#অনুভবে_তুমি
#পর্ব_২২
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
অতশী হঠাৎ রিয়ার হাত থেকে নাস্তার ট্রে টি নিজের হাতে নিলো।আর বললো,আমি এটা নিয়ে যাচ্ছি।তা শুনে রিয়া বললো, ম্যাডাম কি করছেন এটা?আপনি কেনো নিয়ে যাবেন?
অতশী কোনো উত্তর না দিয়ে রুমের ভিতর চলে গেলো।
এদিকে অতশীর হাতে নাস্তার ট্রে দেখে ইভান দাঁড়িয়ে গেলো।সে তার নিজের চোখ কে বিশ্বাস করতে পারছিলো না।অতশী কোন সাহসে এ রুমে এসেছে?
অতশীকে নাস্তার ট্রে নিয়ে রুমে ঢুকতেই সবাই ওর দিকেই তাকিয়ে রইলো।তা দেখে ইভানের ভীষণ রাগ হচ্ছিলো।সবার সামনে কিছু বলতেও পারছে না।সেজন্য ইভান রুম থেকে বের হয়ে গেলো।আর রিয়াকে বকতে লাগলো।
রিয়া তখন বললো,স্যার আমার কোনো দোষ নাই।অতসী ম্যাডাম জোর করেই আমার হাত থেকে ট্রে টি নিয়ে নিলো।ইভান সেই কথা শুনে অতশীর অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু অতশী আর রুম থেকে বের হলো না।
এদিকে অতশী মৌরির পাশে বসে পড়লো। আর মৌরি সেই থেকে ঘোমটা দিয়ে আছে।এখন পর্যন্ত ঘোমটা খোলে নি।
অতশীকে দেখে পাত্রপক্ষের একজন জিজ্ঞেস করলো ইনি কে?
অতশী তখন নিজেই উত্তর দিলো যে সে মৌরির বান্ধুবি হয়।
মুহিব সাহেব সেই কথা শুনে ভীষণ অবাক হলেন।হঠাৎ অতশীর কি হলো?এভাবে বলছে কেনো সে?
তখন আরেকজন পাত্রপক্ষের লোক বললো,মেয়ের ঘোমটা টা একটু উঠাতে বলেন।অতশী সেই কথা শুনে মৌরির ঘোমটা টা তুলে দিলো।
মৌরিকে দেখে সবাই ভীষণ অবাক হলো।এ কেমন চেহারার অবস্থা!একদম বাজে লাগছিলো দেখতে।পাত্র নিজেও তার মুখ অন্য দিকে ঘুরালো।এই মেয়েকে তারা দেখতে এসেছে!এই সেই রূপবতী সুন্দরী কন্যা।এদিকে মুহিব সাহেব ভেবেছে তার মেয়েকে মনে হয় পছন্দ হয়েছে সবার।সেজন্য তিনি হাসিখুশি মুখেই থাকলেন।মুহিব সাহেব এটা তো আর জানে না যে মৌরি বাজে একটা সাজে বসে আছে।যাতে তাকে কেউ পছন্দ না করে।ওদিকে ইভান ও জানে না পার্লারের মেয়েটি মৌরি কে নয়,অতশীকে সাজিয়েছে।
মৌরিকে দেখা শেষ হলে পাত্রপক্ষের একজন বললো,
আচ্ছা ঠিক আছে।আমাদের দেখা হয়ে গেছে।
সেই কথা শুনে মুহিব সাহেব বললেন, অতশী মৌরিকে নিয়ে যাও।অতশী সেই কথা শুনে মৌরিকে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।অন্যদিকে ইভান অতশীর অপেক্ষায় সেই থেকে দাঁড়িয়ে আছে দরজায়।
অতশী ইভান কে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকা দেখে বুঝে গেলো আজ অনেক খারাপ কিছু হতে যাচ্ছে তার সাথে।অতশী তখন মৌরিকে ফিসফিস করে বললো তুমি তাড়াতাড়ি করে তোমার রুমে চলে যাও।তা না হলে তোমার ভাই যদি তোমার এই সাজ দেখে তাহলে অজ্ঞান হয়ে যাবে।
মৌরি সেই কথা শুনে মাথার ঘোমটা টা ভালো করে দিয়ে এক দৌঁড়ে তার রুমে চলে গেলো।
অতশী নিজেও পালানোর চেষ্টা করলো।কিন্তু ইভান তার আগেই অতশীর হাত টেনে ধরে পাশের রুমে নিয়ে গেলো।
–এই? কি করছেন?ছাড়ুন আমাকে।
ইভান সেই কথা শুনে আরো জোরে হাত চেপে ধরলো অতশীর হাত,আর বললো, তুমি এখানে কেনো?
কি জন্য এসেছো?
অতশী তখন বললো, সে কৈফিয়ত আপনাকে দিবো কেনো?
