ভালোবাসি তাই পর্ব-২২+২৩

0
490

#ভালোবাসি_তাই
তন্বী ইসলাম-২২

বিকেলের কলিজা শীতল করা হাওয়া গরমের সিজনে প্রচন্ড চাহিদাসম্পন্ন বিষয়। এই সময়টায় শহরের অধিকাংশ মানুষেরা বিশেষ করে যারা বাসায় থাকে তারা শরীর আর মন জুরানোর জন্য ছাদে গিয়ে পায়চারি করি। আশার তেমন কোনো অভ্যাস নেই, সচরাচর সে ছাদে যায়ও না। তবে আজ মনটা বিশেষ ভালো নেই, ইচ্ছে করছে কোথাও একলা গিয়ে বসে থাকুক। যদিও রুমে সে একাই থাকে, তবুও আজ রুমে থাকতে ইচ্ছে করছিলো না ওর। তাই সে পা বাড়ায় ছাদের উদ্দেশ্যে।
হাওয়াটা ভালোই লাগছে, ভ্যাপসা গরমে এই শীতল হাওয়া শরীর মন প্রশান্ত করে। কিন্তু আশার মনে নেই শান্তির ছিটেফোঁটাও। সে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। ভাবছে কিছুদিন আগের কথা, কিছুদিন আগ পর্যন্তও সে পৃথিবীর অন্যতম সুখী মেয়ে ছিলো। এই ক’টা দিনে অনেক কিছুই বদলে গেছে৷ আশা দীর্ঘনিশ্বাস ছাড়লো। জীবনটা বুঝি এমনই।

আকাশের বুকে শত শত পাখিরা ডানা ঝাপটে ছুটে বেড়াচ্ছে। ওদের নেই কোনো চিন্তা, নেই কোনো বিধিনিষেধ। এক মুহূর্তের জন্য আশার মনে হলো, “ইশ, আমি পাখি কেন হলাম না?
পাশের ফ্ল্যাটের ছাদে দল বেধে বাচ্চারা খেলা করছে। যদিও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না, ছাদটা ওদের বাসার ছাদ থেকে অনেক উঁচুতে। কিন্তু আশা উপলব্ধি করতে পারছে। আশা আবারও ভাবলো, “যখন ছোট ছিলাম, কত ভালোই না ছিলো দিনগুলো। আবারও যদি ফিরে যেতে পারতাম সেই ছেলেবেলায়। আশা আবারও জোরে নিশ্বাস ছাড়লো। এই উদ্ভব চিন্তাভাবনা গুলো যে কখনো বাস্তব হবেনা, সেটা যে জানে। তবুও এক মুঠো আশা কার না থাকে।

আকাশের বুক চিরে শো শো শব্দ করে বিমানটা উড়ে যাচ্ছে অচিন দেশে। আশা একভাবে সেই বিমানটার দিকে তাকিয়ে রইলো, যতক্ষন বিমানটা দেখা গেছে ততক্ষন সে অপলকভাবে তাকিয়ে ছিলো।। ঠিক যেই মুহূর্তে বিমানটা চোখের আড়ালে চলে গেলো ঠিক তখনই বুকে চিনচিন ব্যথা অনুভব করলো সে। এমনই একটা বিমানে করে একদিন তার ভালোবাসার মানুষটা দূর দেশে পাড়ি দিয়েছে। এইরকম একটা বিমানই তার প্রিয় মানুষের মুখটা থেকে সুমধুর সেই কিউটি ডাকটি কেড়ে নিয়েছে। আশা হতাশায় চোখ বুজলো। চোখের কোন বেয়ে ততক্ষণে পানি ঝরে চলছে অবিরাম ভাবে।।
ফোনের রিংটোন বাজায় সে চোখের পানি মুছে নিলো ঝটপট। সে ফোন রিসিভ করে কানে ঠেকায়। ওপাশ থেকে ক্ষীন গলায় মৃদুলা বলে উঠলো
“আশা..
“জ্বি ভাবী।
আশার কন্ঠস্বর ভেজা। মৃদুলা কিছুটা আঁচ করতে পেরে বললো
“তোমার মন খারাপ?
আশা নিজেকে কোনোমতে সামলে বললো
“আমি ঠিক আছি। তুমি কি কিছু বলবে আমায়?
মৃদুলা কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে বললো
“আমি তোমায় মানা করেছিলাম তোমার ভাইয়াকে কিছু না বলার জন্য, তাও বলে দিলে।

