ছদ্মবেশে লুকানো ভালোবাসা পর্ব-২০

0
1158

#ছদ্মবেশে_লুকানো_ভালোবাসা
#মৌমি_দত্ত
#পর্ব_২০

স্পন্দন হৈহল্লা করে সবে ঢুকেছে আফিমের বাসায়। আজকের নীরব দর্শক হওয়ার ভূমিকা পালন করছে জোসেফ ও লাবিবা। আফিমের বেলায় যেমন তারা চুপ ছিলো। তেমনি স্পন্দনের বেলায়ও চুপ। স্পন্দন ঢুকেই এগিয়ে গেলো সিড়ির দিকে। কেননা ওখান থেকেই নামছে আফিম। আফিম সবে শেষ সিড়িতে নেমেছিলো। তখনই স্পন্দন গিয়ে আফিমের শার্টের কলার খামচে ধরলো একহাতে। আফরা সবে সিড়ি বেয়ে নামছিলো। আফিমের দুই ধাপ উপরের সিড়িতে দাঁড়িয়ে পড়লো সে স্পন্দনের হাতের দিকে তাকিয়ে। স্পন্দন রাগ নিয়ে আফিমের পিছনে কে দাঁড়িয়ে আছে দেখতেই দেখতে পেলো আফরাকে,, তাও সম্পূর্ণ ঘরের কাপড়ে। একটা নীল টিশার্ট,, সাদা প্লাজো,, চুলগুলো দুইদিকে বেনুনি করে ঝুলানো। দেখতে পুরোই বাচ্চা লাগছে আফরাকে। আফরাকে দেখেই দিগবিদিক জ্ঞান ভুলে স্পন্দনের মুখে হাসি ফুঁটে উঠলো।
– লাভ ইউ মাই কুইন!!
আফরা একরাশ ভয় নিয়ে তাকিয়েছিলো। তার মধ্যে স্পন্দনের এমন কথা শুনে অবাক হলো। পরক্ষনেই লজ্জায় মাথা নুঁইয়ে ফেললো সে লাজুক হেসে। আর আফিম একবার ঘাড় ঘুড়িয়ে আফরাকে দেখছে আর আবারও সামনে স্পন্দনকে দেখছে। এটা একশন সিন চলছে নাকি রোমান্টিক সিন তা নিয়ে বেশ সন্দেহে আছে আফিম। তবুও স্পন্দনের মুখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে গম্ভীর স্বরে বললো,,
– হেই ব্রো!! ও আমার বোন।
স্পন্দনের হুশ ফিরলো সে কি করছিলো এতোক্ষন কি করার পরিবর্তে। মূহুর্তেই রাগ নিয়ে আফিমের কলার খামচে বললো,,
– আর ইনায়াত আমার বোন!! ওর থেকে দূরে থাকবে আফিম। আমি নাহয়ন,,
স্পন্দনের পুরো কথা শেষ করতে না দিয়ে আফিম কলার থেকে ঝাঁকা দিয়ে হাত ছাড়িয়ে নিলো। এরপর শক্ত মুখে বললো,,
– ঠিক আছে। আমার বোনের থেকে দূরে থাকবে তুমি। আর আমি তোমার বোনের থেকে দূরে থাকবো।
কথাটা শুনেই যেন আকাশ থেকে পড়লো স্পন্দন। আফরাও পিছনে চমকে তাকালো আফিমের দিকে। পরক্ষনেই স্পন্দন দুইহাত নিজের পকেটে গুঁজে বললো,,
– আমি ভালোবাসি আফরাকে।
আফিম এতোক্ষনে স্পন্দনকে বাগে পেয়ে বিজয়ীর হাসি হাসলো। সেও বুকের কাছে হাত ভাঁজ করে বললো,,
– আমিও ভালোবাসি ইনায়াতকে।
কামাল এতোক্ষন সবটাই দেখছিলো আফিম ও স্পন্দনের ঝগড়া। আবার পিছনে লাবিবা ও জোসেফের রিয়েকশনও খেয়াল করছিলো তারা। স্পন্দনের ভালোবাসি শুনে লাবিবা আর জোসেফের দাঁড়িয়ে পড়া দেখে বুঝলো বিষয়টা তারা ভালো ভাবে নেয়নি। স্যারের অতি ভক্ত কামাল দ্রুত পিছন থেকে এসে স্পন্দনের কানে কানে বললো,,
