হৃদয় নিবাসে তুই
পর্ব-৩১
লেখনীতেঃ ভূমি
সন্ধ্যা থেকে অল্প কিছু পর। সময়টা বোধ হয় আটটা কি নয়টা। বেলকনির হলদেটে আলোয় আকাশ দেখছিল অদ্রিজা ।হালকা ফুলো পেট।পরনে ছাঁই রাঙ্গা কামিজ।চুলগুলো অগোছালভাবে খোঁপা করা।রক্তিমদের বাসাটা তেমন নিশ্চুপতায় ঘেরা থাকে না আগের মতো।সুইটহার্ট সর্বক্ষণ তাকে হাসিখুশি রাখে।তবুও আজ তার মন খারাপ।বিষন্নতার কালো ছায়ায় ছুঁয়ে যাচ্ছে কোমল মন।ইচ্ছে হলো একছুটে বেরিয়ে যাক এই বাসা থেকে। কিন্তু রক্তিম নামক মানুষটার জন্য তাও সম্ভব নয়।চার দেওয়ালের বদ্ধ রুমে এই কয়দিন থাকতে থাকতেই ঝিমিয়ে উঠল মন।নিঃশ্বাস,প্রশ্বাস, হৃদস্পন্দন গুলো নিস্তেজ হয়ে উঠল।নিজের মনে রক্তিমের জন্য ভালোবাসা, রাগ, ক্ষোভ এসবের সাথে লড়তে লড়তেই দিন পার হচ্ছে।তবুও কোন রকম সমাধান খুঁজে পাচ্ছে না সে।রক্তিমের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচ্ছেদ নিয়ে নেওয়া উচিত?নাকি ভালোবেসে আগলে নেওয়া?বারংবার ভেবেও এসব সমীকরণের কোন সমাধান তার মস্তিষ্ক কিংবা মন দিতে পারল না।অদ্রিজা হতাশ হলো।সেসব কঠিন ভাবনার হেরফের ঘটল বাসার সামনে গাড়ি থেকে নামা এক মাঝবয়সী মহিলাকে দেখে।চোখেমুখে তীব্র প্রখরতা।বড়বড় চোখে গম্ভীর স্তম্ভিত চাহনি।পরনে সবুজরাঙ্গা শাড়ি।দেখতে কোন এক মহীয়সী মানবীর মতোই এই মহিলা।কে বলবে এই মহিলা তার সন্তানকে নিঃস্ব করে দিয়ে চলে গিয়েছিল কোন এক সময়?আদৌ কি সত্যি এই কথাটা?অদ্রিজা থমকাল।এই মানবীটিকে এখানে দেখে বিস্মিত হলো।কিন্তু তার বিস্ময়ে কিই বা এসে যায়?ভদ্রমহিলা বেশ গম্ভীর চাহনিতে বার কয়েক বিল্ডিংয়ের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেখে নিয়ে গেইট খুলে ভেতরে ডুকলেন।অদ্রিজা চোখ ছোট ছোট করল। বেলকনি থেকে দ্রুত বেরিয়ে এসেই ড্রয়িং রুমে এসে থমকে দাঁড়াল ভারী শরীর নিয়ে।সুইটহার্টকে দেখে নিয়েই বিস্ময নিয়ে বলে উঠল সঙ্গে সঙ্গে,
‘ সুইটহার্ট?রক্তিমের আম্মু আবার দেশে ফিরেছে। জানো তুমি?নেহাকে কল করে বলো তো।ওর বড্ড ইচ্ছে উনার সাথে কথা বলার, দেখা করার।’
সুইটহার্টের হাসিখুশি মুখটা মুহুর্তেই গম্ভীর হলো।চাহনি হলো গমগমে।ভাজ হওয়া চামড়ার ভাজে ভাজে ফুটে উঠল এক চরম কঠোরতা।গম্ভীর দৃষ্টিতে অদ্রিজার দিকে তাকিয়েই শুধালেন তিনি,
‘ তুমি কি করে জানো অদ্রি?আমরা তো জানি ও গতবার যখন এসেছিল, চলে গিয়েছিল।আবার এসেছে? কখন?’
