#হৃদয়ে_লাগিল_দোলা 🫶
#নুসাইবা_জান্নাত_আরহা
#পর্ব৩৮
মোমবাতি হাতে নিয়ে ধীর পায়ে এগিয়ে এলো আদ্রিশ। অধরের কোণে এখনও তার লেপ্টে রয়েছে সেই চমৎকার মনকাড়া হাসি। সাথে মাতাল করা এক চাহনিতে চেয়ে আছে সে আমার পানে। আমাদের চোখাচোখি হতেই বরাবরের ন্যায় চোখ নামিয়ে নিলাম আমি। হৃদস্পন্দন এখনও অস্বাভাবিকভাবে স্পন্দিত হচ্ছে আমার। অশান্ত চাহনিতে একবার পুরো কক্ষে চোখ বুলিয়ে নিলাম। তবে অরনী, রিশতা বা আয়ুশী ভাবি, কারো ছায়াও নজরে এলো না আমার।
-‘ ভয় পেয়েছিলে মেহুপাখি?
একপ্রকার ঘোরের মাঝে চলে গিয়েছিলাম তবে ধ্যান ভাঙে আদ্রিশের বলা কথায়। মনে এতোটাই ভয় জেঁকে বসেছিল যে আদ্রিশ আমায় প্রশ্ন করলেও কোনোরূপ জবাব দিতে পারলাম না।
বেড সাইড টেবিলের উপরে মোমবাতিটা রেখে, আমার দিকে এগিয়ে এসে আমায় টেনে নিজের পাশে বসাল। আমার কাঁধে হাত রেখে গম্ভীর গলায় বলল
-‘ অরনীদের সামনে খুব তো বড়াই করে বলেছিলে যে মেয়েরা নাকি ছেলেদের বিয়ে করে, ছেলেরা রাতে ঘুমাতে ভয় পায় বলে, তাছাড়া নাকি জামাই আহামরি আর কিছুই না! তাহলে আমার বদলে তুমি কেন ভয় পেয়েছো মেহরুন? নাকি ধরে নিবো তুমি একটা আস্তো ভীতুর ডিম!
আদ্রিশের কথায় থতমত খেয়ে গেলাম আমি। সত্যিই ভয় পেয়েছিলাম, তবে নিজের বাসা হলে হয়তো এতোটা ভয় হতো না। আদ্রিশ পুনরায় বলল
-‘ কি ব্যাপার, ভয় পেয়ে আবার বোবা হয়ে গেলে নাকি?
আমি মাথা নাড়ালাম শুধু। প্রসঙ্গ পাল্টাতে তাই চট করে বলে বসলাম
-‘ আচ্ছা টর্চলাইট বা মোবাইলের ফ্লাশ থাকতে, মোমবাতি কেন জ্বালাতে গেলে?
-‘ কারণ আছে। বাই দ্যা ওয়ে এখন যে রাত সাড়ে এগারোটারও বেশি বাজতে চলল খেয়াল আছে কোনো?
দেয়ালঘড়ির দিকে তাকিয়ে কথাটা বলে ওঠে আদ্রিশ। আমি চমকে তাকালাম সেদিকে। আড্ডায় এতোটাই মশগুল ছিলাম যে এতোটা সময় পেরিয়েছে খেয়ালই হয়নি আমার! তাছাড়াও এখন তো সন্ধ্যে হয়ে পারেনা ওমনিই আটটা বেজে যায়! আর ওরাও বা কেমন, আমায় না বলেই অন্ধকারে একা ফেলে চলে গেল! ভাগ্যিস সময়মতো আদ্রিশ এসেছিল নয়তো ভয়ে শুকিয়ে মরতাম আমি!
আমার হাতখানা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে সে বলল
-‘ এতো বড় হয়েছো তবুও মাথার বদ বুদ্ধিগুলো যায়নি। আছো শুধু আমায় কষ্ট দেওয়ার বেলায়। যেদিন আমি থাকবো না সেদিন বুঝবে আমার মর্ম!
আচমকা আদ্রিশের এহেন কথায় বুকটা ধক করে ওঠে আমার। তার হাত চেপে কপট রাগ দেখিয়ে বললাম
-‘ খবরদার এমন কথা যেন তোমার মুখে আর দ্বিতীয়বার না শুনি!
আমার কথায় আদ্রিশ সূক্ষ্ম হেসে বলল
-‘ তোমার ভাষ্যমতে জামাই তো আহামরি কিছুই না! তাহলে আমি মরলে তোমার কি তাতে?
