#হৃদয়_মাঝে_হঠাৎ_তুমি
#সানা_শেখ
#পর্ব_17
[কার্টেসি ব্যতীত কপি করা নিষিদ্ধ]
আলভীর ক্ষত শুকিয়ে উঠেছে। এখন স্বাভাবিক ভাবেই হাটা চলা করতে পারে। তবে ডান হাতের ব্যাথা এখনো পুরোপুরি ঠিক হয়নি।
মাঝ খানে এক দিন পেরিয়ে গেছে। সব কিছু আগের মতোই রয়ে গেছে। আলভী আর মায়ার সম্পর্ক একটুও উন্নতি হয়নি। আলভী কে দেখলেই দশ হাত দূর দিয়ে হাটে মায়া। আলভী কথা বলতে চাইলেও সুযোগ দেয় না। আর আগামী পরশু আলভীর নানীর বাড়ির সবাই ফিরে যাবে।
আলভী নিজের রুমে বেডের উপর বসে ল্যাপটপে ভিডিও কলে কথা বলতে ব্যস্ত। জার্মানি থেকে ওর পিএ আমান কল করেছে।
কথা শেষ করে সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে লিরা দাঁড়িয়ে আছে। আলভীর বুঝে আসে না এই মেয়ে বাড়িতে থাকলেও কেন এত মেকআপ করে?
লিরা আলভীর কাছে এগিয়ে এসে দাঁড়ায়। আলভী বিরক্ত হলেও চুপ করে রইলো। এই মেয়ের মতলব বুঝতে বাকি নেই আলভীর। মেয়ে মানুষ হয়ে কিভাবে যে একটা ছেলের দিকে তাকিয়ে থাকে কে জানে? এই মেয়ের যে লজ্জা সরম বলতে কিছু নেই তা বুঝতে বাকি নেই আলভীর।
এই রাতের বেলা যুবতী মেয়ে হয়ে একটা ছেলের রুমে আসা কোন ভালো মেয়ের কর্ম নয়। এগুলো বাড়ি থেকে বিদায় হলেই বাঁচে আলভী।
লিরা কিছু বলার জন্য উসখুস করছে। কিন্তু ওর কথা শুনতে চায় না আলভী। তাই নিজে থেকেই বলে,
“বাইরের কোন মেয়ে হুটহাট আমার রুমে আসুক তা আমার পছন্দ না লিরা। তুমি এখন আসতে পারো।”
“আমি বাইরের মেয়ে?”
“তুমি যেভাবে বুঝেছো আমি সেভাবে বলিনি। বাইরের মেয়ে বলতে বুঝিয়েছি আমার বউ বাদে অন্য কোন মেয়ে আমার রুমে আসুক তা আমার পছন্দ না। তুমি এখন আসো আমি ঘুমাব।”
লিরা অপমান বোধ করে। ও স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে আলভী ওকে বাইরের মেয়েই বলছে কারণ লিরা এই বাড়ির মেয়ে নয়। ওই মায়ার মধ্যে কি আছে সেটা ওর মধ্যে নেই? ও কি মায়ার চেয়ে কম সুন্দরী নাকি?
“লিরা তুমি যাও এখন।”
লিরা মুখ কালো করে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। গেস্ট রুমের সামনে ওর দাদি সামসুন্নাহার বেগম দাঁড়িয়ে ছিলেন। লিরা গেস্ট রুমে ঢুকে রাগে ফেটে পড়ে। সামসুন্নাহার বেগম ডোর লাগিয়ে দিয়ে লিরার সামনে এসে দাঁড়ান। গল্পের রাইটার সানা শেখ। আগে আগে গল্প টি পড়তে সানা শেখ পেজ টি লাইক ফলো দিয়ে রাখবেন।
“বলেছিস?”
“কি বলবো? তোমার নাতি তো আমার কোন কথা শুনতেই চায় না। উল্টো বার বার অপমান করে। আজকে বললো আমি নাকি বাইরের মেয়ে। আমি ওই রুমে যাই সেটা তোমার নাতির পছন্দ না।”
“তোকে বাইরের মেয়ে বলেছে?”
“হ্যাঁ।”
সামসুন্নাহার বেগম চুপ করে রইলেন।
লিরা বলে,
“তুমি ফুপি কে সরাসরি বললেই তো পারো।”
“কোন লাভ নেই। তোর ফুপিই তো মায়া কে আলভীর বউ বানিয়েছে। আমি অনেক আগেই বলেছিলাম মায়া আর আলভীর ডিভোর্স করিয়ে আলভী কে আবার বিয়ে করাতে। তোর ফুপি রাজি হয়নি। এখন তো আলভী নিজেই মায়া কে ছাড়তে চাইছে না সেখানে ঐশী তো আরো চাইবে না। মায়ার দিক থেকে আলভীর মন ঘুরাতে হবে।”
“সেটা কিভাবে? তোমার নাতি তো সারা দিন মায়া মায়া করেই দিন পাড় করে।”
“তুই কোন চিন্তা করিস না যা করার আমিই আর তোর মা ই করব।”
“কি করবে?”
