#অনুভূতির_কেন্দ্রবিন্দু_তুমি
#সুমাইয়া_সানজুম_ঐশী
#পর্বঃ১৫
_ সোয়ামী…উঠেন। সেহরির সময় হয়েছে। আপু বলেছেন, তাড়াতাড়ি যেতে তাই দেরি করবেন না আমার প্রিয় সোয়ামী
আঁধার ভাইয়া আমার কথা শুনে রা*গের মধ্যেও ভ্যা*বাচ্যা*কা খেয়ে গেলেন। বিছানায় থেকে আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন।তাকে দেখে মনে হচ্ছে একের পর এক ঝ*টকা তিনি হজম করতে পারছেন না। তার হাবভাব দেখে আমি আবার বললাম,
-সোয়ামী আপনি কি বিছানায় থেকেই প্রকৃতির কাজে সাড়া দিবেন। নাকি ওয়াশরুমেও যাবেন?
-হোয়াট!শেষ রোজা এসে পাগল হয়ে গেছো তুমি?কীসব উল্টা পাল্টা বকছো?উনি চোখ বড়ো বড়ো করে বললেন
-আরে আমি কেনো পাগল হতে যাবো!আমি তো ঠিকই বললাম সোয়ামী..
উনি বিছানা থেকে তড়িৎগতিতে নেমে আমার সামনে দাড়িয়ে কপালে হাত দিয়ে বললেন,
-জ্বর তো নেই। রোজাও ধরে নাই তাহলে এমন মাথা খারাপ মানুষের মতো কথা বলছো কেন?
–আরে সোয়ামী..আমি..
-শাট আপ…! ঐশী। আর একটি বার ঐ ফা*লতু ওয়ার্ড ইউজ করলে থা*পড়িয়ে দাত সব ফেলে দেবো।মাইন্ড ইট
উনার রা*গান্বিত চেহারা দেখে আমার তার সামনে কিছু বলার মতো সাহস হয়নি।তাই আমি দরজার সামনে বরাবর দাড়িয়ে পিছনে ফিরে তার দিকে তাকিয়ে বললাম,
-আমার কিন্তু এই শব্দটাই ভীষণ পছন্দ.. প্রিয় সোয়ামী।
এরপর আমারে আর পায় কে। এক দৌড়ে নিচে গেলাম।উনার সামনে থাকলে নিশ্চিত খুন হয়ে যেতাম তার হাতে। দিন দিন আমি বহুত সাহসী হয়ে যাচ্ছি।বাহ!ঐশী তোর সাহসীকতার জন্য তো তোকে হাঙ্গরের দাত উপহার দেওয়া উচিত। কিন্তু উপহার টা দিবে কে?আমার সোয়ামী! না না, বাবা উনি তো আমাকেই সাগরে হাঙ্গরের মুখে ফে*লে দিবেন।আমার এসব ভাবনার মাঝেই তার উপস্থিতি ঘটলো। এসেই আমার দিকে এমন ভাবে তাকালেন যেন চোখ দিয়েই খু*ন করবেন। আমি তার তাকানো কে পাত্তা না দিয়ে খাবারে মনযোগ দিলাম। আরে এটা তো মাত্র শুরু ঐশীর বউগিরি, সামনে আরো কতো যে আপ্যায়ন করবো বরমশাই আপনি বে*হুশ হয়ে যাবেন। খাবারের মাঝেই আপু বলে উঠলো,
-ভাই তুই নাকি নাক ডাকোস?তোর নাক ডাকার জন্য বেচা*রি পাটকাঠি টা ঘুমাতে পারে না।একটু শান্তিতে ঘুমাতে দিস মেয়েটাকে।
আপুর কথা শুনে আমার হি*চকি উঠে গেলো।ব্যাস এইটুকুর ই কমতি ছিল! আপু এই কমতিটাও পূরণ করে দিলো।আমার কাশি থামানোর জন্য মা তাড়াতাড়ি আমাকে পানির গ্লাস এগিয়ে দিচ্ছে। আমি সামনে না তাকিয়েই পানি খাচ্ছি।য*মের দিকে তাকানোর সাহস নাই আমার।বাকি ঘুমটাও আমি আপুর রুমেই দিবো।
আমি নামা্যের রুম থেকে ফজরের নামাজ পড়ে মাকে বলে আপুর রুমে ঘুমাতে যাচ্ছিলাম। মা আর আপু কুরআন শরীফ পড়বে তাই তাদের দেরি হবে ঘুমাতে।আমার রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার দুটো শক্তপোক্ত হাত আমায় রুমে টেনে নিয়ে দেয়ালের সাথে চে*পে ধরলো। তাকিয়ে দেখি সেই হাতের মালিক আমার বনমোরগ জামাইটা।আরে হা*রামি সাদা তেলাপোকা, লাল জলহস্তী, কালো হনুমান ছাড় আমারে ব্য*থা পাচ্ছি তো।তাই চোখমুখ খিচে বললাম
-আরে ছাড়েন, হাতে ব্য*থা পাচ্ছি তো।এভাবে টেনে আনলেন কেনো?আমার ঘুম পাচ্ছে, ছাড়ুন
-আমার নাক ডাকার জন্য তুমি ঘুমাতে পারো না, রাইট?
