তোমাতেই রহিব বিলীন পর্ব-১৬

0
874

#তোমাতেই_রহিব_বিলীন
#পর্ব_১৬
#নিশাত_জাহান_নিশি

“ফেইক আইডি থেকে তুমিই এট ফার্স্ট আমাকে নক করেছিলে। আই মিন তোমার ছদ্মবেশে থাকা আরিফ ভাইয়া আমাকে নক করেছিলেন। অথচ আমি এতোটাই বোকা যে, কখনো ধরতেই পারি নি ওটা তুমি ছিলে না। তোমার আড়ালে থাকা দু, দুটো কাছের মানুষ, আপন মানুষ আমার ইমোশন নিয়ে ঠাট্টা, বিদ্রুপ করছিলো!”

প্রকান্ড চোখে আমি আহনাফের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বললাম,,

“দুজন? দুজন কে কে?”

আহনাফ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিশ্বাসহীন কন্ঠে বললেন,,

“ভাইয়া এবং তনিমা!”

“হোয়াট? তনিমা আপু?”

“হুম তনিমা!”

ভ্রু যুগল খড়তড় ভাবে কুঁচকে আমি প্রশ্নবিদ্ধ কন্ঠে বললাম,,

“এক সেকেন্ড এক সেকেন্ড! আপনি কি মিন করতে চাইছেন? জিজু এবং তনিমা আপু পূর্ব থেকে পরিচিত?”

আহনাফ মাথা নিচু করে মলিন কন্ঠে বললেন,,

“ইয়েস। দুজনের মধ্যেই লাভ রিলেশান ছিলো প্রায় ৭ মাস যাবত! যখন আমি কানাডা ব্যাক করি তখনই তাদের সম্পর্কটা ভাঙ্গে! আর তখনই তনিমার মুখ থেকে আমি সব সত্যিটা জানতে পারি।”

মাথায় বোধ হয় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল আমার। স্থিরতা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না এক জায়গায়। বুকটা অসহনীয় ভাবে কেঁপে উঠছিলো৷ ভেতর থেকে আহত মনের আর্তনাদ হু হু শব্দে নিঃসৃত হচ্ছিলো! আহনাফ এসব কি বলছেন? জিজুর সাথে তনিমা আপুর সম্পর্ক ছিলো? তাহলে এর মাঝে আমাকে এবং আহনাফকে ইনভলভ করলেন কেনো জিজু? আর আপু? অগোচড়ে জিজু আপুর সাথে প্রতারনা করছিলেন? আপুকে ঠকাচ্ছিলেন? তবে কি আপুর সংসারটা এবার ভেঙ্গেই যাবে? এই জীবনে আপুর আর সংসার করা হবে না? পারব তো আমরা আপুকে সামলাতে? এই কথা গুলো শুনলে তো আমার আপু সহ্য ই করতে পারবেন না! বাঁচিয়ে রাখতে পারব তো আমরা আপুকে?

অশ্রুসিক্ত চোখে আমি ফুঁফিয়ে উঠে বললাম,,

“তার মানে আপনার ভাই এতো বছর যাবত আমার আপুর সাথে চিট করছিলেন? পরকীয়ায় আসক্ত ছিলেন?”

আহনাফ উল্টো দিকে ঘুড়ে নিচ কন্ঠে বললেন,,

“হুমম। আমার ভাইয়া ভাবীর সাথে চিট করছিলেন। পরকীয়ায় আসক্ত ছিলেন সম্পূর্নভাবে। ছোট ভাই হয়ে বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে এসব বলতে আমার একটু ও বিবেকে বাঁধছে না বিশ্বাস করো। তবে আমি লজ্জিত। বড় ভাইয়া হিসেবে ভাইয়াকে পরিচয় দিতে আমার ভীষন লজ্জাবোধ করছে, ঘৃনা কাজ করছে!”

উদ্বেগী কন্ঠে আমি পুনরায় প্রশ্ন ছুড়ে বললাম,,

“তনিমা আপু? তনিমা আপু জানতেন না? আপনার ভাইয়া বিবাহিত?”

