হৃদয়স্পর্শী মায়াবিনী পর্ব-০৪

0
136

#হৃদয়স্পর্শী_মায়াবিনী
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর (মিমি)
#পর্বঃ৪

বৈশাখ মাসের কালবৈশাখী ঝড়ের তান্ডবে দিনের আলোটাও যেনো ফোটার সুযোগ পেলো না। ঘন কালো মেঘ ছুটে এসে শুভ্র আকাশটাকে বন্দী করে নিলো নিজের অধীনে। ঘনো কালো মেঘগুলো কিছুক্ষণ পর পর আকাশ কাঁপিয়ে গর্জে উঠছে৷ মেঘের প্রীতিটি গর্জনে কেঁপে উঠছে ফারিসতা। বৃষ্টিপাগলী মেয়েটা মেঘের গর্জনে কেঁপে উঠলেও জানালার পাশ ঘেঁসে দাঁড়িয়ে বৃষ্টির পানি আলতো করে ছুঁয়ে দিতে মিস করলো না। শরীরে জ্বর থাকার জন্য ভিজতে না পারলেও হাত ভেজাতে পারছে এতেই যেনো মেয়েটার খুশিগুলো উপচে পড়ছে। যদিও খুশির মাঝে কিছুটা আতঙ্কেও আছে কারণ বৃষ্টি দেখে ফারজানা বেগম বার বার করে নিষেধ করে গিয়েছে বৃষ্টিতে না ভিজতে এমনকি বৃষ্টির পানিতে হাত ও না ভেজাতে। তিনি খুব ভালো করেই জানে তার বৃষ্টি পাগলি মেয়ের বৃষ্টি দেখলে মাথা ঠিক থাকে না তাই বার বার করে হুশিয়ারি দিয়ে বেলকনির দরজা জানালা সব আঁটকে দিয়ে বলে গিয়েছে ভুলেও যেনো বৃষ্টির কাছে না যায়। কিন্তু বৃষ্টি পাগলী মেয়েটার বেশিক্ষণ নিজেকে আঁটকে রাখার সাধ্য হলো না। একটু খানি জানালার থাই সরিয়ে কোমল হাত জোড়া বাড়িয়ে দিলো বাহিরে। সাথে সাথে এক পশলা বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিলো হাতখানা। বৃষ্টির পানি হাতে লাগার সাথে সাথে ঠোঁটের কোনে ফুটে উঠলো এক স্নিগ্ধ হাসি।
মনে পড়ে গেলো সেই ছোট বেলার কাহিনি যখন সিলেট ছিলো। ওদের বাসার সামনে গুটি কয়েক আম গাছ ছিলো। বৃষ্টি নামলেই দৌড়ে বৃষ্টির ভিতরে আম কুড়োতে চলে যেতো। শুনতো না ফারজানা বেগমের কোনো বারন। কত মধুর মিশ্রত ছিলো সেই দিনগুলো ভাবতে ফারিসতার খুব করে ইচ্ছে হলো সেই ছোট বেলার মতো আম কুড়াতে। কিন্তু ইচ্ছে হলেও কিছু কিছু ইচ্ছে অপূর্ণ এই থেকে যায়। তেমনি ফারিসতার আম কুড়ানোর হচ্ছেটা অপূর্ণই রয়ে গেলো।

ফারজানা বেগম ব্যস্ত হাতে পিঠা বানাচ্ছে। বৃষ্টির সময় পাটিসাপটা পিঠা খাওয়াটা খুবি পছন্দ করে ফারিসতা। তাই তিনি মেয়ের জন্য নিজ হাতে পিঠা বানাচ্ছে। পিঠা বানানো শেষ হলে একটু তারাহুরো করেই রুমের দিকে পা বাড়ালো কারণ জানে তার বার বার হুশিয়ারি দেওয়ার পর ও যে তার বৃষ্টি পাগলী মেয়ে বৃষ্টিবিলাশ করা হাত ছাড়া করবে না। এমনি মেয়ের শরীরের জ্বর এখনো পুরোপুরি কমেনি। এখন এই অসময়ের বৃষ্টি শরীরে লাগলে জ্বর কমবে না বরং বাড়বে তাই তিনি তাড়াহুড়ো করে রুমের কাছে আসতে চোখে পড়লো মেয়ের কান্ড। মেয়ের কান্ড কারখানা দেখে তিনি ফারিসতার কাছে যেয়ে কান টেনে জানালার কাছ থেকে মেয়েকে সরিয়ে এনে জানালা লাগিয়ে বলল,

এতো বার না বলার পরেও তুৃমি বৃষ্টির কাছে কেনো গিয়েছো?