এমন কথা শুনে এবার আদ্রিশের বুকে অজস্র কিল-ঘুষি মেরে ক্রন্দনরত গলায় বললাম
-‘ তুমি খারাপ, প্রচন্ড রকমের খারাপ! আমায় প্রতিনিয়ত আঘাত কর। ছোট থেকে এই অবধি আমার আবেগ-অনুভুতি নিয়ে ঠাট্টা করতেও তুমি দু’বার ভাবতে না!
এতোটুকু বলে আমি চলে আসতে নিলেই আদ্রিশ একটানে ওর বুকের সাথে মিশিয়ে নেয় আমায়। গালে হাত ঠেকিয়ে বলল
-‘ ছোট থেকে এই অবধি আমি তোকে আঘাত করলাম কবে? আমার জানা মতে তো তোর গায়ে একটা ফুলের টোকাও পড়তে দেইনি আমি! তবে? আর আমি কখনোই তোর অনুভূতি নিয়ে ঠাট্টা করিনি মেহু! আগেও বলেছি আমি শুধু তোকে ভালোইবাসিনি, সম্মানও করেছি। সবসময় আমি চাইতাম তুই জীবনে সফল হ। আমাদের সমাজে ক’জন পুরুষ চায় যে মেয়েরা তাদের থেকেও এগিয়ে থাকুক! তারা তো উল্টে চায় মেয়েদেরকে কিভাবে দমিয়ে রাখা যায়। ইভেন এর মাঝে আমার নিজের বাবাও ছিল। তবে আমি কখনোই তেমন ছিলাম না। এইযে এখন তোর নিজস্ব একটা পরিচয় হয়েছে, কিন্তু তখন যদি তোর তালে তাল মিলিয়ে বিয়ে করে নিতাম, তাহলে তুই এতদূর পৌঁছাতে পারতিস? তোকে আমি ভালো মতোই চিনি, না চাইতেও যখন আমায় পেয়ে যেতিস তখন তোর পড়াশোনা লাটে উঠত একেবারে! আর তাছাড়া তখন তোর সবে সতেরো ছিল, বাল্যবিবাহ করলে তো আমার জেল হতো, তুই তখন সংসার করতিস কার সাথে?
নির্বিকার হয়ে শুনছিলাম তবে তার কথা শেষ হতেই বললাম
-‘ হয়তো গায়ে হাত তোলোনি তবে ধমকও তো কম দাওনি!
-‘ হয়তো মাঝে মধ্যে একটু আধটু ধমক দিতাম তবে এই ধমকানোর আড়ালে আমার এই পিচ্চিটাকে আমি নিজের চাইতেও বেশি ভালোবাসতাম!
এতোটুকু বলেই আদুরে ভঙিতে আমার নাক টেনে দিয়ে, ললাটে নিজের অধরজোড়া ছুঁইয়ে ভালোবাসার পরশ এঁকে দিয়ে আমায় নিজের সাথে জড়িয়ে নেয় আদ্রিশ।
একসময় তার ওমন ব্যবহারে খুব খারাপ লাগত আমার কেননা তখন ছোট ছিলাম এতোটা বুঝ হয়ে উঠেনি, তবে বুঝতে শিখেছিলাম আদ্রিশ চলে যাওয়ার পর, তখন থেকেই নিজেকে নিজে গড়তে শিখেছি। বলাবাহুল্য আলভি ভাইয়ার মাধ্যমে আদ্রিশ সবসময় খোঁজখবর রেখেছে আমার, তবে সে ঢাকায় থাকাকালীন সময়টায় আমার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলেও আমি-ই করিনি আর। কেননা ততদিনে আমার অভিমান প্রগাঢ় হয়েছিল। এজন্য আদ্রিশ ফেরার পর তার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলতাম! তবে কালের পরিক্রমায় দূরত্ব ঘুচেছে সেই কবেই!
কিছুক্ষণ পর আমায় ছেড়ে দিয়ে আদ্রিশ বলল
-‘ আমার খিদে পেয়েছে ভীষণ, তোমার জন্য আমিও খাইনি। এখন খিদের জ্বালায় পেটে ইঁদুর চিঁউচিঁউ করছে। এমন চলতে থাকলে আমার মৃত্যু নিশ্চিত!
আবারও সেই এককথা! আমি এবার রেগে গেলাম ভীষণ। মৃদু চেঁচিয়ে তাই বললাম
-‘ এমন অলক্ষুণে কথা যদি আর দ্বিতীয়বার শুনেছি তবে আমি তোমার ঠোঁট কেটে দিব!
-‘ ঠোঁট কেটে নিলে তোমায় চু’মু খাব কিভাবে, বউ?
