চৈতালি পূর্ণিমা পর্ব-৩৭+৩৮

0
943

#চৈতালি_পূর্ণিমা
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
#পর্ব-৩৭

নির্বাণ কণ্ঠনালিতে খানিকটা আক্রোশ মিশিয়ে বলল, “ওর বিরুদ্ধে সাইবার-ক্রাইমের মামলা আছে। হি ইজ এ ব্লাডি ক্রিমিনাল।”

কথাটা শুনে ভিসির কপালের ভাঁজ দৃঢ় হলো। কন্ঠটা উদগ্রীব শোনালো তার, “বলছ কি তুমি?”

প্রশ্নের বিপরীতে জবাব এলো এইটাই, “সাইবার ট্রাইবুনালকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা রাস্তায়, আসছে।”

নির্বাণের কথা শেষ হওয়ার পরমুহূর্তেই রুদ্র আত্মরক্ষার জন্য চেঁচিয়ে উঠে বলে, “মিথ্যে আরোপ সব। কিসের ক্রাইম,কিসের কি? কিছুই করিনি আমি। নির্দোষ আমি! আপনি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। এমন করতে পারেন না আপনি।”

নির্বাণ রুদ্রের অভিমুখ বরফের ন্যায় অতি শীতল দৃষ্টিপাত করে, “আমার কথা বাতাসে ভেসে বেড়ানোর মত নয়। যথেষ্ট প্রমাণ না থাকলে আমি কখনো কারো বিরুদ্ধে কথা বলি না। বাকি তুমি বুঝদার।”

নির্বাণের সুব্যক্ত কটাক্ষ ধরতে পেরে রুদ্রের মুখ পাংশুটে দেখালো। বিবর্ণ,করুণ অভিলাষ দৃষ্টিতে তাকালো নিজের বাবা-মায়ের পানে। কিঞ্চিৎ প্রত্যাশা নিয়ে চেঁচিয়ে উঠলো, “কিসের প্রমাণ? আমি যেখানে কিছু করিনি সেখানে প্রমাণ কিসের? মিথ্যে বলা বন্ধ করুন। বাবা-মা তোমরা কিছু বলছ না কেন? আমি সত্যি কিছু করিনি৷ বিশ্বাস কর!”

“কে কি করেছে তা একটু পরই জানা যাবে। তোমার বলতে হবে না তখন, প্রমাণই সব বলবে।”

নির্বাণের কথা শেষ হতে না হতেই রুদ্রের মা রাবেয়া ইসলাম নিজের সন্তানের পক্ষ নিয়ে বলে উঠে, “আপনাদের কোথাও হয়তো বা ভুল হচ্ছে। আমার ছেলে মোটেও এমন না, আজ হয়তো সে ভুল করেছে কিন্তু সে কখনোই কোন অনৈতিক কাজ করতে পারে না৷ ওকে একটা সুযোগ দিন আপনারা।”

রুদ্রের বাবা ইকবাল শেখও রাবেয়া কথার সাথে তাল মিলান। নিজের সন্তানকে রক্ষা করতে নিজের সকল জোর দেখান তিনি। অবিলম্বে উগ্রবীর্য কন্ঠধ্বনিগুলো অনুদ্ধত পরিবেশটি কোলাহলে পরিপূর্ণ করে তুললো। ভারসাম্য রক্ষার্থে ভিসি রুদ্রের বাবা-মাকে তিনি বেরিয়ে যেতে বললেন সাথে অতিরিক্ত সকল মানুষজনকেও। আপাতত তিনি কোনরকমের হট্টগোল চাচ্ছেন না। তার নির্দেশে বাধ্য হয়ে সকলকে বেরিয়ে যেতে হলো। রুমে থেকে গেল শুধু রুদ্র,নির্বাণ,তাপসি আর একজন অচেনা ব্যক্তি। যদিও ইকবাল,রাবেয়া যেতে চাচ্ছিলেন না তাপসি ম্যাম তাদের জোড়পূর্বক বের করে দেন।
রুমের পরিবেশ আগের ন্যায় হতেই ভিসি নির্বাণকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমাকে কোন কিছু না জানিয়ে সাইবার ট্রাইবুনালদের ডাকেন কিভাবে আপনি? কিসের ভিত্তিতে আপনি তাদের ডাকছেন? কি করেছে ও?”

