হৃদয় নিবাসে তুই পর্ব-২৯

0
552

#হৃদয়_নিবাসে_তুই
#পর্ব_২৯
লেখনীতেঃ ভূমি

অদ্রিজার ঘুম ভাঙ্গতেই চোখে পড়ল রক্তিমের নেশা ধরানো চাহনি।ফ্লোরে হাুঁটু ঘেড়ে বসে বিছানার উপর হাত জোড়া রেখে মুখটা অদ্রিজার মুখের সামনেই রাখল।অদ্রিজার ঘুমন্ত চোহারার দিকে ঘোর লাগানো চাহনি ফেলে বেশ কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকার মাঝেই ঘুম ভাঙ্গল অদ্রিজার। চোখ মেলে রক্তিমকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখেই বিব্রত হলো।বার কয়েক চোখ ঘুরিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে উঠে বসল এবার।কপালে সূক্ষ্ম ভাজ ফেলেই এলোমেলো চুলগুলো খোঁপা করতে ব্যস্ত হয়েই বলে উঠল সে,

‘ কি সমস্যা?এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন আপনি?’

রক্তিম ঠোঁট টেনে হাসল।হাতজোড়ার উপর মুখটা ভর দিয়ে রেখেই বলল,

‘ পরনারীর দিকে তাকিয়ে আছি নাকি?নিজের স্ত্রীর দিকে তাকানোর অধিকার নেই নাকি আমার অদ্রিজা?’

অদ্রিজা চাহনি কঠিন করল।কাঁটকাঁট চাহনি ফেলে রক্তিমকে দেখে নিয়েই শক্ত গলায় বলল,

‘ না নেই!আমি আপনার পরিচিত কেবল।স্ত্রী নয়।মনে নেই?’

রক্তিমের চাহনি এবার থমকাল।হাসি চকচক করা মুখটায় এবার কিঞ্চিৎ গাম্ভীর্য ফুটে উঠে।ঠোঁটে ঠোঁট চেপে কিছুটা সময় চুপ থেকেই কৃত্রিম হাসল।অদ্রিজার দিকে তাকিয়েই বলে উঠল,

‘ মনে থাকলেই বা কি?এখন আপনি আমার স্ত্রী। স্ত্রী তো পরিচিতই হয়।অপরিচিত কেউ হুট করে স্ত্রী হতে পারে?তাই কেবল পরিচিত বললেও সমস্যা নেই।আপনি আমার পরিচিত ও এবং স্ত্রীও।’

অদ্রিজা খাট থেকে নেমেই উঠে দাঁড়াল।ভ্রু জোড়া কুঁচকে নিয়েই বলে উঠল,

‘ কিসের স্ত্রী? কে স্ত্রী?আমি আপনার স্ত্রী নই।আপনার আমার বিয়েটা জাস্ট চুক্তি ছিল।আপনারও চুক্তি অনুযায়ী শর্ত পূরণ হয়েছে, আমারও।সেইম সেইম!কয়মাস পর ডিভোর্স পেপারে সাইন করলে সে চুক্তির বিয়ের ও কোন অস্তিত্ব থাকবে না।মনে রাখবেন।’

রক্তিম চোখ মুখ শক্ত করল।চোখমুখে টানটান কঠিন চাহনি নিয়ে অদ্রিজার দিকে তাকিয়েই উঠে দাঁড়াল।চোয়াল শক্ত করে অদ্রিজার দিকে কিছুটা ঝুকতেই অদ্রিজা কপাল কুঁচকাল।রক্তিম বাঁকা হাসল। হাতজোড়া অদ্রিজার দুইপাশে দেওয়ালে রেখেই অল্প দূরত্বে আবদ্ধ করল অদ্রিজাকে। ভ্রু নাচিয়ে বলল,

‘ কি মনে রাখব?আরেকবার বলুন।প্লিজ।’

অদ্রিজা কুঁচকানো ভ্রু নিয়ে সেভাবেই তাকিয়ে থাকল।আকস্মিকভাবে রক্তিম কাছে চলে আসায় অস্বস্তিতে তেঁতো হয়ে আসল চোখমুখ।রক্তিমের দুই হাতের মাঝে ঐটুকু জায়গায় হাঁসফাঁস করতে করতেই কন্ঠে ঝংকার তুলে বলল,