“বললাম তো তোকে ভাবতে হবে না। তুই ঘুমিয়ে পড় এখন।”
ফ্রেস হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে প্রবেশ করে লিরা। সামসুন্নাহার বেগম ছেলের বউ কে ডেকে নিয়ে আসেন নিজের রুমে।
,
,
এক মগ কফি নিয়ে আলভীর রুমের সামনে এসে দাঁড়ায় মায়া। এত রাতে কেন কফি খেতে হবে? এখন তো ঘুমোনোর সময়, এখন কফি খেলে ঘুম আসবে?
মায়ের উপর খুব বেশি রাগ হচ্ছে মায়ার। ওকেই কেন কফি দিয়ে পাঠাতে হবে? নিয়ে আসতে রাজি হয়নি বলে আদেশ দিল। তাও যে সে আদেশ নয় একদম কড়া আদেশ। না করায় এমন ভাবে তাকিয়েছিল যেন ও কফি নিয়ে না এলে আলভী এখনই ম রে যাবে, দুনিয়া উল্টে যাবে, এই বাড়িটা ঠাডা পড়বে। মায়ের রাগের মুখে পড়ে বাধ্য হয়ে কফি নিয়ে আসতে হলো।
কে জানে এই বদ লোক ওর মাকে কি যাদু করেছে? সব সময় শুধু আলভী আলভী।
আস্তে করে ডোরে টোকা দেয় মায়া। ভেতর থেকে ভেসে আসে আলভীর গলার স্বর।
“ভেতরে আসো।”
আলভীর গলার স্বর শুনেই বুকটা লাফিয়ে ওঠে মায়ার। বুকে থু থু দিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে ভেতরে পা বাড়ায় ডোর ঠেলে।
মায়া কে দেখে আলভী অনেক বেশি অবাক হয়। ভাবেনি মায়া কফি নিয়ে আসতে পারে। এই মেয়ের যা তেজ হয়েছে আজ কাল। তাকালেও মনে হয় চোখ দিয়ে ভস্ম করে দেবে।
কোন কথা না বলে কফির মগ এগিয়ে দেয় আলভীর দিকে।
“টেবিলের উপর রাখো।”
এগিয়ে গিয়ে বেড সাইট টেবিলের উপর রাখে কফির মগ টা। ততক্ষণে আলভী রুমের ডোর লক করে দিয়েছে।
চলে যাওয়ার জন্য দ্রুত ঘুরে পা বাড়ায় মায়া। এগিয়ে এসে খপ করে হাত টেনে ধরে আলভী। রাগী চোখে তাকায় মায়া।
“হাত ছাড়ুন বলছি।”
“অন্য কোন মেয়ে কে ধরেছি?”
“ধরুন নিষেধ করেছে কে? শুধু আমাকে ধরবেন না ছোঁবেন না, হাত ছাড়ুন এখন।”
“বউ থাকতে অন্য মেয়ে কে কেন ধরতে যাব ছুঁতে যাব?”
“আপনার বউ মরে গেছে অনেক আগে।”
“আগের বউ কে বাঘে খাক তাতে আমার সমস্যা নেই। বর্তমান বউ টা থাকলেই হলো। যদিও আগের বউ টা বেশি কিউট ছিল, সহজ – সরল, নম্র – ভদ্র, বোকা পাখি। বর্তমান বউ টা বদ রাগী, কথাই বলা যায় না খ্যাক খ্যাক করে।”
রাগে মায়ার নাক লাল হয়ে ওঠে।
“হাত ছাড়ুন নয়তো কিন্তু মাথায় বারি মা/র/ব।”
“বিধবা হওয়ার এত তাড়া কেন?”
মায়া আশে পাশে নজর বুলায়। রুম ঝাড়ু টা দেখতে পায়। কিন্তু ওটার কাছে যাবে কিভাবে? এই শয় তান লোকের যেই শক্তি। হাত ছাড়াতে পারবে বলে মনে হয় না।
“আপনার কফি ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।”
“হোক।”
“সবাই ঘুমিয়ে গেছে গরম করে দেওয়ার জন্য কেউ নেই।”
“আমি করতে পারি।”
হাত ছাড়াতে না পেরে আলভীর হাত কামড়ে ধরে মায়া। এত জোড়ে কা মড় দেয়ার পরেও আলভী ছারে না মায়ার হাত। আলভীর হাত ছেড়ে আলভীর মুখের দিকে তাকায়। এই লোক কোন মাটি দিয়ে তৈরি? এত জোড়ে কা মড় দিল ব্যাথা পায়নি নাকি? এমন স্বাভাবিক আছে কিভাবে?
