তুমিই আমার প্রিয় নেশা পর্ব-৩১

0
717

#তুমিই_আমার_প্রিয়_নেশা
#পর্ব:31
#Suraiya_Aayat

রাত 9.30টা,,,,,,
বাসার বাইরে দাঁড়িয়ে স্মোক করছে আয়াশ, আকাশে বিষাক্ত ধোঁয়া ছাড়ছে ৷বাসার দারোয়ানকে আজ বিকালেই ছুটি দিয়ে দিয়েছে আয়াশ কারন জিজ্ঞাসা করলে বলেছে যে এমনিই একদিন ইচ্ছা হলো তাই তাড়াতাড়ি ছুটি দিয়ে দিয়েছে ৷ সিগারেটটা শেষ হতে নিলেই আয়াশ পকেট থেকে ফোনটা বার করে কল করলো
” খালামনি ওনার খাওয়া শেষ?”

” হ্যাঁ আয়াশ বাবা ,ওনার খাওয়া শেষ ৷”
উনি আবার একটা শুকনো ঢোক গিলে বললেন
” ওনাকে কি আর একটা সুযোগ দেওয়া যাই না ? নাহ মানে এতবছর ধরে ওনার দেখাশোনা করতে করতে মানুষটার ওপর একপ্রকার মায়া পড়ে গেছে আরকি !”

আয়াশ একটা তাচ্ছিল্যর হাসি হাসলো,চোখে জল টলমল করছে ৷ আয়াশের মুচকি হাসির আওয়াজ ফোনের ওপাশে আয়াশের খালামনি মানে ইফার মায়ের কাছে পৌছালো না ৷ উনার কন্ঠ রিতীমতো কাঁপছে , অদ্ভুত এক চাপা কষ্ট অনুভব করছেন মনের মাঝে ৷ আয়াশ আকাশের দিকে তাকিয়ে তারপর ফোনে বলে উঠলো
” তুমি চলে এসো, আমি যাচ্ছি ৷”

কথাটা বলে আয়াশ ফোনটা কেটে দিলো ৷ দরজার এপাশ থেকে আয়াশের খালামনি চাপা স্বরে কথাগুলো বলছিলেন নূরের মায়ের আড়ালে ৷ আয়াশ গাড়ি ড্রাইভ করে বেরিয়ে এলো, ব্যালকনি থেকে সমস্তটা নূরের চোখে পড়েছে , আয়াশের মতিগতি বোঝার সাধ্য নূরের নেই ৷নূর চঞ্চল আর বিষন্ন মন নিয়ে রূমে চলে এলো ৷ রুমে এসে ফোনটা হাতে নিলো, ভাবলো ওর বাবার কাছে ফোন করবে ৷ ফোন করতে গিয়ে দেখলো ট্রলিটা দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে রাখা, মনে পড়ে গেল কালকে ওরা নাটোর যাবে, ভোর ভোর বার হতে হবে ৷ ভাবনা চিন্তা গুলো আপাদত দূরে সরিয়ে ফোন ধরালো নূর ৷ বেশি কিছুখন রিঙ হওয়ার পর নূরের বাবা ফোনটা ধরলেন তারপর উনি চুপ হয়ে রইলেন ৷ নূর বিষন্ন কন্ঠে বলল
” কেমন আছো বাবা ?”

উনি চুপ করে রইলেন কথা বললেন না কোন হয়তো বলার ইচ্ছা শক্তিটা মৃতপ্রায় ৷ ওনাকে চুপ থাকতে দেখে নূর আবার বললো
” বাবা !”

উনি এখনো চুপ , নূর ভাবলো হয়তো ওনার মন খারাপ বা কোন সমস্যা হয়েছে বা নূরের ওপর রগে আছে ৷ নূরের চোখে জল ভার করে এলো, বেশ ভাঙা কন্ঠে বলল
” বাবা তুমি আমার ওপর রেগে আছো ?ও বাবা !”