‘ কি হচ্ছে কি এসব?সরে দাঁড়ান।’

রক্তিমের ভাবলেশহীন জবাব,

‘ সরলাম না।এবার বলুন কি করবেন? ‘

অদ্রিজা বিরক্ত হলো।চরম রকম বিরক্তে থিতিয়ে উঠল মন প্রাণ।সাথে জম্মাল রাগ।দাঁতে দাঁত চেপেই বলে উঠল,

‘ আমার ভালো লাগছে না।সরে দাঁড়ান।’

রক্তিম ঠোঁট টিপে হাসল।অদ্রিজার কথাটাকে উপেক্ষা করেই চোখ টিপল।মাঝখানের কয়েক ইঞ্চির দূরত্বটাও মিটিয়ে নিতে লাগলে অদ্রিজা হাত জোড়া রক্তিমের বুকের উপর ভর করে রাখল।যাতে রক্তিম এগিয়ে আসতে না পারে।তা দেখেই হু হা করে হেসে উঠল রক্তিম।অদ্রিজার থেকে বেশ কিছুটা সরে গিয়েই হাসতে হাসতে বলে উঠল,

‘ প্রতিরক্ষার পন্থাটা দারুণ ছিল!কিন্তু রক্তিমের কাছে এই পন্থাটা কিছুই নয়।আপনি বৃথা চেষ্টা করছিলেন আর কি।’

‘ তো?’

‘ তো?তো আপনাকে এসব নরমাল প্রতিরক্ষার পন্থা অনুসরণ করলে চলবে না অদ্রিজা।রক্তিম থেকে নিজেকে বাঁচাতে হলে আরো কঠিন কঠিন পন্থা বেঁছে নিতে হবে।নয়তো সুদে আসলে সবটাই মিটাতে হবে আপনাকে। বলেছিলাম না মিসেস মাহমুদ?’

অদ্রিজা জ্বলে উঠল।মন মেজাজ সব বিগড়ে গেল কয়েক মুহুর্তেই।চোখজোড়ায় চরম বিতৃষ্ণা আর ক্ষোভ নিয়ে রক্তিমের দিকে এমনভাবে তাকাল যেন এক্ষুনি পারলে এক্ষুনি শেষ করে ফেলত এই লোকটাকে।কিন্তু তা বাস্তবে সম্ভব হলো না।শক্ত কন্ঠেই নজরটা আরো জ্বলন্ত করে তুলে বলে উঠল,

‘ এসব নাটকের কি মানে রক্তিম?আপনার এই মনে হচ্ছে আমি আপনার স্ত্রী আবার কিছুক্ষন পর মনে হবে আমি কেবলই পরিচিত।তাই না?যেখানে বিয়ের শুরুতেই ডিভোর্সের জন্য এপ্লাই করে নিয়েছেন সেখানে আবার মিসেস বলছেন কোন অধিকারে?কয়মাস পর আপনি আপনার জায়গায় আমি আমার জায়গায়।তাই বলছি, নতুন করে এসব ড্রামা করবেন না।একদমই না।ডিভো…’

অদ্রিজা বাকি কথাটা বলে উঠতে পারল না।তার আগেই রক্তিমের ঠোঁট জোড়া দখল করে নিল তার ঠোঁটজোড়া।মৃদু কম্পনে কেঁপে উঠল তার লতানো রূপময় শরীর।রক্তিমের হাতজোড়া নিজের কোমড়ে অনুভব করেই শিউরে উঠল লেমকূপ গুলো।নিঃশ্বাস অতিদ্রুত ঘন হয়ে এল।শিরা উপশিরায় বহমান রক্ত সর্বোচ্চ বেগে প্রবাহিত হলো। হাত পায়ের কম্পন নিয়েই বিস্মিত হলো সে।হাতজোড়া দিয়ে ইচ্ছে মতো রক্তিমের বুকে কিল, ঘুষি বসিয়েও নিজেকে ছাড়ানো গেল না।রক্তিম বাঁকা হাসল।মিনিট কয়েক পর অদ্রিজার ঠোঁটজোড়া ছেড়ে দিয়েই ঠোঁট কাঁমড়াল।অদ্রিজা হাঁফাল।জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়েই দ্রুত গলায় বলে উঠল,

‘ সাহস কি করে হয় আপনার এরকম করার?’

