#হৃদয়_নিবাসে_তুই
#পর্ব_২৪
লেখনীতেঃভূমি
‘ ভালো আছো অদ্রি?তোমায় অদ্রি বা তুমি বলে সম্বোধন করার বিশেষ কোন উদ্দেশ্য নেই।প্রথম থেকেই মস্তিষ্ক তোমায় অদ্রি হিসেবেই চিনে এসেছে তো তাই মনে হলো অদ্রি বললে মনের শান্তি মিলবে।সে না হয় বাদ দাও, আমার প্রতি কি অনেক বেশিই রাগ, ক্ষোভ, ঘৃণা?অভিমান ও কি আছে? হয়তো!কেন আমার প্রতি তোমার এতটা রাগ? ঘৃণা?অভিমান?কেন ভালোবাসলে আমায়?প্রথম থেকেই তো তোমায় বারংবার বলেছি আমি নামক যুবকটাকে তোমার জীবনে জড়াবে না।শুনোনি কেন? ভুগছো এখন?বেশ করেই তো ভুগছো।নিজেকেই ইদানিং সেলফিশ মনে হয় খুব।তোমার সুখটুকু না কাড়লেও বোধ হয় পারতাম আমি।তবুও ঐ যে নিয়তি?নিয়তিই আমাকে দিয়ে তোমার প্রাপ্য সুখ পাওয়া পছন্দ করেনি।আমায় ক্ষমা করো অদ্রি।তোমার চোখজোড়ার সেই বিষাক্ত ঘৃণিত চাহনি নিয়ে বেঁচে থাকা দায়!নিঃশ্বাস নেওয়া ভীষণ কঠিন।অদ্রি?নিয়তিকে কি পাল্টানো যায়? বদলানো যায় না আমার এই জীবনের নিয়তিটাকে?কে জানে!যদি নিয়তি না বদলায় তবে কি কভু দেখা হবে আর?কাছ থেকে, খুব কাছ থেকে দেখতে পারব তোমায়?সেই কন্ঠটা শোনা হবে তো আর?অযুহাতে কাছে আসা হবে তোমার?আমি জানি না।কিছু জানি না।শুধু এইটুকু জানি আমি তোমার থেকে সরে যাচ্ছি।অনেকটা দূর সরে যাচ্ছি।যদি কোনদিন ফিরি আমায় আগের মতোই ভালোবাসবে না?আর যদি না ফিরি তবে নিশ্চয়ই ভুলে যাবে আমায়?অদ্ভুত বিষয় কি জানো অদ্রি?রক্তিম চিরকাল চেয়েছে মানুষ তাকে ভুলে যাক।মানুষের স্মৃতির পাতায় কোনদিন যাতে রক্তিম নামক মানুষটা না থাকে। কিন্তু তোমার বেলাতে এসেই আমার যত অভিমান!কেমন বাচ্চা বাচ্চা মনের মতো কান্না পাচ্ছে তুমি আমায় ভুলে যাবে ভেবেই।ভালোবাসবে না ভেবে বিষাদে ভরে যাচ্ছে আমার মনটা।কেন?জানো?উত্তরটা তোলা থাক।কোন একদিন যদি নিয়তি আমায় উত্তরটা দেওয়ার সুযোগ দেয় অবশ্যই আমি জানিয়ে দিব তোমায়।ভালো থেকো।তার খেয়াল রেখো।তাকে আমার মতো বাঁচতে দিও না প্লিজ। আমি জানি, তুমি তাকে আগলে রাখবে।আমি না থাকলে আমার শূণ্যতাটাও বুঝতে দিবে না।কি তাই তো?প্রমিজ?’
অদ্রিজা স্তব্ধ হয়ে চেয়ে রইল লাল রাঙ্গা কাগজটার গুঁটিগুঁটি কালো কালির লেখাগুলোর দিকে।কেমন উদ্দেশ্যহীন লেখা।চিঠির শুরুতে তাকে কিছু দিয়ে সম্বোধনও করেনি।অদ্ভুত!চিঠির ভেতরের লেখাগুলো ও বেশ অস্পষ্ট।তবে শেষের দিকের লাইনগুলো বুঝতে তেমন একটা বেগ পেতে হলো না।সৃষ্টিকর্তা এত কেন নিষ্ঠুর বুঝে উঠল না সে।মন প্রাণ দিয়ে এত চাওয়ার পরেও রক্তিম কি করে জেনে গেল প্র্যাগনেন্সির খবরটা?বুঝে উঠল না অদ্রিজা।রাগে মস্তিষ্ক যেন থম মেরেই স্থির হয়ে রইল। কার উপর রাগ?কেন রাগ? তাও বুঝল না।কার উপর রাগ ঝাড়বে সেটাও মাথায় এল না তার।মাথায় দুইহাত রেখেই বসে রইল।ঠিক তখনই দরজার আড়ালে এসে দাঁড়াল এক যুবক।চোখেমুখে তার উৎসুক দৃষ্টি।ভ্যাপসা গরমে চোখমুখের বেহাল দশা।অদ্রিজা থমকানো চাহনি নিয়ে যুবকটির দিকে তাকিয়েই বিরক্ত হলে।যুবকটার এখানে আসার তেমন কোন কারণ খুঁজে না পেয়েই বিরক্তিটা দ্বিগুণ হলে।চোখেমুখে তীব্র অসন্তোষ নিয়ে তাকাতেই যুবকটি উঁশখুশ করল।মাথা নিচু করে রুমে ডুকেই সোজা হয়ে দাঁড়াল।নম্র কন্ঠে বলে উঠল,
‘ কেমন আছো অদ্রি?’
