এক বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা পর্ব-৪৪+৪৫

0
1307

#এক_বৃষ্টিস্নাত_সন্ধ্যা
৪৪.(এক্সট্রা পার্ট)
#WriterঃMousumi_Akter

জোসনা মাখা চাঁদ সেদিন ও সাক্ষি ছিলো আমাদের ভালবাসার আজ ও সাক্ষী আমাদের ভালবাসার।এইজন্যই বুঝি চাঁদের সাথে আমার এত ভাব।এই সেই দিনটা যেদিন সবার আড়ালে বিহান ভাই এর সাথে আমার বিয়ে হয়েছিলো।এই দিন টা আমার জীবনের সব থেকে দামি একটা দিন।এই দিন টা না এলে বিহান ভাই ভালবাসার পূর্ণতা অনুভব করতে পারতাম নাহ।কেটে গেছে বেশ কিছুক্ষণ সময়।বিহান ভাই কে বললাম আপনার মনে ছিলো আজকের দিনের কথা।

“উনি চোখের পানি হাত দিয়ে মুছিয়ে দিতে দিতে বললেন আমাকে কি মনে হয় আপনার মিসেস বিহান।আমার ব্রেইন কি এতটায় খারাপ।যেদিনে কাগজে কলমে সাক্ষর করে আমি তোমার হয়েছি সেইদিন টা ভুলে গিয়েছি।এই দিন এসছিলো বলে আমার জীবনে এত সফলতা।টেনশন ফ্রি লাইফ লিড করছি।”

“আর আমি ভেবেছি আমাকেই মনে নেই।আর এই দিন টার কথা।”

“একজন হার্টের ডাক্তার মানুষের হার্ট নিয়ে গবেষণা করে তাই বলে কি তাদের হার্ট থাকে না।এই হার্টের ডাক্তারের হার্ট এর দখল অনেক আগে থেকেই অন্য কেউ নিয়ে বসে আছে তাইতো বোঝে না সে বোঝে না।”

“আবার ও গাল ফুলিয়ে রইলাম আমি।”

“বিহান ভাই আমার দুই গালে হাত দিয়ে বললেন পিচ্চি বিয়ে করলে কত মুশকিল।শুধু ভুল বোঝে কথায় কথায় রাগ করে।”

“তা এইবার একটা বুড়ি দেখে বিয়ে করুন।প্রেয়সী আছে না ওই বুড়ি মহিলাকে বিয়ে করুন।আপনার স্টাটাস আর ওর স্টাটাস তো সেইম।দুজনেই নাম করা ডাক্তার।আমার মতো সাধারণ ছাত্রী তো আর আপনার পাশে মানায় না।উনার সাথে আপনাকে ভালোই মানায়।”

“আহ জেলাসি।যাক সিওর হলাম আমার প্রতি ভালবাসা টা আছে।”

উনি আমার হাত ধরে কাশফুলের মাঝে বসিয়ে দিলেন আমার কোলে মাথা রেখে মাঠের মাঝেই সুয়ে পড়লেন।আমার হাত দুটো ধরে উনার মাথায় দিয়ে বললেন একটু হাত বুলিয়ে দাও তো।তোমার এই নরম হাতের ম্যাসাজ পেলে ক্লান্তি দূর হবে।

“আমি অবাক হয়ে বললাম বিহান ভাই আপনি এইখানে এইভাবে সুয়ে পড়লেন ভাবা যায় ব্যাপার টা।”

“বিহান এখন সব পারে বিহান বউ এর জন্য কাশবনে ও আসতে পারে।এই বিহান কে প্রেমের অস্ত্রোপচার করেছে শ্বশুরের একমাত্র মেয়ে।”

“আসলেই অবাক হচ্ছি এতটা চেঞ্জ।”

