সূখতারার খোজে পর্ব-১২+১৩

0
534

#সূখতারার_খোজে
#লেখক:আর আহমেদ
পর্ব ১২

-তুই এমন করিস না প্লিজ!

তারার কথার পরপরই হর্ন বজে উঠলো ফ্লাটের নিচ থেকে। ঠোঁট জোরা কুঁচকে চেয়ালে চেয়াল বসালো তারা। এদিকে কবিতা পাগলামি করছে আর নিচে তার পেয়ারা ভাই। রাগে দপদপ করতে করতে বেলকনিতে গেলো তারা। নিচে ঝুকে দেখলো তূর সেদিকেই তাকিয়ে। তারাকে দেখতেই ও ইসারা করলো চলে আসতে।’পাজি একটা’ সন্মধনে গালি দিলো তারা। এরপর চেঁচিয়ে বললো,

-সমস্যা কোথায় আপনার? কাজ থাকলে চলে যান। কানের গোড়ায় প্যা পো বাজালে কি আর কাজটা হবে?

তূর ও চেঁচিয়ে বললো,

-আম্মা তোকে নিয়ে যেতে বলেছিলো, মনে আছে?

তারা বিরক্তিকর মুখ দেখিয়ে আবারো ঘরে এলো। হ্যাবলার মতো ড্যাপড্যাপ করে উপরে বেলকনির দিকে তাকিয়ে রইলো তূর।

তারা ভেতরে এসেই আলমারিতে হাত দিলো। কবিতা বুঝলো আজ আটঘাট বেঁধেই এসেছে তারা। সে অকপট বলে উঠলো,

-তুই এ বিষয়ে জোর করার অধিকার রাখিস আদেও?

একপলক ফিরে তাকালো তারা। বললো,

-আমি আগে বললে তুই ঠিক এটাই করতি না?

-করতাম..

-তাহলে চুপচাপ চল।

-তুই আজ অন্যায় মানতে বলবি তারা?

ততক্ষণে কাপরগুলো সব বিছানায় রেখেছে তারা। গুছাতে গুছাতে বললো,

-অন্যায় বাঁধা দিচ্ছি!

-হাহ্,পাঠাচ্ছিস তুই! নরকে পাঠিয়ে অন্যায় বাঁধা! হাউ ফানি তারা। কাপরগুলো প্লিজ ওখানের রাখ।

-তুই যে তোর মা-বাবার প্রতি অন্যায় করছিস তার বেলা?

-ওনাদেও শাস্তি পাওয়াটা উচিত ছিলো।

কথাটায় তারা ধপ করে বিছানায় বসে পড়লো৷ মুখ ব্যাঙ্গ করে বলে উঠলো,

-ওমাহ্? আরও কেউ জড়িত আছে এতে?

-হুম। তারা কি একটি বারও খোঁজ খবর নেবে না বল?

-তাহলে তো বলবো তুইও সমান অপরাধী!

ভ্রুযুগল কুঞ্চিত করে উঠে দাড়ালো কবিতা। তারার সামনে এসে দু হাত বাবু করে বলে উঠলো,

-আমার কোন দোষ নেই।

-তাই?

-জ্বি আপা।

-ওও। তা ভাবিজি আমায় যদি একটি বার বলতি তোর জামাই কে তাহলে কি আর এতোসব ঘটতো?

তারার পাশে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লো কবিতা। একহাতে তালি বাজে না। সে হয়তো তার বেস্টফ্রেন্ড কে সারপ্রাইজ দিবে দেখে জানায়নি। অথচ সেটাই মারাত্মক ভুল! হয়তো সে দোষী নয়।

-তুই ওট।

-ভালো লাগছে না।

-এমনিতেই নাড়ু খাসনি কিন্তু।

বলেই টেনে উঠালো কবিতাকে তারা। সালোয়ার কামিজ হাতে পাঠিয়ে দিলো ওয়াশরুমে। এখানে থাকলে কবিতার জিবন অবনতির শেখরে পৌছাতে বেশিক্ষণ লাগবে না। কবিতা আসতেই লাগেজ হাতে নেমে এলো তারা। কবিতা তারার চালাকি বুঝে মাথায় আলতো থাপ্পড় দিলো। এরপর নেমে এলো নিচে। তারা নিচে আসতেই তূর বলে উঠলো,

-ও আসতে রাজি হলো?

-আলহামদুলিল্লহ্। হয়েছে।

-এতক্ষণ লাগে?

