#একদিন_বিকালে_সকাল_হয়েছিলো
লেখাঃ শারমিন আক্তার সাথী
পর্বঃ১১
ঘুম জড়িত কন্ঠে রেনু, শিহাবকে বলল,
‘এত জোরে জড়িয়ে ধরছেন কেন? আমার নড়াচড়া করতে কষ্ট হচ্ছে।’
শিহাব হাতের বাঁধন ঢিলা করে রেনুর কানে ফিসফিস করে বলল,
‘ভালোবাসি খুব।’
আধোঘুম আধোজাগা অবস্থায় রেনু বলল,
‘হুঁ জানি। আমিও।’
‘আমাকে ভুল বুঝবে নাতো?’
‘কোনো কারণ ছাড়া ভুল কেন বুঝবো?’
‘যদি ভুল বোঝার মতো কারণ পাও? তবে কি আগে কারণটার বিস্তারিত জানবে, নাকি ভুল বুঝবে?’
‘সেটা কারণটার উপর র্নিভর করে।’
‘আমার অতীত জানবে না?’
‘আপনিই তো বলেছিলেন আপনার কিছুটা সময় চাই কথাগুলো সাজিয়ে নিতে।’
‘হুঁ।’
তারপর কিছুক্ষণ চুপ করে রইল শিহাব। তারপর রেনুর গালে গাল লাগিয়ে বলল,
‘রেনু?’
‘হুঁ।’
‘আমার দিকে ঘুরে শোও।’
রেনু শিহাবের দিকে ঘুরে ওর দিকে তাকিয়ে বলল,
‘আজ মাঝরাতে আপনার কী হয়েছে?’
‘কিছু না। তোমাকে একটা সত্যি কথা বলি? প্রমিজ করো আমাকে ভুল বুঝবে না?’
‘আগে কথাটা তো বলেন?’
‘না আগে ওয়াদা করো।’
‘আচ্ছা করলাম।’
‘রেনু তোমার প্রথমবার যে বিয়েটা সবকিছু ঠিক হয়েও ভেঙে গিয়েছিলো, সে বিয়েটা আমি ভেঙেছিলাম।’
রেনু কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। তারপর বলল,
‘আমি জানি।’
শিহাব অনেকটা অবাক হয়ে বলল,
‘তুমি জানতে?’
‘হ্যাঁ। সে বিয়ে ভাঙার ক’দিন পরই জেনেছি। ছোটো মামা বলেছিলেন। সে বিয়ে ভাঙার পরই তো আপনার আর মামার সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়। দুই বছর পর্যন্ত মামা আপনার সাথে কথাও বলেনি। তারপর কথা বললেও, আগের বন্ধুত্বে যে আন্তরিকতা ছিলো তা নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি এও জানি অনেক বছর আগে থেকেই, মামা কৌশলে আপনাকে আমার জীবনে আসতে দেয়নি। তখন তিনি চালটা না চাললে আমার সাথে আপনার এটা দ্বিতীয় বিয়ে হতো না।
আমার প্রথম বিয়ে হওয়ার সময়ও আপনি জানতেন না যে, আমার বিয়ে হচ্ছে। যদি জানতেন তবে সে বিয়েটাও ভেঙে দিতেন। আমার প্রথম স্বামী মারা যাবার পর আমার যতগুলো বিয়ে ভেঙেছে সব আপনি-ই ভেঙেছেন। ছোটো মামা শেষে একরকম নিরুপায় হয়ে আপনার সাথে আমার বিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। আমাকে পেতে আপনি কম চেষ্টা করেননি।’
শিহাব প্রচন্ড অবাক হয়ে বলল,
‘তুমি এসব কী করে জানলে?’
‘জেনেছি বহুদিন আগেই।’
‘তারপরও আমাকে বিয়ে করতে রাজি হলে কেন?’
‘সত্যি বলতে প্রথমত আমি আমার বাবা-মায়ের বোঝা কমাতে চাইছিলাম। সবার তিক্ত কথা শুনতে শুনতে আমি ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। ঘর থেকে চাকরি করারও অনুমতি পাচ্ছিলাম না, যে নিজের পায়ে দাঁড়াব। দ্বিতীয়ত কোথাওনা কোথাও আপনার, আমার প্রতি ভালোবাসাটা অনুভব করেছিলাম। জানি না কেন তবে মনে হয়েছিলো আপনি সত্যি আমাকে খুব ভালোবাসেন?’
‘আচ্ছা এসব কথা কি তোমাকে জিয়া মানে, তোমার মামা বলেছেন?’
‘হ্যাঁ।’
‘কী বলেছিল?’
‘এখন ওসব বলতে ইচ্ছা করছে না। আরেকদিন বলি?’
