#প্রেমের_তাজমহল
#পর্ব২৭
#আফিয়া_আফরোজ_আহি
গোধূলি বিকেলে আনায়া ব্যালকনিতে বসে আছে। মৃদু বাতাস বইছে। হাওয়ার তালে তালে আনায়ার খোলা চুল দোল খাচ্ছে। একটু পরপর চুলগুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। আনায়া প্রথম দিকে চুলগুলো সরিয়ে দিচ্ছিলো। এখন আর সরাচ্ছে না। ওর নিজেরও এভাবেই ভালো লাগছে। পুরো ব্যালকনি বকুল ফুলের ঘ্রানে ছেয়ে আছে। আনায়া নিশ্চল চোখে তাকিয়ে চারপাশ দেখছে। অর্ণব পার্টি অফিসে গিয়েছে জরুরি মিটিং থাকায়। ওর নিজেরও যাওয়ার ইচ্ছে ছিলো না। নিচে মিহি, অহনা, জিয়া, অর্ষা, নীলিমা, আনায়ার কাজিন সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছে। আনায়ার ভালো লাগছে না। মিস করছে অর্ণবকে। অল্প কিছু সময়ের ব্যবধানে মানুষটাকে খুব বেশিই মনে পড়ছে। আনায়া ধীরে ধীরে অর্ণবের মায়ায় পড়ে যাচ্ছে। মানুষটাকে এখন না দেখলে মন কেমন আনচান আনচান করে। আনায়া কারণটা বুঝতে পারলো না। আনায়া নিজের ধ্যানে মগ্ন।
অর্ণব মিটিং শেষ করে আনায়াদের বাড়িতে এলো। ড্রয়িং রুমে বসে সবাই আড্ডা দিচ্ছে। তাঁদের মাঝে খুঁজেও ওর বউকে পেল না। সোজা উপরে চলে এলো। রুমেও কোথাও বউয়ের অস্তিত্ব নেই। চোখ গেল ব্যালকনির দিকে। এগিয়ে গেল ধীর পায়ে। আনায়া গভীর ভাবনায় মশগুল। অর্ণব আলতো হাতে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরল।
কোমরে কারো হাতের স্পর্শ পেতেই আনায়া চমকে উঠল। কারো বলিষ্ঠ হাত ওর কোমর জড়িয়ে ধরেছে। আনায়া চমকে পিছু ঘুরলো। অর্ণবের প্রশস্ত বুঁকের সাথে ধাক্কা খেল। জড়িয়ে ধরা ব্যক্তিটা অর্ণব বুঝতেই আনায়া সস্থির নিঃশ্বাস ফেলল। নিজেও জড়িয়ে ধরল অর্ণবকে। অর্ণব কিছুটা অবাক হলো। বউ কিছু না বলে উল্টো জড়িয়ে ধরলো বিষয়টা কেমন যেন?
“মন খারাপ?”
“হু”
“মিস করছিলে?”
“করতে পারি না বুঝি”
“করতে পারো তবে?”
“তবে কি? আমার জামাই আমি মিস করবো, ইচ্ছে হলে কিস ও করবো তাতে কার কি?”
অর্ণব দুস্টু হেসে বলল,
“কিস? কখন করবে? তাড়াতাড়ি করো প্লিজ আমার যে আর তর সইছে না”
আনায়া লজ্জা পেল। বুঝতে পারলো নিজের কথায় নিজেই ফেঁসে গেছে। এখন কিছু বলা মানেই বিপদ। তাই মুখটা ভার করে অর্ণবকে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রাখল।
অর্ণব আনায়াকে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। অর্ণব ভাবনায় বসল কিভাবে আনায়ার মন ভালো করা যায়? একটু ভাবতেই কিছু একটা মনে হতেই মুখে হাসি ফুটে উঠল। আনায়াকে ছেড়ে দিয়ে বলল,
“ঝটপট তৈরি হয়ে নেও”
আনায়া ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
“কোনো?”
