#তোমাকে_চাই ।১৫।
#সাইরা_শেখ
ঘরে এসে নাওফিলকে পেল না প্রিয়তা। মিনিট দশেক পর এলো নাওফিল। হাতে একটা প্যাকেট। ঘরে ঢুকে সে প্রথমে দরজা লাগাল, প্যাকেটটা ওয়ারড্রবের ওপর রাখলো, ওয়াশরুমে গেল, ফ্রেশ হয়ে ফিরে এসে শার্ট পাল্টে নিল। এতটা সময় পুরো ঘর নিস্তব্ধতায় ছেয়ে ছিল। প্রিয়তা নতজানু হয়ে বসে আছে। দুটো চোখ বেড়িয়ে আছে শুধু। নাওফিল বিছানায় বসে ফোনে চোখ রেখে বলল,
– খেয়েছ?
প্রিয়তার গলা ধরে আসে। কথা বের হয়না। নাওফিল এবার এগিয়ে এসে, প্রিয়তাকে সোজা করে বসাল,
– ভয় করছে?
নিঃশব্দে চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো প্রিয়তার।
– তোমাদের মেয়েদের একটা মোক্ষম অ’স্ত্র হলো এটা।
নাওফিল আলতো হাতে প্রিয়তার চোখের নিচে জমা পানি মুছে বলল,
– অশ্রু দিয়ে যুদ্ধ জয় করার ক্ষমতা রাখো।আমার মত মানুষ তো সামান্য ব্যাপার। দেখি এদিকে আসো।
প্রিয়তা আসল না। সকলের সামনে তখন ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছিল, কতকথা শুনিয়েছিল। নিজহাতে ওকে খু’ন করতে চেয়েছে, বাপের বাড়ি পাঠাতে চেয়েছে, তালাক দিতে চেয়েছে। এতকিছুর পর এই মিষ্টি কথায় গলে গিয়ে নাওফিলের বুকে লুটিয়ে পড়তে রাজি নয় সে। তারও আত্মসম্মান আছে, অহম আছে। তার সেই অনুভূতিতে নাওফিল আজ বিচ্ছেদের সুর তুলল।তাকে সস্তা মনে করে যে নাওফিল ভুল করছে সেটা নাওফিলকে বুঝতে হবে,
– আমাকে ও-বাড়িতে পাঠিয়ে দিন।
নাওফিল স্তব্ধ হয়ে গেল। প্রিয়তার বাহু ছেড়ে বলল,
– কি বললে?
– থাকবো না এখানে।যদি পাঠাতে না চান তাহলে মে’রে ফেলুন। কথা দিচ্ছি আমার বাড়ি থেকে কেউ আপনার দিকে আঙ্গুলও তুলবে না। এতে যদি আপনার চিন্তা কমে তবে সেটাই করুন।
নাওফিল রেগে গেল। প্রিয়তার গাল চেপে ধরে বলল,
– কথা বলার আগে দুবার ভাবো না। নেক্সট টাইম যেন এমন না শুনি, প্রিয়।
প্রিয়তা মুখ ফিরিয়ে বলল, ‘আপনি ভাবেন?’
– না ভাবলে আজ, এখানে, আমার ঘরে, আমার সাথে বসে থাকতে পারতে না।
– ব্যাথা পাচ্ছি নাওফিল। ছাড়ুন নয়তো আমিও..