‘আচ্ছা তোমার ইচ্ছা। তবে তুমি কি এসব জানার পরও আমাকে ভালোবাসবে?’
‘এসব তো আমি বিয়ের পূর্বেই জেনেছি। তো এখন আপনাকে ভালো না বেসে কি টাইমপাস করছি? আপনি কি আমার বয়ফ্রেন্ড লাগেন?’
শিহাব গভীরভাবে রেনুকে জড়িয়ে ধরে অসংখ্য চুমোতে ভরিয়ে দিতে দিতে বলল,
‘ওহ রেনু তুমি সত্যি অনবদ্য। কতটা ম্যাচিওর তুমি! তুমি জানো না তুমি আমাকে কত বড় চিন্তা থেকে রিলিফ করলে। এখন আমি একটু কম ভয়ে আমার অতীত তোমাকে বলতে পারব।’
‘এখন বলবেন?’
‘নাহ। কিছুদিন সময় দাও। শশীর বিয়েটা যাক আগে তারপর।’
‘আচ্ছা। তাহলে এখন ঘুমান আর আমাকেও ঘুমাতে দিন।’
শিহাব আরও আবেগে রেনুকে জড়িয়ে ধরল।
১৭!!
পরীক্ষার হলে সজলকে দেখে শশী একদম চুপ ছিলো। কোনো কথাই বলেনি সজলের সাথে। সজল ওর দিকে তাকিয়ে একবার হাসল, বিনিময়ে শশীও মলিন হাসল। সে হাসিতে ছিলো না কোনো আনন্দ। ছিলো শুধু হৃদয় নিংড়ানো বিষাদ।
যথা সময়ে পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল। পরীক্ষা শেষ হবার পর শশী হলের বাইরে যেতে নিলে ওদের বন্ধুরা দু’জনকে ঘিরে ধরল। তারপর ওদের একবন্ধু জাহিদ বলল,
‘কংগ্রেটস লাভবার্ড। গ্রাজুয়েশন তো শেষ। এবার তোদের বিয়েটা জলদিই খেতে পারব। কী বলিস সবাই?’
সুমনা বলল,
‘তা আর বলতে। আমাদের লার্ভ বার্ডের সম্পর্কের চার বছর হতে চলল। তা চতুর্থ বছরের এ্যানিভাসরিতে কোথায় ট্রিট দিচ্ছিস আমাদের?’
শশী কিছুই বলল না। সজল বলল,
‘তোদের খাই খাই ছাড়া আর কোনো কথা নেই?’
রিতু হেসে বলল,
‘তোদের প্রেমে আমরা যা হেল্প করছি তাতে তোদের উচিত আমাদের রোজ ট্রিট দেয়া।’
শশী মলিন হাসল শুধু। রিতু আবার বলল,
‘তা বিয়ে কবে করছেন? পরিবারে কথা হয়েছে তোদের সম্পর্ক নিয়ে?’
সজল বেশ রাগ করেই বলল,
‘কী সবসময় এক বা*লের প্যাচাল। খালি বিয়ে বিয়ে! বিয়ে ছাড়া কী মানুষের জীবনে আর কোনো লক্ষ্য নেই? আমার কি এখন বিয়ে করার বয়স হয়েছে?’
সজল এমনভাবে রিয়াক্ট করল যে, সবার মন খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু সজল তার তোয়াক্কা না করে শশীকে বলল,
‘তোমার নাকি কী কথা আছে? জলদি বলবে চলো। আমার কিছু কাজ আছে, তেমন সময় দিতে পারব না।’
তারপর সবার সামনে দিয়ে, শশীর হাত ধরে একরকম টেনে নিয়ে গেল সজল। বন্ধুরা সবাই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল। সুমনা বলল,
‘সেদিন শশীর কথায় মনে হলো, ওদের সম্পর্কটা বোধ হয় ভালো যাচ্ছে না আজকাল।’
সজল শশীর হাত ধরে যেতে যেতে বলল,
‘কোথায় বসবে? কোনো রেঁস্তরায়? নাকি কলেজেই বলবে?’
শশীর খুব কান্না পাচ্ছে। তবুও খুব কষ্টে নিজের কান্নার ঢোক গিলে বলল,
‘কলেজেই বলি। নিরিবিলি কোথাও।’
‘এটা তো আমাদের কলেজ না, এখানে আমরা পরীক্ষা দিতে এসেছি। তাই জানি না এখানে নিরীবিলি জায়গা কোনটা? তাছাড়া এখন অনরেডি পাঁচটা বাজে। ঘন্টাখানিক পর সন্ধ্যা হয়ে যাবে। কলেজের মেইন গেট বন্ধ করে দিতে পারে। তখন বের হতে তো পারবই না উল্টা দুজনকে একাকি একসাথে কলেজ কতৃপক্ষ দেখলে বিষয়টা খুব খারাপ দেখাবে, তারচেয়ে বরং কোনো রেস্টুরেন্টে কাপল সিট বা ফেমিলি কেবিন নিয়ে বসি।’
‘রাত হয়ে গেলে একা বাড়ি যাবো কী করে?’