নূরের এই কথাটা শোনার পর থেকে উনি বলে উঠলেন
” আমাকে ক্ষমা করে দিস মা আমি তোদের সবাইকে মিথ্যা বলেছি ৷”

কথাটা বলে উনি যেন ফুঁপিয়ে কেঁদে ফেললেন ৷ ওনার কান্নার আওয়াজ শুনে নূর বেশ ভেঙে পড়লো তারপর নূর ও কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল
” তুমি একথা বলছো কেন বাবা ? কি হয়েছে আমাকে বলো ৷”

উনি ফোনর মধ্যে থেকেই বেশ শব্দ করে হাওহাউ করে কেঁদে উঠলেন , নূরের চোখ দিয়ে জল গড়াচ্ছে, হঠাৎ এমন আচমকাই এমন পরিস্থির সম্মুখীন হবে নূর ভাবেনি ৷ চোখের জলটা মুছে আবার প্রশ্ন করে উঠলো
” কি হয়েছে তুমি আমাকে সব বলো, আর এভাবে কেঁদোনা প্লিজ ৷”

উনি কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলেন
” তোর মা বেঁচে আছে নূর, আমি বুঝতে পারিনি, তোর মায়ের মতো মৃত রক্তাক্ত লাশ দেখে সেদিন আমি সেটাকে তোর মা ভেবেছিলাম নূর ,আমি চিনতে পারিনি ৷”

নূর যেন আকাশ থেকে পড়লো এমন কথা শুনে ৷ এতো বছর পর যখন সবাই একটা মানুষকে মৃত হিসাবে ধরেই নিয়েছে তখন হঠাৎ ওর বাবার বলা একটা কথা যেন সবকিছুকে পাল্টে দিলো ৷ নূর উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো
” কি বলছো কি তুমি এসব ? তুমি ঠিক জানো ? আম্মু বেঁচে আছে ? আম্মু কোথায় ? আর সব প্রশ্নের উত্তর কি বাবা ৷”

উনি ওনার কান্নার মাঝে দম আটকা কাশি কেশে বললেন
” আমিও জানতাম না কিছুই , আজ তোর মায়ের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে দেখি কবরের গায়ে অন্য এক মহিলার নামের নেমপ্লেট বসানো ৷ প্রথমে দেখে খানিকটা অবাক হয়েছিলাম, কিন্তু বিষয়টা কোন ছোটখাটো বিষয় না দেখে আমি গেলাম সেখানকার এলাকার ম্যানেজারের কাছে ৷ ওনাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করাতে যে সেখানে অন্য কোন মহিলার নামের নেমপ্লেট কেন তখন উনি বললেন
” যার কবর তার নামের ই নেমপ্লেট দেওয়া আছে, তাছাড়া ওটা আপনার স্ত্রীর কবর না ৷ আপনাকে আমি দেখেছি কবর জিয়ারত করতে আসতে তাই আমি আপনাকে চিনি , কিন্তু কয়েকদিন আগে একটা পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য এসে জানান যে এখানে যার কবর দেওয়া হয়েছে ওনারা তাদের পরিবারের লোক, কথাটা শোনামাত্রই আমার আপনার কথাটা মাথায় আসে, আমি তখন খানিকটা আন্দাজেই ওনাদের সাথে তর্কে জড়ালাম তারপর সব জিজ্ঞাসা করতেই ওনার আমাকে সবটা বুঝিয়ে বললেন যে
” যেদিন ওই রোড এক্সিডেন্টটা হয় সেদিন ওনাদের পরিবারের লোক আর সারাদিন বাসায় ফেরেননি তাছাড়া ওনাদেরকে ফোন করে কেউ জানিয়ে ছিলেন যে তাদের বাসার কেউ একজন মারা গেছেন কিন্তু ইতিমধ্যে আপনি আপনার ওয়াইফের মৃতদেহ ভেবে তাকে নিয়ে যান কিন্তু তার আসল পরিবারের লোক এসে আর পাইনি , যখন যানলেন যে আপনারা নিয়ে গেছেন তখন আপনাদের খোঁজার চেষ্টা করেও পাইনি কারন আপনারা বাসা পরিবর্তন করেছিলেন ৷ তারপর হঠাৎ কিছুদিন আগে ওনারা বেশ কিছু প্রমানসহ জানালেন যে এটা ওনাদের পরিবারের একজনের কবর ৷ তাছাড়া এক্সিডেন্টে মারা যাওয়ার পর আপনারা কি বুঝতে পেরেছিলেন যে উনি আপনাদের বাড়ির লোক ৷ ”

