#দেওয়া_নেওয়া_সানাই
পর্ব:12
#লেখিকা_নুসরাত_শেখ
(রোমান্টিক পার্ট ভাল না লাগলে ইগনোর প্লিজ)
Good morning সোনাপাখি(ইফরাজ)
Good morning।উঠুন ব্রেকফাস্ট করে ঘুরতে যাবো।(ঐশানী উঠে বসে)
হানিমুন এ আসছি আগে রোমান্স টা করি পরে নাহয় ঘুরতে যাবো।(ইফরাজ ঐশানীকে নিজের কাছে টেনে)
খবরদার এখন যদি উল্টাপাল্টা কিছু করেন আপনার খবর আছে।উঠুন ঘুরতে আসছি ঘুরতে যাবো।(ঐশানী)
বউ একটু?(ইফরাজ)
নো।
বলেই ওনাকে ছাড়িয়ে হাত খোপা করতে করতে রুমে চলে আসলাম। এসে লাগেজ থেকে ব্রাশ আর পেস্ট বের করে ওয়াশরুম ঢুকে গেলাম।ফ্রেস হয়ে এসে ড্রেস হাতে নিলাম শাওয়ার নেওয়ার জন্য। ইফরাজ এরি মধ্যেই দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে গেছে।অসভ্য ছেলে।প্রায় আধা ঘন্টার পর ও জাস্ট একটা টাওয়াল পরে বেড়িয়ে আসল।ফর্সা শরীরে বিন্দু বিন্দু পানি লেপটে আছে।চুল থেকে ও পানি পরছে।চুল গুলো চোখে মুখে লেপটে আছে।ও এসে আমার টাওয়াল নিয়ে টানাটানি শুরু করল।
কি সমস্যা নিজের টাওয়াল থাকতে আমার টা টানেন কেন?(ঐশানী)
এখন যেটুকু ঢেকে আছি তা সরিয়ে চুল মুছলে তুমি এই লজ্জা পাবে।তাই ভালোয় ভালোয় টাওয়াল টা দাও চুলের পানি দিয়ে ভিজে যাচ্ছি তো।(ইফরাজ)
শয়তান পাবলিক সরেন।
ওর মুখে টাওয়াল ফিকে আমি ঘুরে বসলাম। ও বেশ কিছুক্ষন পর আমার হাতে টাওয়াল দিতেই আমি ওয়াশরুম দৌড়ে গেলাম।কি অসভ্য অসভ্য কথা বলে।মুখে কিছু আটকায় না এর।লাগাম বিহিন পাবলিক। আমি শাওয়ার নিয়ে বের হয়ে আমার আর ওনার পরিহিত ড্রেস গুলো বারান্দাতে মেলে আসলাম।ইফরাজ একটা পেন্ট পরে খাটের উপর হেলান দিয়ে মোবাইল ইউস করছে।আমি বেডে বসে চুল মুছতে লাগলাম।তারপর আচড়ে নিলাম।আমি একটা টাইস আর সট টপস পরেছি।চুল শুখানোর জন্য ফেনের নিচে বসে আছি।হঠাৎই ইফরাজ এসে ঝড়ের গতিতে আমাকে কোলে নিয়ে নিজেও বসে পড়লেন।
কি করছেন কি?(ঐশানী)
সকালের ব্রেকফাস্ট এর আগের মিষ্টি টা নিচ্ছি।জ্বালাতন করবানা।চুপচাপ আদর উপভোগ করো।
বলেই ওর উপর চুম্বন এর বর্ষণ শুরু করলাম। বেশ সময় নিয়েই ওকে ছাড়লাম।
সোনাপাখি?(ইফরাজ ঐশানীর কপালে কপাল ঠেকিয়ে)
হুম।(চোখ বন্ধ করেই ঐশানী)
আর কত্ত অপেক্ষা করবো?(ইফরাজ)
কেনো ধৈর্য ধরেনা বুঝি?(ঐশানী মুচকি হেসে)
বউ থাকতেও সিঙ্গেলদের মতো থাকতে হচ্ছে দুইমাস ধরে।তাও বলো ধৈর্য ধরে না।আর কত্ত অপেক্ষা করাবে সোনাপাখি?(ইফরাজ ঐশানীর গালে কিস করেই)
জানিনা।(ঐশানী)
কে জানে তাহলে?(ইফরাজ ঐশানীর নাকে কামর দিয়ে)
আমার অসভ্য পুরুষ জানে।(ঐশানী)