ভিসি স্যারের কথা শুনে রুদ্রের বর্ণহীন মুখশ্রীটি ঈষৎ উজ্জ্বল দেখালো৷ চিত্তে প্রত্যাশার ক্ষীণ প্রদীপ জ্বলে উঠলো যেন। নির্বাণ মন্থর কন্ঠে প্রত্যুত্তর করলো, “রুদ্র সোশাল মিডিয়ায় ভার্সিটির গ্রুপে আমার ওয়াইফকে বুলি,হ্যারাস,মানহানি করার উদ্দেশ্যে কিছু ছবি ছেড়ে ছিল, যা এখন ভাইরাল। ভার্সিটির সকলেই এখন এসব নিয়ে কথা বলছে,কটুক্তি করছে। বিষয়টা এখন এত নিম্ন পর্যায়েই চলে গিয়েছে যে তারা সকলে আমার ওয়াইফের চরিত্রের উপর প্রশ্ন তুলছে।”

ভিসি বলল, “সেটা আপনার পার্সোনাল ইস্যু, আপনি কেন সেটা ভার্সিটির ভিতরে টানছেন? রুদ্রকে আপনার পুলিশে দেওয়ার হলে ভার্সিটির বাহিরে গিয়ে দিন, এখানে না। আপনি ট্রাইবুনালদের এখনই ফোন করে আসতে মানা করুন। আমি ভার্সিটির ভিতরে কোনরকম ঝামেলা চাচ্ছি না।”

“সরি বাট এইটা পার্সোনাল ইস্যু না। আমি আমার পার্সোনাল আর প্রফেশনাল লাইফ নিয়ে খুব সর্তক। আমি কখনো দুইটা মিক্সড আপ হতে দেই না। ইস্যুটা পার্সোনাল হলে আমি কখনোই ভার্সিটির ভিতরে এই কথা তুলতাম না। ট্রাইবুনালদের ডাকা তো দূরের কথা। কিন্তু জিনিসটা এখন আমার পার্সোনাল লাইফ কম, প্রফেশনাল লাইফে প্রভাব ফেলছে বেশি৷ তাই আমি বাধ্য হয়েছি এমনটা করতে। আর ইমার্জেন্সি ইস্যুতে টিচারদের অধিকার আছে পুলিশদের ডাকার।”

ভিসি উগ্রস্বর বলে উঠেন, “এটা আমার কাছে মোটেও ইমার্জেন্সি ক্যাস লাগছে না মি. নির্বাণ সাইয়্যেদ। ভার্সিটির এটার সাথে কোন সম্পর্ক নেই।আপনি পার্সোনাল লাইফের শত্রুতা এখানে টেনে আনছেন। তাও আমার পারমিশন ছাড়াই।”

নির্বাণের কপালে দৃঢ় ভাঁজ পড়লো, “বিষয়টা ভার্সিটির সাথে রিলেডেড না সেটা আপনি কিভাবে বলতে পারছেন? এই পুরো ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু ভার্সিটির গ্রুপ থেকেই। আমি এই ভার্সিটির শিক্ষক আর আমার ওয়াইফ এখানের স্টুডেন্ট, আমাদের দুইজনের অনুমতি ছাড়াই আড়াল থেকে ছবি তুলে সেটা গ্রুপে অতি নিম্নপর্যায়ে নিয়ে তুলে ধরা হয়েছে। বাজে কথা বলা হয়েছে, প্রশ্ন করা হয়েছে আমাদের সম্পর্ক নিয়ে। এমনকি, আমার ওয়াইফ ভার্সিটিতে আসলে তাকে অপমানিত,লাঞ্চিত করা হয়েছে সকলের সামনে। এমনকি আঘাতও করা হয়েছে। কলঙ্ক লাগানো হয়েছে আমাদের দুইজনের গায়ে। সম্মানহানি হতে হয়েছে আমাদের দুইজনকেই৷ আপনার ভার্সিটির শিক্ষক,স্টুডেন্টের মানহানি হচ্ছে,বুলি-হ্যারাস হচ্ছে সেটা এখন ভার্সিটির দেখার বিষয় নয় কি? নাম কিন্তু আমার একার না, ভার্সিটিরও হচ্ছে। ভেবে দেখুন একটু।”

কথাটা বলে নির্বাণ একটু দম নেয়। তারপর বলে, “এখনো বলবেন কি এইটা আদৌ ভার্সিটি ইস্যু না?”

ভিসি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, “বিষয় যাই হোক, যেহেতু এখানে ভার্সিটির মানসম্মান জড়িত সেহেতু আপনাকে আগে আমাকে ইনফর্ম করার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু আপনি সেটা করেন নি। যদি এখন ভার্সিটির নাম খারাপ হয় তাহলে এর দায় কে নিবে? আপনার এই পদক্ষেপের জন্য আমি আপনাকে সাসপেন্ড করতে পারি বা চাকরি থেকে বের করে দিতে পারি সেটা কি জানেন?”