ইভান সেই কথা শুনে অতশীর একদম কাছে চলে গেলো আর চোখ বড় বড় করে বললো,নিজের লিমিট ক্রস করো না অতশী।ভুল করেও যেনো আমাদের পারিবারিক ব্যাপারে নাক গলাতে আর না দেখি।ডোন্ট লিমিট ইওর ক্রস।বুঝতে পেরেছো?
অতশী তখন বললো,আমি কি করেছি?যার জন্য আপনি আমাকে এভাবে বকছেন?
–কি করেছো এখনো বুঝতে পারছো না?
–না বুঝতে পারছি না।আমি তো শুধু মৌরির সাহস যোগানোর চেষ্টা করছিলাম।মৌরি একা একা যেতে ভয় করছিলো সেজন্য আমাকে থাকতে বলেছিলো।আমি সেজন্য ও রুমে গিয়েছিলাম।এতে আমার অন্যায় টা কোথায়?
ইভান সেই কথা শুনে চিৎকার করে বললো,এটাই অন্যায় যে তুমি ওই রুমে গিয়েছিলে।খবরদার!মৌরির আশেপাশেও যাবে না।তোমার যেটা কাজ শুধুমাত্র সেটাই করবে।বুঝলে?
অতশী তখন বললো,আপনি এতো ভয় পাচ্ছেন কেনো?আমি কি ছেলে মানুষ যে আপনার বোন কে উঠিয়ে নিয়ে যাবো?
–শাট আপ অতশী!তুমি যে এতো নির্লজ্জএকটা মেয়ে আমার জানা ছিলো না।
অতশী সেই কথা শুনে বললো, আমি না হয় নিলর্জ্জ, আমাকে দেখলে না হয় আপনার গা জ্বলে ওঠে।যদিও এর কারণ আমি জানি না, তবুও একটা কথা জানার ভীষণ ইচ্ছা আমার,
যাকে ভালোবাসেন,যার ছবি মনের মধ্যে লুকিয়ে রেখেছেন,যার জন্য একসময় পাগল ছিলেন সেও কি আমার মতোই নির্লজ্জ!
ইভান সেই কথা শুনে অতশীর হাত ছেড়ে দিলো।আর বললো,আমি আগেও বলেছি আর এখনো বলছি, আমি কাউকে ভালোবাসি না,আর আমি কারো জন্য পাগল নয়!
এই বলে ইভান রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
মৌরি ইতোমধ্যে তার রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে শুয়ে আছে।
ইভান সোজা মৌরির রুমে চলে গেলো।
ইভান কে দেখামাত্র মৌরি বিছানা থেকে উঠে এলো।
ইভান তখন বললো তুই অতশীকে ডেকেছিস?
মৌরি মাথা নাড়িয়ে বললো হুম।
–কেনো?
মৌরি কোনো উত্তর দিলো না।সে নিচ মুখ হয়ে থাকলো।
ইভান তখন বললো চুপ করে আছিস কেনো?জবাব দি।আমার বারণ করা সত্ত্বেও ওকে আজ কেনো ডেকেছিস?
আমি বলেছি না ওর সাথে মিশবি না এমনকি কোনো কথাও বলবি না।
মৌরি তখন বললো,কেনো?ওর সাথে মিশলে কি হবে?তুমি ওকে কেনো এতো অপছন্দ করো ভাইয়া?এর কারণ কি?
ইভান তখন চিৎকার করে বললো,তুই জানিস না আমি অয়ন কে অপছন্দ করি।অয়ন কে দেখলে আমার গায়ের রক্ত গরম হয়ে যায়!
–মানে!অয়নের সাথে অতশীর কি সম্পর্ক?
–অতশী অয়নের বোন হয়।অয়ন আর অতশী আপন ভাই বোন।
মৌরি একদম অবাক হয়ে গেলো।সে ভাবতেও পারে নি অতশী আর অয়ন আপন দুইভাই বোন।তাছাড়া অয়ন কখনোই বলে নি অতশীর কথা।
হঠাৎ রুমে মুহিব সাহেব আসলেন।তিনি এসে ইভান কে বললেন,বাবা ইভান!তুমি এ রুমে কি করো?পাত্রপক্ষের সাথে কথা বলতে হবে না?সবাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।
ইভান সেই কথা শুনে তার বাবার সাথে চলে গেলো।
এদিকে পাত্রপক্ষ কি ডিসিশন দিবে সেটা শোনার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে বসে আছে।ইভানও চলে গেলো সেখানে।
পাত্রপক্ষের কারোরই মৌরিকে ভালো লাগে নি।সেজন্য তারা এই সমন্ধ এখানেই থামাতে চান।কিন্তু সেটা নিজদের মুখে আর বললো না।তারা জানালো বাসায় গিয়ে ডিসিশন নিয়ে তবেই জানাবে।
পাত্রপক্ষের কথা শুনে ইভানের কিছুটা সন্দেহ হলো। কারণ তাদের যদি পছন্দ হতো তাহলে আজকেই বলে দিতো।এভাবে সময় নেওয়ার মানে টা কি?তার মানে কি পছন্দ হয় নি মৌরি কে?তার বোন তো অপছন্দ হওয়ার মেয়ে নয়!