রক্তিম আবার ঠোঁট টেনে বাঁকা হাসল।হাতজোড়া দিয়ে অদ্রিজার কোমড় আরো শক্ত ভাবে চেপে ধরেই মুখের দিকে ঝুকল।কানের কাছে গম্ভীর শান্ত গলায় বলল,

‘ আর কখনো ডিভোর্স শব্দটা উচ্চারণ করলে এই পানিশমেন্টই পাবেন বারবার।এবার আপনিই ডিসাইড করুন, এই শাস্তিটা উত্তম নাকি বারবার আলাদা হয়ে যাবেন, ডিভোর্স হয়ে যাবে এসব বলে বলে ঘ্যানঘ্যান করা উত্তম?’

অদ্রিজা রাগ ফুসল।মুখ ফুলিয়ে কিছু না বলেই চুপ রইল।ফর্সা ধবধবে মুখ লাল হলো মুহুর্তেই।হাতজোড়া দিয়ে ঠোঁট মুঁছতে মুঁছতেই চোখে মুখে বিস্তর ক্রোধ নিয়ে রক্তিমের দিকেই তাকিয়ে রইল সে।রক্তিম হাসল।ভ্রু নাচিয়েই বলে উঠল,

‘ আমি অনেক হ্যান্ডসাম আমিও জানি।আপনার এভাবে চোখ দিয়ে গিলে নেওয়ার কোন মানে হয় না তাই অদ্রিজা।দৃষ্টি সরান।’

অদ্রিজা দৃষ্টি সরাল না।ঠিক সেভাবেই জ্বলন্ত আভা চোখে ফুটিয়ে তুলে তাকিয়ে রইল।যেন এক্ষুনিই ভস্ম করে ফেলবে। রক্তিম ছোট্ট শ্বাস ফেলেই ভ্রু নাচাল। অদ্রিজার কোমড় থেকে হাত সরিয়ে নিয়েই বুকের বাম পাশটায় হাত রাখল। ঠোঁট কামড়ে বলল,

‘ উহ!এভাবে তাকাবেন না।এখানে লাগে আমার।’

অদ্রিজা চাহনি আরো ক্ষ্রিপ্ত করল।চোখমুখ টানটান করেই স্পষ্ট গলায় বলে উঠল,

‘ সমস্যা কি আপনার? আমার সত্যিই আপনাকে চরম রকম বিরক্ত লাগছে রক্তিম।অসহ্য লাগছে আপনাকে।আমি এতদিন স্বাধীন ছিলাম।আমার জীবনটা আমার মতোই অনুভব করেছি।আপনি এভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারেন না।আমার ইচ্ছে, অনিচ্ছা না জেনেই আমাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করবেন না।আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাইছি না জেনেও বারবার এমন বিহেভ করছেন যেন আমি আপনাকে ভালোবাসি।আপনি কি ভাবেন,আপনার সেসব কথায় আমি লজ্জ্বায় লাল হয়ে বসে থাকব?মুখ নামিয়ে ঘনঘন নিঃশ্বাস ফেলব?একদম ভুল।আমি আপনাকে এখন আর ভালোবাসি না।ওটা কয়েকদিনের ভালোলাগা ছিল মাত্র।এর বাইরে কিছুই নয়।আর ঐ যে বলেছিলেন না সাহানুভূতি?সহানুভূতিই ছিল।সো আপনি কোন কথা বা কাজ দ্বারা আমায় বিব্রত করবেন না প্লিজ।আপনার সেসব কথায় বা কাজে কিছু যায় আসে না আমার।’

রক্তিমের চাহনি গম্ভীর হলো এবার।চুপচাপ সবগুলো কথা শুনেই মাথা দুলাল।গম্ভীর রাশভারী কন্ঠে বলল,

‘ সমস্যা নেই।কিছু যায় আসার পন্থা আমি খুঁজে নিব অদ্রিজা।আপনি অপেক্ষায় থাকুন।’

কথাটা বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেল রক্তিম।অদ্রিজা ঠাঁই দাঁড়িয়ে রইল।রক্তিমের কথার ভাবার্থ বুঝতে না পেরেই চোখমুখে হতাশা নামল।এই লোকটা আসলে কি চায়?কি করতে চায়?কখনো গম্ভীর তো কখনো আবার চরম রকম বিরক্তিকর!কেমন জানি!