“সেটা আপনি করতে পারেন এতে আমার আপত্তি নেই। তবে তার আগে এই মানুষটাকে আইনের হাতে তুলে দিতে চাই, যত যাই হোক না কেন।”

নির্বাণের অনড় কথা শুনে ভিসি থমকালেন। অতঃপর কিছু বলার পূর্বেই সাইবার ট্রাইবুনাল টিম এসে হাজির হয় সেখানে। সাইবার টিমকে দেখে নির্বাণ এগিয়ে যায় এবং কথা বলে নিয়ে রুদ্রকে তাদের হেফাজতে নেওয়ার আহ্বান জানায়। সাইবার টিমও ফটাফট রুদ্রকে নিজের আন্ডারে নিয়ে তার হাতে হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে দেয়। পালানোর সুযোগ ছিল না বিধায় রুদ্র পালাতে পারিনি,তবে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে অযথা চেঁচিয়ে গিয়েছে ঠিকই। নির্বাণ কথা দীর্ঘ না করে তাপসী এবং অচেনা সেই ব্যক্তির কাছ থেকে তাদেরকে নিয়ে আপ দেওয়া সকল পোস্টের এবং শিরোনামের ছবির প্রিন্ট আউট তুলে দেয় একজন কর্মরত অফিসারের নিকট। অতঃপর একটা মেমোরি চিপ দেয় যেখানে রুদ্রের কর্মকাণ্ড, তাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ পোস্ট-কথাবার্তার স্ক্রিনশট, স্ক্রিনভিডিও ছিল। সাথে আজকে সকালে ঘটে যাওয়া সম্পূর্ণ ঘটনার লাইভ ভিডিও-ও ছিল। এছাড়া আরও কিছু বুলি,হ্যারাসমেন্ট,এবিউজের রিপোর্ট, কমপ্লেইন ছিল সেগুলোও নির্বাণ অফিসারের নিকট সাবমিট করলো। চোখের পলকেই সকল প্রমাণ সাইবার ট্রাইবুনাল টিমের হাতে দিয়ে রুদ্রের উপর সাইবার বুলিং আর মানহানির মামলা পাকাপোক্তভাবে করে ফেলে নির্বাণ। ট্রাইবুনাল টিমও প্রমাণ সব বুঝে নিয়ে ভিসি এবং নির্বাণের মাধ্যমে কিছু ফরমালিটি পূরণ করিয়ে নেয়। আর জানান, কোনধরনের তথ্য লাগলে তারা যেন সাহায্য করতে আগ্রহী হয়। অতঃপর রুদ্রকে তারা নিয়ে যেতে নিলে নির্বাণ তাদের একটু অপেক্ষা করতে বলে এবং স্থিরচিত্তে রুদ্রের দিকে এগিয়ে যায়। রুদ্রের কান বরাবর মুখ রেখে বলে, “বলেছিলাম না, নিজের সকলের কর্মের ফল পাবে তুমি। নাও, হিয়ার ইজ দি লাস্ট চেকম্যাট।”

কথা বলে নির্বাণ রুদ্রের এমন অংশে আঘাত করল যা কি-না বর্ণনায় প্রকাশ করার মত নয়। তবে, রুদ্রের অবস্থা যে করুণের চেয়েও করুণ হলো সেটা তাকে দেখেই বুঝা গেল। সাইবার টিমের একজন পরিস্থিতি প্রতিকূলে যেতে দেখে দ্রুত নির্বাণকে দূরে সরিয়ে দেয় এবং রুদ্রকে নিয়ে তারা বেরিয়ে আসে। রুদ্রকে নিয়ে যাওয়া হলে নির্বাণ নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণে আনে। অতঃপর পারমিশন নিয়ে নির্বাণ ভিসির রুম থেকে বেরিয়ে আসে এবং একজনের কাছে এসে দাঁড়ায়। তার সাথে হাতে হাত মিলিয়ে হ্যান্ডশেক করে স্মিত মুখে বলে, “এত শর্ট নোটিশে আসার জন্য,হ্যাল্প করার জন্য থ্যাংক্স। তুই না থাকলে হয়তো এসব সম্ভব হতো না আজ।”

ব্যক্তিটি হেসে বলে, “ফরমালিটি করিস না, এসব ব্যাপার না। আর আমার কাজই এটা, তুই বরং আমার হ্যাল্প করলি ওর মত একটা ক্রিমিনালকে ধরিয়ে দিয়ে৷”

নির্বাণ বলল, “তবুও মৃন্ময়, তোর হ্যাল্প ছাড়া পসিবল ছিল না।”

মৃন্ময় পুনরায় হেসে বলল,”হয়েছে, আর প্যারা খেতে হবে না। বাকিটা আমি দেখে নিচ্ছি।”

“ওকে! বাট মেক সিউর, ও যাতে কঠোর থেকে কঠোর শাস্তি পায়।”