আশা বিস্ময় নিয়ে বললো
“আমিতো কিছু বলিনি ভাইয়াকে। কেন কি হইছে?
“তোমার ভাই অনেক চালাক। তুমি না বললেও তোমার কোনো কথায় হয়তো সে টের পেয়েছে আমি বাড়ির ব্যাপারে তোমার সাথে আলাপ করেছি।
আশা চিন্তার স্বরে বললো
“ভাইয়া কি তোমার সাথে খারাপ ব্যাবহার করেছে?
মৃদুলা সামান্য মুচকি হেসে বললো
“বকাঝকা করেছে আমায়।
আশা অবাক হলো। এই সামান্য কারণে বকাঝকা করার মানে কি। সে মৃদুলাকে শান্তনা দিয়ে বললো
“তুমি মন খারাপ করো না ভাবী। আমি ভাইয়াকে জিজ্ঞাসা করছি সে কেন তোমার সাথে এমনটা করলো।

ওপাশ থেকে মৃদুলা তৎক্ষনাৎ বলে উঠলো
“ভুলেও এটা করতে যেওনা আশা। তোমার ভাই আরো রেগে যাবে।
আশা আর কোনো কথা বললো না। সে চুপ থাকলো কয়েক সেকেন্ড। এক পর্যায়ে মৃদুলা ক্ষীণ গলায় আবারও আশাকে ডাকলো
“আশা…
“হুম।।
“আমায় মাফ করে দিও..
আশা অবাক হয়ে বললো
“এমনটা কেন বলছো?
“সেদিন তোমার সাথে আমার এভাবে কথা বলাটা ঠিক হয়নি। আমি ভুলে গিয়েছিলাম আমারও মা বাবা আছে, আমারও অবিবাহিত ভাই আছে। কোনো একদিন আমার ভাই বিয়ে করবে, নতুন বউ আনবে ঘরে। আল্লাহ না করুক, আজ আমি যা করছি, তার ফল হয়তো আমার বাবা মা পাবে, ব্যাপারটা আমার ভিতর হটাৎ করেই উপলব্ধি হলো। আমার ভেতরটা আঁতকে উঠেছে বিশ্বাস করো।
আশা মুচকি হেসে বললো
“এমনটা কেন বলছো ভাবী। আমি কিছু মনে করিনি সত্যিই।
মৃদুলা হেসে বললো
“সত্যি তো?
“হুম।

মৃদুলা কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে আবারও বললো
“একটা কথা বলবো?
“বলো.
“আমার উপর রেগে যাবে না তো?
“তুমি বলো তো..
“আসলে সেদিন আমি যা যা বলেছিলাম তা পুরোটা সত্যি নয়।
আশা অবাক হলো। সে তীব্র বিস্ময়ে প্রশ্ন করলো
“মানে?
“তোমার ভাইয়ের ব্যবসা কিছুটা খারাপ যাচ্ছে, কিন্তু এতটাও নয় যতটা বলেছিলাম। তবে খারাপ সময় কেটেও গিয়েছে। আর…
“আর কি?
“আর মায়েরও এত অসুখ করেনি। সামান্য জ্বর আর প্রেশারের কিছুটা অবনতি হয়েছিলো।
আশা প্রচন্ড শকড হলো। সে হতবিহ্বল হয়ে বললো
“মানে কি? যদি এমনটা নাই হয়ে থাকে তাহলে আমাকে এইসব কেন বলেছিলে তুমি? আর তাছাড়া কারো শরীরের অসুস্থতা নিয়ে কেউ এমন বলে!!
মৃদুলার কন্ঠ হঠাৎ ভারী হয়ে গেলো। সে অপরাধীর ন্যায় বললো
“আমার মনে হত, আমার স্বামী যত টাকা ইনকাম করে তার সবটাই তোমাদের পিছনেই খরচ করে ফেলছে, আর তোমরাও সেই সুযোগটার ব্যাবহার করছো। তাই তোমাকে এমনটা বলেছিলাম যাতে আর্থিক অবস্থার কথা মাথায় এনে তুমি তোমার ভাইয়ের কাছে যখন তখন টাকার আবদার না করো।
“তাই বলে এইসব বলবে আমায় ভাবী, আমি কতটা প্রেশারের মধ্যে ছিলাম তোমার কোনো ধারণা আছে? হতাশ গলায় বললো আশা।