’আমি পৌঁছে দিব।’
মাথা নেড়ে শশী সায় দিয়ে বলল,
‘আচ্ছা।’
রেস্টুরেন্টে কাপল কেবিনে বসে সজল জিজ্ঞেস করল,
‘কী খাবে?’
‘কিছু না। শুধু একটু পানি।’
ভয়ে, কষ্টে শশীর গলাটা বারবার আটকে যাচ্ছে। পানি খেয়ে কষ্টটা গলা থেকে নামাতে হবে। নয়ত স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারবে না। সজল নিজের জন্য একটা ম্যাক্সিকান বার্গার আর শশীর জন্য এক বোতল পানি অর্ডার করে বলল,
‘হ্যাঁ বলো কী বলবে?’
শশী আস্তে করে বলল,
‘পানিটা আসুক। খেয়ে তারপর বলি।’
‘আচ্ছা। ও ভালো কথা তোমার কাজিন আদ্র আসার কথা ছিলো না?’
শশী খুব ধীরেই বলল,
‘আসবে না।’
‘কী বললে শুনিনি। এত আস্তে কেন কথা বলছো?’
শশী একটু কেঁশে বলল,
‘সে আসবে না।’
‘কেন?’
‘আমি তাকে না করে দিয়েছি।’
‘কেন?’
‘ভাবলাম সমস্যা যেহেতু তোমার-আমার তাই সমাধানটাও আমাদের দুজনার করা দরকার। তৃতীয় কাউকে না আনাই বেটার।’
‘বাহ গুড ডিসিশন।’
এর মধ্যে পানি চলে আসল। শশী পানিটা খেয়ে চুপ করে বসে রইল কিছুক্ষণ। মনে মনে কথাগুলো একটু সাজিয়ে নিচ্ছে।’
সজল বার্গারে কামর দিয়ে বলল,
‘বলো কী বলবে?’
‘কী ভাবলে সজল?’
‘কোন বিষয়ে?’
‘আমাদের সম্পর্কের বিষয়ে?’
‘কেন আমাদের সম্পর্কে ভাববার মতো কী হয়েছে?’
সজল এমন ভান করছে যেনো কিছুই হয়নি। শশী এবার সরাসরি জিজ্ঞেস করল?
‘আমরা বিয়ে কবে করছি?’
‘আজব আমাদের বিয়ের বয়স কি পেরিয়ে যাচ্ছে নাকি?’
‘তোমার হয়তো যাচ্ছে না, তবে আমার পরিবারের মতে আমার বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে। তুমি হয়তো জানো তারা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলছে?’
‘শশী কামঅন আর এই এক নাটক করো না তো?’
‘তোমার এখনও মনে হচ্ছে আমি নাটক করছি?’
‘হ্যাঁ মনে হচ্ছে।’
‘ওহ। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শশী আবার বলল, তাহলে তুমি তোমার পরিবারে আমার কথা বলবে না?’
‘না এখন সেটা পারছি না।’
‘তাহলে তুমি আমার পরিবারের সাথে সরাসরি কথা বলো?’
‘তাহলে কী হবে?’
‘তাহলে তারা হয়তো আমার বিয়েটা দিবে না। হয়তো আমাদের সম্পর্কের কথা চিন্তা করবে।’
‘সেটা তো তুমিও বলতে পারো। আমাদের সম্পর্কের কথা তুমি বলা অথবা আমি বলা দুটোই সমান।’
‘সত্যি সমান?’
‘সমানই তো।’
‘কোন ভরসায় বলব? আর কী বলব?’
‘মানে?’
‘মানে তুমি কবে আমাকে বিয়ে করবে? তোমার কত বছর সময় লাগবে? তার সঠিক কিছু না বললে তাদের কী বলব? বলব একটা ছেলেকে ভালোবাসি, কিন্তু সে বাপের টাকায় চলে এখন এবং সে জানে না কবে আমাকে বিয়ে করতে পারবে? সে শুধু আমাকে ভালোবাসে। এ কথা বললে পরিবার মানবে?’