“জ্বী ম্যাডাম। এখন বলোতো দিয়া তোমার মনে এই বাজে আর জঘন্য চিন্তা ভাবনা টা কে ঢুকিয়েছে তুমি ডাক্তার না হলে আমার পাশে বেমানান।বিহানের পাশে একমাত্র দিয়াকেই মানায়।দিয়া যে পরিস্থিতিতেই থাকুক না কেনো?বিহান ভালবেসেছিলো সেই মেয়েকে যে পিচ্চি মেয়েটা ছোট বেলা বিহানের সামনে এসে বলতো বিহান ভাইয়া আপনি না অনেক সুন্দর আপনাকে অনেক ভাল লাগে আমার কাছে।আমি না বর বউ খেলছি কিন্তু বর পাচ্ছি না আপনি আমার বর হবেন।যদিও তখন আমিও ছোট প্রেম ভালবাসা বুঝতাম না।ওই বউ বউ খেলার বয়সে দিয়া আমার মনে জায়গা করে নিয়েছিলো।দিয়াটা বেশ গুলুমুলু আর মায়াবী ছিলো ছোট বেলা থেকেই।সারাক্ষাণ নূপূর পায়ে দিয়ে পায়ে আলতা পরে নেচে বেড়াতো।খুব হাসতো হেসে গড়াগড়ি যেতো যেকোনো কারণে।এসে আমাকে বলতো বিহান ভাইয়া আমাকে একটু কোলে নিন হেঁটে পায়ে ব্যাথা করছে।সেই পিচ্চি বয়সে বলতো আমার মাথায় পেইন করছে বই পড়তে গিয়ে।আমার কোমরে পেইন করছে বই পড়বো না।আমি মেরে মেরে বই পড়াতে বসাতাম।পেত্নির মতো ছোট বেলা থেকে আমার সামনে দিয়ে ঘুরতে ঘুরতে মন কেড়ে নিয়েছে।আমার মনে সেই দিয়ার বসবাস।কোনো ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার, কোনো মন্ত্রি, মিনিষ্টার দেখে আমি ভালবাসিনি।দিয়া যেমন তেমন ই পারফেক্ট আমার কাছে।আমি কি ছোট বেলায় জানতাম দিয়া বড় হয়ে দেখতে কেমন হবে ওর হাইট কেমন হবে ও স্টুডেন্ট কেমন হবে এগুলার কিছুই জানতাম না ও যেভাবে বড় হয়েছে সেভাবেই ভাললাগার মাত্রা বেড়েছে।”

“এই যে ও ও করছেন ও টা কে?”

“ও টা আমার একমাত্র বউ মানে তুমি।তুমি আমার ভালবাসা কে অপমান করেছো আর আমাকে ছোট করেছো।এমন তো হতে পারতো আমি ডাক্তার হতে পারলাম না তাহলে কি আমায় ছেড়ে যেতে, আমি জানি যেতে না।কারণ আমি জানি আমার দিয়ে আমায় কতটা ভালবাসে।আয়রা ফোন নিয়ে গেলে আমি তোমার ছটফট করা যন্ত্রণা দেখেছি আমি বুঝেছিলাম এই কাঁন্নার কারণ এক মাত্র আমি।তখন ই ব্যাগ গুছিয়ে চলে এসছি সারারাস্তা চোখ দিয়ে পানি পড়েছে আমার।দিয়া ডাক্তার হলেই যে তুমি পারফেক্ট এটা ভুল ধারণা।একটা রাস্তা বন্ধ তো হাজার টা রাস্তা খোলা।আমার জন্য তোমার ভালো কিছু করতেই হবে এমন টা না দিয়া।তুমি যেমন এভাবেই তোমাকে নিয়ে হ্যাপি আমি।কিন্তু তোমাকে তোমার জন্য সামনে এগোতে হবে।তোমাকে এই পরিচয়ে বাঁচতে হবে না তুমি বিহানের ওয়াইফ আমি চাই তুমি তোমার পরিচয় বাঁচো।আমি যেনো বলতে পারি দিয়া আমার ওয়াইফ।আমি তোমার পরিচয় এ গর্ববোধ করতে চাই।দিয়া এই ডাক্তারি তে চান্স না পাওয়ার জন্য অনেক কেঁদেছো তুমি।তোমার চোখের অনেক পানি ঝরেছে এই চান্স না পাওয়ার জন্য।আমি তোমাকে গাইড করতাম বলে ভেবেছো আমি ডাক্তার ই লাইক করি।না দিয়া আমি চেয়েছি ফুপ্পির স্বপ্ন পূরক হোক তুমি অনেক বড় হও।এর সাথে আমার পাশে তোমাকে মানানো না মানানোর কোনো সম্পর্ক নেই।তুমি আমার মানে শুধু আমার ই।কেনো নিজেকে এতটা সস্তা করবে তুমি আমার সামনে।আমি কেনো পৃথিবীর কারো কাছে সস্তা হবে না তুমি।তোমার মুড টা যদি এমন হতো বিহান ডাক্তার হয়েছে তাতে কি আমি কি কম কিছুতে ও ডাক্তার হয়েছে বলে আমি ওর পাশে বেমানান কিভাবে হলাম।ভালবাসার সাথে মানামানির কি কানেকশন। এই পিচ্চি এর পরেও কি মুখ গোমড়া করে থাকবে।আমি কি বোঝাতে পেরেছি। ”