অদ্রিজার দৃষ্টি ক্ষ্রিপ্ত হলো।এই লোকটার কারণেই তার মায়ের সাথে এখন আর তার কথা হয় না।এই লোকটার কারণেই রক্তিমের উদ্দেশ্যটা কতসুন্দরভাবে পূরণ হয়ে গেল।আচ্ছা?কোনভাবে এরা দুইজন একত্রে করেনি তো কাজটা?অদ্রিজা বুঝল না।দৃষ্টি সরু করেই কৃত্রিম হাসল। বলল,
‘ অনেক ভালো।আপনি আমার জীবনটা বাঁচানোর জন্য এত বড় উপকার করলেন। আর ভালো থাকব না?তা কি হয়?তো রায়মান ভাইয়া? হঠাৎ আমাদের বাসায়?আজ তো কোন অনুষ্ঠান নেই আমাদের বাসাতে।’
রায়মান কেঁশে উঠল। মুখচোখ হয়ে উঠল অতিরিক্ত নার্ভাস।থমকানো গলায় বলল,
‘ এক্চুয়েলি আমি তোমার জন্য কিছু জিনি…..’
রায়মানের কথাটা শেষ হলো না। তার আগেই রুমে প্রবেশ করল এক সুন্দরী মেয়ে। গায়ের রং মোমের মতে সাদা।ফুলকো গাল।চুলগুলো দুই বেনুনি করা। পরনে টিশার্ট আর প্লাজু।রায়মান শান্ত চাহনিতে একনজর তাকিয়েই মেয়েটাকে পর্যবেক্ষন করল পা থেকে মাথা পর্যন্ত। কিন্তু মেয়েটা বড্ড অশান্ত হয়েই তার চিকন কন্ঠে তীক্ষ্ণভাবে বলে উঠল,
‘ আপু।তুই কিছুই নিবি না।উনাকে ঐসব জিনিস নিয়ে বের হয়ে যেতে বল।’
অদ্রিজা মিনমিনে চাহনিতে তাকাল।কথার পুরো অর্থটা বুঝে না উঠেই ভ্রু বাকাল।রায়মান তৎক্ষনাৎ বলল,
‘ এক্চুয়েলি অদ্রি?তোমার জন্য দুটো শাড়ি, কিছু জুয়েলারি, কিছু চকলেট আর দুটো টেডি গিফ্ট হিসেবে এনেছিলাম। নেবে না?ভাই হিসেবে ও মেনে নেবে না?নাকি এই পুচকির কথা অনুয়ায়ী ফেরত যেতে বলবে?প্লিজ!’
অদ্রিজা দৃষ্টি আরো সরু করল।দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
‘ আমার জন্য?আমার জন্য কেন এসব?’
রায়মান আরও হতাশ হলো বোধ হয়।চোখমুখ ঘুরিয়ে অত্রিয়া, অদ্রিজা দুইজনের দিকে তাকিয়েই থমকাল। বলল,
‘ তুমি আমার আত্নীয়। আঙ্কেলের ভাইয়ের মেয়ে।আই মিন,বোনের মতোই তো।ভাই হিসেবে দিতে পারি না?’
‘ বোন?তো শুধু আমার জন্যই কেন?চাচুর ভাইয়ের দুইজন মেয়ে ভুলে গেছেন?সেই হিসেবে, অত্রিয়া ও আপনার বোন হবে রায়মান ভাইয়া।ওর জন্য আনেন নি যে?’
রায়মান কেঁশে উঠল।বার কয়েক নিঃশ্বাস ফেলেই চুপ হয়ে রইল।অদ্রিজা আবারও প্রশ্ন ছুড়ল,
‘ কি হলো?কিছু বলছেন না যে?’
