#অপ্রিয়_মাস্টার
পার্ট [১৮]
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম
” কী করছিলে?”
” যাই করি তাতে আপনার কী?”
” আমার কী মানে? তুমি অসুস্থ তোমার দায়িত্ব নেওয়া খুঁজ নেওয়া আমার কর্তব্য।”
” উহুউ নিজের গার্লফ্রেন্ড সহিতা ম্যাডামের খুঁজ নেন গিয়ে।”
তূর্য ভ্রু কুচকাল, সকাল সকাল সহিতার সাথে কথা বলতে শুনে নেয় কন্ঠ।কেন জানি ভেতরে হাঁসফাঁস লাগছিল তার,তার স্বামী অন্য কারো সাথে কথা বলবে কেন?
প্রচন্ড রকম রাগ হয় কন্ঠের, অসুস্থ শরীর কে বিছানা থেকে টেনে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ার অন করে দেয়। পাগলের মত ঘন্টা ধরে ভিজতে লাগলো,কিয়ৎক্ষণ পর তূর্য রুমে আসে, বাথরুম থেকে পানির শব্দ শুনে বুঝতে পারে কন্ঠ বাথরুমে আছে। ওষুধ গুলো টেবিলের উপর রেখে অপেক্ষা করে তূর্য, কিন্তু আরো কিছু সময় পার হওয়ার পরেও ফিরে না কন্ঠ। বের হয় না ওয়াশরুম থেকে।
” কন্ঠ? কন্ঠ?কী হলো বের হচ্ছ না কেন?”
অপর পাশ থেকে কোনো সাড়া শব্দ নেই, তূর্য বেশ চিন্তিত হয়।বার কয়েক ডাকার পরেও বের হয় না কন্ঠ। অতঃপর দরজা ধাক্কায় তূর্য, অবশেষে শেষ ধাক্কায় দরজা খুলে গেল।
কন্ঠ আড়ষ্ট হয়ে দাঁড়িয়েছিল, পানির নিচে। তূর্য কে দেখেও তার কোনো ভাবান্তর নেই।
” এই ইডিয়েট কী করছো এসব?”
তূর্য ছট করে শাওয়ার অফ করে দেয়, কন্ঠ বেজায় রেগে গিয়ে আবার শাওয়ার অন করতেই যাবে তার আগেই তূর্য কন্ঠের হাত দুখানি পিছমো’ড়া করে ধরে নেয়।
” আমি ওদিকে অপেক্ষা করছি আর তুমি এসব করছো?”
কন্ঠ রাগান্বিত হয়ে অনেক গুলো কটু কথা শুনিয়ে দেয় তূর্য কে। কন্ঠের কথায় বুঝতে সময় লাগে না তূর্যের যে কন্ঠ সকালে সহিতার সাথে কথা বলতে শুনে নিয়েছে।
তূর্য আচমকা জড়িয়ে ধরে কন্ঠ কে, কন্ঠ হকচকিয়ে গেল।
” ছাড়েন আমায়?”
” উঁহু।”
” আরে আমার বসন্ত তো!আপনারও হয়ে যাবে।”
” হোক।”
_______________
সকাল সকাল ফোন নিয়ে বন্ধু মহল আড্ডা দিতে ব্যস্ত। সবাই কে বেশ অবাক করে দিয়ে সান বলে উঠে।
” গাইস আ’ম ইন লাভ।”
সবাই সানের কথা শুনে যেনো আকাশ থেকে পড়ে।
সোহা ত্বরিতে প্রশ্ন করে।
” কীঈঈঈ?”
রিয়া ভ্রু কুঁ’চকে বলল।
” ওর কথা কেউ সিরিয়াস নিস না, হুদাই ফাউ কথা।”
তারিফ হুঁ হুঁ করে হেসে উঠলো, সোহা,তাহিয়া সান কে শান্তনা দিয়ে বলল।
” বেচারা,সিঙ্গেল হয়ে মিঙ্গেল হওয়ার স্বপ্ন দেখা বন্ধ কর।”
সান নাকের পাটাতন ফুলিয়ে বলল।
” ধুর সত্যি বলছি আমি!
ওর চোখ দুটো মায়াবী,মুখ জুড়ে শুধুই মায়া আর মায়া।আ’ম ইন লাভ ইয়েস ইয়েস।”
সানের অবস্থা বেশ অবাক করে দেয় সবাই কে, সবার মনে একটাই প্রশ্ন,আসলেই কী সান কারো প্রেমে পড়েছে?