“আপনি নিজেই তো বলেছেন আপনি আপনার থেকে বড় ডাক্তার বিয়ে করবেন।”

“ঠিক ই বলেছি কারণ দিয়া একদিন ডাক্তার হবে।আমি নিজ হাতে দিয়াকে মেডিকেল এ ভর্তি করাবো।আমি জানি দিয়ার মাঝে ট্যালেন্ট আছে।মানুষ চেষ্টা করলে সব পারে দিয়া।ব্রেইন বলে কিছু নেই সব ই চেষ্টা।”

বিহান ভাই আমার দিকে চোখ উলটে তাকিয়ে বললেন মুখ এখনো গোমড়া কেনো।

বিহান ভাই কে আবার ও কেঁদে দিয়ে বললাম সরি বিহান ভাই। আমি ভুল বুঝেছি আপনাকে।আমাকে ক্ষমা করে দিন প্লিজ।আপনার ওই প্রেয়সি আমাকে কাল কল দিয়ে বলেছে আপনার আর উনার বিয়ে।আপনার পাশে আমাকে যায় না।আমাকে অনেক অপমান করেছে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি।প্রেয়সীর বলা সব কথা খুলে বললাম বিহান ভাইকে।

বিহান ভাই পকেট থেকে ফোন বের করে ফোন দিলেন প্রেয়সীকে।ফোন টা লাউডে দিলেন।প্রেয়সী ফোনটা রিসিভ করলে বিহান ভাই বললেন তোকে কিছু বলতে হবে না আমি যা বলছি সেটা মন দিয়ে শোন।তোর মতো বাজে মাইন্ডের মেয়ে দিয়া না তাই তোকে তোর যোগ্য জবাব দিতে পারে নি।মানুষ কুকুর কে কামড় দিলেও কুকুর মানুষ কে কামড় দেয় না।দিয়া ডাক্তারিতে চান্স পাবে প্রেয়সী সেদিন তোকে বাকি জবাব দিবো । আর শোন ভুলেও যেনো আমাকে তোর সাথে জড়িয়ে কিছু বলিসনা আমার একটা সম্মান আছে মাইন্ড ইট।

কল টা কেটে দিয়ে বললেন,ঢাকায় যায় প্রেয়সীর বাকি ব্যাবস্থা করতেছি।উফফ আমার অজান্তে কত কি হয়ে যায় আর আমি কিছুই জানিনা।

বিহান ভাই কে বললাম আমাকে এইখানে কিডন্যাপ করে এনেছেন ক্যানো?কারা ছিলো তারা।

বিহান ভাই হেসে দিয়ে বললেন,রিয়া,মেহু আর বিভোর ছিলো।

আমি অবাক হয়ে গেলাম ওরা এত মুখোশ পরে আমাকে এখনে নিয়ে এসছে আর আমি বুঝতেই পারলাম না।

বিহান ভাই বললেন তুমি না ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলে তোমার সাথে কাশফুল দেখা হলো না।সেদিন ই ভেবেছিলাম সারপ্রাইজ দিবো।সারপ্রাইজ টা কিডন্যাপ করে হলে মন্দ কি শ্বশুরের মেয়ে।

আমি জাস্ট অবাক হয়ে গেলাম উনি কি ম্যাজিক জানেন আমার মন ভাল করার।বিহান ভাই এবার সোয়া থেকে উঠলেন আর আমাকেও উঠালেন।পকেট থেকে কিছু একটা বের করলেন চিক চিক করছে সাদা পাথরের কিছু একটা।আমার নাকে একটা চুমু দিয়ে উনার হাতে থাকা সাদা পাথরের নাকফুল টা পরিয়ে দিলেন।আমি জাস্ট অবাক হয়ে গেলাম।উনি আমার জন্য ভেবে কিনেছেন।নাকফুল টা পরিয়ে দিয়ে বললেন এবার বউ বউ লাগছে।

এই স্নিগ্ধ চাঁদের আলোতে উনার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছি সাদা কাশবনে।আচ্ছা এই উনি টা এত সুন্দর হতে গেলো ক্যানো?আর এতটা ম্যাজিশিয়ান ক্যানো?