“পাবে,চিন্তা করিস না। তা বাসায় যাস কিন্তু! মা প্রায়ই তোর কথা জিজ্ঞেস করে। আর এবার আসলে ভাবীকে সাথে নিয়ে আসিস। বিয়ে-সাদি করে তো বউকে একদম লুকিয়ে রেখেছিস।”

নির্বাণ বলল,”ইনশাআল্লাহ নিব একদিন। তুইও বাসায় আসিস সুযোগ হলে।”

“আচ্ছা। আসি তাহলে এখন,কাজ আছে।”

নির্বাণ সম্মতি জানাতেই মৃন্ময় চলে যায়। মৃন্ময় হচ্ছে নির্বাণের স্কুল লাইফের বন্ধু। দুইজনের মধ্যকার সম্পর্ক ভালো হওয়ায় যোগাযোগ বিদ্যমান ছিল। মৃন্ময় সাইবার ট্রাইবুনালের একজন অফিসার হওয়ার সুবাদে, রুদ্রের সকল কর্মকাণ্ডের সম্পর্কে জানার পর নির্বাণ যখন মৃন্ময়ের সাথে যোগাযোগ করে তখন মৃন্ময় ওকে বলে দেয় কিভাবে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে আর কিভাবে সেটা গুছাতে হবে। সে সাথে, চলমান ঘটনার যাবতীয় প্রমাণ একত্রে জমা করে রিপোর্ট করার বুদ্ধি মৃন্ময়-ই দেয়৷ এমনকি প্রমাণ জোগার করতে সাহায্যও করে। যার দরুন, বিষয়টা হ্যান্ডেল করা নির্বাণের পক্ষে সহজ হয়ে উঠে।

নির্বাণ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে। এখনো অনেক কাজ বাকি,আগোছালো রয়ে গিয়েছে কিছু বিষয়। সেগুলো গুছাতে হবে, সব যে এখানেই শেষ না। তবে আপাতত এসব নিয়ে নির্বাণের মাথা ব্যথা নেই। স্পর্শীকে একবার দেখা প্রয়োজন তার। ঘন্টাখানেক আগে সেখানে বসিয়ে রেখে এসেছিল, আরাম করতে আর বের না হতে। যদিও নির্বাণ মুখে বলেছিল অন্য তবে তার মূল উদ্দেশ্য ছিল স্পর্শীকে এসব ঝামেলা থেকে দূরে রাখার। সে চাচ্ছিল না কোনধরনের ভোগান্তিতে সে পড়ুক বা তাকে আর কোন কথা শুনতে হোক। তাই স্পর্শীকে এসব হতে দূরেই রাখতেই রুমে রেখে আসে আর নিজেই সবদিক সামাল দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এখন স্পর্শী কি করছে কে জানে? যদি খারাপ লাগে বা কিছু দরকার হয়? কেয়া বা নিধিও তো নেই ওর পাশে। একরাশ দুশ্চিন্তা নিয়েই নির্বাণ দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেল টাপসির কেবিনের দিকে। কেবিনের সামনে এসে দরজা খুলে স্পর্শীর নাম নিতে গিয়েও থমকে গেল। চোখ বুলালো চারদিক। রুমটি নীরব,শূন্য। নেই কেউ সেখানে। ক্ষণেই নির্বাণের ভ্রু কুঁচকে এলো। প্রশ্ন জাগলো মনে, “স্পর্শী কোথায়?”