“না। জানত না বলেই তনিমা ভাইয়ার সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছিলো!”

“তনিমা আপুর কথা আপনি বিশ্বাস করে নিলেন? ৬ মাস রিলেশানে থাকা সত্ত্বে ও উনি বুঝতে পারেন নি আপনার ভাইয়া বিবাহিত? কথা, বার্তা, আচার-আচরন, ভাব-ভঙ্গি এসব দেখে ও কিছু আঁচ করতে পারেন নি?”

“ছলনাকারীর ছল বুঝতে হলে উল্টো পাশের মানুষটাকে ও ছলনাময়ী হতে হয়! তনিমা ছলনাময়ী টাইপ মেয়ে ছিলো না বলেই কিছু বুঝতে পারে নি। তাই এই বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ হয় নি!”

অধৈর্য্য কন্ঠে আমি একের পর এক প্রশ্ন ছুড়ে বললাম,,

“তাদের পরিচয় হয়েছিলো কিভাবে? তনিমা আপু এর আগে কখনো আপনার ভাইয়াকে দেখেন নি? কখনো আপনাদের বাড়িতে আসেন নি? কখনো আপনার ভাইয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান নি? ইসসস সব গুলিয়ে যাচ্ছে আমার!”

“তনিমার সাথে আমাদের পরিচয় বলো বন্ধুত্ব বলো সবটাই হয় কানাডায়। ভাইয়ার বিয়ের আনুমানিক ৬ মাসে পূর্বে। এর মধ্যে তনিমা কখনো বিডিতে আসে নি। তাই আমাদের বাড়িতে কখনো আসা যাওয়া হয় নি তার। ভাইয়া সম্পর্কে ও বিস্তারিত জানা হয় নি।”

“তাহলে আপনার ভাইয়া কোন পরিচয়ে তনিমার আপুর সাথে সম্পর্কে ছিলেন? মানে, কিভাবে তাদের পরিচয় হয়েছিলো?”

“ফেইসবুক থেকে। আমি, নেহাল এবং তনিমা প্রায় মাঝে মধ্যেই গ্রুপ ছবি ফেইসবুকে আপলোড করতাম। ওখান থেকেই ভাইয়া তনিমাকে চিনে, জানে, পরিচিত হয়। তবে তনিমার সাথে ভাইয়ার পরিচয়টা হয় ভাইয়ার ফেইক একাউন্ট থেকে! তাই তনিমা কিছু বুঝতে পারে নি। জানতে ও পারে নি ফেইক আইডির আড়ালে থাকা মানুষটা আমার বড় ভাইয়া ছিলেন!”

“মানে কি? আপনার ভাইয়াকে না দেখে না শুনে না চিনেই তনিমা আপু হুটহাট সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন?”

“ভাইয়া নিজের রিয়েল কয়েকটা ছবি তনিমাকে সেন্ড করেছিলেন। পরিচয় দিয়েছিলেন, ভাইয়া আমার দুঃসম্পর্কের আত্নীয়। এখনই এই সম্পর্কের বিষয়টা যেনো তনিমা আমাকে না জানায়। সময়, সুযোগ বুঝে ভাইয়া ই আমাকে সবটা জানাবেন। আর তনিমা ও ভাইয়ার কথায় সায় জানিয়ে কখনো কিছু জানায় নি আমাকে।”

“জিজু এবং আপুর বিয়ের ছবি ও তনিমা আপু কখনো দেখেন নি? আপনি কানাডা ফিরে আপনার ভাইয়ার বিয়ে সম্পর্কে তনিমা আপুকে কিছু জানান নি?”

“ভাইয়ার বিয়ে ছিলো ওটা জানত তনিমা। বাট ভাইয়ার ছবি বা ভাইয়ার বিয়ের ছবি কখনো দেখতে চায় নি তনিমা। আর আমি ও অতোটা আগ্রহ নিয়ে তনিমাকে কখনো ভাইয়ার ছবি টবি দেখাই নি। আমার ভাইয়ার নাম যে আরিফ, ওটা ও জানত না তনিমা। তাছাড়া ভাইয়া উনার আসল নাম তনিমাকে বলেন নি, ফেইক নাম বলেছিলেন!”