ঠিক আছে এই অসভ্য পুরুষটার অত্যাচার এর জন্য রেডি থেকো।এখন চলো ব্রেকফাস্ট করে আসি।(ইফরাজ)
ছাড়েন রেডি হয়ে নেন।(ঐশানী)
সোনাপাখি একটা আবদার রাখবে।(ইফরাজ)
বলেন আগে রাখার মতো হলে রাখবো।(ঐশানী)
আমাকে আপনি না বলে তুমি করে বলবে প্লিজ!(ইফরাজ)
ট্রাই করব।(ঐশানী)
গুড গার্ল।আচ্ছা রেডি হোও আমিও রেডি হয়ে নেই।
বলেই ওকে বেডের উপর বসিয়ে আমি একটা শার্ট পরে চুল গুলো ঠিক করে নিলাম।তারপর সু পরে বসে থাকলাম।ঐশানী এরই মধ্যেই হালকা সেজে নিলো।তারপর আমরা বের হলাম ব্রেকফাস্ট করতে।ব্রেকফাস্ট করে আমরা হলিপেড এ ঘুরতে গেলাম।সারাদিন ঘুরে রাত আটটার দিকে হোটেল এ ফিরে আসলাম।এসেই আমি বেডের উপর ধপাস করে শুয়ে পড়লাম।ঐশানী গেলো ফ্রেস হতে।ও আসতেই আমাকে ঠেলে ওয়াশরুম পাঠালো।আমি ও চেঞ্জ করে সটস পরে বেরিয়ে আসলাম।এসে দেখি ঐশানী রুমে নেই।আমি বারান্দার দিকে এসে দেখি সোফার উপর বসে আছে।আমি গিয়ে ওর পাশে বসে ওকে টেনে আমার কোলে বসিয়ে দিলাম।
কান্না করছো কেন?(ইফরাজ অবাক হয়ে)
পাগল নাকি কান্না করব কেন?(ঐশানী)
চোখে পানি কেনো?(ইফরাজ)
ও মুখ ধুয়েছি তো সেই পানি লেগে আছে।(ঐশানী)
আমাকে কি বোকা মনে হয়?পানি গুলো শুধু চোখেই আছে বললা আর আমি বিশ্বাস করলাম। (ইফরাজ)
আরে না কান্না করছিনা।আপনি বেশি দেখেন কেনো?(ঐশানী)
ফারাজ এর কথা ভাবছিলা?(ইফরাজ)
নিশ্চুপ। (ঐশানী)
বলো?(ইফরাজ ঐশানীর গালে হাত দিয়ে)
হুম। (মুখ নামিয়ে ঐশানী)
কি কারণে হঠাৎ ওর কথা মনে পড়ল?(ইফরাজ)
বিয়ের পর ফারাজ ও সাজেক এ আসার কথা বলেছিলো।(ঐশানী)
ও এই কথা।আমি তো ভাবলাম কোন রোমান্টিক কথা মনে পড়ে কান্না করছো।(ইফরাজ)
আপনার মুখে কিছু আটকায় না ইফরাজ?(ঐশানী)
ওমা দশ বছরের প্রেম রোমান্টিক কিছু হয়নাই এটা মানা যায় বলো?তাতে আমার অবশ্য কোন সমস্যাই নেই। সবার অতিত থাকে।আর সেই জায়গাতে আমিতো তোমার প্রেমের ব্যাপার টা জানি।আচ্ছা যাইহোক আগের দিনের কথা ভাবতে না চাওনা।বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে চাইলে অবশ্যই আমার সাথে রোমান্স করতে হবে।তাহলে আর ওর জন্য কান্না আসবেনা ।(ইফরাজ)
মজা করেন?(ঐশানী ব্রু কুচকেই)
না সত্যি কথা বলছি।আর সকালে জানি কি বলছিলা মনে আছেতো?(ইফরাজ)
কি বলছি?(ঐশানী)
যা বলছো বলছো।এখন চলো এই অসভ্য পুরুষটার অত্যাচার এর জন্য প্রস্তুত হোও।(ইফরাজ)
নো।(ঐশানী)
চুপ।বলেছিলাম তো অন্য কারো জন্য কান্না করতে না।করলা কেনো এর শাস্তি তো পেতেই হবে।(ইফরাজ)
না আর কোনদিন কান্না করব না।প্লিজ ইফরাজ আজকেনা।(ঐশানী)