শুরু হয়ে গেল আবার অভদ্রের মতো কথাবার্তা। কপট রাগ দেখিয়ে তাই আলতো হাতে আদ্রিশ গালে থাপ্পড়ে দিলাম। ফলে আদ্রিশ এবার নিজের গালে হাত রেখে করুণ সুরে ছড়া কাটল
-‘ “আঁতা গাছে তোতাপাখি,
ডালিম গাছে মউ।
বিয়ার আগে আব্বায় মারতো,
বিয়ার পরে বউ।”
আদ্রিশের এমন উদ্ভট ছড়া শুনে আমি না হেসে পারলাম না আর। আমায় হাসতে দেখে এবার টুপ করে আমার গালে চু’মু দিয়ে বসল সে। হাসি থামিয়ে সরু চোখে আদ্রিশের পানে চাইলাম একবার। সে আমার গাল টেনে দিয়ে দাঁত কেলিয়ে হেসে বলল
-‘ এই যে আমার মিসেস মেহরুন ইবনাত খান ওমন সুচালো দৃষ্টিতে তাকিওনা আমার দিকে। তোমার ঐ ধারালো চাহনি আমার বুকে তীরের মতো বিঁধে! নিজেকে তখন সামলে রাখা বড় কঠিন হয়ে পড়ে যে আমার!
-‘ তুমি কি আর ভালো হবেনা এ জনমে!
-‘ কেন আমি ভালো ছিলাম না কবে, আমি তো একেবারে খাঁটি ইনোসেন্ট বয়!
-‘ ইনোসেন্ট না ছাঁই, আগেই ভালো ছিলে এখন তো অভদ্র হয়ে যাচ্ছো দিনদিন!
-‘ যদি সত্যিই অভদ্র হয়ে যাই তবে মনে রাখিস অভদ্র হয়েছি শুধুমাত্র তোর জন্যে।
-‘ কেন আমি আবার কি করলাম!
-‘ তুমি যে আহিরের সাথে প্ল্যান করে আমায় জেলাস ফিল করাতে সে আমি ভালো করেই জানতাম। আমার লুকানো অনুভূতিগুলো জানতে চাইতে না? এখন যখন সব অনুভুতি প্রকাশিত হয়ে গেছে তখন পালাতে চাও কেন আমার থেকে? মনে রেখো মেয়ে, পুরুষের ভালোবাসা ভয়ংকর রকমের সুন্দর! একবার তা প্রকাশ পেয়ে গেলে প্রতিনিয়ত তার প্রেয়সীকে লজ্জায় পড়তে হয়!
আদ্রিশের কথায় লজ্জার চাইতেও অবাক হলাম বেশ। আদ্রিশ তবে এসবও জেনে গেছে, কিন্তু কিভাবে জানল লোকটা, অন্তর্যামী নাকি!
এরই মাঝে কোথ থেকে বিচ্ছুর দলগুলো ছুটে এসে আমাদের দিকে ফুলের পাপড়ি আর জরি ছিটিয়ে দিয়ে চিৎকার করে বলে উঠল
-‘ হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ মেহু! মেনি মেনি হ্যাপি রিটার্নস্ অফ দ্যা ডে!
ওদের কথা কর্ণপাত হতেই দেয়াল ঘড়ির দিকে নজর যায় আমার। ঘড়িতে তখন বারোটা বাজে! আজ চার তারিখ আমার জন্মদিন! আমার মনে ছিল ঠিকই কিন্তু ওদের করা কর্মকান্ডে কয়েক মুহুর্তের জন্য ভুলতে বসেছিলাম তা। ওরা দু পাউন্ডের একটা হার্ট সেইপের কেক নিয়ে এগিয়ে এলো আমাদের পানে।
ছুরিটা হাতে নিয়ে আদ্রিশ আমার হাত ধরে কেকটা কেটে আমায় খাইয়ে দিতে দিতে বলল
-‘ হ্যাপি বার্থডে আমার প্রিয় মেহুপাখি। ভাগ্যিস এইদিনে তুমি পৃথিবীতে এসেছিলে নয়তো তুমিহীনা আমায় একলা একলাই চিরকাল কাটাতে হতো!
আদ্রিশের কথায় উপস্থিত সবাই ফিক করে হেসে ফেলল। এবারে কেকের আরেকটু অংশ কেটে সর্বপ্রথম আদ্রিশকে খাইয়ে দিলাম আমি। আমার এমন কান্ডে আদ্রিশ তো বেজায় খুশি। তাই বাছবিচার না করেই খুশিতে সবার সামনেই আমায় জড়িয়ে ধরল সে। এদিকে লজ্জায় আমার অবস্থা যায়যায় হবার উপক্রম!
পাশ দিয়ে রিশতা টিপ্পনী কেটে বলল
-‘ থাক ভাইয়া হয়েছে, বউকে পরেও ভালোবাসা যাবে। কিন্তু তার আগে আমাদের খাবারের ব্যবস্থা করেন, খিদেয় পেটে ছুঁচো দৌড়াচ্ছে তো! শুধুমাত্র আপনার আর মেহুর জন্য বেচারা আমরা এখনও খেতে অবধি পারিনি!