রায়মান দম ফেলল।এক নিঃশ্বাসেই চটফট বলে বসল,
‘ আম্মুর কাছে সকালে শুনলাম তুমি মা হচ্ছো।নিউজটা ভালো। তাই তোমার জন্য ঐটুকু গিফ্ট। ‘
অদ্রিজা ভ্রু বাঁকাল।অত্রিয়ার দিকে তাকিয়েই বলল,
‘ নিউজটা নিশ্চয় এখন টেলিভিশনেও সম্প্রচার করা হবে তাই না অত্রি?তোর থেকে এমনটা এক্সপেক্ট করিনি আমি।পাড়া মহল্লায় আর কাউকে বাকি রেখেছিস কথা বলতে।না বললে বল।আমি বলে আসি।’
অত্রিয়া শুকনো ঢোক গিলে অসহায় চোখে তাকাল। অদ্রিজা আবারও বলল,
‘ শুধুমাত্র তুই সবাইকে বলে বেড়িয়েছিস বলে কথাটা রক্তিমও জেনে গিয়েছে অত্রি। ‘
অত্রিয়া মৃদু গলায় বলল এবার,
‘ তো?উনি তো চলেই গেছেন জানলেও কি না জানলেও কি।শুধু শুধু বকছিস আমায়।’
অদ্রিজার ভ্রু জোড়া সংকুচিত হলো আরো।কপালে ভাজ ফেলেই প্রশ্ন করল,
‘ মানে?চলে গেছেন মানে? ‘
‘ উনি তো ইউ এস চলে গেল। তুই জানিস না?’
অদ্রিজা ভ্রু কুঁচকে সেভাবেই তাকিয়ে রইল।কিছুটা স্পষ্ট হলো মনের ভেতরের প্রশ্ন গুলো।হয়তো তার জন্যই চিঠিটা পাঠিয়েছে।বাহ!যখন জানতেই পারল,সে বাবা হতে যাচ্ছে। কয়েক মাস পর তার সন্তান পৃথিবীর আলো দেখবে তখনই ফট করে পালিয়ে গেল?চমৎকার!একবার তো অদ্রিজার সাথে দেখাও করে গেল না।নিজের অনাগত সন্তানের প্রতিও কি তার দুর্বলতা কাজ করেনি?এইটুকুও না?এতটাই নিষ্ঠুর সে?অত্রিয়া ঠিকই বলেছে।লোকটা জানলেও কি না জানলেও কি।তার মধ্যে বাবা হওয়ার কোন গুণ কি আছে আদৌ?তীব্র রাগ নিয়ে কথাগুলো ভেবেই দীর্ঘশ্বাস ফেলল সে।দাউদাউ রাগে ফেটে যেতে চাওয়া মনটা নিয়ে থম মেরে বসে রইল।রায়মান হতাশ কন্ঠেই বলে বসল,
‘ অদ্রি?প্লিজ।জিনিস গুলো নিয়ে নাও না।’
অদ্রিজা কিছু বলল না।ঠিক সেভাবেই থম মেরে বসে রইল।রাগে শরীরে বহমান রক্তগুলো টগবগ করতেই মস্তিষ্ক প্রশ্ন ছুড়ল, কার উপর এই রাগ? কেন এই রাগ?ঐ মানুষটার উপর রাগ হওয়া সাঁজে না।চরম অন্যায়।তাও কেন রাগ হচ্ছে? সুস্পষ্ট কোন উত্তর পাওয়া গেল না অবশ্য।দাঁতে দাঁত চেপে বসে থাকার মাঝেই রুমে প্রবেশ করল আরো দুইজন অপিরচিত লোক।হাতে তাদের বিশাল এক পেইন্টিং।পেইন্টিংয়ে রংতুলি দিয়ে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে মা শিশুর বিভিন্ন দৃশ্য।খেলা করা, আধো আধো পায়ে হাঁটা, চুল ধরে টানা সহ বিভিন্ন দৃশ্য একই পেইন্টিংয়েই বেশ স্পষ্ট আর দক্ষ ভাবে এলেমেলো করে তুলে ধরেছে চিত্রকার।অদ্রিজা বেশ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখল পেইন্টিংটা।কয়েক সেকেন্ডে মনে হলো, বেশ পছন্দ হয়েছে তার এই পেইন্টিংটা।বার কয়েক পেইন্টিংটার দিকে তাকিয়েই রুমের জানালাটা দেখল সে।জানালার শেইফের থেকেও কিছুটা বড় হবে । বিশালাকৃতির এই পেইন্টিংটা তার রুমে ডুকানোর উদ্দেশ্য না বুঝেই ভ্রু কুঁচকে বলল সে,
‘ এটা আমার রুমে আনছেন কেন?’
লোকটা উত্তর না দিয়ে প্রথমেই রায়মানের দিকে তাকাল।সে তাকানোর বদোলে রায়মান মেকি হাসল। গম্ভীর গলায় বলল,
‘ এটাও গিফ্ট।তোমার জন্য।প্লিজ না করে না অদ্রি।ধরে নাও তোমার কোন ভাই গিফ্ট করছে।প্লিজ!’