আমি এবার বিপাকে পড়লাম। কি করবো এখন। এসব ভাবনার মাঝেই খেয়াল করলাম তাকে। রাগী অবস্থায় ধূসর রঙের মনিতে তাকে খুব সুন্দর লাগছে। আর সরু নাকটার আগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম জমায় আমায় বেশ আকৃষ্ট করছে।মস্তিষ্ক বলছে,না না ঐশী তুই এভাবে তাকে দেখতে পারিস না। আর মন বলছে, তোর ই বর তাকে দেখার অধিকার শুধু তোর।শুধু দেখবি কেনো!একটা কামড় বসা নাকে। কিন্তু আমি মন আর মস্তিষ্কের যু*দ্ধে মনকে পরা*জিত করে মস্তিষ্ক কে জিতিয়ে দিলাম। ফিরিয়ে নিলাম নজর।ব্যাটা অতিরিক্ত সুন্দর। ছেলে মানুষ দের এতো সুন্দর হতে নেই।এভাবে তাকিয়ে থাকলে নিশ্চিত আমি তার প্রেমে পড়ে যাবো।আমি যখন তাতেই বিভোর তখন তিনি বললেন,
-আমি নাক ডাকি? সিরিয়াসলি!!তোমার অনেক বেশি সাহস হয়েছে তাই না!তাইতো লাই পেয়ে পেয়ে মাথায় উঠেছো!ইচ্ছে করছে এখুনি তোমায় বারান্দা থেকে নিচে ফেলে হাড়*গোড় ভে*ঙ্গে দি।বড়দের সাথে বেয়া*দবি করতে ভয় লাগে না। এক থা*প্পড় দিলে খুঁজে পাওয়া যাবে না আবার সাহস দেখায়।র*ক্তিম চোখে চেয়ে বললেন তিনি।
-আরে মা, আপনি! দেখুন উনি আমাকে মা*রছে।
উনার হাত থেকে ছাড়া পেতেই আমি ভোঁ দৌড়। আমারে আর পায় কে। উনি পেছনে ফিরে বুঝতে পারলেন আমি তাকে শুধু বোকা নয়, বড়োসড় বোকা বানিয়েছি। তাই আমার যাওয়ার মাঝেই বললেন,
-তোমাকে আর হাতের নাগালে পাবো না! তখন হাড়*গোড় ভেঙ্গে বারান্দা দিয়ে ফে*লে দিবো।ষ্টুপিড কোথাকার।
তার কথা শুনে দৌড়ের মাঝে আমিও বললাম,
-আমাকে পাওয়া এতো সহজ না প্রিয় সোয়ামী।হাজার বছরের তপস্যার প্রয়োজন।
আপুর রুমে এসে হাপাচ্ছি। বাবাহ,কি ডে*ঞ্জারাস রা*গী আর বদলোক সে।তাকে যদি মার কথা না বলতাম তাহলে সত্যিই বারান্দা থেকে নিচে ফেলে দিতো।বদ*মাইশ, লাল মোরগ,বনমানুষ,শা*লা ক্ষেত। তারে হাজার টা গালি দিতে দিতেই কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতেই পারি নি।
সকালে আপুর ডাকে ঘুমটার বারোটা বেজে গেলো। ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে বললাম,
-কিরে আলু আপু এমন ঐশী ঐশী করে যিকির করতেছো কেনো?আমার এতো সুন্দর ঘুম!
