#হৃদয়স্পর্শী_মায়াবিনী
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর (মিমি)
#পর্বঃ২৩
ফারিসতাদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে সাফোয়ান তাঁদের থেকে বিদায় নিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে আবার ব্যাক করতে নিবে তখন চোখে পড়লো আদরিবা এদিকেই আসছে। এতো রাতে আদরিবাকে রাস্তায় দেখে সাফোয়ান আদরিবাকে ডাক দিলো।
হঠাৎ সাফোয়ানের কণ্ঠস্বর শুনে চমকে উঠলো আদরিবার। বুঝতে পারলো না ও কানে ভুল শুনেছে নাকি সত্যি সাফোয়ান ডেকেছে তাই আদরিবা এদিক ওদিক তাকাতে দেখতে পেলো ওর সামনের গাড়ি ভিতর থেকে সাফোয়ান নামছে। হঠাৎ এই টাইমে সাফোয়ানকে ওদের বাসার সামনে দেখে আদরিবার স্তব্ধ হয়ে গেলো।
আদরিবার স্তব্ধতার মাঝে সাফোয়ান ওর সামনে এসে বলে উঠলো এতো রাতে রাস্তায় একা কি করছিস তুই?
সাফোয়ানের প্রশ্নে আদরিবার পল্লব ঝাপটে নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল, একা না আরফি ভাইয়া ছিলো খালামনির বাসা থেকে ফিরছিলাম মাত্র।
সাফোয়ান আদরিবার পিছে একবার চোখ বুলিয়ে বলল, কোথায় আরফি ভাই?
তিফাজ আঙ্কেলকে দেখতে গিয়েছে। মাত্রই গেলো আমাকে এখানে নামিয়ে দিয়ে গিয়ে। তুৃমি এতো রাতে আমাদের এখানে?
ফারিসতা আর আন্টিকে ড্রপ করে দিতে এসেছি।
ওও আচ্ছা, আঙ্কেলের এখন কি অবস্থা?
এখন অবস্থা আগের তুলোনায় ভালো। আচ্ছা যা তাহলে বাসায়।
সেকি এখান থেকে চলে যাবে? বাসায় চলো।
অনেক রাত হয়ে গিয়েছে অন্য এক সময় আসবো। এ বলে গাড়িতে উঠে বসলো সাফোয়ান।
সাফোয়ান গাড়িতে উঠতে আদরিবা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে বাসার ভিতরে ঢুকতে যাবে তখন গাড়ির জানালা দিয়ে সাফোয়ান মাথা বের করে বলে উঠলো শোন…
সাফোয়ানের ডাকে আদরিবা পিছু ঘুরতে সাফোয়ান বলে উঠলো তোর সাথে কিছু কথা ছিলো ফ্রী আছিস কবে?
আমিতো সবসময় ফ্রী আছি যখন খুশি তখন দেখা করতে পারবো।
ওকে কাল সকালে রেডি থাকিস আমি নিতে আসবো কথাটা বলে সাফোয়ান চলে গেলো।
আদরিবার টিপটিপ বুকে তাকিয়ে রইলো সাফোয়ানের যাওয়ার দিকে। কি বলবে সাফোয়ান ভাই? বাই এনি চান্স সাফোয়ান ওকে কাল প্রপোজ করবে নাকি কথাটা ভাবতে আদরিবার মুখে ফুটে উঠলো এক পশলা খুশির ঝলক। তাহলে কি অবশেষে ওর অপেক্ষার অবসান ঘটিতে চলেছে ভাবতে আদরিবা খুশিতে লাফিয়ে উঠে এক দৌড়ে বাসার ভিতরে ঢুকে গেলো।
****
ভোরের আলো ফুটতে আরফি তাজের থেকে বিদায় নিয়ে গড়িতে উঠে বসলো। কাল সারারাত তাজ আর সৌরভ চৌধুরীর সাথে আরফিও ছিলো। ভোর হতে ঘুমে চোখ ভেঙে আসলো এখন একটু ঘুমানোর প্রয়োজন তাই তাজের থেকে বিদায় নি চলল বাসার উদ্দেশ্য।
তাজ আরফিকে বিদায় দিয়ে নিজের কেবিনের দিকে যাওয়া ধরতে হঠাৎ ডক্টর নাহির খান তাজের সামনে এসে পড়ে থতমত খেয়ে গেলে সাথে ভড়কালো ও। এতো সকাল সকাল তাজকে হসপিটালে তিনি মোটেও আশা করেনি। আচমকা তাজকে দেখে তার শরীর ঘামতে লাগলো। তিনি তাৎক্ষণিক নিজেকে স্বাভাবিক করে তাজের সাথে কোনো কথা না বলে পাশ কটিয়ে হন্তদন্ত পায়ে ছুটে চলে গেলো।
