মনের কোণে পর্ব-২৪+২৫

0
298

#মনের_কোণে🥀
#আফনান_লারা
#পর্ব_২৪
.
নাবিল ঝাল খায় প্রচুর, এটা লিখি জানতোনা,কিন্তু গরম মশলাতে স্বাদ খারাপ হয়ে যাওয়ায় নাবিলের প্রথমে কাশি এসেছিল।পানি খেয়ে কাশি থামাতে তার চোখ লাল হয়ে গেছে।লিখি তো মনে করে বসে আছে ওরে ঝালে ধরেছে।
কিন্তু এক মিনিটের মাথায় নাবিল স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ায় সে তো অবাক।
কেউ জানতেই পারলোনা ও নুডুলসের বারোটা বাজিয়ে রেখেছিল।
নাবিল আস্তে করে বাটিটা সরিয়ে রেখেছে সবার নাগালের বাহিরে।কিন্তু এর মধ্য দিয়ে বাবুর হাতে পড়ে গেলো সেই নুডুলস।লোভ সামলাতে না পেরে টুকুস করে নিয়ে মুখে পুরে ফেলেছে সে।কিন্তু গরম মশলা বেশি হবার কারণে তার অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো।
সে আবার ঝাল খেতে পারেনা।সে কি কাশি,সে কি চেঁচামেচি!!
লিখি মুখে হাত দিয়ে দেখছে আর ভয়ে কাঁপছে।মিসেস সামিয়া জানলে তুলকালাম বাঁধাবে।

বাবু বলে দিলো নুডুলসে অতিমাত্রায় গরম মশলা পড়েছে।
সামিয়া সাথে সাথে আন্দাজ করে ফেললেন ঠিক কি ঘটছে এখানে।অগ্নি দৃষ্টিতে তিনি লিখিকে দেখছেন এখন।লিখি ভয়ে চুপসে আছে।
হঠাৎ তিনি উঠে দাঁড়িয়ে চলে গেলেন তার রুমে,যেতে যেতে বলে গেলেন লিখি যেন নতুন করে নুডুলস বানিয়ে তার রুমে দিয়ে যায়।
লিখি বুঝে গেছে তাকে আজ মনমত বকাঝকা করবে এই মহিলা।
ভয়ে ভয়ে নতুন করে নুডুলস বানিয়ে বাটি হাতে বাহিরে গিয়ে দাঁড়ালো মিসেস সামিয়ার রুমের।
তারপর আস্তে করে বলতে চাইছিল আসবো?তার আগেই সামিয়া ওকে দেখে বললেন আসতে।
ওর হাত থেকে নুডুলসের বাটি নিয়ে ঘুরিয়ে দেখলেন,এরপর মুখে দিয়ে বললেন,’স্বাদ ভালই।তবে আমার ছেলের জন্য বানানো নুডুলসের এই বেহাল দশা কেন?মনি কখনও খারাপ নুডুলস বানায়না।আমি নাহিদের বাটি থেকে নুডুলস খেয়েছি,আজকের নুডুলস দারুণ হয়েছে।তবে আমার নাবিলের নুডুলসের বাটিতে এত বেশি গরম মশলা কেন হলো?
দেখো লিখি!!তুমি নাবিলকে নিজের সমবয়সী ভাবলেও আমি তোমায় বলে দিই তুমি এখন থার্ড ইয়ারে পড়ছো,নাবিল চার বছর আগেই থার্ড ইয়ার পাশ করে গেছে।
সে তোমার চার বছরের বড়।তোমরা মোটেও সেম এইজের না।তোমার হাসবেন্ড হয় সে।
এসব ও সহ্য করলেও আমি তো এসব সইতে পারবোনা,তার চোখ লাল হওয়া দেখেই আমি বুঝে গেছি নুডুলসে সমস্যা আছে।এর আগেও তুমি নাবিলের সাথে বাচ্চাদের মতন ব্যবহার করেছো। আমি এমন পুত্রবধূ কখওনই চাইনি।
তুমি শিক্ষিত, বুদ্ধিমতী তবে সংসার জীবনের শিক্ষার অভাব আছে তোমার মাঝে।আমি তোমার খুঁত ধরছিনা,শুধু তোমায় বোঝাতে চাই আমার নাবিলের জন্য ভাল স্ত্রী হতে হবে তোমায়।এরকম বাচ্চামো আমার চোখ মেনে নিলেও জনাব অনাবিল কোনোদিন মানবেননা।তিনি সোজা কথার মানুষ এবং কঠোর।
সোজা মুখের উপর বলে দেবেন ডিভোর্স পেপারে সই করে দিতে।
তুমি যখন সবই ভাল পারো তবে কেন তোমার মাঝে এত চঞ্চলতা??
অনাবিল পরিবারের বড় বউয়ের এসব মানায় না,ছোট বউ হলে মানা যেতো।
তোমাকে বদলাতে হবে।আমি আর একদিন আছি এখানে,বেশিদিন থাকতে পারবোনা,তিনি সন্দেহ করবেন।আজ নয়ত কাল নয়ত এক মাস/ দুমাস পর তিনি জেনেই যাবেন নাবিল বিয়ে করেছে।তখন তিনি তোমায় দেখতে চাইবেন।এইসব দুষ্টুমি তার চোখের বি*ষ।তিনি এসব অপছন্দ করেন।আমি চাইনা তুমি তার থেকে অপমানিত হও।আমি চাই তিনি যেন তোমায় দেখেই বলে দেন নাবিল যাকে বিয়ে করেছে সে আসলেই তার যোগ্য’