মৃদুলা আবারও অপরাধীর বেশে বললও
“আমায় মাফ করে দাও আশা প্লিজ।।
আশা আর কোনো কথা না বাড়িয়ে ভারী গলায় বললো
“বাদ দাও ভাবী। মায়ের এত বড় অসুখ হয়নি, আর ভাইয়ারও ব্যবসায়ে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি এটাই অনেক।
মৃদুলা কিছু বলতে পারলোনা প্রতি উত্তরে। ফোনটা রেখে দিলে আশা আবারও আকাশের দিকে তাকালো। মানুষ গুলো সত্যিই অনেক অদ্ভুত, নিজের স্বার্থে মানুষ মনুষ্যত্বটাই হারিয়ে ফেলে। তবে বাড়ির সব ঠিক আছে এটা ভেবেই মনটা হাল্কা লাগছে খুব।
আশার মাইন্ড ফ্রেশ হলে সে নিচে নেমে আসে। আন্টির রুমের দরজাটা খোলা। সচরাচর এই টাইমে আন্টি বাসায় না থাকলেও উনার বুয়া এসে দরজা খুলে রুমে ঢুকে। কাজটাজ শেষ করে আবারও দরজা লাগিয়ে চলে যায়। তবে আজ একটু অদ্ভুত লাগলো ব্যাপারটা। আজ বুয়া দুপুরের দিকে এসেই কাজ করে চলে গেছে। তাই এই টাইমে আন্টির রুম খোলা থাকার কোনো মানেই নেই। কে এলো রুমে? আন্টির ছেলে এসেছে নাকি মেয়ে? কিন্তু আন্টি বাসায় না থাকলে ওরাও তো আসেনা।

আশা পরক্ষণে মাথা থেকে সেইসব চিন্তাভাবনা বাদ দিয়ে নিজের রুমে গিয়ে ঢুকলো। কিছুক্ষণ বাদে আন্টির রুম থেকে সামান্য কাশির আওয়াজ এলো ওর কানে। আশা ঘাবড়ে গেলো। কারণ আওয়াজটা কোনো বয়স্ক লোকের, আর আওয়াজটা কেনো যেনো স্বাভাবিক লাগছেনা। সুস্থ মানুষ কাশি দিলে এমন শব্দ হয়না। আশা ভাবতে লাগলো কে এলো উনার বাসায়? একবার ভাবলো গিয়ে দেখে আসুক, কিন্তু পরক্ষণে মনে হলো এভাবে একজনের রুমে যাওয়াটা ঠিক হবেনা। কি না কি মনে করে সে যানে।
আশা আর সেদিকে পা বাড়ালো না। একটা সময় কাশির আওয়াজ থেমে গেলেও ক্ষণে ক্ষণে সামান্য গোঙ্গানির আওয়াজ কানে আসছে আশার। এবার সে নড়েচড়ে বসলো। নিশ্চিত হলো, নিশ্চয়ই কোনো না কোনো সমস্যা হয়েছে। সে এবার নিজেকে প্রস্তুত করলো ও ঘরে যাবার জন্য। রুম থেকে বেরিয়ে আন্টির রুমে যাবার জন্য পা বাড়ালেও মন থেকে সে যেতে সাহস পাচ্ছিলো না। এই অবস্থায় কি করা যায়? একা যাওয়াটা কি ঠিক হবে? নাকি নিয়াশাকে ডাকবে। যতই হোক এটা শহরের বাড়ি, কোনো কিছুকেই সহজে বিশ্বাস করা ঠিক নয়।
এই মুহূর্তে নীলা থাকলেও ভালো হত, তাকে নিয়ে যাওয়া যেত। কিন্তু সে এখনো বাসায় ফিরেনি। আজ ভার্সিটিতে এত কি করছে কে জানে। নিয়াশাকে ডাকার কথা একবার মাথাতে আনলেও মন থেকে সায় দিচ্ছে না।। কারণ এতদিন নিয়াশা তার সাথে যা যা করেছে তার জন্য ভেতরে ভেতরে একটা ক্ষোভ ঠিকই রয়ে গেছে। রানা যে ওর সাথে এতকিছু করছে, তার ব্যাপারে এত তথ্য পাচ্ছে এতে নিয়াশার হাত আছে এটা সে নিশ্চিত।

আশা আর সময় নষ্ট না করে রুমের দিকে এগিয়ে গেলো। দরজাটা খোলাই ছিলো। সে রুমে ঢুকে এদিক সেদিন তাকালো আগে। কাউকেই চোখে পরছেনা। সে আবারও নজর দিতে থাকলো চারপাশটায়। এমন সময় আন্টির শোবার ঘর থেকে আবারও সেই কাশির আওয়াজ টা কানে এলো। সে তরিঘরি করে ছুটে গেলো সে রুমটায়। একজন বয়স্ক ভদ্রলোক পরে আছে বিছানায়। সারা শরীর প্রচন্ড পরিমানে ঘেমে আছে। খুব জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছেন উনি।। শরীরটা থরথর করে কাঁপছে, দেখে বুঝাই যাচ্ছে প্রচন্ড অসুস্থ তিনি। আশা চিনতে পারলো না লোকটাকে, আগে কখনো দেখেছে বলেও মনে হলোনা। কিন্তু এই মুহূর্তে চেনা অচেনার প্রশ্ন নয়, অসুস্থ লোক অসহায় অবস্থায় পরে আছে, এই অবস্থায় উনার সেবার প্রয়োজন এটাই মুখ্য। পরিচয় পরেও জানা যাবে।।