‘নাহ, আপু এইসব নেবে না।আপনি এসব ফেরত নিয়ে চলে যান।’
অত্রিয়ার কথাতে রায়মানের দৃষ্টিটা রাগে পরিণত হলে এবার।অত্রিয়ার দিকে কিছুটা চেপে দাঁড়িয়েই রাগে ফোঁসফাঁস করে উঠল।গম্ভীর গমগত কন্ঠে ফিসফিসিয়ে বলে উঠল,
‘ এই পুচকি?একদম কথার মাঝখানে বা হাত ডুকাবে না।তোমার জন্য কিছু আনিনি বলে হিংসে হচ্ছে?বারবার অদ্রিকে নিষেধ করছো কেন?ফালতু মেয়ে!’
‘ ফালতু মেয়ে? কে ফালতু মেয়ে?’
অত্রিয়ার প্রশ্নে রাগটা বোধ হয় আরো কিছুটা বাড়ল রায়মানের।শ্যামলা মুখে রাগটা বেশ স্পষ্ট বুঝা গেল।রাগে হাঁসফাঁস করেই দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
‘ তুমি।তুমিই ফালতু।’
কথাটা বলে সরে দাঁড়াল রায়মান।অত্রিয়া ক্ষ্রিপ্ত চাহনিতে তাকিয়েই উল্টোদিকে ঝংকার তুলে হাঁটতে লাগল।সেই হাঁটার পদধ্বনি বোধ হয় দেওয়ালে দেওয়ালে ছুঁয়ে গেল। রুম থেকে বেরিয়ে যেতেই রায়মান সেদিক পানে তাকিয়েই কয়েক সেকেন্ড নিশ্চুপ রইল।তারপর অদ্রিজার দিকে তাকিয়েই সুপ্ত কন্ঠে বলল,
‘ গিফ্ট গুলো ঠিক তোমার পাওনা ও নয় অদ্রিজা।গিফ্টগুলো তোমার ভেতর বেড়ে উঠা সেই প্রাণটার জন্য।তোমার কোন রাইট নেই তার প্রাপ্য গিফ্ট ফেরত দেওয়া।আমি তার জন্য এই গিফ্টগুলো এনেছি।গিফ্ট গুলো ফিউচার লিটল চ্যাম্পের প্রতি একঝুড়ি শুভ্র ভালোবাসাই ধরে নাও।তারপরও কি নেবে না?লিটল চ্যাম্পের প্রাপ্য গিফ্ট ফিরিয়ে দেবে?’
অদ্রিজা অনেকক্ষন চুপ থাকল।কি উত্তর দিবে, কি উত্তর দেওয়া উচিত বুঝে উঠল।অবশেষে যখন রায়মান নিজের সবটুকু আশা পরিত্যাগ করে বের হয়ে ঠিক তখনই একেবারে ভাবলেশহীনভাবে বলল সে,
‘ ফিরিয়ে দিলাম না।তবে লিটল চ্যাম্প যেহেতু এখনো পৃথিবীতে আসেসি সেহেতু তার জন্য গিফ্ট আনাটা আপনার অনুচিত হয়েছে।এরপর একেবারে তার হাতে গিফ্ট দেওয়ার সিচুয়েশন আসা পর্যন্ত গিফ্ট দিবেন না।তার প্রতি শুভ্র ভালোবাসার প্রতীক হিসেবেও নয়।’
রায়মান হাসল।অদ্রিজার উত্তরে খুশি হয়েই মাথা দুলাল।বের হয়ে আসতে আসতেই ফিসফিসিয়ে কাউকে বলল,”ভাই! এটা তোর বউ?নাকি পুলিশ?কি সন্দেহ!কেমনে জেরা করে।”
.
ভার্সিটির সামনের পার্কটা আজ বেশ খালি। পার্কের পাশে দাঁড়িয়েই ভেতরটায় একবার নজর ফেলল নেহা।ঘামে ভেজা কপালটা হাতের তালুতে মুঁছে নিয়েই হাঁটতে লাগল।হঠাৎ অনাকাঙ্খিত মুখটা এই সময় চোখে পড়তেই থমকে দাঁড়াল নেহা।এই কয়দিন যেভাবে এড়িয়ে এসেছে ঠিক সেভাবেই এড়িয়ে পাশ কাঁটিয়ে চলে যেতে লেগেও হঠাৎ থেমে গেল সে।দিহানের দিকে শান্তভাবে তাকিয়েই একদম নম্র কন্ঠে বলল,
‘ ভালো আছিস দিহান?’