লিখি মূর্তির মতন দাঁড়িয়ে আছে।কথাগুলো পর্দার ওপার থেকে নাবিল ও শুনেছে।তার খারাপ লাগছে,লিখির তো আরও খারাপ লাগার কথা।আজ পর্যন্ত লিখির সব চঞ্চলতাকে সে স্বাভাবিক ধরে নিয়েছে।তার এমনই মেয়ে পছন্দ ছিল,কিন্তু এটাও সত্যি বাবা এমন মেয়ে পছন্দ করেন না,চোখের সামনে সহ্য করা তো দূরের কথা।মা কখনও এত কঠোর হতেন না তাদের সাথে।কিন্তু বাইরের মানুষের কাছে তিনি অনেক কঠোর।
লিখির সাথেও তেমন হলেন।লিখির চোখে পানি ছলছল করছে।
কোনোমতে নুডুলসের বাটি নিয়ে চলে এসেছে। বাটিটা টেবিলে রেখে একা একা বেরিয়ে গেছে।কোথায় গেছে কেউ জানেনা।
নাবিল জানতোনা সে রাগ করে ঠিক কোথায় যাবে।ও ভেবেছে হয়ত বাসায় যাবে।কিন্তু তার ভুল ধারণা প্রমাণ হলো দুপুরের দিকে।সবাই দুপুরের খাবার যখন খেতে বসেছে তখন লিখির খোঁজ নেই দেখে মিসেস সামিয়া জানতে চাইলেন সে কোথায়।
নাবিল তখন তাদের বাসা থেকে এসেছিল।এসে বললো লিখি নাকি সেখানে নেই,কোথায় গেছে তাও জানেনা।
সামিয়া গম্ভীর গলায় বললেন,’এত রাগ ভালনা’
——
নাবিল মামার বাসায় আর ঢুকলোনা। কথাটা বলে বেরিয়ে গেছে ওকে খুঁজতে।তার ভুল হয়েছে তখন ওকে একা যেতে দেওয়া।এত বকা খেয়ে একটা মেয়ে কি করে ঠাণ্ডা থাকে তাও লিখির মতন একটা মেয়ের তো ঠাণ্ডা থাকারই কথানা।পুরো কলোনি হেঁটে এসেও লিখিকে সে পেলোনা কোথাও।এবার চিন্তা হলো ওর ভাইয়ার কথা ভেবে।ঐ ওসমান যদি একবার হাতের কাছে লিখিকে পায় তবে শেষ!!আর ছাড়বেনা।সোজা ওর বাবার কাছে নিয়ে যাবে।লিখি কেন যে একা বের হতে গেলো!!!
অনেকটা পথ হাঁটার পর সামনে গোলমাল বিঁধেছে দেখে ছুটে আসলো নাবিল দেখার জন্য।এসে দেখলো দূরে মাইক্রো বাস থামানো আর এখানে লিখি।ওর হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ওসমান।লিখি অনবরত কান্নাকাটি করছে আর বলছে সে যাবেনা।
নাবিল ওসমানের হাত থামিয়ে বললো,’খবরদার! ‘

‘তুমি সেই ছেলেটা না??পুলিশ!

নাবিল হ্যাঁ বা না কিছুই বললোনা।লিখিকে নিচ থেকে তুলে দাঁড় করালো ।লিখি কেঁদে কেঁদে চোখ মুখ ভাসিয়ে ফেলেছে।ভেজা চোখে নাবিলকে সে ঝাপসা দেখছিল,তাও আশার আলো দেখে মুখে হাসি ফুটলো তার।কান্নাজড়িত কণ্ঠস্বরে বললো,’আমি যাব না ভাইয়ার সাথে,আমাকে নিয়ে যান আপনি’

নাবিল ওর হাত ধরে কিছু বলতে যাবার আগেই ওসমান ওর হাত থামিয়ে বললো,’তুমি পুলিশ মানলাম, কিন্তু ও আমার বোন।ওকে নিয়ে যাওয়ার রাইট আমার আছে।এখানে পুলিশের তদারকি চলবেনা’

নাবিল ব্রু কুঁচকে বললো,’না রাইট নেই।ওকে আপনি নিয়ে যেতে পারবেন না যতক্ষণ না ও চাইবে।একজন সাবালিকার উপর জোর খাটানো যায়না’