আশা দৌড়ে একটা মাঝারো বালতিতে করে পানি নিয়ে এলো। চারিদিকে চোখ বুলিয়ে একটা গামছা খুজে নিয়ে সেটা বালতির পানিতে ভিজিয়ে খুব আলতোভাবে উনার সারাটা শরীর মুছে দিলো ভালো করে। কপালের ঘাম গুলো মুছার সময় সে জ্ঞাত হলো ভদ্রলোকের প্রচন্ড জ্বর। সে আরেকটা বড় বালতিতে পানি নিয়ে এসে বেশ কিছুক্ষণ যাবৎ উনার মাথায় পানি ঢাললো যত্নসহকারে। একটা সময় জ্বরের তাপ কিছুটা কমে এসেছে। আশা মাথাটা গামছা দিয়ে মুছে অনেক কষ্টে উনাকে বালিশে শুইয়ে দিলো। সে বালতিগুলো ওয়াশরুমে রেখে এসে দেখলো উনি এখনো কেশেই যাচ্ছেন। আশা এবার কি করবে ভাবতে লাগলো। এক পর্যায়ে কি মনে করে সে দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলো৷ মিনিট খানেক পর চুলোর পাড়ে গিয়ে ডিম দিয়ে ঘরে থাকা পাউরুটি ভেজে নিলো খুব তারাহুরো করেই। পাউরুটি ভাজা হয়ে গেলে সে এগুলো একটা প্লেটে নিয়ে চলে গেলো আবারও সেই ভদ্রলোকের কাছে। উনি এবার পিটপিট চোখে আশার দিকে তাকালেন। আশা মুচকি হেসে বললো
“একটু কষ্ট করে উঠে বসুন তো।

ভদ্র লোক ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো আশার দিকে। এবার আশা উনার অপেক্ষায় না থেকে নিজেই উনাকে দুহাতে ধরে কোনোমতে বসালো। পাউরুটির প্লেটটা উনার সামনে রেখে বলল এগুলো খাওয়ার জন্য। কিন্তু উনি পারছলেন না। জ্বরের প্রকোপে হাতগুলো পর্যন্ত কাপছিলো উনার। সে উনার পাশে বসে অল্প অল্প রুটি ছিড়ে উনার মুখে দিতে লাগলো। বাধ্য বাচ্চার মত আশার হাত থেকে রুটিগুলো খেতে লাগলেন উনি। খাওয়া শেষ হলে আশা মুচকি হেসে উনাকে পানি খাইয়ে দিয়ে এরপর একটা নাপা এক্সট্রা ট্যাবলেট খাইয়ে দিলো। এতে জ্বরটা কিছুটা হলেও কমবে। ভদ্রলোককে বসতে বলে আশা আবারও চলে গেলো বাইরে। মিনিট পাঁচেক পর সে ফিরে এলো এক কাপ চা নিয়ে। লোকটি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো আশার দিকে। আশা মিষ্টি হেসে বললো
“আপনার কাশিটা অনেক বেশি। আদা দিয়ে মশলা চা করে এনেছি, খেয়ে নিন। ভালো লাগবে।
ভদ্রলোক কাঁপা কাঁপা হাতে চায়ের কাপটা নিলো। এক চুমুক মুখে দিয়ে এক নজর আশার দিকে তাকালো। আশার ঠোঁটের কোনে হাসি লেগে আছে। কাঁপা কাঁপা গলায় লোকটা বলে উঠলো
“চা টা অনেক ভালো হয়েছে মা।
মিষ্টি করে হাসলো আশা।

এরপর হন্যে হয়ে রুমে ঢুকলো লুৎফুন্নাহার। ব্যাগটা একপাশে ছুড়ে ফেলে চলে এলো নিজের রুমে।। লোকটার পাশে বসে কাঁদো কাঁদো গলায় বলে উঠলো
“তুমি ঠিক আছো তো ভাইজান? কতবার কল দিলাম, তোমার ফোন বন্ধ কেন?
লোকটি অসহায়ভাবে তাকালো লুৎফুন্নাহারের দিকে। লুৎফুন্নাহারের চোখ গেলো এবার আশার দিকে। আশা বিস্ময় নিয়ে বললো
“উনি আপনার ভাই?
“আমার বড় ভাই, আমার পিতৃতুল্য ভাই।

