#শব্দহীন_প্রণয়কাব্য(অন্তিম পর্ব)
#Mst.Shah Mira Rahman
মীরা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হচ্ছে।পড়নের ভারী শাড়ি সামলে মুখে প্রসাধনীর প্রলেপ লাগানো তার জন্য বেশ কষ্টকর হয়ে পড়েছে।চোখে মুখে বিরক্তি ভাব ফুটে উঠেছে।এর মাঝে অফিস ড্রেস পড়িহিত সুলেমান তুতুল কে কোলে নিয়ে ঘরে ঢুকল।আয়নার সামনে দাঁড়ানো বছর ত্রিশের নারীটিকে দেখে এক মুহূর্ত থম মেরে দাঁড়িয়ে রইল।মীরা আয়না দিয়েই তাকালো সুলেমানের দিকে।মৃদু হেসে তাড়া দিয়ে বলল,
“আপনিও তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিন।দেরী হচ্ছে আমাদের।”
সুলেমান শুনলো মীরার কথা।এগিয়ে গিয়ে তুতুল কে বেডের ওপর শুইয়ে দিয়ে পা বাড়ালো নিজের একান্ত ব্যক্তিগত নারীটির দিকে।হঠাৎ ই শাড়ি ভেদ করে নিজের উন্মুক্ত উদরে পুরুষালি হাতের স্পর্শে কেঁপে উঠলো মীরার সমস্ত কায়া। সুলেমান মুখ গুজলো মীরার খোলা চুলে।নাক টেনে ঘ্রাণ নিল।হাতের স্পর্শ এলোমেলো হলো।মীরা চোখ বুঁজে নিজের নিঃশ্বাসের গতি মাপল। সুলেমানের অনিয়ন্ত্রিত স্পর্শের কবল থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে ঘুরে দাঁড়ালো তার দিকে।দুই হাতে সুলেমানের কোমর পেঁচিয়ে চোখে চোখ রাখল। সুলেমান তাকালো তার দিকে।
“কি করছেন এসব?বেরোতে হবে আমাদের।”
“এত সেজেছো কেন?কোনো প্রয়োজন ছিল না এসবের।”
“প্রয়োজন আছে।আপনি যান তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিন।”
সুলেমান কামড় বসালো মীরার নাকে।মৃদু গলায় বলল,
“তুমি আমার ধৈর্য্যের পরীক্ষা নিচ্ছ।”
মীরা হাসল। সুলেমান দেখল সেই হাসি।তাদের এই একান্ত মুহূর্তে তুতুল হাত পা নাড়িয়ে খেলতে খেলতে খিলখিল করে হেসে উঠে ডাকলো,
“পাপ্পাআআআআহ।আহহহহ্।”
সুলেমান তাকালো তুতুলের দিকে।একঝাঁক শীতলতা ঘিরে ধরল তাকে। এগিয়ে গিয়ে কোলে নিল নিজের মেয়েকে।মেয়েটা যখনই এভাবে ডাকে কোনো এক মিষ্টি যন্ত্রণায় ছেয়ে যায় হৃদয়স্থল।মনে পড়ে যখন তার সদ্যজন্ম নেওয়া মেয়েটার মৃতদেহ তার হাতে দেওয়া হয়েছিল। সুলেমানের হৃদয় কেপে উঠেছিল।আজও কাঁপে তবে তা সুখ সুখ অনুভুতিতে।সুলেমান ঠোঁট চেপে ধরল তুতুলের গালে। খিলখিল করে হেসে উঠে হাত পা নাড়ালো তুতুল।মীরা তাদের দেখে হাসল। এগিয়ে গিয়ে তুতুল কে কোলে নিয়ে সুলেমানের উদ্যেশ্যে বলল,
“এবার বের না হলে সত্যি দেরী হয়ে যাবে।মা আপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।”
