ভালোবাসি তাই পর্ব-২৮+২৯

0
528

#ভালোবাসি_তাই
তন্বী ইসলাম-২৮

“কথা বলা সেইটা পরের কথা, তুমি কার কাছে জিজ্ঞাসা কইরা ওদের হ্যাঁ বললা? আমার অনুমতি নিছিলা?
হঠাৎ মৃদুলার মুখটা চুপসে গেলো। সে আমতাআমতা করে বললো
“ছেলে অনেক ভালো।
“তোমার কোনো বোইন থাকলে তার সাথে এই ভালো ছেলের বিয়া দিয়া দাও, আমার মেয়েরে এই ছেলের সাথে বিয়া দিমু না। ওরে আমার পছন্দ হয় নাই।
মৃদুলা হঠাৎ রেগে গিয়ে উঠে দাড়ালো। কর্কশ গলায় বললো
“আপনারা মা মেয়ে একই স্বভাবের। ভালো জিনিসের কদর করতে জানেন না।
সে হনহন করে চলে গেলো রুম থেকে।
স্বপ্না ওর স্বামীর সাথে বসে ছিলো বড় ঘরের সোফায়। কিছুটা দূরে রানাও বসে আছে। মৃদুলা কে আসতে দেখে স্বপ্না উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল
“কই আশা?
মৃদুলা মুখ ভার করে বললো
“আর বইলো না আপা, কত ডাকলাম আসলোনা। শরীর ভালো লাগতেছেনা বোধহয়। আসো, আমি তোমাদের নাস্তা দেই। অনেক বেলা হয়ে গেছে।
স্বপ্নার বর বললো
“ভেবেছলাম ছোট ভাইবউ কিভাবে খাবার পরিবেশন করে সেটা দেখবো.. সেটা আর হলোনা। বাদ দাও.. আমাদের বাড়ি বউ হয়ে গেলে এমনিতেই সব দেখা যাবে।
মৃদুলা জোরপূর্বক হাসি টানলো ওদের সামনে।। সত্য কথাটা তো আর ওদের সামনে বলা যাবেনা, কান কাটা যাবে ওর। যদিও গতকাল রানার সামনে যা কান্ড করলো আশা, তাতে সে অনেক লজ্জিত। যদিও রানা কথা দিয়েছে ওর কাছে, আশার এহেন আচরণ সে কারো কাছে বলবেনা। মনে মনে রানার এমন আচরণে খুশিই হলো সে।

রানাদের জন্য যখন খাবারের আয়োজন করা হলো, ঠিক তখনই ফিরে এলো আদিব। বাকিরা এখনো নাস্তার টেবিলে বসে নি। আদিবকে দেখে স্বপ্নার বর বললো
“আরে ভাইরা ভাই.. চলে এসছেন। আসেন একসাথে নাস্তা করি।
আদিব খুশিমনে বললো
“নাস্তাতো অবশ্যই করবো, তবে আমার কিছুটা দেরি হবে। আপনারা খেয়ে নিন।
মৃদুলা সামান্য হেসে বললো
“খেয়ে নাও না উনাদের সাথে। নতুন আত্মীয় হতে যাচ্ছে কিছুদিন পর, আবদার করেছে.. না করো না প্লিজ।
“আমার এক মেহমান আসছে মৃদুলা, সে এলে তার সাথেই খাবো। উনারা নাহয় উনাদের মতোই খেয়ে নিক।
মৃদুলা খানিক অবাক হয়ে বললো
“কোন মেহমান আসছে? কোথায়?
“আসছে আমার এক স্পেশাল মেহমান। রাস্তায় আছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবে। এলেই নাহয় দেখবে।

এতক্ষণ চুপচাপ বসে ছিলো রানা। এবার সে বললো
“আমাদের সাথে খেয়ে নিন ভাইয়া। মেহমান আসলে তাকে তো পরেও খাওয়ানো যাবে নাকি, তার সাথেই আপনাকে খেতে হবে এমন তো কোনো কথা নেই।
আদিব বাঁকা হেসে বললো
“আমার ওই মেহমানটা খুবই স্পেশাল বুঝলে রানা, তোমার চেয়েও বেশি। কি করে তাকে রেখে আমি খাই বলো! তোমরা খেয়ে নাও প্লিজ৷
আবারও অপমান বোধ করলো রানা, স্বপ্না আর ওর বরও কিছুটা অবাক বলো আদিবের এমন কথা শুনে। অপরদিকে লজ্জিত বোধ করলো মৃদুলা।।আদিব বেরিয়ে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মৃদুলা ওদেরকে খাবার জন্য আবারও আহবান করলো।