সজল বেশ রাগ করে বলল,
‘আজব সেটা আমি কী করে বলব? দেখো শশী আমি এখন শুধু নিজের ক্যারিয়ারে ফোকাস করতে চাই। অন্য কোনো দিকে না। আমি এমবিএ করার জন্য ইরোপের কোনো কান্টিতে যেতে চাই। সে জন্য আমি স্কলারশিপ পাবার চেষ্টা করছি। ইনফ্যাক্ট আমি ইউরোপের কোনো উন্নত দেশে সেটেল হতে চাই। সে জন্য আমার বেশ কিছু বছর সময় চাই। তাই আমি এখন বিয়ে করার মত তুচ্ছ বিষয়ে খেয়াল দিতে চাই না।’
‘তাহলে আমাদের সম্পর্ক?’
‘আমি তো সম্পর্ক শেষ করে দিচ্ছি না। কিছু বছর সময় চাইছি। তোমার কথা এখন আমার পরিবারে বললে বাবা রাজি তো হবেন-ই না, উল্টো আমাকে বিদেশ যাবার টাকাও দিবেন না। আর তোমার পরিবারে বললে, তারা আমি কবে বিয়ে করব, কবে চাকরি পাবো, হ্যান ত্যান নানা প্রশ্ন করে আমাকে মানসিক ভাবে টেনশন দিবে আর এই মুহূর্তে আমি কোনো রকম মানসিক টেনশন নিতে চাই না।’
‘এগুলোই তোমার শেষ কথা?’
‘হ্যাঁ।’
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শশী বলল,
‘আচ্ছা আজ তাহলে চললাম।’
চলে যেতে নিয়ে শশী আবার ঘুরে বলল,
‘সজল একটু দাঁড়াও।’
সজল উঠে দাঁড়াতেই শশী সজলকে গভীরভাবে জড়িয়ে ধরল। সজলের বুকে মাথা রেখে চোখের কোণে জমা নোনা তরলগুলো মুছে, মনে মনে বলল,
‘এটাই শেষবারের মতো তোমাকে জড়িয়ে ধরা। তোমাকে সত্যি খুব ভালোবাসি সজল। আফসোস তুমি বুঝলে না আমার অবস্থানটা।’
সজল মৃদু হেসে শশীকে আরো গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে বলল,
‘আমি জানি এসব বিয়ে টিয়ের কথা তুমি জাস্ট আমাকে ভয় দেখাতে বলছো। অামি তো জানি তুমি আমাকে কতটা ভালোবাসো! জানি তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করবে।’
শশী তাচ্ছিল্য হেসে মনে মনে বলল,
‘আফসোস তুমি আমার ভালোবাসাটা বুঝলে কিন্তু তোমার ভালোবাসাটা আমাকে বোঝালে না। ভালো থেকো সজল। আর হয়তো তোমাকে জড়িয়ে ধরা হবে না। হবে না তোমাকে ভালোবাসা। হয়তো তোমার স্থানটা অন্য কেউ নিয়ে নিবে।’
সজল শশীর কপালে চুমো খেলো। শশী এবার নিজের অবাধ্য চোখদুটোকে আটকাতে পারল না। নোনা নদীর ধারা বইতে শুরু করল দু’চোখ বেঁয়ে। শশী ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে চলে যেতে নিয়ে সজল বলল,
‘আমি পৌঁছে দিচ্ছি।’
‘তার আর প্রয়োজন হবে না। আমি একা যেতে পারব।’
সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পর শশী বাড়ি ফিরতেই হাসি বেগম শশীকে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করে,
‘কিরে এত দেরী হলো?’
