রহস্যে ঘেরা ভালবাসা পর্ব-১২

0
776

#রহস্যে_ঘেরা_ভালবাসা
#পর্ব_১২
#M_Sonali

মাথায় তীব্র ব্যথা নিয়ে চোখ মেলে তাকালাম। চারিপাশে আম্মু হায়া সায়েম ভাই শায়লা আন্টি সবাইকে দেখতে পেলাম। সবাই বেশ আতঙ্কিত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি এখনো বুঝতে পারছি না কি হচ্ছে এসব। চোখ দুটো আবারো বন্ধ করে ফেললাম। তারপর মনে করার চেষ্টা করলাম আমার সাথে কি হয়েছে। বেশ কিছুক্ষণের মাঝেই সবকিছু একে একে মনে পড়ে গেলো। সাথে সাথে যেন ভয়ে সারা শরীর শিউরে উঠল আমার। দ্রুত চোখ মেলে তাকিয়ে জোরে একটা চিৎকার দিয়ে উঠলাম “বাঁচাও” বলে। আমার চিৎকারে সবার আতঙ্ক যেন আরো প্রবলভাবে বেড়ে গেল। আম্মু আমার পাশে দৌড়ে এসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগলো,

–” আব্রু মামণি কী হয়েছে তোমার? তুমি এভাবে চিৎকার করছো কেন? আর ওয়াশরুমে অজ্ঞান হয়েছিলে কিভাবে?”

কথাগুলো বলে আম্মু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আমাকে শান্ত করার চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু আমি যেন কোনোভাবেই শান্ত হতে পারছি না। সারা শরীর থরথর করে কাঁপছে। আমার এমন অবস্থা দেখে সবাই এগিয়ে আসলো। সবাই বেশ বিব্রত বোধ করছে আমাকে দেখে। এর আগে আমি কখনও এমন করিনি কারও সাথে। কিন্তু আজকে যেন কোনভাবেই নিজেকে সামলাতে পারছিনা। ওয়াশরুমে ঘটে যাওয়া প্রত্যেকটা জিনিস যেনো আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছে। আর সেইসাথে শরীর শিউরে উঠছে ভয়ে। যেনো মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরেছি আমি।

আমাকে এমন করতে দেখে চারিপাশ থেকে সবাই একের পর এক প্রশ্ন করতে লাগলো। কিন্তু আমি কারো কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছি না। শুধু থরথর করে কেপে চলেছি। তখনি আব্বু ডাক্তার নিয়ে এসে হাজির হলেন। এদিকে আমার পাগলামো আরও বেড়ে যেতে লাগল। চারিপাশ থেকে সবার এত প্রশ্ন শুনে যেন মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে আমার। এমনিতেও অসম্ভব ব্যথা করছে মাথায়। তাই আর সহ্য করতে পারছি না। এবার জোরে জোরে চিৎকার করতে লাগলাম। কি বলছি না বলছি নিজেও জানিনা। আমার এমন অবস্থা দেখে ডাক্তার আর দেরি না করে দ্রুত তার ব্যাগ থেকে একটা ইঞ্জেকশন বের করে সেটা আমার শরীরের জোরজবরদস্তিতে পুশ করল। কিছুক্ষণের মাঝে আমার শরীর ধীরে ধীরে অবশ হয়ে আসতে লাগল। চোখ দুটো বুজে এলো। ধিরেধিরে ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমালান আমি।