বিহান ভাই কয়েক টা কাশফুল ছিড়ে হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন আমার সামনে।ফুল গুলো আমার সামনে ধরে বললেন দিয়া আরো কয়েক টা যুগ এমন ভালবাসা নিয়েই এই দিন টা তোমার সাথে কাটাতে চাই।তোমাকে আমি ভালবাসি শ্যামাপাখি।আমাকে কি এইভাবেই আগলে রাখবে সারাজীবন।ফুল গুলো উনার হাত থেকে নিয়ে উনার কপালে একটা চুমু দিলাম আমি।প্রকৃতি মৃদু হাওয়া দিচ্ছিলো মাঝে মাঝে দুই একটা পাখির কিচির মিচির আর চাঁদ ও হেসে বললো হ্যাপি এনিভার্সারী বিহান দিয়া।

চলবে,,

#এক_বৃষ্টিস্নাত_সন্ধ্যা
৪৫.
#WriterঃMousumi_Akter

নিস্তব্ধতা চারদিকে,কোথাও কেউ নেই যতদূর চোখ যায় শুধু সাদা সাদা কাশফুল দেখা যাচ্ছে।ওর কি প্রেমিক প্রেমিকাদের ভালবাসার সাক্ষী হওয়ার জন্য জন্ম নিয়েছে।না জানি কত প্রিয় দের প্রিয় তম মুহুর্তের সাক্ষী ওরা। চাঁদের সোনালি আলোতে জোসনা বিলাস প্রিয় মানুষ টার সাথে করার মতো সৌভাগ্য সবার থাকে না।আমি বোধ হয় সত্যি খুব লাকি না হলে উনাকে পেতাম না।বিহান ভাই কে বললাম আচ্ছা আমি তো আপনাকে কিছুই দিলাম না।আজ না আমাদের এনিভার্সারী আমার তো কিছু একটা গিফট দেওয়া উচিত।বিহান ভাই বললেন,হুম সিওর দাও আমাকে গিফট। আমি মুখ কাজুবাজু করে বললাম এই মুহুর্তে দেওয়ার মতো কিছুই নেই কাল কিছু কিনে দিবো।উনি জেদ ধরলেন উহু এক্ষনি দিতে হবে আমাকে কিভাবে দিবে আমি জানিনা।মন খারাপ করে বললাম কি দিবো বিহান ভাই কিছুই তো নেই এখানে।বিহান ভাই হেসে দিয়ে বললেন চাইলেই অনেক কিছুই দিতে পারো।তোমার প্রিয় চাঁদ কে সাক্ষী রেখে স্বামি কে একটু আদর তো করতে পারো তাইনা।গিফট কি সব সময় টাকা দিয়ে কিনে দিলেই হয়।উনার কথার মানে খুব ভালোই বুঝলাম আমি।বিহান ভাই কে বললাম একটু নিচু হন। বিহান ভাই খানিক টা নিচু হয়ে আমার মুখের কাছাকাছি আসলেন।ইস কি লজ্জা।উনার সাথে এসব ভাবতেও লজ্জা করে।এক হাত দিয়ে উনার চোখ বন্ধ করে ধরে উনার গালে একটা চুমু দিয়ে দৌড় দিলাম।বিহান ভাই আমাকে ছুটতে দেখে বললেন শ্যামাপাখি এইভাবে দৌড়ালে তোমাকে মনে হচ্ছে কাশবনে নেমে আসা সদ্য কোনো সাদা পরী।এমনিতেই মন প্রাণ শ্যামাপাখিতে আসক্ত। শ্যামাপাখির সাথে কাঠানো সেই সুন্দর রাত টা ধরে রাখার ক্ষমতা আমার নেই তবে ক্যামেরা বন্ধী করতে পারি কিছু মুহুর্ত। যে মুহুর্ত আমাকে বার বার মনে করাবে চঞ্চল এক পাখি তার কিছির মিচির হাসির শব্দে অকৃষ্ট করেছিলো আমাকে।ছুটতে ছুটতে কখন যেনো ধরা পড়ে গেলাম উনার হাতে।বিহান ভাই আমার হাত ধরে গান করছেন এই প্রথমবার উনাকে এইভাবে গান করতে দেখলাম।