তখন আরাফাত সাহেব মাথা নাড়িয়ে না জানালেন ৷
সব কথা আরাফার সাহেব নূরকে বললেন, উনি রিতীমতো ভেঙে পড়েছেন, কি বলবে ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না ৷ কথাগুলো শুনে নূর কেঁদে ফেলল তারমানে ওর মা বেঁচে আছে ৷ নূর ও কাঁদছে , হঠাৎ আরাফাত সাহেব চোখের জল মুছে বললেন
” তোর মা এখন কোথায় আছে কি অবস্থায় আছে আমি জানিনা মা , আমি জানিনা, আর তোর মা ই বা সেদিন আর ঘরে ফিরলো না কেন আমি তা ও জানি না ৷ পারলে আমাকে ক্ষমা করিস ৷”

নূর ও নিজের চোখের জল মুছে বলল
” তুমি কেন ক্ষমা চাইছো, তোমার তো কোন দোষ নেই, ভাগ্যতে যা ছিলো তাই হয়েছে ৷ তাছাড়া এতো বছর পর আম্মু কোথায় থাকতে পারে আর আম্মুকে কোথায় বা খুঁজবো আমারা ?”

” আমি জানিনা মা আমি জানিনা ৷”

দুজন আরো বেশ কিছুখন কথা বলার পর নূর ফোনটা কেটে দিলো,, নূর আয়াশের ফোন করে খবরটা জানাবে বলে ফোন করতেই কলটা গেল না, ফোন সুইচ অফ, নূরের আর তর সইছে না কথাটা বলার জন্য, নূর না পেরে রুমের মধ্যে পাইচারি করছে আর আয়াশকে ফোন করার চেষ্টা করছে বারবার ৷ হঠাৎ বাইরে থেকে শো শো আওয়াজ শোনা যেতেই নূর জানালার দিকে তাকালো, জানকলাটা খোলা, নূর খুব ভুতের ভয় পাই তাই সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে জানালা দিয়ে দেই কিন্তু আজকে জানালাটা খোলা রেখেছে কেন নূর বুঝতে পারছেনা, হয়তো ভুলে গেছে ভেবে জানালাটা দিতে গেলেই বাইরের অন্ধকারে কেঁপে উঠলো নুর,তারপর হাত বাড়িয়ে জানালাটা বন্ধ করতে গেলেই নূর ওদের বাসার বিপরীতে কিছুটা দুরে আলো জ্বলতে দেখলো আর দুটো মানুষের অবয়বকে হাটতে দেখে ভয়ে জানালটা জোরে শব্দ করে টেনে দিয়ে বিছানায় বসে পড়লো নূর,ভীষনরকম ভয় পেয়েছে ও ৷ নূর বিছানায় পা গুটিয়ে বসে মনে মনে অনেক সুরা পড়ছে ভয় কাটানোর জন্য ৷ ওটা যে গাড়ির হেডলাইটের আলো টিপটিপ করে জ্বলছিলো তা নূর বুঝতে পারেনি ৷

____

ফাঁকা রাস্তার মাঝে গাড়িটা দাড় করিয়ে রেখে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে আয়াশ আর নূরের মা ৷ আয়াশের চোখে আছে হিংস্রতা আর নূরের মায়ের চোখে বিরক্তি আর রাগ ৷ গাড়িটা রাস্তার মাঝে রাখা, গাড়ির আলো একবার জ্বলছে একবার নিভছে ৷ নূরের মা বিরক্ত হয়ে বললেন
” মানেটা কি আয়াশ, তুই এসব আলতু ফালতু প্রশ্ন করছিস কেন? আর তোর কি মনে হয় যে আমি তোকে মিথ্যা বলছি ? তোকে মিথ্যা বলে আমার কি লাভ ! ওটা যেমন তোর মা তেমনি আমার বড়ো আপু ৷”

আয়াশ ভারী গলায় বলে উঠলো
” আমার আম্মু কোথায় খালামনি ? এখনো সুযোগ আছে বলো যে সে কোথায় নাহলে আজকেই তোমার শেষ দিন আর তোমাকে শেষ করতে আমি দুইবার ও ভাববো না ৷”