‘যায়না নাকি যায় সেটা আমি দেখবোনা।তুমি পুলিশ বলে কি আমি বড় ভাইয়ের সামনে আইন বুঝাবে?তুমি তোমার কাজ করো।আমি আমার বোন নিয়ে যাই।তুমি পারলে বরং সাহায্য করো।
আমার এই বোন দেড় বছর পালিয়ে বাইরে -বাইরে ছিল।তোমরা তো খুঁজে দাওনি।এখন যখন পেয়েছি তখন এত কথা কিসের?নিজের চরকায় তেল দাও।’

কথাটা বলেই ওসমান এক টান দিলো লিখিকে।নাবিল আবারও পথ আটকে দাঁড়ালো।ওরা বিবাহিত এটা জানলে লঙ্কা কান্ড মতন অবস্থা সৃষ্টি হবে তাই নাবিল এই টপিক উঠায়নি।লিখিকে আবারও ওসমানের হাত থেকে ছাড়িয়ে ওর কানের কাছে ফিসফিস করে বললো,’দৌড়াবে যখন আমি বলবো

১….২…৩,দৌড়াও!!!’

নাবিল লিখির হাত ধরে সামনে যেদিকে দুচোখ যায় সেদিকে দৌড় মে*রেছে।আর পেছনে ফিরে তাকায়নি।লিখির ভাইয়া গাড়ীতে উঠেছে ধাওয়া করতে।নাবিল লিখিকে নিয়ে বুদ্ধি করে এলাকার বাহিরে বের হবার পর একটা চিকন গলিতে ঢুকে গেলো।ঐ গলিতে গাড়ী ঢুকবেনা বলে সবাই থেমে গেছে।
গাড়ী থেকে নেমে এবার তারা পায়ে হেঁটে ধাওয়া করলো।
——
গলি তো গলি,এমন গলি যে টিনের বাড়ি দুপাশে মাঝে একজন কোনোমতে হেঁটে যাবার মতন পথ।
লিখির ভাইয়া দুইটা বাড়ি খেয়েছেন মাথায়, এত বড় শরীর নিয়ে এই গলিতে ছুটতে গিয়ে।তার দলবলেও কম বাড়ি খায়নি।সবগুলা মোটা মোটা তাই ছুটতে গিয়ে শুধু বাড়ি খাচ্ছে।এত বাড়ি খেয়ে মাথা ফুলে গেছে কজনের।
নাবিল লিখিকে নিয়ে একটা টিনের ঘরে ঢুকে আলনার পেছনে লুকিয়ে পড়েছে।ওসমান আর তার দলবল ঐ টিনের ঘরের সামনে দিয়ে চলে গেলো অথচ ওদের দেখলোনা।জামাকাপড়ের পেছনে লুকিয়েছে দুজন।
যখন তারা বের হবে ঠিক সেসময়ে একটা যুগলকে দেখলো ঘরে ঢুকে ছিটকিনি লাগাতে।দেখে মনে হয় স্বামী- স্ত্রী তবে বিয়ে নতুন।
ছেলেটা ছিটকিনি লাগিয়ে মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরেছে।নাবিল ইয়া বড় হা করে তাকালো।লিখি লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।।
তারা এখনও জানেনি তাদের ঘরের ভেতর তারা বাদেও আরও মানুষ আছে এখানে।
শুধু জড়িয়ে ধরা যথেষ্ট ছিলনা,আরও কত কি ঘটে যাচ্ছিল।আরও ঘটতো! তখনই লিখি এক চিৎকার দিয়ে বললো থামতে।সেই তরুণ তরুণী হা করে তাকিয়ে রইলো আলনার দিকে।

নাবিল লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে লিখিকে সাথে করে বের হলো আলনার ওপার থেকে।
নাবিল বললো,’শুরুতেই সরি।আসলে আমরা গুণ্ডাদের হাত থেকে পালিয়ে এখানে লুকিয়েছিলাম।খারাপ ভাববেননা।আপনারা আপনাদের কাজ চালিয়ে যান,আমরা আসি।টাটা।হ্যাপি বাসর ঘর’

