অবশেষে ভালোবেসে পর্ব-০৫

0
987

#অবশেষে_ভালোবেসে
পর্বঃ ০৫
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা

………- yes papa I will. Lets start.
ওর ইশারায় ওর বডিগার্ড গেইট খুলতেই প্রথম ক্যান্ডিডেট ভেতরে আসে। আর মেয়ে টাকে দেখেই নির্ভান বলে উঠলো

– তুমি???
.
– তুমি কেনো এসেছো? আরে ওকে কেনো আসতে দিয়েছো? আমার ইন্সট্রাকশন মনে নেই বলেছি না আগের কোনো সেক্রেটারি এখানে allowed না তাহলে?

– না নির্ভান প্লিজ আমাকে একটা সুযোগ দাও আমি এবার কোনো mistake করবো প্লিজ। just one chance.

– No means nooo for Nirvan you know right?

– কিন্তু প্লিজ নির্ভান জাস্ট একটা চান্স।

– এই বিজি ১ ( বডিগার্ড কে ডাকছে) প্লিজ উনাকে সম্মানের সাথে বের করে দিয়ে আসো। আর যেনো তিনি না আসতে পারেন উনি কেনো আমার আগের কোনো সেক্রেটারি ই যেন এন্টার না করতে পারেন।

– জি স্যার।,, ম্যাম প্লিজ আপনাকে এখন যেতে হবে। বলেই ওকে গেইটের দিক দেখিয়ে দিতেই মেয়েটি বের হয়ে গেলো।
এরপর প্রায় কয়েকজন এলেন ওরা সব ম্যানেজার এর সর্ট লিস্ট করা ক্যান্ডিডেট ছিলো তবুও ওকে দেখে প্রায় সবাই ইন্টারভিউ ঠিক মতো দিতে পারলো না।

– দেখেছো তাই বলেছিলাম সানভি আলাদা ছিলো এদের থেকে।

– বুঝেছি বাবা বুঝেছি জানি ভুল হয়ে গেছে এখন বারবার এক কথা বলা প্লিজ অফ করো পাপা।

– হু যাই হোক…. তিনি তখনই বাহির বডিগার্ড দের কথা শুনতে পেলেন কাকে যেনো ভেতরে আসতে দেয়া হচ্ছে না তা নিয়েই বাহিরে গন্ডগোল হচ্ছে দেখে তিনি ব্যপার টা দেখতে বাহিরে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন কি হয়েছে

– স্যার এইযে বস এর একজন সেক্রেটারি এসে বারবার ভেতরে আসতে চাইছে।
কথা টা শুনে মেয়ে টা ঘুরে তাকাতেই মি.খন্দকার চমকে গেলেন

– সানভি তুমি??

– জি স্যার।

– যাই হোক এসেছো ভালো হয়েছে। এখন চলো ইন্টারভিউ এখনো চলছে।

– নাহ স্যার আমি এখানে ইন্টারভিউ দিতে আসিনি। এই ফাইল টা আমার কাছে ছিলো তা দিতে গিয়েছিলাম অফিসে তো ওইখান থেকে বললো এখানে আছেন তাই দিতে এসেছিলাম আজকে দরকার হতে পারে তাই স্যার।

– কিন্তু তুমি কাজ করবে না কেনো?? আমার ছেলে ওইটা যাই করেছে এখন আর ও এমন কিছুই করবে না আর তোমাকে বদলা তেও হবে না।

– না স্যার আই এম সরি আসলেই আমি এই জব টা করতে পারবো না। বলেই ফাইল টা দিয়ে চলে যাচ্ছিলো।

তখন নির্ভান বের হয়ে এলো,,, পাপা এতো সময় লাগছে কি হয়েছে…. বলতে বলতেই সানভি কে দেখে রীতিমতো শক খেলো

– তু..তুমি?? সানভি??
সানভি কিছু বললো না ওর বাবা ই বললো,,, ফাইল টা দিতে এসেছিলো। যাই হোক আমার এখন ভালো লাগছে না আমি বাড়িতে যাচ্ছি তুমি এদিক টায় সামলে নাও।। বলেই তিনি চলে গেলেন।

– পাপা পা….
ওর বাবার পরই সানভি ও চলে গেলো তাই নির্ভান ওর পিছে গিয়ে বললো

– মিস সানভি মিস সানভি। প্লিজ একটু দাড়ান। সানভি..
সানভি দাড়ালো,,, মিস সানভি আপনি কি জব টা আসলেই করবেন না? যদি আমার বিহেভ এর জন্য খারাপ লেগে থাকে তাহলে আমি সত্যিই সরি।

– নাহ মি.নির্ভান ইটস ওকে আপনার সরি বলতে হবে না আমি আসলেই জব টা করতে পারবো না আসলে আমি ফিট না এই জব টার জন্য।

– না মিস সানভি আসলেই আপনি এই জব এর জন্য পারফেক্ট আমি শুধুই লুকস দেখছিলাম যে জায়গায় প্রয়োজন ছিলো ডেডিকেশন এর। তাই মিস. সানভি,,,,বলেই নির্ভান উঠে এসে সানভির সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো,,, তাই মিস সানভি Please be my Secretary?

