শান্তিসুধা পর্ব-২০

0
410

শান্তিসুধা ( প্রাপ্তমনস্কদের জন্য উন্মুক্ত )
২০.
সোনামুখো রাত। জ্যোৎস্নার মোহনীয় আলোতে নুবাইদের হাত ধরে পাশাপাশি হাঁটছে শান্তি। মেঘমুক্ত আকাশে তারার মেলা, ঝিরিঝিরি হাওয়া বইছে। ঝিঁঝি পোকার ডাকে কান ঝালাপালা। জোনাকিদের মনোরম দৃশ্যে নয়নজুড়ে মুগ্ধতা ভর করেছে। প্রকৃতির শান্ত, কোমল স্নিগ্ধ রূপে জোনাকিদের খেলা আর ঝিঁঝির ডাক বয়ে এনেছে অন্য মাত্রা। শান্তির শরীর জুড়ে অদ্ভুত শিহরণ দোলা দিতে লাগল। মন জুড়ে কী ভীষণ ভালো লাগার আবেশ। নুবাইদ অনুভব করল শান্তির হাত দৃঢ় হচ্ছে। ধীরেধীরে সেও নিজের হাতটা দৃঢ় করল।

ওরা দুজন রতনকে অনুসরণ করছে। আর একটু পথ অতিক্রম করলেই রতনের মামাবাড়ি। পাহাড়িয়া মাটিতে অল্প পথ হেঁটেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছে শান্তি। সামনে আগালেও ওর কেবল মনে হচ্ছে পা দুটো আপনাআপনি পেছনে চলে যাচ্ছে। পাহাড়িয়া মাটিতে কি অশরীরীরা থাকে নাকি? কেন মনে হয় এ মাটি পেছন থেকে দু পা টেনে ধরে? শান্তির বুকের ভেতর ধুকপুক শুরু হলো। অকস্মাৎ শেয়ালের হাঁক শোনা গেল। পাল্লা দিয়ে ঘেউঘেউ করে উঠল একদল কুকুর। একসঙ্গে এত ধকল নিতে পারল না শান্তি। তীব্র ভয়ে কেঁপে উঠল। দু’হাতে জাপ্টে ধরল নুবাইদের বাহু। পদ্মফুল গুলো মাটিতে পড়ে গেল। সেদিকে হুঁশ নেই কারো। ভয়ে কাঁপছে শান্তি। নুবাইদ বিস্মিত হয়ে তাকাল। জ্যোৎস্নার নরম আলোতে দেখতে পেল শান্তির ভয়। অনুভব করল মেয়েটা থরথর করে কাঁপছে। মুহুর্তে আগলে ধরল শান্তিকে। কাঁধ চেপে ধরে শীতল গলায় বলল,

” কী আশ্চর্য এত ভয় পাচ্ছ কেন? শেয়াল, কুকুরের ডাককে কেউ বাঘের মতো ভয় পায় নাকি! ”

চুপসে রইল শান্তি। শুনশান পাহাড়ি এলাকা। ভালো লাগছে না। বুকের ভেতর ভয় ভয় অনুভূতি। এরমধ্যে শেয়াল, কুকুরের ডাক বীভৎস শোনাচ্ছে। ঢোক গিলল সে। নুবাইদ কাঁধ জড়িয়ে ধরে এগুলো। মিষ্টি প্রকৃতির নীরব রাতে নুবাইদের আলিঙ্গনে থেকে বাকি পথ হাঁটতে মন্দ লাগল না। ধীরেধীরে ভয়টাও কেটে গেল।

রাতে রতনের মামাবাড়িতে খাবার খেলো। তারা বেশ যত্নআত্তি করল নুবাইদ আর তার বউ শান্তিকে। শান্তি ভেবেছিল, ওরা এ বাড়িতেই বেড়াতে এসেছে। কিন্তু যখন ওদের থেকে বিদায় নিয়ে রাত মাথায় আবার বেরুল। তখন ভয় এবং কৌতূহল দুটোই হলো। বিরক্তও হলো কিঞ্চিৎ। শরীরটা দুর্বল লাগছে৷ পা দুটোও চলছে না৷ এত হাঁটা যায় নাকি? ঘুম পেয়েছে মারাত্মক। প্রায় কাঁদো কাঁদো হয়েই শান্তি বলল,