✨
“হ্যাঁ বাবা বলো।”
সকাল সকাল ছেলের কথা মনে পড়তেই সাহাদ আহমেদ ফোন করে তুফায়েল কে,তাও ভি’ডিও কল।
সোফায় বসে আছে আহাদ আহমেদ তনয়া আহমেদ,তুফায়েল ফোন ধরা মাত্র পুরো পরিবার কে দেখতে পায়।
” কেমন আছিস বাবা?”
” আলহামদুলিল্লাহ বাবা ভালো আছি, তোমরা কেমন আছো? চাচা তুমি কেমন আছো?আর চাচিও?”
আহাদ আহমেদ সৌজন্য মূলক হাসি টেনে বলল।
” আলহামদুলিল্লাহ আমরা সবাই ভালো আছি।তুই বল তোর খবর কী?”
তুফায়েল স্ফীত হেসে বলল।
” ভালোই, তোমাদের বেশ মিস করি। আচ্ছা আমার বোন তিনটে কেমন আছে?”
তনয়া আহমেদ বলল।
” ওরাও ভালো আছে নিজেদের শশুর বাড়িতে,আর রিয়া তো পড়ালেখা এটা সেটা নিয়ে আছেই।”
তুফায়েল আশপাশটা লক্ষ্য করে দেখলো সবাই আছে তবে তার মা আনিকা আহমেদ নেই।
” আচ্ছা চাচী মা কোথায় গোঁ?”
তনয়া আহমেদ তপ্ত শ্বাস ফেলে বললেন।
” আনিকা ভেতরে আছে, বললাম তোর সাথে কথা বলছি সবাই ওকে আসতে। কিন্তু আসেনি।”
তুফায়েল কিছু বলল না,সে জানে আনিকা আহমেদ তার সেদিনের আচরণে দুঃখ পেয়েছে।
সবার সাথে আরো কিছুটা সময় কথা বলে ফোন রেখে দেয় তুফায়েল।
ফোন রাখা মাত্র জানালা দিয়ে কিছু একটা এসে তার উপর পড়ল, হকচকিত হয়ে উঠে তুফায়েল,ত্বরিতে ছুটে যায় জানালার কাছে।সাদা টপ্স আর একটা ব্লু জিন্স পরে দাঁড়িয়ে আছে অরিন, অধর জুড়ে বিচরণ করছে মিষ্টি হাসি।
তুফায়েল কে দেখে হাত নাড়ালো অরিন, একটু গলা ছেড়ে বলল।
” ওই পুরুষ আই লাভ ইউ।”
তুফায়েল বিরক্ত হয়,এটা বেশ বুঝতে পারে অরিন।সে আবার বলল।
” চিঠি পড়ে নিবেন,টাটা।”
তুফায়েল আবার ভেতরে গেলো, মেয়েটা আসলেই পা গ ল।তবে তার কাজ গুলো অতীত মনে করিয়ে দেয়, সোফার উপর পড়ে আছে সেই কাগজ টি।হাতে তুলে নিল তুফায়েল,খুলে দেখলো লিখা আছে।
ডেয়ার প্রেমিক পুরুষ
আপনাকে ভালোবাসি। ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি। ভীষণ ভালোবাসি। আকাশের মত, আচ্ছা আপনি কেন আমাকে ভালোবাসেন না বলুন তো? আমি কী করলে ভালোবাসি বলবেন? অপেক্ষা করছি,হয়তো এই অপেক্ষা দীর্ঘ হয়নি এখনও তবে আমার কাছে সময়ের বেশ মূ’ল্য আছে কিন্তু! আশ্চর্য হচ্ছেন? হওয়ারই কথা,কারণ সময় কিন্তু কারো জন্য অপেক্ষা করে না। এখন যে এত ইগ’নো’র করছেন পরে কী সময় পাবেন ভালোবাসার?
আজকে বিকেলে পার্কে অপেক্ষা করব আসবেন কিন্তু, না হলে বাড়িতে চলে আসবো বলে দিলাম।
ইতি আপনার
হবু বউ।
তুফায়েল হাসলো,হয়তো অনেক দিন পরেই হেসেছে।
___________
” আপনি খুব অপ্রিয়, একটুও পছন্দ করি নট।করি নট সত্যিইইই।”
ঘুমন্ত তূর্যের কপালে অধর ছুঁয়ে কথাটি বার বার বলে চলেছে কন্ঠ,আজ কলেজে যায়নি তূর্য,মনে হয়েছে শরীরের রেস্ট প্রয়োজন।তাই তো এগারোটার পর থেকেই শুয়ে আছে, ওদিকে কন্ঠ অহনা খানের সাথে হাতে হাতে কাজ করে নেয়।
কাজ শেষে রুমে এসে দেখে তূর্য শুয়ে আছে, কন্ঠ নিজের মত আলমারি থেকে জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর এসে দেখলো সেই আগের মতই শুয়ে আছে তূর্য, কন্ঠ খানিকটা চিন্তিত হয়। ওনার শরীর খারাপ হলো না তো?