দিহান আচমকা পাশ ফিরে চাইল।এই মেয়েটার কন্ঠ অনেকদিন শোনা হয়নি তার।আজ এতদিন পর হঠাৎ?এই কয়দিন তো একবারও ভালো আছে কিনা এটাও জিজ্ঞেস করে নি মেয়েটা।সামনে পড়লে অন্যপাশ দিয়ে হেঁটে চলে গিয়েছে।পুরোপুরি অপরিচিতের মতোই ব্যবহার করেছিল।সে এড়িয়ে যাওয়া খেয়াল করেই সেও পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়েছে এই মেয়েটিকে। তাকে যেমন অপরিচিত হিসেবে মেয়েটি দেখত ঠিক তেমনই সেও অপরিচিতার দৃষ্টিতে দেখত তাকে।তবে আজ হঠাৎ কথা বলার কারণ?বুঝল না দিহান।মৃদু হেসে মাথা চুলকেই বলল,
‘ হ্যাঁ ভালোই তো আছি।তুই?’
নেহা হালকা হাসল।
‘ আমিও ভালো।’
দিহান আর অপেক্ষা করল না।নেহার থেকে উত্তরটা পেয়েই পাশ দিয়ে হেঁটে চলে যেতে লাগলেই নেহা আবারও ডাক দিল।দিহান কিছু না বুঝেই মাথা ঘুরিয়ে চাইল।ভ্রু বাঁকিয়ে বলল,
‘ কি?কিছু বলবি?’
নেহা তাকিয়ে রইল।দিহানের কথার উত্তরে কি বলবে তা খুঁজে পেল না।অনেকবার ভেবেও খুঁজে পেল না।কি বলবে?বলার মতো কিছু আছে নাকি? হতাশ চাহনিতে বার কয়েক তাকিয়ে থেকেই লম্বাশ্বাস ফেলল।দিহান ভ্রু কুঁচকেই আবারও বলল,
‘ বলবি কিছু?চলে যাচ্ছি।’
নেহা মিনমিনে চোখে তাকিয়ে রইল।চোখজোড়া বন্ধ করে নিল কয়েক মুহুর্তের জন্য।অনেক্ষন পর চোখ খুলেই দিহানকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কিছুটা অবাক হলেও আবারও চোখ বন্ধ করল।তারপর ঘনঘন শ্বাস ফেলেই জড়ানো কন্ঠে বলে উঠল,
‘ আমি বোধ হয় তোকে ভালোবাসি।তাই তো তোর সাথে কথা বলার এই প্রবল ইচ্ছে, আকাঙ্খাকে সামলাতে পারলাম না।কোনকালেই পারিনি অবশ্য।তুই কোনদিন যেচে কথা বলিস না জেনেও আমি প্রতিবারই তোর সাথে ইচ্ছে করেই কথা বলতে যাই।অদ্ভুত না?’
‘ হঠাৎ এইসব কথা?কোন সমস্যা?’
‘ অনেক বড় সমস্যা!তোকে ভালোবাসি।এই সমস্যার কি সলুস্যন হতে পারে বল তো তাড়াতাড়ি।’
দিহান চুপসে গেল। হতাশ চাহনি ফেলে তাকাল নেহার দিকে।তাকে ভালোবাসে এর সমস্যার সমাধাণ আবার তার কাছেই চাইছে মেয়েটা?অদ্ভুত!
#চলবে….
#হৃদয়_নিবাসে_তুই
#বোনাস_পর্ব
লেখনীতেঃ ভূমি
‘ অনেক বড় সমস্যা!তোকে ভালোবাসি।এই সমস্যার কি সলুস্যন হতে পারে বল তো তাড়াতাড়ি।’
দিহান চুপসে গেল। হতাশ চাহনি ফেলে তাকাল নেহার দিকে।তাকে ভালোবাসে এর সমস্যার সমাধাণ আবার তার কাছেই চাইছে মেয়েটা?অদ্ভুত!শুকনো ঢোক গিলেই মৃদু হাসল। শান্ত কন্ঠে বলে উঠল সে,
‘ বাসায় যা। তোর বাবা মা কে বল তোর জন্য পাত্র দেখতে। বিয়ে করে নে, বরকে ভালোবাসতে শুরু কর।বাই।’
নেহা মুখ ফুলাল।দিহানকে যেতে না দিয়ে তার সামনে এসেই কোমড়ে হাত রেখে দাঁড়াল।বাহবা দিয়ে বলে উঠল,
‘ ওয়াও!তোর মতো সাজেশন সত্যিই আর পাব না বোধ হয়।এগুলো মাথায় রেখেই প্রায় দুই মাস আগে আমাকে বলেছিলি তোর পাশে থাকতে?মানলাম দ্রিজাকে ভুলে যাওয়ার মেডিসিন হিসেবেই পাশে চেয়েছিলে কিন্তু দুইদিন পর যে এমন কিছু বলতি না তারই কি গ্যারান্টি। চমৎকার!সেদিন আসলেই তোকে ফিরিয়ে দেওয়াটা উচিত কাজ হয়েছে। আমি এতদিন শুধু শুধু অনুশোচনায় ভুগেছি।’
দিহান তীক্ষ্ণ চাহনিতে তাকাল।নেহা খিলিখিলিয়ে হেসেই বলল,
‘ তোর সাজেশনটাই গ্রহণ করলাম।প্রস্তুতু থাক।কেমন?’