নাবিল লিখির হাত ধরে টুকুস করে ছিটকিনি খুলে বেরিয়ে গেলো।সেই তরুণ তরুণী থ মে*রে দাঁড়িয়ে আছে এখনও।কি ঘটলো চোখের সামনে,এরা কারা?কোথা থেকে এলো।কি জন্য লুকালো? সব মাথার উপর দিয়ে গেছে তাদের।পরে যখন হুশ আসলো দুজনের তখন দরজার কাছে গিয়ে ওদের দুজনের চলে যাওয়া দেখলো।নাবিল লিখিকে নিয়ে গলি থেকে বেরিয়েছে।এবার তারা বড় রাস্তায়।ওসমান আর তার দলবল কোথায় জানেনা তারা।আশেপাশে দেখা যাচ্ছেনা কিন্তু হঠাৎ করে যদি সামনে এসে পড়ে তাহলে তো বিপদ।
লিখি হাঁপিয়ে গেছে।সকালেও কিছু খায়নি আর এখনওনা।
নাবিলকে বললো তার খিধে পেয়েছে।
নাবিল ওর হাত ধরে একটা ছোটখাটো দোকান থেকে একটা জুস আর কেক কিনে দিয়ে যখন মানিব্যাগ থেকে টাকা বের করছিল তখন পাশেই ওসমানকে দেখলো।সে খেয়াল করেনি ওদের।সেও দোকানে এসেছে খাবার কিনতে।নাবিল টাকাটা বোয়ামের ওপর রেখে লিখির হাত ধরে চলে আসলো ওখান থেকে।দোকানের পেছন দিকটায় একটা পুকুর আর ঘাট। ওখানে লিখিকে বসতে বললো পাশে থাকা কাঠের চৌকিতে।এটা আপাতত সেফ জায়গা।ওসমানের দলবল কোনদিকে সেটা জানা মুশকিল।এখন পালাতে গেলে ওদের কারোর নজরে পড়ে যাবে।লিখি নিচে কাঠের চৌকিতে বসে কেক মুখে পুরে নাবিলকেও সাধলো।কিন্তু নাবিল তখন ওরা কেউ আসছেনা কিনা সেটা দেখছিল।
—-
বিকাল হয়ে গেছে,চারটা বাজে।
লিখি আর নাবিল দোকানের পেছন থেকে বেরিয়ে সামনেটা দেখতে দেখতে হাঁটছে।মনের ভেতর ভয় ঘুরলো যদি সামনে এসে যায়।এত ডে*ঞ্জা’রাস কেন!!
লিখির কথা এটা,নাবিল ওর কথায় তাচ্ছিল্য করে বললো,’আমার বাবার দল দেখলে হা’র্ট এ’টাক আসবে তোমার।বাবা আরও ডে*ঞ্জা’রা’স। এখন তোমার ভাই আমাদের পেয়েও হারালো আর বাবা হারিয়ে পেয়ে যেতো।বাবার ভাঁড়া করা লোকগুলো অনেক স্ট্রং।’

‘আচ্ছা আপনিও তো মনে হয় কিছু খাননি,কেক দুই পিস আছে এখনও।খাবেন?’

‘নাহ,বিপদে আমার খিধে পায়না।চলে যায়।তুমি ঐ দুটো পিস খেয়ে নাও।সামনে আর পাবেনা।যা দেখছি, মনে হয় আরও অনেকটা পথ ছুটতে হবে।এটা কোন এলাকায় এসে পড়েছি তাও বুঝতেছিনা!নেট ও কাজ করেনা যে গুগল ম্যাপ দেখে বের হবো।’

লিখি নাবিলের হাত থামিয়ে বললো,’প্লিজ এই দুটো পিস খান।আমি জানি আপনারও খিধে পেয়েছে’

‘না পায়নি।তুমি খাও নয়ত ফেলে দাও।’

লিখি গাল ফুলিয়ে সত্যি সত্যি ফেলে দিলো।ভাবলো নাবিল উঠিয়ে আনবে। তেমনটাই হলো।নাবিল উঠিয়ে এনে বললো,’খাবার ফেলে দিতে হয়না,বলেছি বলে তেমনটাই করবে?নাও হাতে রাখো।কেক দু-পিস হাতে রাখলে কি হবে তোমার?
এই যে এতসব হচ্ছে সব তোমার কারণে।কি দরকার ছিল জেদ করে একা বেড়িয়ে যাবার?’

‘আমাকে যে আপনার মা কত কি বললো সেগুলো জানেন?জীবনে আমার আব্বু ও আমার দুষ্টামি নিয়ে দুটো কথা শুনায়নি’

‘শুনেছি সব।এক দিক দিয়ে ভাল আর একদিক দিয়ে খারাপ লাগলো।যাই হোক,গুরুজনের কথা তেতো হলেও ভালোর জন্য হয়।যেমন নিমপাতা।তেতো তবে উপকারী।
আমার মা তোমায় অনেক ভালবাসবে,এটা তেমন বড় কিছুনা।দেখবে এখন ফিরে গেলে তোমায় নিজ হাতে খাইয়ে দেবে।হয়ত এখন টেনসনও করছে তোমার জন্য’
——
কথা বলতে বলতে তারা আরও দূরে চলে আসলো।এই এলাকার মানুষ গুলো অন্যরকম।সবার চোখ ওদের দিকে।
নিজেদের কেমন এলিয়েন মনে হলো লিখি নাবিলের।একটা বাচ্চাকে থামিয়ে নাবিল জানতে চাইলো দলবল নিয়ে কাউকে আসতে দেখেছে কিনা।ছেলেটা সঙ্গে সঙ্গে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো।।
নাবিল মাথা তুলে দেখলো ওসমান ছুটে আসছে দূর থেকে।।
চলবে♥