এমন ভাবে বলছ যেনো রোমান্স করব?আমি তো শাস্তি দিবো চলো।
বলেই ওকে কোলে এনে বেডের উপর বসিয়ে দিলাম।তারপর ওকে বললাম আমার হাত পা টিপে দিতে। সারাদিন হেটে শরীর ব্যাথা করছে।আমি শুতেই ও আমাকে ধুমধাম কয়েকটা কিল মেরে দিছে।
তুমি মারলা কেন?(ইফরাজ ঐশানীর হাত ধরেই)
আমি তোমার চাকর না যে হাত পা টিপে দিবো।দ্বিতীয় বার বললে গলা টিপে দিবো ইফরাজ এর বাচ্চা।হাত ছাড়ো ঘুমাব।(ঐশানী)
আমি তোমাকে শাস্তি দিতে আনছি ঘুমাতে না।হাত পা টিপো নাহলে তোমার খবর আছে।(ইফরাজ)
পারবনা।(ঐশানী)
তাহলে আদর করো।(ইফরাজ ঐশানীর কাছে এসে)
ছাড়ো।(ঐশানী)
আদর করবানা?(ইফরাজ)
ঘুমাবো ছাড়ো।
হঠাৎই ইফরাজ এর কাজে আমি টাসকি।(ঐশানী)
________
রাত দশটা পর্যন্ত বাড়ির বউ রা বাইরে থাকেনা।(ফারাজ)
ও আমি এই বাড়ির বউ ভুলেই গেছিলাম।(জেবা বেডের উপর ব্যাগ রেখে)
কোথায় ছিলে?(ফারাজ)
অফিস এ।(জেবা)
কেমন অফিস এ কাজ করো যে রাত দশটা পর্যন্ত কাজ করতে হয়?আমিও কিন্ত জব করি।আর আমার জানা মতে অফিস 5-6টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়।(ফারাজ)
হঠাৎই আমার ব্যপার এ এত্ত চিন্তা কেনো করছেন মিস্টার ফারাজ?(জেবা)
আমাদের পরিবারে থাকতে হলে এখানের নিয়ম মেনে থাকতে হবে।নাহলে নিজের রাস্তা নিজে মাপতে পারো।(ফারাজ)
হুম সেই জন্য এই দেরি হলো।রুম ভাড়া করে আসলাম।পরশু দিন এর মধ্যেই চলে যাবো।(জেবা)
মানে?(ফারাজ)
এত্ত অপমান সহ্য করার মতো ধৈর্য বা শক্তি আমার মধ্যেই আর নেই।তাই ভাবলাম চলে গেলে তোমাদের জন্যই ভালো।আর এমনেও তুমিও সামনের শুক্রবার আমেরিকা চলে যাচ্ছো তাই ভাবলাম যার জন্য এখানে আছি সেই চলে গেলে আমি আর থেকে কি করব।(জেবা)
আমি আমেরিকা যাবো তোমাকে কে বলল?(ফারাজ অবাক হয়ে)
আমার থেকে মুক্তি পেতে তুমি কি কি করতে পারো তা আমি জানি।আর বিয়ের পর থেকেই তো তোমার মামার কাছে যাওয়ার ট্রাই করছ।ভাগ্য ভালো তোমার এত্ত জলদি ভিসা পেয়ে গেছো।যদিও তোমরা কেউ বলো নাই।কিন্ত আমি খবর পেয়েছি।যাইহোক তোমার জীবনের এই কালো অধ্যায় কে ভুলে গিয়ে নতুন জীবন গড়ে তুলো।আমার পক্ষ থেকে তোমাকে মুক্তি দিলাম।
বলেই ওয়াশরুম চলে আসলাম। পারলেই আমি ওকে আটকাতে পারি আমাদের অনাগত সন্তানের দোহাই দিয়ে।কিন্ত না আমি ওকে এর কথা জানাবোই না।থাকুক কিছু জিনিস অজানা।এখন অনেক এই বলবে একদিন এই প্রেগনেন্ট কেমনে হয়।পুরুষ মানুষ সারাদিন ঝগড়া করলেও রাতে নিজের পুরুষতান্ত্রিক সত্তা ঠিক দেখিয়েছে।এমন যদি হতো ঐশানীর জন্য আমাকে দূরে রেখেছে আমি মেনে নিতাম ও এখন ও ঐশানীকে ভালোবাসে।