নিশ্চয় অতশী কিছু করেছে।এই জন্য ইভান অতশীকে খুঁজতে লাগলো।
ইভান খুঁজতে খুঁজতে অতশীকে তার রুমের মধ্যে পেলো।ইভান রুমে ঢুকতেই দেখে অতশীর হাতে তার ডায়রি।
অতশী মনোযোগ দিয়ে ডায়রি টা দেখছে।
অতশী ডায়রির পৃষ্ঠা উল্টাতেই ইভান ডায়রি টা ছোঁ মেরে কেড়ে নিলো আর বললো,আমার ডায়রি কোন সাহসে ধরেছো?আর তুমি আমার রুমে কেনো?
অতশী তখন বললো,
যে সাহসে আপনি আমাকে পার্সেল পাঠাতেন।যে সাহসে আপনি আপনার মনের সমস্ত অনুভূতি চিরকুটের মাধ্যমে প্রকাশ করতেন।
ইভান অতশীর কথা শুনে চুপ করে রইলো।সে বুঝতে পারলো অতশী সব জেনে গেছে।
অতশী তখন ইভানের হাত ধরে বললো,
হঠাৎ কি এমন হলো যে আপনি আমাকে ভুলে গেলেন!আমাকে একদম সহ্য করতেই পারছেন না।
ইভান তখন অতশীর হাত ছেড়ে দিয়ে বললো,তুমি কি শুরু করেছো এসব?আবোলতাবোল বলা বন্ধ করো।নিজের আবেগ নিজের কাছেই রাখো।
অতশী তখন চিৎকার করে বললো,আপনি এর পরও মিথ্যা কথা বলছেন?
কেনো?
আপনি আমাকে যতগুলো চিরকুট পাঠিয়েছেন আর তাতে যা যা লেখা ছিলো সবকিছু আমি আপনার ডাইরিতে দেখলাম।
ইভান এবার রুম থেকে বের হয়ে যেতে ধরলো।
অতশী তখন ইভানের হাত ধরে বললো,
আমি কি আপনাকে আগে প্রেম নিবেদন করেছি?না কোনো চিরকুট পাঠায়ছি?সব কিছু আপনি শুরু করেছেন।এখন কেনো এভাবে লুকোচুরি করছেন।ভালো না বাসলেন কিন্তু আমার তো জানার অধিকার আছে কি জন্য আমাকে এসব প্রেমপত্র পাঠাতেন?
ইভান তখন বললো,হ্যাঁ আমিই এসব পাঠাতাম।কারন প্রথম দেখাতেই তোমাকে আমি ভালোবেসে ফেলি।কিন্তু নিজের ভালোবাসার কথা মুখ ফুটে বলতে পারছিলাম না।সেজন্য রোজ রোজ এসব পার্সেল পাঠাতাম।কিন্তু যখন জানতে পারলাম তুমি অয়নের বোন মুহুর্তের মধ্যে আমার মন টা ভেংগেচুরে গেলো।আমি ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করলাম তোমাকে।আর এখন সম্পূর্ণভাবে ভুলেও গেছি।
অতশী সেই কথা শুনে ইভানের কাছে এগিয়ে এলো।
আর বললো,কেনো?কি করেছে আমার ভাইয়া?কেনো ওর উপর এতো রাগ?
ইভান তখন বললো,তোমার ভাই আমার বোনের মাথা নষ্ট করে ফেলেছে।সেজন্য সে তাকে ছাড়া কিছুই বুঝছে না এখন।কিন্তু আমি বেঁচে থাকতে অয়নের সাথে আমার বোনের সম্পর্ক কখনোই মানবো না।
অতশী ইভানের কথা শুনে বললো,ভাইয়া মৌরিকে ভালোবাসে!কি বলছেন এসব?তারমানে ভাইয়াই মৌরির সেই বয়ফ্রেন্ড!
ভাইয়া আপনার বোনকে ভালোবাসে বলেই আপনি আমাকে এড়িয়ে চলছেন?
ইভান তখন বললো,না।সেজন্য না।
ইভান আজ আর কিছু গোপন রাখতে পারলো না।সে অতশীকে বললো,তোমার ভাইয়া একজন সন্ত্রাস। সে একটা গ্যাং এর সাথে যুক্ত আছে।টাকার বিনিময়ে মানুষ খুন করে সে।
অতশী ইভানের কথা কিছুতেই বিশ্বাস করলো না।সে উলটো ইভান কেই সন্ত্রাস বলে গালিগালাজ করতে লাগলো।
ইভান তখন বললো,তুমি কি আমার আসল পরিচয় জানো?আমি কি করি?আমার কাজ কি?