– স্যার!! কি করছেন?? আপনার শ্বশুর শাশুড়ি এখানে। তারা কিভাবে দাঁড়িয়ে আছেন অবাক হয়ে আপনার কথা শুনে দেখুন একবার।
স্পন্দনের এতোক্ষনে হুশ হলো সোফায় কাওকে বসা দেখেছিলো। স্পন্দন ধীর গতিতে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো জোসেফ আর লাবিবার দিকে। জোসেফ আর লাবিবার ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে থাকা দেখে চোখ বন্ধ করে নিজেকেই নিজে শক্ত দুটো গালি শুনালো স্পন্দন। তারপর ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো জোসেফ ও লাবিবার দিকে।
– আপনাদের সাথে কথা ছিলো আংকেল,, আন্টি।
জোসেফ ও লাবিবা বসলো সোফায়। ইশারায় বসতে বললো স্পন্দনকে। আফিমও এসে পাত্রীর বড় ভাই হিসেবে ঠাঁট বাঁট নিয়ে বসলো। আফরাকে হাতের ইশারায় কাছে ডাকলো আফিম। আফরা মাথা নাড়িয়ে আসবে না জানালো। আফিম চোখ ছোট ছোট করে তাকাতেই সুড়সুড় করে এসে আফিমের পাশে মাথা নিচু করে চুপটি করে বসে পড়লো আফরা।

– আংকেল আন্টি!! আমি আপনার ছোট মেয়েকে ভালোবাসি। আমি ওকে বিয়ে করতে চাই।
শয়তানি হেসে স্পন্দন আফিমের দিকে আড়চোখে তাকিয়ে বললো। আফিমও উত্তরে বাঁকা হাসলো। যা দেখে ভ্রু কুঁচকে এলো সন্দেহে স্পন্দনের।
– তোমার সম্পর্কে জানা নেই এমন তো কিছুই নেই আশা করছি। পাত্র হিসেবে সবাই চাইবে তোমাকে। আমাদের আপত্তি নেই কোন। তোমার পরিবারকে নিয়ে বিয়ের পাকা কথা বলতে এসো সময় করে। বিয়ে তো এখনই হচ্ছে না। আফরা পড়াশোনা শেষ করুক,, তারপর নাহয়!!
জোসেফের কথা শুনেই করল্লা খাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়ে গেলো স্পন্দনের। জোসেফ খুব সহজেই মেনে নিয়েছে বলে সবে বিজয়ী হাসি হাসতে শুরু করেছিলো। তখনই বিয়ে এখন হবে না শুনে স্পন্দনের অবস্থা প্লাস্টিক। স্পন্দন হালকা কেশে বললো,,
– না মানে পরিবার বলতে আমার একমাত্র ছোট বোন ইনায়াত ছাড়া রক্তের সম্পর্কে আর কেও না। আর আছে এই কামাল। এই দুজন ছাড়া তো আমার কেও নেই আংকেল। আর আফরার পড়াশোনা নিয়ে আমি সমস্যা করবো না। আমি নিজেও একজন ডাক্তার,, বাবার রেখে যাওয়া বিজনেস সামাল দিচ্ছি। সেই হিসেবে পড়ালেখার মূল্য তো বুঝিই। তাই বিয়ে এখন করতে সমস্যা তো নেই। তাই না??
মিনমিনিয়ে উত্তর দিলো স্পন্দন। দৃষ্টি তার আফরার দিকে নিবদ্ধ। স্পন্দনের কথা শুনে লজ্জায় ক্রমশ লাল হচ্ছে আফরা। জোসেফ আর লাবিবা কিংবা আফরা খেয়াল না করলেও আফিম খেয়াল করেছে স্পন্দনের কথা। ইনায়াতের সাথে রক্তের সম্পর্ক কথাটা শুনেই দাঁড়িয়ে পড়লো আফিম।
– ইনায়াত আপনার রক্তের সম্পর্কের কিভাবে বোন হয় বলবেন প্লিজ মিস্টার স্পন্দন?? ইনায়াত তো ইরশাদ মির্জার একমাত্র সন্তান,, তাই না??