কিন্ত না এমন কিছু হয়নি।সারাদিন সবাই দেখেছে ওর আমার প্রতি ঘৃণা।কিন্ত রাতে আর না বলি।আমি ইচ্ছে করেই চেয়েছিলাম আমার একটা বেবি হোক।এতে ফারাজ জদি আমাকে ভালোবাসে।অফিস শেষে হসপিটাল গেছিলাম ডাক্তার দেখাতে।আসার সময় এই জানতে পারি ওর যাওয়ার কথা একটা ফ্রেন্ড এর থেকে।তাই নিজের জন্য একটা রুম ভাড়া করে আসলাম। ফ্রেস হয়ে বের হয়ে কিনা খাবার নিয়ে খেতে বসলাম।আগেই বলেছি আমার খাওয়ার খবর কেউ নেয়না।খাবার খেতে গিয়ে বমি চলে আসছে আমি দৌড়ে ওয়াশরুম গিয়ে ফ্রেশ হয়ে এসে আর খেতে পারলাম না।শুয়ে পড়লাম।পৃথিবীর বুকে না আসতেই কষ্ট দিতে শুরু করলি বাবা?(জেবা মনে)
কি সমস্যা বমি করছিলা কেন?(ফারাজ বারান্দার থেকে এসে)
খাবার টা নষ্ট ছিলো তাই খেতে পারি নাই।লাইট অফ করো ঘুমাবো।(জেবা)
আমাদের কি রান্না কম করে যে প্রতিদিন কিনে খেতে হয়?(ফারাজ চিৎকার করে)
দুইমাস এ একদিন ও তোমরা কেউ আমাকে খেতে ডেকেছো বলে আমার মনে পড়ছেনা।বিয়ের দিন থেকে পরের সারাদিন আমি অভুক্ত ছিলাম কেউ তাও খোঁজ নাওনি খেয়েছি কিনা।তাই নিজের জন্য হলেও কিনে খেতে হয়।না খেয়ে মরেতো যেতে পারিনা।যাইহোক লাইট অফ করে ঘুমাও সকালে অফিস যেতে হবে।(জেবা)
আমি আমেরিকা চলে যাবো তুমি এখানে থেকো যাও।(ফারাজ)
স্বামী যেখানে নেই সেখানে থেকে কি করব?যদি তারা আমাকে পছন্দ করতো তাও ভেবে দেখতাম।কিন্ত এখানে থাকা মানে তাদের অস্বস্তির কারণ হওয়া।আমি চাইনা আর কারো জীবনের বোঝা হতে।আর তুমি যদি চাও তোমাকে ও মুক্তি দিয়ে দিব।ডিভোর্স এর ব্যবস্থা করে দিও আমি তাও করে দিবো।(জেবা)
হঠাৎই এসব বলছ যে?তুমি তো নিজেই আমাকে আমার ভালোবাসার থেকে দূরে (আর বলতে পারিনাই ফারাজ)
হ্যা সব দোষ আমার মানছি।প্লিজ দুই দিন থাকতে চাই একটু শান্তি দাও।শরীর ভালো লাগছেনা এখন কোন ঝামেলা চাইনা আমি প্লিজ। (জেবা)
তোমার মতে আমি ঝামেলা করছি?(ফারাজ জেবাকে তুলে চিৎকার করে)
সরি আমি সব ঝামেলা করি ।ভুলে বলছি মাফ করো তাও আমি একটু ঘুমাব প্লিজ লাইট অফ করো।
বলেই ওর হাত সরিয়ে কাথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লাম।সকাল থেকে শরীর ভালোনা।তার উপর সন্ধ্যার থেকে অনেক গুলো বাড়ি ঘুরে রুম ভাড়া করে আসছি।শরীর আর নিতে পারছেনা।শুতেই একটা সময় ঘুমিয়ে পড়লাম। (জেবা)
এর হঠাৎই এত্ত পরিবর্তন ভাববার বিষয়।(ফারাজ)
_________
সকালে ঘুম থেকে উঠার পর থেকে ঐশানী আমার সাথে কথা বলছেনা।ও উঠে শাওয়ার নিয়ে আবার এসে শুয়ে আছে।আমি এইযে কথা বলেই যাচ্ছি কোন কাজ হচ্ছে না।