#চলবে

#চৈতালি_পূর্ণিমা
#Writer_Asfiya_Islam_Jannat
#পর্ব-৩৮

মধ্যাহ্নের পরবর্তী প্রহরে শুভ্রনীল অন্তরিক্ষ হলো মেহেদীরাঙ্গা। লাল,হলুদের অপার্থিব মিশ্রণ ভাসমান তুলোরাশির আঁকেবাঁকে। নীরদবাহন স্থির,শান্ত। ঘর্মাক্ত নগরী, অনড় গাছের পাতা। তপ্ত,গুমোট পরিবেশ তবুও কোথাও যেন এক বুক শীতলতা বিরাজমান। জানালার কিনার ঘেঁষে লোহা শিকের গায়ে মাথা হেলিয়ে দিল স্পর্শী। নয়ন দু’টি নিস্তেজতা ,নিষ্প্রাণতায় ঘেরা৷ মন জড়ানো ম্রিয়মাণে। ভালো লাগছে না তার কিছুই, তিক্ত লাগছে সব। স্মৃতিচারণে ভাসছে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো। চেয়েও ভুলতে পারছে না সে। নেত্রপল্লব এক করলো স্পর্শী, ভাবতে থাকলো কিঞ্চিৎ প্রহর পূর্বের ঘটনা।
ভার্সিটিতে থাকাকালীন সকল ঘটনা তাকে আরও পীড়িত করছিল। মনে করিয়ে দিচ্ছিল সকল অপমান,লাঞ্চনা,অবজ্ঞা৷ দম বন্ধ হয়ে আসছিল তার সেই বদ্ধ রুমে। ছন্নছাড়া, উন্মাদ হয়ে উঠেছিল অনুভূতি। হয়তো আর কিছু সেখান থাকলে রুদ্ধশ্বাস অবস্থা হতো। নিজের সকল ভাবনা, অনুভূতি হতে মুক্তি পেতে তখন কাউকে না বলে নিজে নিজেই বাসায় চলে এসেছিল সে। কিন্তু অপ্রিয় জিনিসগুলো কি আর সহজে পিছু ছাড়ে? রক্ষে তো তার বাসায় এসেও হয়নি। পূর্বে কোনক্রমে হয়তো স্পর্শীর হাত লেগে ওয়াই-ফাই সফটওয়্যারটি অন হয়ে গিয়েছিল যার ফলস্বরূপ বাসার ত্রিসীমানায় আসতে না আসতেই তার মোবাইলের সাথে আপনা-আপনি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কটি কানেক্ট হয়ে যায় আর নোটিফিকেশনের জোয়ার হানা দেয়। স্পর্শী তখন চেয়ে কোনকিছু অদেখা করতে পারেনি। স্বেচ্ছায় ফেসবুকে ঢুকে পড়ে সে। অতঃপর দেখে, বিভিন্ন পোস্টের উপরে,নিচে তাকে মেনশন দেওয়া হয়েছে অজস্রবার। কমেন্ট সেকশনে অশ্রাব্য, কুরুচি সম্পূর্ণ ভাষায় যা নয় তাই বলা হয়েছে। সেখানে এমন এমন কথা তার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল যে একটা সময় স্পর্শীর মনমানসিকতা, মনোবল দুর্বল হয়ে যায়। হীনম্মন্যতা করে বসে। পরবর্তীতে স্পর্শী নিজের সকল একাউন্ট ডিয়েক্টিভ করে মোবাইলটা বিছানায় ছুড়ে ফেলে রাখে।
আকস্মিক রিংটোন বেজে উঠায় স্পর্শী নয়ন দুইটির কপাট খুলে তাকায়৷ একপলক তাকালো সেদিকে। জানালার ধার থেকে উঠে দাঁড়াতে আলসেমো লাগছিল বলে স্পর্শী উঠলো না। বাজতে দিল মুঠোফোনটাকে, অপেক্ষা করলো পরিবেশ পুনরায় নিভৃত হওয়ার। সামান্য সময়ের জন্য তা হলোও, তবে স্থায়ী হলো না। পুনরায় বেজে উঠলো ফোনটি৷ একবার-দুইবার নয়, কয়েকবার৷ পরিশেষে স্পর্শী অবসন্ন হয়ে উঠে গিয়ে ফোনটা হাতে নিল। পর্দায় নির্বাণের নামটি দেখে ঘন নিঃশ্বাস ফেললো সে। কারো সাথেই কথা বলার মনমানসিকতা নেই বলে স্পর্শী চাইলো অল্পতে কথা শেষ করতে। তাই সে কলটা রিসিভ করে বলল, “আমি বাসায় আছি, ঠিক আছি। চিন্তা করবেন না।”

প্রত্যুত্তরে নির্বাণ উষ্ণতাহীন কন্ঠে বলল, “আচ্ছা।”