কাছে গিয়ে কপালে হাত রেখে দেখল সব ঠিকই আছে। অতঃপর মায়া ময় মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে যা মনে আছে সব উগ্রে দেয় কন্ঠ।হুট করেই তূর্যের তন্দ্রা কে’টে যায়, কন্ঠ ভড়কে গেলো। সরে যেতে নিলে তূর্য ফট করে ওর হাত ধরে ফেলে।
” কী করছিলে?”
কন্ঠ এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে চারিদিকে,আমতা আমতা করে বলল।
” কই কিছু না তো।”
তূর্য ফিক করে হেসে উঠলো, কন্ঠ মুগ্ধ নয়নে হাসি দেখলো।
” তাহলে এত কাছে কী করছো?”
কন্ঠ সেই আগের মতই বলল।
” আআপনাকে খাবারের জন্য ডাকতে এসেছিলাম।”
” আচ্ছা।”
তূর্য উঠে ওয়াশরুমে চলে গেল, কন্ঠ ঠাই দাঁড়িয়ে আছে। মনে মনে আচ্ছা করে বকা দিচ্ছে,এই লোকটা তাকে একটুও আপন করে নেয় না।
__________
টেস্ট পরীক্ষার সময় কলেজে গিয়েছে কন্ঠ,সেই ফ্রেন্ডদের সাথে অসুস্থ সময় কথা হয়েছিলো। সবাই মিলে কন্ঠ কে দেখতে এসেছিল, সেদিন অনেক কান্ড হয়েছিল।
তূর্য কে দেখা মাত্র সবার হাঁটু কাঁপছিল, সেখানে কন্ঠ নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল।
সান ভয়ে ভয় বলল।
” আসসালামুয়ালাইকুম স্যার।”
তারিফ ফট করে বলে উঠে।
” আরে কিসের স্যার দুলাভাই বল দুলাভাই।”
তূর্য ভ্রু কুঁ’চকে তাকায়, তাঁতে প্রাণ পাখি উড়ে যাবার মত চুপসে গেলো তারিফ।ওর এমন অবস্থা দেখে সবাই মুখ টিপে হাসে, তূর্য আর অপেক্ষা করে না নিচের দিকে যায়।যাওয়ার আগে এক পলক নিজের সাজানো ঘরটি দেখে নেয়,একটু পরে কু হবে আল্লাহ জানে।
তূর্য বের হওয়া মাত্র হই চই শুরু হয়ে যায়,কেউ সোফার উপর পড়ে থাকা কাউচ নিয়ে দুষ্টুমি করছে কেঙ বা বিছানায় শুয়ে আছে।
সবার মধ্যে থেকে তাহিয়া কন্ঠ কে উদ্দেশ্য করে বলে।
” আচ্ছা মামা তোকে কী স্যার এখনো ভালবাসি নি? না মানে তোর বিয়ে হয়েছে আজ তিন মাস এত দিনে তো আমরা খালামনি আর ওরা মামা হয়ে যেতো।”
সবাই তাহিয়ার কথায় ফিক করে হেসে উঠে, ওদিকে কন্ঠ বেচারি অসহায় দৃষ্টিতে তাকায়।
তারিফ সবাই কে বলে উঠে।
” মামারা আমার মনে হয় ওর বর মানে তূর্য স্যার রাতেও ওকে পড়াতে শুরু করে, হুঁ হুঁ।”
সবাই আবারো শব্দ করে হেসে উঠে। কন্ঠ বেশ রেগে গিয়ে বলল।
” এই কে বলেছে আমাকে রাতে পড়ায়?দেখ তোরা যা ভাবছিস তা নয়।উনি আমাকে অনেক ভালোবাসে,আর বাচ্চার কথা বললে আমরা এখনো ফ্যামিলি প্ল্যানিং করিনি ওই আর কী হে হে।”