এত সকাল সকাল নাহির খানকে হসপিটালে দেখে অবাক হলো তাজ৷ পরক্ষণে ভাবলো নাসির খান হয়তো এই হসপিটালেই ভর্তি তাই এখানে ছিলো রাতে কিন্তু সেটাতে ওর সামনে পড়ায় এভাবে ভয় পেলো কেনো তাজ বুঝতে পারলো না। বিষয়টা অনেকটা এমন চোর যখন অতি সপ্তপর্ণ চুরি করে পালাতে যায় তখন কেউ সামনে পড়লে ধরা পড়ার ভয়ে যেমন হঠাৎ ভাড়কে ওঠে সেই অবস্থা হলো নাহির খানের। বিষটা অন্য সময় হলে স্বাভাবিক ভাবে নিলেও নাসির খানের করা কাজের পর থেকে স্বাভাবিক ভাবে নেওয়াটা বোকামি হবে। নাসির খানের একার পক্ষে এত সাহসে কুলানো সম্ভব না যে তাজ চৌধুরীকে মারার জন্য লোক পাঠাবে। এর পিছে যে বড় কারো হাত আছে তাজ তা আগেই আন্দাজ করেছে। ডক্টর নাহির খানকে হঠাৎ এভাবে ভয় পেতে দেখে তাজের মনে খটকা জাগে। বিয়টা ঘেটে দেখতে হবে ভেবে তাজ কেবিনে যেতে সৌরভ চৌধুরী বলে উঠলো,
তুই এবার বাসায় যেয়ে একটু রেস্ট নে আমি আছি এখানে।
বাসায় যাওয়ার সময় নেই আজ ডিউটি আছে। চাচ্চু তুমি এক কাজ করো হসপিটালের সিকিউরিটি বাড়িয়ে দেও। বাবার কেবিনে যেনো আমার অনুমতি ছাড়া একজন নার্স ও প্রবেশ না করে।
কিছু কি হয়েছে? তাজের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন ছুড়লো সৌরভ চৌধুরী। সৌরভ চৌধুরীর প্রশ্নে তাজ কোনো বিলম্ব না করে একটু আগের ঘটনা খুলে বলতে সৌরভ চৌধুরী বলে উঠলো,
ঘাপলাতো কিছু একটা আছেই। একটা প্রবাদ আছে না অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ সেটা হলো নাহির খানের অবস্থা। বিষয়টা ঘেঁটে দেখতে হবে।
****
সারাক্ষণ হোস্টেলের ভিতরে থাকতে থাকতে রাশফিয়া এবার বেজায় বিরক্ত তাই আজ সকাল সকাল প্রকৃতির হাওয়া খেতে বেরিয়ে গেলো হাঁটতে। এই কাক ভোরের পরিবেশটা একতটা স্নিগ্ধতায় ঘেড়া যে করো মন ফুরফুরে করার জন্য যথেষ্ট। রাশফিয়া ফুরফুরে মনে রাস্তার পাশ ঘেঁসে প্রায় আধা ঘণ্টা হাঁটলো যার দরুন হোস্টেল থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছে। রাশফিয়া ভাবলো এবার ফিরে যাওয়া দরকার তাই আবার হোস্টেলের উদ্দেশ্যে পা বাড়াতে আচমকা একটা ইটের সাথে উষ্ঠা খেয়ে ধপাস করে রাস্তার মাঝে পড়ে গেলো। পড়ার সাথে ব্যথায় মেয়েটার চোখমুখ নীল হয়ে আসলো। রাশফিয়া তীব্র ব্যথা নিয়ে কোনো রকম উঠে বসতে চোখে পড়লো পায়ের বুড়ো আঙুলের নখ অর্ধেক উঠে গেছে যেখান দিয়ে গলগলিয়ে রক্ত পড়ছে। এমন রক্ত দেখে ব্যথার মাঝে রাশফিয়ার গা গুলিয়ে এলো। পায়ের কাছ থেকে চোখ সরিয়ে চিনচিনিয়ে জ্বলতে থাকা হাতের দিকে তাকাতে দেখতে পেলো দুই হাতের কনুই ছিলে গিয়েছে পিচ ঢালা রাস্তার শক্ত পাথরের ঘষায়। দুই হাঁটুতেও প্রচন্ড জ্বালাতন করছে। হুট করে কি থেকে কি হয়ে গেলো ভাবতে ব্যথায় রাশফিয়ার চোখে পানি চলে আসলো। এই অবস্থায় নিজে নিজে হোস্টেলেই বা ফিরবে কিভাবে। এদিকে এত সকাল সকাল পুরো রাস্তা ফাঁকা। নেই কোনো রিকশার দেখা এমতাবস্থায় মেয়েটা কি করবে বুঝে উঠতে পারলো না। রাশফিয়া ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়িয়ে দাঁত দিয়ে অধর কামড়ে ধরে ব্যথা সয়ে নিয়ে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো একটা রিকশার পাওয়ার আশায়।
আরফি ড্রাইভ করছিলো তখন রাস্তার পাশে চোখ যেতে রাশফিয়াকে এমন বিধ্বস্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আরফি দ্রুত ব্রেক কোষে গাড়ি থেকে নেমে রাশফিয়ার কাছে যেয়ে বলে উঠলো,
একি এ অবস্থা হলো কি করে?