অতশী তখন বললো কি আর করবেন?আপনি যে একজন সন্ত্রাস তা আমি আগে থেকেই জানি।কারণ সন্ত্রাস ছাড়া কারো কাছে কখনো পিস্তল থাকে না।আর নিজের দোষ ঢাকানোর জন্য আমার ভাইকে সন্ত্রাস বলে চালিয়ে দিচ্ছেন!
ইভান তখন বললো,আমি কোনো সন্ত্রাস না।আর আমি ভার্সিটির কোনো বড় ভাই ও না।আমি একজন সি আই ডি অফিসার।
অতশী মুহুর্তের মধ্যে শকড খেয়ে গেলো।ইভান কি বলছে এসব!
ইভান তখন বললো আমি মাত্র জয়েন করেছি।আর আমি একটা তদন্তের জন্যই রোজ রোজ ভার্সিটিতে যেতাম।কারণ ভার্সিটির অনেক স্টুডেন্ট ই এই গ্যাং এর সাথে যুক্ত।তোমার ভাইয়ার ফ্রেন্ড বলে যাদের কে জানো তারা সবাই এই গ্যাং এর সাথে যুক্ত।
অতশী এবার একটু একটু বিশ্বাস করলো।কারন সেই জন্য হয় তো তার ভাই তানিমের সাথে তার বিয়েটা মেনে নিতে চাইছিলো না।তার কোনো ফ্রেন্ডকে কখনো বাসার মধ্যে আনতো না।
অতশী তখন বললো,আপনারা তো জানেনই অয়ন ভাইয়া একজন সন্ত্রাস তাহলে আপনার বাবা ভাইয়াকে কেনো ছাড়িয়ে আনলেন?
–অয়ন তমাল কে খুন করে নি।সে সম্পূর্ণ নির্দোষ। তমাল কে খুন করেছে তানিম।তাছাড়া বাবা তো জানেই না অয়ন একজন সন্ত্রাস।তাহলে কখনোই অয়নের পক্ষ নিতো না।
আমার পরিবারের কেউ যদি জানতো তুমি একজন সন্ত্রাসের বোন, তাহলে কোনদিন কি আমার ভাইদের পড়াশোনার জন্য তোমাকে নিয়োগ করতো?
এটা আমাদের টিমের একটা সিক্রেট কথা ছিলো।তোমাকে উত্তেজনার বশায় বলে ফেললাম।এখন নিশ্চয় তুমি তোমার ভাইয়াকে বলে দিবে।
আর বলে দিলেও কোনো প্রবলেম নেই।আমরা প্রমাণ জোগাড় করে একদম হাতে নাতে ধরে ফেলবো সবাইকে।যেখানেই লুকিয়ে থাকে না কেনো?
অতশী তখন চিৎকার করে বললো,আমি বিশ্বাস করি না,আমার ভাইয়া এরকম কাজ করতেই পারে না।কারণ আমার ভাইয়া সবার থেকে সেরা।আপনি কখনোই আমার ভাইয়ার আশেপাশে যাবেন না।আমার ভাইয়ার যদি কোনো ক্ষতি হয় একদম শেষ করে ফেলবো আপনাকে।এই বলে অতশী দৌঁড়ে তার বাড়ি চলে গেলো।
#চলবে,
#অনুভবে_তুমি
#পর্ব_২৩
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ
অয়ন,তমাল,তানিম,জয়,সানি আর রুদ্র শক্তিশালী একটা গ্যাং এর সাথে যুক্ত আছে।অয়ন এই গ্যাং এর লিডার।অয়নের সাথে আবার তমালের খুব বেশি ভালো সম্পর্ক।অয়ন যেকোন কাজে তমাল কে সাথে নেয়।বলতে গেলে তমালকেও সবাই অয়নের মতোই মান্য করে।তমাল আর অয়নের এই বন্ধুত্ব আবার তানিমের সহ্য হতো না।সে জন্য সে জয়,সানি,আর রুদ্রের সাথে হাত মিলিয়ে আলাদা একটা গ্যাং তৈরি করার স্বপ্ন দেখে।তারা আলাদা একটা আস্তানাও তৈরি করেছে।কিন্তু অয়ন আর তমাল বেঁচে থাকলে এই স্বপ্ন কখনোই পূরণ হবে না তানিমের।সেজন্য সে অয়ন আর তমালের মধ্যে নানা ভাবে ঝামেলা বাঁধানোর চেষ্টা করে।শেষমেশ কোনো উপাই না দেখে তানিম কয়েকজন সন্ত্রাসকে নিয়ে তমাল কে খুন করে ডোবায় ফেলে দেয়।অতশী সেদিন যে সন্ত্রাস গুলোকে দেখেছিলো এরা সবাই তানিমের নিয়োগ করা সন্ত্রাস ছিলো।আর যে সন্ত্রাস টি অতশীর হাত টেনে ধরে থ্রেড দিচ্ছিলো সে তানিম ছিলো।তানিম অতশীকে প্রথম দেখাতেই একদম পাগল হয়ে গিয়েছিলো।আর অতশীর পরিচয় শুনে আরো বেশি অবাক হয়ে যায়।তারই বন্ধুর বোন এতো সুন্দরী হবে সে কখনো ভাবতেই পারে নি।তানিম অতশীকে পাওয়ার জন্য অয়নের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করে।অয়ন সহজেই তানিম কে তার ভালো বন্ধু হিসেবে গ্রহন করে। কারণ তমাল মারা যাওয়ায় সে ভীষণ হতাশা আর দুঃশ্চিন্তায় ভুগছিলো।