“তোমার মন ভালো করার জন্য। তুমি তৈরি হও আমি আসছি”
অর্ণব রুম থেকে বেরিয়ে গেল। আনায়ার ভাবনায় এলো, মানুষটা ওর কথা কতো ভাবে। এইযে মিটিং শেষ করে বাসায় এসে রেস্ট না নিয়ে বউয়ের মন ভালো করায় লেগে পড়লো। আনায়া ভাবনা বাদ দিয়ে রেডি হতে শুরু করলো। অর্ণব নিচে নেমে সবাইকে বলল তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিতে। সবাই তৈরি হতে চলে গেল। অর্ণব ঘরে এসে ফ্রেশ হতে চলে গেল। আনায়া তৈরী হচ্ছে অর্ণব বিছানায় বসে বসে ওকে দেখছে। আনায়া হাঁটু সমান একটা টপ্স সাথে জিন্স, গলায় ওড়না। চুল গুলো ঝুটি করেছে। মুখে অল্প বিস্তর মেকআপ সব মিলিয়ে ওকে সুন্দর লাগছে। অর্ণবের কাছে মনে হচ্ছে কিশোরী আনায়া ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। এই সাজে আনায়াকে অনেকটা বাচ্চা বাচ্চা লাগছে। অন্যদিনের তুলনায় ভিন্ন রকম। অর্ণব আনায়ার সকল রূপেই মুগদ্ধ হয়। আনায়া নিজেকে আয়নায় দেখে নিল। সব ঠিকঠাক আছে। অর্ণবের সামনে দাঁড়িয়ে বলল,
“চলুন যাই”
অর্ণব আনায়ার হাতের মাঝে হাত গুঁজে দিল। দুজন একসাথে নিচে নামছে। সবাই ওদের দিকে তাকালো। মিহি আর অহনা তো শব্দ করে বলে উঠল,
“মাশাআল্লাহ”
অহনা দৌড়ে আনায়ার কাছে এসে বলল,
“ভাবি তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে। একদম কিউট বাচ্চাদের মতো। ইচ্ছে করছে টুপ করে তোমার গালে আদর দিয়ে দেই”
আনায়া লজ্জা পেল অহনার কথায়। অর্ণব অহনার চুল টেনে ধরে বলল,
“তোর সাহস তো কম না তুই আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমারই বউকে আদর করতে চাস?”
“বউ কি তোমার একার নাকি? আমারও ভাবি হয়। আমারও অধিকার আছে আমার ভাবির ওপর”
এক কথায় দুই কথায় দুজনের ঝগড়া লেগে গেল। অর্ণব বলছে, ‘আমার বউ’। অহনা বলছে, ‘আমার ভাবি’। আনায়া পড়েছে এদের মাঝে। বাকিরা দাড়িয়ের দাঁড়িয়ে ওদের ঝগড়া দেখছে। আনায়ার রাগ লাগছে। ওর মন খারাপ ভালো করবে বলে এখন দুই ভাই-বোন ওকে নিয়েই ঝগড়া শুরু করে দিয়েছে। আনায় ওদের থামাতে বলল,
“তোমরা কি থামবে নাকি আমি ঘরে চলে যাবো”
অর্ণব অহনা দুজনেই থেমে গেল। সকলে সস্থির নিঃশ্বাস ফেলল।
“না বউ তোমাকে ঘরে যেতে হবে না। চলো আমরা যাই”
মিহি জিজ্ঞেস করলো,
“জিজু আমরা কোথায় যাবো?”
আনায়া ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
“তোরা কোথায় যাচ্ছিস?”
অর্ণব আনায়ার উদ্যেশে বলল,
“আমরা সবাই মিলে যাবো”
মিহিকে বলল,
“গেলেই দেখতে পাবে”
সবাই গাড়িতে গিয়ে বসল। অর্ণব ড্রাইভ করছে। আনায়া ওর পাশে বসা। বাকিরা পিছনে বসেছে। মিহি, অর্ষা, জিয়া এরা তিনজন গাড়ির মধ্যেই গল্প জুড়ে দিয়েছে। ওদের গল্প শেষ হওয়ায় নাম নেই। কিছুক্ষন পর গাড়ি এসে থামল। সবাই একে একে নেমে দাঁড়ালো। অর্ণব গাড়ি পার্ক করে এসে ওদের নিয়ে ভিতরে ঢুকল। এটা একটা পার্ক। তবে এর মধ্যে একটা নদীও আছে। নদীর পাড়টা খুবই সুন্দর। আনায়া মুগদ্ধ চোখে তাকিয়ে নদীর সৌন্দর্য দেখছে। পাশে দাঁড়িয়ে অর্ণব তার প্রিয়সীকে দেখে মুগদ্ধ হচ্ছে। একেক জনের মুগ্ধতা একেক জায়গায়। কারো ভালো লাগে ফুল কারো ফুলের বাগান। সবাই যার যার মতো নদীর পারে ঘুরছে। আশেপাশে কপোত কপোতিদের মেলা। অর্ণব আনায়ার হাত ধরে সামনের দিকে হাঁটা দিল। কিছু দূর আসতেই অর্ণবের নজর গেল বেলি ফুলের মালার দিকে। অর্ণব একটা বেলি ফুলের মালা নিয়ে আনায়ার হাতে বেঁধে দিল। আনায়া খুশি হলো। ওর মুখে হাসি ফুটে উঠল। আনায়ার সাথে সাথে অর্ণবের মুখেও হাসি ফুটে উঠল। প্রেয়সী খুশি তো প্রেমিক হৃদয় শান্ত। প্রিয়সীর মুখে বিষণ্ণতা প্রেমিক হৃদয়ে কালো আঁধারের ঘনঘটা দেখা দেয়। কিছুদূর এগোতেই আনায়া দেখতে পেল কিছু কিশোরী মেয়েরা মিলে কানা মাছি খেলছে। ও নিজেও ফিরে গেল নিজের কিশোরী বয়সে। অর্ণবের দিকে তাকিয়ে কিউট ফেস করে বলল,
“আমি যাই ওদের সাথে কানামাছি খেলতে?”