অদ্রিজা নিশ্চল চাহনিতে তাকিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে উঠল,
‘ আমি তো জানি না সুইটহার্ট । বেলকনি দিয়ে দেখলাম মাত্র।উনি এই বাসায়ই আসছেন হয়তো।দেখে নিও।’
অদ্রিজার পুরো কথাটা শেষ হলো কি হলো না তার আগেই বাসার কলিংবেল বাঁজল। ঘাড় ঘুরিয়ে সেইদিক পানেই তাকাল অদ্রিজা।চোখে মুখে উচ্ছ্বলতা ফুটিয়েই বলে উঠল,
‘ এই তো!এই যে উনিই এসেছেন।আমি শিউর!’
সুইটহার্ট হতাশ হলেন।গম্ভীরভাবে দরজার দিকে চোখ জোড়া দিয়ে তাকিয়েই লম্বা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।কপালের চুলগুলো কানে গুঁজে নিয়েই গম্ভীর গলায় বলে উঠলেন,
‘ আমি দেখছি।তুমি বসো অদ্রি।’
অদ্রিজা বসল না।চোখজোড়া নিয়ে দরজার পানে তাকিয়ে থেকেই চঞ্চলতা নিয়ে উদগ্রীব হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।রুহানা নামক মহিলাটাকে এর আগেও বেশ কয়বার দেখেছে।নেহার চেহারার সাথে পুরোপুরি মিল এই মহিলার চেহারা।চোখ, নাক, ঠোঁট, চুল পুরোটাই।তাই হয়তো উনার প্রতি নেহার এই টান!অদ্রিজা আনমনেই হাসল।আচ্ছা?রক্তিমের আম্মু এই বাসায় এসেছে। এটা শুনে রক্তিমের কি রিয়্যেকশন হবে?খুশি হবে?নাকি রেগে যাবে?অদ্রিজা বুঝল না।অপেক্ষারত চোখজোড়ার অপেক্ষার সমাপ্তি ঘটতেই চোখের সামনে ফুটে উঠল সেই মহিলার ভাসমান চেহারা!বয়স অনুয়ায়ী মহিলার সৌন্দর্যের এটুকুও দফারফা ঘটেনি।বোঝায় দায় তার বয়সের অংক!অদ্রিজা হাসল।ঠোঁট উল্টে সুইটহার্টের কাছে গিয়েই ফিসফিসিয়ে বলল,
‘ সুইটহার্ট?আমার শাশুড়ী আম্মা একেবারে তার ছেলের মতো সুন্দর!এদের এত সৌন্দর্য কোথায় রাখে বলো তো।’
সুইটহার্ট হালকা হাসল।অদ্রিজার গোল গোল ফুলো মুখে হাত রেখেই মুচকি হেসে বলল,
‘ যেমন ভাবে তুমি তোমার সৌন্দর্য রাখো সেভাবেই হয়তো!ইদানিং আরো সুন্দর হয়ে যাচ্ছো তুমি অদ্রি!এজন্যই জান এখন তোমার প্রেমে হাবুডুবু খায়!সুইটহার্টের কথা মনে পড়ে নাকি তার?’