এদিকে ইভান সন্ত্রাসীদের এই গ্যাং টাকে ধরার জন্যই তার তিন সহচরী শুভ্র,নিলয়,আর দিশানকে নিয়ে ভার্সিটিতে রোজ রোজ যেতে থাকে।আর তাদের কে ভার্সিটির বড় ভাই বলে পরিচয় দেয়।
ইভানরা সবসময় অতশীদের ডিপার্টমেন্টের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকতো।এই ভাবে রোজ রোজ দেখতে দেখতে অতশীকে ভালো লাগতে শুরু করে।কিন্তু মাত্র জয়েন করা নতুন অফিসারের কাঁধে অনেক দায়িত্ব,এই মুহুর্তে প্রেম ভালোবাসায় জড়ানো টা মোটেও ঠিক হবে না।আবার অন্যদিকে তার মনের আবেগকেও কন্ট্রোল করতে পারছিলো না ইভান।সেজন্য সে তার মনের সমস্ত কথাগুলো লিখে পার্সেল আকারে অতশীর বাসায় পাঠিয়ে দিতো।
অয়ন যেদিন জানতে পারলো কেউ একজন তার বোন কে গোপনে চিরকুট পাঠায় সে সেটা তার ফ্রেন্ডদের সাথে শেয়ার করে।আর বলে যে করেই হোক এই ছেলেকে তার চাই ই চাই।তানিম এই সুযোগ টা কাজে লাগায়।
কিন্তু তানিম ভুলে যায় যে সে একজন সন্ত্রাস।সে যতই অয়নের বন্ধু হোক না কেনো অয়ন জেনেবুঝে কখনোই তার বোনকে একজন সন্ত্রাসীর হাতে তুলে দিবে না।
অয়ন তবুও চেষ্টা করে দেখেছিলো।সে তার বাবা মাকে পাঠায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে।
কিন্তু অয়ন সেই কথা শোনামাত্র তানিম এর সাথে ভীষণ রাগারাগি করে।তাকে মারধরও করে।
এরই মধ্যে হঠাৎ একদিন ইভান মৌরির সাথে অয়ন কে দেখে ফেলে।ইভান রাগ করে অয়ন কে ধাক্কা মারে।আর তার পরিচয় জানতে চায়।অয়ন নিজের রাগ কে কন্ট্রোল করে রাখে।কারণ সাথে মৌরি ছিলো।মৌরি তখন তার ভাইয়াকে জানায় সে অয়ন কে পছন্দ করে।তারা দুইজন দুইজনকে ভালোবাসে।ইভান কিছুতেই এটা মানতে পারছিলো না।তার ইচ্ছা ছিলো অনেক বড় অফিসারের সাথে তার বোনের বিয়ে দেবে।
কিন্তু মৌরি জানায় সে অয়ন কে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করতে পারবে না।
তখন ইভান অয়নের ফ্যামিলির খোঁজ করতে গিয়ে অয়নের খুঁটিনাটি সব কিছু জেনে ফেলে।অয়ন যে জবের কথা সবাইকে বলতো আসলে সে কোন জব করে না।ইভান মৌরিকে অয়নের ব্যাপারে সবকিছু বলে।কিন্তু মৌরি তবুও অয়ন কে ভুলতে পারে না।তবে ইভান মৌরিকে কড়া পাহাড়ায় রাখে যাতে অয়ন আর তার সাথে মিশতে না পারে।মৌরি তখন চুরি করে মেসেঞ্জারে চ্যাটিং করতে থাকে অয়নের সাথে।আগের মতো আর ফোনে কথা হয় না তাদের।
পরের দিনই তমাল কে মারার সেই ফুটেজ টি ভাইরাল হয়,যেখানে অতশীকে একজন সন্ত্রাসের সাথে কথা বলতে দেখা যায়।অয়ন নিজের বোন কে সেজন্য সবার চোখের আঁড়াল থেকে রক্ষার জন্য গ্রামে নিয়ে যায়।আর সে শহরে ফিরে আসে।
তানিম জানে অয়ন থাকলে কখনোই সে অতশীকে পাবে না।সেজন্য সে রাগ করে তমাল আর অয়নের মারামারির একটা ভিডিও পুলিশ কে দিয়ে দেয়।আর বলে অয়ন ই তমাল কে খুন করেছে।
পুলিশ সেই কথা শুনে অয়ন কে ধরে নিয়ে যায়।