অর্ণব বউয়ের আবদার ফেলতে পারলো না। সম্মতি দিল। একদিন সব ভুলে বাচ্চামো করে যদি মেয়েটার মুখে হাসি ফুটে উঠে তাহলে ক্ষতি কি? হোক না কিছু নিয়মের লঙ্ঘন। আনায়া মেয়েগুলোর সাথে কানামাছি খেলছে। অর্ণব দূর থেকে দাঁড়িয়ে দেখছে। বউয়ের বাচ্চামো ওর খুবই ভালো লাগছে। এইযে আনায়া মাঝে মাঝে খিলখিল করে হেসে উঠছে এতে ওর মনে প্রশান্তি বয়ে যাচ্ছে। আনায়া কিছুক্ষন খেলে চলে এলো অর্ণবের কাছে। অর্ণব জিজ্ঞেস করলো,
“খেলা শেষ?”
“হ্যাঁ। অনেক দিন খেলা হয়নি তো তাই ক্লান্ত হয়ে গিয়েছি”
অর্ণব তাকিয়ে দেখল আনায়ার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে। পকেট থেকে রুমাল বের করে আলতো হাতে মুছে দিল। কিছু দূরে একজন লোক হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করছে। আনায়া বায়না ধরলো হওয়াই মিঠাই খাবে। অর্ণব যেয়ে নিয়ে আসল। আনায়া বাচ্চাদের মতো হওয়াই মিঠাই খাচ্ছে অর্ণব তাকিয়ে দেখছে। আনায়া অর্ণবকেও খাইয়ে দিল। অর্ণব আজকে বউয়ের বাচ্চামো গুলো উপভোগ করছে। প্রিয়সীর মুখে হাসি ফুটাতে ও সব কিছু করতে পারে। আনায়া আজকে অনেক খুশি। অনেক দিন পর নিজের আগের রূপে ফিরে গেল। সবটাই অর্ণবের জন্য। আনায়ার মনে একটু একটু করে অর্ণব জায়গা দখল করে নিচ্ছে। আরো অনেকটা সময় ঘুরাঘুরি করে খেয়ে দেয়ে বাসায় এলো সবাই। আনায়া রুমে এসে ফ্রেশ হতে চলে গেল। ওর মন এখন ফুরফুরে। বেরিয়ে দেখল অর্ণব দাঁড়িয়ে আছে। আনায়া অর্ণবকে জড়িয়ে ধরে বলল,
“আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ”
অর্ণব নিজেও জড়িয়ে ধরল। বলল,
“নিজের মানুষকে ধন্যবাদ দিতে নেই। যদি চাও তাহলে অন্যকিছু দিতে পারো আমি মাইন্ড করবো না”
আনায়া অর্ণবের কথার মানে বুঝতে পারলো না। ভ্রু কুঞ্চিত করে জিজ্ঞেস করল,
“অন্য কিছু কি?”
অর্ণব আনায়ার ওষ্ঠের দিকে ইশারা করলো। আনায়া সাথে সাথে দুই হাত দিয়ে ঢেকে ফেলল ওর ওষ্ঠদয়। অর্ণব শব্দ করে হেসে দিল। আনায়া রুম থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে বলল,
“অ*সভ্য পুরুষ”
আনায়া বেরিয়ে এলো। রুম থেকে অর্ণবের হাসির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। আনায়ার ঠোঁটের কোণেও হাসি ফুটে উঠল। আনায়ার নিজেকে সুখী সুখী মনে হচ্ছে। তবে আনায়ার কপালে সইবে তো এতো সুখ? নাকি দুঃখ এসে ধরা দিবে অচিরেই?
#চলবে?