#মনের_কোণে🥀
#আফনান_লারা
#পর্ব_২৫
.
ওসমানকে তে’ড়ে আসতে দেখে নাবিল কিছু করার আগেই লিখি ওর হাত ধরে আবার ছুটলো।আবারও যেদিকে দুচোখ যায়।এখন বেঁচে যাবার একটাই উপায়,আর সেটা হলো গলিতে ঢুকে যাওয়া।
লিখি তাই দুবার না ভেবে গলিতে ঢুকে গেলো।ছুটতে ছুটতে আবারও সেই তরুণ তরুণীর ঘরের কাছে।তারা ওদের দেখে চিনলো সেকারণে সামান্য এগিয়ে গিয়ে ভেতরে নিয়ে আসলো ওদের।দরজা লাগিয়ে জানতে চাইলো ওরা কারা এবং কেনোই বা ওদের ধরতে চাইছে।
নাবিল আর লিখি তো হাঁপাতে হাঁপাতে শেষ।মেয়েটা উঠে পানি দিলো ওদের হাতে।
পানি খেয়ে হাঁপ ছাড়লো দুজন।পুরো ঘটনাটা খুলে বললো।
কি বুঝলো না বুঝলো,শুধু মাথা নাড়িয়ে গেলো তারা।
মেয়েটির নাম মর্জিনা আর ছেলেটির নাম রাকিব।
রাকিব রাজমিস্ত্রি আর মর্জিনা গার্মেন্টসে চাকরি করে।পালিয়ে বিয়ে দুজনের।দুজনেরই বয়স ১৮/১৮।একই বয়সের।
লিখি মুচকি হেসে বললো একই বয়সের বিয়েগুলো অনেক সুন্দর হয়।নাবিল ওর মুখে এক গাল হাসি দেখে বললো,’তুমি এত খুশি হও কেন?তোমার আর আমার বয়সের তফাৎ অনেক।’

তখন মর্জিনা লিখি আর নাবিলকে জিজ্ঞেস করলো চা খাবে কিনা
কারণ সে তখন চা বানাতে যাচ্ছিলো।লিখি হ্যাঁ বলে দিলো।আর নাবিল না করতে চাইলো।মায়ের হাজারটা কল এসেছে,ফোন সাইলেন্ট বলে নাবিল জানোলইনা,জানলেও ধরার তো সময় পেলোনা সে।।এবার মা রেগে আছেন ওর উপরও।ভয়ে ভয়ে কলব্যাক করলো নাবিল।

‘কোথায় তুমি?’

‘বাসার কাছেই’

‘লিখি কোথায়?’

‘আমার কাছে’

‘বাসায় কি ফিরবেনা দুজনে?আমি কাল সকালে চলে যাব’

‘ফিরবো কিন্তু একটা কাজে আটকা পড়েছি’

‘এই জায়গায় তোমার কি কাজ থাকতে পারে?’

‘এসে বলি?’

নাবিল লাইনটা কেটে দিল আর কিছু বলবার ভয়ে।মাকে তো আর বলা যায়না যে লিখির ভাই দলবল নিয়ে অপেক্ষা করছে বাইরে।
লিখি তখন টিনের বেড়ার ফুটো দিয়ে দেখছিল ওর ভাইয়া কোথায়।
দেখলো সামনে ঘুরঘুর করছে।ও পা টিপে টিপে আবার নাবিলের কাছে এসে টুল টেনে বসলো।নাবিল ফোনে গেমস খেলছে।এত সিরিয়াস একটা মূহুর্তে সে এত স্বাভাবিক এবং শান্ত কিভাবে সেটা লিখির মাথায় ধরেনা।কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলো এর কারণ কি।নাবিল সোজা কথায় বলে দিলো তার বাবার ভাঁড়া করা লোক দেখলে যেন এ কথা আবার জিজ্ঞেস করে।

লিখি অংক কষাকষিতে মাথায় হাত দিয়ে ফেললো।নাবিলের কিছু কথায় হাজারটা অংকের সূত্র লুকিয়ে থাকে।মনে হয় ম্যাথমেটিক্সের স্টুডেন্ট।

