লাভ গেম পর্ব-১০

0
788

#লাভ_গেম
#ফাবিহা_নওশীন

১০.

আদ্রিশ জিএম সাহেবের সাথে কথা বলছে।রুশা একবার ওদের বসার ঘরে দেখে নিজের ঘরে চলে গেল। আদ্রিশ জিএম সাহেবের সাথে অফিসের বিষয়ে কথা বলছে।
“স্যার, এখন আর আমাদের চিন্তার কিছু নেই।”
“আছে, কে বা কারা এমন করল জানা জরুরি। নয়তো আমরা নিরাপদ নই। অফিসের সিকিউরিটি সিস্টেম আরো কড়া করুন। আমি কমিশনারের সাথে কথা বলছি।কিছু একটা করতেই হবে। যেকোনো মূল্যে ওই ব্যক্তিকে আমি চাই।”

আদ্রিশ প্রফুল্লচিত্তে ঘরে যাচ্ছে। ঘরে গিয়ে টাই খুলতে খুলতে আলমারি খুলল। রুশার মনে হচ্ছে আদ্রিশের সমস্যার সমাধান হয়েছে। আদ্রিশ আলমারি থেকে জামাকাপড় নিয়ে রুশার দিকে তাকাল। রুশা কৌতূহল নিয়ে চেয়ে আছে।
“ডেটাগুলো পেয়ে গেছি। যে এত কষ্ট করে সব নষ্ট করেছে তার কষ্ট বিফলে গেছে।”
রুশা মৃদু হাসল। যাক আদ্রিশ শান্ত হয়েছে। ওর শান্ত থাকা সবার জন্য জন্য জরুরি। আদ্রিশের আজকে বেশ ভালো লাগছে। রুশা আজ ওকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছে। ওর সাথে সহজ হচ্ছে।
ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখল রুশা শুয়ে আছে। ওর দৃষ্টি স্থির। রুশার জীবনটা বোরিং লাগে। সারাক্ষণ এই বাড়ির ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকো। বের হওয়া নিষেধ। কারো সাথে কথা বলা যাবে না। ওর আশ্রমেও যাওয়া হয় না অনেক দিন।
“রুশা তৈরি হয়ে নেও। আমরা বের হব।”
“এই রাতে কোথায় বের হব?”
আদ্রিশ কিছু না বলে আলমারি থেকে রুশার জন্য একটা ড্রেস বের করল। তারপর ড্রেসটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখল।
“রুশা এটা পরে নেও।”
রুশা বুঝতে পারছে না এই রাতে যাবে কোথায়। রুশা প্রশ্নবোধক চিহ্ন ঝুলিয়ে চেঞ্জ করতে চলে গেল। রুশা চেঞ্জ করে এলে আদ্রিশ একবার ওকে দেখল। রুশা আয়নার সামনে বসে তৈরি হচ্ছে।

রুশা তৈরি হয়ে নিচে গেল। আদ্রিশ সোফায় পা ঝুলিয়ে বসে আছে। রুশাকে দেখে উঠে ওর হাত ধরল।
“আমরা কোথাও যাচ্ছি?”
“বাইরে ডিনার করতে যাচ্ছি। বাড়িতে বসে থাকতে থাকতে বোর হয়ে যাচ্ছো, তাই ভাবলাম তোমাকে নিয়ে একটু ঘুরে আসি।”
রুশা চোখ বড়বড় করে তাকাল। কি করে বুঝল ও বাড়িতে বসে থাকতে থাকতে বোর হয়ে যাচ্ছে।
আদ্রিশ ওকে দেখে বলল,
“তুমি কখন কি ভাবো আমি সব জানি।”
রুশা মনে মনে ভাবছে,
“ওর হার্টে কোনো ডিভাইস লাগিয়ে রাখেনি তো।”

