে। তুমি, তোমার বর আর ভবিষ্যৎ বাচ্চাকাচ্চা!তোমার শ্বাশুড়ি আম্মুও।”
রাহি ড্যাবড্যাব করে তাকায়। বুঝে না উঠে বলে,
“ আমি কবে বিয়ে করলাম?বর কোথায় থেকেই বা আসল? আর শ্বাশুড়ি আম্মু? সেও কোথায় থেকে আসল ভাবি?”
মৃধা আরেকটু হলেই যেন ধরা পড়ে যেত। সত্য লুকিয়ে বলল,
“ এমনিই মজা করে বলছি আরকি। এবার বলো? বাসা পছন্দ তো রাহি?”
” হ্যাঁ, হ্যাঁ৷ পছন্দ। তুমি দেখে শুনে বাসা নিয়েছো আর পছন্দ হবে না? ”
মৃধা মজার ছলে বলল,
” আমি তো দেখিনি! বাসাটা অন্য কেউ তোমার জন্য দেখে রেখেছিল। তারপর তোমার পছন্দ অনুযায়ী সাজিয়েছে।”
রাহি বিস্ময় নিয়ে শুধাল,
“ অন্য কেউ? ভাইয়া? ”
মৃধা কথা এড়িয়ে বলল,
“ পরে বলব। এখন ঝটফট ফ্রেশ হয়ে আসো।অনেকটা জার্নি করলে তো। আমি খাবার বানাচ্ছি ততক্ষন হুহ?”
রাহি মেনে নিল। যেতে যেতে বলল,
“ ভাইয়া আসল না কেন আমায় নিতে? আসবে না?”
“ আসবে তো। বললেই চলে আসবে ছুটে। আমি বলিনি। ”
” আমিও বলিনি ভাইয়াকে। শুধু তোমায় জানিয়েছিলাম৷ কিন্তু তুমি কেন বলোনি? ”
মৃধার মন খারাপ হলো এবারে। নিশীথ এই কয়দিন অফিসের একটা প্রজেক্ট নিয়ে এতোটাই ব্যস্ত ছিল যে মৃধাকে আর সময়ই দিতে পারেনি। এমনকি কাল রাত জেগেও সে অফিসের কাজ করেছে ল্যাপটপে। শেষে একটা ফাইল তার কোন এক ফিমেইল কলিগের কাছে রয়ে গেছে দেখে রাত বারোটায় সে কলিগের বাসায় গিয়ে ফাইলটা আনতে গিয়েছিল। মৃধাকে সে সবটাই বলেছে, কিছুই লুকোয়নি৷ তবুও মৃধার মন খারাপ। কেন এতরাতে ফিমেইল কলিগের বাসায় যেতে হলো? কি এত দরকারি কাজ হুহ? দুঃখে কষ্টে সে নিশীথকে না জানিয়েই এয়ারফোর্টে গিয়ে রাহিকে রিসিভড করতে গেল নিবির, নীলাদ্রী সহ। আর এখন ভোর।সেই রাত থেকে ভোর এতোটা সময়ে নিশীথ একবারও তার খোঁজ করল না? ভেবে কান্না পেল৷ তবুও কান্না দমিয়ে বলল,
“ এমনিই! ভাবলাম সারপ্রাইজ দিব। ”
“ওহ, আচ্ছা?লিয়ন ভাইয়ের বিয়ে কবে ভাবি? পাত্রী কেমন দেখতে? অনেকটা সুন্দর? ”
“ আরো বেশ কিছুদিন পর।তবে পাত্রী রাজি থাকলে বিয়েটা আজই হয়ে যাবে এমন। লিও পাত্রীকে অনেকটা ভালোবাসে তো।আর পাত্রী? দেখতে সত্যিই সুন্দরী। ”
রাহির কষ্ট হলো যেন৷ কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করল,
“ অনেকটা ভালোবাসে? ”
“ হ্যাঁ! অনেকটাই। আমি নিজে তার সাক্ষী রাহি। ”
রাহি তীব্র মন খারাপে ছোট করে উত্তর দিল,
“ ওহ!”