-তো আপনি গেলেই হতো।

-তোর সাথে পারা যাবে না।

-বাই দা ওয়ে, আপনি এখানে দাড়িয়ে আছেন কেন?

-তোকে নিতে!

-কেন? না মানে কমন সেন্সটুকুও কি আপনার নেই? কবিতাকে আমি ছেড়ে তবেই যাবো। আপনি যান।

-তোর কথায়?

ভ্রু নাচিয়ে বললো তূর। তারা পাশে এসে দাড়ালো কবিতা। কবিতাকে দেখে তূর বাইক থেকে নামলো। বললো,

-সেদিনের জন্য ক্ষমা চাইছি। মানে আমি..

-কোনদিনের?

-ওইযে যেদিন আপনি…

-ঠিকিই করেছিলেন। এটাই হয়তো ভালো ছিলো। অন্তত তারাকে ও বাড়িতে যেতে হয়’নি।

তারা বললো,

-কবি চলতো। এখানে সময় নষ্ট করে লাভ নেই।

তূর রাগান্বিত হয়ে বললো,

-তোর সাহস তো দেখি বারছে দিনদিন। ডোজ দিবো?

-কবিতা তুই যাবি?

-তোকে পড়ে দেখছি। তোমরা দাড়াও আমি রিকসা দেখছি।

তূর চলে গেলো রিকসা আনতে৷ দু দন্ডেই নিয়ে এলো রিকসা। তারা আর কবিতা উঠে বসলো। খানিক মনমরা লাগছিলো কবিতাকে। তারা পাত্তা দিলো না। সে এখন সহানুভূতি প্রদর্শন করলে হয়তো কেঁদে দিবে কবিতা। এমনই হয়!

রিকসা চলতে লাগলো। তূর এক টানে বাইক নিয়ে চলে গেলো।

_________

বুকে জাপটে জড়িয়ে কবিতার বাবা কবিতাকে। একজন পিতা তার কন্যাকে কতটা ভালোবাসে তা কবিতা আর তার আব্বুকে না দেখলে বোঝা যেত না। তারার চোখে জমলো শিশিরবিন্দু। তার মনে পড়ছে তার বাবার কথা। তিনিও হয়তো তাকে এভাবেই ভালোবাসতেন। তারা বাড়ি থেকে নিঃশব্দে চলে এলো ওখান থেকে। ও বাড়ির কেউ লক্ষ করলো না। সবাই কবিতাকে দেখে আবেগে চোখের জল ফেলছিলেন। তারা বাইরে আসতেই তূর কোথথেকে সটাং তার সামনে হাজির হলো। তারা ভরকে গেলো। বলে উঠলো,

-এমন করেন কেন সবসময়?

-তোকে ভয় দেখাতে। নে উঠ!

-এতক্ষণ কেন অপেক্ষা করছিলেন?

তূর এদিকওদিক তাকিয়ে কিছু ভাবলো। বললো,

-তোর চাচী…

-চাচীর কথাই ধরে আছেন? কেন ভাঙলেন অভ্রের সাথে আমার ভালোবাসা? বিশ্বাস?

হাসির ছলেই বলে উঠলো তারা। তূরের মুখের স্বাভাবিকতা ছেড়ে হয়ে উঠলো বিষন্ন। তারা আবার জিজ্ঞেস করলো,

-আমি সেই রাস্তায় অপমান করেছিলাম বলে?

-তুই বুঝবি আদেও?

তারা খিলখিল করে হাসলো। যেন জোক্স বলেছে তূর। তূর ভ্রু কুঁচকে বললো,

-হাসছিস যে?

-তো? কাঁদবো? বিশ্বাস করবো না কেন? বলেন!

-থাক..শুধু মনে কর,বাঁচিয়েছিলাম আমি তোকে।

তারা কিছুই বুঝলো না। ভাবতে ভাবতেই উঠে বসলো তারা। তূর আর কিছু বলেনি তারাকে।

_______

সোফা থেকে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠে দাড়ালেন আমির। তার লক্ষে স্থির চোখে তাকাতেই ড্রইংরুমে বিদ্যমান সকলেই উঠে দাড়ালো। একপা একপা করে এগিয়ে আসছে অভ্র। আমির কেমন নাক ছিটকে দূরে সড়ে দাঁড়ালো। আজকাল তার ছেলেকে ঘৃনা হয়। ইরা পারলেন না, ছুটে গিয়ে জড়িয়ে নিলেন অভ্রকে। হু হু করে কাঁদতে কাঁদতে বললেন,

-কেন বাইরে আসলি? আমাদেরও মারতে চাইছিলি নাকি তুই?