হঠাৎ মায়ের হাতে এভাবে ধরা পড়ায় কিছুটা ভড়কালো ফারিসতা পরক্ষণে নিজেকে সামলে কাঁদো কাঁদো ফেইস করে বলল,

উউউ আম্মু ব্যথা পাচ্ছিতো এভাবে কেউ কান ধরে ছাড়ো না….।

মার চিনো? এতবার না করার পর ও কেনো বৃষ্টির কাছে গেলে?

ফারিসতা ইনোসেন্ট ফেইস করে বলল, চেষ্টা করেছিতো নিজেকে আটকানোর কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেকে আটকাতে পারিনি।

ফারাজানা বেগম ফারিসতার কান ছাড়তে ছাড়তে বলল, বৃষ্টি দেখলে তোমার মাথা ঠিক থাকে না জানি তাই বলে নিজের শরীরের দিকে ওতো তাকাতে হবে আম্মা। এমনি জ্বর এখনো পুরোপুরি সারেনি সে দিকটা ওতো দেখতে হবে।

জ্বর না থাকলেও তুমি বৃষ্টিতে ভিজতে দেও না আমাকে।

আমার বাধ্য মেয়ে আমার না বলা শুনলেতো। সেইতো লুকিয়ে লুকিয়ে ঠিকি ভিজে আসো।

ফারাজানা বেগমের কথায় ফারিসতা স্মিত হেঁসে ফারজানা বেগমকে পিছ থেকে জড়িয়ে ধরে বলল, বৃষ্টি আমার একমাত্র উইকনেস তাতো জানোই।

মেয়ের কাজে ফারাজানা বেগম ও স্মিত হেঁসে পিছ থেকে ফারিসতার গালে হাত দিয়ে বলল,

আমার আহ্লাদি মেয়ে পিঠা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে চলো খেয়ে নিবে। এভাবে মা মেয়ের খুনসুটির মাঝে দুজন গল্প করতে করতে পিঠা খেলো। মায়ের হাতের পিঠা অম্রিত লাগছে ফারিসতার কাছে। কেনো এই পিঠার এতো স্বাদ লাগছে প্রিয় পিঠা বলে নাকি মায়ের হাতে বানানো বলে?
***

তীব্র বিতৃষ্ণা নিয়ে ল্যাপটপের সামনে বসে আছে তাজ। ল্যাপটপের স্ক্রিনে ভাসছে পড়ার বিভিন্ন টপিক যেগুলো প্রতিনিয়ত প্রেকটিস করে যেতে হয়। কোনো জিনিসে নিজের আগ্রহ না থাকলেও বাধ্য হয়ে করা লাগলে সেটা বিষের চেয়েও বেশি বিষাক্ত লাগে। ডক্টর হওয়ার কোনো ইচ্ছেই ছিলো না তাজের কিন্তু বাবার চাপে পড়ে ডাক্তারি পড়া কমপ্লিট করতে হলো। তিফাজ চৌধুরীর একটাই কথা সে একজন সফল ডক্টর তার একমাত্র ছেলেও তার মতো ডক্টর হবে। তাজ তিফাজ চৌধুরীর ছেলে হলেও স্বভাব পেয়েছে ছোট চাচার। সৌরভ চৌধুরীর মতো বদমেজাজি ত্যাড়া স্বভাব পুরোটা পেয়েছে। ডক্টরের মতো এতো সম্মানীয় পেশা রেখে ঝোক গিয়ে পড়েছে মারপিট, রাজনীতি, ক্ষমতা, দাপটের উপরে। তিফাজ চৌধুরী সৌরভ চৌধুরীকে এই রাজনীতি থেকে বের করে আনতে না পারলেও ছেলেকে করায় গন্ডায় শাসন করেছে যাতে ছেলের একমাত্র লক্ষ থাকে ডক্টর হওয়ার কিন্তু এই ছেলে তার চাপে পড়ে ডক্টর হলেও সেই ক্ষমতা দাপটের ঝোঁক ও ধরে রেখেছে। এক সাথে দুটো পেশা প্রতিনিয়ত হ্যান্ডেল করছে যার জন্য বাপ ছেলের ভিতরে এখন সম্পর্ক হলো সাপে আর নেউলের।