স্পর্শী থমকালো। ললাটের মাঝ বরাবর পড়লো দৃঢ়ভাঁজ। শুধু আচ্ছা? আর কিছু না? বিষয়টা নিয়ে আর কিছু ভাবার পূর্বেই কল ডিসকানেক্ট হলো। সাথে সাথেই রাশভারী কৃষ্ণমেঘে আচ্ছাদিত হলো কারো মন। বিষণ্ণ নারীর নয়ন হলো অভিমানের টইটম্বুর। সে নাহয় কথা বলতে চায়নি তাই বলে কি নির্বাণ একটুও কথা বলার চেষ্টা করবে না? খোঁজ নিবে না? সে কি এতই তুচ্ছাতিতুচ্ছ মানুষ তার নিকট? প্রশ্নগুলো মস্তিষ্কে বিচরণ করার পরমুহূর্তেই ভাবনায় এলো, সে-ই তো চাচ্ছিল না কথা বলতে। তাহলে এখন যখন নির্বাণ কথা না বাড়িয়ে রেখে দিয়েছে তার কেন খারাপ লাগছে? অভিমান হচ্ছে? উত্তর জানে না সে। শুধু জানে তার সবকিছু এখন বিষাদ,তেতো লাগছে৷ স্পর্শী ফোনটা অফ করে দিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লো। বালিশে মুখ চেপে শুতেই কারণে-অকারণে আঁখিকোণ থেকে উষ্ণ জলবিন্দু গড়িয়ে পড়লো। রক্তিম হয়ে এলো নয়নের শ্বেতাভ অংশ, জ্বালা শুরু হতেই নেত্রপল্লব এক করে নিল স্পর্শী। জোড়পূর্বক অশ্রুগুলো আটকানোর ক্ষুদ্র চেষ্টা। কিছুক্ষণ পর পার্শিয়া এলো। স্পর্শীকে শুয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে গেল ওর কাছে। বিছানায় উঠে মাথার পাশে এসে বসে মৃদুশব্দ করে স্পর্শীকে ডাকতে থাকলো। স্পর্শীর হাতে মাথা ঘেঁষলো, একটু স্নেহের আশায়। চোখ খুলে সামনে পার্শিয়াকে দেখে স্পর্শীর নিজের ক্ষোভ বের করার যেন জায়গায় পেয়ে গেল। সে পার্শিয়াকে এক ধমক দিয়ে বলল, “এখানে কি করছিস তুই? বেরিয়ে যা আমার রুম থেকে, আসবি না আমার কাছে। বেরিয়ে যা বলছি।”

শেষের কথাটি স্পর্শী এত জোরেই বলল যে পার্শিয়া কেঁপে উঠে এক লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে পড়লো। কিয়দংশ সময় স্পর্শীর পানে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে নিজেও এক রাশ অভিমান নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল। পার্শিয়া চলে যেতেই স্পর্শী পুনরায় চোখ বুজে নিল। পরমুহূর্তেই তার মনে হলো সে তো দরজা আটকে রেখেছিল,পার্শিয়া রুমের ভিতরে ঢুকলো কিভাবে? স্পর্শী দ্রুত চোখ খুলে মাথা ঘুরালো, দরজার সামনে নির্বাণকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুঞ্চিত হলো তার। নির্বাণ এক হাত পকেটে ঢুকিয়ে নিষ্পলক চাহনিতে তাকিয়ে আছে তার পানে। স্পর্শী থমকালো, সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানবটিকে কল্পনা বলে ধরে নিল। কিন্তু যখন বুঝতে পারলো মানুষটা বাস্তব, মুখ ঘুরিয়ে নিল সে। তীব্র অভিমান নিয়ে মনে মনে আওড়ালো, “আপনি এখানে কেন? চলে যান। চাই না আপনাকে আমি এখন আপনাকে পাশে।”

কিন্তু মুখে রইলো মৌন, একটা শব্দ পর্যন্ত উচ্চারণ হলো না কণ্ঠনালী হতে। নির্বাণ দীর্ঘশ্বাস ফেললো। দরজা আটকে এগিয়ে গেল স্পর্শীর দিকে। স্পর্শী আগে দরজা লক করেনি বলেই নির্বাণ নির্দ্বিধে রুমে প্রবেশ করতে পারে। নাহলে যে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হতো তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। তবে, নির্বাণ স্পর্শীর কাজে আজ বেশ রেগে আছে। এভাবে না বলে কেউ আসে? রুমে তখন স্পর্শীকে না দেখে কত ভয় পেয়ে গিয়েছিল সে। মনের মাঝে না চাইতেও অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো বাসা বাঁধতে শুরু করেছিল। যদি নির্বাণ তখন সালেহাকে ফোন না করে স্পর্শীর কথা জিজ্ঞেস না করতো তাহলে হয়তো দুশ্চিন্তায় শেষ হয়ে যেত সে। যদিও ফোন করার পর সাহেলা ভেবেছিলেন স্পর্শী এবং নির্বাণের মধ্যে মনমালিন্য হয়েছে, তবে নির্বাণ সেটা সামলে নেয়। অন্য এক বুঝ দিয়ে দেয় তাকে। অন্যথায় এক বিশ্রীরকম অবস্থায় পড়তে হতো তাকে।
নির্বাণ স্পর্শীর সামনে এসে রাগান্বিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, “তুমি না বলে চলে এসেছ কেন?”

স্পর্শী প্রত্যুত্তর করলো না। চুপ থাকলো৷ নির্বাণ পুনরায় শাণিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে, “স্পর্শী, আমি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করছি। এভাবে চলে এসেছ কেন? এত বেপরোয়া কেন তুমি?”