অভ্র নিশ্চুপ! অগোছালো ভাবে দাড়িয়ে আছে অভ্র। চুলগুলো এলোমেলো। কেমন জট পাকিয়েছে! ক্লিন সেভ করা ছেলেটার মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ির ডগাগুলো উঁকি মারে। ইরা বাধভাঙ্গা নদীর মতো কাঁদতে লাগলো। অতপর বললো,

-কি রে? তোর খাবার…

-কবিতা?!

একমাসে আজ প্রথম কবিতা উচ্চরন করলো অভ্র। আমির বলে উঠলেন,

-পারলে নিয়ে আয়। নাহলে আমার এমন কোন ছেলের প্রয়োজন নেই।

অভ্র সটাং মাটিতে বসে পড়লো। তার বিহেভিয়ারে পাগলের ছাপ কড়ারুপে স্পষ্ট!

#চলবে…

#সূখতারার_খোজে🧚‍♀️
#লেখক:আর আহমেদ
পর্ব ১৩

-নাহ্! কেন আমি কবিতাকে আনতে যাবো বলতে পারো?

অভ্রের নাকোচ কথা শুনে ক্ষেপে গেলেন আমির। ইরা মুখে হাত গুজে কাঁদতে লাগলো। ছেলের মতিগতি তিনি বুঝতে অক্ষম! আমির সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকাতেই ইরা মাথা নারলেন, যেন অভ্রকে কিছু না বলে। ঘৃনা দৃষ্টি ছুড়ে স্হান ত্যাগ করলেন আমির। ইরা চোখের পানিটুকু আঁচল দিয়ে মুছে ধীর পায়ে এগোলেন অভ্রের দিকে। অভ্র এলোমেলো দৃষ্টি মেঝেতে স্হাপন করেছে। ইরা আলতো হাতে অভ্রকে স্পর্শ করতেই অভ্র বিভ্রান্তের মতো তাকালো ইরার দিকে। চেহারাটুকুর আচরনেই হু হু করে কেঁদে উঠলেন ইরা। একজন মায়ের কাছে ছেলের এমন পাগলের মতো অবস্থা যেন না হয়, মনে মনে দোয়া করে চাপদাড়িতে স্পর্শ করেই দুগালে দু হাত দিয়ে বলে উঠলেন ইরা,

-কি হয়েছে তোর?অভ্র তোর বউকে তুই আনবি না? একমাত্র তোর কথাতেই আসতে পারে কবিতা। তুই একবার বলেই দেখ,ও ঠিক আসবে। বাড়ির বউ প্রায় দু’মাসখানেক বাইরে। নিয়ে আয়! মেয়েটাও তো কষ্ট পাচ্ছে নাকি?

অভ্র বললো,

-তোহ্? আমি কি ওকে আনতে যায়নি? চাপ দিয়েছিলে না তোমরা? এখন কি পা ধরতে বলছো তোমরা?

ইরা শীতল কণ্ঠে বললেন,

-তোকে আমি পা ধরতে বলিনি নিশ্চই? তুই একবার ওদের বাড়ি যা। ও না করতে পারবে না।

-পারবো না আমি! পারবো না।

অভ্র মেঝে থেকে উঠে দাড়ালো। চোখ লালচে! সটাং বেড়িয়ে গেলো বাড়ি থেকে। ইরা পিছু ডাকলেও আর শুনলো না অভ্র।
______

উঠোনে তারা কাপর তুলছিলো। এখতেয়ার বারান্দায় এসে দাড়ালেন। কিছু ভাবছেন উনি। মুখ দেখেই তা স্পষ্ট! তারা খেয়াল করলো এখতেয়ার কিছু ভাবছেন।তারা বললো,

-চাচা কিছু হয়েছে?

এখতেয়ার হতাশার শ্বাস ফেলে বললেন,

-না রে..তেমন কিছু না।

-তোমায় চিন্তিত দেখাচ্ছে কেন?

কথার পরপরই ইলিমা কোথথেকে ছুটে এসে বলে উঠলেন এখতেয়ারকে,

-বলছি,বড়’টার বিয়া সাদি দিবা না? বয়স তো আর কম না। আমার মতে বিয়া দেও তুমি তারার!