‘ঠিক ধরেছো।অনার্স ফ্রম ম্যাথমেটিক্স। ‘

লিখি গালে হাত রেখে নাবিলের দিকে চেয়ে রইলো,
আন্দাজ গুলো কেমন সত্যি হয়ে যায়।মর্জিনা চায়ের কাপ এনে ওদের সামনে রেখেছে।
ছোট সাইজের কাপ।তিন চুমুকে চা শেষ হবে,তবে কালারটা দারুণ।তাছাড়া কাপে গোলাপ ফুলের ডিজাইন করা।
পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে গেলো।আম্মুর শো কেসে এই কাপ দেখা যেতো সেই ছোট্ট বেলায় দেখা হতো।এখন আর এই ডিজাইন পাওয়া যায়না।পেলেও কম দামে।
নাবিল তার চা শেষ করে দরজাটা হালকা খুলে বের হতেই দেখলো সামনে চায়ের দোকানে ওসমান আর তার লোকজন সবাই আলোচনা সভা বসিয়েছে।তাড়াহুড়ো করে ও দরজাটা আবার লাগিয়ে ফেললো।এরা মনেহয় এই রাতে আর যাবেনা।এখানেই বসে পাহারা দিবে।
—–
মর্জিনাদের ঘরে ২টা রুম।একটাতে তারা দুজন ঘুমায় আর আরেকটাতে চৌকি আছে।বারতি কেউ আসলে খাটে মেহমানদের শুতে দিয়ে তারা পাশের রুমে চৌকিতে শোয়।তাই আজ তারা ঠিক করলো নাবিল আর লিখিকে খাটে শুতে দিবে।তার আগে তো রাতে কিছু খেতে দিতে হবে ওদের।
এদিকে লিখি খিধায় নাবিলের হাতে কপাল চাপড়াচ্ছে।নাবিল ফিসফিস করে বলছে যেন বুঝতে না দেয় ওদের।ওদিকে ওরা ভাবছে দেখে মনে হয় বড়লোকের ছেলেমেয়ে। রাতে তাদের কি খেতে দিবে।রাকিব বাজারে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছিলো।
নাবিল এই কথা শুনে ফেললো।ফোন টিপতে টিপতে বললো,’খাবার অর্ডার করে দিচ্ছি। আজকে রাতে আমার তরফ থেকে আপনাদের ট্রিট।’

ওরা দুজন প্রথমে লজ্জা পেলো।বারবার মানা করছিল কিন্তু পরে রাজি হলো।নাবিল রাতের খাবার অর্ডার করেছে মোট চারজনের জন্য।
এবার ঝামেলা হলো খাবার কে আনতে যাবে।নাবিল শেষে বুদ্ধি করে আগেই টাকাটা বিকাশে পে করে বলে দিয়েছে ঘরের সামনে রেখে চলে যেতে।
ঘর খুঁজতে ডেলিভারি ম্যানের অনেক দেরি হয়েছে।শেষে দরজা সামান্য খুলে নাবিল খুশি হয়ে তাকে বকসিস ও দিলো।লিখির ভাই ঐ চায়ের দোকানে বসে হাই তুলছিল তখন।ঐ রোড দিয়ে কলোনিতে ঢুকার গেট পড়ে। এমন জায়গায় বসেছে তারা, যে দুই জায়গা দিয়ে ওরা আ*টক হয়ে আছে।