এইতো এক বছর হলো ডাক্তারি পদের জার্নি তাজের। প্রাইভেট হসপিটালের অর্ধেক শেয়ারে আছে তিফাজ চৌধুরী। নিজস্ব হসপিটাল থাকায় তিফাজ চৌধুরীর কাছে তাজ শর্ত জুড়ে দিলো সপ্তাহে দুই দিনের বেশি ডিউটি করতে পারবে না। যদি দুইদিন ডিউটির ব্যবস্থা না করে তাহলে ডাক্তারি পেশা ছেড়ে দিবে। যেহেতু তাজের ডাক্তারি পেশার চেয়ে ক্ষমতা, দাপট, রাজনীতির উপরে ঝোক বেশি তাই ওর শর্ত না মেনে নিলে সত্যি ডক্টরি পেশা ছেড়ে দিতে এই ছেলে দুইবার ভাববে না তাই তিফাজ চৌধুরী তাজের ডিউটি সপ্তাহে দুই দিন দিলো। ( ডক্টররা নিজের ইচ্ছে মতো যে কয়দিন খুশি ডিউটি নিতে পারে কিনা আমার জানা নেই। গল্প সাজানোর জন্য এরকমটা লিখেছি তাই আশা করি কেউ বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে ভুল ধরবেন না। এটা একটা কাল্পনিক গল্প তাই এটাকে বাস্তবতার সাথে কেউ মিলাবেন না )

সপ্তাহে দুইদিন ডিউটি করতেও বেজায় বিরক্ত তাজ। যে দুইদিন ডিউটি থাকে সেই দুইদিন আড্ডাবাজি, মারপিট, দাপট কিছুই করতে পারে না। পুরো দুটি দিন হসপিটালের পিছে দেওয়া লাগে যার জন্য বেজায় বিরক্ত তাজ। পর পর দুইদিন ডিউটি করে এমনি মেজাজ ঠিক নেই তার উপরে সকাল থেকে একাধারে বৃষ্টি নেমেই চলেছে তাতে মেজাজ তুঙ্গে উঠে আছে তাজের। এই হুটহাট বৃষ্টির জন্য খুবি অসন্তুষ্ট ছেলেটা। এমনি বৃষ্টি খুবি বিরক্তিকর ওর কাছে। এই বিরক্ত আরো বেড়ে গেলো দুইদিন ডিউটির পর আজ ওদের ক্লাবে যাবে তাও বৃষ্টির জন্য যেতে পারছে না।

তাজের ভাবনার মাঝে তাহমিনা বেগম এসে তাজের পাশে বসলো। হঠাৎ মাকে দেখে তাজের বিরক্তভরা মুখের আদল শীতল হয়ে গেলো। তাকালো মায়ের স্নিগ্ধ মুখপানে। আগের চেয়ে চোখমুখ শুকিয়ে গেছে। আগের মতো হাসিখুশিময় মুখটা এখন আর দেখার সুযোগ হয়ে ওঠে না। আগের মতো মায়ের সাথে মন খুলে কথা বলা হয়না। তাজ মায়ের ফ্যাকাশে মুখের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসার চেষ্টা করে বলল, কিছু বলবে?

তাহমিনা বেগম স্লান হেঁসে তাজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল, তোর পছন্দের মাংস ভুনা আর খিচুড়ি রান্না করেছি খাবি চল। মনে আছে আগে বৃষ্টি নামলেই বায়না ধরতি মায়ের হাতের মাংস ভুনা দিয়ে খিচুড়ি খাওয়ার। এখনতো আমার ছেলে বড় হয়ে গিয়েছে তার বায়না ধরার বয়স নেই তাই নিজেই রান্না করে ফেললাম শেষের কথা গুলো অভিমানী কণ্ঠে বলে উঠলো তাহমিনা বেগম।

মায়ের অভিমানী কণ্ঠে বলা কথাগুলো শুনে তাজ স্লান হেসে আচমকা তাহমিনা বেগমের কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ চুপ থেকে তাজ ধীর গলায় শুধালো, খুব বেশি কি পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে তোমার ছেলেটা?