#প্রেমের_তাজমহল
#পর্ব২৮
#আফিয়া_আফরোজ_আহি
(প্রাপ্তবয়স্ক-প্রাপ্তমনস্কদের জন্যে)
সময়ের স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। বয়ে চলে নিজ গতিতে। মাঝে কেটে গেছে অনেক গুলো দিন। আনায়া অর্ণবের মাঝে এখন খুব ভালো সম্পর্ক। দুজনের দুস্টু মিষ্টি ঝগড়া, অল্প স্বল্প মান অভিমান এই মিলেই চলছে আনায়া অর্ণবের বিবাহিত জীবন।
বাহিরে রিমঝিম বৃষ্টি। মন ছুঁয়ে যাওয়া ঠান্ডা বাতাস। বাতাসের প্রকোপে গাছের পাতা নড়ছে। এলোমেলো করে দিচ্ছে আনায়ার গোছানো চুল গুলো। আনায়া হাতে চায়ের কাপ নিয়ে বৃষ্টি উপভোগ করছে। মাঝে মাঝে ঠোঁট ছুঁয়ে দিচ্ছে উষ্ণ চায়ের কাপে। আনায়া এই মুহূর্তে দাড়িয়ে আছে অর্ণবের ব্যালকনিতে। এখন যেটা ওর নিজেরও ব্যালকনি। মানুষটার সাথে সাথে তার সকল জিনিসে আনায়ার আধিপত্য বিস্তার করছে। আনায়ার খানিকটা আফসোস হচ্ছে। অহনা বাসায় নেই। বান্ধবীর বাসায় গিয়েছে নোট আনতে। অহনা থাকলে দুজন মিলে এই ঝুম বৃষ্টিতে গল্প করা যেত। জিয়া আছে তবে ও এখন ঘুমাচ্ছে। আনায়ার বোরিং লাগছে। অর্ণব সেই সকালে বেরিয়েছে এখনো কোনো খবর নেই সাহেবের। আনায়ার বৃষ্টিতে ভিজতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু একা একা ভালো লাগছে না। তাই ব্যালকনির বাহিরে হাত দিল। ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি এসে ওর হাত মুহূর্তেই ভিজিয়ে দিল।
অর্ণব মাত্র বাড়ি ফিরল। কিছুটা ভিজে গেছে কাপড় চেঞ্জ করা প্রয়োজন। সোজা ঘরে চলে এলো। আনায়াকে মৃদু স্বরে ডাক দিল। কিন্তু আনায়ার খবর নেই। উঁকি দিল ব্যালকনিতে। তাকিয়ে দেখলো বউ তার বৃষ্টি বিলাসে মগ্ন। অর্ণব ঘরে এসে আলমারি খুলল। লাল রঙের জামদানি শাড়ি বের করলো। এগিয়ে গেল ব্যালকনিতে। আনায়াকে নিয়ে ঘরে এলো। আনায়া বৃষ্টি বিলাসে মগ্ন ছিলো। হটাৎ হাতে টান পড়ায় ভরকে গেলো। অর্ণবকে দেখে কিছুটা অবাক হলো। অর্ণব এলো কখন? অর্ণব আনায়ার সামনে শাড়িটা ধরে বলল,
“পড়ে এসো”
আনায়া কিছু বুঝতে পারলো না। তাকিয়ে রইল অর্ণবের দিকে। আনায়ার হেলদোল না দেখে অর্ণব নিজে এগিয়ে গিয়ে বলল,
“থাক তোমার কষ্ট করতে হবে না। আমিই পড়িয়ে দিচ্ছি”
আনায়া ছো মেরে অর্ণবের হাত থেকে শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল। যাওয়ার আগে মুখ ভেংচি দিয়ে গেল। অর্ণব হেসে দিল আনায়ার মুখ ভেংচি দেওয়া দেখে। একটু জোরে বলে উঠল,
“শাড়ি কিন্তু আটপৌর ভাবে পড়বে”
ওপাশ থেকে আনায়া বলল,
“পারবো না”
“পারবে কি পারবে না সেটা দেখা যাবে”
মিনিট কয়েক পর আনায়া বের হলো। গাঁয়ে আটপৌর ভাবে শাড়িটা জড়ানো। অর্ণব মুগদ্ধ হলো। এগিয়ে গেল আনায়ার দিকে। আনায়াকে নিয়ে বসিয়ে দিল ড্রেসিং টেবিলের সামনে। লাল রঙের রেশমি চুরি আলতো হাতে পড়িয়ে দিল আনায়ার দুই হাতে। কাজল বাড়িয়ে দিল আনায়ার দিকে।
“কাজলটা পড়ে নেও”