রিশতার কথা শুনে আদ্রিশ ছেড়ে দেয় আমায়। খুকখুক কেশে সবার খাবারের বন্দোবস্ত করে সে। বেচারাগুলো আদ্রিশের কথায় আমার জন্মদিনের জন্য অল্প সময়েই এসব করেছে! ফলে অন্ধকারে আমায় ফেলে যাওয়ার জন্য রাগ হলেও আর কিছু বললাম না। কেননা ওরা আমার জন্য যা করেছে, তার কৃতজ্ঞতা বলে শেষ হবেনা।
সবাই মিলে একসাথে খাওয়া দাওয়ার পর যে যার কক্ষে চলে যায়। যাওয়ার আগে অরনী, রিশতা আর আয়ুশী ভাবি রসিকতা করে বলে গেল
-‘ কিরে আমাদের চারজনের না একসাথে থাকার কথা ছিল!
-‘ আমে দুধে মিশে গেল আর আমরা আঁটিরা এখন বাগানে গড়াগড়ি খাই!
-‘ আমাদের আদ্রিশ ভাইকে ছাড়া আমার ননদিনী দেখি থাকতেই পারেনা।
ওদের কথায় আরও একদফা লজ্জায় পড়তে হলো আমার। কোনোরকমে ওদের বিদায় জানিয়ে চলে এলাম। তাকে ছাড়া একটু বোনেরা মিলে একসাথে থাকতে চেয়েছিলাম তাতেই যেকথা শুনিয়ে দিল লোকটা!
আমায় আসতে দেখে পুনরায় নিজের সাথে জড়িয়ে নেয় আদ্রিশ। গাল আলতো করে একহাত ঠেকিয়ে আড়ষ্ট গলায় বলল
-‘ এতোকিছু যখন জেনেই ফেলেছো, তবে এটাও জেনে রাখ আমার মিসেস, আমার “মেহুরানী”, যাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে আমার সব স্বপ্ন। যার অগাধ বিচরণ আমার এই অন্তরে! যার আবাস আমার এই বুকের বাঁ পাশে। আমার বক্ষপিঞ্জরের খাঁচায় তুমি বন্দি হয়ে থাকবে আজন্মকাল। এই আদ্রিশ খান হতে তোমার আর কোনো নিস্তার নেই “মিসেস মেহরুন আদ্রিশ খান”। তোমার জন্য আমার এই বুক উজার হোক। আমরা দুটি মিলেমিশে একাকার হয়ে যাব এই মধুচন্দ্রিমার রাত্রে। এখন থেকে তবে আমাদের জুটির নাম দিলাম, “মেহাদ্রিশ”।
জড়িয়ে ধরলাম আদ্রিশকে। মানুষটা সত্যিই চমৎকার ব্যক্তিত্বের অধিকারী! একদম আমার মনের রাজ্যের রাজা! আদ্রিশ এবার আমার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল
-‘ আকাশে আজ পূর্ণিমার চাঁদ উঠেছে! চলো দুজনে মিলে চন্দ্রবিলাশ করে আসি।
আদ্রিশের কথামতো মাথা নাড়িয়ে সায় জানালাম আমি। আমার সম্মতি পেতেই আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে জানালার পাশে দাঁড়াল। মিষ্টি শীতল হাওয়া এসে শরীর মনে দোলা দিয়ে যায়! আদ্রিশের কাঁধে মাথা রেখে আমি প্রকৃতি দেখতে ব্যস্ত আর আদ্রিশ তার প্রেয়সীকে দেখায়!
মাঝেমধ্যে আমার বড্ড ভয় হয়, আচ্ছা এতো সুখ সত্যিই সইবে তো আমার নাকি এক দমকা হাওয়ায় সমস্তটা ওলাট পালট হয়ে যাবে?
#চলবে ~
#হৃদয়ে_লাগিল_দোলা 🫶
#নুসাইবা_জান্নাত_আরহা
#পর্ব৩৯ (বোনাস পর্ব)
জানালার কাঁচ ভেদ করে সকালের এক ফালি মিষ্টি রোদ্দুর এসে আছড়ে পড়ল আমার মুখশ্রীতে। ফলশ্রুতিতে ঘুমে ব্যাঘাত পড়ে আমার। পিটপিট করে তাই আঁখিজোড়া মেলতেই প্রথমে নজরে এলো আদ্রিশের মুখশ্রীখানা। সে এখনো আমায় আঁশটে পিঁশটে জড়িয়ে ধরে সুখনিদ্রায় রয়েছে। তার এই ঘুমন্ত মায়াবী মুখশ্রীর পানে চেয়ে আরও একদফা প্রেমে পড়তে বাধ্য হতে হলো আমায়! শক্ত হাতের বাঁধন ছাড়িয়ে উঠতে নিলেই সেই হাতের বাঁধন আরও জোড়ালো হয়ে ওঠে। পিটপিট করে চোখ মেলে কিছুটা বিরক্তি নিয়ে আদ্রিশ বলল
-‘ এতো মোচরা-মোচরি করছো কেন? আমার আরামের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে এতে!