উঠোনে স্তব্ধ হয়ে দাড়িয়ে রইলো তারা। হঠাৎ ইলিমার এমন কথা তার বোধগম্য হচ্ছেনা। এখতেয়ারের কপালে ভাজ পড়লো। ইলিমাকে শক্ত স্বরে বলে উঠলো,

-ওর পড়াশোনা বাকি এখনো!

কথাটায় আটকে গেলেন ইলিমা। আড়চোখে একবার তাকালেন তারার দিকে। চোখে চোখ পড়তে দিলো না তারা। চোখ সরিয়ে নিলো। ইলিমা এখতেয়ারের দিকে তাকিয়ে বললেন,

-কই তনয়ার তো সেদিনেই বিয়া দিতে চাচ্ছিলেন। তাহলে তারার দিতে সমস্যা কোথায়?

-শোন ইলিমা, আমার চোখ খুলে গেছে। তারার বিরুদ্ধে আমি ওর বিয়ে দিতে পারি না!

হঠাৎ ইলিমার নতুন কথায় তিনি ভ্যাবাচ্যাকা খাচ্ছেন। অথচ,তার পরিবর্নের কোন ছাপ নেই মুখে। না আছে লজ্জা। তারা মৃদু হেঁসে কাপরগুলো হাতে চালিতে এলো। ইলিমা তারাকে দেখেই বলতে লাগলেন,

-বিয়ের পর কি পড়াশোনা করা যায় না?

-যায়তো চাচী। চাচা তুমি বরং পাত্র দেখো। সত্যিই তো,বয়স তো আর কম হলোনা! আমি বিয়ে করতে চাই চাচা।

এখতেয়ার বিস্ফোরিত চোখে তাকালেন তারার দিকে। তারা মাথা উঁচু নিচু করে বোঝালো, সে রাজি। এরপর বললো,

-পাত্র দেখো চাচা।

কাপরগুলো নিয়ে তারা ঘরে চলে গেলো। উঠোনের পরে রয়েছে আরেকটা ছোটখাটো বারান্দা। সেখানে গিয়েই কাঠের হাতল খামচে নিলো। নিজেকে বোঝা মনে হচ্ছে! তার জন্য কি তনয়ার ভবিশ্যতে আধার নামছে? নাকি তার চাচী ভয় পাচ্ছেন ভাগাভগি নিয়ে? তারার কি’বা অধিকার আছে এ জমিতে? চোখের কোনে পানি জমলো তারার। বিয়ের স্বাদ তার মিটেছে! তবুও কারো কাছে খারাপ হয়ে সে থাকতে চায়না! কোন আপত্তিই নেই তার বিয়েতে!

ভাবনার মাঝে পেছন থেকে কেউ শক্ত হাতে কোমর জড়িয়ে নিলো তারার। তারা কেঁপে উঠলো! সামনে অগ্নিসংযোগ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তূর। নাকে জমেছে কয়েক বিন্দু ঘাম। তার গাঢ় গরম শ্বাস মুখচোখে আঁচড়ে পড়ছে! তারা অভুভব করলো তার পা কাঁপছে! চেয়াল খিচে তূর বলে উঠলো,

-আর কত পোড়াবি আমায়? তুই বিয়ে করতে রাজি হস কোন সাহসে তারা?

কোমর ছাড়িয়ে তারাকে ছিটকে দিয়ে বললো তূর। তারা কিছুটা ব্যাথা অনুভব করলো। এতটা রাগি তো তূরকে সে কখনই দেখেনি! তারউপর মুখচোখ রক্তরঙা! তূর আবারো এসে তারার বাহু খিচে নিলো। বললো,

-কেন রাজি হলি বল!

-তাতে আপনার কি তূর ভাই?

-আমার কি মানে? তুই কি আমায় এভয়েড করছিস?

-আমার লাগছে তূর ভাই!

-লাগুক!

