অনুভবে তুমি পর্ব-৩৪

0
610

#অনুভবে_তুমি
#পর্ব_৩৪
#মুমতাহিনা_জান্নাত_মৌ

চিরকুট টা কি আমি পড়তে পারি ভাবি?

মৌরির কথা শুনে অতশী মনে মনে ভাবতে লাগলো ইভান বাহিরে এতো রাগ রাগ ভাব দেখালেও চিঠি টা তো অবশ্যই ভালোবাসা নিয়েই লিখেছে।না এটা মৌরি কে পড়তে দেওয়া যাবে না।এই ভেবে অতশী মৌরির হাত থেকে চিরকুট টা কেড়ে নিয়ে বললো,ভাবি এটা তোমার পড়া যাবে না।উনি শুনলে ভীষণ রাগ করবেন।এটা শুধু আমাকেই পড়তে বলেছেন।

–ভাইয়া দেখবে কেমনে?ও কিছুতেই জানতে পারবে না।দেখি আমার ভাই টা কত টা রোমান্টিক। বউ কে কি কি লিখেছে?আমার না আর তর সইছে না।
এই বলে মৌরি আবার অতশীর হাত থেকে চিরকুট টা নিয়ে নিলো।আর পড়া আরম্ভ করলো।কিন্তু এক লাইন পড়তেই মৌরির চোখ কপালে উঠে গেলো।

মৌরিকে এমন অবাক হওয়া দেখে অতশী বললো,তোমার ভাইয়া এমনই।মুখে কিছু না বললেও চিঠিতে কি সুন্দর ভালোবাসার কথা বলে।আমার কত প্রশংসা করে।কি যে ভালো লাগে তখন।

মৌরি তখন চিরকুট টা অতশীর হাতে দিয়ে বললো, ভাবি আগে চিঠিটা পড়ো।তারপর আমার গুনধর ভাইয়ের প্রশংসা করিও।
অতশী মৌরির কথা শুনে নিজেও পড়া আরম্ভ করে দিলো।
অতশী নিজেও যখন এক লাইন পড়লো সে সাথে সাথে মৌরির দিকে তাকালো।অতশী ভাবতেও পারে নি এতো সুন্দর একটা খামের ভিতর এইসব লেখা থাকবে।আর যে চিঠির উপরে Love You Forever লেখা সেটা কি করে এমন বাজে হতে পারে!

মৌরি অনেক দিন ধরে হাসে না।অয়ন মারা যাওয়ার পর থেকে শুধু কেঁদেই যাচ্ছে।কিন্তু আজ তার ভাই এর এমন কান্ড দেখে না হেসে থাকতে পারলো না।সে এমন চিঠি জীবনেও দেখে নি।যার উপরে ভালোবাসায় ভরা আর নিচে এসব লেখা।

অতশী আর এক মুহুর্ত দেরী করলো না।দৌঁড়ে ইভানের রুমে চলে গেলো।কিন্তু গিয়ে দেখে ইভান কাজে ব্যস্ত।ফোনে কথা বলছে আর কি সব টাইপিং করছে ল্যাপটপ এ।অতশী তবুও চিঠিটা ইভানের সামনে রাখলো আর বললো এসব কি?কি লিখেছেন এসব?
ইভান কথা না বলে ইশারা দিয়ে বুঝিয়ে দিলো চিঠিটা উঠাও।অতশী তবুও ওঠালো না।ইভান তখন নিজেই হাত দিয়ে উঠিয়ে অতশী কে দিয়ে দিলো আর বললো,এখন যাও।ব্যস্ত আছি আমি।
–রাখেন আপনার ব্যস্ততা।আগে বলেন এসব কি?
ইভান তখন ফোনটা রেখে দিয়ে বললো, কি আবার?তোমার শাস্তির লিস্ট।
–এইভাবে কেউ লেখে কখনো?এগুলো মুখে বললেও তো হতো।
–মুখে বললে ভুলে যেতে সেজন্য।
অতশী তখন খামের উপর Love You Forever লেখাটা দেখিয়ে বললো এটা তাহলে কেনো লিখেছেন?কি দরকার ছিলো লেখার?
ইভান তখন বললো এট্রাকশনস বোঝো?এটা আকর্ষণের জন্য লিখেছি।যদি প্রথম পাতাতেই এসব লেখা থাকতো তাহলে কখনো খুলে দেখতে?কখনো পড়তে চিরকুট টা?
অতশী তখন বললো আপনি আমাকে ভাবেন টা কি?আপনি যেটা বলবেন সেটাই করতে হবে নাকি?করবো না আমি এসব কাজ?শুনবো না আপনার কোনো কথা।এই বলে অতশী রাগে গজগজ করতে করতে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।