“হাত ছাড়ুন।”
ছেড়ে দেয় আলভী। মায়া দ্রুত ডোরের কাছে এগিয়ে যায়। উপরের ছিটকিনি লাগিয়ে দিয়েছে শয় তান লোক টা। ওই পর্যন্ত মায়ার হাত পৌঁছাচ্ছে না। এত বড় করে কেন ডোর বানাতে হবে? এই ডোরের ভেতর দিয়ে কি জাহাজ চলাচল করবে নাকি?
মায়া আশে পাশে নজর বুলিয়ে টুল আনার জন্য এগিয়ে যায়। আলভী ডোরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। আজকে আর যেতে দেবে না এই রুমের বাইরে। পুরো দুদিন পর আজকে হাতের নাগালে পেয়েছে। রাইটার সানা শেখ।
“সামনে থেকে সরুন।”
“সরাও।”
“কি শুরু করেছেন? বাড়ির সবাই মিলে মজা করছেন আমার সাথে?”
“বাড়ির সবাই করলে করতে পারে কিন্তু আমি করছি না।”
কয়েক কদম এগিয়ে গিয়ে ঝাড়ু টা হাতে তুলে উল্টো করে ধরে।
“সামনে থেকে সরুন নয়তো ঝাড়ু দিয়ে মা/রব।”
“পারলে মা/রো।”
“সত্যি সত্যিই কিন্তু মা/রব।”
“মারো।”
“সরবেন না?”
“না।”
“সরবেন না?”
“আমার সব কথা শুনবে তারপর।”
“কেন শুনব আপনার কথা?”
“কারণ আমি বলব তাই।”
“কেন বলবেন?”
“তোমাকে বোঝানোর জন্য?”
“কেন বোঝাবেন?”
“যেন দশ বারোটা বাচ্চা পয়দা করতে পারি।”
বিরক্ত হয়ে শেষের কথা গুলো খুব দ্রুত বলে আলভী। মাথা হাতের ঝাড়ু টা দিয়ে ঠাস করে বারি বসায় আলভীর বাম হাতের বাহুতে।
“অসভ্য, অভদ্র, শ য় তান, লোক ঠাডা পড়বে মুখের মধ্যে।”
অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল আলভী। সত্যি সত্যিই বারি মা রল? এই বউ তো ওর গলা কে টে দিতেও দুই মিনিট ভাববে না।
হাতের ঝাড়ু ফেলে জোরে শক্তি প্রয়োগ করে আলভী কে ধাক্কা দেয় মায়া। অন্যমনস্ক থাকায় টাল সামলাতে না পেরে পাশের দেয়ালের সাথে বারি খায় মাথায়। বারি খেয়ে সাথে সাথেই আবার নিচে পড়ে যায়। কোন রকমে ডোর খুলে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। দৌড়ে নিজের রুমে এসে ডোর লক করে দেয়।
শরীর থরথর করে কাপছে। দ্রুত বেডে শুয়ে পড়ে উপুর হয়ে। কি করে ফেললো? ওর মা যদি জানতে পারে আলভী কে ঝাড়ু দিয়ে মে রে ছে তাহলে ওকেই ঝাড়ু দিয়ে মে রে বাড়ি থেকে বিদায় করবে। আলভীর মুখে অমন কথা শুনে হাত দুটো আপনা আপনি বারি
মে/রে/ছে ওর কোন দোষ নেই। ও মা/রতে চায়নি তো সত্যি সত্যিই। এখন কি হবে? শোয়া থেকে আবার লাফিয়ে উঠে বসে। যেই জোরে ধাক্কা টা দিল, ঠাস করে দেয়ালের সাথে গিয়ে মাথায় বারি খেলো। বেঁচে আছে না ম/রে গেছে? নাকি অজ্ঞান হয়ে গেছে? এত জোড়ে বারি খেয়েও তো চিৎকার করলো না। ভয়ে মায়ার হাত পা আরো বেশি কাঁপতে শুরু করে। আলভী যদি ম রে যায় তাহলে ওকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। জেল হবে, ফাঁসি হবে তারপর ও নিজেও ম রে যাবে। নাআআআ এ কিছুতেই হতে পারে না। আলভীর কি অবস্থা কে জানে? ওর তো এখনই শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।
নাহ্ কিছু হবে না আলভীর। এত বড় হাতির মতন একটা লোক ওর মতন মশার ধাক্কা খেয়ে ম র তে পারেই না। হয়তো মাথায় আঘাত পেয়েছে, বরফ দিলে ঠিক হয়ে যাবে। বেড থেকে নেমে দাড়ায়। একবার দেখে আসা উচিত কি অবস্থা আলভীর।
থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। আলভীর রুমে না গিয়ে আগে নিচে কিচেনে আসে। ফ্রিজ থেকে একটা ঠান্ডা পানির বোতল নেয়। আইস কিউব নেয় সাথে। তারপর আবার উপরে উঠে আসে। বাড়ির কারো কোন সাড়া শব্দ নেই। সবাই নিজেদের রুমে নিশ্চুপ হয়ে রয়েছে। রাইটার সানা শেখ। গল্পের পরবর্তী পার্ট আগে আগে পড়তে সানা শেখ পেজ টি লাইক ফলো দিয়ে রাখবেন সবাই।
আলভীর রুমের ডোর ঠেলে ভেতরে উঁকি দেয়। কই আলভী কই? ঝাড়ু টুল কিছুই তো নেই সামনে আর না আলভী আছে। হাওয়া হয়ে গেল নাকি?