কন্ঠের কথা শুনে সবাই মুখ বাঁকায়, তাতে নিঃসন্দেহে বুঝতে পারছে ওর কথা কেউই বিশ্বাস করেনি।
কন্ঠ মনে মনে আওড়াল।
” আজ একটা বিহিত করতেই হবে,আজ ইসপার নাহি তো ওসপার।আমিও প্রেগু হবো হুউ।”
চলবে…………✨।
#অপ্রিয়_মাস্টার
পার্ট [১৯]
#লেখিকা_ফারহানা_নিঝুম
(কঠোর ভাবে প্রাপ্তবয়স্ক ও মুক্তমনাদের জন্য উন্মুক্ত)।
রাত সাড়ে নয়টার দিকে রুমে প্রবেশ করে তূর্য, কিন্তু ভেতরে ভেতরে ঢুকে দেখলো পুরো রুমে অন্ধকার বিরাজ করছে।বেশ অবাক হয় তূর্য, আশেপাশে তাকিয়ে দেখে কন্ঠ কোথাও নেই।
তূর্য হাতড়ে লাইট অন করতে যাবে তৎক্ষণাৎ নিজের শরীরে মেয়েলি স্পর্শ পায়।কিয়ৎক্ষণের জন্য থমকে যায় তূর্য,ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে কন্ঠ দাঁড়িয়ে আছে।পরনে নাইট ড্রেস,তাও ভীষণ পাতলা। শরীরের প্রতিটি ভাঁজ বুঝতে সক্ষম তূর্য,চোখ সরিয়ে নিল মূহুর্তে।
কন্ঠ তূর্যের বলিষ্ঠ হাত দুখানি নিজের কোমড়ে চে’পে ধরলো, বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকায় তূর্য।
” কী চাই?”
তূর্যের প্রশ্ন শুনে ঘাবড়ে গেল কন্ঠ, আসলেই তো তার কী চাই?
কন্ঠ মৃদু হেসে বলল।
” আপনাকে, ভয়ংকর ভাবে চাই।”
তূর্য নৈঃশব্দ্যে মুচকি হাসলো।
” আসলেই চাই?”
কন্ঠ হয়তো লজ্জা পেলো! মুখশ্রীতে হয়ে উঠেছে আরক্তিম।
হুট করে পাঁজাকোলা তুলে নেয় তূর্য কন্ঠ কে, বিছানায় শুয়ে দেওয়া মাত্র চোখ দুটো বুজে নেয় কন্ঠ। মিনিট পাঁচেক অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয় তূর্য কন্ঠের দিকে।
” অনূভুতির স্রোতে গা ভাসাবেন?”
কন্ঠ চমকালো,সাথে আশ্চর্য হলো বটে।
” অনূভুতির স্রোত?”
” হুম, তোমার ছোঁয়ায় অস্তিত্ব নড়ে উঠেছে। নিষিদ্ধ কাজ গুলো করতে ইচ্ছে করছে। নিজেকে খারাপ ভাবে উপস্থাপন করতে চাইছি।”
কন্ঠ লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে গেছে, তূর্যের পরনে সুট ছিল টান মেরে খুলে ফ্লোরে ফেলে দিল সে।
এলোপাথাড়ি ভাবে কন্ঠের মুখশ্রীতে চু’মু খায়,কপাল থেকে নাক,নাক থেকে গাল।একে একে মুখশ্রীর প্রতিটি জায়গায় চুমু এঁকে দেয় তূর্য, অবশেষে ঠোঁটের দিকে এগুতেই ডান হাত তূর্যের মুখে চেপে ধরে কন্ঠ।
” এত উন্মা’দ?”
তূর্য বাঁকা হেসে বলল।
” স্বীকার যখন নিজেই ধরা দিচ্ছে তাহলে স্বীকারি কেন ছেড়ে দেবে?”