অয়ন জেলে থাকা অবস্থায় মৌরির সাথে যোগাযোগ করতে পারে না।সেজন্য মৌরি ভীষণ টেনশনে থাকে।পরে অয়নের অন্য আরেকজন বন্ধু জেলখানায় তাকে দেখতে গেলে অয়ন তাকে মৌরির ব্যাপারে বলে।আর তাকে জানিয়ে দিতে বলে অয়ন হঠাৎ করেই অফিসিয়াল কাজে কিছুদিনের জন্য বাহিরে গেছে।মৌরি এইভেবে আর কোনো চিন্তা করে না।কারন সে অয়ন কে অনেক বেশি ভালোবাসে।অয়ন ও মৌরিকে ভালোবাসে কিন্তু তার ব্যাপারে সবকিছু জানলে মৌরি যদি তাকে আর না ভালোবাসে এই ভয়ে মৌরিকে সে কিছুই জানায় নি।
অয়ন জেলে থাকায় তানিম এই সুযোগে অতশী আর তার ফ্যামিলিকে তাদের বাসায় নিয়ে আসে।তানিম এমন ভাবে অভিনয় করে যে কেউ ধরতেই পারে নি তার মনের কথা।
তানিম অতশীর ফ্যামিলিকে আতংকের মধ্যে রাখার জন্য সন্ত্রাস দিয়ে অতশীকে উঠিয়ে নিয়ে যায়।পরে আবার নিজেই অতশীকে উদ্ধার করে বীরত্বের পরিচয় দিতে চেয়েছিলো।যাতে করে অতশীর ফ্যামিলির সবাই তানিম কে খুব পছন্দ করে,তারা যেকোন প্রয়োজনে তানিমের কাছে আসে।তানিম সন্ত্রাসগুলোকে বার বার বলেছে অতশীর যেনো কোনো ক্ষতি না হয়।কিন্তু সন্ত্রাস গুলোর মধ্যে লোভ জেগে ওঠে, যার কারনে তারা অতশীকে ধর্ষন করার প্লান করে।ঠিক সেই সময় সেখানে ইভান যায়।কারন ইভান তানিমের এই আস্তানার খবর পেয়ে গেছে ইতোমধ্যে।ইভান যখন দেখলো সন্ত্রাস গুলো অতশীর সাথে খারাপ কিছু করতে চাইছে সেজন্য সে রাগ করে সবাইকে খুন করে ফেলে,যার জন্য তানিমের ব্যাপারে সে কিছুই জানতে পারে না।
ইভান অয়নের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে গিয়ে এই গ্যাং এর ব্যাপারে অনেক তথ্য তার কানে আসে।
ইভান যখন জানতে পারলো অতশী অয়নের বোন তখন সে চিরকুট লেখা বন্ধ করে দেয়।কারন একজন সি আই ডি অফিসার কি করে একজন সন্ত্রাসীর বোনের সাথে সম্পর্ক করতে পারে?
ইভান অতশীর বিয়েতে গিয়েছিলো তানিম কে ধরার জন্য।কারন তানিমের ব্যাপারে অনেক প্রমাণ জোগাড় করতে পেরেছিলো ইভান।তানিমের নতুন আস্তানা খুঁজে পেয়েছে ইভান।যেখানে তার সকল টাকা পয়সা,অস্ত্র আর ও অনেক দরকারি জিনিসপত্র রাখা হয়েছিলো।ইভান ভেবেছিলো চারজনকে এক সাথে ধরবে সেই আস্তানায়।কিন্তু তার আগেই তানিম বাকিদের কে ঠাকায়।তানিম,জয়,সানি আর রুদ্রের আস্তানা সে সেদিনই খুঁজে পেয়েছিলো যেদিন অতশীকে উদ্ধার করতে গিয়েছিলো।ওটাই ছিলো তানিমের নতুন আস্তানা।কিন্তু আস্তানায় কোনো অস্ত্র বা অন্য কোনো দরকারী সামগ্রী পায় নি ইভান।অয়ন সেগুলো আগেই সরিয়ে ফেলেছে।কারণ অয়নের ধান্দা আবার ছিলো এসব টাকা পয়সার ভাগ সে একাই নিবে।রুদ্র,জয় আর সানিকে কেনো দিতে যাবে?কারন অয়ন জেলে থাকায় তানিমই তো এখন একজন লিডার।
তানিমের বন্ধুরা এজন্য তানিম কে খুন করে ফেলে।আর সকল যন্ত্রপাতি আর টাকা পয়সা নিয়ে পালিয়ে যায়।এদিকে ইভান তানিমের বিরুদ্ধে সকল প্রমান জোগাড় করে তানিম কে ধরতে এসে জানতে পারলো তানিম মারা গেছে।
ইভান সেই দিনই অভিযান চালিয়ে তানিমের তিনজন খুনির মধ্যে জয় কে ধরে ফেলে।সানি আর রুদ্র এখনো নিরুদ্দেশ।
অতশী তার ভাইয়ার সত্য টা জেনে দৌঁড়ে তার বাসায় চলে এলো।কারণ তার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না।সে তার ভাইয়ার মুখেই সত্য টা জানতে চায়।
অতশী বাসায় এসে দেখে অয়ন নেই।সেজন্য সে তার মায়ের রুমে চলে গেলো।আর আম্মু আম্মু বলে ডাকতে লাগলো।
অতশীর আম্মু এগিয়ে আসতেই অতশী জিজ্ঞেস করলো,আচ্ছা আম্মু ভাইয়া কি জব করে?কোথায় তার অফিস?
