এক‌দিন বিকালে সকাল হ‌য়ে‌ছি‌লো পর্ব-১৫+১৬

0
511

#এক‌দিন_বিকালে_সকাল_হ‌য়ে‌ছি‌লো
‌লেখাঃ শারমিন আক্তার সাথী
পর্বঃ১৫

দীর্ঘশ্বাস ছে‌ড়ে শশী বলল,
‘কখনও য‌দি আপনা‌কে ভা‌লো না বা‌সি?’
‘আ‌মি অপেক্ষা করব জীব‌নের শেষ দিন পর্যন্ত। তোমার ভা‌লোবাসা অর্জন করার চেষ্টা করব। জা‌নো শশী, ভা‌লোবাসা পাওয়া সহজ, অর্জন করা নয়! আমি তোমা‌কে পে‌তে নয়, অর্জন কর‌তে চাই। একটু কষ্ট হ‌বে, ত‌বে আমার নিজের প্র‌তি ভরসা আছে।’

রাযী‌নের কথা শু‌নে শশীর চোখ থে‌কে ক‌য়েক ফোঁটা জল গ‌ড়ি‌য়ে প‌ড়ে বা‌লি‌শে মি‌লি‌য়ে গেল। শশী ম‌নে ম‌নে বলল,
‘সজল তো কখনও আমা‌কে অজর্ন কর‌তে চায়‌নি। চাই‌লে হয়‌তো আজ রাযী‌নের স্থা‌নে সজল থাকত।’

ভাবনার ঘোর কাট‌তেই দেখল রাযীন শশীর দি‌কে ঝু‌কে আছে। শশী অনেকটা চম‌কে গি‌য়ে বলল,
‘এমন ক‌রে তা‌কি‌য়ে আছেন কেন?’
‘‌তোমার দি‌কে তা‌কি‌য়ে থাক‌তে আমার ভা‌লো লাগে। ম‌নে অন্যরকম শা‌ন্তি লাগে।’
‘আচ্ছা এখন সরে যান।’
‘নাহ। তু‌মি জা‌নো তোমা‌কে প্রথম ক‌বে দে‌খে‌ছিলাম? কীভা‌বে তোমার প্রে‌মে পড়লাম?’
‘আজ শুন‌তে ইচ্ছা কর‌ছে না।’
‘ও‌কে।’
‘ত‌বে যে‌দিন শুন‌তে চাইব সে‌দিন বলবেন কিন্তু।’

রাযীন শশীর কপা‌লে চু‌মো খে‌য়ে বলল,
‘ও‌কে।’
শশী বেশ রাগ দে‌খি‌য়ে বলল,
‘আর কথায় কথায় আমা‌কে চু‌মো খাওয়া বন্ধ করুন।’
‘স‌রি, এটা পারব না।’
‘‌কেন পার‌বেন না?’
‘এ‌কে তো নি‌জের এত সুন্দর ভা‌লোবাসার মানুষটা‌কে নি‌জের স্ত্রী হিসা‌বে পে‌য়েও স্বামীর অধিকার পা‌চ্ছি না, তারপর চু‌মোও খা‌বো না, এতটা ভা‌লো হ‌তে পারব না। দুঃখিত।’
‘আপ‌নি চাই‌লে নি‌জের অধিকার বু‌ঝে নি‌তে পা‌রেন‌।’
রাযীন ভ্রু কুচ‌কে বলল,
‘স‌ত্যি?’
ক‌ঠিন ক‌ন্ঠে শশী বলল,
‘হ্য‌াঁ।’

রাযীন শশীর দি‌কে এগো‌চ্ছে, শশীর সারা শরীর থরথর ক‌রে কাঁপ‌ছে, চোখ বন্ধ ক‌রে রইল শশী। রাযীন শব্দ করে হে‌সে আবার শশী ডানগা‌লে ঠোঁট ছু‌ইয়ে বলল,
‘‌যে‌দিন তু‌মি ভা‌লোব‌াসি বল‌বে, সে‌দিন তোমা‌কে, তোমার রাযীন তার পাগল করা ভা‌লোবাসা উপহার দি‌বে। তার আগে না। আমার ভা‌লোবাসা এত সস্তা না‌কি যে, তু‌মি আমা‌কে ভালোবা‌সো না, জে‌নেও তোমা‌কে ভা‌লোবাসা দিব?’