বিছানা ছেড়ে নেমে আসলো আশা। এতটা সময় শুয়ে থাকায় সারা শরীর ব্যাথা হয়ে গেছে, বিশেষ করে পিঠের শিরদাঁড়াটায় বেশি ব্যাথা হচ্ছে। রানারা খাওয়ায় ব্যস্ত, তাই এই সুযোগে সে বেরিয়েছে। ব্রাশটা হাতে নিয়ে ঘরের পেছন দিক দিয়ে সোজা এগিয়ে পুকুরপাড়ে গেলো সে। পুকুরের সিড়ির উপর বসে আপনমনে দাঁত ব্রাশ করায় মন দিলো আশা। একটা সময় ছিলো, যখন এ পুকুরে খুব গোসল করা হতো, সাঁতরাতো… ছোটবেলার খেলার সাথীদের নিয়ে এ পুকুরে গোসলের সাথে সাথে অনেক মজার মজার খেলাও খেলতো। আজ সেইসব অতীত। সেই খেলার সাথীগুলো আজ নেই, কিছুজনের বিয়ে হয়ে গেছে, পুরোদমে সংসার করছে। কেউ কেউ আবার নিজেদের ক্যারিয়ারের চিন্তায় অনেক দূরে পাড়ি জমিয়েছে। দাঁত ব্রাশ করার এক ফাঁকে আশার চোখ গেলো পুকুরের অপর পাশটায়। এক জোড়া শালিক দাঁড়িয়ে আছে পাশাপাশি। আশা খেয়াল করলো পাখি দু’টো খেলা করছে, লাফঝাপ করছে, একে অন্যের সাথে খুনশুটি করছে। বুঝাই যাচ্ছে এরা খুবই সুন্দর একটা দুষ্টু মিষ্টি জুটি। আশার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠলো। আশা মনোমুগ্ধের মতো উপভোগ করতে থাকলো ওদের প্রেমকাহিনী। প্রেমকাহিনীর কথা মাথায় আসতেই মনে পরে গেলো গতরাতের ঘটনাটা।

ভাইয়াকে সবটা ঘটনা খুলে বলার পর আশা খেয়াল করেছিলো ভাইয়ার চোখমুখ লাল হয়ে গেছে, আগুনের লেলিহান শিখার তীব্র দাবানল জ্বলতে দেখেছে তার চোখে। আদিব প্রচন্ড রেগে উঠে পরেছিলো তখন, রানার হাতদুটো সে আজই ভেঙ্গে দিবে এমন এক মনোভাব নিয়ে। আশা বাধা দিয়ে তাকে শান্ত হতে বলে। আদিব আশার কথায় মাথা ঠান্ডা করে ঠিকই, কিন্তু রানাকে সে ছাড়বেনা এমন একটা প্রতিজ্ঞা ঠিকই আশার সামনে করে বসে৷
আশা যখন রানার কীর্তিকলাপের কথা আদিবকে বলছিলো তখন অটোমেটিকেলি সাদের নামটা চলে আসে, কারণ এই বিবাদে সাদও জড়িয়ে ছিলো।
মাথা ঠান্ডা হবার পর আশার কাছে সাদের কথা জানতে চায় আদিব.. সকলের সামনে আশার বয়ফ্রেন্ড বলার কারণটাও জিজ্ঞাসা করে। আশা ঠিক ঠিক উত্তর দেয়। আশাকে যেনো রানা আর ডিস্টার্ব না করে সেই কারণে সাদ এমনটা বলেছিলো সেটাও জানায় ভাইকে।

একটা সময় আদিব আশাকে প্রশ্ন করে,
“সাদ কি শুধু তোর সেইফটির জন্যই এমনটা বলেছিলো?
আশা প্রথমে মাথা নত করে থাকলেও পরবর্তীতে সবটা জানায় ভাইকে। ওদের বাড়িতে আসা, ওকে প্রপোজ করা… প্রপোজ এক্সেপ্ট না করায় রাগ করে চলে যাওয়া সবটাই আদিবের কাছে বলে দেয় আশা।
কিছুটা সময় দুজনেই চুপ থাকার পর হঠাৎ আদিব আবারও প্রশ্ন করে
“তুই ভালোবাসিস সাদকে?
আশা চুপ করে থাকে। আদিব আবার তাড়া দেয়, আশাকে নির্দ্বিধায় সবটা বলতে বলে। এক সময় চোখের কোনে পানি চলে আসে তার। ভাইকে জরিয়ে ধরে কান্নাজড়িত গলায় বলে উঠে…
“আমিও তাকে ভালোবাসি ভাইয়া, ভীষণ ভালোবাসি।
আদিব কিছুটা সময় বোনের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, মৃদু গলায় বলে
“এতটা ভালোবাসিস, তাহলে ফিরিয়ে দিয়েছিলিস কেন?
“আমি জানিনা ভাইয়া, আমি কিচ্ছু জানিনা।
আশা আবারও কাঁদে। আদিব মৃদু হেসে বলে
“কাঁদিস না আশামনি, নিজের উপর বিশ্বাস রাখ। ও যদি তোকে সত্যিই ভালোবেসে থাকে, তাহলে সে নিশ্চয়ই তোর কাছে ফিরে আসবে।