অতশীর মুখে হঠাৎ এই প্রশ্ন শুনে তার আম্মু বেশ অবাক হয়ে যায়।তবে তিনি জানান অয়নের চাকরির ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।অতশী তখন তার ভাইয়ার রুমে চলে যায়।আর পুরো ঘর তছনছ করে ফেলে। কিন্তু কোনো ক্লু খুঁজে পায় না।হঠাৎ অয়নের টেবিলের উপর সেই ম্যাপ টা খুঁজে পায় যেটা অয়ন অফিসিয়াল কাজ বলে জানায় সবাইকে।
অতশী ম্যাপ টা হাতে নিয়ে কিছুই বুঝতে পারে না।কারন সেখানে শুধু জেলা আর বিভাগের নাম দেওয়া।আর কিছু কিছু জায়গায় লাল কালি দিয়ে মার্ক করা।অতশী ম্যাপ টা হাতে নিয়ে তার আম্মুর রুমে আসে আর জিজ্ঞেস করে আম্মু ভাইয়া তো সবসময় বলতো এটা অফিসিয়াল কাজের একটা ম্যাপ।
–হ্যাঁ।তা কি হইছে?
–কিন্তু ভাইয়া তো কোনো জবই করে না।
–কি বলছিস এসব?
–হ্যাঁ সত্য বলছি আমি।ভাইয়া আর তার ফ্রেন্ডরা কেউই কোনো জব করে না।তাহলে এরা রোজ সকালে কই যায়?
অতশীর আম্মু অতশীকে ধমক দিয়ে বললো কি সব ভুলভাল বকছিস?মাথা ঠিক আছে তোর?
–হ্যাঁ আমি সত্যি বলছি আম্মু।আমাদের ভাইয়া একজন সন্ত্রাস।সে মানুষ খুন করে।এই বলে অতশী কাঁদতে লাগলো।
অতশীর দাদী দূরে দাঁড়িয়ে শুনছিলেন এটা।তিনি কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারলেন না।
অন্যদিকে অতশীর আম্মু উলটো অতশীকেই বকাঝকা শুরু করে দিলো।কেউই এটা বিশ্বাস করলো না।
রাতের বেলা অয়ন বাসায় ফিরতেই অতশী জিজ্ঞেস করলো ভাইয়া তুই কই থেকে আসলি?
–কই থেকে আবার?অফিস থেকে।
অতশী তখন বললো তুই কিসে জব করিস?
অয়ন সেই কথা শুনে তার আম্মুকে বললো,কি হয়েছে আম্মু?অতশী এমন জেরা করছে কেনো?
অতশীর আম্মু তখন বললো,কি বুঝি হয়েছে ওই ভালো জানে।
অতশী তখন বললো ভাইয়া তুই কি ইভান কে চিনিস?
ইভানের নাম শুনেই অয়ন অতশীর কাছে এগিয়ে এলো।আর বললো,কি করেছে ইভান?তাড়াতাড়ি বল কি করেছে?
–কিছু করে নি।আমি শুধু জিজ্ঞেস করছি তুই চিনিস কিনা?
–না চিনি না।
অতশী তখন বললো মৌরি কে নিশ্চয় চিনিস?
–মৌরি?কোন মৌরি?আমি চিনি না কাউকে।
আর তুই হঠাৎ এদের কথা জিজ্ঞেস করছিস কেনো?