শশী আরেক দি‌কে তা‌কিয়ে বলল,
‘আমার যত দ্রুত সম্ভব বাচ্চা চাই।’
‘‌কেন?’
‘যা‌তে বাচ্চার টা‌নে হ‌লেও আমি সংসা‌র কর‌তে পা‌রি।’
‘আমার ভা‌লোবাসা‌কে এতটা হালকা ক‌রে নিও না শশী যে, বাচ্চার টা‌নে তোমা‌কে সংসার কর‌তে হ‌বে! মনে রে‌খো এই তু‌মি এক‌দিন আমা‌কে পাগ‌লের ম‌তো ভা‌লোবাস‌বে। তখন তোমার পু‌রো পৃ‌থিবী এক‌দি‌কে থাক‌বে আর আমি এক‌দি‌কে থাকব।’
‘আ‌মি সজল‌কে ভুল‌তে চাই। সে জন্য বাচ্চা নি‌য়ে নি‌জে‌কে বাচ্চার সা‌থে ব্যাস্ত রাখ‌তে চাই।’

রাযীন দুষ্টু হে‌সে বলল,
‘ও‌ঠো তো শোয়া থে‌কে।’
‌শশী উঠে বস‌তেই রাযীন শশীর হাত দু‌টো ধ‌রে ওর দুই গা‌লে রে‌খে বলল,
‘এই দে‌খো একটা বাচ্চা। বাচ্চাটার নাম রাযীন। যত‌দিন তোমার আমার ভা‌লোবাসার অংশ পৃ‌থিবীতে না আসে তত‌দিন এই বাচ্চাটা‌কে নি‌য়ে ব্যস্ত থা‌কো। চিন্তা ক‌রো না, ভা‌লোবাসা খ‌ুব দ্র‌ুত হ‌য়ে যা‌বে। খুব দ্রুতই তু‌মি আমা‌কে পাগ‌লের ম‌তো ভা‌লোবাস‌বে।’

শশী ঝরঝর ক‌রে কাঁদ‌তে লাগল। রাযীন বুঝ‌তে পারল সজ‌লের জন্য শশীর খুব খারাপ লাগ‌ছে। রাযীন গভীর আবে‌শে শশী‌কে বু‌কের মা‌ঝে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে বলল,
‘শশী, তোমা‌কে নিয়ে আমি বড্ড স্বার্থপর। তোমা‌কে ছে‌ড়ে দেওয়া আমার প‌ক্ষে সম্ভব ছি‌লো না। তা-ও ছে‌ড়ে দি‌য়ে‌ছিলাম ছয় মাস আগে। কিন্তু যখন বুঝ‌তে পারলাম সজল তোমার জন্য ঠিক নয়, তখন ভাবলাম পু‌রো পৃ‌থিবী গোল্লায় যাক, আমার শশী‌কে চাই। চাই-ই চাই। শশীর ভা‌লো থাকার জন্যও হ‌লেও শশী‌কে আমার চাই। তু‌মি এখন খুব কাঁ‌দো শশী। আমি তোমা‌কে কাঁদ‌তে বারন করব না। এখন কেঁ‌দে কেঁ‌দে তু‌মি তোমার কান্নাটা শেষ ক‌রে দাও, কারণ বা‌কি জীবনটা তোমার খুব সু‌খে কাট‌বে। হাস‌তে হাস‌তে শা‌ন্তি‌তে কাট‌বে। আর সে জীব‌নে তোমার পা‌শে রাযীন আর তার প‌রিবার থাক‌বে।’

শশী রাযীন‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে অঝো‌রে কাঁদ‌তে লাগল। শশীর কান্না দে‌খে রাযী‌নের চোখ থে‌কেও জল ঝরছে। নি‌জের চোখ মু‌ছে শশী‌কে আরও গভীরভা‌বে জড়ি‌য়ে ধ‌রে ম‌নে ম‌নে বলল,
‘‌তোমা‌র ভা‌লোবাসা অর্জন কর‌তে আমি সব কর‌তে পা‌রি, সব। তু‌মি জা‌নো না, আমি তোমার জন্য কোন লে‌ভে‌লের পাগল।’

২০!!

ফজ‌রের আযান শু‌নেই ঘুম ভাঙল রেনুর। মাথাটা ভনভন ক‌রে ঘুর‌ছে। সারা রাত ঠিক‌ভা‌বে ঘুম হয়‌নি। রা‌তে শু‌তে শু‌তেই দু‌টো বে‌জে গে‌ছে। তারপর রো‌মিসা মে‌য়েটা এত বকবক ক‌রে‌ছে যে, রেনু চে‌য়েও ঘুমা‌তে পা‌রে‌নি। অসুস্থ শরীরটা ধকল নি‌তে পার‌ছে না। মাথাটা যন্ত্রনায় ছি‌ড়ে যা‌চ্ছে। সা‌থে খিদাও ‌লে‌গে‌ছে খুব। রা‌তে সবার সা‌থে খে‌তে পা‌রে‌নি রেনু। বাচ্চা মিসক্যা‌রেজ হবার পর থে‌কে ও নামাজ পড়‌ছে না। এখনও ব্লি‌ডিং বন্ধ হয়‌নি। নামাজ না পড়‌লেও রোজই ফজ‌রের আযান শু‌নে ঘুম ভা‌ঙে ওর।