আফিমের প্রশ্ন শুনেই টনক নড়লো স্পন্দনের। একবার কামালের দিকে তাকাতেই কামাল শুকনো ঢোক গিলে মোবাইল উলটো করে ধরে কলে কথা বলার নাটক করে ঘরের কোণায় চলে গেলো। স্পন্দন অসহায় মুখ করে একবার আফরার দিকে তাকাতেই দেখলো লজ্জা ভুলে সন্দেহপূর্ন চোখ নিয়ে তাকিয়ে আছে আফরা। লাবিবা আর জোসেফও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। স্পন্দন চোখ বন্ধ করে বললো,,
– আমি ইনায়াতের ভাই। আমাদের রক্তের সম্পর্ক আছে।
কথাটা শুনে কুঞ্চিত ভ্রু আরো খানিকটা কুঁচকে এলো আফিমের। ধীর গতিতে নিজের জায়গায় বসে বললো,,
– আমরা শুনছি মিস্টার স্পন্দন।
স্পন্দন একবার আফরার দিকে তাকালো। তারপর বলতে শুরু করলো।
– আমার বাবা মিস্টার হাবিব আজাদ ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। ভালো মানুষ হিসেবে সবার কাছে সারাটা জীবন শ্রদ্ধা ও সম্মান পেয়ে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ সময়ে ভাগ্যে তা জুটলো না। আমার মা মহুয়া আজাদও একজন বড়লোকেরই মেয়ে ছিলেন। তা ছাড়াও বাবা আমার মাকে অনেক ভালোবাসতেন। তাই নিজের অনেকটা সম্পত্তিই আমার মায়ের নামে করে দিয়েছিলেন। তবে কাজে ব্যস্ত থাকা বাবা হয়তো জানতেনও না যে মা হওয়ার যোগ্যতা ছিলো না ঐ মহিলার। সংসারে মন ছিলো না মায়ের। ডিস্কো,, পার্টি,, নাইট ক্লাব নিয়ে পড়ে থাকতেন। সেভাবেই পরিচয় ইরশাদ মির্জার সাথে। মায়ের মতো মানুষের সাথে ছলনা করে ভালোবাসার মিথ্যে পট্টি পড়িয়ে দিলো আমার মায়ের চোখে। এতোটাই ভালোবাসার নাটক করেছে সে যে আমার মা,, আমাকে দশ বছর বয়সী থাকতে ফেলে ইরশাদ মির্জার হাত ধরে চলে যান।
এটুকু বলেই থামলো স্পন্দন। এতোবছরে এই কথাগুলো কামাল ছাড়া আর কাওকে জানায়নি সে। কথাগুলো উঠলেই পুরনো ঘা,, ক্ষত তাজা হয়ে যায় স্পন্দনের। আফিমের সম্পূর্ন মনোযোগ স্পন্দনের কথায়। আফরার চোখে জল। তাকেও তো তার ভাইয়েরা নিতে অস্বীকার করেছিলো। কিন্তু আল্লাহ সহায় ছিলো বলে আফিমের এতো ভালো পরিবার আপন করে নিয়েছিলো তাকে।
– আমার মা তখন কন্সিভ করেছিলেন। ভালোবাসা,, নতুন সংসার সাজানোর স্বপ্ন,, সব কিছু মিলিয়ে মা বাচ্চাটাকে নষ্ট করতে চাইলো না। ইরশাদ মির্জার নজর ছিলো মায়ের সম্পত্তিতে। তাই ভালো মানুষীর নাটক করে ইরশাদ মির্জাও বাচ্চাটাকে নিয়ে কিছু বললো না। এদিকে যখন ওরা সংসার সাজাচ্ছিলো। অন্যদিকে আমার বাবা এতো বড় আঘাত,, অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করলেন।
আফিম ততোক্ষনে ইশারায় দীপকে পানি নিয়ে আসতে বলেছে। দীপ পানি আর খাবার সাজিয়ে নিয়ে আসলো আর রাখলো স্পন্দনের সামনে টেবিলে।
– কামাল!! নাম ধরেই ডাকছি ছোট বলে। কিছু মনে করো না। এসো,, বসো।
লাবিবা ডাকলো কামালকে। স্পন্দনের দিকে তাকাতে স্পন্দনও ইশারায় ডাকলো। কামাল এসে একটা চেয়ারে বসলো। আফিম এক গ্লাস জল নিয়ে স্পন্দনের পাশে বসে এগিয়ে দিলো গ্লাস।