সুলেমান আর দাড়ালো না।ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো।
____
আজ সালমান, হায়াত ও সিদ্ধান্ত সকালের রিসেপশন পার্টি রাখা হয়েছে কমিউনিটি সেন্টারে।কাল ঘরোয়াভাবে সিদ্ধান্ত সকালের বিয়ে হয়েছে। সিদ্ধান্ত কাল ই নিজের সাথে নিয়ে গেছে সকাল কে।আজ পার্টিতে সরাসরি ওখান থেকেই আসবে সকাল।মির্জা বাড়ির সবাই আগেই বেরিয়ে পরেছে।সকাল হায়াতকে ওখানে নিয়ে গিয়ে সাজানো হবে তাই দেরী করেনি। সুলেমানের কাজ থাকায় সে আটকে গিয়েছিল। সুলেমানের সাথে যাবে বলে মীরাও থেকে গিয়েছিল।এ জন্য সন্ধ্যার ও আর যাওয়া হয়নি। সুলেমান রেডি হয়ে দুজনকে নিয়ে বেরিয়ে পরল নির্দিষ্ট গন্তব্যে।
_____
কমিউনিটি সেন্টারের ভেতর বাহির রং বেরংয়ের আলোকসজ্জায় সজ্জিত।অতিথিদের আগমন ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। সিদ্ধান্ত হাত কচলাচ্ছে।প্রায় কয়েক ঘন্টা যাবৎ সকাল কে দেখছে না সে।আজব এতো কী সাজছে এই মেয়ে।আর কত সময় নেবে।সালমান এদিক ওদিক তাকালো। হায়াত কে সে বলে দিয়েছে যেন ভারী কোনো সাজ না নেয় সে।এই সময় এসব সামলানো কষ্টকর হবে হায়াতের জন্য।তার চার মাস চলছে। সালমান রিসেপশন পিছিয়ে দিতে চেয়েছিল কিন্তু হায়াত দেয়নি।তার শখ ছিল ধুমধাম করে বিয়ে করার।তা পূরণ হয়নি।এখন রিসেপশন পিছিয়ে গেলে তার মন ভেঙে যাবে। সালমান হায়াতের মন রাখতেই চুপ করে রইল।তবে তার রাগ বাড়ল যখন সে দেখল হায়াত যথেষ্ট ভারী সাজ নিয়েছে।ভারী লেহেঙ্গা গয়না গাটিতে ভরে রয়েছে পুরো শরীর। সালমান মুগ্ধ হওয়ার আগে তার মাথা গরম হলো।শক্ত চোখে তাকালো হায়াতের দিকে।হায়াত গুটিয়ে গেল।পাজি লোক তাকায় কিভাবে?
___
সিদ্ধান্ত থম মেরে দাঁড়িয়ে আছে।হাত পা ঘামছে তার।হৃদয় অতল থেকে থেকে কেঁপে উঠছে।তার পাশে সকাল।সিদ্ধান্ত বেশ রয়ে সয়ে সকালের কাছে এসে মৃদু স্বরে বলল,
“সকাল আমি মরে যাবো।আর নয় প্লিজ।”
সকাল কেঁপে উঠলো।সিদ্ধান্তর থেকে দূরে সরে আসতেই তার কোমড় চেপে নিজের দিকে নিয়ে এলো সিদ্ধান্ত।
“খবরদার দূরে যাবে না সকাল।একদম মেরে ফেলবো।”
___
কমিউনিটি সেন্টারে সন্ধ্যার পাশে দাঁড়িয়ে অতিথিদের সাথে কথা বলছিল মীরা।তার কোলে তুতুল।ঠিক সেই সময় কোথা হতে আয়াত দৌড়ে এলো।তুতুলের দিকে হাত বাড়িয়ে বলল,
“আমাকে দাও ভাবী।ও আমার কাছে থাক।”
