গল্প ঃ ক্ষ্যাত_ ছেলে
পর্ব ঃ_ ১৩
লেখক ঃ অভ্র নীল
তারপর আমরা দুজনে ভাসিটি চলে গেলাম।
আজকের ক্লাসেও ঠিক মতো মনযোগ দিতে পাড়লাম না৷ শুধু সানজিদা কে হারানোর ভয়টা কোথায় থেকে এসে যেন আমায় গ্রাস করছে। আমি সেটা নিয়ে ভাবতে না চইলেও, আমার মনে সেই কথাটা কই থেকে আসতাছে আমি নিজেও বুঝতাছি না।
যাইহোক, অনেকটা চিন্তা ও হতাশার ভিতর দিয়ে আমি সকল ক্লাস করলাম। তারপর আমি সানজিদা কে বাসায় পাঠিয়ে একটা টিউশনি পড়াতে চলে আসলাম।
আজকে সেই টিউশনির বেতন দিল। তাই ভাবলাম সানজিদা আর জান্নাতের জন্য কিছু একটা নিয়ে যাই। যেই ভাবা সেই কাজ, গেলাম একটা দোকানে। আর সেখানে গিয়ে জান্নাতের জন্য চকলেট আর সানজিদার জন্য আইসক্রিম নিয়ে চলে আসলাম বাসায়৷
বাসায় এসে জান্নাত এবং সানজিদা কে তাদের জিনিস দিয়ে আমি আমার রুমে চলে আসলাম৷ তারপর বিশ্রাম নিয়ে সানজিদা আর সাদিয়াকে পড়াতে চলে গেলাম৷
সেখানে গিয়ে দেখলাম সানজিদার কাছে আমাদের ভাসিটির সকল নোট নেই। তাই আমি আমার রুম থেকে সকল নোট নিয়ে গিয়ে তাকে দিলাম৷ সে সেখান থেকে কিছুটা তার নোট খাতায় উঠিয়ে নিল। আমি তাদের পড়ানো শেষ করে চলে আসলাম। এসে আমিও পড়তে বসলাম।
এইভাবে রাত প্রায় ৮ টা বেজে গেল, সানজিদা আমায় খেতে ডাকতে আসলো। আমিও তাকে যাচ্ছি বলে পাঠিয়ে দিলাম। তারপর আমি বই বন্ধ করে খাবার খেতে চলে গেলাম।
খাবার খেয়ে এসে আমি আবারও পড়তে বসলাম। পড়তে পড়তে পড়ার টেবিলেই আমি ঘুমিয়ে পড়েছি৷
★★★★★★
আজকে থেকে আমাদের পরীক্ষা শুরু। আমার পিপারেশন আলহামদুলিল্লাহ ভালো। পরীক্ষার হলে আমি আর সানজিদা একসাথে ঢুকলাম। সেখানে গিয়ে দেখি লিজাও আমাদের সাথে পরীক্ষা দিবে। সে তার নিজের সিট আগে থেকেই খুজে রেখেছে।
তাই আমরা দুইজনে নিজেদের সিট খুজতে লাগলাম। ভাগ্যের জোরে সানজিদা আমার পিছনের সিটে আর আমি তার সামনের সিটে পড়লাম৷ আমার সাথে আরও একটা মেয়ে বসেছে। দেখে মনে হয় সেও বড়লোক বাবার দুলালি।
আমি আমার সিটে বসলাম। আমি এমন ভাবে বসলাম যেন সানজিদা আমার লেখা বুঝতে পারে।
আমাদের পরীক্ষা শুরু হয়ে গেল। স্যার আমাদের খাতা এবং প্রশ্নপত্র দিয়ে দিলেন। আমি আগে প্রশ্নটা ভালো করে দেখলাম। আর প্রশ্ন দেখে আমার মনটা খুশি হয়ে গেল। কারণ আমার সব কমন পড়েছে।
আমি মনের আনন্দে লিখতে লাগলাম। আর আমি আগেই বলেছি আমি এমন ভাবে বসেছি, যে সানজিদা আমার লেখা স্পষ্ট বুঝতে পারবে। সে বুঝতেও পারছে, সেও লিখছে। আমিও লিখছি।
হঠাৎ,, কে যেন আমার কলমের খোচা দিল। আমি তাকিয়ে দেখি ওই মেয়ে টা আমায় কলমের খোচা দিচ্ছি। এইদিকে আমাদের সময়ও প্রায় শেষের দিকে। আমার এখনও একটা লিখে শেষ করতে হবে। তাই আমি সেই দিকে কোনো খেয়াল করলাম না। আমি আমার মতো লিখতে লাগলাম। তখন মেয়েটি আমাকে আবারও খোচা দিল। আর নিচু স্বরে বলল–
মেয়েটি– এই তুই…… এতো নাম্বার পেরেছিস?