Give me your love
Give me your love
Never let you go
Give me your love
Give me your love
Never let you go, go
We get lost, we can get high
You got me gone, I feel alive
Anywhere, anyway I will love you
(You, you, you, you, I will love you)
We rule the world, just you and I
Don’t let me down, we walk the line
When everything’s gone wrong
I take a shot for you (You, you, you, you, you, you)
Give me your love

বিহান ভাই এর গান শুনে আমি উনার দিকে তাকিয়ে হাসছি।আমার মুখে এমন হাসি দেখে বিহান ভাই গাল ভরে হাসলেন।উনাকে এইভাবে এর আগে কখনো হাসতে দেখি নি।বিহান ভাই হেসেই যাচ্ছেন, উনার হাসি দেখে আমি সত্যি অবাক উনি এত হাসতে জানেন।

মেহু আপু একা একা কাশবন দিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছে।জোসনার ছবি তুলছে। আমাদের সবার সব থেকে সাপোর্টিং মানুষ টা মেহু আপু।ভাইয়ার সাথে মেহু আপুর বিয়ে টা যেভাবেই হোক দিতেই হবে।

বিভোর ভাই আর রিয়া দুজনে হাত ধরে গল্প করেই যাচ্ছে।আমি বিহান ভাই কে ভয় পাই ওইদিকে রিয়াকে ভয় পায় বিভোর ভাই।

বিভোর ভাই রিয়া কে বলছেন, আমি জানি আগামিবার চান্স পাবে তুমি না পেলেও প্রাইভেটে ভর্তি হয়ে যাবে।একদিন অনেক বড় ডাক্তার হবে।সেইদিন নিয়মিত বিভিন্ন বাহানায় তোমার কাছে পেশেন্ট হয়ে যাবো।গিয়ে বলবো প্রেসক্রিপশন এ লিখে দিন ম্যাডাম ডাক্তারের মুখের হাসি দেখলে সুস্থ হয়ে যায় আমি।

“রিয়া বললো শুধু এটুকুই।”

“হুম এটুকুই জাস্ট এই হাসিতেই আমার সব অসুখ ভালো হয়ে যাবে।”

“আমি ভাবলাম অন্য কিছু।”

“অন্যকিছুটা কি রিয়া।”

“উম্মম্মম্মমাহ বলেই বিভোর গালে রিয়া একটু চুমু দিয়ে বললো ভেবেছিলাম এটা হলে অসুখ সারবে।”

“বিভোর ভাই ভাষাহীন হয়ে গেলেন।বিভোর ভাই ভাবতেই পারেন নি রিয়া এমন টা করবে।বিভোর ভাই গোল গোল চোখ করে রিয়ার দিকে তাকিয়ে বললো রিয়া আমার হার্টে লেগেছে। কেউ মনে হয় তীর মেরেছে।ভূমিকম্পন হচ্ছে।”

“রিয়া হেসে দিয়ে বললো একটা চুমুতেই এই অবস্থা না জানি আরো গভীরে গেলে কি হবে।আপনাকে বিয়ে টিয়ে করে লাভ নেই।আপনাকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না।কথায় কথায় যদি হার্টে সমস্যা হয় সারাবছর বিহান ভাই এর পেশেন্ট হয়ে থাকতে হবে।”

“বিভোর ভাই রিয়ার হাত টেনে ধরে নিজের কাছাকাছি নিয়ে এলেন।রিয়ার উষ্ণ নিঃশ্বাস বিভোর ভাই এর চোখে মুখে পড়ছে।বিভোর ভাই এক হাত দিয়ে রিয়ার কোমর জড়িয়ে ধরে আরেক হাতের আঙুল দিয়ে চোখে মুখে স্লাইড করতে করতে বললেন আমাকে এমন মনে হয়। আমি কত বেশী রোমান্টিক দেখতে চাও।আমার থেকে বেশী রোমান্স কেউ পারবে না বুঝলে রিয়া রাণী।সমস্যা তোমার সামনে আসলে আমি বোকা হয়ে যায়।শুধু তোমাকেই দেখি অন্য কোনদিকে হুঁশ থাকে না।”