” আবার কোথায় যাচ্ছেন নাফের? আমি আর হাঁটতে পারছি না। ”

” এই তো পৌঁছে গেছি। ”

চমকে গেল শান্তি। পৌঁছে গেছি মানে? নুবাইদ ডানদিকে ইশারা করল। শান্তি মাথা উঁচু করে দেখল, পাহাড়ের চূড়া। একটু ভালো করে খেয়াল করে অবাক হলো ভীষণ। এ আবার কেমন চূড়া? নুবাইদ ওর হাতটা টেনে নিয়ে গেল চূড়ার সামনে। নিচের দিকে ইশারা করে বলল,

” গুনে গুনে পঁচিশটা সিঁড়ি অতিক্রম করে চূড়ায় উঠতে হবে। তাহলেই পেয়ে যাবে আকর্ষণীয় এক ছোট্ট বাংলো। ওখানেই ঘুমাব আমরা। ”

আঁতকে উঠল শান্তি। চ্যাঁচিয়ে বলল,

” এটা কী ধরনের ফাইজলামি নাফের? আপনি বুঝতে পারছেন আমার পায়ের অবস্থা? আমি উঠব না৷ এখানেই ঘুমিয়ে পড়ব। ”

বলেই বসে পড়ল শান্তি। রতন ততক্ষণে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগল৷ নুবাইদ মিটিমিটি হাসতে হাসতে বলল,

” আচ্ছা তুমি বরং এখানেই ঘুমাও। আমরা উপরে যাই। কত সৌভাগ্য আমার লেডি দারোয়ান পেলাম। ”

ক্ষেপে গেল শান্তি। চট করে উঠে দাঁড়িয়ে নুবাইদের কলার চেপে ধরল। দাঁতে দাঁত পিষে বলল,

” খুব মজা তাই না? আমি পাহারাদার হবো। আর আপনারা দুজন উপরে গিয়ে নাক ডেকে ঘুমাবেন। কী পেয়েছেন আপনি হু? শান্তিকে মুরগি পেয়েছেন মুরগি?”

সহসা শান্তির ঠোঁটে তর্জনী চেপে ধরল নুবাইদ। হৃৎপিণ্ডে রক্ত ছলকে উঠল শান্তির। সমস্ত দাপট এক নিমেষে ছারখার হয়ে গেল। স্তব্ধ হয়ে রইল দৃষ্টি জোড়া। নুবাইদ মুখ এগোল। কানের কাছে ঠোঁট ছুঁয়ে ফিসফিস করে বলল,

” প্রশ্নটা গুরুত্বপূর্ণ। উত্তর দিতে হলে টেস্ট করতে হবে। তারপর বলব, হাঁস না মুরগি। ”

অবাকের চরম পর্যায়ে শান্তি। টেস্ট করতে হবে মানে?
চোখে বিস্ময় ফুটিয়ে ঠোঁট দুটো ফাঁক করার চেষ্টা করল। কিন্তু নুবাইদের তর্জনীর জন্য সম্ভব হলো না। তাই চট করে নুবাইদের পেটে চিমটি দিল। সঙ্গে সঙ্গে ছিঁটকে দূরে সরে গেল নুবাইদ। চোখ দুটো ছোটো ছোটো করে বলল,

” বড্ড পা’জি মেয়ে তুমি। ”

” পাইজামির দেখেছেন কি? ”

প্রশ্নটা করেই একদম কাছে এসে দাঁড়াল। তারপর নিজেকে সঁপে দেওয়ার মতো ভঙ্গিমা করে বলল,

” নিন কোলে নিন। এক্ষুনি কোলে নেবেন। ”

ধমকের সুরে এমন আবদার শুনে ভড়কে গেল নুবাইদ। কপট হেসে বলল,

” সিরিয়াসলি? রতন আছে। কী ভাববে? ”

