#সেই মেয়েটার উপাখ্যান
#পর্ব ৫৩
সুমন মাঠ থেকে ফিরে তোয়ালে দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে ক্লাবের বাগানে এসে দাঁড়ালো, মালী সুখময় তখন সেখানে জল দিচ্ছিলো। সুমন কে দেখেই বললো,
তোমার একটা ফোন এসেছে বেশ কয়েক বার, একটা মেয়ে তোমাকে চাইছিলো, বলছিলো খুব জরুরী দরকার! তুমি মাঠে ছিলে তাই ডাকতে পারিনি!
সুমন একটু অন্য মনস্ক হলো, মা আর সোমা ছাড়া তাকে আজ পর্যন্ত ক্লাবের নম্বরে কেউ ফোন করেনি, এমনকি অদ্বিতীয়াও নয়। সেতো নিজেই দাদুর ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকে, নিজের বাড়ি থেকে ফোন করার ক্ষমতা তার ছিলো না, আর বুথ থেকে ফোন করার কোনো দরকার পড়েনি কখনো। আজ তাহলে কে করলো! তার অন্যমনস্কতার মাঝেই আবার ফোন বাজতে লাগলো, সুখময় দা ইশারা করলো,
যাও, গিয়ে দেখো! তোমারই হবে মনে হয়!
সুমন দৌড়ে গিয়ে ফোন তুললো,
হ্যালো, কে বলছেন?
আমি অদ্বিতীয়া!
সুমন খুশি হলো, নিজের খুশি না চেপে রেখেই উচ্ছ্বসিত গলায় বললো,
বলো! রাগ কমেছে? আমার কথা মনে পড়লো তাহলে!
আমার তোমার সঙ্গে কিছু কথা ছিলো, একবার দেখা করতে চাই! পারবে?
অদ্বিতীয়ার ম্রিয়মাণ গলা শুনে সুমন চমকে উঠলো,
হ্যাঁ! পারবো না কেনো!!কখন দেখা করতে হবে বলো? কিন্তু তোমার কি হয়েছে অদ্বিতীয়া? এরকম গলায় কথা বলছো কেনো?
অদ্বিতীয়া হাসলো,
তুমি ক্লাবেই থাকো, আমি আসছি! দেখা করেই বলি নাহয়!
কিছুক্ষনের মধ্যেই ক্লাবের সামনে ট্যাক্সি থেকে নামলো অদ্বিতীয়া, সুমন তাকে দেখেই বাইকে স্টার্ট দিলো, নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে সুমন হাসলো,
বলো, এবার কি বলবে! মাথাটা বড্ড গরম তোমার! এর আগে তুমিই বলেছিলে আগে সরি বললে তুমি আর আমার ওপরে রাগ দেখাবে না!
তার আগে আমাকে একটা প্রশ্নের উত্তর দাও, তুমি ক্লাবে এসেছো কেনো? তোমার পা ঠিক হয়ে গেছে?
অদ্বিতীয়ার কথায় সুমন একটু থতমত খেলো,
না, না, এখনও খুব ঠিক হয়নি, তবে আর বাড়িতে বসে থাকতে ভালো লাগছিলো না, তাই আস্তে আস্তে চলে এলাম! কিন্তু তুমি বলতো তুমি কি করে জানলে আমি ক্লাবে আছি? এখানের নম্বরে ফোন করলে কেনো?
অদ্বিতীয়া মাথা নাড়লো,
আমি জানতাম না তুমি ক্লাবে এসেছো! ছোট কার কাছ থেকে তোমার বাড়ির ঠিকানা জেনে একটা ট্যাক্সি নিয়ে ওখানেই গিয়েছিলাম, গিয়ে দেখলাম দরজায় তালা! তখন ভাবলাম বুথ থেকে ক্লাবের নম্বরেই একটা ফোন করে দেখি!
সুমন অবাক হলো, মুচকি হেসে বললো,
ওরে বাবা! তুমি একা একা ট্যাক্সি নিয়ে গিয়েছিলে, আবার আর একটা ট্যাক্সি তে এখানে এলে! তুমি আগে কোনোদিনও একা তো বাড়ি থেকেই বেরও নি! বেশ স্বাবলম্বী হয়ে গেছো তো! তোমার দাদু রাজি হলেন? আর ওই যে তোমার হবু বর শুভ, সে কি বলছে? সে তোমাকে ছাড়লো!