উনি রেগে দাঁতে দাঁত চেপে বলল
” তুই যে এভাবে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আমাকে দোষী প্রমান করবি ভাবিনি আয়াশ, তোকে আমি নিজের সন্তানের মতো ভাবতাম আর তুই কিনা তার এই প্রতিদান দিলি ৷ ছিহ! এখন তো ভাবলেই গা ঘিনঘিন করছে যে আমার ফুলের মতো মেয়েটার জীবনসঙ্গী হিসাবে আমি তোকে ঠিক ভেবেছিলাম ৷”

আয়াশ পকেট থেকে রিভলবারটা বার করে বলল
” খবরদার তোমার ওই মুখে আমার আফুসোনার নাম নিয়েছো তো তোমাকে মেরে ঝাঝরা করে দেবো ৷ অনেক বছর সময় দিয়েছি তোমাকে আর না ! আজ তোমার পর্যাপ্ত সময় শেষ, আমি আর একবার জিজ্ঞাসা করবো যে আমার আম্মু কোথায় ৷ বলো কোথায় , শেষ বারের মতো বলছি, আর তোমার মেয়েকে আমি এমনি এমনি বিয়ে করিনি, নিজের কাজ হাসাল করার জন্যই করেছি, নাহ আছে ওর প্রতি অনুভূতি আর না আছে ভালোবাসা,ওর মতো হাজার হাজার মেয়ে আমার পিছন পিছন ঘোরে বুঝেছো ? আর সে আমার প্রেমে পাগল আমি না ৷”

” ছিহ আয়াশ , ছিহ ! আমার মেয়ে সমন্ধে কোন বাজে কথা আমি শুনতে চাইনা,তুই কি মানুষ ?”

” মানুষ আমি কখনোই ছিলাম না, আমি হলাম ডেভিল আর তোমার মেয়েটাও কতো বোকা , আমি কাছে টানলেই সুড়সুড়করে কাছে চলে আসে, মেয়ে মানুষের স্বভাবই এমন ডাকলে না করতে পারেনা, না জানি এতো আবেগ কই পাই ৷”

কথাটা শুনে উনি ওনার কোমরে গুঁজে রাখা চাকুটা বার করতে গেলেই পরপর দুটো গুলি এসে ওনার শরীরকে ভেদ করে গেল, উনি মাটিতে পড়ে গেলেন, চারিদিকে রক্ত, আয়াশ বন্দুকটা নামিয়ে একবার পিছন দিকে তাকালো , খালি অন্ধকার আর অন্ধকার ‌৷আয়াশ বন্দুকটা হাত থেকে ফেললো না, বন্দুকটা হাতে রেখেই নূরের মায়ের বডির কাছে হাটু গেড়ে বসলো আর রক্ত দিয়ে পিচের ওপর লিখলো
” আই এম দা ভিলেন ইন ইউল লাভ স্টোরি আফুসোনা ৷”
কথাটা বলে হাসলো আয়াশ, তারপর ওনার দিকে তাকিয়ে বললেন
” তোমাকে মারা তো যাস্ট একটা বাহানা ! সো স্যাড ! ”

____

ভয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছে নুর,রাত 1টা বাজে, আয়াশ এখনো বাসায় ফেরেনি ৷নূর ও আর ঘর থেকে বার হয়নি, ইফার মাথা ব্যাথা করছিলো বলে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছিলো আর ইফার মা ওনার বোনের ছেলে অসুস্থ বলে সন্ধ্যাবেলা আর একবার বাসা থেকে বেরিয়ে গেছিল তাই নুর বলার মতো কাউকে সুযোগ পাইনি ৷
হঠাৎ কম্বল সরিয়ে গলায় উষ্ণ ঠোঁটের ছোঁয়া পেতেই নূর কেঁপে উঠলো,,বুঝতে পারলো যে আয়াশ ফিরেছে তাই অযথা ভয় না পেয়ে বরং আরো সাহস পেলো ,হৃদস্পন্দন ক্রমাগত বাড়ছে আয়াশের স্পর্শে, আবেগে ব্ল্যাংকেট আকড়ে ধরলো নুর,হঠাৎ আয়াশ নুরকে ঘুরিয়ে ওর মুখমুখি করে নূরের গলায় মুখ ডুবিয়ে দালো, আচমকাই আয়াশের এমন ব্যাবহার নূরের কাছে একটু অদ্ভুত লাগলেও অবাক হলো না কারন আয়াশ এমনই আর নূর এগুলোতে অভ্যস্ত ৷আয়াশ ও কিছু বলছেনা আর নূর ও কিছু বলছেনা, রুম জুড়ে চলছে পিনপনত নিরবতা , কেবল অনুভূত হচ্ছে আয়াশের উষ্ণ ছোঁয়া আর নূরের ছন্দহীন হৃদস্পন্দন ৷ আয়াশ নূরের শরীরে ওর স্পর্শ গুলো গভীরভাবে দিতে লাগলেই নূর কানিকটা লজ্জা আর কম্পিত কন্ঠে বলে উঠলো
” প্লিজ এতো কাছে আসবেন না ৷”