দেয়াল ঘড়ির দিকে নজর রেখে তার কথার পাল্টা জবাব দিয়ে বললাম
-‘ টাইমলি খাওয়ার অভ্যেস তোমার। যেখানে সকাল ন’টায় ব্রেকফাস্ট করো, সেখানে এখন দশটা ওভার হতে যাচ্ছে। এমন অনিয়ম চলতে থাকলে তো তুমি অসুস্থ হয়ে পড়বে!
আদ্রিশ এবার আড়মোড়া ভেঙে আমার গাল টেনে দিয়ে আদুরে ভঙ্গিতে বলল
-‘ বউ আমার কোলবালিশের মতো নরম তুলতুলে! তাকে ছেড়ে উঠতে মন চায় না যে আমার।
আদ্রিশের কথায় পাত্তা দিলাম না আমি। তার হাতের বাঁধন আলগা হতেই আমি চট করে উঠে পড়লাম। পেছন ফিরে বেশ শাসনের সুরে বললাম
-‘ চটজলদি উঠে পড়ো। দেরি করে ব্রেকফাস্ট করার জন্য আজ কিছু বললাম না তবে নেক্সট টাইম যেন এমন না হয়।
এতোটুকু বলেই চলে যায় মেহরুন। আদ্রিশ সেভাবেই শুয়ে থেকে, কপালে একহাত ঠেকিয়ে করুণ সুরে বলল
-‘ যাব্বাবা, বিয়ের আগে আমি শাসন করতাম আর এখন দেখি বউ আমারেই উল্টে শাসন করে! হায় কপাল আমার। এমনি এমনি নিজের ভবিষ্যত নিয়ে এতো ভাবতাম!
..
সবাই মিলে সকালের ব্রেকফাস্ট সেরে বাইরে বেরিয়ে পড়লাম। সি বিচের পাশে হরেক রকমের স্টল। সেখান থেকে পছন্দসই কিছু জিনিসপত্র কেনাকাটা করলাম। এরপর পাশেই একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম। যা গরম পড়েছে, তাতে করে বাইরে থাকা বড় দায়। দুপুরের চড়া রোদটা কমলে, বিকেলের দিকে নাহয় সি বিচে ঘুরতে যাব। তার আগে আপাতত ঠাণ্ডা জাতীয় কিছু খাওয়া যাক!
রেস্টুরেন্টে গিয়ে কোল্ড কফি আর মিল্কসেক খেয়ে কিছুক্ষণ সবাই মিলে আড্ডা দিতে দিতেই বেলা গরিয়ে দুপুর হয়ে যায়। কাছেপিঠে আরও কিছুসময় ঘুরাঘুরি করে দুপুরের দিকে লাঞ্চ সেরে নিলাম। এরপর আমাদের রিসোর্টে ফিরে বিশ্রাম নিয়ে আবারও বিকেলের দিকে বেরিয়ে পড়লাম।
পড়ন্ত বিকেল! সমুদ্রে উত্তাল ঢেউ! আদ্রিশের একহাত জড়িয়ে ধরে চোরাবালির উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি আমরা দুজনে। সমুদ্রের তীরে যেতেই ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে ভিজিয়ে দিয়ে যায় আমাদের। আমিও দুষ্টুমি করে তার গায়ে পানি ছিটিয়ে দিলাম। আদ্রিশও কম যায়না, সে-ও পানি ছিটিয়ে একেবারে আধ ভেজা বেড়াল বানিয়ে দেয় আমায়! আমি গাল ফুলিয়ে চলে যেতে নিলেই আমার হাত টেনে চোরাবালির উপর বসিয়ে দিয়ে নিজেও আমার পাশ ঘেঁষে বসে পড়ল। এরপর পকেট হতে একজোড়া নুপুর বের করে, আচমকাই আমার পায়ে পড়িয়ে দিল সে। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম
-‘ এই নুপুরটা কোথায় পেলে তুমি?
-‘ আমার বউয়ের পছন্দের জিনিস বলে কথা! বউয়ের এতোটুকু শখ-আহ্লাদই যদি পূরণ করতে না পারি তাহলে আমি কেমন স্বামী!