——————–

আব্রুর পাশে বসে থেকে অঝোর ধারায় কান্না করে চলেছে আব্রুর মা এবং হায়া। কোনভাবেই যেন নিজেদের শান্ত রাখতে পারছে না তারা। এর আগে কখনোই আব্রুকে এমন করতে দেখেনি। তাহলে আজ হঠাৎ তার সাথে কি হয়ে গেল কোনোভাবেই যেন মাথায় আসছে না কারো। এদিকে হায়ার বার বার মনে হচ্ছে আব্রুর সাথে খারাপ একটা কিছু হয়েছে। তাই সে এমন করছে। কেননা ওর এমন অবস্থা হওয়ার আগে শেষবারের মতো সে’ই কথা বলেছিল আব্রুর সাথে। ডাক্তার বেশ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে ওকে বেশ ভালোভাবে চেকআপ করলেন। তারপর সবাইকে উদ্দেশ্য করে বললেন,

–” মনে হচ্ছে প্রেসেন্ট কিছু দেখে ভয় ভীষন পেয়েছে। কিন্তু ওর ঠিক কি হয়েছিল আপনারা কি বলতে পারবেন?”

কি উনার কথার উত্তরে হায়া এগিয়ে এসে বলল,

–” আমরা জানি না ডাক্তার। আসলে আমি ওর সাথে বেশ কিছুক্ষণ এখানে দাড়িয়ে গল্প করছিলাম। তারপরে আমি বেরিয়ে যাই আর ও গোসলের জন্য যায়। কিছুক্ষণ পর আমি আবারও ওর রুমে ফিরে আসি একটি প্রয়োজনীয় কথা বলার জন্য। আর তখনি ওয়াশরুম থেকে গোঙরানির শব্দ শুনতে পাই। ওয়াশরুমের কাছে এগিয়ে যেতেই দেখি আব্রু অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। ওকে এ অবস্থায় দেখে আমি চেঁচামেচি করলে আব্বু আম্মু আসেন। তারপর সবাই মিলে ওকে তুলে বিছানায় নিয়ে আসি। তারপর থেকেই ওর এই অবস্থা। কিছুই বুঝতে পারছি না কি হয়েছিল? কি দেখেই বা ভয় পেয়ে অজ্ঞান হয়েছে?”

হায়ার কথাগুলো ডাক্তার বেশ মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। তারপর একটা প্রেসক্রিপশনে বেশ কিছু ঔষধের নাম লিখে সেটা হায়ার আব্বুর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন,

–” আপনারা টেনশন করবেন না। আমি ওনাকে শান্ত করার জন্য একটা স্বল্পমাত্রার ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছি। কিছুক্ষণের মাঝেই ওনার জ্ঞান ফিরবে। আর এখানে কিছু ঔষধ লিখে দিয়ে গেলাম। এগুলো নিয়ম করে খাওয়ান। ইনশাআল্লাহ উনি ঠিক হয়ে যাবে। আর ওনাকে কয়েকদিন একটু রেস্টে রাখুন। ভয় পাওয়ার কারণে শরীর দুর্বল হয়ে পড়েছে।”

আরো কিছুক্ষণ ওর ব্যাপারে আলোচনা করে ডাক্তার চলে গেলেন। আর ডাক্তার কে এগিয়ে দেওয়ার জন্য আব্রুর আব্বুও ওনার সাথে গেলেন। সেইসাথে রুমের সকলের মধ্যে একটা চাপা গুঞ্জন শুরু হলো। সবার মাথার মধ্যে একটাই প্রশ্ন আব্রু ওয়াশরুমে কি এমন দেখে নিল, যে এতটা ভয় পেয়ে গেল? যে তাকে ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়ানো হলো। কোনভাবেই যেন কেউ কোন কিছু খুঁজে পাচ্ছেনা। হায়া কি মনে করে আব্রুর পাশ থেকে উঠে ওর রুমের ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো। তার কেন যেনো মনে হচ্ছে যে ওয়াশ রুমেই কিছু একটা আছে। যার কারণে এতটা ভয় পেয়েছে আব্রু। ভয়ে ভয়ে ওয়াশরুমের ভেতর প্রবেশ করল হায়া। আশে পাশে চোখ বুলিয়ে সুক্ষ্ম ভাবে দেখে নিলো। কিন্তু না কোথাও কিছু নেই। এমনকি কোথাও কোনো টিকটিকি বা তেলাপোকা ও দেখা যাচ্ছে না। সব কিছুই একদম স্বাভাবিক।