সন্ধ্যের আগ নাগাদ আবারও ছাদে যেতে মন চাইলো আশার। আজ খুবই ভালো লাগছে, একেতো বাড়ির ব্যাপারে ভালো সংবাদ পেয়েছে, তার উপর একজন অসুস্থ রোগীর সেবা করতে পেয়েছে। মনটাই একদম ফ্রেশ হয়ে গেছে। তাই আজ ছাদের অপরুপ পরিবেশের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে বার বার।
আশা প্রচন্ড উচ্ছ্বসিত হয়ে ছাদের দিকে চলতে লাগলো। এক সিড়ি দুই সিড়ি করে সে ছাদের একদম দোড় গোড়ায় পৌঁছে গেলো। হঠাৎ ই ওর কানে ভেসে আসলো কিছু কথা। সে থমকে গেলো নিজ যায়গাতেই।। ছাদের এক কর্ণারে দাঁড়িয়ে ফোনের ওপাশে থাকা লোকটিকে কেউ বলছে
“ওর কারণে আমি সাদের কাছে অবহেলিত হয়েছি। প্রথম থেকে ভালোবেসেছি সাদকে, আর সেই সাদ কিনা ওকে ভালোবেসেছে। যেদিন নিজ চোখের সামনে সাদ ওকে ভার্সিটির সকলের সামনে নিজের গার্লফ্রেন্ড হিসেবে পরিচয় করিয়েছিলো, সেদিনই ডিসাইড করেছি এর শোধ আমি তুলবোই। কিন্তু কিভাবে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ রানা, এই সময়ে আমার পাশে থেকে আমাকে সাহায্য করার জন্য। যদিও এতে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হচ্ছে, আমার মনের রাগও মিটছে, আর তোমার প্রতিশোধও পূর্ণ হচ্ছে। কিন্তু তাতেই আমি খুশি। এভাবেই আমার পাশে তোমাকে সবসময় চাই রানা, তুমি আমার পাশে থাকলে আমিও এভাবেই তোমাকে সাহায্য করে যাবো।

মেয়েটি হেসে উঠলো বিষাদ গলায়। আশা জমে গেলো এবার। সে নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছিলো সেই মুহূর্তটায়। সে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে কাঁপা শরীরে নামতে লাগলো নিচের দিকে।

চলবে…..

#ভালোবাসি_তাই
তন্বী ইসলাম-২৩

এলোমেলো বইগুলো সামনে পরে আছে, খাতা কলমও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এদিক সেদিন। রাতের রান্না হয়নি এখন পর্যন্ত, ইচ্ছেও করছেনা। রান্না করলেও ও ভাত গলা দিয়ে নামবে কিনা জানা নেই, মনটা ভীষণ খারাপ যে। কিছুক্ষণের জন্য সকল দুঃখ ভুলে হারিয়ে ছিলাম একটু সুখের সাগরে, কিন্তু সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ে ছিটকে গিয়েছি আমি, হারিয়ে গিয়েছি ঘূর্ণিপাকে।
দুই হাতের উপর মাথা রেখে উপুড় হয়ে শুয়ে আছে আশা, সন্ধ্যের কথাগুলো মাথায় এখন ঘুরছে। মানুষ এতটা স্বার্থপর কি করে হতে পারে, যাকে এতটা বিশ্বাস করা, সেই কিনা বিষধর সাপ…

সেদিন বিকেলে নিজ রুমেই বসে ছিলো আশা। শুক্রবার দিন, তাই আন্টিও বাসাতেই ছিলেন। দরজার সামনে একটা চেয়ার টেনে সেটাতে আয়েশে বসে উনি ডাকলেন আশাকে…
“আশা, একটু আসবে আমার রুমে?
আশা কোনো কথা বললো না, মলিন মুখ করে উঠে পরলো বিছানা থেকে। এর মধ্যে আবারও ডাক এলো। এবার উত্তর করলো আশা
“জ্বি আন্টি..
“কি করছো একা একা। এসো আমার রুমে..
আশা মলিন গলায় বললো
“আসছি।
আশা উনার কাছে গেলে লুৎফুন্নাহার ওকে একটা চেয়ার দেখিয়ে বসতে বললো। আশা তাই করলো। লুৎফুন্নাহার খেয়াল করলেন গত দুই তিন দিন যাবত মেয়েটা মন খারাপ করে থাকে। তিনি সামান্য হেসে প্রশ্ন করলেন
“মন খারাপ তোমার?
“নাহ।
“তাহলে এমন দেখাচ্ছে যে?
“এমনি, ভালো লাগছেনা আন্টি।
“বাড়ির সব ঠিক আছে?
“হুম।