-আরে আমি তো তোমারে শুধু ডাকতেছি।আর ভাইয়া তো পুরো বাড়ক মাথায় তুলে ফেলতেছে তোমাকে ডেকে ডেকে।আপু অস্থির হয়ে বলল।
-কেন!আমার জন্য তোমার ভাইয়ের হঠাৎ এত্তো পিরি*ত উথলায় পড়তেছে কেন।মাকে বলো যাইতে। আমি পারতাম না।
-তোমাকে হয়তো মর্নিং কিসি দিবে তাই ডাকতেছে। মাকে তো দিবো না। যাও।আপু মিটিমিটি হেসে বললো।
আপুর কথা শুনে আমি চোখ মুখ কুচকে বললাম,
-বাল*নিং কিস আমার দরকার নাই।তোমার ভাইয়ের এক্সরে দিতে কও ঐ কিস।শালা আনরোমান্টিক ক্ষেত এক নাম্বার।
-আমার ভাই কিন্তু,,, পিচ্চি ভাবী আপনার তা খেয়াল আছে।বোনের কাছেই আপনি তার ভাইকে ধুচ্ছেন।আপু ভ্রু দুটি কুচকে বললো
-তোমার ভাইকে ধোঁয়া শেষ।এবার তুমি গিয়ে রোদে শুকাতে দিয়ে আসো যাও।তুমি আগে আমার বোন তারপর তোমার ঐ হিটলার ভাইয়ের বোন বুঝলা?
আমার কথার মাঝেই বনমোরগ চিল্লানি শুনতে পেলাম।রামছাগল এর মতো গলা ফাটিয়ে ডাকছে আমাকে।আপু এবার আমায় তাড়া দিয়েই বললো
-পাটকাঠি তুমি যাও তাড়াতাড়ি নয়তো ভাইয়া এই রুমে এসে হা*ঙামা শুরু করবে।
চলবে
#অনুভূতির_কেন্দ্রবিন্দু_তুমি
#সুমাইয়া_সানজুম_ঐশী
#পর্বঃ১৬
-এমা ছি ছি আপনি জন্মদিনের ড্রেস পইরা আমাকে ডাকতেছেন কেন…আমার প্রিয় সোয়ামী?
-হোয়াট ননসেন্স! কিসব আবোল তাবোল বকছো! আমার দিকে তাকিয়ে রা*গী স্বরে বলল সে।
-আরে আপনি এভাবে জামা কাপড় ছাড়া দাড়িয়ে আছেন আবার আমাকেও ডাকছেন! কেন!আমি অন্য দিকে ঘুরে তাকিয়ে বললাম। তাকে দেখে মনে হচ্ছে মাত্রই শাওয়ার নিয়ে বেড়িয়েছেন। চুল থেকে পানি তার বুক বরাবর ফোটা ফোটা ঝড়ছে। তার ধূসর রঙের চোখ জুড়ে রয়েছে রা*গের আভা।যা আমাকে মারা*ত্মক ভাবে ঘা*য়েল করছে।উফ এই লোকটা এমন কেনো।এভাবে নিজেকে আমার সামনে প্রদর্শন করে কি আমায় তার প্রে*মে ফালাতে চাইছে। কিন্তু ঐশী তোকে মনে রাখতে হবে, “প্রেমে পরার চাইতে পদ্মা সেতু থেকে ঝা*প দিয়ে প*রা অনেক ভালো।” আর এই বদ*লোকের প্রেমে তো একদমই পরা যাবে না।
-আমার আলমারির কাপড় গুলো কোথায়? এগুলো কার শার্ট এখানে!
তার প্রশ্নে আমি ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসলাম।আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমি আলমারিতে তার জামা কাপড় গুলো সরিয়ে নতুন গুলো রেখেছিলাম। তাই বললাম,
-এগুলো আপনার ই জামা কাপড় সোয়ামী। আমি আমার পছন্দ অনুযায়ী রেখেছি।দেখুন এখানে অনেক রংবেরঙের শার্ট আছে। সব আপনার জন্য আমার প্রিয় সোয়ামী।
এবার তিনি আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকালেন।তারপর গম্ভীর গলায় বললেন,
-তোমার সমস্যা কোথায়! কালকে থেকে আজিব সব শব্দ ব্যবহার করছো। অদ্ভুত আচরণ করছো!
তার কথা শুনে আমার খুব জোরে হাসি পেল।কিন্তু ধরা পড়ে যাবো তাই হাসলাম না। বেচারা আমার স্বল্প সময়ের বউগিরি তে রীতিমতো হাপিয়ে গেছে হয়তো। নিজের হাসি চেপে রেখে বললাম,
-কি বলছেন সোয়ামী? আমি তো আপনার সেবা করছি।জামাই সেবা করা প্রতিটা বউয়ের পরম ধর্ম। আপনি তা জানেন না প্রিয় সোয়া..