শশী মিথ্যা বলল,
‘আসলে মা আজ শেষ পরীক্ষা তো, তাই পরীক্ষা শেষে বন্ধুরা মিলে একটু আড্ডা দিয়েছিলাম।’
‘ওহ যা, তবে ফ্রেশ হয়ে নে।’
হাসি বেগম কিছু সন্দেহ না করলেও শশীর মলিন মুখটা দেখে লিপি সব বুঝে গেল।
চলবে………
#একদিন_বিকালে_সকাল_হয়েছিলো
লেখাঃ শারমিন আক্তার সাথী
পর্বঃ ১২
শশী চলে যাবার পর থেকেই কেন জানি, সজল নিজেকে স্থির রাখতে পারছে না! কেন জানি বিকালে শশীর চোখের পানি দেখার পর থেকে নিজেকে শান্ত রাখতে পারছে না ও। নিজেকে নিজে বলল,
‘বুকের বা পাশটা বড্ড ব্যথা করছে। কেন? আমি যা চেয়েছিলাম তা-ই তো হচ্ছে। তবে কেন এত খালি খালি লাগছে? বুকের বা পাশটা বড্ড ব্যথা করছে। কেন এমন লাগছে? আমি তো চেয়েছিলাম শশীর থেকে কিছু সময়ের ব্রেক। আমি তো নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সমাজে দশজনার একজন হতে চাই। সে কারণে আমি আমার জীবনে কোনো পিছুটান চাই না। তবে কেন আজ মনটা এত অস্থির লাগছে? মনে হচ্ছে আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু হারিয়ে যাচ্ছে। সবকিছু এলোমেলো লাগছে। বুকের বা পাশটায় তীব্র যন্ত্রনা হচ্ছে। নিজের মাথা নেড়ে সজল বলল, না না আমাকে এত ভাবলে চলবে না। আমি জীবনে কোনো পিছুটান চাই না। চাই না কেউ আমার দুর্বলতা হোক। আমাকে অনেক বড় হতে হবে, অনেক বড়।’
সজল চোখে মুখে পানি দিয়ে শুয়ে পড়ল। রাতে খুব অদ্ভুত একটা স্বপ্ন দেখল। ও মাঝ সমুদ্রে পড়ে গেছে। হাবুডুবো খাচ্ছে। বাঁচাও বাঁচাও বলে চেঁচাচ্ছে কিন্তু কেউ ওকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসছে না। অথচ পাশেই বড় একটা নৌকায় অনেক লোক। সবাই ওকে তাকিয়ে দেখছে কিন্তু কেউ সাহায্য করছে না। আর সজল শত চেষ্টা করেও নৌকার কাছে যেতে পারছে না। হঠাৎ কোথা থেকে যেনো ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করে শশী আসল। শশী নববধূ সাজে। ওকে দেখতে চমৎকার লাগছে। সজল শশীকে দেখে খুব খুশি হলো। ভাবল শশী ওকে বাঁচিয়ে নিবে। কিন্তু একি শশী চলে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই। কে যেনো শশীর হাতটা ধরে রেখেছে। সজল বার বার শশীকে ডাকছে কিন্তু শশী একবারও ওর দিকে ফিরেও তাকাচ্ছে না।
সজলের ঘুমটা ভেঙে গেলো। ঘেমে শরীটা ভিজে গেছে। যদিও এখন হেমন্তকাল। আবহাওয়া এখন নাতিশীতোষ্ণ। শেষ রাতে তো বেশ ঠান্ডা পড়ে। তবুও সজল ঘেমে ভিজে গেছে। ওর মনে হচ্ছিল স্বপ্নটা একদম জীবন্ত। স্বপ্নে হওয়া কষ্টগুলো বাস্তবেও অনুভব হচ্ছিল যেনো। হুট করেই ঘুমটা একদম কেটে গেল সজলের। এখন ঘুম আসতে দেরী আছে। ফোনটা হাতে নিয়ে ফেইসবুকে ঢুকল। দেখল শশীও অনলাইনে। মেসেঞ্জারে শশীকে কল করল। শশী সাথে সাথেই রিসিভ করে বলল,
‘হুঁ বলো।’
‘শশী রাত তিনটা বাজছে। তুমি এখনও ঘুমাওনি?’
‘ঘুম আসছে না।’
‘শরীর ঠিক আছে তোমার?’
‘হ্যাঁ।’
‘তাহলে?’
‘শুধু শরীর খারাপ থাকলেই কি মানুষ ঘুমায় না? আমার তো মনে হয় মানুষের শরীর খারাপ থাকলে তারা আরও বেশি ঘুমায়। যা হোক তুমি কেন ফোন করেছিলে?’
‘এমনি ভালো লাগছিলো না তাই।’
‘আর কিছু বলবে?’
‘এভাবে কড়া কড়া কথা বলছো কেন? কতদিন হলো আমরা ঠিকভাবে খুশি মনে কথা বলি না। আজ বাকি রাতটুকো কথা বলে কাটাই। যেমনটা আগে করতাম?’