অদ্রিজার হাসিটা এবার মিলিয়ে এল কিছুটা।রক্তিম কি আদৌ তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে?আদৌ ভালোবাসে তাকে?হুট করে এত ভালোবাসার উদ্ভব কি অস্বাভাবিক নয়?নাকি সবটাই বানোয়াট?দুইদিন আগেও যে তাকে বেহায়া, আত্নসম্মানহীন বলে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল, কারো সামনে তাকে স্ত্রী হিসেবে ট
পরিচয় দেয়নি সেই মানুষটার আজ হঠাৎ এত পাগলামি কেন?কি কারণ?অদ্রিজা চোখজোড়া বন্ধ করেই মৃদু তপ্তশ্বাস ফেলল।সুইটহার্টের কথায় মৃদু হাসার চেষ্টা করল।চোখ খুলে ভদ্রমহিলার দিকে তাকাতেই ভদ্রমহিলার উৎসুক দৃষ্টি সর্বপ্রথম চোখে পড়ল।সুইটহার্ট গম্ভীর গমগমে কন্ঠে বলে উঠল দ্রুত,
‘ আবার কেন এসেছো তুমি?নিষেধ করেছিলাম তো আসতে।কেন মানো না প্রতিবার এই কথা?ঘুরেফিরে এই বাসায় কেন আসো বারবার?দাদুভাই রেগে যাবে তুমি এসেছো শুনলে।তার রাগের মুখোমুখি হওয়ার থেকে সোজাসুজি তোমার ভালোর জন্য বলছি, চলে যাও।দ্রুত চলে যাও এখান থেকে।’
ভদ্রমহিলা নিরাশ হলেন।চোখেমুখে হতাশ চাহনি ফুটল মুহুর্তেই।জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলেই অনুনয়ের স্বরে বলে উঠলেন তিনি,
‘ আম্মা!রক্তিম আমার সন্তান।ওকে দেখা, ওর সাথে কথা বলার অধিকার আছে আমার।আমি ওর মা হই।আপনি এভাবে আমায় চলে যেতে বলতে পারেন না আম্মা।’
সুইটহার্ট গুরুগম্ভীর চাহনি নিয়েই ভদ্রমহিলার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন।দাঁতে দাঁত চেপেই বলে উঠলেন,
‘ যখন দাদুভাইকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে তখন মনে পড়েনি ও তোমার সন্তান?তুমি ওর মা?এখন কেন মনে পড়ে?এখন কেন ওর সাথে কথা বলার এত ইচ্ছা?ছোট্ট বাচ্চাটা যখন মাকে খুঁজত, মা মা বলে কাঁদত তখন আমাকে ওকে আকাশের তারা দেখিয়ে ভুলাতে হয়েছে।কেন?তোমার বোকামির জন্য।তোমার করার কাজের জন্য আজ দাদুভাই ভুগছে।আবার বলছো নিজের সন্তান?তখন কেন মনে পড়েনি ও তোমার সন্তান?’
ভদ্রমহিলা মিনিমিনে চোখে চেয়ে রইলেন।বেশ কিছুটা সময় চুপ থেকেই বলে উঠলেন,
‘ আমি যেমন ছেড়ে গিয়েছি।অন্য একজনের সাথে স্যাটেল করেছি।তেমনটাতো ওর বাবাও করেছে।দ্বিতীয় বিয়ে করে নি ওর বাবা?ওর বাবার সাথে তো এতটা খারাপ ব্যবহার ও করে না।আমার সাথে কেন এত জঘন্য ব্যবহার করে?কেন?’
‘ কারণ তুমি পালিয়ে গিয়েছিলে।প্রথমে তুমিই ছেড়ে গিয়েছিলে।’
ভদ্রমহিলা আক্ষেপ নিয়েই বলে উঠল এবার,
‘ তো? তো কি করব আমি?ওর বাবার সাথে আমার সম্পর্কটা তার অনেক আগেই ভেঙ্গে গিয়েছিল।তবুও সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখা উচিত ছিল?ভাঙ্গা সংসার জোড়া লাগানো উচিত ছিল?’
‘ না,বেরিয়ে আসতে।মুক্ত হয়ে রক্তিমকে নিয়ে বাঁচতে পারতে।তাই বলে অন্য এক লোকের সাথে পালিয়ে যাওয়া উচিত নয় তোমার।যায় হোক!তোমারও আজ বয়স হয়েছে। উচিত অনুচিতের সংজ্ঞাটা এখন আমার থেকে শেখা লাগবে না আশা করি।তুমি নিজেই বুঝো,বুঝবে।এখন যাও।দাদুভাই আসলে রেগে যাবে।ইদানিং দাদুভাই বেশ খুশি থাকে।আমি চাই না তোমার কারণে তার সে খুশিটা কষ্টে পরিণত হোক।’
ভদ্রমহিলা ছোট ছোট চোখে তাকালেন।বললেন,
‘আমি থাকতে আসিনি আম্মা।ওকে একবার চোখ ভরে দেখে নিয়েই চলে যাব।কতদিন দেখা হয় নি ওকে।এত বড় একটা অপারেশন হলো অথচ ওর মা হয়ে আমি জানতেই পারলাম না। যদি কিছু হয়ে যেত? যদি ও আর বেঁচে না ফিরত? একজন মা কে না জানিয়েই তার সন্তানের এমন একটা অপারেশনে কি করে মত দিলেন আপনি?যদি কিছু হয়ে যেত?’
