হৃদয় মাঝে হঠাৎ তুমি পর্ব-১০

0
12

#হৃদয়_মাঝে_হঠাৎ_তুমি
#সানা_শেখ
#পর্ব_10
[কার্টেসি ব্যতীত কপি করা নিষিদ্ধ]

শপিং মলে এসে পৌঁছায় দুই ভাই। আলভী লেডিস শপে প্রবেশ করে। আলভী লেডিস শপে কেন প্রবেশ করল বুঝতে পারছে না মাহিদ। কার জন্য কি কিনবে?

_ ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? ভেতরে আয়।

বড় ভাইয়ের কথা শুনে ভেতরে প্রবেশ করে।

_ মায়ার কত সাইজের বোরকা লাগে?

_ হ্যাঁ?

_ বয়রা নাকি? মায়ার কত সাইজের বোরকা লাগে?

_ কেন?

_ এত প্রশ্ন তো তোকে করতে হবে না। আমি যা জিজ্ঞেস করছি তার উত্তর দে।

_ 54″ সাইজ একটু শর্ট হয় আবার 56″ একটু লং হয়ে যায়।

আলভী 56″ সাইজের ছয়টা বোরকা নেয়। এক ডজন হিজাব নেয়। নিকাব নেয়।

_ কয় জনের জন্য নিচ্ছ?

_ শুধু বউয়ের জন্য?

_ এত গুলো কেন?

_ পড়বে তাই।

_ তাই বলে এত গুলো?

আলভী উত্তর দেয় না। মা, শাশুরি, দাদি, ভাবী, মানতাসা আর মেড মায়ার জন্য ড্রেস নেয় নিজের পছন্দের। একজন ছুটা ভুয়া আসে সকালে, দুপুরে চলে যায় তার জন্যও শাড়ি নেয়। মাহিদ শুধু তাঁকিয়ে তাঁকিয়ে দেখে কিছু বলে না।

লেডিস শপ থেকে বেরিয়ে জেন্টস শপে প্রবেশ করে।
সকলের জন্য নেয় সাথে নিজের জন্যও নেয়। আসার সময় কয়েক টা ড্রেস নিয়ে এসেছিল।

আলভী ওর চোখ যায় ছোট ভাইয়ের দিকে। ওর কাছ থেকে একটু দূরেই দাঁড়িয়ে আছে মাহিদ। একটি সুন্দরী মেয়ে মাহিদ এর এক হাত জড়িয়ে ধরে খুশিতে গুলগুলা হয়ে কথা বলছে। মাহিদ এর চোখে মুখে চোর চোর ভাব। মেয়েটিকে নিজের কাছ থেকে সরানোর চেষ্টা করছে কিন্তু মুখে কিছু বলতে পারছে না।

মেয়েটি বাবু, সোনা, বেইবি ডেকে যাচ্ছে আর এটা সেটা প্রশ্ন করছে।

মাহিদ জোর পূর্বক মুখে হাসি ফুটিয়ে আস্তে আস্তে বলে,

_ লীনা তোমাকে আগেই তো বলেছি আমার বাড়ির কারো সামনে মনের ভুলেও আমার ধারে কাছে ঘেসবে না। সেখানে এভাবে ধরে দাঁড়িয়ে আছো কেন? দূরে সরো।

_ মাহিদ এখানে তো তোমার ফ্যামিলির কেউ নেই।

_ কে বলেছে কেউ নেই? সামনেই ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে আর এদিকেই তাঁকিয়ে আছে।

লীনা সামনে তাকায়। কেউ নেই মাহিদ এর ফ্যামিলির।

_ কেউ তো নেই সামনে।

_ সাদা শার্ট পড়া যেই ছেলে টা দাঁড়িয়ে আছে ওটাই আমার মেজো ভাইয়া মানে আলভী ভাইয়া।

মেয়েটা তড়িৎ গতিতে আবার সামনের দিকে তাকায়। আলভী ছোট ছোট চোখ করে তাকিয়ে আছে ওদের দুজনের দিকে। হয়তো বোঝার চেষ্টা করছে মেয়ে টা কে? বুঝেও গেছে বোধহয়।

দ্রুত মাহিদ কে ছেড়ে দেয় লীনা। চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই আলভী ডেকে ওঠে,

_ এই মেয়ে দাঁড়াও।

দাঁড়িয়ে যায় লীনা। ভবিষ্যৎ ভাসুরের সামনে এভাবে মাহিদ কে ধরে দাঁড়িয়ে ছিল, আবার কি কি নামে সম্বোধন করলো ভাবতেই লজ্জায় দৃষ্টি নামিয়ে রাখে।

আলভী এগিয়ে এসে দাঁড়ায় দুজনের সামনে। মেয়েটা কে দেখতে বেশ সুন্দরী আর কিউট।

_ নাম কি তোমার?