শশী একবার বলতে চেয়েছিলো, আগের মতো কথা বলার মতো পরিস্থিতি তুমিই নষ্ট করছো? তুমি আমাদের মাঝের ভালোবাসাটাকে শেষ করছো। কিন্তু নিজেকে সামলে বলল,
‘সরি সজল, আমার বড্ড মাথা ব্যথা করছে, কথা বলার মতো অবস্থায় নেই।’
‘ওহ আচ্ছা। তাহলে ঘুমাও।’
‘আচ্ছা ভালো থেকো সজল।’
‘আই লাভ ইউ।’
শশী কোনো উত্তর না দিয়ে, কল কেটে দিলো। ওর ভেতরটা ভেঙে দুমরে মুচরে যাচ্ছে। কষ্টে বুক আটকে যাচ্ছে। বালিশে মুখ চেপে চাপা কান্না করল অনেকক্ষণ। তারপর নিজে নিজে বলল,
‘সজল দোয়া করি একদিন তুমি খুব বড় হও। জীবনে অনেক সফল হও। সফলতা তোমার পরম সাথী হোক। কিন্তু সজল তুমি এটা ভুলে যাচ্ছো কিছু মানুষ বড় হতে গিয়ে এত বড় হয় যে, যেখান থেকে কাছের মানুষদের দেখা যায় না। সফলতার সুউচ্চ সিড়িতে দাঁড়িয়ে পৃথিবীটাকে যেমন ছোটো মনে হয়, তেমনি অতি ক্ষুদ্র মনে হয় নিজের কাছের মানুষগুলো। অনেকসময় তো এতটাই ক্ষুদ্র মনে হয় যে, তাদের দেখা পর্যন্ত যায় না। যে সফলতায় কাছের মানুষগুলো কাছে থাকে না, সে সফলতা মূল্যহীন। নিজের কাছের মানুষগুলোকে পিছনে ফেলে সফলতা লাভ করা যায় ঠিকই কিন্তু নিজের কাছের মানুষগুলোকে সাথে নিয়ে চললে সফলতা আরও দ্রুত লাভ করা যায়। কারণ ভালোবাসার মানুষের ভালোবাসা ও দোয়াও সফলতার পথ অনেক আলোকিত করে। কিন্তু আফসোস সজল এ বিষয়টা তুমি বুঝলে না। তুমি শুধু নিজের মানুষগুলোকে সফলতার পথে বাঁধা আর পিছুটান ভাবলে।
১৮!!
সকাল থেকেই শশীর বিয়ের তোরজোর চলছে ঘরে। সবাই মোটামুটি বেশ ব্যস্ত। রেনুর শরীরটাও এখন বেশ ভালো। ও-ও সবার সাথে কাজ করছে। তবুও শিহাব বারবার সাবধান করে দিচ্ছে ওকে। রেনুর এবং লিপির সবার বাড়ি থেকে লোকজন এসেছে। ঘর আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীতে ভরপুর। কেউ রান্না করছে, কেউ খাচ্ছে, কেউবা পিঠা বানাচ্ছে, কেউবা গল্প করছে। ঘরে একটি আনন্দপূর্ণ মহল বিরাজ করছে। এত মানুষ দেখে শশীর খুব ভালো লাগলেও, এত মানুষের ভিরে নিজেকে বড্ড একা লাগছে।
পার্লারের মেয়েরা কল করেছিলো, তারা কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসবে। আসর বাদ বিয়ে হবে। শশী-রাযীনের বাসরও, আজ শশীদের বাড়ি হবে। লিপি কয়েকজন ঘর সাজানোর লোককে দেখিয়ে দিচ্ছে কিভাবে শশীর রুমটা সাজাতে হবে। শশী সব দেখেও র্নিবিকার ভঙ্গিতে বসে থাকে এখানে ওখানে। মানুষের চোখে চোখ পড়লে শুধু মৃদু হাসে।
ওর বারবার মনে হচ্ছে সজল কল করে বলবে, শশী চলো পালিয়ে বিয়ে করি আমরা। তারপর সবাই মেনে নিবে। নয়তো সজল ওর পরিবারের সাথে কথা বলতে আসবে। কিন্তু শশী জানে এটা সিনেমা বা নাটক না যে, এমন কিছু হবে! বাস্তব জীবনে যুক্তির বাইরে কাজ খুব কম-ই হয়। নাটকীয়তার স্থান এখানে নেই বললেই চলে। শশীর ভাবনায় ছেদ পড়ল হাসি বেগমের কথায়।
তিনি বললেন,
‘কিরে তোর বন্ধুরা সব কই? ওদের বলিসনি? এমনিতে তো বিচ্ছুগুলা প্রায়ই এসে হাঙ্গামা করে, আজ কোথায়? ওরা এসেই তো মজা করবে। বিয়েতে বন্ধু বান্ধব না আসলে মজা হয়?’
‘আমি দেখছি মা ওদের কল করে।’
শশী এতদিন কাউকে ওর বিয়ের কথা বলেনি। তবে আজ এখন বলবে। আর ঘন্টা দুই পর ওর বিয়ে। শশী ফোনটা হাতে নিয়ে সবাইকে গ্রুপ কল করে বলল,
‘তোরা সবাই আমার বাসায় আয়।’
সুমনা বলল,
‘কেন?’
‘আজ আসর বাদ, আমার আকদ।’
সবাই অবাক হয়ে বলল,
‘কী বলিস? কখন ঠিক হলো? আমাদের কেন বলিসনি?’
শশী বলল,
‘সবকিছু এত দ্রুত হলো যে, তোদের বলার সময় পাইনি?’