লুৎফুন্নাহার বেশ বুদ্ধিমতী। উনি বুঝতে পারলেন আশার নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে। তিনি আশার মন ভালো করার জন্য বললেন
“তুমি কি জানো সেদিন আমার কত বড় উপকার করেছিলে!!
আশা অবাক হয়ে তাকালো উনার দিকে। উনি মুচকি হেসে বললেন
“আমার বড় ভাইয়ের সেদিন ঢাকায় একটা জরুরি কাজ ছিলো, তাই ঢাকায় এসেছিলো।
“উনি ঢাকায় থাকেন না?
“নাহ, গ্রামে থাকেন। আমাদের সবার বড় উনি। আমাদের সবাইকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে নিজে অশিক্ষিত রয়ে গেছেন, আমরা সবাই ঢাকায় নিজেদের একটা অবস্থান তৈরি করেছি কিন্তু উনি গ্রামেই পরে রয়েছেন।।
আশা মনোমুগ্ধকর কন্ঠে বললো
“বড় ভাইয়েরা বুঝি এমনই হয়।
“সত্যিই তাই।।
“কিন্তু উনি অসুস্থ হলেন কি করে? আর অসুস্থ অবস্থায় বেরোলেনই বা কেন?
“বাড়ি থেকে রওনা করার সময় তেমন অসুস্থ ছিলো না, হঠাৎ রাস্তায় জ্বর উঠতে শুরু করে। যদিও কাশিটা আগে থেকেই ছিলো। কিন্তু এতটুকু জার্নিতেই এতটা জ্বরের প্রকোপ এসে যাবে সেটা ধারণার বাইরে।

আশা আবারও প্রশ্ন করলো
“দরজা খুললো কি করে?
“আমি বুয়াকে ফোন করে বলে রেখেছিলাম যেনো কাজ করে রুমের চাবি দরজার নিচে রেখে যায়।
“ওহ। এখন কেমন আছেন উনি?
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তোমার কথা জিজ্ঞাসা করে, খুব প্রশংসাও করে তোমার।
আশা মুচকি হাসলো। লুৎফুন্নাহার জিজ্ঞাসা করলো
“দুপুরে খেয়েছিলে?
“জ্বি।
“কি দিয়ে খেলে?
আশা কয়েক সেকেন্ড নিরব থেকে বললো
“ডিম ভাজা।
“রাতের রান্না করবেনা?
“ভালো লাগছেনা আন্টি, দেখি কি করি।
লুৎফুন্নাহার হেসে বললো
“ভালো না লাগলে রান্না করার দরকার নেই, তুমি আমার সাথে খেয়ো রাতে।
আশার আর ইচ্ছে করলোনা আন্টির মুখের উপর না করতে।

এমন সময় কল বেজে উঠলো আশার ফোনে। সে স্ক্রিনের দিকে তাকাতেই লুৎফুন্নাহার বললো
“কে ফোন দিয়েছে?
আশা লুৎফুন্নাহারের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো
“ভাইয়া।
“ওহ, কথা বলো তাহলে।
আশা বিনয়ের সাথে আন্টির রুম ত্যাগ করে চলে এলো নিজের রুমে।। কল রিসিভ করে কথা বলতে লাগলো ভাইয়ের সাথে। এক পর্যায়ে আদিব ওর কন্ঠস্বর কিছুটা আঁচ করতে পেরে বললো
“তোর কি মন খারাপ আশামনি?
আশা হতাশ গলায় বললো
“ভালো লাগছেনা রে ভাইয়া।
আদিব সামান্য উত্তেজিত হয়ে বললো
“কেন, কি হইছে তোর? অসুখ বিসুখ বাধিয়েছিস না তো আবার।।
আশা হেসে বললো
“সেইসব কিছুই না। এমনিতেই ভালো লাগছেনা।
“ভালো না লাগলে বাড়ি চলে আয়।
“চলে আসবো?
“আয়, থেকে যা কয়েকটা দিন, ভালো লাগবে।
আশা খুশিমনে বললো
“তাহলে চলেই আসি কাল।
“তুই রেডি থাকিস, আমি আসবো নিতে তোকে।
“তোর আসতে হবে না, আমিই চলে যেতে পারবো। তুই আসবি, এসে আমাকে নিয়ে আবার রওনা করবি। অনেক সময়ের ব্যাপার… এই সময়ের মধ্যে আমি বাড়ি থাকবো।
“সত্যিই আসতে পারবি তো?
“পারবো, তুই মাকে জানিয়ে দিস।
“আচ্ছা, তাহলে সকাল সকাল রওনা করিস।