সরি সোনাপাখি আর কত্তক্ষন রাগ করে থাকবা?(ইফরাজ)
নিশ্চুপ (ঐশানী)
সরি সরি সরি এই যে কান ধরছি।মাফ করো সোনাপাখি।(ইফরাজ কান্নার ধরে দাড়িয়ে)
নিশ্চুপ। (ঐশানী)
এই বউ জামাই কান ধরে দাড়িয়ে আছি একটু মায়া হয়না?(ইফরাজ)
তোমার ওতো মায়া হয়নাই।হঠাৎই আক্রমণ কেন করলা বলো?(ঐশানী)
তুমি এইতো বলছো আমি জানি সব।তাই তো আর দেরি করতে চাইনি।(ইফরাজ ঐশানীর পাশে বসে)
তাই বলে এইভাবে কেউ আক্রমণ করে ইফরাজ?(ঐশানী রাগ করে)
আচ্ছা এরপর বলে আদর করব।এখন বলো মাফ করছো কিনা?(ইফরাজ ঐশানীর পাশে কোলে শুয়ে কোমর জড়িয়ে)
না।সরো আমার সামনে থেকে অসভ্য পুরুষ। (ইফরাজ কে সরানোর ট্রাই করে ঐশানী)
প্লিজ বউ আর রাগ করোনা।(ইফরাজ ঐশানীর পেটে মুখ গুজে)
ইফরাজ সরো।(ঐশানী)
মাফ করছো সোনাপাখি?(ইফরাজ)
হুম সরো।(ঐশানী)
আচ্ছা চলো রেডি হোও ঘুরতে যাবো।(ইফরাজ উঠে বসে)
তারপর আমি উঠে রেডি হয়ে নিলাম। ইফরাজ ও রেডি হতেই আমরা বেড়িয়ে গেলাম।সারাদিন ঘুরে আবার সন্ধার দিকে চলে আসলাম।
এমন করে আমরা পাচঁদিন সাজেক ঘুরে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলাম।ইফরাজ এর সারাদিন এর দুষ্টুমি গুলো যেনো থামার নাম ও নেয়না।
কেমন আছো মামমাম?(ঐশানী)
ভালো তোদের দেখে আরো ভালো হয়ে গেলাম।তোর মা কি খবর?মাথার ব্যথা টা কমেছেতো?(মামমাম)
হ্যা কমেছে।আব্বু কি হসপিটালে?(ঐশানী)
হুম।সন্ধ্যার দিকে চলে আসবে।কিরে বাবা আসতেই রান্নাঘরে ঢুকলি কেন?আগে ফ্রেস হয়ে নে। (মামমাম)
কত্ত দিন তোমার হাতের রান্না খাইনা।আহ কিযে মজা হয়েছে মাছটা।আমি শাওয়ার নিয়ে এসে ভাত খাবো মামমাম। (ইফরাজ মামমাম এর পাশে বসে)
আচ্ছা খাবিতো বাবা।কিন্ত বাইরের থেকে এসে হাত না ধুয়ে খেতে শুরু করলি কেন?পেট খারাপ হবেতো?(মামমাম ইফরাজ এর মাথায় হাত দিয়ে)
হাত ধুয়েছি।আচ্ছা আমি শাওয়ার নিয়ে আসি এসে খাব।চলো সোনাপাখি তুমিও ফ্রেস হয়ে আসো।(ইফরাজ)
অসভ্য। মামমাম সামনে।(ঐশানী রাগ করে)
তো কি হয়েছে।আব্বুও তো মামমাম কে আদর করে তুলতুল বলে আমি কি কিছু বলছি।চলোতো ফ্রেস হয়ে এসো।মামমাম গেলাম ব্যাগ গুলো পরে নিবো।
বলেই ঐশানীর হাত ধরেই হাটা দিলাম।রুমে আসতেই আমার পিঠে একটা কিল দিতেই আমি ওকে ধরে আমার সাথে চেপে ধরলাম।
জামাই কে মারলে পাপ হয় বউ। (ইফরাজ ঐশানীর গাল কামরে)
অসভ্য পুরুষ মামমাম এর সামনে লজ্জা কেন দিলা?(ঐশানী রাগ করে)
আমার বউ আমি জাস্ট সোনাপাখি বলছি।মামমাম এর সামনে কিস তো আর করিনাই।চলো একসাথে শাওয়ার নিবো।(ইফরাজ)