মর্জিনার একটা দিনের কথা মনে পড়ে গেলো।সেদিন ছিল তার আর রাকিবের দেখা হওয়ার প্রথম দিন।কাঠফাটা রোদের ছটাকে সবাই যখন ঠাণ্ডা আখের রস কিংবা এলোভেরা শরবত খেতে রাস্তায় ভীড় জমাচ্ছিল তখন তাদের দুজনের সাক্ষাৎ হয় বড় রাস্তার মোড়ে।
মাথার উপর রাগী সূর্য থাকার পরেও তাদের দুটি মনে বইছিল প্রেমের হাওয়া।শীতল হাতের তালুর পরশে মর্জিনা মাথা নিচু করে বলছিল সে খালি আইস্ক্রিম খাবে।কিন্তু রাকিব তো নাছোড়বান্দা।সে অনেক টাকা জমিয়েছে মর্জিনাকে ভাল একটা রেস্টুরেন্টে খেতে নিয়ে যাবে বলে।বড় রুটির মতন দেখতে,ঐ যে পিজ্জা খাওয়াবে।গুনে গুনে এক হাজার টাকা জমিয়েছে এইটা খাওয়ার জন্য।একেবারে বড় সাইজেরটা অর্ডার করবে,এক মাস আগে দাম জেনে নিয়েছিল।মর্জিনা তো দাম শুনে চলেই আসছিল তাও রাকিব জোর করে ধরে রাখলো।
পিজ্জা আনা হলো।কিন্তু মর্জিনার মন খারাপ
এতগুলো টাকা দিয়ে কত কি কাজ হতো আর বো’কাটা কি করে ফেললো।
তাও পরে রাকিবের জোরাজুরিতে মুখে দিলো পিজ্জার টুকরো।সেটার দারুণ স্বাদ পেয়ে বললো বাকিটা রাকিবের মা বোনের জন্য নিয়ে যেতে।
—–
আজ আবার নাবিলের অর্ডার করা খাবারগুলো দেখে ঐদিনটার কথা দুজনের একসাথে মনে পড়ে গেলো।
রাতের এগারোটার সময় ও ওসমানের কোনো নড়চড় না দেখে নাবিল আর লিখি শেষে ঠিক করলো আজ রাতটা এখানেই থেকে যাবে।
মর্জিনা তাদের খাটে নতুন বিছানার চাদর বিছিয়ে নাবিল আর লিখিকে শুতে বলে চলে গেছে দুজনে পাশের রুমে।
লিখি মশা মা*রতে মা*রতে শেষ।রাকিব এর ভিতরে কয়েল জ্বালিয়ে বললো নতুন সংসার।এখনও মশারী কেনা হয়নি।কয়েল জ্বালিয়ে রাত পার করে।এক রাতে দুইটা কয়েল লাগে।
কয়েল জ্বালিয়ে সে তাড়াহুড়া করে চলে গেছে।লিখি এবার শান্তির দম ফেলে শুয়েছে কিন্তু নাবিলের চোখে ঘুম নেই।সে মায়ের চিন্তায় বিভোর।মা তো রেগে আ’গুন হয়ে থাকার কথা।
কি করে যে তাকে বোঝাবে।সকালে হয়ত গিয়ে তার দেখাও পাবেনা তাতে আরও রেগে যাবে মা।লিখি নাবিলের গায়ের সাথে লেগে ঘুমাচ্ছে আজ।খাটের শেষ প্রান্তে টিন।টিনে হাত পা বার বার লাগছিল বলে সে একটু নাবিলের কাছে ঘেঁষে শুয়েছে।খাটটা ভীষণ ছোট বলে এত কষ্ট হচ্ছে ওদের।
নাবিল লিখির ছোঁয়া পাওয়ায় চোখে যা ঘুম ছিল ওর সেটাও ভেগে গেছে।হা করে শুধু লিখির মুখটা দেখে সে।এ ছাড়া উপায় নেই।
কোথায় মাঝে ইয়া বড় বালিশ রেখে ঘুমাতো দুজন আর আজ গায়ে লেগে ঘুমাচ্ছে।একটা ছোট খাট আর দেয়াল টিনের হওয়ায় সব বদলে গেলো মূহুর্তেই।
আলো নেভানো।বাইরে বড় দালানের আলো এসে টিনের চালের ফাঁক দিয়ে ঘরে ঢুকছে।
নাবিল হেলান দিয়ে বসে ছিল।লিখি ঘুমে তখন।এরকম অশান্তিতে ও কি করে ঘুমাচ্ছে একবার জানতে ইচ্ছা হয়।রংপুরের ফুটপাতেও শান্তিতে ঘুমিয়ে ছিল এই মেয়ে।ঘুমের রাণী।
হাত নিয়ে ওর গাল টিপে দিলো নাবিল।লিখিকে কেমন গলুমলু লাগছিল।গালটাকে বালিশে রেখে তার তলায় দুহাত ভাঁজ করে রেখেছিল।গাল টিপে দেওয়ায় ও চোখ বড় করে তাকালো হঠাৎ।ঘুমের ঘোর কাটেনি তখনও।আস্তে করে বললো,’ভাইয়া এসে গেছে?’

“না”

‘তবে কি হয়েছে?’

‘তোমার গাল টানতে ইচ্ছে হলো,পূরন করলাম’

লিখি বুঝলো কি বুঝলোনা।মাথাটা ঠাস করে আবারও বালিশে রেখে সে ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো।এবার নাবিলের চোখটা ঝাপসা ঝাপসা লাগলো।তারও ঘুম পাচ্ছে।তাই আর কোনো বারতি চিন্তা না করে সেও শুয়ে পড়েছে।
——
রাত ২টার কাছাকাছি সময়ে লিখি হঠাৎ করে জেগে গেলো।কাদের যেন বা’জে বা’জে কথা শোনা যায়।উঠে বসে শোনার চেষ্টা করলো সে।মর্জিনাদের বাড়ির পাশে বসে কারা যেন কথার আসর জমিয়েছে।।
কিসব মেয়েদের নিয়ে আ’জে বা*জে কথাবার্তা।নাবিলকে উঠানো দরকার কিন্তু সে এগুলো শুনলে কি অবস্থা হবে তখন।তাছাড়া ওরা তো বাড়ির পাশেই বসেছে।ওকে তো আর বলছেনা তাই আবারও শুয়ে পড়লো।
কিন্তু লোকগুলোর আওয়াজ এত জোরে আসছিল তার আর ঘুম আসবেনা মনে হয়।উঠে বসে নাবিলের মুখ চেয়ে আছে সে এখন।এতক্ষণ নাবিল বসে ছিল আর এখন সে।নাবিল কি সুন্দর ঘুমাচ্ছে।লিখি গালে হাত দিয়ে বসে বসে বা’জে কথা শুনে যাচ্ছে।
“লোকগুলোর কি আর কোনো কাজ নেই নাকি?এত বাজে কেনোই বা বলছে?প্রতি রাতে এমন করে নাকি?
চেহারা দেখলে জমপেশ মা*র মে*রে ঠিক করে দিতাম যদিও এই গভীর রাতে এসবের সাহস কুলাচ্ছেনা।উনাকে জ্বালাবো?যদি সকালের মতন প্রতিশোধ নেয়?না থাক,ঘুমাক।’