_ লীনা ফেরদৌস।

_ বাড়ি কোথায়?

_ মিরপুর।

_ মাহিদ এর সাথে কত দিনের সম্পর্ক?

লীনা চোখ তুলে একবার আলভীর মুখের দিকে তাকিয়ে আবার চোখ নামিয়ে নেয়।

_ তিন বছরের।

_ বাড়িতে কে কে আছে?

_ আমি , ভাইয়া , আব্বু আর আম্মু।

_ আচ্ছা যাও এখন।

লীনা দ্রুত পায়ে চলে যায় ওদের সামনে থেকে। আলভীর সাথে কথা বলার সময় হাত পা সহ পুরো শরীর কাপছিল। কোন দুঃখে আজ এখানে এসেছিল?

আলভী মাহিদ এর দিকে তাকায়। মাহিদ চোরা চোখে দেখছে ওকে।

_ তলে তলে এত দূর? তিন বছর ধরে প্রেম করো তাইনা?

_ ভাইয়া বাড়িতে কাউকে বলবে না প্লীজ।

_ নো… নো… নো…।

_ প্লীজ ভাইয়া তোমার পায়ে পড়ি, বলবে না কাউকে।

_ বাড়িতে ফিরে সবার আগে এই কথা টাই সকল কে বলব আমি। সকলের আড়ালে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করা হচ্ছে?

_ না ভাইয়া প্লীজ।

_ আমার সাথে যেটা হয়েছে তোর সাথেও সেটাই হবে। তোর সাথে কেন উল্টো নিয়ম হবে?

_ তুমি যা বলবে সব শুনবো আমি। তাও কাউকে বলবে না প্লীজ।

_ আমি যা যা বলবো সব শুনবি?

_ হ্যাঁ।

_ পরে তো আবার পল্টি নিবি না?

_ একদম না।

_ যদি আমার কথা না শুনিস তাহলে সেদিনই তোর বিয়ে করিয়ে দেব অন্য মেয়ের সাথে।

মাহিদ ফ্যাল ফ্যাল করে বড় ভাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল।
বাড়ির মানুষ জনের ভয়ে বাড়িতে থাকা কালীন গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথাই বলে না। পই পই করে আগেই বলে দিয়েছে ওর ফ্যামিলির কারো সামনে ভুলেও যেন ওর সাথে কথা বলতে না আসে।
কে জানে হতেও পারে, ও প্রেম করছে বলে ওর বাড়ির সবাই আলভীর মত ওকেও ধরে বেঁধে কোনো এক মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে দিল।

ও অপেক্ষা করছে পড়াশোনা শেষ হওয়ার। শেষ হলে সাহস যুগিয়ে তখন বাড়ির সবাই কে বলবে লীনার কথা। তত দিন লুকিয়ে লুকিয়েই প্রেম করে যাবে।
কিন্তু আজকে বড় ভাইয়ের সামনে ধরা পড়েই গেল।
এখন এই বজ্জাত আলভী ওকে দিয়ে কি কি করাবে কে জানে?

_ চল বাড়িতে যাই এখন, সব কিছু নেওয়া শেষ। ব্যাগ গুলো হাতে নে।

হেঁটে এগিয়ে গিয়ে দুই হাতে শপিং ব্যাগ তুলে নেয়। আলভী নিজেও নেয় কত গুলো।
বাইরের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে মাহিদ বলে,

_ গাড়ি নিয়ে আসলে ভালো হতো না? এত গুলো ব্যাগ নিয়ে বাইকে করে যাওয়া কষ্ট হয়ে যাবে।

_ কষ্ট হবে কেন?