অদ্বিতীয়া গলা শক্ত করলো,
প্লিজ! এখন এই সব ভালো লাগছে না সুমন! আমি তোমাকে একটা দরকারী কথা বলতে এসেছিলাম, আমাদের বিয়েটা মনে হয় আর সম্ভব হবে না!
সুমন অবাক হয়ে তাকালো,
যাহ শালা! এ আবার কি! আমি কি ফ্যালনা নাকি! একবার করবো, একবার করবো না! শুভর মতো ইঞ্জিনিয়ার না হতে পারি, তবে আমিও সুমন ব্যানার্জি ভাই! তুমি আমাকে পাত্তা না দিলেও আমাকে পেছনে কতো মেয়ে ঘুরঘুর করে তুমি জানো!
অদ্বিতীয়া ম্লান মুখে তাকালো,
আমি তোমার সঙ্গে মজা করছি না! বিশ্বাস করো! আমি খুব জরুরী কথা বলতে এসেছি!
সুমন গুছিয়ে বসলো, মুচকি হেসে বললো,
বলো, কি এমন জরুরী ব্যাপার যে বিয়েই ক্যান্সেল করে দিচ্ছ!
কাল একটা কথা জানলাম, আমি আসলে সান্যাল বাড়ির কেউ নই! আমার কোনো বংশ পরিচয় নেই! এই যে তুমি বলছিলে না দাদুভাই আমাকে একা ছাড়লেন কিনা! আসলে এটা জানার পরে আমার কোনো ব্যাপারেই ওনার কোনো উৎসাহ নেই আর!
সুমন একদৃষ্টে অদ্বিতীয়ার দিকে তাকিয়ে ছিলো, তাকে কোনো কথা না বলতে দেখে অদ্বিতীয়া অবাক হলো,
তুমি বোধহয় বিশ্বাস করলে না! কিন্তু আমি সত্যি বলছি, যা বলছি তার প্রতিটা অক্ষর ঠিক! আমার বাবা মানে যাকে আমি এতকাল বাবা বলেই জেনেছি, তিনি আমার মাকে অন্তঃস্বত্তা অবস্থায় বাড়ি নিয়ে এসেছিলেন বলে জানতে পারলাম এখন! আমার সত্যি কোনো পরিচয় নেই সুমন, এসব কথা জানার পরে তোমার আমাকে দেখে খুব ঘেন্না হচ্ছে নিশ্চয়ই?
সুমন অদ্বিতীয়ার চোখের দিকে তাকালো,
আজ যদি এটা আমার ক্ষেত্রে হতো, তাহলে কি তোমার আমাকে দেখে ঘেন্না হতো অদ্বিতীয়া?
অদ্বিতীয়া অন্য মনস্ক ভঙ্গিতে তাকালো,
জানিনা! আসলে এরকমও যে হয় কখনো তো ভাবিনি! কিন্তু এখন নিজের হয়েছে বলে ভাবতে হচ্ছে!
সুমন এগিয়ে এসে অদ্বিতীয়ার হাত নিজের দু হাতে ধরে বললো,
এতদিন তো তুমি এটুকু অন্তত জানতে যে আমি বংশ মর্যাদায় তোমাদের মতো নই, কোনোদিনও হতেও পারবো না সেটা, তাও তো আমার সঙ্গে তোমার সম্পর্কে এই সমস্যাগুলো কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি! আজ নিজের ক্ষেত্রে সেগুলো কে নিয়ে এতো ভাবছো কেনো? তুমি যেমন তেমনই থাকবে, বাবা, মায়ের পরিচয় না থাকলে কি তুমি অন্য কেউ হয়ে যাবে?
অদ্বিতীয়া অবাক চোখে তাকালো,
এই কথাগুলো শুনেও তোমার কোনো পরিবর্তন হলো না! এসব কথা জানার পরেও কি তুমি আমাকে বিয়ে করার কথা ভাবছো?