মীরা হেসে দিল।আয়াতের গাল ছুঁয়ে বলল,
“ও আমার সাথেই থাক আয়াত।তুমি বন্ধুদের সাথে আড্ডা দাও।”
“কোনো প্রয়োজন নেই।ওকে ছাড়া আমার ভালো লাগে না।দাও ওকে আমার কোলে।”
মীরা দিল।আয়াত তুতুল কে নিয়ে দূরে এক জায়গায় সরে দাড়ালো।মীরা তাকিয়ে রইল সেদিকে।তার কেন যেন মনে হয় আয়াত আর আগের মতো নেই। সেদিন বাড়ি ফেরার পর থেকেই কেমন চুপচাপ একঘরে হয়ে গিয়েছে সে।সবার সামনে হাসিখুশি থাকার অভিনয় করলে ও মনে মনে গুমড়ে মরে সে।বারবার এ বিষয়ে প্রশ্ন করেও উত্তর পায় নি।তবে মীরা জানে।আয়াত ভালো নেই।তার চোখের ভাষা বলে সে ভালো নেই।
শুনানি তে ওমরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।তার মায়ের কেসটাও নতুন করে ওপেন করে তার ওপর চার্জ লাগানো হয়েছে। ওমরের পক্ষে কোনো উকিল ছিল না।না সে নিজে নিজের পক্ষে কোনো সাফাই দিয়েছে।ওমর এখন জেলে।এই খবর শোনার পর মির্জা বাড়ির সবার মুখেই হাসি ফুটেছিল।আয়াত ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে দেখেছিল তাদের সেই হাসি।
____
প্রায় দশটার দিকে অনুষ্ঠান শেষ করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে প্রায় এগারোটা বেজে গেছে। সিদ্ধান্ত সকালরাও এসেছে মির্জা বাড়িতে।তাদের সকালের ঘরেই থাকার ব্যবস্থা করা হলো।ঘরে এসেই সকাল ওয়াশরুমে গিয়েছে সাজ তোলার জন্য। সিদ্ধান্ত আগেই ফ্রেশ হয়ে বেরিয়েছে।প্রায় ঘন্টাখানেক সময় নিয়ে বের হয়েছে সকাল।সিদ্ধান্ত তখন ঘুরে ঘুরে তার ঘরের পেইন্টিং দেখছিল। সকাল ড্রেসিংটেবিলের সামনে এগিয়ে গেল।পড়নের শাড়িটা ঠিক করে চুলে চিড়ুনি করল। সিদ্ধান্ত তাকিয়ে রইল তার দিকে। সকাল লজ্জা পেল।মুখ ঘুরিয়ে মৃদু হাসল।মুহূর্তেই এক শক্তপক্ত বাহু বন্ধনে আবদ্ধ হলো। সকাল চমকে উঠল।মুখ ঘুরিয়ে তাকালো সিদ্ধান্তের দিকে। সিদ্ধান্ত মুখ গুজলো সকালের ঘাড়ে।ছোট স্পর্শে মাতিয়ে তুলল তাকে। সকাল পুরোটাই ঘুরে দাঁড়ালো সিদ্ধান্তের দিকে।সিদ্ধান্ত তখন উন্মাদ।সকাল ডাকল তাকে,
“সিদ্ধান্ত?”
সিদ্ধান্ত সাড়া দিল না।সকাল আবার ডাকল।
“শুনুন না!”
সিদ্ধান্ত তাকালো সকালের দিকে।শ্বাস ঘন দেখালো তার। সকাল জিজ্ঞেস করল,
“আপনি দশ বছর এব্রোডে ছিলেন। পড়ালেখা করেছেন চাকরি করেছেন ওখানে।”
সিদ্ধান্ত বিরক্ত হলো।এমন একটা মুহূর্তে এসব কথা ওঠানোর জন্য। তবুও ধীর কণ্ঠে বলল,
“হ্যা তো?”
“ওখানে আপনার কোনো গার্লফ্রেন্ড ছিল না?”
