#হৃদয়_মাঝে_হঠাৎ_তুমি
#সানা_শেখ
#পর্ব_8
[কার্টেসি ব্যতীত কপি করা নিষিদ্ধ]
_ সত্যি সত্যিই তুমি মায়ার সাথে সংসার করতে চাইছ?
_ হ্যাঁ।
_ কিন্তু মায়া করতে চায় না।
আলতাফ মাহমুদ এর এমন কথায় সবাই অবাক হয়ে যায়। আলভী কপাল ভ্রু কুঁচকে বলে,
_ কেন?
_ জানি না আমি। মায়া বলেছে তোমার সাথে সংসার করবে না। আজকেই তা লাক দিয়ে দিতে বলেছে।
_ মিথ্যে বলছ তুমি।
_ একটাও মিথ্যে বলছি না। সকলের সামনেই তো বলেছিল। আমি ওকে বোঝাতে গিয়েছিলাম ও সোজা সাপটা না করে দিয়েছে। তোমার সাথে কিছুতেই সংসার করবে না।
_ আমি বিশ্বাস করি না।
_ তুমি বিশ্বাস করো বা না করো তাতে আমার কিছু যায় আসে না। তুমি মায়া কে তা লাক দিয়ে দাও আমি ওকে অন্য জায়গায় বিয়ে দেবো। এভাবে তো ওর জীবন টা নষ্ট হতে দিতে পারি না।
_ মায়া কে ডাকো এখানে।
_ কেন?
_ ও আমার সামনে নিজের মুখে বলবে তবেই আমি বিশ্বাস করব।
_ মাহিদ যা মায়া কে ডেকে নিয়ে আয়।
মাহিদ সোফা ছেড়ে মায়ার রুমের দিকে এগিয়ে যায়।
কয়েক মিনিট পরেই মায়া নিচে নেমে আসে। মাথা নিচু করে দাঁড়ায় সকলের সামনে। আলভী মায়ার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। গত দুদিনের তুলনায় আজকে মায়ার চোখ মুখ ফোলা ফোলা দেখাচ্ছে। মুখের রঙ কিছুটা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। চুল গুলো বোধহয় এলোমেলো হয়ে আছে, ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখার কারণে সেভাবে বোঝা যাচ্ছে না। তবে কপালের দিকে এলোমেলো হয়ে বেরিয়ে আছে অল্প কিছু চুল।
মায়ার এমন মলিন চেহারা দেখে আলভীর ভীষণ মায়া হয়। মেয়ে টা কে অনেক কষ্ট দিয়েছে এত গুলো বছর ধরে।
আহনাফ মাহমুদ মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলেন,
_ আলভী তোর সাথে সংসার করতে চাইছে। আমরাও সেটাই চাই। আমরা চাইলেই তো হবে না, তোরও চাইতে হবে। এখন তুই কি চাইছিস? তোর উপর কোন কিছুই আর জোর করে চাপানো হবে না। তুই যা বলবি তাই হবে।
_ আমি মুক্তি চাই এই সম্পর্ক থেকে।
নিচের দিকে দৃষ্টি স্থির রেখে কাঠ কাঠ গলায় বলে কথা গুলো।
_ ভেবে দেখ।
_ অনেক ভেবেছি আর ভাবতে চাইছি না।
_ এটাই তোর শেষ সিদ্ধান্ত?
_ হ্যাঁ।
আহনাফ মাহমুদ আলভীর দিকে তাকিয়ে বলেন,
_ এবার কি বলবে?