অতশীর মুখ চোখের এমন অবস্থা দেখে মৌরি বুঝতে পারলো অতশী ভীষণ রেগে আছে।তার ভাই যে আসলে চাচ্ছে টা কি সত্যি সে বুঝতে পারছে না।মৌরি অতশীর রাগ ভাংগানোর জন্য বললো,ভাবি প্লিজ এভাবে রাগ করে থেকো না।আমার তো মনে হয় এতে তোমার খুশি হওয়ার কথা।
অতশী সেই কথা শুনে আরো বেশি রাগান্বিত হলো।এমনিতেই তার মন খারাপ, আর মৌরি বলছে খুশি হওয়ার কথা।
মৌরি তখন এগিয়ে এসে চিরকুট টা হাতে নিয়ে জোরে জোরে পড়তে লাগলো,
এক নাম্বার, আমার যাবতীয় ড্রেস আজ থেকে তুমি কাঁচবে।দুই নাম্বার আমার খাবার নিজের হাতে রান্না করবে।আর নিজেই সার্ভ করবে।তিন নাম্বার আমি যত রাতেই বাসায় ফিরি না কেনো জেগে থাকতে হবে।কখন কি দরকার লাগে সব তোমাকেই দিতে হবে।
অতশী মৌরিকে এভাবে পড়া দেখে চিরকুট টা কেড়ে নিলো।আর সেটা ছিঁড়ে ফেললো।

মৌরি তা দেখে বললো, কি করলে এটা?চিঠিটা ছিঁড়লে তুমি?এতো ভালোবাসা দিয়ে লেখা চিঠি কি করে নষ্ট করলে?
–প্লিজ ভাবি মজা করো না।আমার ভালো লাগছে না কিছু।তোমার ভাইয়া কিন্তু খুব অন্যায় করছে আমার সাথে।উনি যেসব শুরু করেছে এরকম কোনো স্বামী তার বউ এর উপর কখনোই করে না।আমি না হয় ভুল করেছি,যদিও সেটা নিজের ইচ্ছায় করি নি।তবুও উনি সেই কথাই বার বার বলছেন।উনি কিছুতেই সেটা বুঝতে চাইছেন না।

মৌরি তখন বললো,ভাবি,আমি ভাবতেছি অন্য আরেকটা কথা।ভাইয়া হঠাৎ এভাবে লিখতে গেলো কেনো?আমার মনে হয় কি,ভাইয়া তোমাকে তার কাছে কাছেই রাখতে চাচ্ছে।নিজের মুখে কি করে বলে সেজন্য টেকনিক করে এভাবে বলেছে।তুমি যদি ভাইয়ার সব কাজ করো তাহলে তো তোমাকে সবসময় ওর কাছেই থাকতে হবে।আর কাছাকাছি থাকা মানেই তো ভালোবাসাবাসি।
–রাখো তোমার ভালোবাসা।উনি ভালোবাসার মানুষ নন।কেমন যেনো রোবট রোবট মনে হয় ওনাকে।মনে হয় ভালোবাসার কোনো অনুভূতিই নেই ওনার ভিতর।এমন আজব মানুষ কে টিকিট কেটে সবার দেখা উচিত।
–ভালো যদি নাই বাসে তাহলে এতো ব্যস্ততার মাঝেও তোমাকে চিরকুট পাঠাতো না।ভাইয়া আসলেই তোমাকে ভালোবাসে।
–উনি যদি আমাকে সত্যি সত্যি ভালোবাসেন তাহলে নিজের মুখে কেনো বলেন না?সবসময় কাগজে লিখে আমার হাতে দেন কেনো?এটা কি ধরনের ভালোবাসা?
–ওটা ভাইয়ার একটা স্টাইল।নিজের মুখে বলার চাইতে সে কাগজে লিখেই বেশি শান্তি পায়।
–মানে?এর আগেও কি কাউকে এভাবে ভালোবাসার কথা লিখেছে?
–কি যে বলো না ভাবি?একজন কেই ভালোবাসার কথা বোঝাতে পারছে না,আর তুমি বলছো অন্যজনের কথা।আমাদের কেও মাঝে মাঝে কাগজে লিখে দেয় সেজন্য বললাম।

অতশী আর মৌরি গল্প করতেই ইভান আসলো রুমে।আর এসেই অতশী কে ধমক দিয়ে বললো,এখন কয় টা বাজে?এখন আমার খাওয়ার সময় ভুলে গেছো?যাও তাড়াতাড়ি খাবার রেডি করো।আর আমার রুমে নিয়ে যাবে।আমার হাতে কিন্তু সময় নেই।জলদি করো।
অতশী কোনো কথা না বলে চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো।
মৌরি তখন অতশীর গায়ে একটা টেলা দিয়ে বললো, যাও ভাবী।দাঁড়িয়ে থাকো না।প্লিজ ভাবি।একটু অপেক্ষা করো,একদিন তোমারও দিন আসবে।
অতশী সেই কথা শুনে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো।