আশা মাথা তুলে ভাইয়ের দিকে তাকায়। অসহায়ের মতো বলে
“কিন্তু ও তো বিদেশে সেটেল্ড… তোরা কি সেটা মেনে নিবি?
আদিব এবার আর কিছু বলে না, শুধুই মুচকি হাসে।

হঠাৎ কারো উপস্থিতি টের পেয়ে আশা পেছন ফিরে তাকালো। কপাল কুচকে গেলো তার, প্রচন্ড বিরক্তি ভাব ভেসে আসলো চোখেমুখে। আশাকে বিরক্ত হতে দেখে বিশ্রীভাবে হাসলো রানা। এরপর তীক্ষ্ণ কন্ঠে ফিসফিস করে বললো
“তোদের বাড়ি আছি, তাই খুব বাড় বেড়ে গেছে তাইনা? সবকিছু হজম করছি মানে এই না, সব ভুলে যাচ্ছি। তুলে রেখেছি সব, গুণে গুণে উসল করবো। তৈরি থাকিস।
আশা চাপা আক্রোশে বলে উঠলো
“দিবাস্বপ্ন দেখে যা, স্বপ্ন দেখতে তোকে আমি কখনোই বারণ করবো না। যতই স্বপ্ন দেখিস, সে স্বপ্ন যে কখনোই সত্যি হবেনা সেটা তুইও ভালো করে জানিস….। তোর দৌড় আমার জানা আছে।
রানা রেগে গিয়ে বললো
“আমার ব্যাপারে কতটুকু জানিস তুই?
“যতটুকু জানি সেটাই অনেক। মিথ্যাবাদী তুই.. ভাবিস কি করে, তোর মত মিথ্যাবাদীকে আমি বিয়ে করবো? নিজের ঠিকঠাক পরিচয়টাও দিতে পারছিস না, মহান ব্যক্তি সেজেছিস। এতে যদি ভেবে থাকিস আমাই ফ্যামিলি তোর এই মহানুভবতা দেখে তোকে পছন্দ করবে, সেটা তোর ভুল ধারণা।
আশা হনহন করে চলে গেলো সেখান থেকে। রানার কপালের রগ ফুলে গেছে, রাগে শরীর কাঁপছে। কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা।

ভেবেছিলো খাওয়া দাওয়া করবে, খুব খিদেও পেয়েছিলো। কিন্তু এই রানার জন্য সেটা আর সম্ভব হলো না। আশা আবারও এসে মায়ের রুমে শুয়ে পরলো। দিলারা বার বার ডেকে যাচ্ছেন মেয়েকে, এতটা বেলা হয়ে গেছে এখনো খাওয়ার নাম নিচ্ছেনা মেয়ে। রাতেও কিছু খায়নি। দিলারা আশার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো
“অল্প খেয়ে নে মা, অসুখ করবে যে।
“সবচেয়ে বড় অসুখকে তো তোমার ছেলের বউ দাওয়াত করে নিয়ে এসেছে৷ আর কি অসুখ চাও বলো।
দিলারা সামান্য হতাশ গলায় বললো
“নাহয় ওরা চলেই এসেছে, এরমানে বিয়েটা তো আর হচ্ছেনা। খাবি মা, চল..
“আমি খাবো না। খিদে নেই মা, জোর করো না তো।

প্রায় ঘন্টাখানেক পর আদিব ফিরে এলো। ওর চোখমুখে খুশির ঝলকানি। বারান্দার এক প্রান্তে কতগুলো চেয়ার পেতে মৃদুলা সহ রানা, স্বপ্না আর ওর বর বসে আছে। গল্পগুজব করছে ওরা। আদিবকে ঢুকতে দেখেই সেদিকে তাকায় সকলেই। রানা হঠাৎ প্রচন্ড শকড হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। বাকিরাও অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে, তবে আদিবকে দেখে নয়। ওর সাথে আসা মেহমানটাকে দেখে। আদিব ওদের সকলের সাথে তার সাথে আসা মেহমানটার পরিচয় করিয়ে দেয়। মৃদুলা হাসিমুখে তার সাথে কুশল বিনিময় করে। রানা বাদে বাকিরাও করে, তবে ওরা কিছুটা চমকিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তার দিকে। রানার চোখমুখ দেখে বুঝা যায় সে প্রচন্ড পরিমাণে রেগে গেছে মানুষটাকে দেখে, কিন্তু প্রকাশ করতে পারছেনা। আদিব হাসে, সে রানার দিকে তাকিয়ে বলে
“আমার গেস্ট, পরিচিত হবেনা রানা?
রানা মুখ ঘুরিয়ে নেয়। আদিব আবারও হেসে তার সাথে আসা মানুষটাকে বলে
“বাদ দাও, যার তার সাথে তোমার পরিচয় না হলেও চলবে… তুমি আমার সাথে ভেতরে এসো।