রুম থে‌কে বের হ‌য়ে দেখল, ঘ‌রের কেউই ওঠে‌নি। রেনু হাই তুল‌তে তুল‌তে রান্না ঘ‌রে গে‌ল। রান্নাঘ‌রে গি‌য়ে ফ্রিজ খুলল। ফ্রি‌জে অনেক রকম, ফল, মি‌ষ্টি আর পিঠা রাখা। রেনু দু‌টো দু‌ধে ভিজা‌নো নক‌শী পিটা প্লে‌টে নি‌য়ে রান্নাঘ‌রে দাঁ‌ড়ি‌য়ে-ই খাওয়া শুরু করল।
‘কী কর‌ছো?’
হা‌সি বেগ‌মের কথায় অনেকটা চম‌কে উঠল রেনু। নি‌জে‌কে সাম‌লে রেনু বলল,
‘মা রা‌তে খাই‌নি এ কার‌ণে খুব খি‌দে পে‌য়ে‌ছি‌লো। তাই কিছু খা‌চ্ছি।’

হা‌সি বেশ বির‌ক্তি মাখা ক‌ন্ঠে বলল,
‘ঘর ভর্তি মেহমান। আর ঘরের বউ মাঝরা‌তে চো‌রের ম‌তো লু‌কি‌য়ে খা‌চ্ছে। লো‌কে দেখ‌লে কী বলবে?’
খাবারগু‌লো যে‌নো রেনুর গলায়ই আট‌কে গে‌ল। কান্নায় চোখ দু‌টো সা‌থে সা‌থে ভ‌রে গেল। তারপর বলল,
‘মা, নি‌জের ঘ‌রে কিছু খে‌লে বু‌ঝি তা চুরি হ‌য়ে যায়?’
হা‌সি বেশ ক‌ঠিন ক‌ন্ঠে বলল,
‘এটা তোমার নি‌জের ঘর নয়, তোমার শ্বশুর
বা‌ড়ি। আর সংসারটা আমার। এখা‌নে নিঃশ্বাসও আমার অনুম‌তি নি‌য়ে নি‌তে হ‌বে। এ ধর‌নের ছ্যাচড়া‌মি আর কখনও কর‌বে না।’

এবার আর রেনু কান্না আটকা‌তে পারল না। হিচ‌কি উঠে গে‌ল ওর। হিচ‌কি দি‌তে দি‌তেই বলল,
‘মা আপ‌নিও এ বা‌ড়ির বউ, মে‌য়ে নন। হয়তো সংসারটা আপ‌নি নি‌জের ম‌তো গু‌ছি‌য়ে নি‌য়ে‌ছেন। আমরাও হয়তো একটা সময় পর গু‌ছি‌য়ে নিব। তখন হয়‌তো সংসার নি‌য়ে এ গর্বটা আর কর‌তে পার‌বেন না। মা মানু‌ষকে এমন কো‌নো কথা বল‌বেন না, যেটা তার হৃদ‌য়ে ক্ষতের সৃ‌ষ্টি ক‌রে। সম‌য়ের সা‌থে সা‌থে ক্ষতটা হয়তো ভ‌রে যা‌বে ‌কিন্তু দাগটা থে‌কে যা‌বে। সময় চ‌লে যায়, মানু‌ষের দেওয়া ক্ষতটা ঘু‌চে যায় কিন্তু দাগটা থে‌কে যায় আজীবন।’

‌রেনু আর কিছু বলল না, চোখ মুছ‌তে মুছ‌তে চ‌লে গে‌ল রুমে। ওদের দুজনার ক‌থোপকথন আরেকজন শুনল। সে আর কেউ নয় শিহা‌বের বাবা নূর ইসলাম। তি‌নি হা‌সি বেগ‌মের কা‌ছে গি‌য়ে বলল,
‘হা‌সি তোমার মু‌খে এমন কথা আমি কখনও আশা ক‌রিনি। আজ তু‌মি আমার চো‌খে অনেক নি‌চে নে‌মে গে‌লে। শ্বশুরবা‌ড়ি য‌দি মে‌য়েদের নি‌জের বা‌ড়ি না হয়, তাহ‌লে এটা তো তোমারও বা‌ড়ি না। তোমারও এখা‌নে কর্তৃত্ব দেখা‌নোটা শোভা দেখায় না! ছি হা‌সি! আমি কী বলব ভে‌বে পা‌চ্ছি না!