স্পর্শী এবারও নিরুত্তর রইলো। নির্বাণ বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো স্পর্শীর উত্তরের, কিন্তু ফলাফল শূণ্যের কোটা হতে অনড়। অকস্মাৎ ফোঁপানোর আওয়াজ কর্ণকুহরে প্রতিধ্বনি হতে বক্ষ কেঁপে উঠলো তার। উষ্মা দৃষ্টিতে হিমানীর প্রলেপ পড়ে। নির্বাণ সন্তর্পণে স্পর্শী মাথার কাছে বসে তার চুলের হাত গলিয়ে দিল। কণ্ঠস্বর হলো খুব আদুরে, “আমি কি একবারও বকেছি তোমায়? কাঁদছ কেন এভাবে তুমি?”

স্পর্শী নীরবচারী হয়ে নোনাজল বিসর্জন দিয়েই গেল। নির্বাণ আবার বলল, “তুমি না বলে চলে আসায় আমি কতটায় চিন্তা পড়ে গিয়েছিলাম জানো? তাই এখন রাগ সামলাতে পারিনি, সরি।”

স্পর্শী কিছু না বলে পাশ ফিরে নির্বাণের কোমর জড়িয়ে ধরে মুখ গুঁজে নেয় পাশে৷ অশ্রুতে ভিজিয়ে দিতে থাকে শার্টের একাংশ। নির্বাণ বিহ্বলিত হয়ে বলে, “আরেহ বাবা! বললাম তো সরি। এবার কান্না থামাও!”

স্পর্শী স্বস্তঃস্ফূর্ত কন্ঠে বলে, “আমি আপনার কথার জন্য কানছি না।”

কথাটা শুনে নির্বাণ ভ্রু কুঁচকে যায়,”তাহলে কেন কানছো?”

“সবকিছুর কথা ভেবে। আমার ভালো লাগছে না কিছু, অস্বস্তি লাগছে। সবার ওসব অকথ্য ভাষা মনে পড়লেই নিজেকে নিয়ে নিজের এখন বিশ্রী অনুভূতি হচ্ছে।”

নির্বাণের এবার বুঝতে দেরি নি, মেয়েটা এতক্ষণে কাউকে আঁকড়ে ধরার আশায় বসেছিল। যার দরুন, ভরসার হাত নিকটে পাওয়ামাত্র তার লুকায়িত অনুভূতিগুলো চোখের জল রূপে বেরিয়ে এলো। নির্বাণ অনিমেষ কন্ঠে বলে, “ভেবো না ওসব নিয়ে, কেউ এখন আর বাজে কথা বলবে না এসব নিয়ে। সব ঠিক হয়ে গিয়েছে।”

“আদৌ কি সব ঠিক হয়েছে? ছবিগুলো সব সেরকমই রয়ে গিয়েছে।”

“আজ রাতের মধ্যে সব জায়গায় থেকে আমাদের ছবি ডিলিট হয়ে যাবে চিন্তা করো না। তোমার,আমার সম্পর্কও আজকের মধ্যেই সকলে জেনে যাবে। কেউ আর ভুল বুঝবে না।”

স্পর্শী কিছু বলল না। নীরবে নির্বাণের এক প্বার্শের শার্ট শক্ত করে চেপে ধরলো। নির্বাণ স্পর্শীর চোখ মুছে দিয়ে বলে, “তোমার অশ্রু তোমার কাছে দামী না হলেও কারো জন্য কিন্তু অতি মূল্যবান। অপচয় করো না এভাবে, কষ্ট হয়।”

স্পর্শীর কান্না থেমে গেল তখনই। কথাগুলো সোজা গিয়ে তার বক্ষঃস্থলে গিয়ে ঠেকলো। লাজ দেখা দিল চোখে-মুখে। সান্নিধ্যে এসে নিভৃতে মুখ লুকালো। স্পর্শীকে মুহূর্তে বিড়াল ছানার ন্যায় গুটিয়ে যেতে দেখে নির্বাণ হাসলো। কোথায় ভেবেছিল মেয়েটাকে আজ শাসন করবে সে, আচ্ছা করে বকবে। অথচ তার নয়নের দুই ফোঁটা জল দেখে সব হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। আর এমন হবেই বা না কেন? যে মনোহারিণী নারীতার মনের আঙ্গিনায় প্রণয়প্রতুষ্যের সূত্রপাত ঘটিয়েছে, তার কান্না অবহেলা করার সাধ্য কি তার আছে? নেই তো। একদম নেই।
নির্বাণ স্পর্শীর নেত্রপল্লবে আলতো করে অধর ছোঁয়াল অতঃপর আনমনে বলল, “আমার জন্য আর কখনও, কোনদিন তোমায় যাতে কথা শুনতে না হয় সে ব্যবস্থা আমি করছি। এইতো আর কিছু প্রহরের ব্যাপার। এরপর সব ঠিক হবে।”