– কি করবে, করো। নাও ছেড়ে দিলাম।
প্রিয়তা নাওফিলের হাতে কামড় বসালো। নাওফিল বাম হাত এগিয়ে দেয়, প্রিয়তা সেই হাতেও কামড় দিল। একবার, দুবার, তিনবার। শেষে রাগ না কমায় ঘাড়েও দাঁত বসিয়ে দিল। এরপর শান্ত হয়ে বসে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে। নাওফিল দাগগুলোর দিকে এক নজর তাঁকিয়ে বলল,
– আর কামড়াবে? নাকি লাইট অফ করে আসবো।
প্রিয়তা শুয়ে পড়ে উত্তর না দিয়ে। নাওফিল লাইট অফ করে প্রিয়তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল,
– সরি প্রিয়। আ’ম এক্সট্রিমলি সরি। আমি কথাগুলো ওভাবে না বললে কি করে জানতে এবাড়ির মানুষগুলো তোমাকে কতটা ভালোবেসে ফেলেছে। আজ ওরা এই নাওফিলকে ছেড়ে প্রিয়তাকে সঙ্গ দিয়েছে, নিজের বাড়ির ছেলেকে ফেলে শত্রুর বাড়ির মেয়ের পক্ষ নিয়ে কথা বলেছে। তুমি কি এমনটা চাওনি? সবাই সব ভুলে নতুন করে শুরু করেছে। এখন যদি সেই রহস্যের সমাধান করি সেটা বেটার হবে না? একটা ধাক্কা তাও অনিচ্ছাকৃত ভাবে দিয়ে ফেলেছি, ভুলটা ক্ষমা করা যায় না? কথা বলো প্রিয়। রাগ না কমলে আরও শাস্তি দাও। তবুও কিছু বলো। আমি ইচ্ছে করে তোমাকে আঘা’ত করতে চাইনি। প্রিয়..
প্রিয়তা পেটের ওপর থেকে নাওফিলের হাত সরিয়ে দিল। নাওফিল চাপা স্বরে বলল,
– বুঝেছি, তুমি আসলেই ভালো কথার মেয়ে না। ভালো নাওফিলকে তোমার সহ্যই হয়না। এবার যতগুলো দাঁতের ছাপ বসিয়েছ আমার শরীরে ততগুলো ফেরত পাবে।
বলেই প্রিয়তার ঘাড়ে কামড় বসালো নাওফিল। প্রিয়তা হতভম্ব হয়ে গেল। নাওফিলের হাত ধরতে গেলে, নাওফিল ওর দুটো হাত একসাথে, এক হাতের মুঠোয় চেপে মাথার উপরে ধরে বলল,
– এবার কি করবে?
– চেঁচাবো। আম…
প্রিয়তা চেঁচাতে পারলো না। তার পূর্বেই নাওফিল সেই অ’স্ত্রকে অচল করে ফেলার ব্যবস্থা করে ফেলল। চোখ বড় বড় করে তাঁকিয়ে প্রিয়তা কেবল নিজের অসহায়ত্ব দেখল। এই মানুষটার সাথে সে কখনও পেরে ওঠে না। না বলে, না বুদ্ধিতে।
.
.
মাহিন ইকবাল, তার ছেলে সৌমিক এবং ভাই নয়ন ইকবালকে বেঁধে রাখা হয়েছে। সম্মুখেই মীর্জা ও তালুকদার গোষ্ঠী বসে আছে।নাওফিল সবাইকে কিছু বলবে বলে এক করেছে আজ। প্রিয়তা ঘোমটা টেনে মাথা নত করে দাড়িয়ে আছে। সবাই মিটিমিটি হাসছে, ভীষণ লজ্জাজনক পরিস্থিতি। তার মধ্যেই এমন চোরের মত বেঁধে রাখা তিন-জনকে দেখে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। নাওফিলের নিজেরও অস্বস্তি হচ্ছে। শার্টের হাতার জন্য হাত ঢাকলেও কাঁধের ব্যবস্থা করা গেল না। যা একটু কলার মেলে রেখেছিল তুষার এসে সেটা জনসম্মুখে বের করে দিল। রাগে রিরি করছে শরীর। আজকের ঝামেলাটা মিটুক তুষারকে সে পরে দেখে নেবে। নাওফিল একে একে তাহের, কাঁদের, রহিম, মৌসুমিসহ কয়েকজনকে উপস্থিত করলো। এরপর সকল তথ্যপ্রমাণ দিল যে কারা দুপরিবারে সন্দেহ, হিং’সা, প্রতিশো’ধ স্পৃহা জাগ্রত করেছে। কিন্তু কেন, কার কথায় করেছে সেটা জানা বাকি। নাওফিল বলতে শুরু করল,