.

অত্রিয়ার কাঁধে ব্যাগ।চুলগুলো দুই ঝুটি করা।ছোট্ট বাচ্চা বাচ্চা চেহারাটা বড্ড মায়াময়।চিকন পাতলা ঠোঁটজোড়ায় হাসির রেশ।সকাল আটটায় প্রাইভেটের উদ্দেশ্যে বের হয়েই ছোট ছোট পায়ে হেঁটে যাচ্ছিল সে।হঠাৎ ঐ পেঁছন থেকে কেউ বলে উঠল,

‘ এই পুচকি?’

অত্রিয়া পা থামাল।মায়ময় চোখজোড়া দিয়ে চারদিক পর্যবেক্ষন করে ভ্রু কুঁচকাল।কন্ঠটা কার সেটা স্পষ্ট তার কাছে।ঘাড় ঘুরিয়ে পেঁছন ফিরেই লোকটাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিল সে।মৃদু গলায় বলল,

‘ আপনি?’

লোকটা এগিয়ে আসল।লম্বা চওড়া শরীরটা অত্রিয়ার কাছাকাছি এসে উপস্থাপন করতেই গম্ভীর হলো তার চোখমুখ।
কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকেই কি বলবে না বলবে হাঁসফাঁস করল।অত্রিয়া তা দেখেই ভ্রু কুঁচকাল।বিরক্তি নিয়ে বলল,

‘ কি হলো? কিছু বলছেন না যে রায়মান ভাইয়া?আপনি এখানে এই সকালবেলায় হঠাৎ কি উপলক্ষ্যে?’

রায়মান ছোট ছোট চোখ করে তাকাল।ঠোঁট টেনে হাসার চেষ্টা করেই বলল,

‘ তোমার জন্য।’

অত্রিয়া ভ্রু কুঁচকাল।চোখের দৃষ্টি সরু করেই জিজ্ঞেস করল,

‘ আমার জন্য?আমার জন্য কেন?’

‘ তোমার বয়স কত?’

রায়মানের আকস্মিক এই প্রশ্নে বিস্মিত হলো অত্রিয়া।চোখেমুখে তীব্র বিস্ময় নিয়ে কোমড়ে হাত রেখে রায়মানের দিকে তাকিয়ে থাকল। রায়মান বুঝতে পারল সাংঘাতিক ভুল করে ফেলেছে সে। মিনিট কয়েক চুপ থেকেই উঁশখুশ করে বলে উঠল,

‘ আই মিন, তোমার বয়স আঠারো হয়নি এখনো?স্যরি!ভুলে ঐ প্রশ্নটা বেরিয়ে গেছে মুখ থেকে।’

অত্রিয়া হতাশ হলো।এই লোকটা তাকে এতটা ভয় পায়? ঠোঁট চেপে রেখে মৃদু হাসল সে।টানটান কন্ঠে অন্যদিকে ফিরেই বলে উঠল,

‘ আঠারো হতে আরো দুই মাস বাকি। কেন?’

রায়মান আবারও অপ্রস্তুত হলো।মাথার চুলগুলো চুলকেই অপ্রস্তুত হেসে বলল,

‘ না মানে এমনিই।বাসা থেকে বিয়ে ঠিক করেছে তো তাই।’

অত্রিয়া চমকাল।ভ্রু জোড়া আরো কিছুটা সংকুচিত করেই পরক্ষনেই বলল,

‘ তো?’

‘ তো?কিছু না।বিয়েটা করে নিচ্ছি এই আরকি।তোমাকে বলতে এসেছিলাম।তুমি বড্ড ছোট আমার থেকে।নয়তো,’

‘ নয়তো?’