সিদ্ধান্ত বুঝল সকালের আশংকা।মৃদু হেসে বলল,
“ছিল।”
সকাল চোখ বড় বড় করে তাকালো সিদ্ধান্তর দিকে। সিদ্ধান্ত তার ঠোঁটের কোণে কামড় বসিয়ে কৌতুক স্বরে বলল,
“তবে চিন্তা করো। গার্লফ্রেন্ড থাকলেও বউ ছিল না সেখানে।”
সকাল সিদ্ধান্তর গলা চেপে ধরল।শক্ত গলায় বলল,
“মেরে ফেলবো একদম।”
সিদ্ধান্ত হো হো করে হেসে হুট করেই কোলে তুলে নিল সকাল কে। সকাল ছটফট করল। সিদ্ধান্ত তাকে বেডের ওপর ফেলে নিজের চেপে গেল তার দিকে।চোখে চোখ রেখে ডাকল,
“সকাল।”
সকাল দমে গেল।মৃদু কণ্ঠে বলল,
“হুম।”
“আমার ছোট্ট একটা সকাল চাই।”
সকাল লজ্জা পেল।মুখ লুকালো সিদ্ধান্তর বুকে।নিজের হাতের আঁজলায় তাকে আগলে নিল সিদ্ধান্ত। নিজেদের দুরত্ব ঘুচলো।প্রায় চার বছরের অপেক্ষা উন্মাদনায় রুপ নিল।মিলে মিশে এক হলো দুটো মানব শরীর।সাক্ষী হলো এক দীর্ঘ মধুকর রজনীর।
_____
বাড়ি ফিরেই হায়াত ওয়াশরুমে ঢুকেছে আর বের হয়নি।প্রায় ঘন্টা পার হওয়ার পর ও যখন বের হলো না সালমান বিরক্ত হলো।ওয়াশরুমের কাছে গিয়ে দরজায় বারি দিয়ে জোড়ে জোড়ে ডাকলো।
“হায়াত এতক্ষণ ভেতরে কি করছিস?বের হো।”
“আগে বলো তোমার রাগ কমেছে।তাহলে বের হবো।”
সালমান অবাক। হাসবে না কাঁদবে বুঝলো না।এই মেয়ে তাহলে ভয় পেয়ে এতক্ষন ভেতরে ঢুকে আছে। সালমানের কণ্ঠ নরম হলো শান্ত গলায় বলল,
“রেগে নেই।বের হো।”
“সত্যি?”
“সত্যি।”
হায়াত ওয়াশরুমের দরজা খুলে উকি দিল। সালমান তাকালো।সময় নষ্ট করল না।এক হাত টেনে তাকে বের করে ওখানেই দেয়ালের সাথে চেপে ধরল।
“কী বাচ্চামো করছিস।”
হায়াত ভয় পেয়েছিল।বুকে হাত রেখে বলল,
“কী করেছি আমি?”
“এতক্ষণ ওয়াশরুমে কেন ছিলি?”
“আমি ভেবেছি তুমি রেগে আছো।”
“আমি রেগে আছি।”
“কেন?”
“তোকে বারন করেছিলাম ভারী সাজ না দিতে।তোর জন্য আমার বাচ্চা কষ্ট পেয়েছে।”
হায়াত রেগে গেল। সালমানের বুকে হাত দিয়ে তাকে সরানোর চেষ্টা করতে করতে বলল,
“ঘাট হয়েছে আমার। তোমার বাচ্চার মা আমি হবো না।তুমি তোমার বাচ্চা নিয়ে নাও।”
সালমান হায়াতের হাত ধরে আটকালো।চোখে চোখ রেখে বলল,
“দিয়ে দে।”
“আমার পেটে আছে নিয়ে নাও।”
বলতে দেরী সালমানের নিচে বসতে দেরী না।দুই হাতে হায়াতের কোমড় জড়িয়ে উন্মুক্ত উদরে ঠোঁট চেপে ধরল। হায়াত কেঁপে উঠলো।ধীরে ধীরে স্পর্শ গভীর হলো।হায়াত খেই হারালো।খামচে ধরলো সালমানের মাথার ঘন চুল।শ্বাসের ঘনত্ব বাড়ল। সালমান ঠোঁট সরিয়ে নাক ঘষল। মৃদু কণ্ঠে বলল,
“তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এসো সোনা আমার।বাবাই তোমার অপেক্ষায়।
_____
মীরা তুতুলের জন্য দুধ গরম করে ঘরে এসে কাউকে না পেয়ে বারান্দায় উঁকি দেয়।তুতুলকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সুলেমান। মীরা এগিয়ে যায় সেদিকে।সুলেমানের পাশে গিয়ে দাড়ায়।সুলেমান তাকালো মীরার দিকে।হাত বাড়িয়ে বুকে জড়িয়ে নিল।একপাশে মেয়ে অন্যপাশে নিজের স্ত্রী। সুলেমান বুক ভরে শ্বাস নিল।ধীমি গলায় ডাকল,
“মীরা?”