হঠাৎ আরফিকে দেখে রাশফিয়া চমকালেও যেনো একটু ভরসা খুঁজে পেলো। রাশফিয়া আরফির প্রশ্নে চোখের ইশারায় নিচে পড়ে থাকা ইট দেখালো।
রাশফিয়ার ইশারা অনুশীলন করে আরফি ভ্রু কুঁচকে নিচে তাকাতে নিচে ইট দেখে আরফি চোখ ছোট ছোট করে রাশফিয়ার দিকে তাকিয়ে বলল, চোখ কোথায় রেখে হাঁটো?
এমনি ব্যথায় জানটা বেড়িয়ে যাচ্ছে তার উপরে আরফির এমন কথায় রাশফিয়া চোখমুখ কুঁচকে বলে উঠলো আপনায় মাথায় রেখে হাঁটি।
ছোট বেলা কি তোমার বাবা-মা তোমায় হর্লিক্স খাওয়ায়নি? যেখানে সেখানে ধাপুসধুপুস করে পড়ো। এখন পর্যন্ত হাঁটতে শিখোনি। গাড়িতে ওঠো।
আরফির কথায় রাশফিয়ার রাগ লাগলেও কিছু বলল না কারণ এখন ওর হোস্টেল পর্যন্ত পৌঁছানো সবার আগে প্রয়োজন। তাই রাশফিয়া কোনো কথা না বলে সামনে এক পা রাখতে ব্যথায় কুকড়িয়ে উঠলো সর্বাঙ্গ।
রাশফিয়া ব্যথার্ত মুখের দিকে তাকিয়ে আরফি নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল ধরো।
ব্যথায় চোখমুখ খিচে থাকা রাশফিয়া আরফির কথায় চোখ খুলতে আরফি চোখের ইশারায় হাত ধরতে বলল। রাশফিয়া বুঝলো যে ওর একার পক্ষে হাঁটা সম্ভব না তাই কাঁপা কাঁপা হাতে আরফির হাতের ভাজে নিজের হাত রেখে গুটি গুটি কদমে গাড়ির কাছে গেলো। গাড়ির কাছে এসে আরফি রাশফিয়ার হাত ছেড়ে দিতে রাশফিয়া ধীরে ধীরে গাড়িতে উঠে চোখ বন্ধ করে নিলো। অনুভব করলো বুকের ভিতরের কম্পন। কোনো এক অজানা কারণে আরফির হাতটা রাশফির কাছে খুব ভরসা যোগ্য মনে হলো। কেনো এই ভরসা?
রাশফিয়ার ভাবনার মাঝে আরফি রাশফিয়ার দিকে ফাস্ট এইড বক্স এগিয়ে দিয়ে বলল মেডিসিন লাগিয়ে নেও ব্যথা সেরে যাবে।
আরফির কথায় রাশফিয়া চোখ খুলে আরফির হাত থেকে বক্স নিয়ে ভ্রু গুটিয়ে বলল, এটা কি সবসময় গাড়িতে রেখে দেন?