_ ওর সাথে আমি আলাদা করে কথা বলতে চাই।
মায়ার রাগী কাঠ কাঠ গলার স্বর।
_ আমি কারো সাথে কোন কথা বলতে চাই না।
আলভী মায়ার রাগী চেহারার দিকে তাকিয়ে থাকে। এত রাগ? মায়া এখনো নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।
একটা বার মুখ তুলে কারো দিকে তাকায়নি।
ঐশী রহমান মায়ার দিকে তাকিয়ে বলেন,
_ মায়া এমন কথা বলছ কেন? আলভী কে এ
_ প্লীজ আম্মু আমি আর কোন কথা শুনতে চাইছি না। এত বছরে মানুষের এত এত কথা শুনেছি যে এখন আর কারো কথা শুনতে ইচ্ছে করে না। এত গুলো বছর আমি সব কিছু মেনে নিয়েছি কিন্তু এখন আর মানতে পারব না। তোমার ছেলে যা করতে এত গুলো বছর পর বাড়ি ফিরেছে তা করতে বলো।
_ ওতো তোমার সাথে সংসার করতে চাইছে মায়া।
_ উনি সংসার করার জন্য দেশে আসেনি আম্মু।
_ কিন্তু এখন তো
_ এখন উনি চাইলেও আমি চাই না। আমি মুক্তি চাই এই সম্পর্ক থেকে আর এমন জীবন থেকে।
মেহবুবা মেহের বলেন,
_ মায়া বিয়ে টা তো ছেলে খেলা না। একটা বার তো
_ তোমরা সবাই তো আমাদের দুজনের সাথে ছেলে খেলাই খেলেছিলে আম্মু। যেই বয়সে আমি হাফ প্যান্ট পড়ে খালি গায়ে দৌড়ে বেড়াতাম সেই বয়সে তোমরা আমাকে এলোমেলো ভাবে শাড়ি পরিয়ে একজনের সাথে বিয়ে দিয়ে দিলে। তখন আমি বুঝতামই না হাসবেন্ড ওয়াইফ কাকে বলে? বিয়ে কি? বিয়ে হলো হাসবেন্ড ও হারিয়ে গেল। যেই ছেলেটার সাথে জোর করে বিয়ে দিলে সেই ছেলে টা কেও বোঝার চেষ্টা করোনি তোমরা কেউ। সবে মাত্র এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল। দাড়ি গোঁফ ওঠেনি তখনো। রাগে ক্ষোভে সেও বাড়ি ছেড়ে পরিবার ছেড়ে চলে গেল বহু দূরে। সে পরিবার হারিয়েছিল আর আমি আমার শৈশব কৈশোর। ফিরিয়ে দিতে পারবে পেরিয়ে যাওয়া প্রায় তেরো টি বছর? তোমরা ছেলে খেলা খেলোনি আমাদের দুজনের সাথে?
মায়ার এই প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারল না। মায়ার চোখে চোখ রাখতেও পারে না কেউ। কিন্তু আলভী মায়ার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে। মায়াও আলভীর মুখের দিকেই তাকিয়ে আছে।
আলভীর বিশ্বাস হচ্ছে না মায়া এত গুলো কথা বলল।
এই মেয়ে তো এখন কথা বলতে শিখে গেছে।
মায়া আলভীর দিকে তাকিয়ে থেকেই বলে,
_ তোমরা এত গুলো বছর যা যা বলেছ সব শুনেছি আমি। এখন আমি নিজের কথা শুনব। আমি চাই না ওনার সাথে সংসার করতে। উনি আমাকে তা লাক দেওয়ার জন্য এসেছে ভালো কথা। তা লাক দিয়ে দিক। এই সম্পর্ক থেকে মুক্ত হয়ে নিজের পছন্দের মেয়ে কে বিয়ে করে সুখে সংসার করুক। আমাকে নিয়ে কারো ভাবতে হবে না। আমি নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারি এখন।
আলভী বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। এগিয়ে গিয়ে মায়ার এক হাত নিজের হাতের মুঠোয় পুরে সিঁড়ির দিকে টেনে
নিয়ে যেতে যেতে বলে,
_ তোমার সাথে কথা আছে আমার , রুমে চলো।
মায়া শক্ত হয়ে দাঁড়ায়। ঝাড়ি দিয়ে আলভীর হাতের মুঠোয় থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়। আঙ্গুল তুলে শাসিয়ে বলে,