পুরো ওয়াশরুম খুঁজেও যখন কোন কিছু না পেল, তখন একটা ছোট করে নিশ্বাস নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসার জন্য পা বাড়ানো হায়া। তখনই ওর মনে হলো আয়নাতে কেউ একজন ওর দিকে তাকিয়ে আছে। সাথে সাথে সে দিকে ফিরে তাকাল সে। কিন্তু দেখল আয়নাতে কেউ নেই। সেখানে ওর নিজেরই প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে। সে নিরাশ হয়ে আবারও একটা ছোট করে নিশ্বাস নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বাইরে বেরিয়ে এলো। মনে মনে ভাবল, আব্রুর এমন অবস্থা দেখে নিজের মাঝেও উল্টাপাল্টা চিন্তা ভাবনা আসছে তার। সে জন্যেই আয়নার মধ্যে নিজেকে দেখে নিজেই ভয় পেয়ে গেছে।

ওদিকে, শায়লা বেগম সোফার উপর বসে থেকে আব্রুর দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে। আর দাঁত দিয়ে নিজের নখ কেটে চলেছে। উনাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক বেশি টেনশনে আছেন তিনি। হয়তো মনে মনে এক রাজ্য চিন্তা করছেন। উনাকে এভাবে টেনশন করতে দেখে হায়া এগিয়ে এসে ওনার পাশে বসে বলল,

–” কি হয়েছে আম্মু? আপনি এভাবে বসে আছেন কেন? আপনাকে তো এর আগে কখনো দাঁত দিয়ে নিচের নখ খেতে দেখিনি?”

হায়ার প্রশ্নে যেন ভীষণ অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন শায়লা বেগম। তিনি নিজের হাতটা ঠিক করে স্বাভাবিক হয়ে বসে শান্ত গলায় বললেন,

–” তেমন কিছু না। আসলে আব্রুর এমন অবস্থা দেখে ভালো লাগছে না। মেয়েটা হঠাৎ করে কিভাবে এমন হলো কিছুই বুঝতে পারছি না। এদিকে মীরকে দেখো, এখনো আসার নামই নেই। সেই কখন ফোন করে বলা হয়েছে আব্রুর ব্যাপারে। কিন্তু এখনও আসছে না সে। তাই একটু টেনশন হচ্ছিলো।”

–” টেনশন করবেন না আম্মু। মীর ভাইয়া চলে আসবেন। হয়তো কোন কাজে আটকে গেছেন।”

কথাগুলো বলে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো হায়া। তারপর মনে মনে কিছু একটা ভেবে শায়লা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলল,

–“আম্মু কিছু যদি মনে না করেন, আপনাকে একটা প্রশ্ন করতে পারি?”

হায়ার এমন কথা শুনে হায়ার দিকে গম্ভির দৃষ্টিতে তাকালেন শায়লা বেগম। তারপর কিছু একটা ভেবে সোজা হয়ে বসে বেশ গম্ভীর গলায় বললেন,

–” বল কি জানতে চাও?”

–” ইয়ে মানে আম্মু, বুঝতে পারছি না কথাটা আপনাকে কিভাবে জিজ্ঞেস করবো! কিন্তু এই কথাটা আমাকে জানতেই হবে। কারণ আব্রু আমার ছোট বোন। তাই এতোটুকু জানার অধিকার আমি রাখি।” এতটুকু বলে একটু থেমে আবারও বলতে লাগলো, “মীর ভাইয়ার কি বিয়ের আগে অন্য কারো সাথে সম্পর্ক ছিল? বা এখনও আছে?”