_ বসলেই বুঝতে পারবে।

বাইকের কাছে এগিয়ে আসে দুজন। বাইরে পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে গেছে। নিয়ন বাতির আলোয় আলোকিত চারো পাশ। মাহিদ সামনে বসে, পেছনে বসে আলভী। আলভীর দুই হাতে শপিং ব্যাগ গুলো।

_ শক্ত হয়ে বসো , পেছন থেকে পড়ে জেও না আবার।

_ বোন কে বিধবা না করতে চাইলে আস্তে আস্তে চালাবি।

_ একটা কথা জিজ্ঞেস করি?

_ কর।

_ রেগে যাবে না তো?

_ রেগে যাওয়ার মতো হলে অবশ্যই রেগে যাব আর তোকে লাথি দিয়ে বাইক থেকে ফেলে দেব।

_ তাহলে থাক।

_ না থাকবে কেন? তোকে বলতেই হবে এখন, নয়তো তুই নাম বাইক থেকে।

_ তুমি তো মায়া কে পছন্দ করতে না ভাইয়া। সবাই বলল তা লাক দেওয়ার জন্য দেশে এসেছো। তাহলে এখন সংসার করতে চাইছো কেন? তোমার হাব ভাব দেখে তো মনে হয় মায়া কে ভালোবাসো।

_ ভালোবাসি বলেই তো সংসার করতে চাইছি।

_ সত্যি সত্যিই ভালোবাসো?

_ তো মিথ্যে বলছি নাকি?

_ কবে থেকে?

_ কি?

_ ভালোবাসো।

_ যেদিন তোর বোন আমার মাথায় ডিম ফাটিয়ে ওয়েলকাম করেছিল।

_ সত্যি?

_ হুম।

_ মায়া তোমার উপর ভীষণ রেগে আছে। অভিমান ও করেছে অনেক। তোমার নাম শুনলেই যেন কেমন করে ওঠে। শুনতেই পারে না তোমার নাম, তোমার কথা।

_ তুই শোনাবি দিন রাত চব্বিশ ঘণ্টা।

_ বুড়ো হওয়ার আগেই আমাকে টাক বানিয়ে দেবে।
,
,
বাড়িতে ফিরে আসে দুজন।
দুই হাতে শপিং ব্যাগ ধরে রেখে আলভীর হাত ব্যাথা হয়ে গেছে। সব গুলো মাহিদ এর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,

_ ব্যাগ গুলো অনেক ভারী। আমার হাত ব্যাথা হয়ে গেছে।

_ বলেছিলাম গাড়ি নিতে।

_ পাছায় লাথি খেতে না চাইলে এক কথা বার বার বলা বন্ধ করে ভেতরে চল।

শপিং ব্যাগ গুলো সোফার উপরে রেখে বসে পড়ে মাহিদ। মাহিদ এর পাশে বসে আলভী। বাড়ির সবাই সোফায় উপস্থিত রয়েছে।
এত গুলো শপিং ব্যাগ দেখে সবাই দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে। কি এনেছে এত?

আলভী মানতাসার দিকে তাকিয়ে দুই হাত বাড়িয়ে দিয়ে সুন্দর করে মায়া ভরা স্বরে ডেকে ওঠে,

_ আম্মা আমার কাছে আসো।

মানতাসা মাহির এর কোল থেকে তাড়াহুড়ো করে নেমে দৌড়ে আসে আলভীর কাছে। কোলে উঠেই শক্ত করে গলা জড়িয়ে ধরে বলে,

_ কোতায় গিয়েচিলে?

_ আমার আম্মার জন্য চকলেট কিনতে। পরী সাজানোর জন্য ড্রেস কিনতে।

_ এনেচো?

_ হুম।

_ চকলেট খাব।

শপিং ব্যাগের ভেতর থেকে একটা বড় চকলেট বের করে মানতাসার হাতে দেয় আলভী।
চকলেট পেয়ে খুশিতে আলভীর দুই গালে দুটো চুমু খেয়ে কোল থেকে নেমে যায় তাড়াহুড়ো করে।
চকলেট হাতে দৌড়ে যায় দাদার কাছে। চকলেট দেখিয়ে বলে,

_ দেখো কত্ত বড় চকলেট।

চোখ মুখ থেকে খুশি উপচে পড়ছে। ওর হাসিতে পুরো ড্রইং রুম ভরে উঠেছে।

সানজিদা আলভীর দিকে তাকিয়ে বলে,

_ ভাইয়া ওর দাঁতে এমনিতেই সমস্যা। এত বড় চকলেট খেলে দাঁত তো একটাও থাকবে না।

_ কয়েক বছর পরেই নতুন দাঁত গজিয়ে যাবে। ওর খুশির চেয়ে দাঁত বড় নাকি?