অভ্র– হুম পেড়েছি। কেন?
মেয়েটি– আমাকে একটু দেখা?
আমার হাতে সময় নাই। তাই আমি মেয়েটাকে সোজাসুজি বললাম–
অভ্র– আমি এখন দেখাতে পারবো না। আমার এখনও একটা লেখা বাকি রয়েছে।
এটা বলাতে মেয়েটি প্রচন্ড রেগে গেছে সেটা তার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। আমি সেই দিকে তেমন একটা খেয়াল না করে নিজের মতো করে লিখতে লাগলাম।
পরীক্ষা শেষে আমি, সানজিদা আর লিজা বাইরে চলে আসলাম। তখন সানজিদা লিজাকে বলল–
সানজিদা — কি রে একাই আসছিস? দুলাভাই আসে নাই?
লিজা– হুম সে একটু পর আসবে। তা তোদের প্রেম কেমন চলে?
এটা বলাতে সানজিদা একটু লজ্জা পেয়ে গেল। আমিও চুপ মেরে রইলাম। এইভাবে আমরা কথা বলছি আর এগোচ্ছি। তখন লিজা বলল–
লিজা– এই সানজিদা একটু আইতো ওয়াশরুমে যাবো!
এটা বলে লিজা সানজিদা কে নিয়ে চলে গেল। আমিও গিয়ে একটা জায়গায় বসে রইলাম।
তখন কই থেকে যেন সেই মেয়েটা আসলো। আর আমাকে ইশারা করে সোহানকে কী যেন বলল। আমি সেইদিকে তেমন একটা খেয়াল করলাম না। তখন সোহান আমার কাছে এসে বলল–
সোহান– কি রে তুই আমার খালাতো বোনকে পরীক্ষায় শিখে দিস নাই কেন?
অভ্র– আসলে ভাই আমার হাতে সময় ছিল না। তাই!
এটা বলতেই মেয়েটে আমাকে দিল একটা থাপ্পড়। আমি প্রতিবাদ করতে চাইলাম। কিন্তু মনের সাথে পেরে উঠলাম না। কারণ আমি একটা এতিম ছেলে।
যাইহোক, তারা আমাকে সেইদিনের মতো আবারও ইচ্ছে মতো মারতে লাগল।
তখন সানজিদা আর লিজা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে আসলো। আমাকে এইভাবে মারছে দেখে তারা দৌড়ে আসলো। তখন লিজা বলল–
লিজা– এই সোহান তুই ওদের থামতে বল ভালো করে বলছি!
সোহান– থামতে না বললে কী করবি?
লিজা– কী করবো দেখবি? আচ্ছা ওয়েট কর!
তখন লিজা তর ফোন বের করে তার বাবাকে ফোন দিল। আমি আগেই বলেছি লিজার বাবা হলো এই এলাকার ওসি! লিজা তার বাবাকে সত্যিই ফোন করছে দেখে সোহান তার দলবল নিয়ে দিল এক দৌড়। আর সানজিদা এসে আমায় তার কোলে আমার মাথা তুলে নিল। সে কাদতে লাগল।
এইবারের মারটা আগের চাইতেও বেশি ছিল। তাই আমি আর নিজেকে সামলাতে পারি নি। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম। তারপর কী হয়েছে আমি বলতে পারবো না।
আমার যখন জ্ঞান ফিরে তখন আমি নিজেকে হাসপাতালে অবস্থান অনুভব করি।সানজিদা আমার পাশেই বসে ছিল। সে বলল–
সানজিদা– এখন কেমন লাগছে?
অভ্র– হুম ভালো!
সানজিদা — তা ওরা তোমায় এইবার কেন মরছিল?