.
মৃধা রান্নাঘরে তেমন কিছুই পেল না। কয়েকটা কড়াই পাতিল আছে কেবল। তবুও ঝটফট করে দোকান থেকে নিবিরকে দিয়ে নুডুলস, চাপাতা সহ মোটামুটি নাস্তা বানানোর উপকরণ কিনিয়ে আনল। তারপর লেগে পড়ল সেগুলো তৈরি করতে৷ নিবির নীলাদ্রী তখন ড্রয়িং রুমে বসে কথা বলছিল। আর সেসময়ই আচমকা উপস্থিত হলো নিশীথ। কাল রাতে ফাইল নিয়ে বাসায় ফিরে যখন মৃধাকে দেখল না তখনই তার দেহ ছেড়ে আত্মা যেন বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম। মৃধাকে কলেও পেল না সে। মোবাইল বন্ধ রাখা। হতাশ হয়ে বাসা খুুঁজে মৃধাদের বাসাতেও খোঁজ লাগাল। অবশেষে নিবিরের থেকেই খোঁজ পেল সমস্তটা। তারপর অপেক্ষা করছিল মৃধার সম্মুখীন হওয়ার। আর তাই প্রথমে রাহির সাথে দেখা করে তারপর গুঁটিগুঁটি পায়ে এসে দাঁড়াল রান্নাঘরটায়। মৃধা তখন মনোযোগ সহকারে চামচ নাড়ছে কড়াইয়ে। পরণের সবুজ রাঙ্গা শাড়িটা সরে গিয়ে দৃশ্যমান হলো মেয়েলি ফর্সা পিঠ৷ নিশীথ কিয়ৎক্ষন সেইদিকে চেয়ে এগিয়ে গেল মৃধার দিকে। একেবারে পেছনে দাঁড়িয়েই দূরত্ব গুঁছিয়ে হাতজোড়া গলিয়ে দিল মৃধার শাড়ির নিচে৷ মুহুর্তেই পুরুষালি হাতজোড়া পেটের মসৃন ত্বক ছুঁয়ে যেতে মৃধা মৃদু শিহরনে কেঁপে উঠল। মানুষটা কে সে ভালো করেই জানে। তাই তো কথা না বলে চুপচাপ থাকল। অথচ নিশীথের পছন্দ হলো না এই নিরবতা।থুতনিটা মৃধার কাঁধে ঠেকিয়ে বলে উঠল,
“ তুমি রাতদুপুরে আমায় না বলে বের হলে কেন? ফোন বন্ধ রেখেছিলেই বা কেন? চিন্তায় আমার কলিজা লাফিয়ে উঠছিল সুখ! জানো?”
কাঁধে নিশীথের উষ্ণ নিঃশ্বাসের ছোঁয়া তখন উপছে পড়ছে। শাড়ির ভাজে নিশীথের হাতের আলতো বিচরণে শিরশির অনুভূতি। মৃধার যেন দিশেহারা দশা। এদিক ওদিক চেয়ে দূরে সরার প্রচেষ্টা চালিয়ে বলল,
“ তোর তো সময় নেই আমার সাথে কথা বলার। শেষ কয়েকদিন ব্যস্ত ছিলি তুই অফিসের কাজ নিয়ে। তাছাড়া তোর সুন্দরী ফিমেইল কলিগ তো আছে।”
নিশীথ ছাড়ল না। উল্টো আরেকটু চেপে ধরল নিজের সাথে। মৃধার মসৃন কাঁধটায় আলতো চুমু দিয়ে প্রশ্ন ছুড়ল,
“ তো? ”
মৃধা এবারে গলা শক্ত করে উত্তর দিল,
“ ছাড় নিশীথ।রান্না করছি দেখছিস না? কেউ এসে পড়লে? ”
নিশীথ এবারেও ছাড়ল না৷ এড়িয়ে গিয়ে বলল,
“ রাহিকে আনতে যাচ্ছো, জানাওনি কেন?”