” রতন কী ভাববে মানে? আপনি কি ওর বউকে কোলে তুলবেন যে ওর ভাবাভাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। আমাদের তো ডিভোর্স হয়ে যায়নি যে আমাকে কোলে তুললে রতনের সামনে আপনার জাত, মান ধ্বংস হয়ে যাবে। একশোবার কোলে নেবেন। রতন আকাশপাতাল ভেবে নরকে চলে যাক তবুও কোলে নেবেন। যদি না নেন তবে আমি চিৎকার করে রতনকে ডাকব। তারপর বলব, রতন ভাই আমাকে কোলে নিয়ে উপরে যান। আমার অফিশিয়ালি হাজব্যান্ড আপনার ভয়ে আমাকে কোলে নিতে চাচ্ছে না। ”

হতভম্ব হয়ে গেল নুবাইদ। পাহাড়ে এসে এই মেয়ে তো একদম ফুল ফর্মে চলে এসেছে! মুখে কিছুই আটকাচ্ছে না। লাগামহীন শান্তিসুধা তার রূপে ফিরে এসেছে।
এক্ষুনি থামাতে হবে। ভেবেই মুখটা কঠিন করে বলল,

” চুপপ। এতবেশি কথা বলছ কেন? মনে ডরভয় নেই কোথায় এসেছ ভুলে গেছ? ”

মৃদু চমকাল শান্তি। আশপাশে সচেতন চোখে তাকিয়ে ঢোক গিলল। চেপে দাঁড়াল নুবাইদের দিকে। মনে মনে হাসল নুবাইদ। এরপর কিছু বুঝে উঠবার আগেই আচমকা বউকে কোলে তুলে নিল। শান্তির নরম তুলতুলে শরীরে নিজের বলিষ্ঠ হাত পড়তেই স্নায়ুতন্ত্রে দুর্বলতা অনুভব করল। শান্তিরও বুকের বামপাশে অদ্ভুত শিহরণ জাগছে।

একে একে সিঁড়ি পেরোল নুবাইদ। শান্তি গুটিশুটি হয়ে পরে রইল ওর বুকে। একদম উপরে উঠে লম্বা করে নিঃশ্বাস ছাড়ল নুবাইদ। শান্তিকে কোল থেকে নামিয়ে দিয়ে বলল,

” এবার শান্তি? ”

অন্যরকম অনুভূতিতে মিইয়ে ছিল শান্তি। নুবাইদ প্রশ্নটি করতেই গাল দুটো রক্তিম হয়ে উঠল। সে রক্তিম আভা দেখতে পেল না নুবাইদ। শান্তি মৃদুস্বরে বলল,

” এত অল্পে শান্তির শান্তি মিলবে না। ”

কথাটা নুবাইদ শুনল কিনা বোঝা গেল না। রতন এসে জানাল, তাদের ঘর ঘুমানোর জন্য প্রস্তুত।
.
ভোরবেলা শান্তির ঘুম আগে ভাঙল। নুবাইদ পাশে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। হাই তুলতে তুলতে সে ডাকল,

” নাফের, নাফের উঠুন। সকাল হয়ে গেছে। ”

সচরাচর এত সকালে ঘুম ভাঙে না শান্তির। অপরিচিত জায়গা বলে আজ ঘুমটা ভালো হয়নি। সাতসকালে ভেঙেও গেছে। নুবাইদ অবাক হলো ভীষণ। উঠে বসতে বসতে বলল,

” গুড মর্নিং। ”

শান্তি উঠে দাঁড়াল। গায়ে ওড়না জড়াতে জড়াতে বলল,

” চলুন ফ্রেশ হই। আমি বাথরুম খুঁজে পাচ্ছি না। ”

চকিতে তাকাল নুবাইদ। বাথরুম! পরমুহূর্তেই ধড়ফড় করে উঠে দাঁড়াল। বলল,

” রতন কোথায়? ”

রেগে গেল শান্তি। এটা কী ধরনের প্রশ্ন? রতন কোথায় সে জানবে কী করে? তাই উত্তর দিল,

” আমি কি রতনের সাথে ঘুমিয়েছিলাম যে ঘুম থেকে উঠেই তার খবর জানব? ”