অভ্র– আমার পাশে যেই মেয়েটি বসে ছিল তুমি ওকে দেখেছো? সে পরীক্ষার মাঝে আমার কাছ থেকে একটা শিখে নিতে চাইছিল৷ আমার হাতে সময় ছিল না। তাই আমি শিখে দেই নি।
সেই মেয়েটি সোহানের খালাতো বোন হয়। আমি তাকে শিখিয়ে দেই নি, তাই সে আমাকে তার ভাইয়ের হাতে মার খাওয়াইলো।
সানজিদা — তোমাকে আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে বলছি না! তুমি প্রতিবাদ করলে না কেন?
অভ্র– আরে ছাড়তো। আঙ্কেল আন্টি এই বিষয়ে কী কিছু জানে?
সানজিদা — নাহ!
অভ্র– আচ্ছা চলো বাসায় যাবো।
সানজিদা — আচ্ছা চলো।
এরপর আমরা বাসায় চলে আসলাম।
পরের দিন পরীক্ষার হলে সেই মেয়েকে আমি আর দেখলাম না। কিন্তু কেন সেটা আমার অজানা।
যাইহোক এইভাবে আমাদের সব পরীক্ষা শেষ হয়ে গেল।
আজকে সকাল থেকেই দেখছি আন্টি আর আঙ্কেলের মুখে হাসি৷ হাসিটা অবশ্য প্রতিদিনই থাকে কিন্তু আজকের হাসিটা অন্যরকম।
দুপুরের দিক দিয়ে আমাদের বাসায় কয়েকটা গাড়ি আসলো। আমি এটাকে স্বাভাবিক ভাবেই নিলাম।
আমি রুমে আধশোয়া হয়ে আছি। তখন জান্নাত এসে আমাকে ডেকে গেল,,,,,,
চলবে……?
গল্প ঃ ক্ষ্যাত_ ছেলে
পর্ব ঃ_ ১৪
লেখক ঃ অভ্র নীল
আমি রুমে আধশোয়া হয়ে আছি। তখন জান্নাত এসে আমাকে ডেকে গেল। আমিও চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি আঙ্কেল কয়েকজন লোকের সাথে কথা বলছেন। আমিও গিয়ে আঙ্কেলের পাশে দাড়ালাম। আঙ্কেল তখন আমাকে তাদের সাথে পরিচয় করে দিলেন।
তাদের সাথে পরিচিত হয়ে আমি বুঝতে পারলাম, যে তারা সানজিদা কে দেখতে এসেছে। এটা শুনে আমার ভেতরে যেন দুমড়েমুচড়ে গেল। আমি সেখানে কাওকে কিছু বুঝতে দিলাম না। আমি সেখানে অনেকটাই স্বাভাবিক রইলাম।
আমি তাদের সাথে মত বিনিময় করলাম। তখন আমি আঙ্কেলকে বললাম–
অভ্র– আঙ্কেল আপনারা গল্প করেন আমি সানজিদার সাথে একটু দেখা করে আসি।
এটা বলে আমি আঙ্কেলের উত্তরের অপেক্ষা না করেই উপরেই চলে আসলাম।
আমি এসে দেখে সানজিদা রুমে নেই। তার রুমে রয়েছে আন্টি। আমি তাকে সানজিদার কথা বললে, তিনি বললেন সে না কী ছাদে আছে।
আমি কোনো কিছু না ভেবেই দৌড়ে ছাদে চলে গেলাম।
আমি গিয়ে দেখে সানজিদা ছাদের একটা কোনায় দাড়িয়ে মুখটা অন্যদিকে করে আছে। আমি গিয়ে তার পাশে দাড়ালাম। তখন সানজিদা কান্না মাখা কন্ঠে বললো–
সানজিদা — আসছো?
অভ্র — হুম!
দুজনেই চুপচাপ দাড়িয়ে আছি।
অনেকক্ষণ যাবৎ আমরা দাড়িয়ে আছি। আমি নিরবতা ভেঙে বললাম–
অভ্র — তুমি আমাকে ভুলে যাও!
সানজিদা — মানে তুমি কী বলতে চাচ্ছো?
অভ্র — দেখো আমার নিজেরই থাকার কোনো জায়গা নেই। তোমাকে দেওয়ার মতো আমার কাছে কিছু নেই। আর দেখো তোমাকে এখন আমি কী বলব কিছুই বুঝতে পারছি না। এককথায় আমার মাথা এখন কাজ করছে না। আর আমার একটা কথা রাখবা? প্লিজ!