হায়ার এমন প্রশ্নের জন্য যেন মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না শায়লা বেগম। সে ভীষণ অস্বস্তি বোধ করতে লাগলেন।তাকে দেখে বোঝাই যাচ্ছে সে এমন প্রশ্ন শোনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না। ভীষণ উসখুস করতে লাগলেন তিনি। উনাকে এমন করতে দেখে হায়ার এবার মাথার ভেতর প্রশ্নটার উত্তর জানতে চাওয়ার ইচ্ছা প্রবলভাবে জেগে উঠলো। সে আবারও প্রশ্ন করে বললো,

–” কি হলো আম্মু আপনি উত্তর দিচ্ছেন না কেন? সত্যি করে বলুন মীর ভাইয়ার কি বিয়ের আগে কারো সাথে সম্পর্ক ছিল? যদি সত্যিই কারো সাথে সম্পর্ক থেকে থাকে তাহলে সে আমার বোনকে বিয়ে করে এভাবে তার জীবনটা নষ্ট করল কেন? আজ আমার বোনের এমন অবস্থার জন্য নিশ্চয়ই মীর ভাইয়া দাই। আর এটা যদি সত্যি হয়ে থাকে তাহলে মীর ভাইয়া সম্পর্কে আমার দেবর হলেও আমি কিন্তু তাকে ছেড়ে কথা বলবো না। কারণ আমার বোন আমার জন্য অনেক মূল্যবান। তার জীবন আমি এইভাবে নষ্ট হতে দেখতে পারবোনা। প্লিজ আম্মু আপনি সত্যিটা বলুন।”

হায়ার প্রশ্নে এবার শায়লা বেগম এর মুখটা মেঘে ঢেকে গেলো। সে গম্ভীর মুখে ঝাঁঝালো গলায় বলল,

–“তুমি কি পাগল হয়ে গেছো হায়া? কি সব বলছো এসব আবোল-তাবোল! আমার মীরকে দেখে কি এমন মনে হয় যে সে কোনো অবৈধ সম্পর্কে জড়াবে? মীর যদি কাউকে ভালোবেসে থাকে তাহলে সেটা তোমার বোন আব্রু। জানিনা আব্রুর কি হয়েছে। তাই বলে তুমি এভাবে আমার ছেলের ওপর দোষ চাপাতে পারো না। ভুলে যেও না তুমি কিন্তু ওই বাড়ির’ই বউ। আমার বড় ছেলের বউ। তাই আমার সাথে আমার ছোট ছেলের সম্পর্কে কথা বলতে নিজেকে সংযত রেখে কথা বল।”

শাশুড়ির এমন কথায় কি উত্তর দেবে কোনো কিছুই যেন মাথায় আসছেনা হায়ার। শত হলেও সে ওই বাড়ির নতুন বৌ। তাই সবকিছু সঠিক ভাবে না জেনে এভাবে শাশুড়ির কাছে বলা টা উচিত হয়নি তার। তাই মাথা নিচু করে শান্ত গলায় সে বললো,

–” দুঃখিত আম্মু আমাকে ক্ষমা করবেন না। আসলে আব্রুর এমন অবস্থা দেখে আমি ভুল করে ফেলেছি কথাটি বলে।”

কথাটা বলে শাশুড়ির পাশ থেকে উঠে গিয়ে আব্রুর পাশে গিয়ে বসলো হায়া।

————————

মাথায় হাত বুলানো এবং মিষ্টি কন্ঠে আম্মুর মুখে আমার নাম শুনে ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকালাম আমি। তাকাতেই আম্মুর মুখটা ভেসে উঠলো আমার চোখের সামনে। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে সবকিছু বোঝার চেষ্টা করলাম। ধীরে ধীরে সব মনে পড়ে যেতেই যেন ভয়ে আবারো থরথর করে কাপতে লাগলাম আমি। শিউরে উঠতে লাগলাম বার বার। আমাকে কাপতে দেখে আম্মু দ্রুত আমার মাথাটা নিজের কোলে তুলে নিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে নিলেন। মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগলেন,