হুট করে নিজের বলিষ্ঠ হাতের বাঁ’ধনে কন্ঠের নরম তুলতুলে হাত আ’টকা পড়ল।
অতঃপর চু’ম্ব’ন এঁকে দেয় কন্ঠের অধরে, কিন্তু একটি চুম্বন কখনও কারও তৃষ্ণা মেটাতে পারে না। বরং বাড়িয়ে দেয়,প্রেমিক প্রেমিকা হলে আলাদা ব্যাপার, এখানে তো দু’জন স্বামী স্ত্রী। নিজের কাঠখোট্টা ঠোঁ’ট চেপে ধরে কন্ঠের ঠোঁ’টের মাঝে, গ্রহণ করে স্বাদ। তৃপ্ত হয় অন্ত’রা’ত্মা।
কন্ঠে গলা জড়িয়ে ধরে তূর্যের,একে একে শার্টের বোতাম খুলে দেয়। উন্মুক্ত করে চওড়া বাহু, মত্ত হয় দুটি অস্তিত্ব একে অপরের সাথে।
বারংবার নিজের উন্মাদ কথাবার্তা পা গ ল করে তুলছে কন্ঠ কে,দুটি দে’হ একে অপরের সাথে মিলে একাকার।
” আই লাভ ইউ বউ জান।”
কথাটি কর্ণ স্পর্শ করা মাত্র পৃথিবীর সর্ব সুখী মনে হচ্ছে।
” আই লাভ ইউ অপ্রিয় মাস্টার সাহেব, আপনি এখন খুব প্রিয় হয়ে উঠেছেন।”
প্রয়াসীর সঙ্গে একটি রাত তীব্র সুখের কে’টেছে তূর্যের।
___________
পার্কে যায়নি তুফায়েল,সে সেই ছুটির ঘুমিয়ে কাটিয়েছে, কিন্তু ঘুম থেকে উঠে বড় সড় ধাক্কা খায়।
নিজের বাহুতে এক কন্যা খুবই আরামে ঘুমাচ্ছে।কিয়ৎক্ষণের জন্য পুরো পৃথিবী থমকে গেছে তুফায়েলের কাছে।
” এইইইইইইইইইইইইইইইইই মেয়ে।”
তুফায়েল ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় অরিন কে,ঘুম ঘুম চোখে তাকায় অরিন।তুফায়েল মোটেও অরিন কে আশা করেনি, প্রচন্ড রকম রেগে তুফায়েল অরিন কে উদ্দেশ্য করে বলল।
” অসভ্য মেয়েই, তুমি এখানে কী করছো? আশ্চর্য! এখানে আসলে কী করে?”
অরিন মুচকি হাসে,টুক করে তুফায়েলের গালে চুমু খেয়ে বললো।
” আপনাকে ভালোবাসি তাই চলে এসেছি।”
” ওয়াট?”
” আপনার মাথা,এত বকবক করতে ভালো লাগে না,আই লাভ ইউ।সো আপনিও আমাকে ভালোবাসেন ওকে?”
” একটা ছেলের সাথে বন্ধ রুমে থাকা মানেটা কী জানো?”
” জানলে জানলাম নয়তো না।”
তুফায়েলের এমনিতেই প্রচন্ড রাগ তার উপর অরিনের এই কথা গুলো তার মাথা গরম করে দিচ্ছে।
” তোমার সমস্যা কী? আশ্চর্য! আমি তোমাকে ভালোবাসি না ওকে।”
অরিন দাঁতে দাঁত চেপে বলল।
” আমি ভালোবাসি, ভালোবাসি ভালোবাসি।”
তুফায়েল আচমকাই থা’প্প’ড় দিয়ে বসে অরিনের গালে,টাল সামলাতে না পেরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে গেল অরিন। গাল হয়ে উঠে র’ক্তি’ম,চোখ দুটো জলে টুই টুই করছে।
তুফায়েল চেঁচিয়ে উঠলো।
” নেক্সট টাইম যদি এসব ফালতু কথা বলো তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।”
অরিন ঠোঁট কা’ম’ড়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করলো।সেদিকে তুফায়েলের ভ্রুক্ষে’প নেই।
” চলো উঠো তাড়াতাড়ি। তোমার বাড়ি পৌঁছে দেব এবং তোমার ফ্যামিলির কাছে বলবো।”
এক প্রকার অরিন কে টেনে তুলে টানতে টানতে বাড়ি থেকে বের হয় তুফায়েল।
বড় সড় একটা বাগান বাড়িতে এসে গাড়ি দাঁড় করায় তুফায়েল,অরিন কে যখন ঠিকানা জিজ্ঞেস করেছিল তখন এই জায়গার কথাই বলেছে সে। গাড়ির হর্ন শুনা মাত্র ভেতর থেকে বেরিয়ে আসেন মিস ক্যাথিয়ান।
অরিন ছুটে গিয়ে মিস ক্যাথিয়ান কে জড়িয়ে ধরে।
” মাম্মা।”
অরিনের চোখে পানি দেখে মিস ক্যাথিয়ানের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে।
” ও মাই ডিয়ার কী হয়েছে টোমার?”