রুমে ঢোকার সময় আদিব মৃদুলার দিকে ফিরে তাকায়। স্মিথ হেসে বলে
“ওর জন্য একটু শরবতের ব্যবস্থা করো মৃদুলা।
মৃদুলা মাথা নেড়ে সায় জানায়। রানাদের কাছ থেকে উঠে ভেতরে চলে যায় সে।
আদিব সরাসরি মায়ের রুমে চলে যায়। মাকে গিয়ে বলে
“আমার একজন মেহমান এসেছে মা, এসো দেখা করবে।।
“কে এলো? প্রশ্ন করে দিলারা?
আদিব হেসে বললো
“এলেই দেখতে পাবে।
দিলারা ধীরে ধীরে বিছানা ছেড়ে নামে। সে পা বাড়ায় দরজার বাইরে। আদিব এবার আশার কাছে আসে। ধীর গলায় বলে
“আয় আশামনি, আমার মেহমানের সাথে দেখা করে যা।
আশা চোখমুখ বাকিয়ে বলে
“তোর মেহমানকে তুই কোলে নিয়ে বসে থাক। আমাকে ডাকিস কেন?
আদিব আবারও হেসে বলে
“মৃদুলার মেহমান যখন এসেছিলো তখন তো ঠিকই এগিয়ে গিয়েছিলো, আমার বেলায় এমন কেন করছিস?

আশা এক লাফে উঠে বসে, ঝাঁঝ দেখাতে গিয়েও থেমে যায়। কন্ঠস্বর নরম করে বলে
“মেয়ে মেহমান নাকি ছেলে মেহমান?
“ছেলে।
আশা অবাক হয়ে বলে
“তোরা জামাই বউ শুরুটা করছিস কি? যে যেখান থেকে পারতেছিস মেহমান নিয়া আসতেছিস। তাও নাকি ছেলে মেহমান। যা তো এখান থেকে, দূর হো।
আদিব হেসে বললো
“না গেলে কিন্তু চরম মিস করবি।
“করলে করলাম, তবুও যা।

আদিব চলে গেলে আরো কিছুটা সময় পার হয়ে যায়। আশা অবাক হয়, মা যে সেই গেলো ফিরে আসার নাম গন্ধ নেই। মা তো নিজের রুম ছেড়ে বাইরে বেশি সময় থাকেনা। কে এলো তাহলে? গিয়ে দেখে আসবো? না না, একদমই না। কে না কে এসেছে, তাকে দেখে আমার কি কাজ। আশা আপনমনে জানলার ধারে বসে থাকে। ভেতর ঘর থেকে সামান্য হট্রগোলের আওয়াজ আসছে, দিলারার কন্ঠস্বর ভেসে আসছে সেখান থেকে.. শুনে মনে হচ্ছে এমন কেউ এসেছে, যাকে দেখে মাও খুব খুশি হয়েছে।
আশা আবারও জানলা দিয়ে বাইরে তাকায়। এমন সময় একটা কন্ঠস্বর ভেসে আসে আশার কানে। চমকে উঠে সে, এক মুহূর্তের জন্য সারা শরীর কেঁপে উঠে তার। সারা শরীরে ঝাঁকুনি ধরিয়ে সে কন্ঠস্বর থেকে আবারও নিসৃত হয় সেই মধুর ডাক….
“কিউটি…..

চলবে…..

#ভালোবাসি_তাই
তন্বী ইসলাম-২৯

আশা আবারও জানলা দিয়ে বাইরে তাকায়। এমন সময় একটা কন্ঠস্বর ভেসে আসে আশার কানে। চমকে উঠে সে, এক মুহূর্তের জন্য সারা শরীর কেঁপে উঠে তার। সারা শরীরে ঝাঁকুনি ধরিয়ে সে কন্ঠস্বর থেকে আবারও নিসৃত হয় সেই মধুর ডাক….
“কিউটি…..
আশা বিদ্যুতের গতির ন্যায় বসা থেকে দাঁড়িয়ে পরে, উচ্ছ্বসিত চোখে পেছনের দিকে ফিরে তাকায়।
একটা হাস্যোজ্জ্বল মুখের মানুষ তারই সামনে দাঁড়িয়ে আছে। আশার বিশ্বাস হয় না, সে ভেবে নেয় এটা একটা ভালো স্বপ্ন ছাড়া আর কিছুই নয়। সাদ ধীরপায়ে এগিয়ে আসতে থাকে তারদিকে। আশা নির্বাক। তার এখনো মনে হচ্ছে সে স্বপ্নের দুনিয়াতেই ভাসছে।। আশা নিজ হাতে সামান্য চিমটি কাটে.. খুব জোরেশোরে ব্যাথা পেয়ে মুখ থেকে বেরিয়ে আসে
“আহহহ…
সাদের মুখে আবারও সেই হাসি। সে এখনো এগিয়েই চলেছে সামনে। আশার এখনো মানতে কষ্ট হচ্ছে সাদ সত্যি সত্যিই এসেছে তার কাছে।