সানজিদা চুপ করে আছে। কোনো কথা বলছে না। শুধু মাথা নিচু করে কান্না করছে। তাকে কী বলে সান্ত্বনা দেবো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আমি সানজিদা কে বললাম–
অভ্র — শোনো তারা তোমায় দেখতে আসছে। তুমি যাও প্লিজ আর তারা তোমার জন্যই অপেক্ষা করছে। তুমি যাও প্লিজ! তুমি না গেলে আঙ্কেল এখানে অপমানিত হবে। তুমি কী আঙ্কেলকে অপমানিত হতে দেখতে পারবে?
এইরকম আরও কিচু কথা বলে আমি সোজা আমার রুমে চলে আসলাম। আর অঝোর ধারায় কান্না করতে শুরু করলাম।
আমি আমার এই জীবনে যাকে আপন ভাবি সেই আমাকে ধোঁকা দিয়ে চলে যায়। আর আমার কপালটায় খুবই খারাপ, ছোট বেলায় বাবা-মা দুইজনকে হারালাম। এখন আবার একজনকে নিজের জীবন থেকেও বেশি ভালোবাসি তাকেও এখন আমি হারাতে চলছি।
প্রায় ৩০ মিনিট আমি কান্না করলাম৷ সত্যি কান্না করলে মনের কষ্টটা কমে যায়। নিজেকে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রেখে ড্রইং রুমে গেলাম। সেখানে গিয়ে দেখি আঙ্কেল আর আন্টি অনেকটা খুশি হয়েই গল্প করছে। আমি তাদের কাছে যেতেই আন্টি আমায় একটা মিষ্টি দিয়ে বললেন–
আন্টি– অভ্র ! এই নাও মিষ্টি। সানজিদা কে তাদের পছন্দ হয়ছে।
আমি মিথ্যে একটা খুশির ভাব এনে বললাম–
অভ্র — আলহামদুলিল্লাহ। তা দিন তারিখ ঠিক করছেন না পরে করবেন?
তখন আঙ্কেল বললেন–
আঙ্কেল– পরশু দিন আমরা তাদের বাসায় যাবো। সেখানে গিয়েই আমরা সব কথা পাকাপোক্ত করবো।
অভ্র — আচ্ছা আঙ্কেল!
আমি তাদের সাথে গল্প করতে লাগলাম।
তারপর খাবার খেয়ে আমি রুমে এসে শুয়ে পড়লাম। কিন্তু চোখে কোনো রকম ঘুম নেই। অনেক চেষ্টার পর ভোরবেলায় একটু ঘুম ধরলো। কিন্তু সেটাও একটা খারাপ স্বপ্নের মধ্যমে ভেঙে গেল।
সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। আমি নাস্তা না করেই অফিসের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। ওহ আপনাদের তো বলতেই বুলে গেছি, পরীক্ষা শেষে আঙ্কেল আমাকে তার অফিসে একটা জব দিয়েছে। অফিসে গিয়েও মন বসতাছে না। হঠাৎ ফোন বেজে উঠল। তাকিয়ে দেখি সানজিদা ফোন করেছে৷ আমি রিসিভ করলাম না। এইভাবে সে অকের পর এক ফোন দিয়েই চললো। কিন্তু আমি রিসিভ করলাম না। বলতে গেলে আমি সানজিদা কে ইগনোর করছি।
*******
যাইহোক,আজকে আমরা সেই ছেলে মানে সানজিদার হবু জামায়ের বাসায়। আজকে সানজিদার বিয়ের সকল কথাবার্তা হলো। আমি সেখানে একটা কথাও বলি নি। যা বলেছে আঙ্কেল আর আন্টি।
ওহ আপনাদের তো ওই ছেলেটার নামই বলা হয় নি। ছেলেটির নাম হচ্ছে রানা। সে একটা অফিসের বস। আর হে তার আর সানজিদার বিয়ের তারিখ ঠিক হলো সামনের মাসের ১০ তারিখ।
আমরা বাসায় আসলাম। আমার মন তো আগের থেকেই খারাপ হয়ে আছে। তাই আমি সোজা নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পড়লাম।
হঠাৎ কারও কারও শরীরের ভর নিজের উপর অনুভব করলাম। আমি চোখ খুলে দেখি সানজিদা। আমি বললাম–
অভ্র — আরে তুমি এখানে কী করো?