মাথা টা আরেকটু ভেতরের দিকে নিয়ে পুরো রুমে নজর বুলাতেই দেখে আলভী ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে ওর দিকেই। এভাবে তাঁকিয়ে থাকতে দেখে ভয় পেয়ে পিছিয়ে আসে মায়া। যাক বাবা ম রেনি, অজ্ঞান ও হয়নি। ব্যাথা তো পেয়েছে নিশ্চিত। নিজেকে স্বাভাবিক করে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে বির বির করে হেঁটে।
আলভীর কপালের বাম পাশ টা লাল হয়ে ফুলে উঠেছে। বাম পাশের গাল ও লাল হয়ে আছে। ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকেই দেখছিল।
মায়া যে আবার ওর রুমে আসবে কল্পনাও করেনি।
যা না ভাবে তাই শুধু হচ্ছে আজকে।
মায়া হাতের আইস কিউব গুলো এগিয়ে দেয় আলভীর দিকে।
“বরফ দিলে ব্যাথা তাড়াতাড়ি কমে যাবে।”
আলভী মুখ ঘুরিয়ে বলে,
“লাগবে না। মাথা ফাটিয়ে এখন এসেছে বরফ দিতে।”
মায়া মনে মনে বলে,
“মেয়েদের মতন ঢং ও করতে পারে আবার।”
“বরফ টা লাগান গোলে যাচ্ছে তো।”
আলভী বেডে গিয়ে আধশোয়া হয়ে বসে।
“লাগিয়ে দেওয়ার ইচ্ছে থাকলে দাও নাহলে নিয়ে চলে যাও।”
মায়া আগের মতোই দাঁড়িয়ে রইলো। আলভী আবার বলে,
“ব্যাথা তুমি দিয়েছো সারাবেও তুমি। আর না সারানোর ইচ্ছে থাকলে নিজের মাথায় দাও তাতে যদি ওই আগ্নেয়গিরি একটু ঠাণ্ডা হয়।”
মায়া আলভীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। কোন দুঃখে মায়ের রাগ দেখে ভয় পেয়ে কফি নিয়ে এসেছিল? না কফি নিয়ে ও নিজে আসতো, আর না এসব কিছু ঘটতো। সব ওর মায়ের দোষ।
ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও এগিয়ে যায় আলভীর কাছে।
আইস কিউব হাতে তুলে নেয় একটা। থরথর করে কাঁপতে থাকা হাত বাড়িয়ে কপালের ফোলা জায়গায় বরফ ধরে।
আলভী মনে মনে অনেক হাসে। ও নিজেই বরফ নেওয়ার জন্য যাচ্ছিল নিচে। মায়া কে পানি আর আইস কিউব বক্স নিয়ে এগিয়ে আসতে দেখে দ্রুত সরে এসে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়েছিল।
তখন মায়া কে দেখে অবাক হওয়ার ভান করেছে।
আলভী মুখ ফুটে বলে,
“অন্যের বউরা তাদের জামাই কে আদর করে, চুমু খায়, মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। মিষ্টি মিষ্টি কথা শোনায় । আর আমার বউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে মাজা ভেঙ্গে দেয়, মাথা কপাল ফাটিয়ে দেয়। ঝাড়ু দিয়ে বারি মা/রে। খ্যাক খ্যাক করে কথা বলে। আল্লাহ কবে যেন তোমার এই নিরীহ নিষ্পাপ ভোলা ভালা বান্দার গলা কে টে দেয়। আল্লাহ আপনার এই নিরীহ বান্দা কে হেফাজত করুন।”
মায়ার মুখের দিকে তাকিয়ে আবার আকাশের দিকে তাকায়।
“ও আল্লাহ দেখুন কিভাবে তাকায় আমার দিকে। এভাবে তাকালে তো আমি ভয়েই ম রে যাব।”
“এখানে আসাই ভুল হয়েছে আমার।”
“যাও আর কিছু বলবো না। এখন এই নিরীহ স্বামীর সেবা যত্ন করো একটু।”
__________________
পরের দিন সকালে ড্রইং রুমে আসতেই ড্রইং রুমে বসে থাকা সকলে আলভীর দিকে বড় বড় চোখ করে তাকায়। কপালের উপর অত বড় আলু গজালো কিভাবে? ডান পাশের কপালে ছুলে গেছে, বাম পাশের কপালে ফুলে গেছে।
আহনাফ মাহমুদ বলেন,
“আলভী তোমার কপালে আবার কি হয়েছে? এভাবে ফুলে গেল কিভাবে?”