রায়মান মৃদু হাসল। বলল,

‘ কিছু না।বিয়ের বয়সটা হওয়া দরকার ছিল তোমার।এত পিচ্চি! ‘

অত্রিয়া কাঁটকাঁট চাহনিতে তাকাল।স্পষ্ট গলায় বলল,

‘ দুই মাস পর হবে আরকি।আপনার মতো আমার অতো বিয়ে নিয়ে তাড়া নেই ভাইয়া।আপনি বরং বিয়েসাদি করে নিন দ্রুত। আমাদের দাওয়াত দিবেন। ঠিকাছে? ‘

রায়মান ঠোঁট উল্টে হাসার চেষ্টা করেই বলল,

‘ আমার বিয়ে হলে খুশি তুমি?যার দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতা তারই বিয়ে হয়ে যাবে আর তুমি বসে থাকবে?আমার বউ কিন্তু আমার দিকে অন্য কোন মেয়ের নজর পড়তে দিবে না।আগের মতো সেভাবে তাকাতেও পারবে না।’

‘ তো?’

‘ আপসোস হবে না আমাকে ড্যাবড্যাব করে না দেখতে পেরে?’

অত্রিয়া মৃদু হাসল। বলল,

‘ কেন হবে?দিনে কত ছেলের দিকেই ওভাবে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকি তার হিসেব নেই। আপনি একজন তার মধ্যে না থাকলে এই আর এমন কি।নতুন আরো কতশত ক্রাশ হাজির হবে । আপনি বরং আপনার বউকে নিয়ে সুখে সংসার করুন ভাইয়া। শুভকামনা রইল।আসি তবে?প্রাইভেটে লেট হয়ে যাবে।’

রায়মান পথ আগলে দাঁড়াল।দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

‘ তুমি অন্য কোন ছেলের দিকেও এভাবে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকো অত্রি?’

অত্রিয়া ঠোঁট টিপে হাসল।

‘ হ্যাঁ!কতশত ছেলের দিকেই তো তাকিয়ে থাকি।কেন?আপনি কোন মেয়ের দিকে তাকান না? এতটা লয়্যাল?ওয়াও!’

রায়মান গম্ভীর কন্ঠে বলল,

‘ তাকাই।একজনের দিকেই।’

অত্রিয়া খিলখিলিয়ে হাসল।ঠোঁট চেপে বলল,

‘ আপনার হবু স্ত্রী রাইট?অনেক ভালো একটা হাজব্যান্ড পাবে সে।সত্যিই দুনিয়াতে এমন ছেলেও থাকে?আমি শকড!আপনাদের এই বিয়েতে সত্যিই খুব খুশি খুশি ফিল হচ্ছে ভাইয়া।এতটা ভালোবাসা দুনিয়ায় থাকে?’

রায়মান নিরাশ হলো।নিজের থেকেও সাত বছরের ছোট পিচ্চি এই মেয়েটির কথাবার্তা, চালচলন সবটাতেই হতাশ হলো সে।সকাল সকাল সেই হতাশায় মুখ কালো করল সে।গম্ভীর গলায় বলল,

‘ বিয়েটা করব না আমি।’

‘ ওমাহ!কেন?জোর করে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে নাকি আপনাকে?’

রায়মান মাথা দুলাল।যার অর্থ হ্যাঁ।অত্রিয়া আকাশসমান অবাক হয়েই চোখজোড়া বড়বড় করল।তীব্র বিস্ময় নিয়ে বলে উঠল,

‘ ওমাহ!সে কি!এটাতো খুবই ডেঞ্জারাস কেইস!এতদিন শুনেছি মেয়েদের জোর করে বিয়ে দিয়ে দেয়।এখন দেখছি ছেলেদেরও বিয়ে দিয়ে দেয়।ইউনিক! ‘

রায়মান আরও একধাপ হতাশ হলো।এই পিচ্চি মেয়েটার প্রেমে পড়াই চরম রকমের ভুল হয়েছে। ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকা সেই চাহনির মজা নিতে গিয়েই কবে যে এই মেয়েটাকেই ভালোবেসে ফেলল কে জানে!এমন পিচ্চি মেয়েকে ভালোবেসে ফেলা একদমই উচিত হয়নি তার।চরম মাফের ভুল। এই মেয়েকে যে সে ভালোবাসে এটা বুঝাতেই তো তার বছর পেরিয়ে যাবে।আশ্চর্য!

#চলবে…..