‘ হু।অবশ্যই।পথ ছাড় এবার।’
দিহানের শান্ত শক্ত কন্ঠ শুনেও পথ ছাড়ল না নেহা।কোমড়ে হাত রেখে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগল দিহানকে। দিহানের পথ না ছাড়াতে বিরক্তি নিয়ে নেহার দিকে তাকাতেই নেহার নজর দ্বিগুণ তীক্ষ্ণ হলো।ভ্রু জোড়া সংকুচিত করেই বলে উঠল,
‘ তোর এত ভাব কেন?কেন বল? কি মনে করিস তুই নিজেকে?তোকে ভালোবাসি বলে আমি নিচে নেমে গেছি?এত ভাব দেখাস কেন তুই আমার সাথে? আমি তোর সামনে যতোটা ভদ্র হয়ে থাকি ততোটা ভদ্র কিন্তু আমি নই দিহান।তুই এভাবে ভাব দেখাতে পারিস না আমার সাথে।’
দিহান নিরাশ হলো। চোখেমুখে তীব্র অসন্তোষ নিয়েই ভ্রু কুঁচকে বলল,
‘ কি সমস্যা তোর?এতদিন তো নিজেই এড়িয়ে গেছিস।হঠাৎ?এমন করছিস কেন?’
‘ দ্রিজা কনসিভ করেছে।এই উপলক্ষ্যে ওর গিফ্ট হিসেবে তোর পাশে থাকব বলে এসেছি।তোকে ভালোবাসব বলে এসেছি।এবার বল।রাজি?’
দিহান হাসল।বিষয়টাকে ততোটা গুরুত্ব না দিয়েই হাতের ঘড়িটার দিকে তাকাল।সময় দেখে নিয়ে হাসিটা মুখে সেভাবে ঝুলিয়ে রেখেই বলল,
‘ শুধু দ্রিজার গিফ্টের জন্য?এইটুকু?আর কোন গিফ্ট পেলি না নেহা?’
নেহা ভ্রু বাঁকিয়ে তাকাল।দিহান হাসল। আবারও বলল,
‘ বল?’
‘ তুই রাজি কিনা তা বল। তারপর বলব শুধু গিফ্ট কিনা অন্যকিছু।’
দিহান গমগমে কন্ঠেই বলল,
‘ যদি গিফ্ট হয় তো সে গিফ্ট দ্রিজাকে দেওয়ার দরকার নেই।আর যদি অন্যকিছু হয় তো ঠিকাছে।আমিও চাই আমার পাশে কেউ থাকুক।কেউ আমার দুঃখগুলে বুঝুক।কেউ আমায় ভালোবেসে আগলে রাখুক।তবে গিফ্টের অযুহাতে মিথ্যের বেড়াজালে জড়াতে চাই না আমি।আমি তোকে ভালোবাসি না স্বীকার করছি।সবটা জেনে পাশে থাকবি?’
নেহা অনেকক্ষন চুপ থাকল।গাল ফুলিয়ে বুকে হাত ভাজ করে রেখেই দিহানের দিকে সরু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল অনেকক্ষন।দিহান হতাশ হলো।নিজের প্রশ্নের কাঙ্খিত উত্তর না পেয়েই মুখ কালো করে নেহার চাহনিতে দৃষ্টি ফেলল।নেহার চাহনির নড়চড় ঘটল না।একইভাবেই তাকিয়ে রইল দিহানের দিকে।অনেক্ষন চুপ থেকেই কঠিন গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠল,
‘ ওকে ফাইন।তোর পাশে থাকলাম।থাকব।তুই আমায় ভালোবাসলেও কি না বাসলেও কি। আমি তো কেবল এটা জানি, আমি তোকে ভালোবাসি। এনিওয়েজ,শুনেছিস দ্রিজা কনসিভ করেছে?’
দিহান মৃদু হাসল।ঘড়ির দিকে আরেকবার নজর রেখেই বলল,
‘ তোর কাছে শুনলাম।আচ্ছা যাই?আমার একটা টিউশনি ছিল।’
নেহা ঠোঁট টেনে হাসল।বাচ্চা বাচ্চা চাহনি ফেলে মাথা দুলাল। যার অর্থ দিহান যেতে পারে।দিহান হাসল। নেহার ফুলকো বাচ্চামতো গাল দেখেই হাসিটা আরো উজ্জ্বল হলো।
হাত দিয়ে ছুঁয়ে দিতে মন চাইল উজ্জ্বল ফর্সা ফুলকো গাল দুটো।কি অদ্ভুত সুন্দর!
.