রাখতে হয় কথাটা বলে আরফি গাড়ি স্টার্ট করলো।
আরফির কথার পৃষ্ঠে রাশফিয়া খোঁচা মেরে বলে উঠলো ভুলেই গিয়েছিলাম আপনাদের যেই পেশা সেটায় সবসময় এটার প্রয়োজন পরে।
রাশফিয়ার খোঁচা মারা টের পেয়ে আরফি বলে উঠলো তোমাকে যতটা সহজ সরল ভেবেছিলাম ততটা সহজ সরল কিন্তু তুমি না।
রাশফিয়া স্মিত হেঁসে বলে উঠলো উপর থেকে দেখে মানুষকে কখনো বিবেচনা করবেন না। কখনো কখনো দেখবেন আপনার চোখের সামনে ঘুরেবেড়ানো সবচেয়ে সহজ সরল মানুষটার সহজসরলতার আড়ালে লুকিয়ে থাকে কতটা হিংস্রতা।
তা অবশ্য ঠিক বলেছো। সহজসরল মানুষদের আড়ালেই লুকিয়ে থাকে সবচেয়ে বেশি হিংস্রতা।
আরফির জবাবে রাশফিয়া স্মিত হেঁসে পায়ের ক্ষত স্থানে মেডিসিন লাগাতে ব্যথায় মুখ থেকে অস্ফুট স্বরে উউউ করে উঠলো।
হঠাৎ রাশফিয়ার আর্তনাদে আরফি গাড়ির ব্রেক কোষে তাকালো রাশিয়ার ব্যথার্ত মুখশ্রীর দিকে। চিকনা পাতলা গড়নের ফর্সা মুখশ্রীতে স্পষ্ট ব্যথার ছাপ ফুটে উঠেছে। হঠাৎ করে মেয়েটার ব্যথার্ত মুখশ্রী দেখে আরফির বুকের ভিতর কেমন একটা অস্থিরতা কাজ করলো। কেনো এমন অস্থির লাগছে আরফি জানেনা শুধু জানে মেয়েটার ব্যথা কমিয়ে দিতে পারলে এই অস্থির চিত্তের বুক শান্ত হবে। আরফির ভাবনার মাঝে রাশফিয়া পায়ের ব্যথা একটু কমে আসতে হাতের কুনুই ছিলে যাওয়া স্থানে মেডিসিন লাগাতে যাবে তখন দেখলো নিজেরটা নিজে লাগাতে সক্ষম হচ্ছে না৷ কয়েকবার চেষ্টা করেও সক্ষম না হয়ে ভাবলো হোটেলে গিয়ে রুমমেটের সাহায্য নিবে এই ভেবে মেডিসিন রেখে দিতে যাবে তখন আরফি বলে উঠলো আমি লাগিয়ে দিবো?
ন..না লাগবে না পরে লাগিয়ে নিবো।
ততক্ষণে ব্যথা বাড়বে দেও আমি লাগিয়ে দিচ্ছি টেনশন নেই টাচ করবো না কথাটা বলে আরফি নিজেই তুলোর ভিতরে মেডিসিন লাগিয়ে রাশফিয়া হাত এগোতে ইশারা করতে রাশফিয়া আর বাঁধা না দিয়ে হাত এগিয়ে দিতে আরফি আস্তে করে তুলোটা কনুইতে লাগাতে তখনের মতো এবারও রাশফিয়া চোখ খিঁচে বন্ধ করে মুখ থেকে অস্ফুট স্বরে উউউ শব্দ করে উঠলো।
রাশফিয়ার আর্তনাদে আরফি চোখ তুলে একবার রাশফিয়ার ব্যথার্ত মুখটা অবলোকন করে হাতের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে করে ফু দিতে লাগলো।
হঠাৎ হাতে ফু অনুভব করতে রাশফিয়া পিটপিট করে চোখ খুলে আরফির দিকে তাকাতে থমকালো যে অতি সপ্তপর্ণ হাতে মেডিসিন লাগিয়ে দেওয়ার সাথে আলতো করে ফু দিচ্ছে। রাশফিয়া ব্যথা ভুলে নিষ্পলক সেই মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে কেমন একটা ঘোরের মাঝে আটক গেলো। ঘোর কাটলো আরফির কথায়।
হয়ে গিয়েছে, ব্যথা করছে এখনো?
রাশফিয়া দ্রুত নিজেকে সামলে দুদিকে মাথা নাড়িয়ে না বলতে আরফি গাড়ি স্টার্ট করতে করতে বলল, বাসা কোথায়?
সিলেটে….
রাশফির উত্তরে আরফি চোখ বড় বড় করে রাশিয়ার দিকে তাকালো। বুঝে উঠতে পারলো না মেয়েটা কি বলছে। এখন কি ও এই মেয়েকে নিয়ে সিলেট যাবে?
আরফিকে এমন চোখ বড় বড় করে নিজের দিকে তাকিয়ে থাতে দেখে রাশফিয়া বুঝলো যে ও উল্টা পল্টা বলে ফেলেছে তাই তড়িঘড়ি করে হোস্টের ঠিকানা দিয়ে বলল, আমার জন্মস্থান সিলেটে। ডাবিতে চান্স পাওয়ায় ফ্যামিলি রেখে পারি জমিয়েছি এখানে তাই সবসময় সেলেটের কথাই মুখে এসে পড়ে।
রাশফিয়ার এবারের কথায় আরফি বলে উঠলো এখন পর্যন্ত ঠিক মতো হাঁটতে জানো না আর ফ্যামিলি ছেড়ে ডাবিতে এসেছো পড়ালেখা করতে।
রাশফিয়া চোখমুখ কুঁচকে বলে উঠলো, আপনি কিন্তু এবার বেশি বলছেন তখন ইট খেয়াল করিনি তাই পড়ে গিয়েছি।
হ্যা চোখ কপালে রেখে হাঁটলে তো পড়বেই।
আরফির এমন কথায় রাশফিয়ায় চোখমুখ আরো কুঁচকে ফেললো কিন্তু আর প্রত্যুত্তর করলো না। তর্কে তর্ক বাড়ে তাই এখানেই চুপ হয়ে গেলো।
#চলবে?