– এই নিন!! জল পান করুন,, ভালো লাগবে।
স্পন্দন মাথা তুলে একবার তাকালো আফিমের দিকে। সেকেন্ড পর গ্লাসটা নিয়ে কয়েক ঢোক জল পান করলো।
– মায়ের সাথে বিয়ের পরেও বাইরে হাজারটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক ছিলো ইরশাদের। মা কোনভাবে জানতে পেরেছিলেন। তাই মা আমার সাথে যোগাযোগ করবার চেষ্টা করতেন। কিন্তু আমি মায়ের উপর রাগ ছিলো বলে যোগাযোগ করিনি। ইনায়াত জন্ম নিলো তখন। বোনকে দূর থেকে দেখেছি। বোনের শখ ছোট থেকেই ছিলো। তাই মায়ের প্রতি রাগ,, অভিমান বোনকে ছুঁতে পারেনি। ইনায়াতের তখন দেড় বছর বয়স একদিন ভালো মানুষীর মুখোশ পড়ে ঘরে ফিরলো ইরশাদ। মায়ের আর উনার তুমুল ঝগড়া হলো। ঝগড়ার একপর্যায়ে মাকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলেন উনি। পরমূহুর্তেই নিজের হাতে খুন হয়ে গেছে বুঝতে পেরে ছক কষে নিলেন নিজেকে বাঁচানোর। আমার দেড় বছর বয়সী বাচ্চা বোনটার মাথায় পাথর দিয়ে আঘাত করে কোলে তুলে নিলেন। এরপর এম্ব্যুলেন্স থেকে শুরু করে সব নিয়ম পালন করলেন। পুরো সমাজ তার মিথ্যে চোখের জল দেখে তার দিকে আঙ্গুল তুললো না। কেননা সে বলেছে,, মেয়েকে ছাদে নিয়ে হাঁটার সময় পা পিছলে মেয়েকে সহ নিয়ে পড়ে গেছেন মহুয়া। আমার ছোট্ট বোন ইনায়াতকেও মেরেই ফেলতো। যদি না ঝগড়ার একপর্যায়ে মায়ের মুখে জানতে পারতো যে সব সম্পত্তি ইনায়াতের নামে করে দেওয়া হয়েছে যা ১৮ বছর হয়ে গেলে ইনায়াত পাবে। তাই তো ইরশাদ মির্জা এতোগুলো বছর বাঁচিয়ে রেখেছে আমার বোনটাকে।
স্পন্দন হাত মুঠো করে ফেললো রাগে। আফিমের মুখে ভয়ের ছাপ ভালোবাসার মানুষটিকে হারানোর।
– স্পন্দন!! তোমার কাছে কি প্রমাণ আছে এর কোন??
স্পন্দন আফিমের প্রশ্নে ভ্রু কুঁচকে তাকালো।
– এটা রাগার বা বিরক্ত হওয়ার সময় না স্পন্দন। প্রমাণ থাকলে আমাদের ইনায়াতকে যতো দ্রুত সম্ভব জানাতে হবে সবটা। ওর কোন আইডিয়া নেই এসব নিয়ে। তাই ওর রিস্কও কম না।
স্পন্দনের মুখেও ভয়ের ছাপ। তবে আফিমকে যে সে মেনে নিয়েছে তা মনে হয় না!!
.
.
ইনায়াতকেও গার্ডরা বেহুশ অবস্থায় ফেলে রেখে গেছে একটা রুমের খাটে। ঐ একই রুমের খাটেই পড়ে আছে রুহি। জনের লোভাতুর দৃষ্টি সুন্দরী দুই মেয়ের দিকে। ইরশাদ এসে জনের হাতে হাত রাখলো।
– একটু সবুর করো জন। দুটোই তোমার খাদ্য!!
জন বিচ্ছিরি এক হাসি দিলো। নিজের বিজয়ের গর্ব ধরে রাখতে ইরশাদ কল করলো তাহজিবকে। পুরো শহরে মানুষ লাগিয়েছে তাহজিব। রুহিকে পাওয়া যাচ্ছে না জানার পর থেকে সে বাসায় ঢুকেনি আর। এখন রাতের প্রায় সাড়ে দশটা। এখনো সে বাইরে বাইরে ঘুরছে উন্মাদের মতো। এমন সময় ইরশাদের কল পেয়ে গাড়ি থামালো। পাশেই বসে থাকা আসিফও তাকালো তাহজিবের দিকে। তাহজিব দ্রুত কল রিসিভ করলো।
– হ্যালো!!