আনায়াও বাধ্য মেয়ের মতো পড়ে নিল। কাজল রাঙা ডাগর দুটি আঁখি। অর্ণব এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ওই আঁখিদয়ে। উন্মুক্ত কেশগুচ্ছ আটকে দিল ক্লিপ দিয়ে। অর্ণব পকেট হাতরে গাজরা বের করলো। দক্ষ হস্তে পড়িয়ে দিল আনায়ার কেশে। আনায়া বসে বসে লোকটার কার্যকলাপ দেখছে।অর্ণব নুপুর হাতে নিয়ে হাঁটু গেড়ে বসল আনায়ার সামনে। আনায়ার পায়ে হাত দিতে নিলে আনায়া পা সরিয়ে নিল।
“আমাকে দিন আমি পড়ে নিচ্ছি”
“উহু, আমি নিজ হাতে পড়িয়ে দিবো”
আনায়ার আর বাঁধা দিলো না। নুপুর পড়ানো শেষে অর্ণব কিছু একটা খুঁজছে। জিনিসটা খুঁজে পেতেই আবারো আনায়ার সামনে বসল। আনায়ার পা আলতো করে উরুর ওপর রাখল। কাঁপা কাঁপা হাতে আলতায় রাঙিয়ে দিল আনায়ার সুন্দর পদযুগল। কাজ শেষ হতেই উঠে দাঁড়ালো। নজর বুলালো প্রিয়সীর সর্বাঙ্গে। নজর কাড়া সৌন্দর্য ছেয়ে আছে প্রিয়সীর মাঝে। অর্ণব নেশার ঘোরে পড়ে যাচ্ছে। প্রিয়সীর গহীন কালো নয়নের নেশায়। ঘোরের মাঝে একটু একটু করে এগিয়ে গেল প্রিয়সীর পানে। আনায়া প্রথমে অর্ণবের মতলব বুঝতে পারলো না। অর্ণব যখন ওর খুবই কাছে তখন আনায়ার মাথায় দুস্টু বুদ্ধি চাপল। অর্ণবকে আলতো হাতে ধাক্কা গিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেল। অর্ণবের ঘোর কেটে গেল আনায়ার ধাক্কায়। আনায়া খিলখিল করে হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেল। অর্ণব পিছু নিল আনায়ার। আনায়া কোন দিকে যাবে বুঝতে না পেরে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠা শুরু করলো। অর্ণবও আসছে ওর পিছু পিছু।
বৃষ্টির প্রকোপ বেড়েছে। ঝুম বৃষ্টি যাকে বলে। আনায়া ছাদে আসতেই মুহূর্তের ব্যবধানে বৃষ্টিতে ভিজে গেল। বৃষ্টি বিলাসী মন মত্ত হলো বৃষ্টিকে গাঁয়ে মাখতে। অর্ণব যে ওকে ধাওয়া করছে মুহূর্তেই তা ভুলে গেল। দুহাত ছড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছে।
অর্ণব ছাদে আসতেই নজর গেল বৃষ্টি বিলাসে মত্ত প্রিয়সীতে। বৃষ্টির পানিতে ভিজে আনায়ার গাঁয়ের শাড়ি শরীরের সাথে মিশে গেছে।শরীরের প্রতিটা ভাজ বোঝা যাচ্ছে। অর্ণব গভীর চোখে প্রিয়সীকে অবলোক করছে। বিন্দু বিন্দু ফোঁটা প্রিয়সীকে ছুঁয়ে দিচ্ছে। অর্ণবের হিংসে হচ্ছে। প্রিয়সীর এহেন রূপে নেশা ধরে যাচ্ছে। ঘোরে ডুব দিচ্ছে। অর্ণব নেশা ভরা চোখে তাকিয়ে আছে আনায়ার দিকে। রোমান্টিক পরিবেশে একটু খানি রোমান্টিকতা না হলেই নয়। নেশার ঘোরে একটু একটু করে এগিয়ে গেল আনায়ার কাছে। কোমরে হাত রেখে টেনে আনলো নিজের কাছে। একদম নিজের সাথে মিশিয়ে নিল। সামনে আসা চুল গুলো হাত দিয়ে কানের পিছনে গুঁজে দিল। কাঁপা কাঁপা হাতে আঙ্গুল বুলালো প্রিয়সীর কোমল ওষ্ঠে। আনায়া অর্ণবের স্পর্শে কেঁপে কেঁপে উঠছে। আনায়া চোখ বুজে নিল। অর্ণব প্রিয়সীর চোখের পাতায় চুম্বন এঁকে দিল। কপালে ও গালে ছুঁয়ে দিল ওষ্ঠ। অর্ণবের দৃষ্টি আনায়ার গোলাপি ওষ্ঠে। একজনের অপরজনের খুব কাছে। নিঃশ্বাস উঠা নামা করছে আনায়ার। অর্ণব এগিয়ে গেল। আনায়ার নিজেকে কেমন দুর্বল মনে হচ্ছে। চেয়েও অর্ণবকে আটকাতে পারছে না। অর্ণব