আজ অনেকদিন পরই অত্রিয়া আর নেহার জোরাজুরিতে সেই অন্ধকার, শ্বেতশ্বেতে রুমটা থেকে বেরিয়ে এল অদ্রিজা।সন্ধ্যার আগ মুহুর্তের আলোটা বেশ চমৎকার ঠেকল এতদিন পর। বসন্তের ফুরফুরে বাতাসে গাছের পাতা গুলো বেশ সুন্দর ভাবে নড়েচড়ে উঠছে।আশপাশেই গাড়ির যান্ত্রিক আওয়াজে ভারী হওয়া মাথা নিয়ে নিজের দুপাশে নেহা আর অত্রিয়া দুইজনের দিকেই তাকাল।পার্কের ভেতর গিয়ে কাঠের বেঞ্চিগুলোর একটা দখল করে তিনজন আরাম করে বসতেই দেখা মিলল ছোট ছোট পিচ্চি ছেলেমেয়েগুলোর।এই ছেলেমেয়েগুলোকে সে আগেও দেখেছে।বেশ পরিচিতও তারা।অদ্রিজাও বোধ হয় তাদের কাছে অনেক বেশি পরিচিত।তাই তো তাকে দেখা মাত্রই ছুটে এলো।মুখে খিলখিল হাসি ফুটিয়েই সবাই একসাখে বলে উঠল,
‘ অদ্রিজা আপ্পি।’
অদ্রিজা হাসল।ফর্সা ধবধবে তুলতুলে গালে চমৎকার এক হাসি ফুটিয়েই বলল,
‘ কেমন আছো তোমরা?’
সবাই একসাথে সাই দিল,
‘ অন্নেক ভালো।তুমি?’
অদ্রিজা মুচকি হাসল।মৃদু গলায় বলল,
‘ ভালো।’
এরপর আবার ও একেকজন একেক খেলায় মেতে উঠল। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেলো মুহুর্তেই সবগুলো ছেলেমেয়ে। অদ্রিজা মুচকি হেসেই সামনের হাওয়াই মিঠাই নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটাকে কাছে ডাকল। সেখান থেকে সবাইকে একটা করে হাওয়াই মিঠাই ধরিয়ে দিয়েই আবারও এসে বসল সেখানটাতেই।ততক্ষনে মধ্যবয়স্কা একটা মহিলা এসে দাঁড়াল সেখানে।মুখে হাসি ফুটিয়ে সবগুলো বাচ্চা কে বলে উঠল,”সবাই চলো।ফিরতে হবে এবার।সন্ধ্যা হচ্ছে।”কথাটা বলতেই বাচ্চারা ছুটোছুটি করল।এলেমেলো হয়ে বেরিয়ে গেল পার্ক থেকে।মহিলাটা অদ্রিজার সামনে এসেই মিষ্টি হেসে বলল,
‘ কেমন আছেন? আচ্ছা, রক্তিম স্যার কবে ফিরবেন?’
অদ্রিজা মিনমিনে চাহনিতে তাকাল।মহিলা শুকনো ঢোক গিলে আবারও বলল,
‘ না মানে, ওরা তো ল্যাপটপের স্ক্রিনে দিনে দুবার তিনবার রক্তিম স্যারকে দেখে।কথা বলে আরকি।তবে আসার বিষয়ে কিছু জানান না।আপনাকে কিছু বলেছে কল করে?’
অদ্রিজা সুপ্তশ্বাস ফেলল। স্পষ্টভাবে বলল,
‘ দুঃখিত খালা।উনার সাথে আমার কথা হয় না।তাই জানিও না।’
মহিলা আর কথা বাড়াল না।স্পষ্ট জবাবেই বোধ হয় চুপসে গেল।পা বাড়িয়ে সেখান থেকে চলে যেতেই অদ্রিজা বেশ কিছুক্ষন চুপ থাকল।কিছু একটা ভেবেই নেহার দিকে তাকাল।গম্ভীর গমগমে কন্ঠে দ্রুত বলল,
‘ কল দে।’
নেহা ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন ছুড়ল,
‘মানে?কাকে কল দিব।’
‘ রক্তিম নামে তোর যে ফুফাত ভাই আছে তাকে ভিডিও কল দে।দ্রুত।’
নেহা নিরাশ চাহনিতে তাকাল কয়েক সেকেন্ড। তারপর কল দিয়েই মোবাইলটা হাতে নিয়ে ধরল।ওপাশ থেকে কল রিসিভড করতেই ফোনের মসৃন স্ক্রিনে ভেসে উঠল রক্তিমের ঘুম ধরানো ফোলা মুখ।চোখ জোড়া বন্ধ রেখেই ব্ল্যাংকেট মুড়ি দিয়ে মোবাইলটা ধরে রাখল সে।কানে ইয়ারফোন গুঁজা।নেহা কি বলবে তার অপেক্ষাতে থেকেই চোখ বন্ধ করে রাখল সে।অনেকক্ষন পরও যখন নেহা কিছু বলল না তখন রক্তিম চোখ বন্ধ রেখে নিজেই ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলল,
‘ কিরে?কল দিলি কেন এই সময়?’