সুমন হেসে ফেললো,
যাহ শালা! সান্যাল পদবী না থাকলেই কি তুমি অন্য মানুষ হয়ে যাবে নাকি! তুমি তো অদ্বিতীয়াই থাকবে! এর সঙ্গে বিয়ে না করার কি কারণ? আর আমি তো এর মধ্যে তোমাকে অদ্বিতীয়া ব্যানার্জি শুনতে কেমন লাগবে বলে মনে মনে কতো ভেবেছি!
অদ্বিতীয়া কান্না ভেজা চোখে তাকালো,
তুমি আমার জন্যে অনেকের কাছে ছোটো হয়ে যাবে সুমন! আস্তে আস্তে এই কথাগুলো অনেকেই জেনে যাবে!
সুমন তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে হাত নাড়লো,
তাতে কি? তোমার দাদুর মতো আমার অতো সম্মান নেই! আমি ভাই ওসব নিয়ে বেশি ভাবার সময় পাইনা, আমার আরো অনেক কাজ থাকে!
অদ্বিতীয়া বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষন পরে রমা চায়ের কাপ হাতে সুকান্তর ঘরে এলেন, টেবিলে বসে থাকা সুকান্তর পাশে দাঁড়িয়ে বললেন,
অদ্বিতীয়া বেরিয়েছে, সম্ভবত সুমনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছে। বলে গেছে তোমাকে?
সুকান্ত ঘাড় কাত করলেন,
হ্যাঁ, বলে গেছে! আমি প্রথমে ভেবেছিলাম ওকে পৌঁছে দেবো, তারপরে ভাবলাম আস্তে আস্তে নিজেই শিখুক! বাবা তো ওকে স্বাবলম্বী হতে দেননি কখনো!
রমা চেয়ার টেনে চায়ের কাপ হাতে বসলেন,
তুমি এবার কি করবে? বাড়ি ফিরে যাবে, নাকি এখানেই থাকবে?
সুকান্ত হাসলেন,
বল বাবার কোর্টে ঠেলে দিয়েছি, দেখা যাক উনি কি করেন! পিয়া কে দত্তক নেওয়ার পরেও যদি আমার সঙ্গে সম্বন্ধ রাখতে চান তাহলে ফিরবো! ওনাদের প্রতিও কিছু দায়িত্ব আছে আমার, দাদার ওপরে কোনো ভরসা নেই! তাছাড়া ও যা করেছে তাতে বাবা ওকে এমনই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেবেন হয়তো, এবার আর নিজের রক্ত বলে রেয়াত করবেন না! আমার শুধু বৌদির জন্যে খারাপ লাগছে, ওনাকে বিনা দোষে অন্যের অপরাধের শাস্তি পেতে হবে!
তোমার বৌদি আমাকে আজ প্রথম বার ফোন করেছিলেন, অদ্বিতীয়ার খবর জানতে চাইছিলেন! কথা বলে বেশ ভালো লাগলো। উনিই বললেন যে তোমার বাবা আপাতত কাউকেই বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার কথা ভাবছেন না!
সুকান্ত মৃদু হাসলেন,
বার করে দিলেই বা ক্ষতি কি! তোমার আশ্রম যেখানে আছে সেখানে বৌদির থাকা নিয়ে কোনো চিন্তাই করছিনা! বৌদিও করেন নি নিশ্চয়ই, তাঁর সঙ্গে তোমার কথা হয়েছিলো বলেই তো তিনি এতবড়ো কাজ করতে দুবার ভাবেন নি! তবে তুমি মিথ্যে বলতে খুব বেশি পটু নয় রমা, তোমাকে আমি অনেক বছর চিনি! প্রথম বার ফোনে কথা হলো এটা আলাদা করে বলার দরকার ছিলো না!
রমা চমকে তাকালেন, হাতে ধরা কাপ থেকে চা ছলকে উঠে মেঝেতে পড়লো, সুকান্ত সেদিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলেন,
তুমি ভাবলে কি করে তোমার হাতের লেখা আমি চিনতে পারবো না? যে হাতের লেখায় চিঠি পেয়েছি এতো বছর ধরে, সেই হাতের লেখা কার সেটা বুঝতে কি আমার বিন্দুমাত্র সময় লাগবে?