মিস ক্যাথিয়ান কে বাংলা বলতে দেখে বেশ অবাক হয় তুফায়েল,পুরো বাংলা না পারলেও চেষ্টা করছে।
” হেই বয় টুমি আমার অরনী কে কী করেছো?”
তুফায়েল গম্ভীর কন্ঠে আওড়াল।
” আপনার মেয়ে অরিন খুবই অভদ্র আচরণ করছে, সেটা কী আপনি জানেন?”
” ওয়াট?হেই বয় টুমি কী সব বলছো আমার অরনী কে মিন করে?”
অরিন মিস ক্যাথিয়ান কে জড়িয়ে ধরে বলল।
” মাম্মা, আমি ওনাকে ভালোবাসি।হুমমম এই সেই হ্যান্ডসাম বয়।”
মিস ক্যাথিয়ান অবাক নয়নে তাকায় তুফায়েলের দিকে।
” রিয়েলি?ও মাই গড।হেই বয় টাহলে টুমি সেই ল্যাকী ম্যান? নাইস টু মিট ইউ।”
তুফায়েল ভ্যা’বা ছ্যা’কা খায়।
” না না আপনি যেটা ভাবছেন সেটা নয়, আপনার মেয়ে অরিন কে আমি অনেক বার বুঝিয়েছি ও যা চাইছে তা সম্ভব নয়।”
অরিন বি’ক্ষিত মন নিয়ে ভেতরে ছুটে যায়,মিস ক্যাথিয়ান তাকে থামানোর চেষ্টা করে বলে।
” মাই বেইবি ওয়েট,ওয়াট হ্যাপেন্ড?”
অরিন থামলো না ভেতরে চলে গেলো,তুফায়েল সূক্ষ্ম শ্বাস ফেলে ওখান থেকে চলে গেলো।
✨
এক গুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে সান, ওদিকে মহিলা কলেজ থেকে বেরিয়ে আসছে হালকা বেগুনি রঙের জামা পরিহিত একটি মেয়ে।
মেয়েটি মাথা নিচু করে হাঁটছিল, পাশে থাকা বান্ধবী আরু বলল।
” তোহা দেখ ওই যে তোর হৃদয় স্পন্দন বাড়িয়ে দেওয়া পুরুষ।”
তোহা চোখ তুলে তাকানো মাত্র দেখলো শুভ্র রঙের শার্ট পরনে দাঁড়িয়ে আছে সুদর্শন পুরুষ। মূহুর্তে হৃদয় স্পন্দন হুঁ হুঁ করে বেড়ে গেল,বার কয়েক শুকনো ঢুল গিলে নেয় সে।লাজুক লতার ন্যায় মিহিয়ে যাচ্ছে সে। চোখাচোখি হওয়া মাত্র চোখ সরিয়ে নিল তোহা,সান নৈঃশব্দ্যে ঠোঁট কা’ম’ড়ে হাসলো।
হাতের ইশারায় কাছে ডাকে তোহা কে,আহা মুখ চেপে হাসে।তোহা কে ইশারা করে যাওয়ার জন্য,তোহা ধীর পায়ে এগিয়ে গেলো।সান শান্ত কন্ঠে বলল।
” যাবে আমার সাথে?”
তোহা এপাশ ওপাশ দেখে নিল এক নজর।
” ককোথায়?”
” যেখানে নিয়ে যাবো?”
তোহা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো,তবে অবশ্যই নিচের দিকে তাকিয়ে।
” এসো।”
হাত বাড়িয়ে দেয় সান,তোহা থমকালো।
” দাও?”
সান ফের বলল,তোহা কাঁপা হাতটি ওর দিকে বাড়িয়ে দিতেই শক্ত করে ধরলো সান।
_____
” জানি না,কেন কী হয়েছে?”
সকাল সকাল মিষ্টি ঘুম ভেঙ্গে গেলো রিয়ার,তারিফ কল করছে। ফোন রিসিভ করা মাত্র জিজ্ঞেস করলো সান কে দেখেছে কী না?রিয়া না করলো।
” আর বলিস না ভাই সকাল থেকে সবাই কে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম ওর কথা, কিন্তু কেউ জানে না এখন আবার তুইও বলছিস জানিস না।”
রিয়া ফিক করে হেসে বলল।
” হয়তো ওর গার্লফ্রেন্ড এর কাছে গেছে হি হি।”
“আল্লাহ জানে ওর কী হয়েছে?”
চলবে……….✨।