আলভী মায়ার দিকে তাকায়। মায়া বড় ভাইয়ের গা ঘেঁষে চোরা চোখে তাঁকিয়ে আছে ওর দিকে।
নাহার বেগম বলেন,
“কি হলো কথা বলছো না কেন আলভী? কপাল ফুললো কিভাবে?”
“ওয়াশরুমে পড়ে গিয়েছিলাম রাতে, তখন দেয়ালের সাথে বারি লেগেছে।”
আলতাফ মাহমুদ বলেন,
“ওয়াশরুমে গিয়ে নাচানাচি করছিলে নাকি ছোট বাচ্চাদের মতন?”
ঠোঁট চেপে হেসে ওঠে মায়া।
“নাচানাচি করবো কেন? সুন্দরী একটা পরী এসে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল। রাতে আমাকে সাথে নিয়ে যেতে এসেছিল, আমি যেতে চাইনি বলেই তো ধাক্কা টা
মে রে ছিল রাগে। ছেলে কে সারা জীবন দেখতে চাইলে দ্রুত বউ দাও নয়তো ওই সুন্দরী পরী তোমাদের এই হ্যান্ডসাম ছেলে কে রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে চলে যাবে।”
চলবে……………
#হৃদয়_মাঝে_হঠাৎ_তুমি
#সানা_শেখ
#পর্ব_18
[কার্টেসি ব্যতীত কপি করা নিষিদ্ধ]
সোফায় বসে থাকা সকলের চোখ দুটো বড় বড় হয়ে যায় আলভীর কথা শুনে। রাতে পরী এসেছিল ওকে নিতে? সিরিয়াসলি?
নাহার বেগম আলভীর হাতের দিকে তাকিয়ে বলেন,
“তোমার হাতে কি হয়েছে আলভী? মনে হচ্ছে কেউ
কা মড় দিয়েছে। কাছে আসো তো।”
আলভী নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে মায়ার মুখের দিকে তাকায়। চোরের মতো চোখ মুখ করে তাঁকিয়ে আছে ওর দিকে। বজ্জাত মেয়ে কি জোড়ে যে কা মড় টা দিয়েছিল।
নাহার বেগমের কথা শুনে সবাই আলভীর হাতের দিকে তাকায়। ডান হাতে কা ম ড়ের দাগ স্পষ্ট হয়ে আছে এখনো। সোফা ছেড়ে উঠে এসে ভাইয়ের পাশে দাঁড়ায় মাহিদ। আলভীর হাত ধরে বলে,
“ভাইয়া এভাবে কা ম ড় দিল কে?”
“ওই পরী টা, এত সুন্দর হাত দেখে লোভ সামলাতে না পেরে কা মড় বসিয়ে দিয়েছিল।”
সকলের চোখ কোটর থেকে বেরিয়েই আসার উপক্রম হয়েছে এখন। মাহিদ অবাক হয়ে বলে,
“পরী হাতে কা মড় বসিয়ে দিয়েছে?”
“হ্যাঁ।”
“ভাইয়া ওটা তো পরী না তাহলে। যেভাবে কা/মড় দিয়েছে, ওটা তো ডাইনী রা/ক্ষ/সী।”
মাহিদ এর কথা শুনে মায়ার চেহারায় রাগ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ওর ভাই ওকে ডাইনী রা/ক্ষ/সী বলছে! ওকে কোন এঙ্গেল থেকে ডাইনী রা/ক্ষ/সী মনে হয়? কিউট হুর পরীর মতন দেখতে আর বলে কিনা ডাইনী
রা/ক্ষ/সী। ইচ্ছে তো করছে গিয়ে ভাইটার মাথা ফাটিয়ে দিয়ে আসতে। কিন্তু এই কাজ করা যাবে না, নয়তো সবাই বুঝতে পেরে যাবে মায়া আলভীর এই হাল করেছে। ওতো শুধু কা মড় টা ইচ্ছে করে দিয়েছিল আর কোনো কিছু ইচ্ছে করে করেনি। বাকি সব অটোমেটিক হয়ে গেছে নিজে থেকে। তবুও বদ লোকের কাছে মাফ চেয়েছে বারো বার। তাও হাত ধরে, শুধু পা ধরা টা বাকি ছিল। বার বার ভয় দেখাচ্ছিল ওর সেবা যত্ন না করলে বাড়ির সবাই কে বলে দেবে ওকে ঝাড়ু দিয়ে মে রেছে, কা মড় দিয়েছে, ধাক্কা দিয়ে ফেলে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে, মাজায়ও ব্যাথা দিয়েছে। মাফও চাইয়েছে তাও বারো বার। মাজ রাত পর্যন্ত ওকে দিয়ে নিজের সেবা যত্ন করিয়েছে, শ য় তা ন লোক একটা।
ঐশী রহমান কিচেন থেকে বেরিয়ে আসেন। ছেলের হাল দেখে আতঙ্কিত হয়ে বলেন,
“তোমার কি হয়েছে আলভী? কপালে হাতে এমন হয়েছে কেন?”