আদ্রিশের এই কেয়ারিং, সূক্ষ্ম জিনিসের প্রতি তীক্ষ্ণ নজরদারি, এই সবকিছু একটা মেয়েকে ভালোবাসতে বাধ্য করে। একটা মেয়ে তো তার শখের পুরুষের কাছে এতোটুকুই চায়। যে-ই মেয়ের কপালে আদ্রিশের মতো এমন স্বামী জুটে, সে-ই মেয়ের মতো ভাগ্যবতী দুনিয়াতে আর একটাও নেই! আমি নিজেকে সামলানোর প্রয়োজন মনে করলাম না আর, মনের কুটিরে থাকা অবাধ্য ইচ্ছেকে প্রশ্রয় দিয়ে তার গলায় জড়িয়ে ধরলাম। ফলে প্রাপ্তির হাসি হেসে ওঠে আদ্রিশ।
কয়েক মুহুর্ত পর তাকে ছেড়ে মাথা নুইয়ে রইলাম খানিক সময়। এর কিছুসময় পর নিজেকে ধাতস্থ করে, শখ করে চোরাবালিতে লিখলাম, ‘মেহাদ্রিশ’। তা দেখে সূক্ষ্ম হাসে আদ্রিশ। ঢেউ এসে যতবার আমাদের নাম মুছে দিচ্ছে ততবারই লিখলাম।
আদ্রিশ এবারে আমায় জাপটে ধরে বলল
-‘ উত্তাল ঢেউ এসে যেমন সমুদ্রের বুকে দোলা দিয়ে যায়, শীতল মৃদু মন্দ হাওয়া এসে শরীরে দোলা দেয় ঠিক তেমনি তোমায় দেখলেও সেই পূর্বের ন্যায় আমার হৃদয় উপকূলে দোলা দিয়ে যায়! কেননা তোমারে দেখিয়া আমার যে #হৃদয়ে_লাগিল_দোলা🫶
আদ্রিশের কথায় পূর্বের ন্যায় মুগ্ধ হলাম আমি। তার কাঁধে মাথা ঠেকিয়ে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ দেখাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। আমার সাথে তাল মিলিয়ে আদ্রিশও সেদিকে চায়।
ওদিকে আলভি আর আয়ুশী দুজনে হাত ধরাধরি করে সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে তাল মিলিয়ে সমানে দৌড়ে চলেছে। আয়ুশীর বহুদিনের স্বপ্ন সমুদ্র স্নান করার। আলভি তার এ ইচ্ছাটাও অপূর্ণ রাখেনি। ঠিকই দুই তরুণ-তরুণী মিলে সমুদ্রে স্নান করতে নেমে পড়ে। তা দেখে আদ্রিশ সতর্ক করে বলে
-‘ খুব বেশি দূরে যাস না ভাই, ঢেউ এসে কিন্তু তলিয়ে নিয়ে যাবে তোদের দুটোকে!
আদ্রিশের সতর্কবার্তা কর্ণপাত হতেই ওরা দুজনে তড়িঘড়ি করে চলে আসে।
দূরে এককোণে কাঁদো কাঁদো মুখ করে তীর্থের কাকের ন্যায় দাঁড়িয়ে রয়েছে আহির। মনটা যে খালি তার বউ বউ করে। মাঝেমধ্যে তো মনে চায় দুঃখে চোরাবালিতে ডুব মারতে! কেননা তার যে বউ থাকতেও বউ নাই।অন্য প্রান্তে দাঁড়িয়ে মেয়েটা কি সুন্দর খিলখিলিয়ে হাসছে অথচ এদিকে যে তার বর দুঃখে ডুবি ডুবি অবস্থা, এ খবর কি সে রাখে? ‘এইতো গতরাতে সবাই যে যার কক্ষে যাওয়ার পর, রিশতার সাথে সাথে সে-ও ওর কক্ষে প্রবেশ করতে যাচ্ছিল কিন্তু শত আকুতি মিনতি করলেও কিছুতেই নিজের ঘরে ঢুকতে দেয়নি রিশতা! সে সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছে, “তাদের বিয়েটা সবাই মেনে না নেওয়া অবধি, দুজনেই আলাদা থাকবে।” রিশতা হতে একথা শুনেও কত ব্যাঙের মতো লাফালো, ছড়া কাটল তবুও লাভ হয়না কোনো। শেষমেশ বিরক্ত হয়েই আহিরের মুখের উপর ঠাস করে দরজাটা আটকে দেয় রিশতা। পরে আহির বেচারা বুকের মাঝে চাপা আর্তনাদ চেপে নিজের জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষে গিয়ে কোলবালিশকে বউ মনে করে, বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে যায়।’
আধভেজা দম্পতিকে নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করছিলাম আমি আর রিশতা। সঙ্গে আদ্রিশও ছিল তবে তার স্পিটবোটে চড়বার খুব শখ হয়েছে বলে আরাভ ভাইয়াকে নিয়ে ওদিকে গিয়েছে ওদের সাথে কথা বলতে।
ভেজা শরীরে থাকলে ঠান্ডা লেগে যাবে, এই আশঙ্কায় আলভি ভাইয়া আর আয়ুশী ভাবি ড্রেস চেঞ্জ করতে গিয়েছে। এখন শুধু পড়ে রইলাম আমি আর রিশতা। এই সুযোগেরই অপেক্ষা করছিল বোধহয় রিশতা। কাল বিলম্ব না করে তাই চট করে বলে বসল
-‘ মেহু, তুই কি সত্যিই আমার আর আহিরের বিয়েটা এখনও মেনে নিতে পারিসনি?