সুটটহার্ট চোখ জোড়া বন্ধ করে নিল মুহুর্তেই!সেই অসহনীয়, দুঃস্বপ্নময় দিনগুলো মনে করেই শিউরে উঠল।গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে একনজর অদ্রিজার দিকে তাকাল।অদ্রিজার চোখে মুখে কৌতুহলের স্পষ্ট আভাস।আর সেই কৌতুহলটা সুইটহার্ট তাকানো মাত্রই বেরিয়ে এল মুখ দিয়ে,
‘ সুইটহার্ট?অপারেশন?কিসের অপারেশন?বেঁচে না ফেরার মতো কি এমন অপারেশন হয়েছে উনার?কখন হয়েছে?’
সুইটহার্ট চোখ বন্ধ করলেন।অদ্রিজার উত্তর গুলো না দিয়েই শান্ত গলায় বললেন,
‘ অদ্রি?এতটা অস্থির হওয়ার মতো কিছু নেই বর্তমানে।সহজভাবে ভাবো বিষয়টাকে।আমি তোমায় পরে সবটা খুলে বলব। আপাদত ঐটা নিয়ে হাইপার হওয়ার কিছু নেই। কেমন?রুমে যাও।’
অদ্রিজা লক্ষী মেয়ের মতো মাথা দুলাল।সুইটহার্টের কথার উপর আর কোন কথা না বলে ধীর পায়ে উল্টোদিক ফিরে হাঁটা দিল।পেঁছন থেকে রক্তিমের মা নামক ভদ্রমহিলার মৃদু গলায় ভেসে আসল,” আম্মা?এটা নেহার বান্ধবী না?এই মেয়েটাই রক্তিমের বউ? “অদ্রিজা স্পষ্ট শুনল কথাগুলো।তবুও পেঁছন ফিরে চাইল না।ধীর পায়ে এগিয়ে দ্রুত রুমে গেল।মাথায় ঘুরল অদ্ভুত সব চিন্তা।
.
বিদ্ঘুটে অন্ধকারে টিউশনি শেষে রাস্তা ধরে হাঁটছিল দিহান।পরনে বরাবরের মতো চেইকের শার্ট।গোছালো চুলগুলো কপালে ঝুকে আছে।বাম হাতের ঘড়িটায় একনজর সময় দেখে নিয়েই ছোট্ট শ্বাস ফেলল দিহান।রাত দশটা। অবশেষে সারাদিনের ব্যস্থতার অবসান।তারপর বাসায় গিয়ে চমৎকার ঘুম!দিহান হালকা হাসল।বরাবরের মতো বাসায় ফেরার পথটাতে নেহাদের বাসাটা আজও পড়বে।দিহান দূর হতেই দেখল বাসাটা।চারতালা বিল্ডিংয়ের কোন কোন বাসায় আলো জ্বলছে আবার কোনটায় অন্ধকার।ছাদেও ঘুটঘুটে অন্ধকার।সোডিয়ামের আলোয় দূর হতে বিল্ডিংটার অন্যসব কিছু স্পষ্ট বুঝে উঠা গেল না।শান্ত স্থির চোখজোড়া সেইদিক থেকে নামিয়েই গম্ভীরভাবে পা চালাল দিহান।মিনিট কয়েক জোরে জোরে পা চালানোর পরই আকস্মিক কোন এক নারীর উপস্থিতিতে থামতে হলো তাকে।থমকানো চোখমুখ নিয়ে মেঁপে মেঁপে দেখল সামনের মেয়েটিকে।মুখে হালকা হাসি ফুটিয়েই ভ্রু নাচাল যার অর্থ, “কি হয়েছে?” তার সে ভ্রু নাচানো দেখেই মেয়েটা হাসল খিলখিলিয়ে।দিহানের দিকে কিছুটা সময় তাকিয়ে থেকেই দিহানের শার্টটা আঁকড়ে ধরল।মুচকি হেসেই চোখ টিপে বলে ফেলল,
‘ কিছু না।তোকে দেখতে মন চাইল।’