__________________

নিশুতি শেষ প্রহর কাটিয়ে উদয় হলো নতুন প্রভাতের। পাখির কলরবে মুখরিত পরিবেশ। স্নিগ্ধ,নরম আলোক রশ্মি ধীরে ধীরে প্রতাপ পেতেই ব্যস্ত হয়ে উঠলো নগরী। পিছনের কথা ভুলে নতুন কিছুর সন্ধানে বেরুলো মানব-মানবী। নিত্যদিনকার ন্যায় চলল সব, ব্যতিক্রম দেখা দিল না কিছুই। কিন্তু যাদের জীবনে বিগত দিনগুলো ছাঁপ ফেলে গিয়েছে, আজকের প্রভাত তাদের জন্য ভিন্ন হয়ে দাঁড়ালো। জীবনের মোড় ঘুরলো এখান থেকেই।
বিগতদিন ভার্সিটির প্রাঙ্গণ কোলাহলে পরিপূর্ণ হলেও আজ বেশ শান্ত,ক্ষান্ত। কাউকে নিয়ে কোন রূপ অপ্রাসঙ্গিক কথা নেই কারো মুখে। দৃষ্টিতে হীনতা নেই, অবজ্ঞা নেই। আছে শুধু নমনীয়তা আর শ্রদ্ধা। কিন্তু তবুও যা ঘটার তা তো ঘটেই গিয়েছে, এখন আর কিছু না বললেই বা কি?

ভিসির সামনে দাঁড়িয়ে আছে নির্বাণ। চোখে-মুখে কাঠিন্যভাব স্পষ্ট। ভিসিও কড়া কন্ঠে নিজের বক্তব্য রাখেন, “শিক্ষক-ছাত্রীর সম্পর্ক অভিবাকের তুল্য। সেই সম্পর্ক আপনি হীন করেছেন মি. সাইয়্যেদ। একজন শিক্ষক হয়ে নিজের ছাত্রীকেই বিয়ে করেছেন আপনি। যা অন্যায়। এমনটাই বলে গার্ডিয়ানরা অভিযোগ জানাচ্ছেন আমাদের নিকট। যদিও এই বিষয়টা নিয়ে আমাদের কোন মাথাব্যথা নেই, শিক্ষক-স্টুডেন্ট বিয়ে করতেই পারে। তবে কালকের ঘটনাকে ঘিরে একটু ঝামেলা হয়ে গিয়েছে। গার্ডিয়ানরা সবাই অন্য নজরে বিষয়টা। আবার অথোরিটির মিটিংয়ে-ও এই প্রসঙ্গ নিয়ে সহস্রাধিকবার প্রশ্ন উঠেছে৷ আপনি নিজের হাতে পাওয়ার তুলে নিয়ে আমার অনুমতি ছাড়াই ভার্সিটির ভিতর পুলিশ ডেকেছেন। যা সকলের কাছে দৃষ্টিকটু লেগেছে। তাই এখন সবাই এক সিদ্ধান্তে আসতে চাইছে।”

নির্বাণ নির্বিকার ভঙ্গিতে বলে, “সেটার প্রয়োজন হবে না। আমি আগেই নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি।”

“আর সেটা কি?”

নির্বাণ টেবিলের উপর একটা বাদামি রঙের খাম রেখে তা স্থিরচিত্ত সামনের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে, “আ’ম রিজাইনিং৷”

ভিসি বিস্মিত হয়ে বলে, “জি?”

“আমি চাকরিটা ছাড়তে চাচ্ছি। এইটা আমার রেজিংনেশন লেটার।”

“আর ইউ সিউর এবাউট দিস?”

নির্বাণের অনড় কন্ঠ,”হান্ড্রেড পার্সেন্ট।”

“আবার ভেবে দেখুন। আমরা কিন্তু আপনাকে বের করে দেওয়ার কথা ভাবছিলাম না, কিছুদিনের বিরতি দেওয়ার কথাই ভাবছিলাম। সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে আপনি কিন্তু আবার জয়েন করতে পারবেন।”

“বিষয়টা এখন আমার চাকরির না, আমার সম্মানের। তাই আমি আর দ্বিতীয় কোন ভাবনায় যেতে চাচ্ছি না। আশা করি বুঝবেন।”

ভিসি আর কিছু বললেন না। মৌনতা বুঝিয়ে রাখলেন। নির্বাণও কথোপকথন দীর্ঘ করলো না। অনুমতি নিয়ে বেরিয়ে আসলো সে। আপাতত তার সমস্ত কাজ এখানেই শেষ।

#চলবে
আজ সকলে একটু রেসপন্স করার চেষ্টা করবেন। ভালো-মন্দ যাই হোক, উপন্যাসটির সম্পর্কে কিছু হলেও বলে যাবে। ভালোবাসা সকলের জন্য❤️