আরো জোরে খিচে নিলো হাত! চোখের পানি আর আটকাতে পারলো তারা। শ্যামলা মুখখানা দিয়ে গড়িয়ে পড়লো অস্ত্রু। তূর হঠাৎ তাকে ছেড়ে দিলো। বারান্দার কাঠের হাতল শক্ত করে ধরে দাড়ালো। মাথার রগগুলো কেমন দপদপ করছে তার। আবারো একা মনে হচ্ছে তারার! তারা জোড়ে হেঁটে চলে গেলো নিজের রুমে। তূর তা আঁড়চোখে দেখতেই জোরপায়ে হেটে গেলো পেছন পেছন। তারা আলমারি থেকে একটি সালোয়ার কামিজ বের করলো। তূর এসেই কটাক্ষ স্বরে বললো,

-এখন কই যাবি তুই? আমার কথার উত্তর দেওয়ার জন্যও কি তোর সময় নেই? তুই কি মুখের উপর বলতে পারতি না তুই কোচিং করাস? তোর টাকা তো তুই নিজেই যোগাড় করতে সক্ষম তারা। তাহলে তুই বোঝার নাটক করে বিয়েতে রাজি হলি কেন?

শেষের কথাটা চিৎকার করে বলে উঠলো তূর। তারা ভয়ে গুটিয়ে গেলো কিছুটা! মেঝের দিকে তাকিয়ে অনবরত ঠেস দিতে লাগলো ডান’পা! তা কাঁপছে! তারা যেন তা প্রকাশ করতে চাইছে না। তূর তারার উত্তর না পেতেই নির্মল কন্ঠে বললো,

-কোথায় যাচ্ছিস?

তারা খুব ধিরে বললো,

-ক্ কোচিং!

-কিহ্? কোথায়?

ফের চেঁচালো তূর। তারা বললো,

-কোচিং এ যাচ্ছি..

-বিয়ের প্রসঙ্গে যেন তোকে আর না পাই! না হলে তোকে শুদ্ধ গুম করে দেবো!

বলেই ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো তূর। তারা বিদ্ধস্ত দৃষ্টিতে তাকায় ঘরের চালের দিকে। আজ ফের তাকে তার মায়ের কথা স্বরন করালো এ পরিবার! সুখ তার ভাগ্যে নেই’কি?

বেড়িয়ে গেলো তারা। ইলিমা এদিক ওদিক তাকাচ্ছেন। তারা বেড়োতেই এখতেয়ার ইলিমার পিছনে দাড়ালেন। বললেন,

-তুমি মেয়েটার সামনে এভাবে বলতে পারলে? এতটুকু মায়া নেই?

এখতেয়ারের কথায় পেছন ফিরলেন ইলিমা। তার চোখে পানি টইটই করছে। তিনি ভাঙা গলায় বললেন,

-মেয়েটা কি সুখ দেখবে না? আমিও তো চাই ও সুখে থাক! আ..আমি বলছি! তূর এর থেকে তারাকে আলাদা করে ওর বিয়েটা দিয়ে দাও! তূরের ভালোবাসায় রয়েছে চরম ঘারতি। তুমি না করো না! তারার জিবনে কি সুখের দরকার নেই? সুখ কি জিবন থেকেই আলাদা হয়ে গেছে তারার জিবনে?

এখতেয়ারের চোখেও চিকচিক করছিলো তখন! হয়তো ছেলে বলেই এদিক ওদিক তাকিয়ে আটকালো!

_____

গাঢ় সন্ধ্য! আকাশে চাঁদ নেই! রাত প্রায় আটটার আগ-মুহুর্ত! কবিতা ফোন ঘাটতে ব্যাস্ত নিজ রুমে। তখনি বেজে উঠলো ফোনটা! আন্নন নাম্বার! তবুও ফোন রিসিভ করলো কবিতা। তখনি রুমে আসলেন কবিতার মা! হাতের দুধের গ্লাসটা টি টেবিলে রেখে এগোলেন মেয়ের দিকে। কবিতা ফোন রিসিভ করে উঠে বসলো। জিজ্ঞেস করলো,

-আসলামু আলাইকুম। কে বলছেন?

এরপর ওপাড় থেকে কেউ কিছু বললো কবিতাকে। মুহুর্তে যেন মুখে বিষন্নতা ছেয়ে গেলো কবিতার। কবিতার মা ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলেন,

-কে ফোন করেছে রে?

কবিতার ফোন আলগা হয়ে পড়ে গেলো বিছানায়। চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো তার। কবিতার মা বিচলিত ভঙ্গিতে মেয়ের পাশে বসে পড়লেন। কাধে হাত রেখে বললেন,

-কি হয়েছে? তুই হঠাৎ কাঁদছিস কেন? কে ফোন..

কথা শেষ হওয়ার আগেই আটকানো গলায় বললো কবিতা,

– তারা…তারা কিডন্যাপড্ মা! ওকে… ওকে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না!

#চলবে…