‌রেনু কান্না কর‌তে কর‌তে রু‌মের দি‌কে যে‌তে নি‌লে শিহা‌বের সাম‌নে পড়ল। শিহাব রেনুর চোখে পা‌নি দে‌খে অনেকটা বিচ‌লিত হ‌য়ে বলল,
‘কী হয়েছে রেনু? তোমার শরীর ঠিক আছে তো?’
‌রেনু নাক টে‌নে বলল,
‘কিছু না। শরীরটা খারাপ লাগ‌ছে। আপ‌নি যান নামাজ প‌ড়ে আসুন।’
‌শিহাব আর কিছু বল‌তে পারল না। তার আগেই শিহা‌বের চাচা শিহাব‌কে নামাজ পড়‌তে ডাক‌লেন। বাধ্য হ‌য়ে শিহাব‌কে যে‌তে হ‌ল।

সকাল সাতটা,
শিহাব আজ অফি‌সের জন্য একটু জল‌দি বের হ‌য়ে‌ছে। প্রথ‌মে মি‌ষ্টির দোকা‌নে গি‌য়ে দই, মি‌ষ্টির অর্ডার দি‌য়ে তারপর অফি‌সে যা‌বে। তাছাড়া দুপু‌রের ম‌ধ্যে সব কাজ শেষ ক‌রে দুপু‌রে ফির‌বে। শশীর শ্বশুর বা‌ড়ির লোক আস‌বে দুপু‌রে। শিহা‌বের সেখা‌নে থাক‌তে হ‌বে।

বা‌ড়ি থে‌কে বের হ‌য়ে কিছু দূর যে‌তেই দেখল সজল একটা গা‌ছের গু‌ড়ির উপর বিষন্ন ম‌নে ব‌সে আছে। সজলকে দেখে শিহাব ওর সাম‌নে গি‌য়ে বলল,
‘তু‌মি শশীর ক্লাসমেট না?’
‌সজল চোখ তু‌লে তাকাল। চোখ জোড়া লাল টকটকে। সারা রাত না ঘুমা‌লে যেমন লাল হয়, ঠিক তেমন। একরাতের ম‌ধ্যেই মুখটা একদম শু‌কি‌য়ে গে‌ছে। সজল‌কে দেখ‌লে ম‌নে হয় কত দি‌নের দুঃখী, অভুক্ত। শিহাব আবার সজল‌কে বলল,
‘তু‌মি কাল শশীর বি‌য়েতেও তো এসে‌ছি‌লে না? এখা‌নে এমন একা একা ব‌সে আছো কেন?’

সজল কিছুক্ষণ চুপ থে‌কে শীতল ক‌ন্ঠে বলল,
‘আ‌মি সকা‌লে কিছু কা‌জের জন্য এদিকটায় এসে‌ছিলাম। বা‌ড়িই যা‌চ্ছিলাম, হঠাৎ শরীরটা খারাপ লাগ‌ছি‌লো ব‌লে এখা‌নে বসে‌ছিলাম।’
সজল মিথ্যা বলল ও সকা‌লে এসে‌ছে। অথচ সারা রাত ধ‌রেই ও এখানে ব‌সে ছি‌লো। গতকাল সকা‌লে খে‌য়ে‌ছি‌লো, তারপর থে‌কে কিছ‌ু খাওয়া তো দূ‌রে থাক পা‌নিও পান কর‌তে পা‌রে‌নি। সারা রাত এখা‌নে ব‌সে পাগ‌লের ম‌তো কেঁ‌দে‌ছে। সজ‌লের শরী‌রে বিন্দু মাত্র শ‌ক্তি নেই। মাথাটা বড্ড ঘোরা‌চ্ছে।

সজল‌কে এ অবস্থা দে‌খে আর ওর কথা শু‌নে শিহাব বলল,
‘‌কী ব‌লো? শরীর খারাপ লাগ‌ছে? কী হ‌য়ে‌ছে? তু‌মি তাহ‌লে আমা‌দের বাসায় চ‌লো? সেখা‌নে গি‌য়ে বিশ্রাম নি‌বে।’
‘না না ভাইয়া চি‌ন্তিত হ‌বেন না। আমি বা‌ড়ি চলে যে‌তে পারব।’
‘‌তোমা‌দের বা‌ড়িটা কোন‌দি‌কে?’
‘সদ‌রে রো‌ডে।’
‘ওহ আচ্ছা। আমিও ওদিকটায় যা‌চ্ছি। তু‌মি আমার গা‌ড়ি‌তে ক‌রে যে‌তে পা‌রো চাই‌লে।’
‘না না ঠিক আছে। আমি রিকশা ক‌রে চ‌লে যাব।’
‘আ‌রে কো‌নো সমস্যা নেই। আমা‌দের বা‌ড়িটা তো ভিতরের গ‌লি‌তে প‌রেছে, সেখা‌নে আমার গা‌ড়ি ঢুকা‌নো যায় না। সে কার‌ণে এখা‌নে আমার চাচার বা‌ড়ির গ্যা‌রে‌জে রে‌খে যাই। তুমি এখানে দুই মি‌নিট ব‌সো, আমি গ্যা‌রেজ থে‌কে গা‌ড়িটা বের ক‌রে আন‌ছি।’
‌’আচ্ছা।’
‌শিহাব চ‌লে যে‌তেই সজল একটা রিকশাওয়া‌লে দে‌খে ডাক দি‌য়ে রিকশায় উঠে চলে গে‌ল। শিহাব গা‌ড়ি নি‌য়ে এসে সজল‌কে না দে‌খে বলল,
‘আজব বেয়াদপ ছে‌লে তো? কিছু না ব‌লেই চ‌লে গে‌ল।’

চল‌বে……..