রিশতার দিকে পূর্ণ দৃষ্টিতে ফিরে চাইলাম আমি। অধরের কোণে হাসি ঝুলিয়ে বললাম
-‘ না মেনে নেওয়ার মতো কি কারণ আছে কোনো?
ভড়কে যায় রিশতা। অবাক হয়ে তাই বলল
-‘ তুই তো মানতে চাইলি না তবে..
-‘ কে বলেছে আমি মানিনি, আমি তো আগেই মেনে নিয়েছিলাম তবে ঐ সবার সামনে একটু আধটু নাটক করলাম আরকি! আচ্ছা আমি তো শুরু থেকে তোদের সাপোর্ট দিয়ে এসেছি, তাহলে তোরা যে বিয়ে করলি এটা কেন জানালি না আমায়?
মাথা নত করে নেয় রিশতা। দুজন দুজনকে হারিয়ে ফেলবার আশঙ্কায় ওরা লুকিয়ে বিয়ে করে নিতে বাধ্য হয়েছিল একপ্রকার। এমনকি সবটা এতো দ্রুত ঘটেছিল যে মেহরুনকে একটাবার জানানোর সময়ও হয়নি, পরে যখন জানাতে চেয়েছিল তখন তো অলরেডি মেহরুন আর আদ্রিশের বিয়ের তোড়জোড় বেঁধে গিয়েছিল।
রিশতার গালে একহাত রেখে আশ্বাস দিয়ে বললাম
-‘ ভয় নেই রিশু, আমি আছি তো! ছোট থেকে একসাথে বড় হয়েছি আমরা। আমার কাছের মানুষগুলোর মাঝে তুই একজন। সত্যি বলতে কি তুই আর আহির যা করেছিস আমাদের জন্য, তার কৃতজ্ঞতা বলে শেষ হবেনা! তাই বলছি চিন্তা করিস না, আমি সবাইকে মানিয়ে নিব, তবে এখন নয়। তোরা আগে ভার্সিটিতে ওঠ, ভালোমতো পড়াশোনাটা শেষ কর, তারপর আমি-ই একটা ব্যবস্থা করব।
আমার কথাগুলো শুনে, রিশতা জড়িয়ে ধরে আমায়। উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল, “আলাবুউ, মেহু!”
এভাবে কিছুসময় ভাব বিনিময়ের পর দুজন দুজনকে ছেড়ে অরনীর কাছে চলে এলাম। ছাউনির নিচে হেলান দিয়ে বসে বিশ্রাম নিচ্ছে সে। আমার ডাকে ও চোখ মেলে তাকায়। জিজ্ঞেস করলাম, ‘শরীর এখন কেমন লাগছে?’
উত্তরে অরনী ক্লান্ত ভঙ্গিতে বলল, ‘ঐ আগের মতোই।’
আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না। কেননা গত কয়েকদিন যাবত ওর শরীরটা ভালো নেই, মাথা ঘুরছে নয়তো ঘনঘন বমি হচ্ছে, আবার মাঝেমধ্যে তো অতিমাত্রায় টক খাচ্ছে অথচ এই মেয়েকে কি-না কোনোকিছুর লোভ দেখালেও টক খেতে চাইতো না! ওর এমন সিমটমস্ দেখে আমার মনে সন্দেহের উদ্রেক জমে। আমার কেন জানিনা মনে হচ্ছে, ‘অরনী মা হতে চলেছে!’ হয়তো আমি ডাক্তার নই তবে সাইন্সের স্টুডেন্ট হওয়ার সুবাদে এতোটুকু প্রাথমিক জ্ঞান আছে আমার। বাকিটা আমার ডাক্তার জামাই আসলেই জানা যাবে না-হয়!