আলতো করে অধর ছুঁইয়ে দিল আনায়ার অধরে। আনায়া কিছুই করতে পারলো না। আবেশে চোখ বুজে নিল। কিছুক্ষন পড় ধ্যান ভাঙলে অর্ণবকে ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে সরিয়ে দিল। দৌড়ে চলে এলো নিচে। অর্ণব নিজের ঘোর থেকে বের হতেই বুজতে পারলো নিজের ভুল। যদিও ওর বিয়ে করা বউ। তবুও হটাৎ এতটা কাছে যাওয়া ঠিক হয়নি। নিজের মাথায় নিজেই একটা থা*প্পড় দিলো। আনায়া কি রাগ করলো? নাকি ওকে ভুল বুঝল। অর্ণব তো আনায়াকে কথা দিয়েছিলো ও নিজে থেকে আনায়ার কাছে যাবে না। অপেক্ষা করবে আনায়ার নিজে থেকে ওর কাছে আশার। তাহলে আজকে এমন ভুল কিভাবে হয়ে গেল? অর্ণব নিজেই নিজেকে গালি দিল। এতটা বেখেয়ালি হওয়ার জন্য। বউ সুন্দরী হলে যা হয় আরকি। অর্ণব মাথা চুলকালো। দ্রুত নিচে নেমে গেল। বউ রাগ করলে রাগ ভাঙাতে হবে তো।
অর্ণব রুমে এসে কথাও আনায়াকে দেখল না। ওয়াশরুম থেকে পানির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। অর্ণব নিজের দিকে তাকালো। ও নিজেও ভিজে গেছে। অর্ণব গেস্ট রুমে চলে গেল ফ্রেশ হতে।
বৃষ্টি থেমে গেছে অনেকক্ষণ হয়েছে। অর্ণব ঘরে এসে আনায়াকে পেল না। ওয়াশরুম, ব্যালকনি কোথাও নেই। নিচে নেমে দেখল আনায়া রান্না ঘরে কি যেন করছে। অর্ণব রুমে চলে এলো। কিছুক্ষন পড়ে আনায়া হাতে দুই কাপ চা নিয়ে এলো। অর্ণবের সামনে চায়ের কাপ রেখে চলে যেতে নিল। অর্ণব আনায়ার হাত ধরে আটকে দিল। প্ৰশ্ন করলো
“রাগ করেছে? সরি। আমি বুঝতে পারিনি। কখন তোমার এতটা কাছে চলে গিয়েছি খেয়াল ছিলো না। প্লিজ বউ রাগ করো না”
আনায়া কিছু বলল না। অর্ণবের কাছ থেকে হাত ছুটিয়ে নিজের চা নিয়ে ব্যালকনিতে চলে গেল। অর্ণব অসহায় চোখে তাকিয়ে রইল আনায়ার দিকে।
#চলবে?
#প্রেমের_তাজমহল
#পর্ব২৯
#আফিয়া_আফরোজ_আহি
সেদিনের পর কেটে গেছে দুটো দিন। আনায়া এখনো অর্ণবকে দেখলে কেমন এড়িয়ে চলে। অর্ণব যখন বাসায় থাকে তখন পুরোটা সময় আনায়া অহনার সাথে কাটায়। দুজনে মিলে গল্প করে। অর্ণব ঘরে এলে আনায়া চুপটি করে রুম থেকে চলে যায়। অর্ণব ডাকলে কাছে আসে, যা বলে তার উত্তর দেয় বাড়তি কোনো কথা বলে না। রাতে অর্ণব ঘুমিয়ে যাওয়ার পর আনায়া ঘরে আসে। অর্ণব আনায়ার এধরণের আচরনের কারণ খুঁজে পাচ্ছে না। সামান্য একটা কারণে আনায়া এমন কোনো করছে?এর উত্তর ওর কাছে নেই। একটু তো কাছেই গিয়েছিল বেশি কিছু তো করেনি। আর করলেই বা কি ওর বিয়ে করা বউ হয়। ওর সম্পূর্ণ অধিকার আছে আনায়ার ওপর। অর্ণব মনে মনে ঠিক করলো আজকে যে করেই হোক আনায়ার সাথে এই বিষয়ে কথা বলবে। সম্পর্কে ভুল বুঝাবুঝি যত বাড়বে সম্পর্ক ততো খারাপ হবে। অর্ণব চায় না ওদের দুস্টু মিষ্টি পবিত্র এই সম্পর্কে কোনো প্রকার ভুল বুঝাবুঝি হোক।