#এক‌দিন_বিকা‌লে_সকাল_হ‌য়ে‌ছি‌লো
‌লেখাঃ শার‌মিন আক্তার সাথী
পর্বঃ১৬

‌শিহাব আর সজ‌লের‌ দি‌কে তেমন খেয়াল না দি‌য়ে নিজ কর্ম ক্ষে‌ত্রে চ‌লে গেল।
সজল বা‌ড়ি যাবার সা‌থে সা‌থে ওর মা শাহানা বেগ‌ম জি‌জ্ঞেস কর‌লেন,
‘‌কি‌রে সজল সারা রাত কোথ‌ায় ছি‌লি?’
‘‌ছিলাম এক জায়গায়।’
‘‌তোর বাবা আর আমি কত টেনশ‌নে ছিলাম তার হিসাব আছে তোর? একটা ফোন পর্যন্ত ক‌রি‌সনি! আর তোর ফোন বন্ধ কেন?’
‘‌ফো‌নে চার্জ ছি‌লো না।’
‘কোথায় ছি‌লি বল‌লি না তো?’
‘জা‌হি‌দের বাসায়।’
‘‌মিথ্যা বল‌ছিস কেন? আমি জা‌হিদ‌কে কল কর‌ছি‌লাম, ও বলল, তোর সাথে ওর দেখা সন্ধ্যাবেলা হ‌য়ে‌ছি‌লো, তারপর না‌কি তুই বা‌ড়ির দি‌কে আস‌ছি‌লি? কিন্তু বা‌ড়ি তো আসিস‌নি, তাহ‌লে ছি‌লি কোথায়?’

সজল চিৎকার ক‌রে বলল,
‘জাহান্না‌মে ছিলাম। এত প্রশ্ন কর‌ছো কেন? আমার খিদা পে‌য়ে‌ছে খুব। খে‌তে দাও। ভাত দাও।’
সজ‌লের এমন রাগ দে‌খে শাহানা চুপ ক‌রে গে‌ল। সজল কখনও এমন আচরণ ক‌রে না। সজল খুব শ‌ান্ত ছে‌লে। ‌বি‌শেষ ক‌রে ওর বাবা-মা‌য়ের সা‌থে কখ‌নও উঁচু গলায় কথা বলে না। শাহানা বুঝ‌লেন কিছু তো সমস্যা হ‌য়ে‌ছে। ত‌বে এখন ‌তি‌নি কথা বলাটা ঠিক ম‌নে কর‌লেন না। তি‌নি ঠান্ডা গলায় বলল,
‘সকা‌লে তো ভাত রান্না ক‌রি‌নি। রু‌টি ভা‌জি ক‌রে‌ছি।’
‘না, আমি ভাত খাব।’
‘রা‌তের ভাত রাখা আছে। পা‌নি দি‌য়ে রে‌খেছিলাম।’
‘দাও পান্তা ভাত-ই দাও।’

শাহানা ডিম ভে‌জে সজলকে ভাত দি‌লেন। সজল ভাত খা‌চ্ছে। ওর চোখ থে‌কে অনবরত অশ্রু ঝরছে। সজল টে‌বি‌লে রাখা শুকনা ম‌রিচ ভাজা গু‌লো শুধু শুধু চি‌বি‌য়ে খে‌তে লাগল। শাহানা বেগম তা দে‌খে বল‌লেন,
‘কী কর‌ছিস সজল? এ ম‌রিচ তো প্রচন্ড ঝাল ম‌রিচ। ছিট‌কি ম‌রিচ এগু‌লো। একটা ম‌রিচ-ই ঠিকভা‌বে খাওয়া যায় না। আর তুই কতগু‌লো খে‌লি তাও শুধু চি‌বি‌য়ে। তোর মুখ তো ঝা‌লে জ্ব‌লে যা‌বে।’

সজল বেশ চিৎকার ক‌রে বলল,
‘তা‌তেও আমার বু‌কের জ্বলনী কম‌বে না।’
শাহানা বেশ চি‌ন্তিত হ‌য়ে বলল,
‘কী হ‌য়ে‌ছে বাবা তোর?’
সজল কান্না কর‌তে কর‌তে বলল,
‘মা আজ আমি জীব‌নের এমন কিছু হা‌রি‌য়ে‌ছি যা‌ আর ফি‌রে পাবার নয়?’
‘কী হা‌রি‌য়ে‌ছিস বাবা? খুব দা‌মি কিছু? টেনশন ক‌রিস না, তোর বাবা‌কে বল‌লে তি‌নি টাকা দি‌য়ে দি‌বেন।’
সজল আরও চিৎকার ক‌রে বলল,
‘‌তোমা‌দের কা‌ছে তো টাকার চে‌য়ে দা‌মি কিছু নেই। আমা‌কেও বা‌নি‌য়ে‌ছো তেমন। তোমা‌দের শিক্ষায় আমা‌কে এমন বা‌নি‌য়ে‌ছে। আজ আমার নি‌জে‌কে নিঃস্ব ম‌নে হ‌চ্ছে।’