“কিন্তু এর মধ্যে আমি এলাম কিভাবে? আমাকে এবং আপনাকে ফাঁসানো হলো কেনো? জিজু তো তনিমা আপুকে ভালোবাসতেন তাই না?”

“তোমাকে দেখার পর থেকে ভাইয়ার আস্তে আস্তে তনিমার প্রতি মোহ কেটে যায়! সেই মোহ এসে পড়ে তোমার উপর৷ ভাইয়া তোমাকে কখনো ভাবীর ছোট বোন হিসেবে দেখেন নি। সবসময় কু-দৃষ্টিতে দেখেছেন। যা তুমি কখনো আঁচ করতে পারো নি।”

“ছিঃ! শেষ পর্যন্ত জিজু আমাকে ও ছাড়েন নি? আমাকে ও টার্গেট করেছিলেন?”

“হুম। জানি না, আর কতজন মেয়ে ভাইয়ার কু-দৃষ্টির স্বীকার হয়েছে। ভাইয়ার লালসার স্বীকার হয়েছে!”

“কিন্তু জিজু ফেইক একাউন্ট খুলেছিলেন কেনো? কি স্বার্থ ছিলো এতে?”

“ভাইয়া কোনো ভাবে জানতে পারেন, প্রথম দেখায় আমি ও তোমাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম! আর দেশে ফিরেই আমি তোমার ফ্যামিলিতে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবো। আর তখনই ভাইয়া আমার চোখে তোমাকে খারাপ করার জন্য উঠে পড়ে লেগে যান। ফেইক একাউন্ট খুলে তুমি সেজে আমার সাথে কথা বলেন। সব’চে আশ্চর্যের বিষয় কি জানো?”

“কি?”

“এই পুরো বিষয়টাতে তনিমা ও ভাইয়ার সাথে জড়িত ছিলো!”

“মানে? কিভাবে?”

“ভাইয়ার ভালোবাসায় তনিমা এতোটাই অন্ধ হয়ে পড়েছিলো যে, ভাইয়া যা বলত তনিমা তাই শুনত এবং তাই করত। তনিমার একটা ভালো গুন আছে। তনিমা ভয়েজ চেইঞ্জ করে কথা বলতে পারে। যে কারো কন্ঠ নকল করে সে হুবহু সেই কন্ঠে কথা বলতে পারে। ভাইয়া কোনো ভাবে তোমার ভয়েজ রেকর্ডিং করে সেই রেকর্ডিং টা তনিমাকে শুনায়। আর তনিমা সেই ভয়েজ রেকর্ডিং অনুযায়ী স্বর পাল্টে ফেইক একাউন্ট থেকে আমার সাথে কল+ভয়েজে কথা বলত!”

“এসবে তনিমা আপুর কি স্বার্থ ছিলো? আপনারা দুজন তো খুব ভালো বন্ধু ছিলেন তাই না? তনিমা আপু জেনে বুঝে কিভাবে আপনাকে ঠকাতে পারলেন?”

“ঐ যে বললাম, ভালোবাসায় অন্ধ হয়ে গিয়েছিলো! দুষ্টু লোকের কথা স্বভাবতই মিষ্টি হয়। যে কেউ সেই মিষ্টি কথায় ভুলতে বাধ্য। এছাড়া ও ভাইয়া হুমকি দিয়েছিলেন তনিমাকে। তনিমা যদি ভাইয়ার কথা শুনে না চলে তবে তনিমার সাথে সব সম্পর্ক এখানেই শেষ করে দিবেন। তনিমার কিছু পার্সোনাল ছবি ভাইরাল করে দিতে বাধ্য হবেন! নির্বোধ তনিমা তখন ও জানতে পারে নি ভাইয়া বিবাহিত। এমনকি তোমাকে কোনো ভাবে পাওয়ার জন্য যে ভাইয়া তনিমাকে ইউজ করছে তনিমা তা ও তনিমা বুঝতে পারে নি। প্রেমে তনিমা ঠিক এতোটাই অন্ধ হয়ে পড়েছিলো!”