জবাবটা অ শ্লীল শোনাল। তাই ধমকে উঠল নুবাইদ। শান্তি কঠিন চোখে তাকিয়ে। সে বুঝল বোকার মতো প্রশ্ন করে ফেলেছে। এজন্যই এমন ত্যাঁড়া উত্তর পেল। বিব্রত হলো নুবাইদ। বেরিয়ে গেল হনহনিয়ে। শান্তি পিছু নিতে যাচ্ছিল। সহসা থেমে গেল। নুবাইদের ফোন ভাইব্রেট হচ্ছে। এগিয়ে গিয়ে ফোন তুলতেই স্ক্রিনে হেনার নাম্বার ভেসে উঠল। রিসিভ করতেই উত্তেজিত কণ্ঠস্বর শুনল,

” কখন থেকে ফোন করছি, কোথায় তুই নাফের? ”

” আমরা তো হানিমুনে এসেছি আপা। ”

সুযোগ পেয়ে হেনাকে জব্দ করল শান্তি। হেনা চ্যাঁচিয়ে উঠল,

” কী বলছ এসব তুমি? ”

” বারেহ কী বললাম? বিয়ের আগে হানিমুন করছি না তো আপা। অলরেডি আমাদের বিয়ের এক বছর হতে চলেছে। এই তো আর কয়েকটা মাস। সো বিয়ের পর হানিমুনের কথা শুনে এভাবে আঁতকে উঠতে নেই। ”

” নিজেকে খুব বেশি চালাক ভাবো তাই না? ”

” তা তো অবশ্যই। চালাক বলেই তো নিজের জামাই নিয়ে চালাকি করি। অন্যের জামাই বা ছোটো ভাইকে মনে মনে জামাই ভেবে চালাকি করি না। ”

” শান্তি! ”

” আমার সংসারে অশান্তি করবেন না। ফল খুব খারাপ হবে। আমরা হানিমুনে এসেছি। ডিস্টার্ব করবেন না। ”

বলেই কল কে টে নাম্বারটা ব্লক করে দিল। এরপর ঘর ছেড়ে বেরিয়ে চমকে গেল সে। মস্ত বড়ো লাল মাটির টিলার উপর তারা। চারপাশে অগণিত ফল গাছ। কী নেই এই চুড়াতে? আম, জাম, কাঠাল আরো কত কী! একপাশে চাপকল। নুবাইদ সেই কল চেপেই মুখ ধুচ্ছে। সে বেরুলে তাকে দেখে বলল,

” চলে এসো ফ্রেশ হতে। ”

এরপর তর্জনী দাঁড় করিয়ে বলল,

” এক পেয়েছে? ”

তাজ্জব হয়ে গেল শান্তি। কী উত্তর দেবে? নুবাইদ উত্তরের অপেক্ষা করল না। কাঠাল গাছের পেছনে টিনের বেড়ায় ইঙ্গিত দিয়ে বলল,

” ওপাশে চলে যাও। লাইফে সব ধরনের অভিজ্ঞতারই প্রয়োজন আছে। ”

অদ্ভুত ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে গা ঘিনঘিন করতে লাগল শান্তির। নাকমুখ কুঁচকে বলল,

” আমি শাওয়ার নিব নাফের। ”

” আচ্ছা নাও। রতনকে ফোন করে বলে দিচ্ছি একঘন্টা পর আসতে। তুমি নিশ্চিন্তে গোসল করে নাও। ”

পরিস্থিতি ভয়াবহ। ঢোক গিলল শান্তি। এমন বিপদে তো সে জীবনে পড়েনি। প্রচণ্ড অস্বস্তি নিয়ে গোসল করতে এলো সে। কিন্তু কল চাপতে খুব কষ্ট হলো। এভাবে কল চেপে গোসল করা যায় নাকি? একটা বলাতিও নেই। আছে শুধু মগ। নুবাইদ চলে গিয়েছিল। ঘর থেকে শান্তির অবস্থা দেখে বেরিয়ে এলো। বলল,

” আমি হেল্প করছি। কল চেপে দিই। তুমি মগ ভরে গায়ে পানি ঢালো। ”

আশ্চর্য হয়ে তাকাল শান্তি। এভাবেও গোসল হয়? নুবাইদ মনে মনে দুষ্টু হাসল। প্রকাশ্যে বলল,

” এভাবে তাকাচ্ছো কেন? ”

” আপনি আমার গোসল দেখবেন? ”