সানজিদা হা করে তাকিয়ে রইলো আলভীর মুখের দিকে। এইটা কোন কথা?

_ আম্মা এদিকে আসো।

এগিয়ে আসে মানতাসা।

তিনটা শপিং ব্যাগ মানতাসার হাতে দেয়।

_ এগুলো নিতে পারবে? তিন টাই কিন্তু তোমার। ভুলেও কিন্তু চকলেটের ভাগ তোমার আম্মু কে দেবে না। লুকিয়ে রাখবে নয়তো তোমার আম্মু চুরি করে খেয়ে নেবে তোমার চকলেট বুঝতে পেরেছো?

মাথা নাড়ায় মানতাসা। ব্যাগ গুলো টেনে নিয়ে বাবার কাছে এগিয়ে যায়। আলভীর কথা শুনে লজ্জায় ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে নেয় সানজিদা। আলভী ভুল কিছু বলেনি। মানতাসা কে চকলেট এনে দিলে বেশি টুকু সানজিদা নিজেই খেয়ে নেয়। যেহেতু মানতাসার দাঁত ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে তাই মিষ্টি খাবার ওকে কম খাওয়ায়, চকলেট তো আরো কম।

আলভীর এমন কথা শুনে বাকি সকলের মুখেও হাসি ফুটে ওঠে।

আলভী একে একে সকলের হাতে শপিং ব্যাগ তুলে দেয়। শুধু বাকি থাকে মায়া। ওকে কিছু দেয় না।
এখনো অনেক গুলো শপিং ব্যাগ রয়েছে সোফার উপর। আলভী বাকি ব্যাগ গুলো নিজের হাতে তুলে নেয়। তারপর এগিয়ে যায় সিঁড়ির দিকে।

সবাই একবার মায়া তো আরেক বার আলভীর দিকে তাকায়। মায়া নিজের মতো ফোন দেখতে ব্যস্ত।
আলভী কোন কিছু ওকে দিলে ও নিজেই নিত না। দেইনি ভালো হয়েছে।

কিছু সময় পর সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় মাহিদ।
মায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,

_ মায়া একটু আয় তো।

_ কেন?

_ দরকার আছে। আয় তাড়াতাড়ি।

মায়ার হাত ধরে টেনে নিয়ে সিঁড়ির দিকে এগিয়ে যায়।
এসে দাঁড়ায় মায়ার রুমের সামনে।

_ তুই ভেতরে যা আমি ব্যাগ টা রেখে আসছি।

_ কি বলবে এখনই বলো।

_ তুই ভেতরে যা আসছি আমি।

মায়া নিজের রুমে প্রবেশ করে।
বেডের দিকে এগিয়ে যেতেই হঠাৎ পেছন থেকে ডোর লক করার শব্দ হয়। চমকে উঠে পেছনে ফিরে তাকাতেই দেখে আলভী দাঁড়িয়ে আছে। আলভী কে দেখেই হার্ট বিট বেড়ে যায়। বুকের ভেতর আবার কাঁপতে শুরু করে।

আলভী এক কদম এক কদম করে এগিয়ে আসে মায়ার দিকে। মায়া পিছিয়ে যেতে যেতে কম্পিত স্বরে বলে,

_ আপনি এখানে কেন? ডোর লক করেছেন কেন?

আলভী বলে না কিছু।
বেড থাকায় আর পেছাতে পারে না মায়া। আলভী একে বারে মায়ার কাছাকাছি এসে দাঁড়ায়। দুজনের মাঝে এক হাত সমান দূরত্ব রয়েছে।

_ বের হন আমার রুম থেকে।

_ বের হওয়ার জন্য তো আসিনি।

_ বের হন।

_ যদি না বের হই।

_ কেন হবেন না?

_ আমি তো এসেছি তোমার কাছেই।

_ কেন এসেছেন?