– আমার দাদা মূসা মীর্জা এবং ইউনুস তালুকদারের ঘনিষ্ঠ বন্ধু খালেদ মোরশেদ। প্রথমদিকে সে কেবলমাত্র তালুকদারদের ঘনিষ্ঠতা পেয়েছিল, পরে আমার দাদু তাদের মধ্যে চলে আসেন। ঘটনার সূত্রপাত এখান থেকেই। আমি একটা একটা করে ঘটনা বলে সময় নষ্ট করবো না। সংক্ষেপে পুরো ঘটনা জানাবো। তালুকদার ও মীর্জার বন্ধুত্ব খালেদ দাদুর পছন্দ ছিল না। প্রথমে তার নজর লাগে পরে হিং’সায় জ্বলে ওঠেন। তার কোনো একটা খারাপ সময়ে তিনি তালুকদারদের কাছে পাননি। পরে তাকে অসহায় হয়ে মৃ’ত্যুকে বেঁছে নিতে হয়। তার ধারণা মীর্জারা না থাকলে তার এই দশা হত না, তালুকদার তার বন্ধুত্ব সঠিকভাবে নেভাত। তাই পুরো দোষটা গিয়ে পড়ে মীর্জাদের ওপর। এবং তিনি তার মৃ’ত্যুর সময় ছেলেদের জানিয়ে যান তাকে যেমন অসহায়ভাবে চলে যেতে হচ্ছে, ঠিক তেমন করেই যেন বাকি দুজনকে যেতে হয়। এই বন্ধুত্ব যেন টিকতে না পারে। তার সেই রত্ন এই মাহিন ইকবাল ও তার ভাই নয়ন ইকবাল, খালেদ দাদুর ইচ্ছে এবং আদেশ, জান-প্রাণ দিয়ে পূরণ করেছে। আমার ফুপিকে প্রেমের ফাঁদে যে ফেলেছিল সে এই নয়ন ইকবাল। বিয়ের রাতে পালিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়ে যিনি ওয়াদা ভঙ্গ করেন তিনি এই ব্যক্তি, আমার ফুপিকে ফাঁস দিয়ে হ’ত্যা করে যিনি ঝুলিয়েছিলেন তিনি এই মহান ব্যক্তি, যাকে বিশ্বাস করে তালুকদাররা নিজেদের পাশে রেখেছিল এতগুলো বছর সে তাদের সাথে থেকে সুন্দর করে দাবার ছক সাজিয়েছে, অথচ কেউ জানতে পারলো না। এতগুলো বছর একনাগাড়ে বন্ধুত্বে শত্রুতা সৃষ্টি করেছে, একে অপরকে জান নেওয়ার খেলায় উসকে গেছে মাহিন ইকবাল, এই তাহের চাচাদের টাকা দিয়ে কিনেছে এরা, দেশে না থেকে নিজেদের সেফ করে ভালো মানুষির নাটক বছরের পর বছর এতসুন্দর করে চালিয়ে যাওয়া সহজ নয়। তাদের পরিশ্রম বেশ প্রশংসার যোগ্য কিন্তু সামান্য একটা বদদুআ ও হিংসা আজ এতবছর ধরে এতগুলো মানুষকে যেভাবে পোড়ালো তারপর এরাই ঠিক করবে আপনাদের কি করা উচিত। আমি শুধু এতটুকু বলবো, আপনার বাবা একজন স্বার্থপর মানুষ ছিলেন ইকবাল আঙ্কেল, যে নিজের স্বার্থের জন্য বন্ধুত্ব শব্দটিকে কলুষিত করেছে। সে মীর্জাদের জন্য বন্ধু হারায়নি, হারিয়েছে নিজের