মৃধা হার মানল এবারে। স্থির দাঁড়িয়ে থেকে বলল,
” ওহ, এটা জানার জন্যই ছুটে এলেন তাহলে সাতসকালে? ”
নিশীথ হাসল। কাঁধে আবারও ঠোঁট ছুঁইয়ে ফের বলে উঠল,
“ না, বউ খুঁজতে এসেছি। আমার বউ আমার কাছে খুবই ইম্পোর্টেন্ট। হারিয়ে যায় যদি তাই সাতসকালে খুঁজতে বের হয়েছি। ”
“ মিথ্যে বলবি না। ”
“ মিথ্যে বলছি না। ”
মৃধা হতাশ হলো। গলায় ঘাড়ে নিশীথের ঠোঁটের বিচরণ থামাতে কৌশল অবলম্বন করে আচমকা বলল,
“ রাহি তোর খোঁজ করছিল। গিয়ে কথা বলে আয়। ”
অথচ মৃধার কৌশল পুরোপুরিই ব্যর্থ হলো। নিশীথ তাকে ছেড়ে না দিয়ে বরং এবারে কাঁধে নাক ঘষতে লাগল। হাত দিয়ে কোমড় চেপে ধরে কাঁধে নাক ঘষতে ঘষতে উত্তর দিল,
“ কথা বলেই এসেছি তোমার কাছে সুখ। যাতে রাতের বাকি রাখা ভালোবাসা উশুল করতে তুমি বাঁধা না দিতে পারো। আর তুমি তো জানো আমি বউকে ভালোবাসতে কতোটা ভালোবাসি? কোন কমতি রাখতে পছন্দ করি না। ”
মৃধা এবারে আর মানল না। দাঁতে দাঁত চেপে নিশীথের থেকে সরার উদ্দেশ্যে বলে উঠল,
“ এখানে এসে এসব অসভ্যতার মানে কি নিশীথ? এসব বলারও মানে কি? এটা তোর বেডরুম? ”
নিশীথ ঠোঁট বাঁকাল। মৃধার রাগ বুঝে বাঁকা হেসে কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলল,
“ তুমি কাছে থাকলে সবজায়গাই বেডরুম মনে হয় সুখ। তুমি কাছাকাছি থাকলে সবসময়ই রোমান্টিক মুডে থাকি আমি। ”
“ ফ্লার্ট করবি না। ”
“ ফ্লার্ট করছি না। ”
“ নিবির,নীলু, রাহি আছে বাসায়৷ চলে আসবে। তুই ওদের বড় ভাই কিন্তু। দূরে সর। ”
নিশীথ এবারে সরল। মুখ বাঁকিয়ে চলে যেতে যেতে বলল,
“ ওরা তোর মতো আনরোমান্টিক না। ওরা জানে ভাই ভাবি একসাথে থাকলে স্পেস দিতে হয়। বুঝছিস? যায় হোক, ছাড় দিচ্ছি কিন্তু ছেড়ে দিচ্ছি না। উশুল করে নিব। ”
কথাগুলো বলেই নিশীথ চলে গেল। মৃধা ঠোঁট গোল করে শ্বাস ফেলল।কি নিলজ্জ ছেলে হয়ে যাচ্ছে নিশীথটা। স্থান কাল সব ভুলে যাচ্ছে!
.