আলভী কিছু বলার আগেই মাহিদ বলে,
“ভাইয়ার রুমে রাতে পরীর রূপ ধারণ করে ডাইনী
রা/ক্ষ/সী এসেছিল। ভাইয়া হ্যান্ডসাম দেখতে তাই নিজের সাথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু ভাইয়া যেতে চায়নি তাই ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল। ফর্সা সুন্দর স্কিন দেখে লোভ সামলাতে না পেরে কা ম ড়
মে রে ছে।”
এমন উদ্ভট কথা শুনে ঐশী রহমান কিছু সময় চুপ করে দুজনের দিকে তাকিয়ে রইলেন।
“রাতে কি হয়েছিল সত্যি কথা বলো।”
“সত্যি কথাই তো বলছে। সত্যি সত্যিই একটা পরী এসেছিল। কি যে সুন্দর দেখতে বলে বোঝাতে পারব না তোমাদের।”
“সত্যি সত্যিই পরী এসেছিল?”
“হ্যাঁ।”
আলভীর কথা একটু একটু বিশ্বাস হচ্ছে এখন। তার ছেলে টা তো দেখতে মন্দ না, মাশা আল্লাহ অনেক সুন্দর দেখতে। দুষ্ট পরীর নজর পড়তেই পারে এত সুন্দর একটা ছেলের উপর। এত বয়স হয়ে গেছে এখনো বউ বাচ্চা নেই, পরীর নজর তো পড়বেই।
“আল্লাহ কি বলছো তুমি এসব?”
“সব কিছু করার পর পরী টা এক ডজন মাফ চেয়েছিল।”
আলভীর এমন কথা শুনে সকলে যেন সাত আসমানের উপর থেকে নিচে পড়ল। এক ডজন মাফ চেয়েছে মানে কি?
মাহির বলে,
“পা গ লে র মতন কি বলছিস এসব? এক ডজন মাফ চেয়েছে মানে কি?”
“বারো বার মাফ চেয়েছে আমার কাছে।”
“তোর এই অবস্থা করে আবার মাফও চেয়েছে?”
উপর নিচ মাথা নাড়ায় আলভী।
নাহার বেগম বলেন,
“এই ছেলে কে আর একটা দিন ও বউ ছাড়া রাখা যাবে না। আজকে থেকে ওর বউ কে ওর রুমে রাখবে।”
আলতাফ মাহমুদ কিছু বলতে চাইলেন কিন্তু তার আগেই মায়া বলে,
“আমি থাকবো না ওনার রুমে। যেই বড় শ য় তা ন উনি ওনার রুমে পরী কেন, কোনো শ য় তা ন ও যাওয়ার আগে একশ বার ভাববে।”
মায়ার এমন কথা শুনে সবাই মায়ার দিকে তাকায়। মায়া গুটিশুটি মে রে ভাইয়ের সাথে চিপকে যায়। সবাই এভাবে তাকাচ্ছে কেন ওর দিকে? বুঝতে পারে এত গুলো মানুষের সামনে ভুলভাল কথা বলে ফেলেছে মুখ ফসকে। মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে, তাতে ওর কি দোষ? সব দোষ এই বদ লোকের।
আলভীর নানি সামসুন্নাহার বেগম বলেন,
“আলভী যেভাবে বলছে তাতে তো মনে হচ্ছে দুষ্ট পরী ওর পেছনে পড়েছে। এভাবে ওকে বেশি দিন রাখা যাবে না। তাড়াতাড়ি বিয়ে করাতে হবে। মায়া ওর সাথে সংসার করতে চাইছে না, তাহলে এভাবে সম্পর্ক ঝুলিয়ে রাখার কি দরকার? ওদের তা লা ক করিয়ে আলভী কে আবার বিয়ে করাও।”
ঐশী রহমান বলেন,
“এখন চাইছে না কয়েক দিন পর চাইবে।”
“তোমার একটা মাত্র সন্তান। ছেলে টা কে দুষ্ট পরী তুলে নিয়ে যাওয়ার পর বা কোনো ক্ষতি করার পর চাইলে হবে? আর আমার মনে হয় মায়া অন্য কোনো ছেলে কে ভালোবাসে তাই জন্য আলভীর সাথে সংসার করতে চাইছে না।”
চমকিত নয়নে সবাই সামসুন্নাহার বেগমের দিকে তাকিয়ে থাকে। ওনার এমন কথা শুনে নাহার বেগমের রাগ উঠে যায়।
“আপনি এসব কি বলছেন? না জেনে শুনে উল্টা পাল্টা কথা বলবেন না।”
“উল্টা পাল্টা কথা বলব কেন? সবাই এত করে বলার পরেও মায়া রাজি হচ্ছে না আলভীর সাথে সংসার করতে। এর মানে কি দাঁড়ায় তাহলে? নিশ্চই মায়া অন্য কাউকে ভালোবাসে তাই জন্য আলভীর সাথে এখন সংসার করতে চাইছে না। আলভী ফিরে আসবে ভাবেনি হয়তো। এখন সাহসের অভাবে কিছু বলতে পারছে না।”
আলতাফ মাহমুদ গম্ভীর স্বরে বলেন,
“আম্মা আপনি চুপ থাকুন।”
“কেনো চুপ থাকবো? মায়া কে জোড় দিয়ে জিজ্ঞেস করো দেখবে ও স্বীকার করবে ওর প্রেমিক আছে।”
মাহির রেগে বলে,
“মুখ সামলে কথা বলুন। আপনি কার সম্পর্কে কথা বলছেন জানেন? এই বাড়িতে বসে এই বাড়ির একমাত্র মেয়ের সম্পর্কে এমন মিথ্যা কথা বলার রাইটস আপনাকে কে দিয়েছে? বৃদ্ধ মানুষ বলে কিন্তু মাথায় তুলে রাখবো না আমি।”
আহনাফ মাহমুদ বড় ছেলের দিকে তাকিয়ে বলেন,
“মাহির উনি তোমার গুরুজন।”
“গুরুজন বলে কি মাথায় তুলে নাচবো? কি বলছে উনি শুনতে পাওনি তুমি?”
ঐশী রহমান এর ভাই বলেন,
“মা এইসব কোন ধরনের কথা বলছো? উল্টা পাল্টা কথা না বলে মুখ বন্ধ রাখো।”
“উল্টা পাল্টা কথা বলবো কেন? মায়া গত রাতে কোথায় ছিল জিজ্ঞেস কর। সারা রাত তো ওর রুমে ছিল না।”
এমন কথা শুনে উপস্থিত সবাই শকড। ঐশী রহমান এর পাশে মেহবুবা মেহের এসে দাঁড়িয়েছেন চিল্লাপল্লা শুনে। কি হয়েছে বুঝতে না পেরে চুপ চাপ দাঁড়িয়ে রইলেন।
আলভীর মামাতো ভাই বলে,
“কি বলছ এসব? মায়া ওর রুমে না থাকলে কোথায় থাকবে?”
“গত রাতে মায়া তোমাদের কারো রুমে ছিল?”
আলভীর নানার বাড়ির সবাই না করে।
সামসুন্নাহার বেগম ঐশী রহমান এর দিকে তাকিয়ে বলেন,
“মায়া তোমার রুমে ছিল গত রাতে?”
ঐশী রহমান থমথমে মুখে মাথা ঝাকিয়ে না করেন। মেহবুবা মেহের এর দিকে তাকিয়ে বলেন,
“মায়া আপনাদের রুমে ছিল?”
মেহবুবা মেহের ও মাথা ঝাকিয়ে না করেন।
এবার তাকান মাহিরের দিকে,
“তোমার আদরের বোন গত রাতে তোমার রুমে ছিল?”
“আমার রুমে ছিল না মায়া। মায়ার জন্য আলাদা রুম দেওয়া হয়েছে। মায়া সেই রুমেই ছিল।”
“কে বলেছে তোমাকে মায়া রাতে ওর রুমে ছিল? গত রাতে ঘুম আসছিল না বলে আমি মায়ার রুমে গিয়েছিলাম ওর সাথে গল্প করার জন্য। যেহেতু মায়া রাত জাগে তাই। গিয়ে দেখি মায়া রুমে নেই। কতক্ষন অপেক্ষা করে শুয়ে ছিলাম। শুয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম বুঝতেই পারিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি মায়া তখনো রুমে আসেনি। রুম থেকে বেরিয়ে গেস্ট রুমের দিকে যাওয়ার সময় দেখি বাড়ির বাইরে থেকে ভেতরে আসছে মায়া। অত ভোর বেলা বাইরে থেকে কেনো আসলো? বাইরে কোথায় গিয়েছিল? সারা রাত বাইরে কি করেছে?”