স্বভাব ও দোষের জন্য। আর আপনাদের নিচু মনমানসিকতা আজ এখানে এই নিকৃষ্ট পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আপনাদের বোঝানো আমার কেন? কারোর পক্ষে সম্ভব না। বোঝার হলে অনেক আগেই বুঝতেন, এতবছর ধরা খাওয়ার অপেক্ষা করতেন না। মাঝের অনেক কথা অনেক গল্প অনেক কাহিনি বাদ দিয়েছি, যেটুকু প্রয়োজন শুধু সেটা বললাম। এতবছরের সকল প্রমাণও আপনাদের হাতে তুলে দিলাম। এবার আপনারা দেখুন, ওনাদের কি বিচার করবেন।
কথাগুলো বিতৃষ্ণা নিয়ে বলে সকলের সামনে থেকে সরে এলো নাওফিল। মূলত, এত তুচ্ছ একটা কারণে বৃহৎ এই যুদ্ধ হয়েছে ভাবলেই র’ক্ত টগবগ করে ফুটছে। সহ্য করতে পারছে না, ফুপির কথা মনে আসলে এই মানুষগুলোকে জীবিত দাফন করে ফেলতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু প্রমাণের খাতিরে বাঁচিয়ে রেখেছে। গ্রামের মানুষ উত্তেজনায় ফেটে পড়েছে।কেউ কেউ ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করেছে, তুহিন তাদের কঠরতা দিয়ে আটকাচ্ছে। মাঝে মাঝে সুযোগও দিচ্ছে সকলের আড়ালে। ইকবাল সাহেবের পক্ষ থেকে অনেকেই আসে। কিন্তু তথ্যপ্রমাণের সাপেক্ষে কিছু বলতে পারছে না। সাফাওয়াত বললেন,
– আমাকে ক্ষমা করবেন চাচাজান। আপনি ঠিক করুন ওদের কি করা হবে।
ইউনুস সাহেবের বুকের ওপর এতগুলো বছর যে শক্ত অপরাধবোধের পাথর ছিল তা নেমে গেল। নিজের ছেলেকে এতগুলো বছর বিনাদোষে দূরে রেখেছেন, কত অভিশাপ দিয়েছেন ভাবলেই চোখ ভিজে আসছে। সবাই অপেক্ষা করছে তার বিচার শোনার জন্য। তিনি কি বলবেন জানতে জনস্রোত থেকে চিৎকার ভেসে আসে। অবশেষে তালুকদার সাহেব নিজের নাতনিকে ডাকলেন।
নাওফিল তার উদ্যোগ দেখে বেশ বিরক্ত। প্রিয়তাকে ডাকা মানে নাওফিলের এত কষ্ট নদীতে ফেলে দেওয়ার সমান। ইউনুস সাহেব বললেন,
– এদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা তালুকদার বাড়ির মেয়ে ওরফে মীর্জা বাড়ির বউ নেবে।
নাওফিল প্রিয়তাকে ইশারা করে নিজের মতামত জানায়। প্রিয়তা সেটা নাকচ করে দিল। নাওফিল রেগে এগিয়ে আসতেই সাফাওয়াত বাঁধা দিয়ে বলেন,
– চাচাজান যা বলেছেন যথার্থ বলেছেন। প্রিয়তাকে নিতে দাও সিদ্ধান্ত।
প্রিয়তা লম্বা শ্বাস নিয়ে বলল,