এরই মাঝে হাজির হয় আদ্রিশ আর আরাভ ভাইয়া। সাথে আলভি ভাইয়া আর আয়ুশী ভাবিও এসে পড়েছে। ওরা আসতেই সিদ্ধান্ত হলো, আমরা সবাই মিলে স্পিডবোটে চড়বো! যে ভাবা সেই কাজ। আমরা সবাই উৎসুক থাকলেও অরনী যেতে রাজি হয়না, তবে আরাভ ভাইয়ার জোরাজুরিতে অবশেষে রাজি হয় ও।
চার জুটি মিলে চারটা স্পিডবোটে চড়ে পড়লাম। আদ্রিশের পাশে বসতেই আদ্রিশ আমায় নিজের কাছে টেনে নিয়ে বলল
-‘ আমায় ধরে বস মেহু, নয়তো এই গভীর সমুদ্রের মাঝে যদি একবার পড়ে যাই, তবে নির্ঘাত পটল তুলতে হবে আমায়!
আদ্রিশের মুখে আবারও ঐ এককথা৷ এই লোকের হয়েছেটা কি, খালি মরামরির কথা বলে! আমি এবার দুম করে আদ্রিশের পিঠে চিমটি কেটে দিয়ে কটমট করে বললাম
-‘ তোমার খুব ম’রার শখ হয়েছে তাই না? আসো কাছে এসো, কা’ম’ড়ে দেই একটু!
এতোটুকু বলেই আদ্রিশের আরও খানিকটা কাছে এগিয়ে এসে, ওর গাল দুটো টেনে দিয়ে টিপ্পনী কেটে বললাম
-‘ “আয় আয় তুউ তুউ,
তোমায় একটু কা’ম’ড়ে দেই আদ্রিশ ভাউ!”
আদ্রিশ ভড়কে যাওয়ার বদলে চট করে হেসে বলে ফেলল
-‘ চু’মু তো আর দিবেনা, তার চেয়ে বরং ঐ কা’ম’ড়টাও দাও। বউয়ের লাভ বাইট মনে করে আমি তা সাদরে গ্রহণ করব!
আমি তব্দা খেয়ে গেলাম এবারে। এই লোকটা ভালো হবেনা বোধহয় এ জনমে।
স্পিটবোটে চড়া শেষ হতেই এক এক করে নেমে পড়লাম আমরা। এদিকে নামতে গিয়ে ঘটল আরেক বিপত্তি। অরনী মাথা ঘুরে পড়ে যায়। তড়িঘড়ি করে ওকে তুলে নিয়ে রিসোর্টে চলে এলাম। আদ্রিশ ওকে চেক করতেই সন্দেহ আরও প্রগাঢ় হয়! তবে এ মুহুর্তে কিছু বলা যাচ্ছেনা। আদ্রিশ তো আর গাইনি বিশেষজ্ঞ নয়, ফিরে গিয়ে ভালো একটা গাইনি ডাক্তার দেখিয়ে তবেই এনশিউর হওয়া যাবে না-হয়!
সব গোছগাছ করে সন্ধ্যে নাগাদ আমাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম আমরা। আজ তো ফিরতেই হতো, যথারীতি পরশু থেকে আবারও সেই যান্ত্রিক লাইফে ফিরতে হবে আদ্রিশকে। আবারও সেই ডিউটি সেরে রাত করে ঘর্মাক্ত, ক্লান্ত দেহে বাড়ি ফেরা! ওদিকে আমারও ইন্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির ক্লাস শুরু হবার সময় ঘনিয়ে আসছে!
বাড়ি ফিরতে ফিরতে বেশ অনেকটা রাত হয়ে যায়। গৃহে প্রবেশ করতেই মা, মামনির দেখা মেলে। প্রায় দুদিন পর দুজনকে দেখে, দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলাম তাদের। তাঁরাও পরম যতনে আগলে নেয় আমায়। সবার সাথে কুশল-বিনিময় শেষে ফ্রেশ হয়ে একেবারে রাতের খাওয়া-দাওয়া সেরে যে যার কক্ষে চলে এলাম।
এতোটা পথ জার্নির পর ক্লান্ত শরীরে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। আচমকাই পেটের উপর ভারী কিছুর অস্তিত্ব টের পেতেই চট করে চোখ তুলে চাইলাম। আদ্রিশ আমার পেটে মুখ গুঁজে শুয়ে রয়েছে। তার চুলের ভাঁজে আলগোছে হাত দিয়ে ডাকতেই আদ্রিশ আড়ষ্ট গলায় জবাব দেয়
-‘ এখন আর ডিস্টার্ব করবেনা মেহুপাখি। প্রচন্ড ক্লান্ত আমি, এখন আমার ক্লান্তি দূর করার একমাত্র মহাঔষুধ তুমি! কেননা তুমি আমার ব্যক্তিগত কোলবালিশ!
#চলবে~