রমা মাথা নিচু করলেন,
আমি করতে চাইনি প্রথমে, বৌদি আমায় জোর করলেন! আমি বৌদি আর অদ্বিতীয়া দুজনের ভবিষ্যত নিয়েই চিন্তিত ছিলাম! ওনাকে অনেক বুঝিয়েছিলাম, কিন্তু উনি বললেন এটা জানিয়ে দেওয়া ছাড়া ওনার কাছে আর কোনো পথ নেই!
জানি, তুমি নিজে থেকে কিছু করো নি! চিঠিতে যা লেখা আছে সেসব কথা তোমার পক্ষে কখনোই জানা সম্ভব ছিলো না! আমি বৌদির সঙ্গে পরে কথা বলবো, আমারও জানার আছে উনি কেনো এতবড়ো বিপদের মুখে এতকাল পরে নিজেকে ঠেলে দিলেন!
আজ জীবনে প্রথম বার সুমনের বাইকের পেছনে নির্দ্বিধায় উঠে বসেছিলো অদ্বিতীয়া, কেউ দেখে ফেললে কি হবে সেই চিন্তা ছিলো না। সুমন বাইক চালাতে চালাতে সামনের আয়নার মধ্যে দিয়ে তাকালো,
এতক্ষনে বেশ খুশি খুশি লাগছে দেখছি, একটু আগেই তো বিয়েই ভেঙে দিচ্ছিলে একদম!
অদ্বিতীয়া খুশির হাসি হাসলো,
একটা অদ্ভুত আনন্দ হচ্ছে জানো! মুক্তির আনন্দ! তোমাকেও কতো বার বলেছি দমবন্ধ লাগতো আমার ওখানে! কাল ওখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় জানি না কেনো একটুও দুঃখ হয়নি! আমার যে দুজন প্রিয় মানুষ, তার মধ্যে ছোট কা তো সঙ্গেই ছিলো আর ছোটো মা আমাকে বলেছে যে উনি বড়দির আশ্রমে এসেই থাকবেন! বাকি ছিল শুধু তোমার মুখোমুখি হওয়া, সেটা যে এতো সহজ হবে ভাবিনি! এই মুহূর্তে আর নিজের কোনো কষ্ট নেই, শুধু ছোটো মার জন্যে একটা খারাপ লাগা আছে! জানিনা এটা কে করলো, কিন্তু তার ওপরে আমার কোনো রাগ নেই! তার জন্যে বরং আমি বেঁচে গেলাম, কিন্তু ছোটো মার জীবনটা একদম নষ্ট হয়ে গেলো!
সুমন একটু গম্ভীর হলো,
ধুস! ওটাকে বেঁচে থাকা বলে নাকি! এটাই বরং উনি অনেক ভালো থাকবেন, নিজের মতো শান্তিতে বাঁচবেন বাকি জীবনটা! উনি তো নিজের ইচ্ছেতেই এটা বেছে নিয়েছেন, তাই মনে কোনো দুঃখও থাকবে না!
অদ্বিতীয়া অবাক হয়ে তাকালো,
নিজের ইচ্ছেয় বেছে নিয়েছেন মানে! তুমি কি করে জানলে!
সুমন জিভ কাটলো,
এই যা! ধুস! আমি যে কেনো কোনো কথা চেপে রাখতে পারিনা! আচ্ছা ছাড়ো, বলেই ফেলি তাহলে! কাকিমা আমাকে ফোন করেছিলেন কদিন আগে, তখনই বলছিলেন আর কি! আমি অবশ্য ভুলে গিয়েছিলাম, এখন তুমি বলতে মনে পড়লো!
গাড়ি টা থামাও!
সুমন সজোরে ব্রেক কষে বাইকটা দাঁড় করালো, অবাক হয়ে বললো,
কি হলো? এতো রাগের কি আছে! ইচ্ছে করে বলিনি নাকি! আরে বাবা ভুলে গিয়েছিলাম বলছি তো!