ভ্রু কুঁচকে ফেলল নুবাইদ। তীক্ষ্ণ গলায় বলল,

” এনি প্রবলেম? ”

” নেই বলছেন? ”

অদ্ভুত করে হাসল নুবাইদ। দৃষ্টিতে কিছু একটা মিশিয়ে বলল,

” আমি তো রতন নামক পরপুরুষ নই। দেখলে ক্ষতি কী? ”

বিস্ময়ে হতবিহ্বল শান্তি। তর্জনী উঁচিয়ে কিছু বলতে উদ্যত হয়েও থেমে গেল। মনে মনে বলল,

” ওরে শান্তি থেমে যা। এই তো সুযোগ আটাশ বছর বয়সী বুড়োটার ভার্জিনিটি কেড়ে নেওয়ার৷ আপাতত যত পারিস ব্যাটাকে সিডিউস করে যা। হেনাফেনাকে এত গর্ব করে বললি হানিমুন করতে এসেছিস। প্রপারলি তা না করে ফিরে যাওয়া তো ব্যর্থতার। তাছাড়া ডিভোর্সটাও তো আটকাতে হবে। নয়তো ঠিক নির্লজ্জ হেনা তোর জায়গা নিয়ে নেবে। ”

মনে মনে নিজেকে এসব বলে দীর্ঘশ্বাস ফেলল শান্তি। তারপর চুপচাপ গিয়ে কলের নিচে বসে পড়ল। নুবাইদ কল চাপল আর সে গায়ে পানি ঢালল। এরপর আচমকা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাল নুবাইদের পানে। ভেজা চোখজোড়া পিটপিট করে, ভেজা ঠোঁট মেলে মিষ্টি করে হাসল। নুবাইদের দৃষ্টি আটকাল ষোড়শী কন্যার আবেদনীয় মুখশ্রীতে। হাত দুটো কার্যক্রম থামিয়ে দিল। চেনা মুগ্ধতা, অচেনা নেশায় শরীরের লোমকূপ দাঁড়িয়ে গেল। শান্তি সুযোগ নিল। তার যেন আজ শুধু সুযোগ নেওয়ারই দিন। চট করে উঠে দাঁড়াল সে। অত্যন্ত কৌশলে গা থেকে ওড়না ফেলে দিল। সুগঠিত নারী শরীরে ভেজা কাপড় লেপ্টে আছে। নুবাইদের গলা শুকিয়ে গেল। শান্তি ত্বরিত কাছে এলো। মুখোমুখি হয়ে চোখে চোখ রেগে প্রগাঢ় কণ্ঠে বলল,

” কী ক্ষতি হয় একবার ভালোবেসে কাছে টানলে? ”

কী মোহনীয় কণ্ঠস্বর। নুবাইদের মস্তিষ্ক এলোমেলো হয়ে যায়। হৃৎস্পন্দন কেঁপে কেঁপে উঠে। এই কি নারীর শক্তি? এই কি তবে বউয়ের মন্ত্র? এক নিমেষে স্বামীকে বশীভূত করে ফেলা। হাত বাড়াল শান্তি। দুহাতে আগলে ধরল নুবাইদের গলা। পা দুটো অল্পখানি উঁচিয়ে ছুঁয়ে দিল নুবাইদের ঠোঁট। স্বামীর পৌরুষকে জাগিয়ে তুলতে সময় লাগল না মেয়েটার। ইচ্ছে ছিল একটুখানি স্পর্শ করেই ছিঁটকে সরে যাবে। কিন্তু বলিষ্ঠ দুটো হাতের বাঁধনে আঁটকা পড়ল তার দেহশ্রী। পুরুষালি ঠোঁটজোড়া চুম্বকের ন্যায় আঁটকে রাখল তার নরম ঠোঁট। দীর্ঘ অধর চুম্বনে টালমাটাল শান্তি। স্বর্গীয় যন্ত্রণা কি একেই বলে? সর্বাঙ্গ অবশ হয়ে এসেছে। ভেজা চোখ পুনরায় ভিজে উঠেছে। নাফেরটা ছাড়ছে না কেন? তবে কি আজ সম্পূর্ণ রূপে খেয়ে ফেলবে তাকে? উফফ!

~চলমান~
®জান্নাতুল নাঈমা