— “আব্রু মামনি এই দেখো আমি তোমার আম্মু। এভাবে কাপছো কেনো তুমি মা? কি হয়েছে বল আমায়? কোথায় কষ্ট হচ্ছে তোমার? এই দেখো আমি তোমার জন্য তোমার প্রিয় চিকেন সুপ বানিয়েছি। এটা খেয়ে একটু ঔষুধ খেয়ে নাও, সব ঠিক হয়ে যাবে।”

আম্মুর কথা যেনো কিছুই আমার কান পর্যন্ত পৌছালো না। আমি কাপাকাপা গলায় বললাম,

–” আম্মু মী মী মীর মীর আমাকে মে,,,!”

এতটুকু বলতেই কোথা থেকে যেনো মীর এসে তাৎক্ষণাত হাজির হলো। তারপর আম্মুর দিকে তাকিয়ে বললো,

–“আম্মু আপনি এগুলো রেখে যান। আমি ওকে খাইয়ে ঔষুধ খাইয়ে দিবো।আপনি চিন্তা করবেন না।”

কথাগুলো আম্মুর দিকে তাকিয়ে বলেই আমার দিকে ফিরে তাকালেন তিনি। তারপর একটা রহস্যময় হাসি দিলেন। ওনার এমন হাসি দেখেই যেনো আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে যেতে লাগলো। ভয়ে কথা বলার শক্তিটুকুও হাড়িয়ে ফেললাম আমি। ওনাকে দেখলে এতদিন যতটা না ভাললাগা ভালবাসা কাজ করতো মনে! আজ যেনো তার চাইতে কয়েকগুন বেশি ভয় করছে।

আম্মু ওনার কথায় মুচকি হেসে ওনাকে বাবা ডেকে মাথায় হাত বুলিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলেন। আমি যে আম্মুকে আটকাবো সে শক্তিটুকুও যেনো নেই আমার। অদৃশ্য কোনো শক্তি যেনো আমায় ঘিরে রেখেছে। আম্মু চলে যেতেই উনি দরজা লাগিয়ে দিয়ে আমার পাশে এসে বসলেন। ওনার দিকে তাকাতেই প্রান পাখিটা উড়ে যাওয়ার অবস্থা হলো আমার। আগের মীরের সাথে যেনো এই মীরের কোনো মিল খুঁজে পাচ্ছি না আমি। আগের মীর সব সময় গম্ভির মুখে থাকতেন। কিন্তু এনার মুখে রহস্য ঘেরা হাসি। আগের মীর গম্ভির মুখে থাকলেও তাকে দেখে ভয় নয় বরং ভালবাসা কাজ করতো মনে। কিন্তু এনাকে দেখে ভয় ছাড়া কিছু আসছে না মনে। আমাকে ভয় পেতে দেখে উনি বাকা হেসে বললেন,

–” কি হলো আব্রু! নিজের স্বামীকে দেখে এভাবে ভয় পাচ্ছো কেনো তুমি? এই যে দেখো আমি তোমাকে নিজের হাতে সুপ খাওয়াবো। হা করো জানু।”

কথাগুলো বলেই সুপের বাটিটা হাতে তুলে নিয়ে এক চামচ সুপ আমার মুখের কাছে ধরলেন উনি। আমি সেটা না খেয়ে বরং পিছন দিকে পেছাতে থাকলাম। এই মুহুর্তে ওনার হাতে খাওয়া তো দূর ওনাকে সহ্যই করতে পারছি না আমি। আমাকে পেছাতে দেখে সুপের বাটিটা টেবিলে রেখে শান্ত গলায় বললেন,

–” কি হলো সোনা বউ। এত আদর করে খাওয়াতে চাইলাম খাবে না আমার হাতে? এভাবে আমার থেকে পালাচ্ছো কেনো। আমি না তোমার স্বামী!”

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,