নেহা ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে রইল।মৃদু গলায় বলল,
‘ দ্রিজা তোমার সাথে কথা বলবে।কথা বলো।দ্রুত।’
রক্তিম এবার চোখ মেলে চাইল।একেবারে স্বচ্ছ চাহনিতে স্ক্রিনে তাকিয়ে অদ্রিজার মুখটা খুঁজল। নেহার পাশে অদ্রিজার মুখটা দেখেই মুহুর্তেই নজরটা ভিন্নরকম হলো। ঘোরধরা চাহনিতে বেশ কিছুটা সময় অদ্রিজার মুখটা দেখল সে।মুচকি হেসেই চুলগুলো পেছনে ঠেলে দিয়ে বলে উঠল,
‘ আমার সাথে হঠাৎ কথা বলতে চাইছেন যে অদ্রিজা?কি ব্যাপার বলুন তো?প্রেমে পড়ে গিয়েছেন সেটা জানাতে নাকি ভালোবাসেন তা জানাতে?’
অদ্রিজা তাচ্ছিল্য নিয়ে হাসল।নেহার থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েই নিজের হাতে ধরল।ক্ষ্রিপ্ত গলায় কঠিন নজরে রক্তিমের মুখপানে তাকিয়েই বলে উঠল,
‘ একদমই নয়।আমি আপনাকে ভালবাসি না।বাসি না ভালো আপনাকে। একটা সময় হয়তো বলেছি ভালোবাসি।ঐটা ভ্রম ছিল শুধু।আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ ভ্রম।আর হ্যাঁ,এসব ফালতু রিজনে আমি আপনার সাথে কথা বলতে চাইব না কখনোই।’
‘ তাহলে? ‘
অদ্রিজা রাগল।অদৃশ্য ক্ষোভ নিয়ে ফোঁসফাঁস করে ফুঁসে উঠেই বলে উঠল,
‘প্রথমত আপনি দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন এটা জানানের জন্যই চিঠি পাঠিয়েছেন নেহাকে দিয়ে?কি দরকার ছিল এসব ফর্মালিটি করার?কি দরকার? দ্বিতীয়ত, আমি আপনার কথায় আমার সন্তানকে ভালো রাখব আশা করলেন কি করে।আমি আমার সন্তানকে নিজের বিবেকবোধ নিয়েই বেশ ভালোভাবে বড় করব।আপনার কোন প্রয়োজন নেই।কোনই না।সবচেয়ে বড় কথা কি জানেন?আপনি একটা সন্তানের বাবা হওয়ার যোগ্যই না।হয়তো সেই ভয় পেয়েই পালিয়ে গেলেন চুপিচুপি।হাস্যকর!এনিওয়েজ,জাস্ট এই কথাগুলো বলার ছিল আমার।না বললে শান্তি হতো না।’
রক্তিম মুচকি হাসল।দাঁত কেলিয়ে হেসেই ঠোঁট বাঁকিয়ে বলল,
‘ কে জানে হয়তো সেই ভয়ে নয়, সেই ভয়কে জয় করতেই পালিয়ে আসলাম চুপিচুপি।এনিওয়েজ,এবার শান্তি পেলেন?’
অদ্রিজা ফুঁসে উঠল।ভ্রু কুঁচকে কিছুটা সময় তাকিয়ে রইল রক্তিমের মুখের দিকে।রক্তিম মৃদু হাসল। শান্ত গলায় আবারও বলল,
‘ শান্তি হয় নি?আরো কিছু বলবেন? বলে ফেলুন।যত খুশি রাগ ঝাড়ুন।আপনার রাগী ফেইসটা দেখতে ভালোই লাগছে আমার।ইচ্ছে হচ্ছে তাকিয়েই থাকি। এতটা সুন্দর কেন আপনি?ভাবতেই অবাক লাগে আপনার মতো এক সুন্দরী কন্যা আমায় ভালোবাসে।কিভাবে পসিবল?’
অদ্রিজা। বিড়বিড় করল কিছু।দ্রুত কল রেখে নেহার হাতে ধরিয়ে দিল মোবাইলটা। রক্তিমকে ইচ্ছেমতো মনে মনে দোষারোপ করেই ক্ষান্ত হলো না সে।কঠিন কন্ঠেই শুধাল নেহাকে,
‘ নেহা। ঐ জঘন্য ঘৃণ্য লোকটাকে বলে দিবি আমি তাকে ভালোবাসি না।উনার মতো একটা মানুষকে ভালোবাসা যায়ই না নেহা।উনি একটা নিকৃষ্ট মানুষ।উনার মন বলতে কিছু আছে নাকি আদো?আর ঐ নিকৃষ্ট মানুষকে ভালোবাসব আমি?পসিবলই না।’
#চলবে….