জাহিদ রাগ করে বলল,
‘তুই নাহয় সময় পাসনি, সজল হারামিটায় কী করছিলো? ও কেন বলেনি?’
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শশী বলল,
‘আমার বিয়ে সজলের সাথে নয়, বরং রাযীন নামের একজনের সাথে হবে।’
সবাই বেশ অবাক হয়ে বলল,
‘কী? কী বলছিস?’
রিতু বলল,
‘তোদের এত বছরের প্রেম অথচ বিয়ে…!, তুই কেন করছিস এমন শশী? তুই সজলকে চিট করছিস?’
শশী বলল,
‘আগে আমার পুরো কথা শোন তারপর বলিস দোষ কার? আমার নাকি সজলের?’
শশী ওর আর সজলের সাথে হওয়া সব কথা, ওদের সবাইকে বিস্তারিত বলল। শশীর কথা শুনে সবাই বেশ আফসোস করতে করতে বলল,
‘সজল কী হারাচ্ছে ও নিজেও জানে না।’
চোখের পানি মুছে শশী বলল,
‘দেখ আর ঘন্টাখানিক পর আমার বিয়ে হবে। তোরা পারলে প্লিজ চলে আয়। কোনো গিফ্ট আনতে হবে না, শুধু আমাকে একটু সাহস দিতে তোরা আয়।’
শশীর কথাগুলো শুনে সুমনা আর রিতুও কান্না করছে। সুমনা বলল,
‘কখনো ভাবিনি তোদের মত লাভবার্ডকে আলাদা হতে দেখব। তোর কথা শুনে আমাদেরই এত কষ্ট হচ্ছে, তো তোকে কী বলব? আমরা সবাই তোর বিয়েতে আসব আর অনেক মজা করব। তুই অপেক্ষা কর আমরা ঘন্টাখানিকের মধ্যে সবাই আসছি।’
সুমনার কথায় বাকি সবাইও সম্মতি প্রদান করল।
১৯!!
বিয়ে হওয়ার কিছুক্ষণ আগে সজল শশীকে কল করল।
‘হ্যালো শশী।’
‘হ্যাঁ, বলো সজল।’
‘আজ অাসর বাদ নাকি তোমার বিয়ে?’
‘হ্যাঁ।’
‘তুমি মজা করছো আমার সাথে তাই না?’
‘তার আগে বলো, আজ আসর বাদ আমার বিয়ে সে খবর তোমাকে কে দিয়েছে?’
‘সুমনা।’
‘তাহলে ওকেই জিজ্ঞেস করো ও তোমার সাথে মজা করেছে কিনা?’
‘প্লিজ শশী এভাবে বলো না। সত্যিটা বলো?’
‘কী সত্যি বলব? তুমি কী আমার কথা বিশ্বাস করো? আমি যা-ই বলি তোমার কাছে মজা মনে হয়।’
‘তারমানে সত্যি আজ তোমার বিয়ে হচ্ছে।’
‘হ্যাঁ।’
‘শশী তুমি প্লিজ বিয়েটা করো না। আমাকে চার ঘন্টা সময় দাও আমি আসছি। কিছু কাজে আমি ফরিদপুর এসেছিলাম। আমি এসে তোমার পরিবারের সাথে কথা বলব। প্লিজ তুমি বিয়েটা করো না। আমি সব ঠিক করে দিব।’
শশী কলটা কেটে ওর ফোনটা বন্ধ করে দিলো। ফোন থেকে সিমটা বের করে দুই টুকরো করে ফেলল। বিড়বিড় করে বলল,
‘সজল তুমি আমাকে ধারনার বাইরে কষ্ট দিয়েছো। অবিশ্বাসের বিষাক্ত আঘাতে আমার মনটাকে কালো করে দিয়েছো। আমি এখন আর তোমার হব না। তোমাকে শিক্ষা দিতেই আমি রাযীনকে বিয়ে করব। তোমার চোখের সামনে সুখে সংসার করব। তুমি তখন বুঝবে কী হারিয়েছো তুমি? এটা তো ফ্লিম না যে, শেষ মুহূর্তে নায়ক এসে বিয়ে ভেঙে নায়িকাকে নিয়ে চলে যাবে। এটা বাস্তব জীবন। এখানে শেষ মুহূর্তে নাটকিয়তা হয় না।
সজল আসল ঠিকই, কিন্তু ততক্ষণে রাযীন আর শশীর বিয়ে হয়ে গেছে। ওদের এক জায়গায় বসিয়ে দুধ মিষ্টি খাওয়ানো হচ্ছে। সজল ঘরে ঢোকার সময় জাহিদ আর সুমনার সামনে পড়ল। জাহিদ বলল,
‘আর ভিতরে গিয়ে লাভ নেই, বিয়ে হয়ে গেছে।’
সজল করুণ চোখে তাকিয়ে বলল,
‘সত্যি বিয়ে হয়ে গেছে?’