ওপর দিকে আনায়া আছে নিজের খেয়ালে। সেদিনের ঘটনায় ও অর্ণবের ওপর কোনো রাগ করেনি। তবে সেদিনের পর অর্ণব সামনে এলেই লজ্জারা ওকে ঘিরে ধরে। কেমন অদ্ভুত অনুভূতি হয়। অর্ণবের চোখের দিকে তাকাতে লজ্জা লাগে, ওর সাথে কথা বলবে কি? আনায়া অর্ণবের কাছ থেকে পালিয়ে বাঁচতে অহনার ঘরে পড়ে থাকে। ঘরে গেলেই যদি অর্ণব সে বিষয়ে কথা তুলে তাই জন্য অর্ণবের থেকে দূরে দূরে থাকে। ও নিজেও এখন অর্ণবের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। মানুষটাকে একটু একটু করে ভালোবেসে ফেলেছে। তার মায়ায় পড়ে গেছে।
অর্ণব বাসায় নেই। আনায়া ব্যালকনিতে বসে আছে। কি যেন ভাবছে গভীর মনে। হটাৎ আনায়ার মাথায় একটা কথা এলো। সেদিনের কথা মনে পড়ল। আনায়া খেয়াল করলো চিঠির মানুষটা বৃষ্টি এবং ওকে ঘিরে লেখা সকল পরিকল্পনা আর সেদিন অর্ণবের করা সকল কার্যকলাপ কেমন যেনো মিলে যাচ্ছে। হুবহু সব কিছু মিলে যাচ্ছে। কিন্তু অর্ণব চিঠির কথা জানবে কিভাবে? আর চিঠিতে যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে সেটাই বা জানবে কিভাবে? তাহলে? এক জনের ইচ্ছের সাথে আরেকজনের এতটা মিল কিভাবে হতে পারে? কিভাবে? অর্ণব কি সেই চিঠি পড়েছে? কিন্ত পড়বে কিভাবে? আনায়া তো সেগুলো লুকিয়ে রেখেছে। যেটা কেউ জানার কথা না। তাহলে? আনায়া ভেবে কোনো কুল কিনারা পেল না।
আকস্নাৎ কেউ আনায়ার কাঁধে হাত রাখল। আনায়া চমকে উঠল। পিছন ফিরে অর্ণবকে দেখে সস্থির নিঃশ্বাস ফেলল। তবে অর্ণব এলো কখন? কিছুক্ষন আগেই না গেল। আনায়া কিছু বলল না চুপচাপ চলে যেতে নিল। অর্ণব হাত ধরে আটকে দিল।
“ইগনোর করছো?”
আনায়া থমকালো। তবে কি অর্ণব ভাবছে ও অর্ণবকে ইগনোর করছে? আনায়া অর্ণবের দিকে চাইল। অর্ণব উত্তরের আশায় ওর দিকে তাকিয়ে আছে। আনায়া অর্ণবের চোখে চোখ রেখে বলল,
“উহু,নতুন করে ভালোবাসতে চাইছি”
উত্তর শুনে অর্ণবের গম্ভীর মুখে হাসি দেখা গেল। তবে মুহূর্তের ব্যবধানে রহস্যময় কণ্ঠে সুধালো,
“আগের জন যদি আমিই হই তখন?”
“আলহামদুলিল্লাহ”
“আর না হলে?”
“আক্ষেপ নেই। শেষ ভালোবাসা আপনিই হবেন”
অর্ণবের মন খুশিতে ভরে উঠল। হুট করে জড়িয়ে ধরল আনায়াকে। আনায়া ও জড়িয়ে ধরল। অবশেষে দুজনের মান অভিমান শেষ হলো। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে কথা বলা জরুরি। এই অল্প একটু কথোপকথনেই মান অভিমান শেষ। আনায়া সরে আসতে চাইল তবে পারলো না। অর্ণব ওর কোমর জড়িয়ে ধরে রেখেছে।
“এতদিন আমাকে ইগনোর করছিলে কোনো শুনি?”
আনায়া কিছু বলতে পারলো না। লজ্জায় মাথা নিচু করে নিল। অর্ণব ঝুঁকল কিছুটা।
“কি হলো বলো?”
আনায়া লাজুক কণ্ঠে বলল,
“লজ্জা লাগছিলো তাই”
অর্ণব আনায়ার কানে ফিসফিস করে বলল,
“আমি কি তোমার ইজ্জত হরণ করেছিলাম যে লজ্জা লাগছিলো। আমি তো শুধু একটু তোমার গোলাপি অধর জোড়া ছুঁইয়ে দিয়েছি। এতে লজ্জা কিসের?”
আনায়া বলার মতো কিছু পেল না। এরকম ঠোঁটকাটা মানুষের কথার জবাব কিভাবে দিতে হয় ওর জানা নেই। তাই চুপই রইল।
“এইযে এতদিন তুমি আমাকে ইগনোর করলে এর জন্য তোমাকে শাস্তি পেতে হবে। কঠিন শাস্তি”
“শাস্তি? কিসের শাস্তি? আমি মানি না এই শাস্তি”
“মানতে তো তোমাকে হবেই প্রিয়সী। তুমি যে এখন আমার বাহুবন্ধনে আবদ্ধ। না মেনে যাবে কোথায়?”