সজল ভাত পু‌রোটা খে‌লোও না, উঠে চলে গে‌ল নি‌জের রু‌মে। রুমে অনেকটা সময় নি‌য়ে গোসল করল। তারপর জা‌হিদ‌কে কল ক‌রে বলল,
‘ভাই একটা অনু‌রোধ করব। রাখ‌বি?’
‘রাখার ম‌তো হ‌লে রাখব।’
‘আমা‌কে জাস্ট একবার শশীর সা‌থে কথা ব‌লি‌য়ে দি‌বি? সরাস‌রি দেখা করা লা‌গবে না, জাস্ট ফো‌নে বল‌লেই হ‌বে। ওর ফোন বন্ধ।’
‌‌কিছুক্ষণ ভে‌বে জা‌হিদ বলল,
‘আচ্ছা দে‌খি।’

২১!!

সকাল আটটা,
শশীর ঘুম ভাঙল। চোখ মে‌লতেই খা‌নিকটা চম‌কে উঠল। রাযীন ওকে শক্ত ক‌রে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে আছে। ও রাযী‌নের বু‌কের মা‌ঝে। রাযী‌নের শ্বাস-প্রশ্বা‌সের শব্দ স্পষ্ট শুন‌তে পা‌চ্ছিল শশী। শশী এক ধ্যা‌নে রাযী‌নের দি‌কে তা‌কি‌য়ে রইল। খুব কাছ থে‌কে রাযীন‌কে দেখ‌তে লাগল। তখন রাযীন বলল,
‘ওভা‌বে তা‌কি‌য়ে থে‌কো না, তাহলে আজই আমার প্রেমে প‌ড়ে যা‌বে। আমি দেখ‌তে বেশ সুন্দর কিনা!’
শশী মুখ বাঁকি‌য়ে বলল,
‘আপ‌নি নি‌জে‌কে নি‌য়ে যতটা গর্ব ক‌রেন ততটা সুন্দর নন।’
‘তাহ‌লে আমা‌কে জ‌ড়ি‌য়ে আছো কেন? ছা‌ড়ো।’

শশী তাড়াহু‌ড়ো ক‌রে রাযী‌নের থে‌কে নি‌জে‌কে ছাড়া‌নোর চেষ্টা কর‌তে লাগল। রাযীন বলল,
‘‌বাইন মা‌ছের ম‌তো মোড়া‌চ্ছ কেন? একটু ওয়েট, ছাড়ছি আমি।’
রাযী‌নের থে‌কে নি‌জে‌কে ছা‌ড়ি‌য়ে শশী নি‌জের ওড়না খুঁজতে লাগল। ওড়না পে‌লো রাযী‌নের পি‌ঠের তলায়। রাযীন শশীর দি‌কে তা‌কি‌য়ে বলল,
‘‌মি‌সেস শশী, প্লিজ আমা‌কে এককাপ চা এনে দাও।’
‘আগে মুখ ধু‌য়ে আসুন।’
‘‌সে তু‌মি চা আন‌তে আন‌তে ধু‌য়ে ফেলব। প্রচন্ড মাথা ব্যথা কর‌ছে।’
‘সারা রাত না ঘু‌মি‌য়ে পটরপটর কর‌লে মাথা তো ব্যথা কর‌বেই।’
‘বাসর রাত বু‌ঝি ঘুমা‌নোর জন্য?’
‘তাহ‌লে কি‌সের জন্য।’
রাযীন শশীর দিতে তা‌কি‌য়ে দুষ্টু হাসল। কথাটা ব‌লে শশী নি‌জে‌কে নি‌জেই ম‌নে ম‌নে বকল কিচুক্ষণ। মনে ম‌নে বলল,
‘এই অসভ্য লোকটার সাথে কথা হিসাব ক‌রে বল‌তে হ‌বে।’

দুপু‌রে গোস‌লের পর রাযীন, শশীর তোয়ালে প‌রে বের হলো। তা দে‌খে শশী বলল,
‘আমার তোয়া‌লে কেন পড়‌ছেন?’
‘‌ঠিক আছে খু‌লে নাও। সা‌থে দে‌খে নেও ইং‌লিশ মুভি।’
শশী দাঁ‌তে দাঁত চে‌পে বলল,
‘আপ‌নি চূড়ান্ত লে‌ভে‌লের অসভ্য।’
‘ও‌কে। থ্যাংক ইউ। আই লাভ ইউ।’
শশী দীর্ঘশ্বাস ছে‌ড়ে ম‌নে ম‌নে বলল,
‘এই লোকটা‌কে বকা দেওয়া, না দেওয়া সমান। যা-ই ব‌লি সেটাই দুষ্টু‌মি‌তে উড়ি‌য়ে দেয়। তারপর মু‌খে বলল, রাযীন আপনাদের বাসা থে‌কে তো আজ মেহমান আসার কথা ছি‌লো, তাহ‌লে সকা‌লে ফোন ক‌রে বলল কেন আজ নয় কাল আস‌বে?’