ইফরাজ এর বাচ্চা খবরদার ফালতু কথা বলবানা।যাওতো আমি ফ্রেস হবো।
কে শুনে কার কথা ইফরাজ আমাকে কোলে করে এনে ওয়াশরুম ঢুকে ঝর্ণা ছেড়ে দিলো।(ঐশানী)
_________
সাজেক থেকে আসছি দুইদিন হলো।আম্মু বারবার যেতে বলছে।ইফরাজ কে বললে এখন যেতে দিবেনা।কারণ ও ইদানিং ওয়েডিং সেজন এর জন্য ব্যস্ত থাকে।সকাল দশটার দিকে যায় আসে রাত দশটার পর।তাই এখন আমাকে যেতে দিবেনা।তাই ভাবলাম ওকে না বলেই যাবো।কত্তদিন যাইনা ঐ বাড়ি।আমি মামমাম কে বলে চলে আসলাম এই বাড়ি।ইফরাজ যদিও রাগ করে না আমার সাথে সেই ভেবেই এসেছি।কিন্ত ও নাকি রাতে এসে মামমাম এর থেকে শুনে রাগ করেছ।মামমাম কে কল করতে তাই বলল।সারারাত ওকে কল করেছি কিন্ত ও ধরেনাই।ভোর পাচঁটার পর ঘুমিয়েছি।ঘুম ভাঙ্গল দুপুর বারোটার দিকে।উঠে ফ্রেস হয়ে ব্রেকফাস্ট করতে আসলাম। বিয়ের আগে বারোটা পর্যন্ত ঘুমালে আম্মু বকতে বকতে উঠাতো।আর এখন কোন বাধা নিষেধ নেই।এসে ব্রেকফাস্ট করে দাদা দিদার সাথে গল্প করে এসে 1:30মিনিটে শাওয়ার নিতে আসলাম।এসে ইফরাজ কে অনেক কল করেও পেলামনা।ইমু,মেসেনজার এমন কিছু বাদ নেই সব জায়গাতেই ট্রাই করেও কল ধরলনা।যা না ধরলে নাই আজাইরা ঢং।শাওয়ার নিয়ে দুপুর এর খাবার খেয়ে রুমে এসে মামমাম কে কল করলাম। মামমাম যখন বলল ইফরাজ সকালে না খেয়ে গেছে তখন আমিতো অবাক।না খেয়ে ইফরাজ কখন ও বের হয়না।আমি বিকাল পাঁচটার দিকে যমুনা ফিউচার পার্ক এ আসলাম।ওর শোরুম এ গিয়ে জানতে পারি নিউ শোরুম এ আছে ও।আমি সেখানে এসে দেখি ইফরাজ ফোনে কথা বলছে।আমি গিয়ে ওর সামনে দাড়ালাম।ও এমন ভাব করল আমাকে চিনেনা।(ঐশানী)
How can I help you mem?(ইফরাজ)
কল ধরো নাই কেন?(ঐশানী)
Sorry mem ।(ইফরাজ ভাব নিয়ে)
ঢং কম করো।তোমার সাথে কথা আছে চলো।(ইফরাজের হাত ধরেই ঐশানী)
আপনার সাথে আমি কেন যাবো mem ?এখানে আমার অনেক কাজ আছে।(ইফরাজ)
ইফরাজ এবার বাড়াবাড়ি করছো কিন্তু?(ঐশানী রাগ করে)
হাত ছাড়েন mem।(ইফরাজ)
ইফরাজ আমি কিন্ত রেগে যাচ্ছি। (ঐশানী)
দেখুন mem
আর বলতে পারিনাই আমার বউ আমার গালে কামর মেরে দিয়েছে।তারপর আমার হাতেও কামর মেরে কান্না করতে করতে দৌড়ে বেরিয়ে গেছে।আমি স্টাফদের উদ্দেশ্য বলে বেড়িয়ে পড়লাম। কিছুটা দূরেই একটা জায়গাতে বসে ঐশানী কান্না করছে।আমি এসে ওকে ধরে হাটা দিলাম। আমার পার্সোনাল অফিস রুমে এসে ওকে আমার সাথে জড়িয়ে রাখলাম। রাগ টাও করতে দিবেনা।ভাবলাম রাগ দেখাব এসে রাগ ভাঙ্গবে।কিন্তু উল্টো ওই রেগে গেছে(ইফরাজ)
********(চলবে)*********