কি মনে করে লিখির চোখ গেলো নাবিলের ফোনের দিকে।মিসেস সামিয়া কল করেই যাচ্ছেন।লিখি ফোনটা নিয়ে বিছানা ছেড়ে নামলো।ধরবে কি ধরবেনা তাই ভাবছে।শেষে ধরেই ফেললো।

সালাম শুনে মিসেস সামিয়া বুঝলেন এটা লিখি।সালাম নিয়ে তিনি জানতে চাইলেন তারা কোথায়,এখনও কেন আসছেনা।

‘আন্টি আমি আপনাকে সবটা বলছি।আপনি মন দিয়ে শুনুন’

‘বলো,তবে লজিক ছাড়া কিছু বলবেনা।’

‘তো শুনুন,প্রথমে উনি আমাকে পেয়েছিলেন কলোনিতে কিন্তু আমার বড় ভাইয়া তখন আমায় টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছিল বাসার দিকে।ভাইয়া জানেন না আমার যে বিয়ে হয়েছে,জানলে আরও বিপদ।আসলে আমার পরিবার আপনাদের পরিবারেরই মতন।পাওয়ারফুল।
আপনারা যেমন রগচটা আমার পরিবারের প্রতিটা মানুষ ও তেমন,শুধু আমি বাদে আর কি।’

সামিয়া চিন্তিত হয়ে বললেন তারপর কি হয়েছে সেটা বলতে।

‘তারপর আপনার ছেলে আমার হাত ধরে দিছে এক দৌড়।সেই দৌড়ে দৌড়ে এখন আমরা কলোনির বাইরে একটা এলাকার মাঝের একটা ঘরে ঘুমাচ্ছি। ভাইয়া বাহিরে পাহারা দিচ্ছে।’

‘তবে তোমরা এই ঝা’মেলা থেকে বের হবে কি করে?’

‘আপনি শুধু আমার একটা কাজ করেন। আপনার ছেলের আব্বুকে বলেন তার কিছু ভাঁড়া করা লোক এই এলাকায় পাঠাতে।তিনি আসলে তো আরও জোস হতো।
তারপর গু*জব ছড়াবেন যে নাবিল এখানে আশেপাশে আছে কিন্তু এই ছেলেগুলো তাকে খুঁজছে মা*রার জন্য।তারপর আপনার ছেলের আব্বু তো যাবে খেঁ*পে।কি!! এত বড় সাহস আমার ছেলেকে মা*রতে চায়!!
তারপর দু গ্রুপের সং*ঘ’র্ষ হবে মাঝখান দিয়ে আমি আর আপনার ছেলে আমাদের বাসায় চলে যাব।আপনি ও ওখানে আসিয়েন।আপাতত মামার বাসা সেফ না আমাদের জন্য’

‘তোমার আইডিয়া ক্ষেত মনে হলেও মনে হয় কাজে দেবে।আচ্ছা আমি সকালে চেষ্টা করবো।এখন ঘুমাও।আর একটা কথা’

‘কি?’

‘আমার ছেলের আব্বু তোমার শ্বশুর হয়।শ্বশুর বলবা।আমার ছেলের আব্বু আবার কেমন শোনা যায়?’

‘ওপস সরি।আচ্ছা ঠিক আছে।আর সকালের জন্য আমায় মাফ করে দিবেন,আপনার ছেলেকে আর গরম মশলা দিয়ে জ্বালাবো না,(মরিচ দিয়ে জ্বালাবো)’

‘শেষে কি বললে?’

‘ঐ যে জ্বালাবো না’

‘ আচ্ছা,রাখছি।’

লিখি খুশি হয়ে পেছনে তাকাতেই দেখলো নাবিল কোমড়ে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে।

‘কি আলাপ করলে শাশুড়ির সাথে?’

‘আপনাকে বলবো কেন?এটা সিক্রেট। এই পল্লী থেকে বের হতে পারার টেকনিক শিখিয়ে দিলাম ওনাকে।কাল শ্বশুর শাশুড়ির সাহায্যে আমরা বেঁচে যাবো।’

নাবিল বুঝলোনা।তবে লিখির বুদ্ধি মানে ক্ষেত তবে চলনসই এটা সে জানে।তাই নিশ্চিত হয়ে আবার বালিশে মাথা রাখলো।

‘এই আপনি কি বললেন?’

‘কি বললাম?’

‘আমার আইডিয়া ক্ষেত?ক্ষেতে ধান চাষ হয়না?তেমনি আমার আইডিয়া দিয়েও অনেক কিছু অসাধ্য সাধন করা যায়।আপনার ফোন আমি ব্যাক করেছি হুহ।’

‘ক্ষেত মানে খারাপ এটা কখন বললাম?’

চলবে♥