ফুঁফিয়ে কেঁদে আমি ধপ করে ফ্লোরে বসে প্রচন্ড জেদ দেখিয়ে বললাম,,

“ছিঃ ছিঃ ছিঃ। জিজু এতোটা খারাপ মন মানসিকতার মানুষ? এই নোংরা মানুষটাকে আমার জিজু বলে ডাকতে ও বিবেকে বাঁধছে।”

আহনাফ পিছু ঘুড়ে দাঁড়ালেন। আমার দিকে কিছুক্ষন নিস্ক্রিয় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে আহনাফ ও আমার মতো ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়লেন। নতজানু হয়ে আহনাফ নিচ কন্ঠে বললেন,,

“ভাইয়ার কুকর্মের জন্য আমি লজ্জিত প্রভা। যতো দ্রুত সম্ভব ভাবীকে প্রতিটা সত্যি আমাদের জানাতে হবে। ভাবীকে এই মিথ্যে সম্পর্কটা থেকে বের করতে হবে!”

কান্নারত অবস্থায় আমি দুচোখে অস্থিরতা নিয়ে আহনাফের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে বললাম,,

“বেবি মিসকারেজের ব্যাপারটা? ওটাতে ও কি জিজুর হাত ছিলো?”

“হুম। ডক্টরের সাথে কন্সাল্ট করেই ভাইয়া বেবি মিসকারেজের মেডিসিন ভাবীকে প্রতিবার সেবন করাত। যার কারনে প্রতিবারই ভাবীর মিসকারেজ হতো!”

হাত দুটো মুষ্টিবদ্ধ করে আমি অনবরত ফ্লোরে আঘাত করছি আর ফুঁফিয়ে কেঁদে বলছি,,

“ঐ নরপশুকে আমি ছাড়ব না আহনাফ। শুধুমাএ উনার জন্য আমার আপুর দু দু বার বেবি মিসকারেজ হয়েছে। অসহ্য যন্ত্রনা ভোগ করতে হয়েছে আমার আপুকে। শুধু তাই নয়, বিয়ে হওয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত আপুকে প্রতিনিয়ত ঠকতে হয়েছে। সুখে, শান্তিতে সংসারটা পর্যন্ত করতে পারেন নি।”

মুহূর্তের মধ্যে আহনাফ আমাকে বুকে টেনে নিলেন। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আহনাফ শান্ত কন্ঠে বললেন,,

“বি কুল প্রভা। আমি নিজে ও কখনো ভাইয়াকে মাফ করতে পারব না। বড় ভাই হয়ে যে ব্যক্তি ছোট ভাইয়ের ক্ষতি করতে ছাড়েন নি, সেই ব্যক্তি যে অনায়াসে অন্য কারো ক্ষতি করতে পারবে না তার কোনো গ্যারান্টি নেই। ভাইয়ার জন্যই আমাদের মধ্যে দীর্ঘ দেড় বছরের দূরত্ব এসেছিলো। সব ছেড়ে আমাকে কানাডা চলে যেতে হয়েছিলো। আসলে সত্যিটা জানার পর আমি পারছিলাম না ভাইয়ার মুখোমুখি দাঁড়াতে। লজ্জায়, ঘৃনায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করেছিলো। তাছাড়া তখন তুমি ও আমায় পছন্দ করতে না। জোর করে তোমাকে বিয়ে করলে ও তোমার ভালোবাসা আমার পাওয়া হতো না। খুব ডিপ্রেশানে ভুগছিলাম তখন। মুখ খুলে কাউকে সত্যিটা বলতে ও পারছিলাম না। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলাম। তখন মনে হয়েছিলো তোমাকে ছেড়ে যাওয়াটাই হয়তো ব্যাটার! এর মধ্যেই আবার জানতে পারি…

“কি?”

“নেহাল ও তোমাকে ভালোবাসত!”

“তাই নেহাল ভাইয়ার হাতে আমাকে ছেড়ে দিয়ে আপনি খুব অনায়াসে কানাডায় পাড়ি জমিয়েছিলেন তাই না?”