একটা সময় আশার মুখোমুখি এসে দাঁড়ায় সাদ। অপলক নয়নে তাকিয়ে থাকে আশার দিকে, আশার দৃষ্টি তখনও সামনে দাঁড়ানো সাদের দিকেই স্থীর। এ যেনো এক স্বপ্নের রাজকুমার সাত সমুদ্র তেরো নদী পার হয়ে তার রাজকুমারীকে নিজের করে নিতে এসেছে। আশা নড়তে চড়তে ভুলে গেছে যেনো।। সাদ আবারও হেসে আবেশে বললো
“কিউটি…
আশা ঘোরেই মধ্যে থেকেই উত্তর দিলো
“হুহ!
সাদ দুহাত দিয়ে আশার দুগালে আলতো করে চেপে ধরলো। শীতল কণ্ঠে বললো
“কেমন আছো কিউটি?
আশা সাদের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকেই উত্তর দেয়
“ভালো নেই আমি, একদমই ভালো নেই।
“কেন?
“জানিনা।
আশা কয়েক সেকেন্ড নিরব থেকে আবারও বলে
“আপনি সত্যিই এসেছেন?
সাদ আশার একদম কাছাকাছি চলে যায়, এক গাল হেসে মুখের কাছে মুখ নিয়ে মৃদু গলায় বলে
“আমি থাকতে পারিনি তোমায় ছেড়ে, তোমাকে দেখার তীব্র বাসনা জেঁকে উঠেছিলো মনে, তোমায় পাবার আশায় এই বেহায়া মন তাই তোমার কাছে আবারও ফিরে এসেছে।
ততক্ষনে আশার ঘোর কাটে। সে বুঝলো সাদের দুহাতের মুঠোয় সে বন্দি। কয়েক সেকেন্ড আগের কথোপকথন গুলোও মনে পরে যায় তার। লজ্জায় রাঙ্গা হয়ে নিজেকে চট করে সাদের হাতের মুঠো থেকে ছাড়িয়ে নেয় সে। জলদি উল্টোদিকে মুখ ফিরিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়ায়।

সাদ হাসে, আশার এহেন কান্ড তার মনে ভালোবাসার শিহরণ জাগায়। সে দুপা এগিয়ে যায় আশার দিকে। মৃদু কন্ঠে বলে উঠে
“এখনো আমার থেকে পালিয়ে বেড়াবে কিউটি?
আশা উত্তর দেয় না। আশাকে ভালোবেসে আলিঙ্গন করার তীব্র ইচ্ছে থেকে দুহাত পিছন থেকেই বাড়িয়ে দেয় সাদ। ঠিক তক্ষুণি ঘরে এসে প্রবেশ করে মৃদুলা। মৃদুলার আওয়াজ পেয়ে সাদ দ্রুতগতিতে হাতদুটো গুটিয়ে নেয়.. ওদের মধ্যে কি চলছিলো সেটা মৃদুলার নজরে আসে না। সে হাসিমুখে সাদকে দেখে বলে
“আপনি এখানে? আর আমি আপনাকে খুঁজে চলেছি।
সাদ মিষ্টি করে হেসে মৃদুলার দিকে তাকায়। হাসিমুখে বলে
“আমাকে খোঁজার কারণটা কি জানিতে পারি ভাবী সাহেবা?
সাদের কন্ঠস্বর আর কথা বলার স্টাইল মুগ্ধ করে মৃদুলাকে। সে মুচকি হেসে বললো
“আপনার জন্য কিছু নাস্তার ব্যবস্থা করেছি, খাবেন আসুন।

সাদ সম্বোধন জানিয়ে বললো
“আমি প্রচুর ক্ষুধার্ত ভাবী সাহেবা। আমার খাবারের ব্যবস্থা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমি আসছি।
মৃদুলা হাসিমুখে সে স্থান ত্যাগ করে। ও চলে যাবার পর সাদ আবারও আশার দিকে ফিরে তাকায়। আশা এখনো অন্যদিকে ফিরে তাকিয়ে আছে। সাদ কাতর গলায় বলে
“একবার তাকাও কিউটি..
আশা নড়ে না। সাদ আবারও আহবান করে
“প্লিজ কিউটি, একবার…
আশা এবার আর সাদের আবদার ফেরাতে পারে না। সে ধীরে ধীরে ফিরে তাকায় সাদের দিকে। তবে দৃষ্টি নিচের দিকে। সাদের চোখের দিকে তাকানোর সাহস টা তার নেই।