_ আপনি ছোঁবেন না আমায়। আপনার সাথে কোন কথা নেই আমার আর না আগে ছিল। নেক্সট টাইম আমাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করবেন না আপনি।
আলভী পুনরায় মায়ার হাত ধরতে গেলে মায়া হাত গুটিয়ে নেয়। আলভী কে পাশ কা টিয়ে দ্রুত পায়ে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে যায় সিঁড়ি বেয়ে। পেছন পেছন আলভী নিজেও দ্রুত এগিয়ে যায় আর ডাকতে থাকে। মায়া রুমে ঢুকেই আলভীর মুখের উপর ডোর লক করে দেয়। একটুর জন্য মায়া কে ধরতে পারল না রুমেও ঢুকতে পারে না। রেগে ডোরের উপর হাত মুঠো করে পাঞ্চ মা রে। জোড়ে শব্দ হয়। এত জোড়ে শব্দ শুনে কেঁপে ওঠে মায়া। ডোরে করাঘাত করে বেশ কয়েক বার উচ্চ স্বরে ডাকে মায়ার নাম ধরে। মায়া টু শব্দ অব্দি করে না। যেন রুমের ভেতর কেউ নেই।
মায়ার সাড়া শব্দ না পেয়ে বুঝতে পারে মায়া একটা কথাও বলবে না এখন , ভেতর থেকেও বের হবে না।
এখন না বেরুলেও পরে তো বের হবেই। কত দিন রুমের ভেতরে থাকবে? রেগে ফোস ফোস করতে করতে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে যায়।
রাগ হচ্ছে ভীষণ। আমান থাকলে এখন ওর উপর রাগ ঝাড়তে পারত।
ড্রইং রুমে সবাই নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে। মাহির সকলের দিকে একবার নজর বুলিয়ে বলে,
_ আমি প্রথমেই নিষেধ করেছিলাম। সেদিন আমার কথা শুনলে আজ এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।
মাহিদ বলে,
_ একবার এ রাজি তো সে রাজি না। আবার সে রাজি তো এ রাজি না। দুজন কে এক রুমে এক মাস বন্দী করে রাখো দেখবে সব ঠিক হয়ে গেছে।
_ তুই বেশি কথা বলিস। চুপ চাপ বসে থাক।
_ হ্যাঁ চুপ চাপ বসে থাকো আর এদের দুজনের কাহিনী অনন্ত কাল চলতেই থাকবে।
_ তুই যাবি এখান থেকে নাকি ?
_ যাচ্ছি, ভালো কথা বললেই দোষ।
সোফা ছেড়ে উঠে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে যায় মাহিদ।
নিজের পরিবার আর এই দুজন জামাই বউ এর উপর ভীষণ রাগ হচ্ছে। এদের চক্করে পড়ে ওর খাওয়া হলো না। ভার্সিটি যেতে হবে একটু পরেই। বাইরের খাবার খেতে পারে না, খেলেই বিভিন্ন রকম সমস্যা দেখা দেয়। বাড়ি থেকে না খেয়ে বেরুলে সারা দিন না খেয়েই থাকতে হবে। কি আর করার!
____________________
দুপুরে মায়া কে ডাকতে আসে মাহির। এর আগে ঐশী রহমান, মেহবুবা মেহের, সানজিদা এসে ডেকে গেছে অনেক বার। কথা বললেও রুম থেকে বের হয়নি মায়া।
_ বনু ডোর খোল।
মায়া সাড়া শব্দ করে না। মাহির নরম মায়াবী স্বরে বলে,
_ বনু ডোর খোল তোর সাথে কথা আছে আমার। কথা গুলো বলেই চলে যাবো।
মায়া ডোর খুলে দেয়। সামনে তাঁকিয়ে দেখে মাহির খাবারের প্লেট হাতে দাড়িয়ে আছে।
মাহির বোনের মুখের দিকে তাকায়। মায়া কে স্বাভাবিক লাগছে। ভেজা চুল গুলো কোমড় পর্যন্ত ছড়িয়ে রয়েছে। মাত্রই বোধহয় ওয়াশরুম থেকে বেরিয়েছে। মায়া পথ ছেড়ে দাঁড়ায়। মাহির ভেতরে প্রবেশ করে। মায়া ডোর লক করে বেডে এসে বসে।
মাহির ভাত মাখাতে মাখাতে বলে,
_ সবাই এত বার করে ডেকে গেছে বের হোসনি কেন ?