এবার মনটায় বেশ একটা ঝরঝরে ভাব এসেছে, বাড়ি যাবে ভেবেই আনন্দ হচ্ছে। আশা ফোন রেখে দিয়ে রুমের সকল আধোয়া হাড়ি পাতিল আর প্লেট বাটিগুলো নিয়ে বেসিনে চলে গেলো। ওগুলো ধুয়ে রেখে যেতে হবে। কিছুক্ষণ বাদে ওগুলো ধুয়ে ফিরে এলো রুমে। টেবিলের উপর হাড়িগুলো উপুড় করে দিয়ে দিলো পানি ঝড়ার জন্য। এবার নিজে ফ্রেশ হতে চলে গেলো ওয়াসরুমের দিকে। যখন ফ্রেশ হয়ে রুমে ঢুকছিলো তখন হঠাৎ কানে আসলো সাদের নামটা, এক মুহূর্তের জন্য থমকে গেলো সে। আন্টি ফোনে কথা বলছে, নিশ্চয়ই সাদের সাথে। কারণ বার বার উনি সাদ বলে সম্বোধন করছেন।
আশা একটু কান পাতলো কি বলে শোনার জন্য, বুঝা গেলো আন্টি উচ্চস্বরে কথা বলছেন, সেই সাথে হাসছেন খুব। আশা একটু উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করলো, সত্যিই তাই। প্রচন্ড খুশিমনে আন্টি কথা বলছেন। মুখে অনেক হাসি। বুঝা গেলো অপর পাশে সাদও প্রচুর খুশি, সেও হেসে কথা বলছে।

আশা নিজ ঘরে পা বাড়ালো, সাদ নিশ্চয়ই সেখানে অনেক খুশিতেই আছে। আশার কথা একদমই তার মনে নেই। নিশ্চয়ই আশার নামটা মন থেকে মুছে তারপর বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে। ওর মন খারাপ হয়ে গেলো হঠাৎ। সে অন্যমনস্ক হয়ে বসে পরলো বিছানায়।

রাতের দিকে আন্টির রুম থেকে খাওয়া দাওয়া সেড়ে নিজের রুমে এলো আশা। অবশ্য আন্টিই তাকে খাওয়ার জন্য ডেকেছিলো। খাওয়ার পর রুমে এসে কিছুটা সময় রেস্ট নিয়ে ভাবলো এবার ব্যাগপত্র গুছিয়ে রাখুক। তাতে সকাল সকাল বেরিয়ে পরা যাবে। যেই ভাবা সেই কাজ। সে ব্যাগপত্র গোছাতে শুরু করলো। প্রথমে ওর কাপড়চোপড় গুলো ভালো করে ভাজ করে এক এক করে ব্যাগে ঢুকিয়ে নিলো, এরপর কিছু পার্সোনাল জিনিসপত্র আর কয়েকটা বইও ভরে নিলো ব্যাগে। গুছানো কমপ্লিট।
আশা ব্যাগগুলো এক পাশে রেখে বিছানায় হেলান দিলো ঠিক সেই মুহূর্তে আবারও ফোন বেজে উঠলো। এবার প্রচুর বিরক্তবোধ করলো আশা। ইদানিং ফোনটা তাকে বেশ জ্বালাতন করছে, যখন তখন কল চলে আসছে।

নাম্বারটা দেখে ফোন রিসিভ করার ইচ্ছেটা মরে গেলো। সেই রানা কল করেছে। কপালে ভাজ এলো আশার। লোকটা বড্ড বেশিই করছে। একটা ব্যাবস্থা নেওয়ার দরকার ছিলো, সে কি এইসব পুলিশে জানাবে? না না, পুলিশে জানালে ব্যাপারটা বড্ড বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। এইসব ভাবতে ভাবতে কল কেটে গিয়ে আবারও বাজতে লাগলো।
এবার বিরক্তি নিয়েই ফোন রিসিভ করলো সে। ঝাঝালো গলায় বলে উঠলো
“এবার বেশি বাড়াবাড়িই হয়ে যাচ্ছে না কি?
“বাড়াবাড়ি টা আবার কি?
আশা বিরক্ত হয়ে বললো
“সবকিছুরই একটা লিমিট থাকে, আপনি সেটা অনেক আগেই পার হয়ে এসেছেন।
রানা কুৎসিত ভাবে হেসে বললো
“আমার কোনো লিমিটেশন নাই। আমি অন্যরে লিমিট দেই।
“সে যোগ্যতা অন্তত আপনার মধ্যে নেই। কাউকে লিমিট দিতে গেলে আগে নিজেকে লিমিটের মধ্যে থাকতে হয়।
“বললাম না, আমি লিমিট দেই অন্যরে। এখন তোরেও দিমু, ভুলেও বাড়ি যাবার নাম নিবি না। যতটুক উচ্চারণ করছিস ঠিক ততটুকুর মধ্যেই থাকবি। যদি নিজের ফ্যামিলির ভালো চাস তো…
আশা কপাল কুচকে বললো
“আদৌ আপনি মানুষের কাতারে পরেন কিনা আমার মাঝে মাঝে সন্দেহ হয়।
রানাকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়ে কল কেটে দিলো আশা। সাথে সাথেই ফোন বন্ধ করে কিঞ্চিৎ তিক্ততার সাথে চোখ বন্ধ করলো সে। এ কোন জ্বালায় পরলো আশা? আশা অবাক হলো এই ভেবে যে বাড়ি যাবার কথাটা সে কিভাবে জানলো!! এবারে তো নীলা কিংবা নিয়াশা, কারো সাথেই এখন পর্যন্ত বাড়ি যাবার ব্যাপারে শেয়ার করেনি। তাহলে?