সাদ চুপিসারে হাসে। মাথাটা নিচু করে সামান্য ঝুঁকে আশার চোখ বরাবর তাকায়। আদুরে গলায় বলে
“ভালোবাসি।
আশা চমকে তাকায় সাদের দিকে। সাদ এবার বুকের বাম দিকে হাত মুঠো করে সামান্য বাড়ি দেয়, চাপা গলায় বলে
“আহ, ঘায়েল হয়ে গেলাম কিউটি…
আশা আবারও লজ্জায় মাথা নিচু করে। সাদ এবার সোজা হয়ে দাঁড়ায়। স্বাভাবিক হয়ে বলে
“আমার খিদে পেয়েছে খুব।
আশা এবার মুখ খুলে। সে মৃদু গলায় বলে
“ভাবী ডেকে গেলো তো আপনাকে।
“ও খাবার আমার মুখে রুচবে না কিউটি। তুমি এসো, আমার সামনে থাকো.. আমাকে পরিবেশন করে খাওয়াও। তা নাহলে আমি খাবো না।
আশা নরম গলায় বলে
“আমি পারবোনা।
“আমি ডাইনিং টেবিলে বসে অপেক্ষা করছি। আমার বিশ্বাস, নিশ্চয়ই তুমি আসবে।

সাদ চলে যাবার পর আশা ধপ করে বিছানায় বসে পরে। সাদ সত্যিই এসেছে, আমার কাছে এসেছে। আমাকে ভালোবেসে নিজের করে নিতে এসেছে। আশার মনে খুশির জোয়ার ভেসে উঠে। সে বিশ্বাস করতে পারছেনা এটা সত্যিই হয়েছে। গতরাতেই ভাইয়া বলেছিলো এ ভালোবাসা যদি সত্যি হয় তাহলে সে নিশ্চয়ই আমার কাছে ফিরে আসবে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য সেটাই ঘটেছে। একটা রাত যেতে না যেতেই ওর ভালোবাসার মানুষটা ওর কাছে ছুটে এসেছে৷ আশা বিছানায় পা ঝুলিয়ে রেখেই ধপ করে শুয়ে পরে। ঘন ঘন নিশ্বাস নিতে থাকে কিছুক্ষণ। এভাবে কিছুটা সময় পার হয়ে যায়। হঠাৎ আশার মাথায় আসে সাদ বলে গেছে, সে তার জন্য অপেক্ষা করবে।
আশা তারাহুরো করে উঠে বসে। এবার কি করবে সে? কিভাবে সে ওখানে যাবে? লজ্জায় শেষ হয়ে যাবেনা!!

আশা মনে সাহস যুগিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে সেদিকে। গুটিগুটি পায়ে এক পা দুপা করে ডাইনিং পর্যন্ত চলে যায় সে। আশা অবাক হয়, সাদ সত্যিই ডাইনিং এ বসে আছে। তার পাতে কোনো খাবার নেই। আদিবও পাশের চেয়ারটায় বসা। মৃদুলা বার বার জোর করছে পাতে খাবার নেওয়ার জন্য। কিন্তু সাদ নিচ্ছে না।। দিলারাও বার বার বলে চলেছেন.. সাদ এবার বিপাকে পরেছে। গুরুজনের কথা অমান্য করতে কিছুটা ইতস্তত বোধ করছে সে, আবার আশাকে সামনে না দেখে খেতেও ইচ্ছে করছেনা। সাদ এদিক ওদিক তাকালো। দরজার দিকে চোখ যেতেই ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে আসলো তার। আদিব খেয়াল করলো সেটা। সেও নিরবে হাসলো। এখানে অনেক মানুষ থাকায় আশাকে ডাকতেও পারছনা সাদ, আদিব সেটা বুঝতে পেরে আশার দিকে তাকালো।। আদুরে গলায় ডেকে বললো
“আশামনি, ওখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন। আয়, এদিকে আয়।