_শাট আপ ঐশী (রেগে গিয়ে) আবারও সেই ফালতু শব্দ ইউজ করছো!আমার ব্লাক আর হোয়াইট কালারের শার্টগুলো কোথায়? বলো
_ফেলে দিয়েছি(মিনমিন করে বললাম)
-ফেলে দিয়েছি মানে!আর ইউ ম্যাড! আমি কি এখন তোমার জামা পড়বো নাকি ষ্টু*পিড কোথাকার
_ঐ শার্টগুলো পড়লে আপনাকে সাদা কালো ছায়াছবির মতো মনে হয় আমার।আপনি চাইলে আমার জামা ট্রাই করতে পারেন।আমি কিন্তু মাইন্ড করবো না(উনি রাগী ফেইসে তাকাতেই) আবে না মানে,, আমার জামা পরার দরকার নেই আপনি বরং এই শার্টটা পড়ুন (একটা হলুদ রঙের শার্ট তার সামনে ধরে বললাম)প্রিয় সোয়ামী। এটা পড়লে আপনাকে একদম ফুটন্ত সূর্যমূখী ফুলের মতো লাগবে।(উনি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন) না না একদম কাটা যুক্ত ফুল মতো লাগবে আপনাকে।
উনার মে*জাজ এবার আকাশ ছুই ছুই। উনি তার সেই য*মের চেহারা নিয়ে আমার কাছে এগিয়ে আসতেই আমি তাৎক্ষনিক ভাবে হলুদ শার্টটা রেখে একটা সবুজ লাল মিস্কড কম্বিনেশনের শার্ট তার মুখের সামনে ধরে বললাম,
_আচ্ছা ঐটা বাদ দেন। আপনি বরং এইটা ট্রাই করুন। এটা পড়ে হাটলে আপনার মনে হবে পুরো ফুলের বাগান আপনার সাথে চলছে।
উনি এবার আমার একদম কাছে চলে আসলেন। তাকে এতো কাছে দেখে আমি ভরকে গেলাম।সে আমার হাত থেকে শাট টা ফেলে আমার বাহু চেপে ধরলেন
-তুমি এতো সাহস কোথায় পেয়েছো? আমার আলমারি থেকে আমার জামা কাপড় সরিয়ে নিজের রঙিন দুনিয়া সাজাতে কে বলেছে তোমাকে?
_আরে আমি তো একজন বউয়ের দায়িত্ব পালন করছি আমার কলিজার সোয়ামী। আপনি তো সেদিন বলেছিলেন আমি নাকি আপনাকে সামলাতে পারবো না তাই এখন প্রমাণ দিচ্ছি।
উনি এবার আমাকে ছেড়ে নিজের চুল নিজেই চেপে ধরলেন। উনাকে দেখে মনে হচ্ছে বেচারা এতো ডোস একসাথে হজম করতে পারছেন না। চুল ছেড়ে তিনি জ্যাক(কাজের নতুন লোক) কে বললেন মার রুমে নাকি তার আরো শার্ট আছে তা নিয়ে আসতে।ইশ! আমি ভাবছিলাম তারে রংচঙয়ে চিত্র বানিয়ে ঘুরাবো যাতে অন্য মাইয়ারা জ্বীনা মুক্ত থাকে। তার উপর ক্রাশ না খায়। কিন্তু ব্যাটা আমার প্ল্যান এ শরবত ঢাইল্লা দিসে।
জ্যাক ভাইয়া তাকে কাপড় দিয়ে যেতেই তিনি আমাকে রুম থেকে যেতে তাড়া দিচ্ছেন। কারন তিনি কাপড় চেঞ্জ করবেন।আহা তাকে দেখে মনে হচ্ছে তিনি রীতিমতো লজ্জা পাচ্ছেন। চোখে মুখে লজ্জার রেশ।একেবারে লজ্জার গোডাউন খুলে বসেছেন। আরে ব্যাটা তুই এত্তোক্ষন হাফ জন্মদিন এর ড্রেস পইরা দাড়াইছিলি যে তখন তো এত্তো শরম কই ছিলো।তার এই অবস্থা দেখে আমার মনে দুষ্টু ভাবনা এলো। তিনি ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই আমি পা তার সামনে এগিয়ে দিলাম।ফলস্বরূপ তিনি আমাকে নিয়েই বিছানায় পড়ার মাঝেও দ্রুত উঠে পড়লেন।