#হৃদয়স্পর্শী_মায়াবিনী
#নুসাইবা_ইসলাম_হুর (মিমি)
#পর্বঃ২৪
মেঘাছন্ন আকাশ কিছুক্ষণ পর পর গিরিম গিরিম করে শব্দ তুলছে। যেনো মেঘ গুলো সবাইকে বৃষ্টি আসার আগমনী বার্তা দিচ্ছে। তীব্র গরমে মাঠ ঘাট শুকিয়ে খা খা হয়ে আছে। তীব্র গরমে পুড়তে পুড়তে যেনো প্রতিটি মানবের হৃদয় ও পুড়ে গিয়েছে তাইতো বৃষ্টি আসার আগমনী বার্তা পেয়ে সবার মন সতেজ হয়ে উঠছে। মুহূর্তে মাঝে উষ্ণ পরিবেশটা ধীরে ধীরে শীতলা ধারণ করছে। মেঘাছন্ন আকাশ, চারে দিকে মৃদু হাওয়া বইছে। যেই হাওয়ার তোপে গালে হাত দিয়ে বসে থাকা ফারিসতার পিঠ জুড়ে আছড়ে পড়ে থাকা চুল গুলো মৃদু উড়ছে। ভার্সিটিতে এসে রাশফিয়াকে না পেয়ে ফারিসতা ফোন করতে লাগলো রাশফিয়াকে। কিন্তু রাশফিয়া ফোন রিসিভ না করায় গাছের নিচে গালে হাত দিয়ে বসে রইলো ফারিসতা। আজ আদরিবার ও আসবে না এদিকে রাশফিয়াও ফোন ধরছে না। ওদের দু’জনকে ছাড়া ভার্সিটিতে আসলে নিজেকে এতিম এতিম লাগে। ফারিসতা ভাবলো আজ আর ক্লাস করবে না তাই বসা থেকে উঠে দাঁড়াতে ফোন বেজে উঠলো। ফারিসতা ফোনের দিকে তাকিয়ে রাশফিয়া ফোন করেছে দেখতে ফারিসতা ফোন রিসিভ করতে রাশিয়ার কথা শুনে বিচলিত হয়ে বলল আমি এখনি আসছি কথাটা বলে ফারিসতা শশব্যস্ত হয়ে ভার্সিটি থেকে বের হতে হতে ফারজানা বেগমকে ফোন করে জানালো ও রাশফিয়ার কাছে যাচ্ছে বিকেলে বাসায় ফিরবে।
ফারিসতা চপল পায়ে রাশফিয়াদের হোস্টেলে পৌঁছে কলিংবেল চাপতে রাশফিয়া ক্লান্ত শরীরে এসে দরজা খুলতে ফারিসতা হুমড়ি খেয়ে বাসায় ঢুকে রাশফিয়াকে পর্যবেক্ষণ করে বলে উঠলো,
এভাবে পড়লি কি করে?
রাশফিয়া দরজা লাগাতে লাগাতে বলল, এখন কি তোকে আবার পড়ে দেখাবো কিভাবে পড়েছি?
রাশফিয়ার এহেন জবাবে ফারিসতা দাঁত কিড়িমিড়ি দিয়ে বলে উঠলো এক থাপ্পড় খাবি উল্টা পাল্টা বকলে। চোখ কোথায় রেখে হাঁটিস? এখনো হাঁটতে পাড়স না আবার ঢ্যাং ঢ্যাং করে ফ্যামিলি ছেড়ে একা পড়তে এসেছিস এখানে। এসেছিস এসেছিস ভালো কথা, এতো করে বললাম আমাদের সাথে আমাদের বাসায় ওঠ। না ওনার হোস্টেলে ওঠার শখ। আম্মু আর আমি ছাড়া কে আছি বাসায় যে তোর এতো সমস্যা আমাদের সাথে থাকতে?
ফারিসতার এমন হুমকি ধামকিতে রাশফিয়া চোখ ছোট ছোট করে বলল, তুই কি আমার সেবা করতে এসেছিস নাকি আমার সাথে ঝগড়া মারামারি করতে এসেছিস?
রাশফিয়া এবারের কথায় ফারিসতা কিছুটা নরম হয়ে এসে বলল, ব্যথা করছে বেশি? ডক্টরের কাছে যাবি?