সুমনা কঠিন গলায় বলল,
‘হ্যাঁ। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম কেউ বোঝে না। যেমনটা তুই বুঝিসনি।’
ওদের কথা শুনে তবুও সজল ভিতরে গেল। সবার মধ্যমনি হয়ে, সোফায় পাশাপাশি বসে আছে রাযীন আর শশী। বধূ সাজে কি চমৎকার লাগছে শশীকে! ঠিক যেমনটা সজল স্বপ্নে দেখেছিলো। সজল শশীর সামনে গিয়ে ডাকল,
‘শশী…!’
সজলের কন্ঠ শুনে চমকে তাকালো শশী। সজলকে দেখে বিস্ময় চেপে রাখতে চেয়েও চেপে রাখতে পারল না। চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল। রাযীন শশীর হাতে হাত রেখে কানের কাছে মুখ নিয়ে বলল,
‘ঘরভর্তি অনেক লোক। প্লিজ স্বাভাবিক থাকো।’
শশী চেয়েও নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে পারছে না। ভিতর থেকে ছটফট কাজ করছে ও। মনে হচ্ছে এখন-ই দমটা বন্ধ হয়ে মরে যাবে। এত বছর যাবত ভালোবেসেছে ছেলেটাকে। তার সামনে অন্যের স্ত্রী হয়ে স্বাভাবিক ভাবে বসে কিভাবে থাকবে?
শশী বসা থেকে উঠার আগেই লিপি বলে উঠল,
‘আরে সজল যে? এত দেরী করে এলে? তোমার বন্ধুর বিয়ে তো আরও ঘন্টাখানিক আগেই হয়ে গেছে। নিজের ফ্রেন্ডের বিয়েতে বুঝি কেউ লেট করে আসে?’
লিপি আত্মীয়দের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘এই যে দেখছেন এরা সবাই শশীর ক্লাসমেট। আমাদের বাসায় কত আসছে গেছে। আজ দেখেন নিজের বন্ধুর বিয়েতে লেট করে আসছে বাদরগুলায়। সুমনা তোরা সবাই আমার সাথে আয় তো, তোদের জন্য কাজ আছে। লিপি কৌশলে শশীর বন্ধুদের শশীর ঘরে নিয়ে গেল। শশীর রুমটা কাঁচা ফুল দিয়ে সাজানো। কাঁচাফুলের গন্ধে ঘরটা মো মো করছে। এসব দেখে সজলের দমটা যেনো বন্ধ হয়ে আসছে।
লিপি দরজা বন্ধ করে সব বন্ধুদের সামনেই সজলকে সজোরে একটা চড় মেরে বলল,
‘ইতর। এতদিন মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে শান্তি হয়নি তোর? মেয়েটা বিয়ের জন্য শুধু তোর পা ধরেনি মাত্র। আর তুই কী করেছিস? প্রতিটা মুহূর্তে মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে দিয়ে আধমরা করে দিয়েছিস। ওখানে যাকে বসা দেখছিস, সে তোর শশী নয়, একটা জীবন্ত লাশ। যার শরীরটা বেঁচে আছে কিন্তু মনটাকে তুই কষ্ট দিয়ে দিয়ে মেরে ফেলছিস বহু আগে। আজ তুই এখানে কেন আসছিস? আজ তোর ভালোবাসা উতলে পড়ছে? এতদিন কোথায় ছিলি? কপুরুষ কোথাকার! খরবদার যদি এখানে কোনো তামাশা করিস তো পুলিশ ডেকে উল্টা পাল্টা কেসে তোকে ফাঁসিয়ে দিব। লিপি শশীর বাকি বন্ধুদের উদ্দেশ্য করে বলল, তোমরা প্লিজ কোনো ভাবে এই জানোয়ারটাকে আমােদের বাড়ি থেকে দূর করো। আমি চাই না, আমার শশী আবার কষ্ট পাক। মেয়েটা কষ্টে জর্জরিত। আরেকটু হলে আমার বাচ্চাটা মরে যাবে। সজল নামের কুলাঙ্গারটার ছাঁয়াটাও যেনো আমার শশীর উপর না পড়ে। আমাদের পিছনের দরজা খোলা আছে, সজলকে প্লিজ এখান থেকে নিয়ে যাও।’
সজল কী বলবে? কী রিয়াক্ট করবে? সব যেনো ভুলে গেছে। ওর বুকের ভিতর বড্ড যন্ত্রনা হচ্ছে। হারানোর তীব্র যন্ত্রনা ও অনুভব করছে।
চলবে……