“রিয়ার সব লজ্জা যেনো নাকের ডগায় গিয়ে ভীড় জমিয়েছে।রিয়া বললো থাক হয়েছে আর দেখতে চাই না বুঝেছি আপনি একজন রোমান্টিক পুরুষ। এবার ছাড়ুন।”

“ছাড়তে পারি আগে বলো ডাক্তার হলে কি আমায় ভুলে যাবে রিয়া।”

রিয়া বিভোর ভাই কে বললো ডাক্তারি পড়বো না। আমাকে বিয়ে করুন আজ ই।

বিয়ে করবো বিহান কে বলবো তোমার আম্মুকে বলতে।

বিহান ভাই কি দিয়া কে ভুলে গিয়েছে আগে সেটা বলুন।বিহান ভাই এর জীবনে দিয়া ছাড়া কিছুই নেই।আমার ও সেইম আপনি ছাড়া কেউ নেই জীবনে।আমার একটাই পরিচয় হবে সেটা হলো মিসেস বিভোর।

বিভোর ভাই খানিক টা স্বস্তি পেলেন রিয়ার কথা শুনে।

———————————————————
ইদানিং লেখাপড়াতে ভীষণ মনোযোগ দিয়েছি রিয়া আর আমি সব সময় বই নিয়েই পড়ে আছি।এবার মনে একটা কনফিডেন্স আছে হয়তো ভালো কিছু হবে।মন ভালো তো দুনিয়ার সব ভালো।বিহান ভাই আমাকে টেনশন মুক্ত করে দিয়ে গেছেন।নিশ্চিন্তে বই পড়ছি।বিহান ভাই এখন সারাক্ষণ কল দেন আমাকে তবে সেটা প্রেম করার জন্য নয় সেটা হলো বই পড়ার জন্য।আচ্ছা উনি কি মাঝে মাঝে ভুলে যান যে আমি উনার বউ।বলতে তো পারে হ্যালো সোনা ক্যামন আছো তা না কাল রাতে যেগুলো বলেছিলাম ওগুলোর পড়া দে।এখন উনার কল একটা আতঙ্কের নাম হয়ে গিয়েছে।উনার মাঝে ইদানিং বর টরের তেমন একটা ভাব নেই।এখন উনি জল্লাদ টিচার আমার।

দুপুর গড়াতেই মেহু আপু এসছে আমাদের বাসায়।আমার রুমে এসে সুয়ে পড়ে বললো দিয়া কয়েকদিন ডিপ্রেশন এ ছিলাম তুই আর বিহান ভাই রিলেশন এ ভাবা যায়।আসলেই কি রিলেশন নাকি তোর মন ভালো করতে এগুলা করলেন।তুই আমার একটা মাত্র ননদ হবি কোথায় তোর বরের সাথে একটু আড্ডা দিবো মজা টজা করবো তা না তুই জাহান্নামের চৌরাস্তা কে জুটিয়েছিস।উনার যে রাগ বাবাহ ভাবলেই ভয়ে পরাণ চমকে যায় আমার।বিহান ভাই সব দিকে ভালো তবুও ভয় লাগে খুব।মেহু আপুকে বললাম আমার ও ভয় লাগে আপু।বাট ছোট বেলার ক্রাশ তাই ভুলতে পারি না।আচ্ছা মেহু আপু বিয়ের পর কি উনি চেঞ্জ হবেন না।মেহু আপু বললো উনি চেঞ্জ হবে ভাবা যায়।যাক বাবা শুভ টা অনেক ভালো রাগ টাগ নেই বেঁচে গেছি।একটা কষ্টের নিঃশাস নিয়ে বললাম হুম আপু আমার কপাল টাই খারাপ।

ফোনে মেসেজের সাউন্ড দেখে ফোন চেক করে দেখি বিহান ভাই মেসেজ করেছেন আমি পথে বাসায় আসতেছি তুই দ্রুত রেডি হয়ে আমাদের বাসায় আয়।আমি যেনো বাসায় গিয়ে তোর মুখ দেখি।

ফোন টা রেখে মনে মনে বললাম আমাকে ডেকে নিয়ে দুনিয়ায় অশান্তি ছাড়া তো শান্তি দিবেন না।না জানি কি কি ভেবে এসছেন।

চলবে,,