দুলাভাই ডাক্তার থাকতে আবার ডাক্তারের কাছে যাওয়া লাগে নাকি? শুধু তাজ চৌধুরী না মানে তাজ দুলাভাইকে একবার ফোন কর দেখবি তোর কলে উড়ে এসে পড়েছে।
এবার কিন্তু মার খাবি রাশুর বাচ্চা আজে বাজে কথা বললে।
আজে বাজে না দোস্ত পাক্কা সত্যি কথা।
রাশুর বাচ্চা আর একটা আজগুবি কথা বললে তোর খবর আছে দাঁত কটমট করে বলে উঠলো ফারিসতা৷
ফারিসতার মুখের এক্সপ্রেশন দেখে রাশফিয়া ফিক করে হেঁসে দিয়ে বলল, মজা করছিলাম রুমে চল এ বলে ফারিসতাকে নিয়ে রুমে যেয়ে রাশফিয়া কিছু একটা বলার জন্য হাসফাস করতে লাগলো। রাশফিয়ার হাসফাস খেয়াল করে ফারিসতা প্রশ্ন করলো,
কিছু বলবি?
ফারিসতার প্রশ্নে রাশফিয়া এবার ফারিসতার সামনে যেয়ে বেশ উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো, আচ্ছা ফারু আরফি তালুকদারকে তোর কেমন লাগে?
রাশফিয়ার এমন প্রশ্ন ফারিসতার চোখ ছোট ছোট করে রাশফিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো, হঠাৎ আরফি ভাইয়ার কথা বলছিস কেনো?
প্রশ্ন না করে আগে আমার কথায় এন্সার দে।
ভালোই লাগে কেনো?
রাশফিয়া এবার লজ্জায় মাথা নুইয়ে আমতা আমতা করে বলে উঠলো,
দোস্ত আমি ফেঁসে গেছি।
মানে?
মানে আমার না আরফি তালুকদার সামনে আসলেই মনে ভিতর অন্যরকম কিছু একটা অনুভব করি। তাকে দেখলে হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়, হাঁত পা অস্বাভাবিক ভাবে কম্পিত হয়। মনের ভিতর ভালোলাগা অনুভব করি।
রাশফিয়ার কথায় ফারিসতা চোখ বড় বড় করে বলে উঠলো তুই কি বলতে চাচ্ছিস ক্লিয়ার করে বলতো।
রাশফিয়া এবার লজ্জামাখা মুখে বলে উঠলো, দোস্ত আমার মনে হয় আমি তার প্রেমে পড়েছি।
ফারিসতা চোখ কপালে উঠিয়ে বলে উঠলো, প্রেমে পড়ার জন্য কি দুনিয়াতে আর ছেলে পাস নাই?
ইচ্ছে করে পড়েছি নাকি? তার সাথে আদরিবার বার্থডেটে ধাক্কা খাওয়ার সাথে ধপাস করে তার প্রেমে পড়ে গেছি। এতদিন বিষয়টা না বুঝলেও আজ সকালে তার সাথে দেখা হওয়ায় বিষয়টা গভীর ভাবে অনুভব করেছি। কথাগুলো বলে রাশফিয়া সকালের ঘটনা ফারিসতাকে খুলে বলল। সব শুনে ফারিসতা হতাশ হয়ে বলে উঠলো,
তাদের পেশা কতটা রিস্কি তা জেনেও তুই কিভাবে কি বুঝলাম না।
হুট করে হয়ে গিয়েছি আমি কি করবো ঠোঁট উল্টে বলে উঠলো রাশফিয়া৷
হয়েছে এখন ঢঙ করা লাগবে না। আরফি ভাইয়াকে এতদিনে যতটুকু চিনলাম তাতে তাকে খুব একটা খারাপ মনে হয়নি। তবে আরফি ভাইর যদি তোর প্রতি কোনো অনুভূতি না জন্মায় তাহলে কি করবি?
রাশফিয়ার লজ্জামাখা মুখে নেমে এলো এবার কালো ছায়া। আসলেই তো এই জিনিসটা ভাবা হয়নি। হতে ওতো পারে ওর প্রতি আরফির ইন্টারেস্ট নাও থাকতে পারে কথাটা ভাবতে বুকের ভিতর চিনচিন করে উঠলো।
রাশফিয়ার আঁধার মুখশ্রীর দিকে তাকিয়ে ফারিসতা বলে উঠলো, প্যাড়া নিসনা চিল। আদরিবার কাছে শুনেছিলাম আরফি ভাইয়ের কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই তাই তোর এখনো সুযোগ আছে আর বাকিটা ভাগ্যের উপরে।
ফারিসতার কথায় রাশফিয়ার আধার মুখে ফুটে উঠলো একটু খুশির ঝলক। ভাগ্য সহায় হলে আরফি ওর হবে ভাবতে রাশফিয়া খুশি মনে ফারিসতার সাথে গল্প জুড়ে দিলো।
*****
সামনাসামনি দুটি চেয়ারে একটা রেস্টুরেন্টে বসে আছে আদরিবার আর সাফোয়ান। উত্তেজনা আদরিবার হাত পা মৃদু কাঁপছে। বাহিরে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি বইছে যেনো বৃষ্টির মতো আদরিবার মনেও বইছে এক পশলা খুশির ঝলক। সাফোয়ান যদি সত্যি সত্যি আজ প্রপোজ করে তাহলে খুশিতেই ও পাগল এই হয়ে ভাবতে আদরিবার শরীরের কম্পন ধীরে ধীরে বাড়তে লাগলো।
আদরিবাকে এমন কাঁপতে দেখে সাফোয়ান বলে উঠলো কোনো সমস্যা? কাঁপছিস কেনো?