_ ইচ্ছে হয় নি তাই।
_ তাই বলে না খেয়ে থাকবি দুপুর পর্যন্ত?
_ কে বলল আমি না খেয়ে আছি?
_ কি খেয়েছিস?
_ কেক, বিস্কুট, বাদাম, চানাচুর আর চকলেট।
_ কোথায় পেলি?
_ আমার রুমে ছিল আগে থেকেই।
_ এত রাগ ভালো না।
_ কোথায় এত রাগ দেখলে?
_ আর একটা বার
_ ওই প্রসঙ্গে কথা বলতে চাইছি না ভাইয়া।
মাহির বোনের মুখে ভাত পুরে দিয়ে তাঁকিয়ে রইলো। মায়া ভাত চিবুতে চিবুতে বলে,
_ তুমি খেয়েছ?
_ খাব একটু পর।
_ বাড়ির সবাই?
_ খেতে বসেছে। আলভী নিজের রুমে ডোর লক করে বসে আছে। সকালেও খায়নি এখনো বের হচ্ছে না।
_ ওনার কথা তো জিজ্ঞেস করিনি তোমাকে আমি।
মাহির বোন কে বোঝানোর চেষ্টা করে কিন্তু উল্টো মায়া ওর ভাই কে জ্ঞান দিতে শুরু করে। মাহির কে কিছু বলতেই দেয় না। নিজেই এটা সেটা বলে যায়। মাহির বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো শুধু শুনেই যায়। মায়া এত কথা বলতে পারে আজকের আগে জানত না। বড় মানুষ দের মতন গুছিয়ে কথা বলছে। মায়া তো আজকের আগে কখনো এত কথা বলেনি। আর না বাড়ির কারো মুখের উপর কোন কথা বলেছে।
এই বোকা সোকা মেয়ে টার এতো বুদ্ধিমতী হলো কবে?
মায়া কে খাওয়ানো শেষ করে খালি প্লেট বাটি নিয়ে নিচে নেমে আসে। ততক্ষণে বাড়ির সকলের খাওয়া শেষ।
মাহির কে দেখে আহনাফ মাহমুদ বলেন,
_ কিছু বোঝাতে পেরেছ?
_ কি বোঝাবো? উল্টো আমাকেই এত এত জ্ঞান দিয়ে দিল। আমার চেয়ে ওর মাথায় বেশি বুদ্ধি। আমাকে কিছু বলতেই দেয়নি।
_ কিছুই বলতে পারেনি?
_ না।
_ আচ্ছা যাও খেয়ে নাও তোমার জন্য সানজিদা বসে আছে।
___________________
বিকেল চারটায় নিজের রুম থেকে বেরিয়ে আসে মায়া। সিঁড়ির কাছাকাছি আসতেই দেখে আলভী সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে আসছে। আলভী নিজেও দেখে মায়া কে। নেভি ব্লু কালারের একটা গাউন পড়ে আছে। হালকা সাঁজ সাথে নেভি ব্লু কালারের হিজাব। দেখতে মাশা আল্লাহ লাগছে। আলভী মায়ার সামনে এসে দাঁড়ায়।
মায়া পাশ কা টিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে। আলভী দুই হাত প্রসারিত করে মায়ার পথ রোধ করে দাঁড়ায়।
_ এত সেজে গুঁজে কোথায় যাচ্ছো?
মায়া মুচকি হেসে বলে,
_ বয়ফ্রেন্ডের সাথে ডেটে যাচ্ছি, যাবেন ভাইয়া?