তিন বছর পর,,,,,

আজ নির্ভান ওর এক ফ্রেন্ড এর হলুদ সন্ধ্যায় এসেছে পারফর্ম ও করবে। সাথেই আছে একজন বডিগার্ড, নিজের জন্য রাখা স্পেশাল সীট টায় গিয়ে বসলো খুবই নার্ভাস হয়ে আছে নির্ভান পাশের সীট খালি ওর পাশেই একজনের জায়গা রাখা আছে সেও এসে পৌছাবে কিছুক্ষনের মধ্যেই।
.
সানভি হাতে ছোট একটা পার্স আর একটা ছোট্ট গিফট বক্স নিয়ে গাড়ি থেকে বের হতে হতে কাকে যেনো বলছে,,,হ্যাঁ হ্যাঁ আমি এসে পরেছি বাহিরেই আছি। এতো বছরে অনেক বদলে গেছে সানভি আসলে বদলে যায়নি নিজের আগের রুপে ফিরে গেছে ওর বাবার মৃত্যুর আগে যখন সব ঠিক ছিলো ওরা খুশি ছিলো সেই সানভি ই আবার ফিরে এসেছে। পরনে একটা নীল রঙের শাড়ি, ম্যাচিং করা চুড়ি খুব সুন্দর করে সেজেছে হলুদের ফাংশন এ গেলে যেভাবে সাজতে হয় সেভাবেই সেজেছে। ট্যাক্সির ভাড়া মিটিয়ে ঠিক মতো এড্রেস টা মিলিয়ে নিয়ে ভিতরে ঢুকেই যাকে খুজছিলো তাকে দেখে তার দিকে এগিয়ে গেলো।
সানভি কে দেখতে পেয়ে ফাইনালি শান্ত হলো নির্ভান, নীল রঙের শাড়ি তে দেখে তাকিয়ে রইলো সচরাচর সানভি কে শাড়ি তে দেখা যা না। নির্ভান এর দিকে তাকিয়ে সানভি ও হাসি দিয়ে এগিয়ে গেলো।

– ফাইনালি তুমি এসেছো? হাতে ওইটা কি? তুমি কি বিয়ের বদলে আজকেই গিফট দেয়ার চিন্তা করছো নাকি?

– না মি….. কিন্তু ও ওর কথা শেষ করার আগেই পেছনে থেকে একটা মেয়ে বেবি বলে সানভি কে সরিয়ে নির্ভানের দিকে এগিয়ে গিয়ে নির্ভানের পাশের সীট টায় বসে পরলো। যদিও নির্ভান তেমন কোনো রিয়েকশন দিলো না।

– বেবি তুমি আমাকে নিয়ে আসলে না কেনো?? আমাকে একা আসা লাগলো এখানে।

– তো কি হয়েছে এসেই তো পরেছো… আই মিন সেফলি এসে পরেছো।

– হুম আসতে তো হতোই জানো আমি আজকের দিন টার জন্য কতো প্লান করেছিলাম কিন্তু তোমার ফ্রেন্ড এর হলুদ সব নষ্ট করে দিলো।

– কেনো আজকে কি যে তুমি আগে থেকে কতো সতো প্লান করে রেখেছিলে??

– তোমার মনে নেই তুমি ভুলে গেছো??
কথা টা শুনেই নির্ভান সানভির দিকে তাকালো সানভি ও ইশারায় দেখিয়ে দিলো ৩,, নির্ভানকে অনেক বার তিন দেখাতে ও বুঝতে পারলো,,, তিন তিন!! হ্যাঁ তিন মাস হয়েছে আমাদের রিলেশন এর??

– হ্যাঁ হানি, আমরা তিন মাস কমপ্লিট করেছি। আর আজকেই আমাদের three months anniversary.
এই কথায় সানভি মনে মনে বলছে,,[ হায়রে মি.কে কিসব নমুনা দের ডেট করেন যারা এক বছরের এনিভার্সারি কে তিন মাসে ও সেলিব্রেট করে হাও ফানি।]

– যাই হোক হানি আমার গিফট কোথায়??

– আ গিফট!!! বলেই নির্ভান আবার সানভির দিকে তাকায়। তারপর সানভি বক্স টা এগিয়ে দিতে দিতে বলে

– ওহ মি. কে আমি এখন বুঝতে পারলাম আপনি আসলে কেনো হলুদের দিন গিফট আনলেন আমি এখন বুঝতে পারলাম।

নির্ভান ও সানভির এই না জেনেই এতো সব কাজ করে রাখার কারনেই তো এখন ও পর্যন্ত নির্ভানের বেস্ট সেক্রেটারি।।। সানভি কে ছাড়া তো এখন ওর চলেই না। নির্ভান সানভির থেকে গিফট টা নিয়েই ওর পাশে থাকা তিন মাসের গার্লফ্রেন্ড কে দিয়েই বলে এটা তোমার জন্য।।
.
.
.
চলবে।।