রাহি হালকা নাস্তা করে এসে ঘুমিয়েছে অনেকটাক্ষন। সে যখন গভীর ঘুমে মগ্ন তখন লিয়নকে জানানো হলো রাহির আসার কথাটা। লিয়নের তখন পাগল-পাগল লাগছিল। কতগুলো দিন, কতগুলো মাস, কতগুলো বছর পর মেয়েটাকে দেখবে। ইশশ! আচ্ছা? রাহি যখন জানবে লিয়ন ও রাহিকে ভালোবাসে তখন অনুভূতি কেমন হবে? রাহি কতোটা খুশি হবে? লিয়ন ভেবে হাসল। একটাবার রাহিকে দেখার জন্য ছুটে এল কয়েত মুহুর্তেই। অতঃপর সুযোগ হলো ঘুমন্ত রাহিকে দেখার। সুযোগটা মৃধাই দিয়েছে। তাও মাত্র মিনিট পাঁচ এর। লিয়ন চাপা শ্বাস ফেলে। খুটিয়ে খুটিয়ে ঘুমন্ত রাহির মুখটা দেখে হেসে বলল,
“ ইশশ! কতদিন পর দেখছি তোমায় রাহি। অথচ আমায় তুমি দেখছো না, আগের মতো ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকছো না রাহি৷ আমি সে আগের রাহিকে খুব করে মিস করি রাহি৷ খুব শীঘ্রই, খুব শীঘ্রই তোমায় নিজের করে নিব। ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি মেয়ে! ”
কথাগুলো বলেই আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়াল রাহির কপালে। পরমুহুর্তেই উঠে দাঁড়িয়ে মুচকি হেসে বলল,
” তোমার ঘুমানো দেখে হাসি পাচ্ছে রাহি। একদম বাচ্চাদের মতো ঘুমাচ্ছো! ”
কথাটুকু বলেই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এল। মৃধা ততক্ষনে সন্দেহি নজরে দেখছে লিয়নকে। ভ্রু বাঁকিয়ে বলল,
“ এই লিওর বাচ্চা লিও, আমার ননদের ঘুমানোর সুযোগ নিস নি তো এতক্ষন? ”
লিয়ন হতাশ নয়নে চেয়ে বলল,
” এতবছরের তৃষ্ণা! পাঁচ মিনিটে দেখেই কি মিটবে বল? তুই তো একটু ছাড়ও দিলি আমার জন্য। গুণে গুণে পাঁচ মিনিট সময় দিলি।”
কথাটুকু বলেই হতাশ হয়ে বসল সোফাটায়৷ নিশীথ মৃধার কানে কানে বলল,
“ তুই নিজে যেমন আনরোমান্টিক সবার বেলাতেও তেমন আনরোমান্টিকতা নিয়ে আসিস কেন? সবাই কি তোর মতো নিরামিষ? আমি তো মাঝে মাঝে ভাবি তোকে বিয়েটা করলাম কোন দুঃখে!”
মৃধার রাগ হলো। কষ্ট হলো৷ এই কথাটা নিশীথ প্রায়ই বলে। কেন বলে? এদিকে বিয়ের পাঁচ বছরেও সে মা হতে পারেনি বলে আত্মীয়রা কত কথা শোনাচ্ছে৷ তাহলে কি সত্যিই মৃধাকে বিয়ে করে নিশীথ ঠকে গেছে? মৃধা নিরব রাগ নিয়ে বলল,
“ এইজন্য তো বলছি আরেকটা বিয়ে কর। রোমান্টিক বউ পাবি, বছরের মাথায় বাচ্চা পাবি। সুন্দর একটা পরিবার হবে তোর। আমাকে বিয়ে করে তো কোন লাভই হচ্ছে না বল। দ্বিতীয় বিয়েটা ঝটফট করে নে৷ তাহলে মনমতো সব পাবি! বন্ধু হিসেবে বরং আমায় বলেই ফেল, কেমন মেয়ে পছন্দ তোর? বল বল, আমি খুঁজে দিব! লিওর সাথে সাথে তোর বিয়েটাও দিয়ে দিই বল? বন্ধু হিসেবে আমার একটা দায়িত্ব আছে না? ”
নিশীথ হতাশ। হতাশ হয়ে সেও বসল বন্ধুর পাশেই। কপাল চাপডিয়ে বলল লিয়নকে,
“ বুঝলি লিও? এই একটা মেয়েকে আমি জীবনের শেষ মুহুর্তে গিয়েও বুঝে উঠতে পারব না। জীবনে একটাই ভুল করেছি, এই একটা মেয়েকে ভালোবেসেছি। তার চেয়েও বড়ভুল বন্ধুকে ভালোবেসেছি, বিয়ে করেছি৷ এখন আমার জীবনটা ভাজাভাজা হয়ে যাচ্ছে দোস্ত ! ”
চলবে…?
হৃদয়ে প্রণয়ের বাস সিজন-০১ গল্পটি পড়তে লেখাটির উপর ক্লিক করুন।