সানজিদা তখন অশ্রুসিক্ত চোখে আমার দিকে তাকালো। তার চোখের পানি মুছে দিয়ে বললাম–
অভ্র — আরে কান্না করছো কেন? আর হে যেহেতু তোমার বিয়ে ঠিক হয়ছে, অতএব এখানে আমার একটা ট্রিট প্রাপ্ত আর সেটা কখন দিবা বলো?
সানজিদা তখন আমার বুক থেকে মাথা তুলে বলল–
সানজিদা — তুমি এসব কীভাবে পারো বলোতো?
অভ্র– মানে?
সানজিদা — এই যে, তুমি এইরকম মিথ্যা হাসি কীভাবে হাসো? আর এতটা স্বভাবিক কীভাবে থাকো? তোমার কী কষ্ট হচ্ছে না!
আমি মনে হাজারো কষ্ট রেখেও বললাম–
অভ্র — নাহ আমার কষ্ট হচ্ছে না!
সানজিদা — কিন্তু আমার তো অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমার এতোটাই কষ্ট হচ্ছে যে আমি তোমায় বোঝাতে পারবো না। চলো আমরা পালিয়ে যাই।
আমি তখন সানজিদা কে বুকেতে সরিয়ে দিলাম আর বললাম—
অভ্র — নাহ! আমি এটা করতে পারবো না। আঙ্কেল বিশ্বাস করে তার বাসায় আমায় থাকতে দিয়েছে, আমি তার বিশ্বাস ভাংতে পারবো না। আর তুমি ছেলেটাকে বিয়ে করে নাও। তার কাচে সবকিছু আছে। সে তোমাকে সুখে রাখবে।
তোমাকে দেওয়ার মতো কিছুই নেই আমার কাছে। আমি চাইলেও তোমাকে সুখী করতে পারবো না।
সানজিদা — আমি মানলাম তার কাছে সবকিছু আছে। কিন্তু কেও কী তোমার মতো আমাকে কেও ভাবলোবাসতে পারবে?
আমি চুপ করে রইলাম৷ আমি চুপ করে আছি দেখে সানজিদা আবারও বলল–
সানজিদা — কী হলো বলো? তুমি না হয় আমায় ছাড়া থাকতে পারবে আমিতো তোমায় ছাড়া থাকতে পারবো না,,,,,,,,,,,,,,,,
আমি এখনও চুপ করে আছি। শুধু সানজিদার কথায় শুনে যাচ্ছি। সত্যি মেয়েটা আমায় অনেক ভালোবাসে। কিন্তু আমার হাত তো এখন বাঁধা অবস্থায় আছে। আমি কী করবো? এবার সানজিদা একটু রাগি কন্ঠে বলল–
সানজিদা — অভ্র তুই শুনে রাখ আমি যদি তোকে না পাই তাহলে আমি কিন্তু আত্মহত্যা করবো। বলে রাখলাম।
এটা বলে সানজিদা চলে গেল। আমি সেখানেই বসে পড়লাম। কে যানে কী হবে? এই মেয়েটা কখন কী করে সেটা বলা মুস্কিল।
রাতে জান্নাত এসে ডেকে গেল। বলল যে, আঙ্কেল ডাকতাছে। আমি গেলাম। দেখি আঙ্কেল বসে আছেন। তিনি আমায় দেখে বললেন–
আঙ্কেল– আরে তুমি আসচো, আসো বসো।
আমি গিয়ে তার সাইটে বসলাম। আমি বললাম–
অভ্র — জি আঙ্কেল কিছু বলবেন।
আঙ্কেল– আসলে বলছি যে, সানজিদার বিয়ের সকল ব্যবস্থা কই করা যাই বলোতো? আর একটা কথা মনে রেখো বিয়ের সকল ব্যবস্থা কিন্তু তোমায় করতে হবে। আমার তো বয়স হয়ে গেছে এই বয়সে এতো চাপ নিতে পারবো না। তুমি পারবে না?
আমি বুকের উপর পাথর চেপে বললাম–
অভ্র — হুম আঙ্কেল পারবো। সমস্যা নাই!
আঙ্কেলের সাথে আরও কিছু গল্প করে আমি আমার রুমে চলে আসলাম।
চলবে……?
ভুলত্রুটি মার্জনীয়🙂।