ওরা প্রথমে লং ড্রাইভে গেল। রুশা বেশ ভালো লাগছে রাতের শহরটা। আদ্রিশ ওর পাশে বসে ড্রাইভ করছে। রুশা একবার এদিক আরেকবার ওদিক দেখছে। বাচ্চাদের মতো করছে। আদ্রিশ ওকে দেখে মনে মনে হাসছে। রুশা রাস্তার পাশে ফুচকার স্টল দেখতে পেল।
“আমি ফুচকা খাব।”
“খাওয়াব। যা খেতে চাইবে তাই খাওয়াব।”
রুশা হাত দিয়ে স্ট্রল দেখিয়ে বলল,
“আমি এখানে খাব।”
আদ্রিশ ভ্রু কুঁচকে বলল,
“রাস্তার পাশ থেকে খেতে হবে না। তোমাকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে খাওয়াব।”
“এখানে খেলে কি হবে?”
“পেট খারাপ হবে। রাস্তার পাশের জিনিস ভালো হয় না। এগুলো অস্বাস্থ্যকর।”
“আমি তো সারাজীবন এইগুলোই খেয়ে এসেছি। কিছুই হয়নি। দুদিন যাবত বড়লোক হয়ে আমার পেট কি বড়লোক হয়ে গেছে? হুদায় বড়লোকি ঢং করার মানে আছে?”
আদ্রিশ ওর কথা শুনে হতবাক। বিরক্ত হয়ে গাড়ি ঘোরাল। রুশা খুশিতে বাক-বাকুম করতে করতে গাড়ি থেকে নেমে যায়। ফুচকা অর্ডার দিয়ে ফুটপাতে বসে পড়ল। আদ্রিশ ওকে দেখে বলল,
“আরে, আরে কি করছো?”
“কেন?”
“এই ময়লার মধ্যে বসে পড়লে?”
“আপনার তো টাকার অভাব নেই। একটা ড্রেস নষ্ট হলে কিছু হবে না। এত কিপ্টেমি করেন কেন?”
আদ্রিশ ওর কথা শুনে অবাক না হয়ে পারছে না।
“ড্রেস ফ্যাক্ট না। তুমি এভাবে মাটির মধ্যে বসে পড়লে?”
“আমার অভ্যাস আছে।”
রুশার ফুচকা এসে পড়েছে। রুশা ফুচকা পেয়ে আনন্দিত মনে খেতে শুরু করল। আদ্রিশ বাধ্য হয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে।
রুশার চোখ পড়ল আদ্রিশের দিকে।
“ইমম্ম,খাবেন? খুব টেস্ট।”
আদ্রিশ নাক ছিটকে বলল,
“না, তুমি খাও।”
“আরে খেয়ে দেখুন খুব টেস্টি।”
রুশা আদ্রিশের মুখের সামনে একটা ফুচকা ধরল। আদ্রিশ রুশার দিকে তাকাল। ও খুব আশা নিয়ে ধরে রেখেছে। আদ্রিশ রুশার দিকে চেয়ে মনে মনে ভাবছে,
“ভালোবেসে যদি খাওয়াও তোমার হাতের অস্বাস্থ্যকর ফুচকা কেন বিষও খেতে রাজি।”
আদ্রিশ রুশার দিকে চেয়ে হা করল। রুশা আদ্রিশকে খাইয়ে দিয়ে বিজয়ী ভাব নিয়ে নিজে খেতে লাগল। আদ্রিশের কাছে ফুচকা তেমন স্বাদ না লাগলেও রুশার হাতে খাওয়ার জন্য বলল,
“আসলেই খুব ভালো।”
রুশা ওর কথা শুনে খুশি হয়ে গিয়ে বলল,
“দেখেছেন বললাম না? আপনি বিশ্বাসই করতে চাইলেন না। আমি কখনো মিথ্যা বলি না।”
“আমি কি আরেকটা পেতে পারি?”
“অবশ্যই।” রুশা আরেকটা ফুচকা বাড়িয়ে দিল আদ্রিশের দিকে। আদ্রিশ আগের মতোই হা করেছে কিন্তু রুশা ওর হাতের দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনা বুঝতে পেরে দুজনই লজ্জা আর অস্বস্তিতে পড়ে গেল। রুশা লজ্জা মিশ্রিত মুখে আদ্রিশের মুখের দিকে ফুচকা বাড়িয়ে দিল। আগের বার ঝুকের মাথায় আদ্রিশকে খাইয়ে দিয়েছিল। ওত কিছু খেয়াল করেনি।

.