অতশী চলে যাওয়ার সাথে সাথে মৌরি ইভানের কাছে এসে বললো,ভাইয়া এমন করছো কেনো অতশীর সাথে?ও ভীষণ মন খারাপ করে।কান্নাকাটিও করে।
ইভান কোনো উত্তর দিলো না।
মৌরি তখন বললো, আমার মনে হয় এখন সব মিটিয়ে নেওয়াই ভালো।তুমিও কষ্ট পাচ্ছো,মেয়েটাকেও কষ্ট দিচ্ছো,তাহলে কি দরকার এসব করার?
ইভান তখন বললো,স্বামীর জন্য রান্না করা,তার সব কাজকর্ম করা কি বউদের দায়িত্ব নয়?এসব কি ভালোবাসার বাহিরে?
–মানে কি?তার মানে আমি যেটা ভেবেছি সেটাই সত্যি?
ইভান কোনো উত্তর না দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
মৌরি তখন বললো ভাইয়া যাও না।তোমার সাথে আমার একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।
ইভান তখন দাঁড়িয়ে গেলো।
মৌরি তখন ইভানের হাত ধরে বললো, ভাইয়া আমি এখন যে প্রশ্ন করবো তার উত্তর দিতে হবে কেনো?
–কি প্রশ্ন?
–আমি যতদূর জানি অয়ন আর শুভ্র কারো লাশই খুঁজে পাওয়া যায় নি।তাহলে তোমরা কি করে সিওর হলে যে ওরা মারা গেছে?

ইভান কথা টা শোনার সাথে সাথে মৌরির হাত সরিয়ে দিয়ে বললো, আমার চোখের সামনে ওরা খুন হয়েছে,এটাই কি যথেষ্ট না?আর মৃত মানুষের লাশ দিয়ে কি করবে?আমার মুখের কথায় যথেষ্ট। আমি বলেছি সেজন্য ওরা মারা গিয়েছে।
–মানে কি বলছো এসব?কিছুই তো বুঝলাম না।
–বুঝতে হবে না।এই বলে ইভান চলে গেলো।

অন্যদিকে অতশী রান্না করছে।রিয়া সাহায্য করতে চাইলো কিন্তু অতশী বললো,লাগবে না কারো সাহায্য। আমি একাই পারবো।রিয়া তখন বললো, অন্তত এটা তো শুনুন উনি কি কি খায় আর কি কি খায় না।
–দরকার নেই।আজ থেকে উনি সবকিছু খাবেন।আমাকে যখন দায়িত্ব দিয়েছেনই তখন সব খেতে হবে ওনাকে।

ইভানের আজ একটা কনফারেন্স এ এটেন্ড হওয়ার কথা আছে।দিশান আর নিলয় সেটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য ফোন দিলো ইভান কে।ইভান জানালো তার মনে আছে।কনফারেন্স টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ইভান বাসার কাউকে বললো না এ ব্যাপারে।কারন বাসার মেম্বার রা অযথাই দুশ্চিন্তা করবে।
হঠাৎ ইভানের ভাই দুটি দৌঁড়ে এসে বললো, ভাইয়া আজ বিকেলে একটু ঘুরতে নিয়ে যাবে?অনেকদিন ধরে বাহিরে যাওয়া হয় না।
ইভান তখন বললো তার হাতে আজ মোটেও সময় নেই।সেজন্য ইশান আর ইমান মন খারাপ করে চলে গেলো।কারন তারা কখনোই ইভানের মুখে শোনে নি যে তার আজ সময় আছে।ইভান সব সময় এই কথাটাই বলে।

অতশীর রান্না রেডি।সে খাবার নিয়ে ইভানের রুমের দিকে আসলো।আর আসতেই দেখে ইশান আর ইমান মন খারাপ করে রুম থেকে বের হচ্ছে।অতশী জিজ্ঞেস করলে তারা বললো আপনি শুনে কি করবেন ম্যাম?আপনি কি আমাদের বাহিরে নিয়ে যেতে পারবেন?
অতশী তখন বললো কেনো পারবো না?অবশ্যই পারবো।
সেই কথা শুনে ইশান আর ইমান সেই খুশি!তারা সাথে সাথে অতশীর হাত তাদের হাতের উপর রেখে বললো,তাহলে কিন্তু কথা দিলেন ম্যাম।কথা যেনো খেলাপ না হয়।আজ তাহলে আমরা ঘুরতে যাচ্ছি কিন্তু।এই বলে খুশিতে দৌঁড়ে তাদের রুমে চলে গেলো।