এমন কথা শুনে সবাই মায়ার দিকে তাকায়। মায়ার চোখ মুখ শুকিয়ে কালো হয়ে গেছে সামসুন্নাহার বেগমের কথা শুনে।
আহনাফ মাহমুদ বলেন,
“মায়া উনি কি বলছেন? তুই রাতে কোথায় ছিলি? ভোর বেলা বাইরে থেকে কেনো এসেছিস?”
মায়া একবার আলভীর মুখের দিকে তাকিয়ে বাবার মুখের দিকে তাকায়। ধরা গলায় বলে,
“আমি রাতে বাড়ির ভেতরেই ছিলাম। ভোর বেলা বাইরে হাঁটতে বেড়িয়েছিলাম। এর বাইরে আর কিছুই নেই।”
“বাড়ির ভেতর কোথায় ছিলি?”
বাবার রাগী গলার স্বর শুনে কেঁদেই দেয় মায়া। এভাবে আজ পর্যন্ত ওর বাবা ওর সাথে কথা বলেনি কখনো।
সামসুন্নাহার বেগমের কথা শুনে আহনাফ মাহমুদের রাগ উঠে গেছে। নিজের মেয়ের সম্পর্কে এমন কথা শুনলে কোন বাবার মাথা ঠিক থাকবে? রাগ ওঠা টাই স্বাভাবিক।
“কি জিজ্ঞেস করছি উত্তর দিচ্ছিস না কেন? নিজের রুমে না থেকে কোথায় ছিলি রাতে?”
সামসুন্নাহার বেগম আগুনে ঘি ঢালার মত করে বলেন,
“কোথায় আর থাকবে, নিশ্চই প্রেমিকের সাথে বাড়ির বাইরে ছিল। এভাবে নিজেদের সম্মান নষ্ট না করে ছেলের পরিচয় বাড়িতে বলে দিলেই তো পারো মায়া।”
মাহির গর্জে ওঠে। এতক্ষণ আলভী চুপ থাকলেও এতক্ষণে এসে মুখ খোলে। মাহির কে থামিয়ে নানির দিকে তাকিয়ে রাগী স্বরে বলে,
“নানু তখন থেকে তোমার কথা চুপ চাপ শুনছি বলে মুখ দিয়ে যা আসবে তাই বলবে? আমার বউয়ের সম্পর্কে এমন কথা তুমি কিভাবে বলছো? মায়া না তোমার নাতনীর বয়সী। ওর সম্পর্কে এমন কথা বলতে তোমার বুক কাপছে না? বৃদ্ধ হয়ে গেছো অথচ শ য় তা নি
কুট নামি ছাড়োনি। শিওর জানো মায়া রাতে কোথায় ছিল? একজনের সম্পর্কে না জেনে তার চরিত্রের দিকে কিভাবে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করছো তুমি? দাঁত পড়ে গেছে, চুল পেকে গেছে অথচ আক্কেল জ্ঞান হয়নি। লজ্জা হওয়া উচিত তোমার।”
আহনাফ মাহমুদ ধমক দিয়ে মায়া কে বলেন,
“কি জিজ্ঞেস করছি উত্তর দিচ্ছিস না কেন বেয়াদপ? চড়িয়ে দাঁত ফেলে দেব মুখ বন্ধ করে থাকবি তো।”
এত জোড়ে ধমক শুনে শব্দ করে কেঁদে ওঠে মায়া।
আলভী শ্বশুরের দিকে তাকিয়ে বলে,
“খবরদার আমার বউ কে ধমকাবে না তুমি। মায়া গত রাতে আমার রুমে ছিল আমার সাথে। ভোরে আমার রুম থেকে বেরিয়ে বাগানে গিয়েছিল।”
সবাই অবাক হয়ে আলভীর দিকে তাকায়। আলতাফ মাহমুদ বলেন,
“মায়া তোমার সাথে ছিল গত রাতে?”
“হ্যাঁ, পাঁচটার পর আমার রুম থেকে বেরিয়ে এসেছে। আমাকে কফি বানিয়ে দিয়ে তারপর বাড়ির বাইরে বেরিয়েছিল।”
সামসুন্নাহার বেগমের মুখ টা ছোট হয়ে কালো হয়ে যায়। আলভী রাগে লাল হয়ে নানির দিকে তাকিয়ে থাকে। দেখে মনে হচ্ছে এক্ষনি কাঁচা চিবিয়ে খাবে।
আলভী স্পষ্ট বুঝতে পারছে এই বুড়ি মায়ার নামে কেনো এমন উল্টা পাল্টা কথা বলছে। সেদিন দাদির কাছে সব শোনার পর দাদির কথায় বহু কষ্টে নিজেকে সংবরণ করে রেখেছিল। আজকে তো এই বুড়ির পাঁকা চুল সব একটা একটা করে টেনে তুলবে।
চলবে………………