রুশা আর আদ্রিশ ডিনার শেষে জুয়েলারি শপে ঢুকেছে। আদ্রিশ রুশার জন্য নেকলেস দেখছে। রুশা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। আদ্রিশ নিজে ওর জন্য পছন্দ করছে। আদ্রিশ একটা নেকলেস খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। রুশাকে কেমন লাগবে দেখার জন্য ওর গলায় রাখল। সেলসম্যান দেখে বলল,
“স্যার, এটাই নেন। মেডামকে অনেক সুন্দর লাগছে। খুব ভালো মানিয়েছে। এমনিতেই মেডাম অনেক সুন্দর, নেকলেসে আরো সুন্দর লাগছে।”
রুশার এসব শুনে খুশি হওয়ার বদলে মুখ শুকিয়ে গেল। ভয়ার্ত দৃষ্টিতে আদ্রিশের দিকে তাকাল। আদ্রিশ নেকলেস রেখে সেলসম্যানের কলার চেপে ধরে বলল,
“আমার বউ দেখতে কেমন সে সম্পর্কে তোর কাছে মতামত চেয়েছি? কেন কমেন্ট করলি? সুন্দরী মেয়ে দেখলে মাথা ঠিক থাকে না?”
সেলসম্যান ভয় পেয়ে বলল,
“সরি স্যার, আমি সেভাবে বলিনি।”
আদ্রিশ ওর কলার আরো জোরে চেপে ধরে বলল,
“বিবাহিত তুই? বউ আছে?”
সেলসম্যান ভয়ে ভয়ে বলল,
“জি স্যার।”
“বউ থাকা সত্ত্বেও অন্য মেয়ের দিকে নজর দিস? তোর চরিত্র তো দেখছি ভালো না। তোর তো চোখ তুলে ফেলা উচিত। আমার বউয়ের দিকে নজর দিলি কেন? তোর চোখ তুলে ফেলব।”
আদ্রিশ সেলসম্যানকে বের করে মারতে লাগল। রুশা ভয় ভয় মুখ করে এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে আর বলছে উনাকে ছেড়ে দিন। শপের অন্য লোকেরা আদ্রিশের কাছ থেকে ওই সেলসম্যানকে ছাড়িয়ে নিল।

আদ্রিশ রুশার হাত ধরে রাগে ফোঁসফোঁস করতে করতে শপিংমল থেকে বের হচ্ছে। রুশা ওর সাথে তাল মেলাতে পারছে না। সবাই ওদের দিকে চেয়ে আছে। আদ্রিশ কিছু মানুষকে ধমক দিয়ে বলল,
“হোয়াট! বিয়ে করা বউ আমার। অন্য মেয়েকে ধরে নিয়ে যাচ্ছি না। এভাবে দেখার কিছু নেই।”
রুশা পুরো রাস্তায় চুপ ছিল। যখনই মনটা একটু ভালো হয়,আদ্রিশের প্রতি মনোভাব পরিবর্তন হতে শুরু করে তখনই কিছু না কিছু একটা করবেই।
আদ্রিশ ড্রাইভ করছে। কোনো কথা বলছে না। ওর কপাল কুঁচকে আছে।