– আপনাদের শা’স্তি দিলে যদি যাদের হারিয়েছি তাদের ফিরে পাওয়া যেত তবে শা’স্তিই দিতে চাইতাম আঙ্কেল। কিন্তু সেটা করে বিশেষ কোনো লাভ হবে না। এজন্য, আমি চাইনা আপনাদের শা’স্তি হোক, আপনাদের শা’স্তি দিলে আপনাদের ভেতরে থাকা হিং’স্র মানসিকতা ও প্রতিশোধ পরায়ণতা আজীবন এমনই থেকে যাবে।কমার বদলে বরং প্রতিশোধস্পৃহা বেড়ে যাবে। জানি ছেড়ে দিলেও এই নিশ্চয়তা দিতে পারবো না যে আপনি বা আপনারা নিজেদের সংশোধন করবেন।আমি চাইবো আপনারা নিজেদের ভেতরকার কথা ভাবুন, এই গ্রামের দিকে তাঁকিয়ে দেখুন, সবাই সুখে আছে, শান্তিতে আছে, যেমনটা থাকতে চেয়েছিল।আপনারা চাইলে এরা ঠিক এভাবেই সুখে শান্তিতে থাকতে পারবে। শুধু একবার সবার কথা ভেবে সে চেষ্টা করে দেখুন। আজ আমি আপনাদের জন্য জেল, সংশোধনাগার, কিংবা মৃ’ত্যু নয় ক্ষমা বরাদ্দ করলাম। আপনাদের শা’স্তি এটাই যে আপনাদের কোনো শা’স্তি দেওয়া হবে না। আজ আপনার পরিবারের সুখের কথা চিন্তা করে, পুনরায় হ’ত্যার বা শা’স্তির পালাবদলের সূচনা না করে, সমাপ্তি টানলাম এই প্রতিশোধের। আজ সূচিত হবে শান্তি কিন্তু পুনর্বার আপনাদের এমন সুযোগ দেওয়া হবে না।এরপর যদি আপনারা এরকম কিছু করার চেষ্টা করেন, কারোর ক্ষ’তি করার চেষ্টা করেন তাহলে আমার স্বামী যা চাইবেন আমি তাতেই সম্মতি দেবো। আপনাদের জীবনের পরোয়া করবো না।
প্রিয়তা অসহায় গলায় সাফাওয়াতকে প্রশ্ন করল,
– বাবা আপনার কোনো আপত্তি আছে? জানি আমার রায় অনেকের অপছন্দ হবে। সবাই শা’স্তি চায় ওদের। আমি চাই, আর কোনো প্রাণ যাতে না ঝরে, আর কোনো র’ক্তপাতের সূচনা যাতে না ঘটে। এবার ওরা যদি নিজেদের সংশোধন করতে না পারে, তাহলে আর কিছু বলার নেই আমার। আপনাদের যেটা ভালো মনে হবে, সেটাই করবেন।
সাফাওয়াত গর্বে বুক ফুলিয়ে বললেন,
– তুমি যা বলেছ তা-ই হবে।আজকের পর থেকে এই বিষয়টা নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনো কথা উঠবে না। গ্রামে জানিয়ে দাও, আগামী সপ্তাহব্যাপী উৎসব হবে।
মৃদুল অসন্তোষ নিয়ে বলল,
– কোনো কারণ ছাড়া?এটার জন্য তো আজ থেকেই উৎসব করা যায়।
সাফাওয়াত সাহেব বললেন,
– কারণ ছাড়া নয়। আগামীসপ্তাহে নাওফিল ও প্রিয়তা মা’য়ের আনুষ্ঠানিক বিয়ের আয়োজন করা হবে।
প্রীতম বলল,
– তাহলে সকল নিয়ম মেনেই বিয়েটা হোক। আজকেই আমরা আমাদের মেয়েকে বাড়ি নিয়ে যাবো। বিয়ের পর বরের সাথে একবারে শ্বশুড়বাড়ি আসবে।
নাওফিল ফোস করে উঠল।প্রীতমের দিকে না তাঁকিয়েই বলল,
– শালা জিনিসটাই খারাপ।
এরপর প্রিয়তাকে চোখ রাঙাল। প্রিয়তা গতকালের ঘটনার মোক্ষম জবাব দিতে ভুলল না। তৎক্ষণাৎ রাজি হয়ে গেল। নাওফিল কিছু বলতে পারলো না। গ্রামের এতগুলো মানুষের সামনে সে বউপাগল প্রমাণিত হলে কদর কমে যাবে। কেউ ওকে ভয় পাবে না। প্রিয়তাকে সবাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে, এমন হতে দেওয়া যাবে না। দুর্বলতা প্রকাশ করলে শ’ত্রুর শক্তি বেড়ে যায়।
চলবে…