আলভীর কপালে কয়েক টা ভাঁজ পড়ে। গম্ভীর স্বরে বলে,
_ আবোল তাবোল না বলে সত্যি কথা বলো কোথায় যাচ্ছো? আর ভাইয়া কাকে ডাকছ? লজ্জা করে না হাসবেন্ড কে ভাইয়া ডাকতে?
_ একদম সত্যি কথা। আপনিও চলুন আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো আপনার সাথে। শত হোক আপনার ছোট বোনের ভবিষ্যৎ হাসবেন্ড হবে বলে কথা। আর আপনি তো আমার ভাইয়াই। বড় ভাই হিসেবে আপনার অধিকার আছে ছোট বোনের
মাঝ পথে থামিয়ে দেয় মায়া কে। রাগে আলভীর ফর্সা মুখ লাল হয়ে উঠেছে। দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
_ মজা করা হচ্ছে আমার সাথে?
_ একদম না।
মায়ার ফোনে রিং বেজে ওঠে। ফোনের স্ক্রিনে তাঁকিয়ে আলভীর দিকে তাকায়।
_ ভাইয়া আসছি আমি, রাতে নাহয় আগামী কাল দেখা হবে। দেরি হয়ে যাচ্ছে বাই।
বলেই দুই হাতে গাউন উচু করে ধরে দৌড়ে নিচে নেমে যায়।
আলভী স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তখনো। নিজের হুশেই নেই যেন। রাগে ওর মাথা ফেটে যাচ্ছে।
যতক্ষণে হুশে ফেরে ততক্ষণে মায়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছে। আলভী দৌড়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে। না থেমে দৌড়েই বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসে। মায়া গেট পেরিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। আলভী মায়ার নাম ধরে ডেকে দৌড়ে এগিয়ে যায়।
ততক্ষণে মায়া একটি ছেলের বাইকের পেছনে উঠে বসেছে।
পেছন থেকে দেখে আলভী ভাবে ওটা মাহিদ তাই দৌড়ের গতি কমায়। কিন্তু ছেলেটি যখন ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকায় তখন দেখে ওটা অন্য একটা ছেলে।
মায়া ছেলেটির কাধের উপর হাত রাখে। অন্য হাতে গাউন ধরে রাখে।
আলভী কাছে এগিয়ে যেতে যেতেই ছেলেটি বাইক স্টার্ট দিয়ে ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যায়।
আলভী বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে রইলো দুজনের চলে যাওয়ার পথে। এই ছেলে সত্যি সত্যিই মায়ার বয়ফ্রেন্ড? মায়া ওকে রেখে অন্য ছেলের সাথে রিলেশনে জড়িয়েছে? সেই জন্যই কি ওর সাথে সংসার করতে চাইছে না?
রাগে আলভী দাঁত কিড়মিড় করে। ওর কি করতে ইচ্ছে করছে নিজেও বুঝতে পারছে না।
কই আলভী তো এত বছরেও কোন মেয়ের সাথে রিলেশনে জড়াতে পারলো না। মায়া কে যতই অপছন্দ করুক , ভালো না বাসুক তবুও তো মায়া ওর বউ। বউ রেখে ওতো অন্য কারো সাথে সম্পর্কে জড়াতে পারলো না। যখনই কোন মেয়ে কে পছন্দ হয়েছে তখনই ভেতর থেকে কেউ একজন চিৎকার করে বলেছে ” আলভী তুই বিবাহিত। তোর বউ আছে। তুই ওকে নিজের জীবনে রেখে অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারিস না, কারো সাথে সম্পর্কে জড়াতে পারিস না”। তাই তো এত হ্যান্ডসাম হয়েও এখনো আগের মতোই রয়ে গেছে।
মায়া কিভাবে পারলো অন্য ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়াতে? রাগে সাপের মতো ফোস ফোস করতে করতে বাড়ির ভেতরের দিকে এগিয়ে যায়।
আজকে শুধু বাড়িতে আয় তারপর তোর ব্যবস্থা করবে। ডেটে যাওয়া? ওর ছোট বোন? ওকে ভাইয়া ডাকা?
চলবে…………..