অবশেষে ভালোবেসে পর্ব-০৬

0
955

#অবশেষে _ভালোবেসে
পর্বঃ ০৬
লেখিকাঃ মেহেরুন নেসা

………যাই হোক হানি আমার গিফট কোথায়??

– আ গিফট!!! বলেই নির্ভান আবার সানভির দিকে তাকায়। তারপর সানভি বক্স টা এগিয়ে দিতে দিতে বলে

– ওহ মি. কে আমি এখন বুঝতে পারলাম আপনি আসলে কেনো হলুদের দিন গিফট আনলেন আমি এখন বুঝতে পারলাম।

গিফট বক্স টা খুলেই মেয়েটি আহ্লাদে আটখানা হয়ে নির্ভান কে জরিয়ে ধরলো নির্ভান তো ধরলো ই না মেয়ে টাকে। ওই মেয়েকে এমন করতে দেখে সানভি তারাতারি ওকে সরিয়ে বললো

– সরি ম্যাম বাট এটা পাবলিক প্লেস এখানে মি.কে এর সাথে এমন করলে তার ইমেজ এর ক্ষতি হবে।
মেয়েটি রেগে গিয়ে বললো

– এইযে মিস সেক্রেটারি! কি যেনো নাম? হা হোয়াটএভার আমি আমার বয়ফ্রেন্ড এর সাথে কি করি না করি তা তোমার দেখার বিষয় না। সো তোমার ভালো না লাগলে তুমি এখান থেকে সরে যেতে পারো।

সানভি কিছুই বললো না সাইড হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো কারন ও যানে নির্ভান এখন কি করবে। এরকম আরো চার বার অলরেডি হয়ে গেছে বিগত এক বছরে, হ্যাঁ এক বছর আগেও নির্ভান এমন করতো না। এন্ড হ্যাঁ নির্ভান একজন প্লেবয় হওয়া সত্বেও নিজের প্রেস্টিজ এ সে এক ফোটা দাগ ও লাগতে দেয়নি।

– চলো নেহা ( মেয়েটার নাম) বলিয়ে উঠে দাড়ালো নির্ভান।

– কোথায় বেবি।

– এখানে খুব ডিস্টার্ব হচ্ছে আমাদের আমাদের এখানে থেকে কোনো….

– ওকে ওকে বেবি চলো আই এম রেডি। বলেই উঠে ও নির্ভানের সাথে চলে গেলো। আর ওদের যাওয়ার পর সানভি ওই চেয়ার টা গিয়ে বসলো স্টেজ এ বর কনের ফটোসেশন হচ্ছে দুইজন কে কি খুশি ই না লাগছে নিশ্চয়ই লাভ ম্যারেজ হবে। মেয়েটাকে এমন খুশি দেখে সানভির ও খুব প্রেমে পরতে ইচ্ছে করছিলো বিয়ে করার স্বপ্ন জাগছিলো।

– কি তোমার ও বিয়ে করার ইচ্ছে হচ্ছে নাকি?
কথা টা শুনে পাশে তাকাতেই দেখে নির্ভান এসে বসে আছে।

– Again Mr.K?? নেহা ম্যাম কোথায়?

– Block her. আর হ্যাঁ সুইট সান এ ওর নামের রিজার্ভেশন টার পেমেন্ট করে দিও।

– ওর সাথে রিলেশন এর তিন মাস হয়েছিলো তাই ভেবেছিলাম আপনি সিরিয়াস বাট এবার ও??

– হ্যাঁ। তুমি তো জানোই নির্ভান নিজেকে খুব বেশি ভালোবাসে তাই অন্য কেউ!! চান্স ই নেই।

– বাট এবার কেনো??

– ও তোমাকে এই নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো কথা শুনিয়েছে আর তুমি এটা ভালো করেই জানো আমি এক ভুল এক বারের বেশি মেনে নেই না।

– এবার ও কি বাকি চার বারের মতোই??

– হ্যাঁ।

– বাট মি.কে….

– আহ আমার পারফরম্যান্স এর টাইম হয়ে গেছে। জাস্ট ওয়েট এন্ড সি।
নির্ভান উঠে চলে গেলো রেডি হতে পারফর্ম করবে তাই। সানভি বসে আবার কাপল টা কে দেখায় মনোযোগ দিলো।।

নির্ভান ওই মেয়ের সাথে কি করেছে জানতে চান! অবশ্যই।
“নির্ভান ওই মেয়ে টাকে নিয়ে বাহিরে গিয়েছে গাড়িতে উঠিয়েছে তারপর বলেছে আমার এখানে পারফর্ম করতে হবে তাই এখন তুমি হোটেল সুইট সান এ যেয়ে তোমার নামে রিজার্ভেশন দাও আমি কিছুক্ষনের মধ্যেই আসছি বলেই মেয়েটি কে বিদায় দিয়ে দিয়েছে। আর ওর সাথে কোনো কন্টাক্ট রাখবে না। তাই তো বলছে ব্লক করে দিতে মানে সব কিছু থেকে ব্লক করে দিবে সানভি নেহা কে। নির্ভান এর সাথে দেখা করা বা কথা বলার নো চান্স। “”