আশা যেনো এবার কিছুটা সাহস পেলো।৷ সে এগিয়ে এলো ওদের কাছে৷ দিলারা সাদকে খাওয়ার জন্য বলে নিজের ঘরের দিকে চলে গেলো সেইসময়। মৃদুলা এবার সাদের পাতে খাবার দিতে যাবে তখন আশাকে উদ্দেশ্য করে সাদ বলে উঠলো
“কিউটি, আমি চাই আমার আজকের পরিবেশনটা তুমি করো.
ঘরভর্তি লোকজন, মৃদুলা, ওর বোন স্বপ্না, ওর হাজবেন্ড সকলেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সাদের এমন আবদারে কিছুটা অবাক হলেন তারা। স্বপ্না আড়চোখে দেখতে লাগলো সাদকে। এমন সময় রানা কত্থেকে এসে ঢুকলো এ ঘরে। আগ বাড়িয়ে রাগী গলায় বললো
“আশা অসুস্থ, সে কোনো বেড়ে টেড়ে খাওয়াতে পারবেনা। আর আপনাকে কেনই বা আশা বেড়ে খাওয়াবে?
সাদ ভ্রু বাকিয়ে রানার দিকে তাকায়। রানা রেগে সাপের মত ফনা তুলছে মনে হচ্ছে।।

রানা এবার আশার দিকে তাকায়। জোর গলায় বলে
“তুমি অসুস্থ আশা, যাও নিজের ঘরে যাও। কে না কে এসেছে, তার সামনে তোমার দাঁড়িয়ে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।।
রানার এমন কথায় জিদ চেপে যায় আশার মাথায়। সে ঝাঝালো গলায় বলে উঠে
“আমি মোটেও অসুস্থ নয় মিস্টার রানা। বরং এই মুহূর্তে আমি সম্পুর্ন সুস্থ অনুভব করছি।
আশা এগিয়ে যায় সাদের কাছে। মৃদুলার হাত থেকে খাবারের বাটিটা নিয়ে রানার দিকে একবার তাকায়। এরপর রানাকে দেখিয়ে দেখিয়ে সাদের প্লেটে খাবার দিতে থাকে।
এমতাবস্থায় সকলেই আরো বেশি অবাক হয়ে যায়। মৃদুলাও পুরো হতবাক। রানার রাগের পরিমাণ বাড়তে থাকে। আশা আবারও বলে উঠে
“কে না কে উনি নয়, আমার জন্য কে না কে আপনি। তাই আমার ব্যাপারে কোনোরুপ নাক না গলালেই আমি খুশি হবো। ইনফ্যাক্ট, আমি চাই আপনি যেনো আমার সামনেই আর না আসেন।
আদিব খাওয়ার ফাঁকে হেসে উঠে আশার কথা। সাদ মুচকি হেসে আশার দিকে তাকিয়ে বলে
“গ্রেট জব কিউটি…

রানা প্রচন্ড রেগে বলে উঠে
“মশকরা হচ্ছে আমার সাথে? তোমার সাথে আমার বিয়ের কথা চলছে.. আর তুমি আমাকে ছেড়ে অন্য একটা ছেলেকে নিয়ে লাফাচ্ছো? আমাদের খাবার পরিবেশনের কথা বললে তুমি অসুস্থতার দোহাই দাও, আর এখন তো দেখছি দিব্যি নেঁচে নেঁচে খাবার বেড়ে দিচ্ছো। তুমি ভুলে যাচ্ছো, বিয়েটা ওর সাথে নয়, আমার সাথে হতে চলেছে তোমার।
আদিব এতোক্ষণ চুপচাপ বসে খাচ্ছিলো। এবার সে মাথা তুলে তাকালো… রানা ক্ষীপ্ত চোখে সাদের দিকে একবার তাকাচ্ছে, আরেকবার আশার দিকে। আদিব হালকা হেসে বললো
“ভাই রানা, কার সাথে তোমার বিয়ের আলাপ চলছে?
রানা তীক্ষ্ণ কন্ঠে বললো
“আশার সাথে, আর কার সাথে চলবে!
“ওহ আচ্ছা.. এ বিষয়ে কে কার সাথে আলাপ করেছে?
“আমার ভাই ভাবী করেছে, আপনার বউ এর সাথে..
আদিব হেসে মৃদুলার দিকে তাকালো। শান্ত গলায় মৃদুলাকে ডেকে বললো
“মৃদুলা?
“হ্যাঁ?
“আশার অভিভাবক কে?
মৃদুলা সামান্য বিষম খেয়ে বলে
“আম্মা আর তুমি..
“বিয়ের ব্যাপারে কার সাথে কথা বলা লাগে?
মৃদুলা মাথা নিচু করে বলে
“অভিভাবকদের সাথে।
আদিব সামান্য শক্ত গলায় বলে
“উনারা কি গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত আমার সাথে কিংবা আমার মায়ের সাথে এ বিষয়ে কথা বলেছে?
এবার উঠে দাড়ালো রানার ভাই। তিনি জোর গলায় বলে উঠলেন
“আপনি তো এ ব্যাপারে জানতেন।
“হ্যাঁ আমাকে মৃদুলা জানিয়েছে বটে। কিন্তু ওর কথায় আমি কেন আপনার ভাইয়ের সাথে আমার বোনের বিয়ে দিবো বলুন তো?