গলা জড়ানো কন্ঠে আহনাফ অর্নগল বলতে আরম্ভ করলেন,,

“নেহাল প্রেমিক হিসেবে খুব পার্ফেক্ট ছিলো। একদম তোমার মনের মতো ছিলো। তুমি হয়তো এমন প্রেমিক পুরুষই তোমার লাইফে চেয়েছিলে। তোমার কিছু কিছু কথায় আমি ভীষন আঘাত পেয়েছিলাম। যদি ও ঐ মুহূর্তে প্রকাশ করি নি। তবে ভেতরে ভেতরে জ্বলছিলাম, পুড়ছিলাম। ভেবেছিলাম অন্তত নেহালের সাথে বিয়ে হলে তুমি হ্যাপী থাকবে। নেহাল তোমাকে সবটা দিয়ে সুখে রাখবে। ভাইয়ার কু-নজর থেকে বাঁচবে, উনার ধরা, ছোঁয়ার বাইরে থাকবে। অন্তত একই ছাঁদের নিচে তো আর সংসার করতে হবে না। নেহালের চোখে তোমার জন্য আমি অফুরন্ত ভালোবাসা দেখেছিলাম। কষ্ট হতো আমার তখন। ভীষন কষ্ট হতো। আমি যাকে ভালোবাসি, তাকে আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ও ভালোবাসে। পারছিলাম না, নেহালের হাতে তোমাকে তুলে দিতে। ভেতরটা ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাচ্ছিলো! তবু ও বুকে পাথর চাঁপা দিয়ে আমি বাধ্য হয়েছিলাম নেহালের হাতেই তোমাকে তুলে দিতে। নেহাল তোমাকে এতোটাই চেয়েছিলো যে, তনিমাকে কনভেন্স করেছিলো আমার নামে তোমাকে দু, চারটা মিথ্যে কথা বলতে। তোমার মনে আমার জন্য ভুল বুঝাবুঝি এবং সন্দেহ তৈরী করতে! আমি ও তখন সায় জানিয়েছিলাম নেহালের সিদ্ধান্তে। এছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না আমার হাতে। উভয় সংকটে ভুগছিলাম আমি। শেষ পর্যন্ত অপারগ হয়ে তনিমা নেহালের সাথে ফোনে দু,চারটা মিথ্যে কথা বলেছিলো। যদি ও তুমি সেদিন কথা গুলো বিশ্বাস করে নিয়েছিলে, তবে আমাকে ভালোবাসতে, আমার জন্য অপেক্ষা করতে তুমি ভুলো নি! দু দুবার নেহালের দেওয়া বিয়ের প্রপোজাল তুমি রিজেক্ট করে দিয়েছিলে। বাধ্য হয়ে নেহাল কানাডা ব্যাক করে। তুমি যে আমায় ঠিক কতোটা ভালোবেসে ফেলেছিলে নেহালের কাছ থেকেই আমার জানা। তোমার ভালোবাসার টানেই আমি বাধ্য হই দেশে ব্যাক করতে। ভাইয়ার মুখোশ খুলতে, তোমাকে নিজের করে নিতে। ভাবী এবং তনিমার সাথে করা ভাইয়ার অপরাধের হিসেব নিতে। রক্তের সম্পর্ক বলে আর এক রত্তি ও ছাড় দেওয়া যাবে না ভাইয়াকে। ভাইয়াকে উনার পাপের শাস্তি পেতেই হবে!”

আহনাফের চোখ থেকে টুপ করে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়তেই আমি জলটা হাতের মুঠোয় পুড়ে নিষ্প্রভ দৃষ্টিতে আহনাফের দিকে চেয়ে বললাম,,

“এতো ব্যাথা চেঁপে রেখেছিলেন বুকে? অথচ কখনো মুখ ফুটে কিছু বলেন নি! ভালো ছিলেন তো আমায় ছাড়া? দীর্ঘ দেড়টা বছর?”

#চলবে….?

(রি-চেইক করা হয় নি।ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)