অতশী খাবার নিয়ে ইভানের রুমে ঢুকলো।রুমে ঢুকে দেখে ইভান রেডি হয়ে বসে আছে।
অতশী তা দেখে বললো, আপনি আগেই রেডি হয়েছেন?তাহলে খাবার খাবেন কিভাবে?
–রেডি হলে কি খাবার খাওয়া যাবে না?
–যদি আবার শার্টে লেগে যায়?তখন তো আবার চেঞ্জ করতে হবে?
ইভান তখন বললো, যদি শার্ট একটু নোংরা হয় তাহলে খবর আছে।শাস্তি আরো বাড়িয়ে দেওয়া হবে।
অতশী ইভানের কথা শুনে হা করে তাকিয়ে রইলো। খাবার খাবেন উনি।শার্টে লাগলে সেটাও তার দোষ!এ কোন আজব কথা?
–ওভাবে হা করে তাকিয়ে আছো কেনো?খাবার গুলো রেখে তাড়াতাড়ি হাত ধুয়ে এসো।
–মানে?আপনি খাবেন, আর আমি হাত ধোবো?
–হ্যাঁ আমিই তো খাবো।কিন্তু খাওয়াবে তুমি।
–মানে?কি বলছেন এসব?
–হাতে একদম সময় নেই।কিছু কাজ বাকি আছে।তার উপর আবার আগেই রেডি হয়েছি।
–আপনি কি বলছেন?কিছুই তো বুঝছি না।
ইভান তখন অতশীর হাত থেকে খাবারগুলো নিয়ে টেবিলের উপর রাখলো।আর অতশীকে টেনে বেসিনের কাছে নিয়ে গেলো।আর নিজেই অতশীর হাত ধুঁয়ে দিলো।
অতশী শুধু ইভানের দিকে দেখছে।কারন কিছুক্ষনের জন্য সে অন্য জগতে হারিয়ে গিয়েছিলো।ইভান নিজে তার হাত ধুয়ে দিচ্ছে!এটা কি আসলেই ইভান!

ইভান তখন বললো আজ থেকে প্রতিদিন খাবারও খাইয়ে দিবে।এটা লিখতে ভুলে গিয়েছিলাম।
–মানে?আমি?
–মানে মানে না করে তাড়াতাড়ি খাইয়ে দাও।

অতশী ইভানের কথা শুনে ভয়ে ভয়ে ভাত নাড়াচাড়া করতে লাগলো।
ইভান তা দেখে বললো জলদি করো।দেরী হচ্ছে তো।
অতশী তখন ইভানের মুখে এক লোকমা খাবার তুলে দিলো।কিন্তু তার হাত কাঁপছে।ভীষণ জোরে জোরে কাঁপছে।
ইভান তা দেখে হাসতে লাগলো, আমি কি বাঘ না ভাল্লুক?এতো ভয় পাচ্ছো কেনো?
–না মানে?
–সবসময় এতো মানে মানে করো কেনো?নতুন কিছু বলতে পারো না?
এই বলে ইভান নিজেই অতশীর হাতের খাবার নিজের মুখে দিলো।আর বললো,চটপটে হতে হবে তোমাকে। সব কাজ তাড়াতাড়ি করতে হবে।কারণ আমার হাতে খুব কম সময় থাকে।
অতশী চুপ করে থাকলো।ইভান তখন বললো কি হলো দাও?এক লোকমাই শুধু খাবো নাকি?
অতশী সেই কথা শুনে আবার এক লোকমা তুলে দিলো ইভানের মুখে।
ইভান দুই এক লোকমা খেয়েই আর খেলো না।বেসিনে গিয়ে মুখ টা ধুয়ে নিলো।
অতশী এখনো ঘোরের মধ্যে আছে।তাকে এভাবে বসে থাকা দেখে ইভান বললো,কি হলো তোমার?এভাবে ভাতের প্লেট নিয়ে বসে আছো কেনো?
অতশী সেই কথা শুনে উঠতে ধরলো।ইভান তখন বললো, খাবার নষ্ট করা মোটেও ঠিক না।তুমি চাইলে বাকি খাবারটুকু খেতেই পারো।শুনেছি স্বামীর এঁটো খাবার দিলে ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়।যেহেতু আমাদের মধ্যে কোনো ভালোবাসা নেই।এতে যদি একটু উপকার হয়।তাহলে তো ভালোই।
অতশী সেই কথা শুনে ইভানের দিকে তাকালো।

–না না।তোমাকে কিন্তু খেতে বলছি না।যেটা শুনেছি সেটাই বললাম শুধু।তুমি ওগুলো ফেলে দিয়ে নতুন করে তুলে নাও।ভালোবাসা বাড়ানোর কোনো প্রয়োজন নেই আমার।ভালোবাসা দিয়ে কি করবো আমি?
এই বলে ইভান চলে গেলো।

#চলবে,