আনায়া অসহায় মুখ করে তাকালো। তবে অর্ণবের মন একটুও গোলল না।
“কি করতে হবে শুনি?”
“আদর দিতে হবে”
“মানে?”
অর্ণব নিজের কপাল, গাল দেখিয়ে বলল,
“কপালে, গালে আর?”
আনায়া ঢোক গিলে জিজ্ঞেস করলো,
“আর?”
অর্ণব ইশারা করে ওর ঠোঁট দেখালো। আনায়া বেচারি পড়েছে বিপাকে। কি করবে কিছুও বুঝতে পারছে না। ওর কাছে এছাড়া কোনো উপায়ও নেই। আনায়া কিছু একটা ভাবলো। অর্ণব আনায়ার মনের ভাব বুঝতে পেরে বলল,
“তুমি যদি ভেবে থাকো গতবারের মতো আমার পায়ে পাড়া দিয়ে কেটে পড়বে তাহলে তোমার ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। এবার এরকম করলে তোমার খবর আছে বলে দিলাম”
আনায়া এবার পুরোপুরি ফেঁসে গিয়েছে। কোনো বুদ্ধিই কাজে দিবে না। আনায়া নিজেকে বুঝ দিল। ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল অর্ণবের দিকে। আলোতো করে কপালে আর গালে ওষ্ঠ ছুঁইয়ে দিল। কিন্তু ঠোঁটে? কিভাবে সম্ভব? ওর লজ্জা লাগছে। কেমন হাঁসফাঁস লাগছে।আনায়া অর্ণবকে করুণ সুরে সুধালো,
“ঠোঁটে না করলে হয় না”
অর্ণব নাছোড় বান্দা। ও কোনো মতেই ছাড় দিতে রাজি না। এক চুল পরিমানও না। আনায়ার আর কি করার। বড় করে নিঃশ্বাস নিল। চোখ বুঝে আসতে করে ওষ্ঠ ছুঁইয়ে দিল অর্ণবের ওষ্ঠে। মুহূর্তের ব্যবধানে সরে এলো। অর্ণবের ঠোঁটের কোণে মিষ্টি হাসি। আনায়া লজ্জায় মাথা নিচু করে রয়েছে। অর্ণবকে ছাড়তে না দেখে আনায়া মিহি কণ্ঠে বলল,
“এবার ছাড়ুন প্লিজ, আমার লজ্জা লাগছে”
“ওরে আমার লজ্জাবতী”
অর্ণব হাতের বাঁধন হাল্কা করতেই আনায়া ছুটে চলে গেল। এক দৌড়ে রুমের বাহিরে। অর্ণব শব্দ করে হেসে দিল।
“সাবধানে যাও, নাহলে পড়ে যাবে”
কে শোনে কার কথা। আনায়া ততক্ষনে রুম ত্যাগ করছে। অর্ণবের মুখে তৃপ্তির হাসি। মান অভিমান শেষ হলো দুজনের।
ওপর দিকে কেউ একজন বুনে যাচ্ছে ষড়যন্ত্রের জাল। কাউকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা। নিকৃষ্ট সেই পরিকল্পনা। যা মুহূর্তেই শেষ করে দিতে পারে কাউকে। নিঃস্ব করে দিতে পারে কাউকে। পরিকল্পনা শেষে হেসে উঠল সে। কি বিশ্রী সেই হাসি।
“এবার তুই শেষ অর্ণব শিকাদার। আগের বার বেঁচে গেলেও এবার সোজা উপরে। তুই আমার কাছ থেকে সব কিছু কেড়ে নিয়েছিস। আমিও তোর কাছ থেকে কেড়ে নিবো, তোর জীবন। হাহাহাহা”
অর্ণব, আনায়া আর অহনা মিলে শপিং করতে এসেছে। অহনার এক বান্ধবীর বিয়ে তাই শপিং করবে সাথে আনায়াকে ও নিয়ে আসবে। অর্ণব বউ আর বোনকে একা ছাড়বে না তাই নিজেও এসেছে তাঁদের পাহারা দিতে। অহনা আর আনায়া মিলে এককে দোকানে ঘুরে এটা ওটা দেখছে অর্ণব ওদের পিছু পিছু যাচ্ছে। শপিং শেষে তিনজন পার্কিং এরিয়ায় এলো। অহনা আর অর্ণব কিছু একটা নিয়ে ঝগড়া করছে। আনায়া এদের নিয়ে পারেনা। দুজন এক সাথে হলে ঝগড়া করবেই। আনায়া দুজনের দিকে তাকিয়ে হতাশার নিঃশ্বাস ফেলল। আনায়া হটাৎ কিছু একটা খেয়াল করতেই অর্ণবকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল। পাশ থেকে বন্দুকের গুলির শব্দ শোনা গেল
#চলবে?
(ভুল ত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।)