এটা কি হলো!আমি ভাবলাম স্টার জলসা সিরিজের মতো আমরা অন্তত পনেরো মিনিট দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে শুভদৃষ্টি করবো। স্লো মিউজিক বাজবে কিন্তু ব্যাটা দুই সেকেন্ড এর ব্যবধানে উঠে ওয়াশরুম চলে গেলেন। ব্যাটা খবি*শ তোরে কি আর এমনিতেই আমি আনরোমান্টিক খ*চ্চর বলি।আমার এতো সুন্দর ভাবনায় তুই এবার গোবর জল ফালাই দিছোস। শা*লা আবা*ল তুই হাবা ইই থাকবি।খ*চ্চরের লিডার।
⭐⭐⭐
ঈদ আগামীকাল। আজকে কিছু মেহমান অগ্রিম আসবে তাই কাজের লোকজন দের পরিস্কার নিয়ে ভীষণ ব্যস্ততা। মা আর আপুও তাদের দিকনির্দেশনা দেওয়ার কাজে ব্যস্ত। আমাদের রুমের বারান্দাটায়ও অনেক ময়লা হয়েছে তাই সেটা ও পরিস্কার করা দরকার কিন্তু সারভেন্টদের ব্যস্ততা দেখে আমার আর ইচ্ছে হয়নি তাদের বারতি কাজ দেয়ার।তাই নিজ উদ্যোগে তা পরিস্কার করতে গেলাম।
বারান্দার গাছ গুলোর আগাছা কে*টে দিলাম। এতো আগাছা গাছের সৌন্দর্য নষ্ট করে। সবগুলো টবের ধূলোময়লা পরিস্কার করলাম।পুরো বারান্দা পানি দিয়ে মুছার পর আমার আর বিন্দুমাত্র ও শক্তি নেই যে বালতির পানিগুলো বাথরুমে গিয়ে ফেলার।তাই ভাবলাম বারান্দা দিয়ে নিচে ফেলে দেয়ার কথা। দারোয়ান চাচা এখন গেটের সামনে আর এই ভরদুপুরে কেউ বাগানে যাবে না হাটতেও তাই নিশ্চিন্তে ফেলা যায়।
যেই ভাবনা সেই কাজ। বালতি উচু করে বারান্দা থেকেই সব ময়লা পানি নিচে ফেলে দিলাম। সাথে সাথেই নিচ থেকে চিৎকার শুনলাম। গলার আওয়াজ তো ঐ হিটলার এর! ওহ আল্লাহ! পানি গুলো কি তাহলে বনমোরগ টার উপর ফেলাইছি আমি!ঐশী তুই আজকে এই য*মের হাতেই ম*রবি।নিচে তাকিয়ে দেখি,বনমোরগ টা একবার মাথার চুল তো একবার গা ঝাড়ছে। ইশ!ব্যাটারে পুরাই গলা ছোলা মুরগীর মতো লাগতেছে। ইচ্ছে করছে তার সাথে দাড়িয়ে দুই তিনটা সেল্ফি তুলে ফেইসবুক এ আপলোড দিতে”সেলফি উইথ গলা ছোলা হাসবেন্ড “।বাহ হোয়াট এ ক্যাপশন! ভেবে আমি জোরেই হেসে দিলাম।
আমার হাসির শব্দ শুনে উনি উপরে তাকালেন। তাকিয়ে বুঝতে পারলেন এই কারসাজি তার গুনধর বউয়ের। তার সাথে আমার চোখাচোখি হতেই আমি রেলিং এর পিছে বসে পড়লাম। শালা হাসি টা আসার ও আর টাইম পাইলো না বাল।তখনই নিচ থেকে আওয়াজ পেলাম,
_যেখানে আছো ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকো।নইলে ঠ্যাং ভে*ঙে বারান্দা থেকে ফেলে দিবো।
আমারে ভুতে কি*লায় এখানে দাড়াই থাকতে! আজকে সারাদিনেও এই যমের মুখের সামনে আসা যাবে না। ননয়ত ঐশী তুই “আল্লাহ কি পেয়ারি হো জায়েগি”। না না আমি এতো তারাতাড়ি দুনিয়া ছাড়তে চাই না।এখনো আমার বান্ধুবীর পোলার সাথে আমার না হওয়া মেয়ের বিয়ে করানোর কাজ বাকি , আমার নাতিনাতনিরে আমার প্রেম কাহিনি শোনানো বাকি আছে।আমারে আরো অনেক দিন টিকে থাকার লড়াই করছে হবে। ঐশী ভাগগ।আমি এক দৌড়ে আপুর রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে খিল মেরে দিয়েছি।একটু পর ই দরজা বাহির থেকে গ*ম্ভীর আওয়াজ পেলাম
#চলবে🐸