– হ্যালো মিস্টার তাহজিব!! আপনার জন্য আরেকটা সুখবর!! আপনার দ্বিতীয় মেহবুবা রুহি তো আমার কাছে ছিলোই। এখন প্রথন মেহবুবা ইনায়াতও আমার হাতের মুঠোয় বন্দি। রুহি নাহয় আমাকে নিয়ে সবটা আপনার কাছে জেনেছে। কিন্তু ইনায়াতের সাথে যোগাযোগ ছিলো না রানার বা আমার। তাই কিছুই জানেনা। এখন শুধু অপেক্ষা ওর হুশ ফিরবার। হুশ ফিরলেই ভালো বাবা সেজে সাইন করিয়ে নেবো আমি পেপারস এ। এরপর ইনায়াত আর রুহি হবে আমার তরফ থেকে আমার বন্ধুর জন্য গিফট!!
এই বলেই কল কেটে অট্টআসি হাসতে লাগলো ইরশাদ আর পাশে থাকা জন। অপরদিকে হাত পা ঠান্ডা হয়ে এসেছে তাহজিবের। ফোনটা নিয়ে ভয়ে ছুড়ে মারলো। এখনো কানে বাজছে ইরশাদের কথা। সে কি তাহলে ব্যর্থ ইনায়াত ও রুহিকে বাঁচাতে??
আসিফ এতোক্ষন ফোনে কথা বলছিলো কারোর সাথে গাড়ির থেকে নেমে । কল কেটেই এসে দেখলো পিচঢালা রাস্তায় বসে আছে তাহজিব আর ফোনটা ভেঙ্গে পড়ে আছে।
– কি হয়েছে স্যার??
তাহজিব শান্ত দৃষ্টিতেই রাস্তার দিকে তাকিয়ে ইরশাদের বলা সবটা বললো। অজানা আশংকায় বুক কেঁপে উঠলো আসিফের।
– স্যার!! আই থিংক আমাদের এস.এ’র সাহায্য নেওয়া উচিত।
তাহজিব ভ্রু কুঁচকে তাকালো আসিফের দিকে।
– এস.এ?? সে কেন আমাদের সাহায্য করবে??
– স্যার!! সাহায্য আগে চেয়ে তো দেখি। কেননা রানার মৃত্যুটা নিয়ে সব ধরনের তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছিলাম আমি। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে কিছু না পেলেও সন্দেহ হচ্ছিলো কিছু তো হয়েছে। নাহয় ইরশাদ নিজের ভক্ত রানাকে মারার কথা না,, আর নিদ্রাহীন রাত কাটানো আপনিও গভীর ঘুমে অচেতন থাকার কথা না। তাই আমি সবদিকে লোক লাগিয়ে রেখেছিলাম। একটু আগেই একজন খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ক্লু দিলো। এস.এ সেদিন আমার বাসার রুটেই এসেছিলো গাড়ি নিয়ে। আবার ঐ রুটেই ব্যাক করেছে। আর,,
তাহজিবের ভ্রু কুঁচকে এলো। মাথার চুল খামচে ধরে বললো,,
– কিন্তু এস.এ অনেক মেয়েবাজ। কোনভাবে যদি রুহি বা ইনায়াতের উপর চোখ পড়ে!!!
তাহজিবের কথা শুনেই আসিফ বললো,,
– স্যার!! এটাই তো কথা। এস.এ’র ঘরে আমি গত বেশ কয়েক সপ্তাহ নজর রাখিয়েছি। এস.এ এসেছিলো খবরটা হাওয়ায় ভেসে আমার কানে আগে এসছিলো। আজকে জাস্ট শিউর হলাম। কানে আসতেই নজর রাখালাম আমি। তখনই জানতে পারলাম,, আসলে সে মেয়েবাজ না। সবটাই মেয়েদের দূরে রাখবার জন্য গুজব ছড়ানো।
তাহজিব যেন আশার আলো দেখলো। উঠে দাঁড়িয়ে বললো,,
– এস.এ’র সাহায্য নিতে হবে আমাদের।
আসিফ আর তাহজিব উঠে বসলো গাড়িতে।

সামনে এবার কি হবে?? জানতে হলে সাথে থাকুন,, পাশে থাকুন। আর হ্যাঁ কমেন্ট করতে ভুলবেন না যেন।

চলবে,,,