রাযীন মাথা মুছ‌তে মুছ‌তে বলল,
‘সত্যি কারণ বলব? না‌কি মিথ্যা?’
‘স‌ত্যি-ই বলুন।’
‘কাল এসে তোমা‌কে সহ আমাদের বা‌ড়ি নি‌য়ে যাব।’
শশী বেশ অবাক হ‌য়ে বলল,
‘‌কিন্তু রাযীন কথা তো ছি‌লো, দুই মাস পর আমা‌কে আনুষ্ঠা‌নিকভা‌বে আপনা‌দের বাড়ি নি‌য়ে যা‌বেন।’
‘তখন আনুষ্ঠা‌নিকভা‌বে যা‌বে, ত‌বে এখন যা‌বে চু‌পি চু‌পি।’
‘চু‌পি চু‌পি কেন যাব? আমি কি চোর?’
রাযীন হে‌সে বলল,
‘‌চোর-ই তো। আমার মনটা চু‌রি ক‌রে‌ছো।’
‘‌হেয়ালী না ক‌রে স‌ত্যি কথাটা বলুন তো?’
‘স‌ত্যি কথা হ‌চ্ছে পরশু আমি চট্টগ্রাম চ‌লে যা‌চ্ছি।’
‘‌তো?’
‘আমার সা‌থে তুমিও যা‌বে। সে কা‌র‌ণে কাল আমার প‌রিবা‌রে লে‌াক তোমা‌কে নি‌তে আস‌বে।’
‘এটা কখন ঠিক হলো? আজ সকা‌লে তোমার প‌রিবা‌রের সা‌থে বাবা ফো‌নে কথা ব‌লে ঠিক ক‌রে ফেললেন।’
‘অামা‌কে কেন ব‌লেন‌নি?’
‘আ‌মি দুপু‌রে খাবা‌রের পর-ই বলতাম।’

শশী কিছুক্ষণ চুপ থে‌কে, বেশ মন খারাপ ক‌রে বলল,
‘রাযীন আমা‌কে চট্টগ্র‌াম সা‌থে নি‌য়ে যাওয়াটা জরুরি?’
‘খুব জরুরি।’
‘কেন?’
‘‌তোমা‌কে সা‌থে না নি‌লে, তু‌মি আম‌ার কা‌ছে না থাক‌লে, তোমা‌কে পটা‌বো কী ক‌রে? য‌দি একে অপরকে না জা‌নি ত‌বে ভা‌লোবাসাটা হ‌বে কী ক‌রে? আর তাছাড়া আমি তোমা‌কে ছে‌ড়ে থাক‌তে পারব না।’
শশী এক নজ‌রে শুধু রাযী‌নের পা‌নে চে‌য়ে রইল।

২২!!

রা‌তে শিহাব একটা বড় ব্যাগ এনে রেনুর হা‌তে দি‌লো। রেনু জি‌জ্ঞেস করল,
‘এ‌তে কী?’
‘‌খু‌লে দে‌খো।’
‌রেনু খু‌লে দেখল ক‌য়েক রকম বিস্কুট, ক্রিম রোল, কেক, ড্রাই ফ্রুট’স। রেনু কৌটাগু‌লো দে‌খে বলল,
‘এগু‌লো কী শিহাব? আর মা‌কে না দি‌য়ে এখা‌নে কেন এনে‌ছেন?’
‘‌এগু‌লো আমা‌দের রুমেই রা‌খো। কৌটাগু‌লো কে‌বি‌নে‌টে রা‌খো।’
‘‌কেন?’
‘তোমার রা‌তে খিদা পে‌লে খা‌বে।’
‘‌কেন? ঘ‌রে কি খাবার নেই না‌কি?’
‘আ‌ছে তাও রা‌তে খুদা লাগ‌লে রু‌মে ব‌সেই খা‌বে। সে জন্য আনলাম।’
‘না শিহাব প্লিজ এমনটা দেখ‌তে শোভনীয় দেখায় না। তাছাড়া বা‌সার সবাই দেখ‌লে কি না কী ভাবে?’