হটাৎ কোনো কারন ছাড়াই কেনো এমন করে নির্ভান! কারন হচ্ছে এটা ওর রুল ওর কোনো ডেট যদি ওর আশেপাশের কোনো ক্লোজ মানুষ কে ইনসাল্ট করে বা ওদের কোনো কথা শুনায় ব্যাস হয়ে গেলো আর ওই মেয়ে নির্ভান এর আসেপাশে ও আর আসতে পারবে না। আর সানভি এখন ওর এমন একটা মানুষ হয়ে গেছে যাকে ছাড়া ওর চলেই না আর সেই মানুষ টা কে যদি কেউ কিছু বলে তখন নির্ভান রিয়েক্ট তো করবেই। তাই মেয়েটাকে সুন্দর করে নিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে বিদায় দিয়ে দিয়েছে।
নির্ভান পারফর্ম করছে আর সানভি খুব সুন্দর করে নির্ভানের কয়েক টা পিক তুলে নিলো নির্ভানের পেইজে পোস্ট করবে বলে। নির্ভানের গান আগে সানভির ভালো লাগতো না কিন্তু এখন শুনতে শুনতে অভ্যাস হয়ে গেছে তবুও বাসায় ফিরলে একটু ঠান্ডা গান শুনতে খুব পছন্দ করে। যদিও বেশি সময় পায় না ও বাসায়, নির্ভানের সাথেই কাজে অনেক সময় কেটে যায়।
.
নির্ভানের পারফরম্যান্স শেষেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছে সাথে সানভি ও আছে

– মিস.সান যা বলেছিলাম সব করা হয়ে গেছে??

– হ্যাঁ মি.কে আপনার কথা মতো ওকে ব্লক করে দিয়েছি সব কিছু থেকে আপনার সিকিউরিটি ইভেন্ট ম্যানেজার সবাই কে জানিয়ে দিয়েছি যে নেহা ব্লকড, আর পেমেন্ট ও করিয়ে দিয়েছি।

– গুড। ওহ হ্যাঁ ড্রাইভার আগে মিস.সান কে নামিয়ে দিয়ে দেন আমার স্টুডিও তে নিয়ে চলো।

– না স্যার আমাকে ওই সামনে নামিয়ে দিলেই আমি চলে যেতে পারবো।

– বলেছি মানে বলেই দিয়েছি মিস.সান।
সানভি বুঝতে পেরে আর কথা বাড়ালো না জানে এখন কিছু বলাই বৃথা।

– মি.কে কালকে তো আপনার কোনো রেকর্ডিং বা কোনো মিটিং কিছু নেই!?

– নাহ কেনো?

– না মানে মি.কে আমি ভাবছিলাম কি যে কালকের দিন টা তাহলে আমি ছুটি নেই?
ওর কথা শুনে নির্ভান জোরে জোরে হাসছে যেন সানভি কোনো জোক শুনিয়েছে।,,,,,হা হা তুমি মজা করছো তাই না? তুমি আর ছুটি চাই!!

– হ্যাঁ তাতে কি হয়েছে মি.কে? আমি ছুটি নিতে পারি না?

– ছুটি নিবে ওকে নাও। আমি তো হাসলাম যে তুমি এতো বছরে এক বার ও নিজের থেকে ছুটি চাও নাই তোমার মুখে ছুটি চাওয়ার কথা শুনে আমার মনে হলো আমি জোকস শুনছি। বলেই আবার হাসতে লাগলো।
.
পরেরদিন সকালে আরামে আড়মোড়া দিতে দিতে উঠলো সানভি অনেক দিন পর অনেক ভালো একটা ঘুম হয়েছে পুরো ঘুম দিয়ে উঠতে পেরেছে কোনো এলার্মের শব্দে নয়। এতোদিন বেশি রাতে ঘুমিয়েছে যার কারনে ভোর দেখা আর হয়ে উঠেনি আজ মন ভরে ও ভোরের আনন্দ লুফে নিবে। হাম দিতে দিতে উঠে গিয়ে কফির পানি বসিয়ে দিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে কফি আর পেপার নিয়ে বসলো। কফি টা শেষ করেই ভাবলো এখন গিয়ে একটু বাহিরে থেকে ঘুরে আসবে আর পছন্দের বাজার করে এনে রান্না করবে আর ইলা কে ও বলবে কাজ শেষ করে বাসায় আসতে, দুইজন মনের সুখে গল্প করবে। ভাবতেই খুশি খুশি লাগছে।
.
বিভিন্ন স্টোর ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জিনিস পত্র নিয়ে বাজার থেকে বাকি সব কাচা বাজার নিয়ে বাসায় ফিরছিলো তখনই ফোন বেজে উঠলো, ব্যাগ থেকে ফোন টা বের করতে করতে বলতে লাগলো উফফ মি. কে না আজকে ছুটি তে আছি তবুও। কল টা পিক করে কে কল করেছে না দেখেই

– জি মি. কে.?

-……..

– ওহ আপনি হ্যাঁ বলুন।

-……..

– কি?? কি বলছেন এসব আমি এখন ই আসছি….
..
.
.
চলবে।