আশা তপ্ত নিশ্বাস ছেড়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলো। এত রাত হওয়া স্বত্বেও সে ছাদের দিকে পা বাড়ালো। আকাশে আজ হাজারো তারারা ভীড় মজিয়েছে, তাদের মধ্যমনি হয়ে আছে এক ফালি চাঁদ। এ যেনো এক চাঁদের হাটে তারার মেলা। চাঁদের আলোয় ছাদটা পুরো আলোকিত হয়ে আছে। মাঝে মাঝে দমকা হাওয়া এসে গায়ে ঠেকছে, ভালোই লাগছে। ইচ্ছে করছে পুরো রাতটা এখানে বসেই জোছনা বিলাস করুক। কিছুটা সময় সেখানে কাটিয়ে আশা ফিরে এলো ছাদ থেকে। রুমের সামনে এসে খেয়াল করলো নিয়াশাদের রুমে এখনো আলো জ্বলছে। দুজনের মধ্যে কিছু একটা নিয়ে কথা কাটাকাটি হচ্ছে। আশা মুচকি হাসলো, কারণ এটা ওদের নিত্যদিনের অভ্যাস। প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু নিয়ে এরা তর্ক করবেন।

আশা পা বাড়ালো সেদিকে। মোবাইলে মুভি দেখা নিয়ে দুজন ঝগড়া করছে, এ বলছে এটা দেখবে তো ও বলছে ওটা। ব্যস, লেগে গেছে তর্ক। আশাকে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হাসিমুখে নীলা বললো
“আরে আশা, বাইরে দাঁড়িয়ে আছিস কেন। আয় ভেতরে আয়।
আশা মুচকি হেসে ভেতরে ঢুকলো। সে নিয়াশার মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে বললো
“মুভি দেখা নিয়ে তোমাদের দুজনের ঝগড়া বুঝি এই জীবনে থামবে না।
নিয়াশা সামান্য হেসে বললো
“বোধহয়।
নীলা অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো ওদের দিকে। এক সময় বিস্মিত কন্ঠে বললো
“তোদের দুজনের ভাব হয়ে গেছে?
“হুম। মুচকি হেসে বললো আশা। নীলা উৎকন্ঠা নিয়ে বললো
“কখন?
“দুই তিনদিন হলো….।
নীলা রাগী চোখে নিয়াশার দিকে তাকালো। সামান্য ধমকের সুরে বললো
“কিরে, তোদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি শেষ হয়ে ভাবও জমে গেলো, অথচ আমাকে কিছু জানালি না। এতটা বেইমান কেন রে তুই? আর তুইও তো কিছু বললি না আশা!! আশার দিকে তাকিয়ে বললো নীলা।

আশা মৃদু গলায় বললো
“কি জানি, মনে ছিলো না হয়তো।
“এখনো জেগে আছিস যে, ঘুমোবি কখন? ভারী গলায় প্রশ্ন করলো নিয়াশা।
আশা ক্ষীণ কন্ঠে বললো
“এক্ষুনি ঘুমাবো। আগামীকাল বাড়ি চলে যাবো তো, সেই উত্তেজনায় ঘুম আসছে না।
“হঠাৎ বাড়ি যাবি?
“ইচ্ছে করছে।
“ওহ! ছোট্র করে বললো নিয়াশা।
এরপর সে উঠে দাঁড়িয়ে বললো
“তোর বস, আমি একটু ওয়াশরুম থেকে আসছি।
নীলা আর আশা মাথা নেড়ে সায় জানালো।।

নিয়াশা ওয়াশরুমে চলে গেলো নীলা থমথমে মুখ করে বললো
“হঠাৎ বাড়ি যাওয়ার কারণটা কি জানিতে পারি?
“কেন জানতে চাইছো?
নীলা অবাক হয়ে বললো
“আমি কি জানতে চাইতে পারি না?
“পারবেনা কেন, তোমার যে জানতে চাওয়াটা খুব প্রয়োজন। না জানলে রানাকে সবটা জানাবে কি করে। তীক্ষ্ণ গলায় বললো আশা।
নীলা চমকে গেলো হঠাৎ। থতমত খেয়ে বললো
“মম মানে?
আশা মুচকি হাসলো, অসহায় চোখে নীলার দিকে তাকিয়ে মৃদু গলায় বললো
“কেন এমনটা করলে তুমি? এটার কি খুব বেশি প্রয়োজন ছিলো? আমি তোমায় সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করতাম। আর সেই তুমিই কিনা…..

চলবে…..