“হুম।”
“আর কখনো আমায় ছেড়ে যেও না।”
মীরা চুপ করে রইল। সুলেমান আবার বলল,
“যখন তুমি ছিলে না। আমার প্রতিটা রাত দুঃস্বপ্নের মতো ছিল।সেই দুঃস্বপ্নের মাঝেও আমি কল্পনায় আমাদের একটা সংসার সাজাতাম মীরা।যেখানে তুমি আমি আর আমাদের মেয়ে ছিল।আজ আমার সেই কল্পনা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। সবকিছু আমার কাছে এখনো স্বপ্নের মতোই।হুটহাট ভয় জাগে এই বুঝি হারিয়ে ফেলবো সবকিছু।মীরা যাই হয়ে যাক না কেন,এরপর কখনো আমার থেকে দূরে সরে যেও না।তুমি চাইলেও আমি যেতে দেব না।কাছে থেকে কষ্ট দেবে আঘাত করবে আমি সয়ে নেব।তবে তোমার দূরত্ব আমি সইতে পারি না। মৃত্যু যন্ত্রণা হয় আমার।”
মীরা চুপ করে শুনলো প্রিয় পুরুষের দগ্ধ হৃদয়বাক্য।মাথা আরো শক্ত করে চেপে ধরল তার বুকে। বিড়বিড় করে বললো,
“যাবো না,কখনো যাবো না।”
বিঃদ্রঃ
“তুই আস্ত একটা যন্ত্রণা ভুটকি।অথচ সেই যন্ত্রণার বিষ পান করতে হৃদয় ব্যাকুল হয়ে উঠেছে।দুরত্ব সহ্য হচ্ছে না।আমি আসছি।তবে আমার আসাটা তোর জন্য মোটেও সুখকর নয়।”
চৈত্রের এক তপ্ত দুপুর।খরখরে রোদে পুড়ে ছাড়খার ধরণীর বুক।সেই উত্তপ্ত দুপুরে তেজস্বী রোদে ছাদের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে গোলগাল চেহারার এক রমণী।দৃষ্টি শূন্যে।রোদের তাপে পুড়ে লাল বর্ন ধারন করেছে ফর্সা মুখশ্রী।নাকের ডগায় চিকচিক করছে ঘামবিন্দু। হৃদয়ের জ্বালাপড়া ক্রমে ক্রমে বেড়ে চলেছে। সেদিনের পর কেটে গেছে হাতে গোনা প্রায় কয়েক বছর।স্মৃতি গুলো বড্ড তিতকুটে অথচ শান্তিদায়ক।অতীতের স্মৃতিচারণের মাঝেই ফোনের চোখের সামনে ধরল আয়াত।চোখের সামনে ভেসে উঠলো কয়েকটি হৃদয় কাঁপানো শব্দ।চোখের কোণা জ্বলে উঠল। ঠোঁটের কোণে ফুটল মৃদু হাসি।কাঁপা হাত হতে ফোন পড়ে গেল শক্ত ছাদের গায়ে।চুরচুর করে ফাটল ধরল কাচের ওপর।এক অপরিচিত অনুভূতির শিহরণ জাগলো হৃদয়গ্রাহে। নিঃশ্বাসের গতি বাড়ল।মিষ্টি যন্ত্রণায় ছটফট করল হৃদয়।মনে পড়ল মাস কয়েক আগে সুলেমানের বলা কথাটি।”ওমর পালিয়েছে জেল থেকে।” সাথে সাথে অনুভূতি ভুলে আতংক ছড়ালো চোখে মুখে।নিজের ভবিষ্যৎ ভেবে নিল যেন কয়েক মূহুর্তে।আর নয়।ছাদ থেকে নামার জন্য দ্রুত কদম ফেলল।তার প্রতিটি কদমে কোঁকড়ানো চুল গুলো দোদুল্যমান। এলোমেলো ছন্নছাড়া ওড়নাটা বাতাসের সাথে তাল মিলিয়ে গেল।সেই সাথে রেখে গেল কারো অনুভূতির শব্দগুচ্ছ।অথচ কোনো এক অজানা আশঙ্কায় রমণীর নিজের অনুভূতি গুলো রয়ে গেল শব্দহীন।
সমাপ্ত❤️