দিহান অপ্রস্তুত হলো।আকস্মিক কোন রমণী এতটা কাছে এসে শার্ট আঁকড়ে ধরার মতো কোন ঘটনা এর আগে তার সাথে ঘটেছে কিনা সে জানে না।চারদিকে একবার তাকিয়ে নিয়েই ভাসা গলায় বলে উঠল,
‘ কি করছিস নেহা?এটা তোর বাসা।তোর আব্বু আম্মু কেউ দেখে ফেললে কি রকমের সমস্যা হবে বুঝতে পারছিস তুই?শার্ট ছেড়ে সরে দাঁড়া।’
নেহা ভ্রু কুঁচকাল।জনমানব ভরা রাস্তার মাঝেই দিহানের আরো কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়াল।শার্টটা আরো কিছুটা খামচে ধরেই বলে উঠল,
‘ ছাড়লাম না।সরে দাঁড়ালাম না।কি সমস্যা? ‘
দিহান আরো কিছুটা অপ্রস্তুত হলো।নেহার মুখের দিকে বার কয়েক ড্যাবড্যাব করে তাকিয়েই হতাশ হলো।মেয়েদের নাকি অনেক লজ্জ্বা!এই মেয়ের মুখে এটুকুও লজ্জ্বা নেই।এতগুলো মানুষের সামনে তাকে একটা মেয়ে ধরে রেখেছে ভাবতেই ফ্যাঁকাসে হয়ে উঠল তার মুখ চোখ।শুকনো ঢোক গিলে চারপাশে তাকিয়েই মানুষজনকে এদিক পানে তাকিয়ে হেঁটে চলে যেতে দেখেই আরো ফ্যাঁকাসে হলো চাহনি।নেহার হাতজোড়াকে শক্ত করে নিজের হাতে পুরে নিয়েই শার্ট থেকে ছাড়িয়ে নিল।লম্বা শ্বাস ফেলেই নেহার হাতজোড়া সেভাবেই শক্ত করে ধরে রেখে বলে উঠল,
‘ নেহু?কি করছিস এসব?সবাই দেখছে।কি ভাবছে, কি ভাবতে পারে বুঝিস? ‘
নেহা আবারও ভ্রু জোড়া কুঁচকে নিল বলল,
‘ তো?ভাবলে ভাবুক।আমি কি তোকে কিস করেছি?কিংবা জড়িয়ে ধরেছি?আজব!’
‘ না, তেমন কিছু নয়।’
‘ তো?তাহলে?’
দিহান মাথা চুলকাল।বলল,
‘ মানুষ যেভাবে তাকাচ্ছে মনে হচ্ছিল আমরা প্রেমিক প্রেমিকা।তোর বাবা মা দেখে ফেললে কি হতো? তোর প্রেমিক আছে শুনলে দফারফা হয়ে যেত না আজ?তাছাড়া আমারও অস্বস্তি বোধ হচ্ছিল।’
নেহা খিলখিলিয়ে আওয়াজ করে হেসে উঠল এবার।ঠোঁট চেপে বলল,
‘ ভীতু!তুই একটা ভীতুর ডিম দিহান।প্রথমত তোকে যে ভালোবাসি তা আমার ফ্যামিলি সেইদিন থেকেই জানে যেইদিন তোকে প্রথম দেখেছিলাম, প্রথম ভালো লেগেছিল।বুঝলি?মা বাবা দেখলে কিছু বলত না, বরং আলাদা স্পেস দিয়ে যেত।দ্বিতীয় ব্যাপার হলো, তোর অস্বস্তি হচ্ছিল?সিরিয়াসলি দিহান?তুই ছেলে, আমি মেয়ে।আমি যেখানে কস্ফোরটেবল সেখানে তুই অনাম্ফোর্টেবল ফিল করছিস?মানা যায় ইহা?’
দিহান কপাল কুঁচকাল।নেহার হাতজোড়া ছেড়ে দিয়েই নিরাশ চাহনিতে অন্যদিকে তাকাল।গম্ভীর গলায় বলে উঠল,
‘ মজা নিবি না একদম।আমি কম্ফোর্টেবল হলে তুই ওখানেই শেষ! ‘
চলবে…..