_ ভালোবাসি বলে।

আলভীর মুখে সহজ স্বীকারোক্তি শুনে তাঁকিয়ে থাকে মায়া।

_ আমার কাছ থেকে পালিয়ে পালিয়ে থাকো কেন?

_ কোথায় পালিয়ে পালিয়ে থাকি?

_ আমি সামনে আসলেই তো শুধু পালাই পালাই। ভয় পাও আমাকে?

_ ভয় পেতে যাব কেন?

_ কাপছো কেন তাহলে ?

_ কোথায় কাপছি?

_ এই যে তোমার শরীর কাপছে, হাত কাপছে, কথা বলতে তো ঠোঁট আর গলার স্বর ও কাপছে।

_ আমি মোটেও ভয় পাই না আপনাকে। এখন সরুন আমার সামনে থেকে।

_ পারলে সরাও।

মায়া রেগে তাকিয়ে থাকে আলভীর মুখের দিকে। মোটেও ভয় না মায়া এই শ য় তা ন লোক কে, হূহ।

_ সরুণ সামনে থেকে।

_ সুন্দর করে বলো।

_ কি?

_ সরার জন্য।

_ ভালো ভাবেই তো বলছি।

_ উঁহু এভাবে না। আপনি করে না বলে তুমি করে বলো। সুন্দর ভাবে মিষ্টি করে বলো “সামনে থেকে একটু সরো জানু”।

মায়া দাঁত কিড়মিড় করে বলে,

_ জীবনেও না।

_ বলোনা প্লিজ জান।

_ পারবো না আমি, সরুন সামনে থেকে আর বের হন আমার রুম থেকে।

_ আমিও সরতে পারবো না, কোথাও যাবোও না। আজকে রাতে এখানেই থাকবো তোমার সাথে।

মায়া রেগে চেঁচিয়ে আলভীর দিকে আঙ্গুল তুলে বলে,

_ খু ন করে ফেলবো, বের হন আমার রুম থেকে।

_ তুমি খু ন করতে চাইলে আমি খু ন হতেও রাজি।

মায়া বলে না কিছু।
আলভী বেডের উপর থাকা ব্যাগ গুলো দেখিয়ে বলে,

_ ও গুলো তোমার।

মায়া ঘাড় ঘুরিয়ে বেডের দিকে তাকায়। এতক্ষণ তো নজরেই আসেনি এগুলো।

_ লাগবে না আমার কিছু। এগুলো নিয়ে বের হন আমার রুম থেকে।

_ বার বার এক কথা না বললে তোমাদের দুই ভাই বোনের পেটের ভাত হজম হয় না?

মায়া বলতে গিয়েও বলে না কিছু।

_ ব্যাগের ভেতর বোরকা হিজাব আছে। এখন থেকে বাইরে বেরুলে বোরকা হিজাব পড়ে তারপর বের হবে।

_ বোরকা হিজাব আছে আমার।

_ তাহলে গত কাল পড়নি কেন?

_ লম্বা গাউন পড়ে গিয়েছিলাম তাই পড়িনি।

_ নিকাব পড়নি কেন?

_ পড়ি না।

_ নেক্সট টাইম বাইরে বের হলে বোরকা হিজাব নিকাব পড়ে তারপর বের হবে। বাইরের কোন ছেলে যেন ভুলেও আমার সুন্দরী বউয়ের কিউট গলুমোলু ফেস দেখতে না পায়।

_ একশো বার দেখবে তাতে আপনার কি?

_ অবশ্যই আমার অনেক কিছু। বাইরের কেউ কেন আমার বউকে দেখবে? দেখে দেখে তো বদ নজর লাগিয়ে দেবে।

_ সরুন আমার সামনে থেকে।

_ সরবো না।

_ তা লাক দিয়ে মুক্ত করুন আমাকে।

_ দেব না।

_ কেন?

_ কেন আবার? ছোট বেলায় আমার কোলে হাগু মুতু করে এখন আরেক ব্যাডা কে বিয়ে করে সেই ব্যাডার বাচ্চার হাগু মুতু পরিষ্কার করবে সেটা আমি হতে দেব? নো নেভার।

আলভীর কথা শুনে চোখ দুটো বড় বড় হয়ে যায় মায়ার। ও আলভীর কোলে ছোট বেলায় হাগু মুতু করেছে? সিরিয়াসলি?

চলবে………………