‌শিহাব রেনুর পা‌নে চে‌য়ে হে‌সে বলল,
‘বাসার সবাই তো আর তোমার কে‌বি‌নেট কিংবা ওয়ারড্রব চেক কর‌তে আস‌বে না। এম‌নিতেই তু‌মি অসুস্থ। এখন বার বার খে‌তে হ‌বে তোমা‌কে। কিন্তু‌ তুমি কী ক‌রো? ঘ‌রের সবাই যখন খায় তু‌মিও তখন খাও। কিন্তু তোমার যে প‌রিমান ব্লাডলস হ‌য়ে‌ছে সেটা তো পূরন হ‌তে হ‌বে। ত‌ারজন্য তোমা‌কে বে‌শি ক‌রে খে‌তে হ‌বে। বাসার সবার সাম‌নে লজ্জায় খাও না। ওকে এখন থে‌কে রুমে ব‌সে খা‌বে। তোমার নি‌য়ে আস‌তে লজ্জা কর‌লে আমি এনে দিব। বাট প্লিজ নি‌জের খেয়‌াল রা‌খো। এখন এগু‌লো তোমার বুঝম‌তো গু‌ছি‌য়ে রা‌খো। যখন ইচ্ছা ক‌রবে তখন খা‌বে।’

‌শিহা‌বের এই ছো‌টো ছো‌টো যত্নগু‌লোই রেনু‌কে বারংবার মুগ্ধ ক‌রে। রেনুর খুব ইচ্ছা কর‌ছে শিহাব‌কে জ‌ড়ি‌য়ে ধ‌রে চুমো খে‌তে কিন্তু লজ্জায় তা আর হ‌লো না। আর এদি‌কে শিহাব ম‌নে ম‌নে বলল,
‘মা‌য়ের খারাপ ব্যবহা‌রের জন্য স‌রি রেনু। আমি কখ‌নও ভা‌বি‌নি, মা খাওয়া নি‌য়ে তোমা‌কে কিছু বল‌বেন। আজ সকা‌লে নামা‌জের সময় বাবা না বল‌লে হয়‌তো জানতামও না। তু‌মি তো কিছু বলোই না আমা‌কে।’

সকা‌লে ফজ‌রের নামা‌জের পর নূর ইসলাম সা‌হেব শিহাব‌কে ডে‌কে বল‌লেন,
‘শিহাব তো‌কে একটা গল্প ব‌লি।’
‘ব‌লেন বাবা।’
‘আমার যখন তোর মা‌য়ের সাথে বি‌য়ে হয়, তখন তোর মায়ের বয়স ১৫ বছর। বি‌য়ের পর তোর মা সবার সাম‌নে লজ্জায় পেট ভ‌রে খে‌তে পারত না। প্রায়ই দেখতাম রা‌তে উঠে হাঁটাহা‌ঁটি ক‌রে, জি‌জ্ঞেস কর‌লে বলত কিছু না। প‌রে অবশ্য জে‌নে‌ছিলাম ওর রা‌তে তখন খি‌দে পে‌তো। তো যা হোক ঘ‌রে নি‌জের ম‌র্জি ম‌তো কিছু খে‌তেও পারত না, কারণ সংসা‌র তখন তোর দা‌দির। মা-ও উঠ‌তে ব‌সতে তোর মা‌য়ের ভুল ধরত। সেসব বিষয় আমার খারাপ লাগ‌লেও, বে‌শি খারাপ লাগত যখন তোর মা‌কে খাওয়া নি‌য়ে মা খোটা দি‌তেন। তোর মা লু‌কি‌য়ে কাঁদ‌তেন। বিষয়টা আমি খেয়াল করলাম। মা‌কে তো কিছু বল‌তে পারতাম না, ভাবতাম মা য‌দি কষ্ট পান। সে কার‌ণে শুকনা খাবার, মা‌নে‌ বিস্কুট, খুরমা, বাদাম এসব লু‌কিয়ে এনে তোর মা‌কে দিতাম। রাতে তার খি‌দে পে‌লে সে খেতো।’

শিহাব মৃদু হে‌সে বলল,
‘বাবা আপ‌নি মা‌কে খুব ভা‌লোবা‌সেন?’
‘হ্যাঁ ত‌বে ইদা‌নিং তার কা‌জে, তোর দা‌দির ছাপ পাই।’
‘‌যেমন?’
‘‌সে শাশু‌ড়ি হ‌য়ে ভু‌লে গে‌ছে, সেও কখনও ঘ‌রের বউ ছি‌লো। রেনুর সাথে তার ব্যবহার তুই কখ‌নো খেয়াল ক‌রে‌ছিস? দিন‌কে দিন খারাপ হ‌চ্ছে। কিছুক্ষণ আগে তো খাওয়ার খোটা নিয়ে মে‌য়েটা‌কে কাঁদিয়ে ছাড়ল। তুই বু‌দ্ধিমান ছে‌লে। য‌থেষ্ট ম্যা‌চিওর। তোর বোঝা উচিত কী করা দ‌রকার!’

নূর ইসলা‌মের কথাটা শিহাব ভা‌লো ক‌রে ভাবল। তারপর ভাবল মা যে‌হেতু এমন ক‌রে, ত‌বে আমারও এমন কিছু করা দরকার যা‌তে মা-ও কষ্ট না পান, আর রেনুও খু‌শি হয়।

চল‌বে………