রুশা বিছানা গোছাচ্ছে। আদ্রিশ ফ্রেশ হয়ে ঘরে ঢুকল। রুশা মুখ ভার করে রেখেছে। আদ্রিশ কর্কশ গলায় বলল,
“প্যাঁচার মতো মুখ করে রাখার মতো কিছু হয়নি।”
রুশা তবুও কিছু বলছে না। আদ্রিশ আবারও বলল,
“তোমাকে কিছু বলেছি। শুনোনি?”
“আমি রোবট নই। ইচ্ছে না হলে হাসতে পারি না।”
আদ্রিশ ওর হাত থেকে চাদর কেড়ে নিয়ে ছুড়ে ফেলে বলল,
“একজন লোক আমার স্ত্রীকে কমেন্ট করবে আর আমি চুপ করে থাকব? কখনোই না।”
“আপনার স্ত্রী, আপনার ইচ্ছে। কেউ কেন বাঁধা দিবে?”
রুশা চাদর তুলে আবারও ভাজ করতে লাগল। আদ্রিশ কেড়ে নিয়ে বলল,
“এসব কাজের জন্য বাসায় লোকের অভাব নেই।”
“আমি নিজের কাজ নিজে করতে ভালোবাসি।”
রুশা সোফার কুশন গুছিয়ে রাখছে। আদ্রিশ জেদ দেখিয়ে ঘরের লাইট অফ করে শুয়ে পড়ল। রুশা দাঁড়িয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। সোফার উপরে কিছুক্ষণ বসে রইল। তারপর বিছানার কাছে গিয়ে ভারী শ্বাসের শব্দ পাচ্ছে। আদ্রিশের মুখের দিকে তাকাল। মৃদু আলোয় ওর মুখটা দেখা যাচ্ছে। ও ঘুমিয়ে পড়েছে। রুশা ওর ঘুমন্ত মুখের দিকে চেয়ে ভাবছে কে বলবে এই মানুষটা এত হিংস্র। এই মানুষটার মধ্যে হিংস্রতা না থাকলে কি এমন হতো?

.