রানার ভাই আবারও বললেন
“সময় তো চলে যায় নি, আমরা আপনাদের সবার সাথেই কথা বলতাম।
আদিব মুচকি হেসে বললো
“কথা বলার আর কোনো দরকার নেই। আমার কিংবা আমার মায়ের এমনকি আশারও রানাকে পছন্দ হয়নি।।
সামান্য ক্ষেপে গেলো রানার ভাই। চড়া গলায় তিনি বলে উঠলেন
“কেন, আমার ভাইয়ের সমস্যাটা কোথায়? ও কোন দিক দিয়ে কারো থেকে কম?
আদিব শান্ত গলায় বললো
“এত উত্তেজিত হচ্ছেন কেন? আমরা খেতে বসেছি দেখতেই তো পাচ্ছেন। খাওয়ার পরই নাহয় এসব নিয়ে কথা বলি!

স্বপ্না আর ওর বর তক্ষুনি সেখান থেকে বেরিয়ে গেলো। সাদ একমনে খেয়ে চলেছে আর ফাঁকে ফাঁকে আশাকে দেখতে। আশা লজ্জায় অন্যদিকে তাকিয়ে আছে। মৃদুলা সেটা পরখ করলো। খানিক বাদে তিনি আশার এক হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলেন বাইরে। ধীর কন্ঠে প্রশ্ন করলেন
“এ ছেলেকে তুমি আগে থেকেই চিনো?
“কোন ছেলেকে?
“এই যে তোমার ভাইয়ের সাথে এসেছে।
আশা ভ্রু বাকিয়ে বললো
“কেন বলোতো?
“আমার মনে হচ্ছে তোমরা দুজনই পূর্বপরিচিত।
আশা সামান্য হাসলো। এরপর সামান্য তাচ্ছিল্যের সাথে বললো
“যাকে নিয়ে কাল রাতে আমাকে এত এত কথা শোনালে তাকেই তুমি চিনতে পারছো না ভাবী?
মৃদুলা অবাক হয়ে বললো
“এই তোমার বাড়িওয়ালার ছেলে? যে কিনা কানাডায় সেটেল্ড?
“হ্যাঁ। চাপা গলায় বললো আশা।
মৃদুলা কয়েক সেকেন্ড কি যেনো ভেবে বললো
“তাইতো আমার বার বার মনে হচ্ছিলো এনাকে কোথায় যেনো দেখেছি।
আশা নিশ্বব্দে হাসলো। কোনো কথা না বলে চলে এলো সেখান থেকে।

বাড়ির পেছনের সেই পুকুর পাড়ের এক প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে হেঁটে বেড়ায় সাদ। এ যায়গাটা তার বেশ পছন্দের। এর আগের বার যখন এখানে সে এসেছিলো তখন সুযোগ পেলেই সে এখানে এসে বসে থাকতো। আজো তার ব্যতিক্রম হলো না। সেই যে খাওয়া শেষে আশা ওর সামনে থেকে চলে এসেছিলো, এরপর আর কোথাও আশার দেখা পায়নি। কারো কাছে জিজ্ঞাসা করতেও বেশ জড়তা বোধ করছে সে। একা একা বোর হচ্ছিলো ঘরে, তাই সময়টাকে উপভোগ করার জন্য চলে এসেছে এখানে এই পুকুর পাড়ে। সাদ এদিক ওদিক হাঁটছে, এমন সময় পিছনে কারো পায়ের আওয়াজ পায় সে। কে এসেছে সেটা দেখার জন্য ফিরে তাকায় সাদ।
আশা ধীরপায়ে এগিয়ে আসছে এদিকেই। সাদের চোখেমুখে খুশি দেখা যায়। ঠোঁটে হাসির আভা ফুটিয়ে দুপা এগিয়ে আশার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। আশা দাঁড়িয়ে আছে মাথা নিচু করে। সাদ খেয়াল করে আশার উচ্চতা ওর বুক বরাবর..
সাদ হাসে। সে বলে
“তোমায় জরিয়ে ধরলে খুব ভালো লাগবে কিউটি.. আমার বুকে তোমার মাথা আর কান ঠেকবে, শুনতে পাবে আমার হৃদস্পন্দন। অনুভব করতে পারবে, আমার হৃদয়ে তোমার নামে কম্পিত হওয়া সেই শব্দ যোগ… যা তোমার টানে আমাকে নিয়ে এসেছে সুদূর দূর দেশ থেকে এখানে।
খাটো মেয়েরা বুঝি এদিক দিয়ে খুব ভাগ্যবতী হয়… তারা ভালোবাসার মানুষের হৃদস্পন্দন খুব সহজেই শুনতে পারে। এমনকি কতবার হৃদস্পন্দন হয় সেটা গুণতেও পারে।

চলবে…..