–কারন আছে।কারন যে মুহিব সাহেব তোকে জেল থেকে বের করে এনেছে ওনার ছেলে মেয়ের নাম ই হলো ইভান আর মৌরি।
অয়ন সেই কথা শুনে আকাশ থেকে মাটিতে পড়ে গেলো।
অতশী তখন তার ভাইয়ার হাত ধরে বললো,ভাইয়া এটা কি সত্যি যে তুই একজন সন্ত্রাস!ইভান আমাকে বলেছিলো কিন্তু আমি বিশ্বাস করি নি।তুই নিজের মুখে বল প্লিজ।
অয়ন একেবারে থ হয়ে গেলো।তার মুখ দিয়ে কোনো কথাই বের হলো না। মৌরি যে এডভোকেট মুহিব সাহেবের মেয়ে সে আসলেই জানতো না।যদি জানতো তাহলে অতশীকে রোজ রাজ টিউশনি করাতে ও বাড়িতে পাঠাতো না। অয়ন কি করেছে এটা!নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলো।অয়নের মাথা চক্কর দিতে লাগলো।তাহলে কি ইভান অয়নের ব্যাপারে সবকিছু জেনে গেছে!তাদের আস্তানার খোঁজ পেয়েছে!মৌরি কে আবার বলে নি তো!
অয়ন এক মুহুর্ত ও দেরী করলো না।সাথে সাথে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।
–এই ভাইয়া কই যাচ্ছিস?দাঁড়া বলছি।এতো রাতে কই যাচ্ছিস আবার!
অয়ন কোনো উত্তর না দিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।
অতশী তখন তার আম্মুকে বললো,দেখলে, ভাইয়া কিভাবে ভয় পেয়েছে!আমার কথা বিশ্বাস করো সবাই।ভাইয়া আসলেই একজন সন্ত্রাস।অতশীর আম্মু আর দাদীও এবার ভয় পেয়ে গেলো।অয়ন যদি সত্যি সত্যি সন্ত্রাস হয় তাহলে কি হবে এখন?ওকে তো আবার পুলিশ ধরে ফেলবে।
সারারাত পার হয়ে গেলো অয়ন আর বাসায় ফিরলো না।অতশী অপেক্ষা করছিলো অয়নের জন্য।কিন্তু অয়ন আজ আর বাসায় ফিরলো না।
পরের দিন অতশী ভার্সিটিতে চলে গেলো।যদিও আজ তার যেতে একটুও ইচ্ছা করছে না তবুও গেলো।অতশী সোজা কমন রুমে চলে গেলো।কারন আজ একটু সে তাড়াতাড়ি এসেছে।অতশীর মাথায় এখন শুধু তার ভাইকে নিয়েই চিন্তা।তার ভাইয়া কেনো এমন হলো?কেনো তাকে এরকম পেশা বেছে নিতে হলো?
অতশী হঠাৎ খেয়াল করলো ইভান এসেছে ভার্সিটিতে। তা দেখে অতশী কমন রুম থেকে বের হয়ে হলো।অতশীকে দেখামাত্র ইভান দৌঁড়ে এলো অতশীর কাছে।আর তাকে জিজ্ঞেস করলো,তোমার ভাইকে সবকিছু বলে দিয়েছো তাই না?
অতশী কোনো উত্তর দিলো না।
ইভান তখন চিৎকার করে বললো, মৌরি কোথায়?
–মৌরি?আমি কি করে জানবো?
ইভান তখন তাহলে তোমার ভাই কোথায়?
–জানি না।কারণ ভাইয়া কাল রাতে বাসায় আসে নি!
ইভান তখন বললো,আমার বোনের সাথে যদি খারাপ কিছু হয় তোমাদের দুই ভাই বোন কে যে কি করবো সত্যি আমি জানি না।
–আমি কি করেছি!
–কি করেছো মানে!তোমাকে বললাম না এটা একটা সিক্রেট কথা।তবুও বলে দিয়েছো অয়ন কে?
–আপনি অযথাই ভুল বুঝছেন আমাকে।আমি ভাইয়াকে কিছুই বলি নি।শুধু জিজ্ঞেস করেছিলাম ভাইয়া ইভান নামের কাউকে চেনে কিনা?
আর মৌরি কে চেনে কিনা?
ইভান সেই কথা শোনামাত্র দ্রুত ভার্সিটি থেকে চলে গেলো।শুভ্র,নীলয় আর দীশান কে বললো তাড়াতাড়ি চলে আয়।ইভান তার পারিবারিক ব্যাপার মোটেও প্রকাশ্যে আনতে চায় নি।কিন্তু এবার আর কোনো উপাই দেখলো না।যে করেই হোক মৌরিকে খুঁজে বের করতে হবে।
অতশী নিজেও ভীষণ টেনশনের মধ্যে পড়ে গেলো।ভাইয়া কেনো এমন পাগলামি করছে!এখন ইভান যদি তার ভাইয়ার সাথে খারাপ কিছু করে!অতশী আর এক মুহুর্ত ও দেরী করলো না।তাড়াতাড়ি করে বাসায় চলে গেলো।
অতশীর বান্ধুবীরা অনেক ডাকাডাকি করলো।কিন্তু অতশী কারো কথায় কান না দিয়ে চলে গেলো।
অতশী বাসায় গিয়ে নিজের চোখ কে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিলো না।কারন পুরো বাড়ি পুলিশ ঘিরে রেখেছে।
চলবে,