রুশাকে আদ্রিশ ডেকে পাঠিয়েছে ওর অফিসে। আদ্রিশ জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে ওর অপেক্ষায়। রুশা গাড়ি থেকে নেমে অফিসের গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকছে আর এমন সময় একটা ছেলে দৌড়ে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে। রুশা ওকে ছাড়িয়ে আশেপাশে দেখল। তারপর কি জানি বলছে হাত নাড়িয়ে। ছেলেটা হাত উচু করে কিছু একটা বলে যাওয়ার সময় আবারও পেছনে ঘুরে ওকে একবার দেখল। রুশা আবারও চারদিকে তাকাল। আদ্রিশের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। একটা ছেলে রুশাকে জড়িয়ে ধরল। ওই ছেলেটা ওর কে? ওদের কি সম্পর্ক এসব প্রশ্ন ওর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
আদ্রিশ চেয়ারে ধপ করে বসে পড়ল। ওর সাথে ধোঁকা হয়েছে। রুশাকে ও চরিত্রবান, ভালো মেয়ে মনে করেছিল আর তাই বিয়ে করেছিল। আজ বুঝতে পারছে রুশা ওকে এতদিনে মেনে নেয়নি কেন? আদ্রিশের ভেতরটা ভেঙেচুরে যাচ্ছে। দম নিতে পারছে না। খুব কষ্ট হচ্ছে। এতদিনে রুশাকে খুব ভালোবেসে ফেলেছে। আর সেই রুশা ওর অনুভূতি নিয়ে খেলছে।
রুশা ওর কেবিনে ঢুকে আদ্রিশকে দেখে চমকে উঠে। ওকে কেমন আহত লাগছে। থম মেরে বসে আছে। দৃষ্টি একদিকে স্থির। ও যে ভেতরে ঢুকেছে সেদিকে খেয়াল নেই। মনে হচ্ছে গভীর ভাবে কিছু ভাবছে।
রুশা ভয়ে ভয়ে ডাকল,
“আদ্রিশ!”
আদ্রিশ চোখ তুলে ওর দিকে তাকাতেই বুকটা কেঁপে উঠে। ওর চোখগুলো অসম্ভব লাল হয়ে আছে। মুখটা ফ্যাকাসে। আহত বাঘ মনে হচ্ছে। সুযোগ পেলেই ঝাঁপিয়ে পড়বে। আদ্রিশ উঠে রুশাকে শুধু বলল,
“চলো।”
রুশা ওকে অনুসরণ করল। আশ্চর্যের বিষয় ওকে আবার বাড়িতেই নিয়ে এসেছে। আদ্রিশ দীর্ঘ একঘন্টা ধরে শাওয়ার নিয়ে বের হলো। আদ্রিশকে আজ ওর অন্যরকম লাগছে। রুশা কিছুই বুঝতে পারছে না। আদ্রিশ তোয়ালে পেঁচিয়ে খালি গায়ে ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে এল। আদ্রিশ এর আগে এমন করেনি। রুশা ওকে এভাবে দেখে চোখ নামিয়ে নিল। আদ্রিশ ওর কাছে এসে ওর চারপাশে ঘুরে ওর বরাবর দাঁড়ায়। রুশার দৃষ্টি তখনও নত। আদ্রিশ ওর থুতনি ধরে মুখ উঁচু করল। রুশা চোখ বন্ধ করে রেখেছে। আদ্রিশ ওর কোমড় খামচে ধরে বলল,
“জীবনে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। শোধরানোর সময় চলে এসেছে।”
রুশা চোখ মেলে ওর দিকে তাকাল। ওর কথার মানে বুঝতে পারছে না। ওর কোমড় এমনভাবে খামচে ধরেছে যেন কিসের রাগ মেটাচ্ছে। রুশার মনটা কেমন করে উঠল। আদ্রিশের চুল বেয়ে পানি পড়ছে। শরীরও ভেজা। না মুছেই চলে এসেছে। রুশা চোখ নামিয়ে নিয়ে বলল,
“চেঞ্জ করে নিন।”
“চেঞ্জ! হুম। চেঞ্জ। চেঞ্জ তো করতেই হবে।”
কিছু মুহুর্ত থেমে বলল,
“কাউকে ভালোবাসো?”
রুশা ওর কথা শুনে চমকে ওর দিকে তাকাল। আদ্রিশ হঠাৎ এই প্রশ্ন কেন করছে সেটা ভেবেই হাত-পা জমে যাচ্ছে। আদ্রিশ ওর উত্তরের জন্য আর অপেক্ষা করল না। জামাকাপড় নিয়ে চেঞ্জ করতে চলে গেল।

.

আদ্রিশ ড্রাইভ করছে। পাশে রুশা। আদ্রিশের মলিন মুখটা রুশা অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছে। চোখ জোড়া ক্লান্ত লাগছে। এই বিষন্নতার কারণ রুশা খুঁজে পাচ্ছে না। আদ্রিশ কিছু বলছেও না। একদম চুপ হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে প্রিয় জিনিস ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে। রুশা দেখল ওদের গাড়ি নিরিবিলি একটা রাস্তা দিয়ে ঢুকছে। দিনের বেলায় গা ঝিমঝিম করছে। রুশার ভয় হতে শুরু করল। আদ্রিশ ওকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। পুরনো একটা ভাঙা বাড়ির সামনে ওর গাড়ি থামল। আদ্রিশ ওর হাত ধরে গাড়ি থেকে নামাল। রুশার বুক ধুকপুক করছে। শরীর কাঁপছে অজানা ভয়ে। পুরনো বাড়ির ভেতরে ঢুকে আরো আঁতকে উঠল। বাড়ির বাইরে ভাঙা, পুরনো দেখা গেলেও ভেতরটা ঝকঝকে তকতকে। বড় একটা হল রুম। বড় একটা সিংহাসন পাতা। ডানে বামে ছাদ ঠেকিয়ে বড় বড় দরজা। চারপাশে কতগুলো লোক অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সেজান এক পাশে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে।

চলবে…