আয়াশ নূরের গলা থেকে মুখ সরিয়ে কিছুখন নূরের মুখের দিকে চেয়ে রইলো, মেয়েটার মুখে একরাশ লজ্জা আর ভয় কাজ করছে ৷ আয়াশ একহাত দিয়ে নুরের পেটিকোটের ফিতেটায় হাত দিতে গেলেই নূর একনিশ্বাসে বলে উঠলো
” আমি অসুস্থ , প্লিজ ! ”

আয়াশ বুঝতে পারলো নূর ঠিক কি বোঝাতে চাইছে, নূরের ইশারা বুঝতে পেরে আয়াশ ওর হাতটা সরিয়ে নিয়ে নূরের ঠোঁটজোড়া দখল করে নিলো ৷ নূর আয়াশের শার্ট ধরে খামচি মেরে ধরলো, ভয়টা ক্রমে ক্রমে কমে আসছে ৷ কিছুখন পর আয়াশ নূরকে ছেড়ে নূরের পেটে মাথা রাখলো আর দু হাত দিয়ে নূরকে জড়িয়ে ধরলো, আয়াশ ভাবলো যে নূর হয়তো এতখন পেটের ব্যাথায় গুটিশুটি হয়ে শুয়ে ছিলো আর এই অবস্থায় পেটে পেইন হওয়াতে অসম্ভব কষ্ট হয়, আয়াশ নূরের পেইন কমাতে নূরের পেটে মাথা রাখলো, নূর কিছু বলছেনা ৷ বেশ অনেকখন আয়াশ ওভাবেই রইলো হঠাৎ নুরের মনে পড়লো ওর আম্মু কথা, কথাটা ভাবতেই নূর উত্তেজিত হয়ে বলল
” জানেন তো আমার আম্মু বেঁচে আছে এখনো, আমার আম্মুর কিছু হয়নি ৷ ”

কথাটা বলেও আয়াশের তরফ থেকে কোন রিপ্লাই এলো না দেখে নূর ভাবলো আয়াশ হয়তো সবটা বলেই তারপর কোন মন্তব্য করবে তাই নূর একে একে সব কথা আয়াশকে বললো ৷ সব কথা শুনেও আয়াশ কিছু বলল না দেখে নূর ধীমে কন্ঠে বলল
” আমার আম্মু হলো আমার জীবনের সবচেয়ে বড়ো হ্যাপিনেস,আম্মুকে পেলে আমার আর কিছু চাইনা ৷”

তবুও আয়াশের কোন রিপ্লাই নেই দেখে নুর এটু উঁচু হয়ে দেখলো আয়াশ ঘুমিয়ে পড়েছে, নূর নিজের মাথায় চাপট মারলো তারমানে এতখন ও নিজে নিজেই বকে গেছে একা একা কথাটা ভেবে নিজেকে স্টুপিড মনে হলো ৷ নূর ও আর বেশি কিছু না ভেবে ঘুমিয়ে পড়লো ৷ প্রায় 10 মিনিট পর আয়াশ নূরের ওপর থেকে সরে এসে নূরের দিকে তাকিয়ে রইলো তারপর নিজের মনে মনে বলল
” সো স্যাড আফু সোনা , ডেভিলকে কি কেও ড
ডেভিলের গল্প শোনায় সো স্যাড ! আর কি বললে সে তোমার বড়ো হ্যাপিনেস ? তাহলে আমি কি ?”

#চলবে,,,,, Suraiya Aayat