অদ্বিতীয়া লাফ দিয়ে নেমে দাঁড়ালো,
তোমাকে এসব কথা ছোটো মা কবে জানিয়েছে বললে?
সুমন নেমে দাঁড়িয়ে শঙ্কিত মুখে তাকালো,
সেটা ঠিক মনে নেই! দিন দিয়ে কি হবে! বললেন বাড়িতে জানাজানি হয়ে গেছে, কেউ চিঠি দিয়ে বলেছে, এইটুকুই! আমি অতো দিনক্ষন হিসেব রাখিনি!
অদ্বিতীয়া চিৎকার করলো,
আবার মিথ্যে কথা! বাড়িতে তো কাল চিঠি এলো, ছোটো মা তোমাকে কি করে কয়েকদিন আগে চিঠির কথা বললো?
সুমন চোখ নামালো,
সরি অদ্বিতীয়া! আমি কাকিমা কে কথা দিয়েছিলাম আমি তোমাকে কিছু জানাবো না! উনি দিন কয়েক আগে ক্লাবের ফোনে ফোন করে ট্যাক্সি নিয়ে আমার বাড়িতে এসেছিলেন। বলেছিলেন আমার নাকি খুব বিপদ, তোমার দাদু আমাকে খুন করে ফেলার চেষ্টা করছেন! আমার কাছে জানতে চেয়েছিলেন যে তোমার কোনো বংশ পরিচয় নেই এটা জানার পরেও আমি তোমাকে বিয়ে করতে রাজি কিনা! যদি উনি জানতে পারেন তুমি সান্যাল বংশের কেউ নও তাহলেই উনি তোমার সম্বন্ধে আর মাথা ঘামাবেন না! তাই এই কথাগুলো প্রকাশ্যে আসা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই!
অদ্বিতীয়া হতাশ ভঙ্গিতে তাকালো,
তার মানে এগুলো তুমি আগেই জানতে, তাই তোমার একটুও অবাক লাগেনি আমার কথা শুনে! আর তাই তুমি নির্দ্বিধায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে আবার ক্লাবে চলে এসেছো! সুমন আমার ভীষণ খারাপ লাগছে! আমার ভালো থাকার জন্যে ছোটো মা এতো বড়ো বিপদের মধ্যে নিজেকে ঠেলে দিলো!
সুমন অদ্বিতীয়ার দিকে তাকালো,
ভেবে বলোতো ওখানে কি আছে কাকিমার? তোমার ঠাকুমার সঙ্গে ওনার সম্পর্ক কোনোদিনও ভালো ছিলো না, তোমার বাবা মানে রতিকান্ত সান্যাল কখনো ওনাকে ভালো বাসেন নি, জানিনা তোমার দাদু কতোটা ভালোবেসেছেন, কতটা বাড়ির বউ বলে মেনে নিয়েছেন! এগুলো তোমার মুখেই তো শোনা! তাহলে কিসের জন্যে ওখানে পড়ে থাকা? তার থেকে তোমার কাকার আশ্রমে উনি অনেক ভালো থাকবেন, অন্তত নিজের সম্মান নিয়ে থাকবেন! চলো, উঠে পড়! আজ তোমাকে প্রথম বার বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি!
অদ্বিতীয়া যখন বাড়ির সামনে বাইক থেকে নামলো, তখন সুকান্ত রমার সঙ্গে দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অদ্বিতীয়া দৌড়ে ওপরে উঠলো, থমথমে মুখে কাকার সামনে গিয়ে বললো,
ছোট কা! চিঠির কথাগুলো কার আমি জানতে পেরেছি! শুধু লিখলো কে সেটা জানিনা! ছোটমা এটা কি করলো! তুমি তাড়াতাড়ি ওবাড়ি থেকে ছোটমা কে এখানে নিয়ে এসো!
সুকান্ত হাসলেন,
বৌদির সঙ্গে একটু আগেই কথা হয়েছে বড়দির! বাবা যখন তাঁকে থাকতে বলেছেন তখন তিনি এখানে আসবেন না আমি জানি! তবে পরশু তোর বিয়ে, উনি সেটা জানেন! বাবার আপত্তি থাকলেও উনি আসবেন সেটা জানি!
ক্রমশ