তাহমিনা বেগম তাজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে তাজের কথাটা এড়িয়ে গিয়ে বলল, খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে চলো খেয়ে নিবে।

মায়ের বিষয়টা এড়িয়ে যেতে দেখে ফের স্মিত হেসে তাজ নীরবে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো মায়ের অভিমানী মুখের দিকে কিন্তু কিছু বলল না। কিছুক্ষণ পর তাজ তাহমিনা বেগমের কোল থেকে উঠে শান্ত গলায় বলল, চলো।

তাহমিনা বেগম বেড থেকে উঠতে নিবে তখন তাজ কোমল স্বরে ডেকে উঠলো…. মা….

ছেলের ডাকে চকিত দৃষ্টি তুলে তাকালো তাহমিনা বেগম। আজ এতো দিন পর ছেলের এমন কোমল স্বরে মা ডাকায় তার চোখজোড়া চিকচিক করে উঠলো।

তাজ তাহমিনা বেগমকে একপাশ থেকে জড়িয়ে ধরে বলল, আমার জন্য এতো বেশি টেনশন করবে না। নিজের কি অবস্থা করেছো একবার দেখেছো? আমি তোমার সেই ছোট্ট তাজ ছিলাম আছি আর থাকবো ও। একদম টেনশন করবে না ওঁকে?

ছেলের কথায় তাহমিনা বেগম অশ্রুসিক্ত নয়নে মাথা দুলালো। আজ কতগুলো দিন পর ছেলে তার সাথে ঠিক ভাবে কথা বলেছে এতেই তিনি খুশি। সব সময় বাবা ছেলের ভিতরে হাট্টা হাট্টি লড়াই বেজেই থাকে যার পুরো ঝড়ঝাপটা প্রভাবটা এসে পড়ে তার উপরে। স্বামীর কথা শুনে ছেলেকে এই পেশা ছেড়ে দিতে বললে ছেলে রেগে যেতো আর ছেলেকে কিছু না বললে স্বামী রেগে বোম হয়ে থাকতো। সব মিলিয়ে সব সময় সংসারে অশান্তি লেগেই থাকতো৷ আজ অনেকদিন পর ছেলেকে কোমল স্বরে কথা বলতে দেখে তার খুশিগুলো যেনো উপচে পড়ছে আজ। এতোদিন পর মুখে হাসির রেখা টেনে তিনি ছেলেকে নিয়ে নিচে চলে গেলো ছেলের পছন্দরে খাবার ছেলেকে মন ভোরে খাওয়াতে।

এতোদিন পর মায়ের মুখে হাসি দেখে তাজের ঠোঁটের কোনেও ফুটে উঠলো হাসির রেখা। কিন্তু সেই হাসিটা বেশিক্ষণ টিকলো না তিফাজ চৌধুরীর খোঁচা মারা কথায়।

তিফাজ চৌধুরী খাবার খেতে খেতে খোঁচা মেরে উঠলো আজ সূর্য কোন দিক দিয়ে উঠলো যে এই টাইমে খাবার টেবিলে নতুন নতুন সদস্যর দেখা পাচ্ছি?

তিফাজ চৌধুরীর কথায় খাবার টেবিলে উপস্থিত থাকা তাজ আর সৌরভ চৌধুরী চোখমুখ কুঁচকে গেলো কারণ কথাটা তাদের দু’জনের উদ্দেশ্যেই বলা হয়েছে যা বুঝতে বাকি রইলো না কারো। এই বাসায় সবাই এক সাথে খাবার খেলেও সৌরভ চৌধুরী আর তাজকে সবার মাঝে খুব একটা পাওয়া যায় না। সৌরভ চৌধুরীকে যেটুকু পাওয়া গেলেও তাজকে পাওয়া যায় না বললেই চলে। হসপিটালে যে দুইদিন ডিউটি থাকে ওই দুইদিন বাদে এই ছেলের টিকিটাও খুঁজে পাওয়া যায় না।

তিফাজ চৌধুরীর কথায় কাজের মেয়ে রুবিনা বোকা হেঁসে বলে উঠলো খালুজান সূর্য অন্যদিক দিয়ে উঠবে কিভাবে আজকে তো সূর্যই ওঠে নাই। দেখেন না সকাল থেকে বৃষ্টি নামতাছে।

রুবিনার কথায় ফিক করে হেঁসে দিলো রুশা। রুশা হাসতে হাসতে বলে উঠলো গাধী বৃষ্টি নামছে দেখে কি সূর্য উঠবে না? মেঘ সূর্যকে ঢেকে রেখেছে তা বল।

রুশার কথায় রুবিনা দাঁত কেলিয়ে হেঁসে বলে উঠলো ওই একি হইলো।

তিফাজ চৌধুরী ফের তাজকে খোঁচা মেরে কথা শুনানোর জন্য রিফাজ চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,

বুঝলি রিফাজ আজকের ওয়েদারটা দারুণ। খাওয়া শেষ করে উপরে চল দুই ভাই মিলে জমিয়ে আড্ডা দিবো। আজকের বৃষ্টিটা দারুণ লাগছে। তিফাক চৌধুরী ভালো করেই জানে তার গুনধর ছেলে আজ বৃষ্টির জন্য বের হতে না পেরে মেজাজ তুঙ্গে উঠে আছে। যার জন্য বৃষ্টি নিয়ে খোঁচা মেরে কথা শুনাতে হাত ছাড়া করলো না। আজকের এই লাগাতর বৃষ্টিকে তিনি একশটা থ্যাংকিউ দিলো। অন্তত বৃষ্টির উছিলায় তার ত্যাড়া ছেলের উশৃঙ্খল কাজের ব্যঘাত ঘটেছে এতে তিনি বেজায় খুশি।

তিফাজ চৌধুরীর এমনে খোঁচা মারা কথায় প্রথমে তাজ বিরক্ত হলেও পরক্ষণে বাঁকা হেঁসে বলে উঠলো,
শুনেছি মানুষ নতুন নতুন প্রেমে পড়লে নাকি তার কাছে বৃষ্টিও অমৃত লাগে।

আকস্মিক তাজের কথায় তিফাজ চৌধুরীর গলায় খাবার আঁটকে মস্তক উঠে গেলো।

তিফাজ চৌধুরীর হঠাৎ এমন কাশি ওঠায় তাহমিনা বেগম দ্রুত তার দিকে পানি বাড়িয়ে দিয়ে তাজের দিকে তাকিয়ে ইশারায় চুপ থাকতে বলল।

পানি খেয়ে স্বাভাবিক হতে তিফাজ চৌধুরী দাঁত কটমট করে তাকালো তাজের দিকে। এই ছেলে যে সবার সামনে এমন কথা বলবে কাশ্বিন কলেও ভাবেনি তিনি।

এদিকে বাপ ছেলের কাজে উপস্থিত সবাই মিটিমিটি হাসতে লাগলো। সবার এমন হাসিতে তিফাজ চৌধুরী বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে গেলেন। এমতাবস্থায় কি করবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারলো না ভদ্রলোক।

এদিকে তিফাজ চৌধুরীর বিব্রত মুখের দিকে তাকিয়ে তাজ বাঁকা হেসে খাওয়া শেষ করে উঠতে উঠতে রেহেনা বেগমের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো মেজো মা এক কাপ কফি করে উপরে পাঠিয়ে দিয়ো। আমার আবার বৃষ্টি পছন্দ না। বৃষ্টি দেখলে মুখ তেতো হয়ে যায় তাই কফি খেয়ে একটু মুখটা মিষ্টি করা প্রয়োজন।

তাজের যাওয়ার দিকে তিফাজ চৌধুরী চোখমুখ কুঁচকে তাকিয়ে রইলো। মনে মনে শুধালো এই ছেলে আমাকে ইনডায়রেক্টলি এভাবে খোঁচা মেরে কথা শুনিয়ে গেলো?

#চলবে?

ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং….🥰