আদরিবা চমকে তুতলিয়ে বলে উঠলো, ক..কই নাতো। তুমি কি বলবে বলো।
বলছি আগে বল কি খাবি।
পরে খাবো আগে তুমি বলো না কি বলবে।
আচ্ছা শোন তবে তোর কাছ কিছু ইনফরমেশন জানার ছিলো, ফারিসতার কি বয়ফ্রেন্ড আছে?
সাফোয়ানের মুখে কাঙ্ক্ষিত কথাটা না শুনে ফারিসতার কথা শুনে হুট করে আদরিবার বুকের ভিতর ধক করে উঠলো। পরক্ষণেই ভাবলো তাজ ভাই তো ফারিসতাকে পছন্দ করে তাহলে হয়তো ভাইয়ের জন্য ঘটকালি করতে এসেছে কথাটা ভেবে আদরিবা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলল, না বয়ফ্রেন্ড নেই কেনো বলোতো?
আদরিবার এবারের প্রশ্নে সাফোয়ান আমতা আমতা করতে লাগলো তা দেখে আদরিবা ভ্রু গুটিয়ে বলল, কিছু বলবে?
সাফোয়ান হ্যা সূচক মাথা নাড়িয়ে বড় করে নিঃশ্বাস টানলো। এরপর আদরিবার দিকে চেয়ে বলতে লাগলো,
তোর বার্থডে পার্টিতে সেদিন প্রথম দেখি ফারিসতাকে। নীল শাড়ি পরিহিত মেয়েটাকে আকাশ থেকে নেমে আসা পরীর চেয়ে কোনো অংশ কম লাগছিলো না। হুট করে মেয়েটাকে দেখে থমকে যায় হার্টবিট। প্রথমে ভেবেছিলো হয়তো মেয়েটা অত্যাধিক সুন্দরীর অধিকারী তাই ভালো লেগেছে কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝতে পারি মেয়েটার প্রতি শুধু ভালোলাগা না ভালোবাসাও জন্মে গিয়েছে। সবাই তো জানিস এই আমি মেয়েদের সাথে খুব একটা মিশিনি তাই বুঝতে পারছি না বিষয়টা ফারিসতাকে কি করে জানাবো তাই এই ব্যাপার নিয়ে তোর থেকে পরামর্শ নিতে এসেছি।
সাফোয়ান এতো কথা বলে গেলো আদরিবার কান অব্দি কোনো কথা পৌছালো না শুধু কানের কাছে মেঘের গর্জনে মতো বার বার বেজে উঠছে ভালোবাসা জন্মে গিয়েছে। এতক্ষণ একরাশ উত্তেজনায় কাঁপতে থাকা শরীর এবার যেনো তীরের আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হয়ে গিয়ে ঝংকার দিয়ে কেঁপে উঠছে পুরো শরীর। চক্কর কেটে উঠলো মাথা। আঁটকে এলো দম। মনে হচ্ছে কেউ টেনে ছিঁড়ে নিয়ে যাচ্ছে হৃদয়টা। চোখের সামনে সব কিছু হয়ে আসলো ঝাপসা। আদরিবা বার কয়েক কাঁপা কাঁপা পলক ঝাপটে নিজেকে স্বাভাবিক করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে গেলো।
এই আদরিবা এমন করছিস কেনো শরীর খারাপ লাগছে?
সাফোয়ানের কথা কর্ণগোচর হতে আদরিবা টলমল আখি তুলে একবার সাফোয়ানকে অবলোকন করে বসা থেকে উঠে কোনো রকম বলে উঠলো, আমার শরীর খুব খারাপ লাগছে পরে কথা বলবো তোমার সাথে এ বলে আদরিবা এক ছুটে রেস্টুরেন্টে থেকে বের হয়ে যেই বৃষ্টি ভিতরে রাস্তায় নেমে যাবে তার আগে সাফোয়ান আদরিবার হাত ধরে ধমকে বলে উঠলো,
মাথা কি নষ্ট হয়ে গেছে? শরীর খারাপ লাগছে আবার বৃষ্টি নামছিস কি সমস্যা? গাড়িতে ওঠ।
আদরিবা সাফোয়ানের ধরে রাখা হাতে দিকে তাকালো। যেনো মনে হলে কেউ ছুরির আঘাতে ক্ষত বিক্ষত করে দিচ্ছে ওকে। আদরিবা সাফোয়ানের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়ানোর চেষ্টা করে কাঁপা কাঁপা স্বরে বলে উঠলো,
আ..আমি একা যেতে প…পারবো।
হ্যা একা কত যেতে পারবেন তাতো দেখতে পারছি এ বলে সাফোয়ান আদরিবার টেনে গাড়িতে উঠিয়ে নিজেও উঠে বসে গাড়ি স্টার্ট করলো। হঠাৎ করে মেয়েটার কি হলো, এমন বিহেব এই বা কেনো করছে বুঝে উঠতে পারলো না সাফোয়ান।
আদরিবা জানালার বাহিরে তাকিয়ে অধর কামড়ে ধরে বার বার নিজের কান্না আটকাতে চাইলো কিন্তু অবাধ্য চোখজোড়া আজ বাধ মানতে চাইলো না। কান্নাগুলো দলাপাকিয়ে উপচে পড়তে চাচ্ছে বার বার। আদরিবা অনেক কষ্টে সাফোয়ানের সামনে নিজেকে সামলে রাখলেও বাসার সামনে এসে গাড়ি থামতে কোনো কথা না বলে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে বাসায় ঢুকে গেলো। লিফটে উঠে বাসায় না যেয়ে চলে গেলো ছাঁদে। ছাঁদে পৌঁছাতেই ডুকরে কেঁদে উঠলো আদরিবা। বৃষ্টির সাথে বিলিয়ে দিলো দু চোখের অশ্রু। ভেঙে চুর্ণ বিচূর্ণ হয়ে গেলো কোমল হৃদয়খানি।
এদিকে আদরিবাকে এমন ছুটে যেতে দেখে সাফান ও গাড়ি থেকে নেমে আদরিবার পিছু যেতে নিবে তার আগে লিফটের দরজা বন্ধ হয়ে গেলো। সাফোয়ান দেখলো লিফট সিক্স ফ্লোরে না বরং নাইন ফ্লোরে মানে ছাঁদে যাচ্ছে বিষয়টা দেখে সাফান বুঝলো না যে আদরিবার শরীর খারাপ করছে তালে বাসায় না যেয়ে ছাঁদে কেনো যাচ্ছে। সাফোয়ান অস্থির হয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো লিফট নিচে নামার। লিফট নিচে নামতে সাফোয়ান তড়িঘড়ি করে লিফটে উঠে চলে গোলো ছাঁদে। ছাঁদে পা দিতে স্তব্ধ হয়ে গেলো সাফোয়ান। পা জোড়া থমকে গেলো। সাফোয়ান আদরিবার কান্নারত মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো। কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ধীর পায়ে আদরিবার কাছে এগিয়ে গেলো।
হঠাৎ সাফোয়ানকে ছাঁদে দেখে আদরিবা নিজেকে আর সামলাতে না পেরে আচমকা সাফোয়ানকে ঝাপটে ধরে কান্নায় ভেঙে পরে বলতে লাগলো,
কেনো আমাকে ভালোবাসলে না সাফোয়ান ভাই? আমি কালো বলে? কালো মানুষদের ভালোবাসা পূর্নতা না পেলে কেনো তোমার প্রতি আমার অনুভূতি কেনো জন্মালো? কেনো আমি পারলাম না নিজেকে গুটিয়ে নিতে? একটা বছর ধরে সবার আড়ালে তোমায় ভালোবেসে একা পুড়েছি। আজ যে আমি নিঃস্ব হয়ে গেলাম। আমার খুব কষ্ট হচ্ছে সাফোয়ান ভাই। আমার নিঃশ্বাস আঁটকে আসছে।
আদরিবার আহাজারিতে স্তব্ধ হয়ে গেলো সাফোয়ান। আদরিবা ওকে ভালোবাসে তাও এক বছর আগে থেকে ভাবতে সাফোয়ানের মস্তিষ্ক ফাঁকা হয়ে গেলো। এক বছর ধরে মেয়েটা ওকে হৃদয় নিংড়ে ভালোবেসে গিয়েছে আর ও টের ও পায়নি? সাফোয়ানের ভাবনার মাঝে খেয়াল করলো আদরিবা ওর শরীরেী পুরো ভার ছেড়ে দিয়েছে। সাফোয়ান দ্রুত আদরিবাকে আগলে নিয়ে গালে মৃদু চাপর দিয়ে আদরিবাকে ডাকতে লাগলো কিন্তু আদরিবার কোনো রেসপন্স না পেয়ে সাফোয়ানের বুকে ভিতর মোচড় মেরে উঠলো। সাফোয়ান সেখানে আর এক মুহূর্ত না থেকে আদরিবাকে কোলে তুলে নিলো।
#চলবে?
ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং…