হয়তো তোমারি জন্য পর্ব-০৯

0
89

#হয়তো_তোমারি_জন্য ( নবম পর্ব )
#ঈপ্সিতা_মিত্র
সামনের বিছানায় শারদীয়া শুয়ে। শরীর অর্ধেক খোলা। আর তাকে জড়িয়ে ধরে আছে একটা ছেলে যাকে উজান কোনদিন দেখেনি আগে। আর পাশের টেবিলে রাখা বেশ কিছু গ্লাস আর মদের বোতল, যার গন্ধ ছড়িয়ে আছে পুরো ঘরটায়। তবে এই মুহূর্তে ছেলেটা উজানকে দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে উঠে পড়লেও শারদীয়া কিরকম মদের নেশায় নিস্তেজ হয়ে শুয়েছিল খাটে। কিন্তু উজান এই মুহূর্তে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি ঠিক। পা দুটোর সব শক্তি যেন শেষ হয়ে গেছে! তাই টাল সামলাতে না পেরে পড়েই যাচ্ছিল, তখনই দেয়ালটাকে আঁকড়ে ধরলো। তারপর বেশ কিছুক্ষণ মূর্তির মতন দাঁড়িয়ে রইলো এক জায়গায়। ছেলেটা এই ফাঁকে বেশ তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে গেল ওর পাশ কাটিয়ে। উজানের এই সময় এতটাই ধাক্কা লেগেছিল, যে ওই ছেলেটাকে দাঁড় করিয়ে কোন প্রশ্ন অব্দি করতে পারেনি নিজে থেকে। শুধু যেন সব কিছু আবছা দেখছিল চোখের সামনে। মনে হচ্ছিল শারদীয়াকে যা চিনেছিল, সবটা ভুল, সবটা মিথ্যে। আজ বুঝলো ওই সরল মুখের আড়ালে এতটা নোংরা মানুষ লুকিয়ে আছে। যাকে উজান এই প্রথম দেখলো।

সেদিন উজান বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছিল এরপর। কিরকম রাগ জ্বালা কষ্ট একসাথে মনের মধ্যে ঝড় তুলছিল আসলে। শারদীয়ার সাথে কাটানো প্রত্যেকটা সময় চোখের সামনে ভাসছিল আজ; আর ভাসছিল আজকের দৃশ্যটা। কিভাবে ওই ছেলেটা শারদীয়াকে জড়িয়ে ধরে শুয়েছিল ওরই বাড়িতে! ভেবেই সারা শরীর নিস্তেজ হয়ে আসছিল কেমন। উজান এই মুহূর্তে এই সমস্ত যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য প্রচুর মদ খেয়েছিল। তারপর পুরোপুরি বেসামাল হয়ে বাড়ি ফিরেছিল। শারদীয়া সেই মুহূর্তে ওর মুখোমুখি হতেই উজান আর ঠিক রাখতে পারেনি নিজেকে। শারদীয়ার ঘরে গিয়ে একটা স্যুটকেসে ওর সমস্ত জামা কাপড় পুরতে শুরু করেছিল। শারদীয়া এই সময় উজানকে অনেক কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছিল, অনেক কিছু বলার চেষ্টা করছিল বার বার ওর হাতটা ধরে। কিন্তু উজান এতটাই রেগে ছিল, যে কোন কথা ওর কানে ঢুকছিল না ঠিক! রাগে যন্ত্রণায় সব কিছু অন্ধকার দেখছিল কেমন। তার মধ্যেই শারদীয়ার হাতটা ধরে এবার ও হিড়হিড় করে টানতে টানতে মেয়েটাকে বাড়ির বাইরে নিয়ে এসেছিল। তারপর ঘোলাটে চোখে ওর দিকে তাকিয়ে ভীষণ কঠিন গলায় বলেছিল,
——–” জাস্ট গেট আউট অফ মাই হাউজ.. গেট লস্ট.. আর ইন ফিউচার কোনদিন আমাকে নিজের মুখ দেখাবে না। তুমি এতটা নোংরা! আমি ভাবতে পারছি না। একটা অন্য ছেলের সঙ্গে তুমি আমারই বাড়িতে! হাও কুড ইউ! আর কদিন বাদেই আমাদের বিয়ে ছিল! আমি ভাবতে পারছি না আর! এনিয়েজ কোনদিন আর সামনে আসবে না আমার! আই জাস্ট ডোন্ট ওয়ান্ট টু সি ইওর ফেস এনিমোর..”
শেষ কথাটা ভীষণ চিৎকার করে বলে উজান আর শারদীয়ার কোন কথা শোনার অপেক্ষা না করেই মুখের ওপর দরজাটা বন্ধ করে দিয়েছিল ভীষণ জোরে। আর শারদীয়ার পৃথিবীটা এক নিমেষে শেষ হয়ে গেছিল কেমন। একটা সুন্দর স্বপ্ন কাঁচের টুকরোর মতন ভেঙে এদিক ওদিক ছড়িয়ে পড়েছিল আজ, আর শারদীয়া একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছিল। পুরোপুরি নিঃস্ব।

সেদিন এরপর খুব জোর বৃষ্টি নেমেছিল শহরে। তার মধ্যে শারদীয়া একা ঠিকানাহীন হয়ে চলছিল কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই। এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না, আজ যেটা ওর সাথে হলো সেটা স্বপ্ন না কি সত্যি! এখনো কিছু মাথায় ঢুকছে না যেন। প্রত্যেকদিন বিকেলের মতন আজও স্কুল থেকে ফিরে ওর একটু ক্লান্ত লাগছিল। তাই এক কাপ কফি বানিয়ে খেয়েছিল। কিন্তু তারপরই মাথাটা ভীষণ ঘুরতে শুরু করেছিল হঠাৎ। শরীরটা নিস্তেজ হয়ে আসছিল কেমন। শারদীয়া এই সময় আর বসে থাকতে পারেনি ঠিক। শুয়ে পড়েছিল ঘোরের মধ্যে। আর তারপরই আরো শরীরটা খারাপ লাগছিল। চোখ দুটো যেন বুঁজে আসছিল নিজে থেকে। চারদিকটা আবছা হয়ে আসছিল কেমন। তখনই খেয়াল করেছিল ওর ঘরের দরজা খুলে হঠাৎ একটা ছেলে ঢুকলো। খুব আবছা চেহারাটা ধীরে ধীরে ওর কাছে আসতে স্পষ্ট হলো কিছুটা। না, এই ছেলেটাকে এর আগে শারদীয়া কখনো দেখেনি! কিন্তু এই ছেলেটা ওর ঘরে কি করছে! কিভাবে এলো এখানে! কথাগুলো ভেবেই গা টা শিউড়ে উঠছিল। ইচ্ছে করছিল জোড়ে চিৎকার করে সবাইকে ডাকতে! কিন্তু এই মুহূর্তে পুরো শরীরটা যেন অবশ হয়ে গেছিল ওর। নিজের হাতটা অব্দি তোলার ক্ষমতা ছিল না! কিন্তু তার মাঝেই খেয়াল করলো ছেলেটা নিজের শার্ট খুলছে। তারপর শারদীয়ার শাড়ির আঁচলটা টেনে খুলে দিল হঠাৎ। শারদীয়ার চোখ ফেটে জল চলে এল এই সময়। কিন্তু এর মাঝেই ছেলেটা ওর ব্লাউজের বোতাম গুলো একে একে খুলতে শুরু করলো। শারদীয়া সেই মুহূর্তে এতটাই অসহায় আর নিস্তেজ হয়ে পড়েছিল যে নিজেকে একটা জড়ো পদার্থ মনে হচ্ছিল যেন। এর মাঝেই ছেলেটা ওকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পড়েছিল ওর পাশে। তারপর আর ঠিক কিছু খেয়াল নেই। চারদিকটা পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে এসেছিল ওর।
এরপর ঠিক কখন জ্ঞান ফিরেছে শারদীয়ার, ও জানে না। তবে চোখ খুলতেই ও প্রথম উজানকে খুঁজেছিল বাড়িতে। কেমন ভয় যন্ত্রণা চেপে ধরছিল মেয়েটাকে, আর দিশাহারা লাগছিল আজ। মনে হচ্ছিল উজানের বুকে মাথা রেখে প্রচণ্ড চিৎকার করে কাঁদলে ও একটু হালকা হবে। উজান ছাড়া তো ওর আর কেউ নেই! উজান নিশ্চয়ই ওই ছেলেটাকে ছাড়বে না। এই ঘটনার শেষ অব্দি যাবে ও। এই ভেবেই উজানের ঘরে গিয়েছিল শারদীয়া। কিন্তু ছেলেটাকে পায়নি সেখানে। তারপর উদভ্রান্তের মতন বাড়ির এদিক ওদিক খুঁজেছিল ও উজানকে। কিন্তু না, উজান আজ কোথাও নেই। তাই খুব ক্লান্ত শরীরে ফিরে এসেছিল ঘরে। তারপর সোজা বাথ রুমে গিয়ে শাওয়ার খুলে দিয়েছিল। একটা অচেনা ছেলে ছুঁয়েছে ওকে। ভেবেই কেমন নোংরা লাগছিল শরীরটা। তাই শারদীয়া অবিরাম জলে ভিজিয়ে নিচ্ছিল নিজেকে এই এত রাতে। তারপর কোন রকমে নিজেকে সামলে বেরিয়ে এসেছিল বাথ রুম থেকে। এরপর প্রায় দু ঘন্টা অপেক্ষা করেছিল ও উজান আসার। আর অবশেষে রাত একটার পর গাড়ির আওয়াজ পেয়েছিল ঘর থেকে। শারদীয়া ছুটে গিয়েছিল এরপর উজানের কাছে। কিন্তু ও কিছু বলার আগেই সবটা কেমন শেষ হয়ে গেছিল আজ। উজানকে ও মেলাতে পারেনি ঠিক কোনভাবেই। ছেলেটার আজ অন্য রূপই দেখলো যেন! যে শারদীয়ার একটা কথা শুনলো না! কোন কিছু বলার সুযোগই দিল না! তার আগেই হাতটা ধরে টানতে টানতে রাস্তায় বার করে দিল এই মাঝরাতে।
এই বৃষ্টি ভেজা রাতটায় তাই পুরোপুরি ছন্নছাড়া লাগছিল নিজেকে। উজান শেষে ওকে ভুল বুঝলো! এতটা খারাপ ভাবলো যে একবার ওর কথা শোনার প্রয়োজন মনে করলো না! একটা সুযোগ দিল না শারদীয়াকে কিছু এক্সপ্লেন করার! কথাটা ভেবেই চোখ দুটো ভিজে এলো জলে। কেমন একটা বৃষ্টি ভেজা শহরের জলছবির মাঝে শারদীয়া পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো আজ, একদম একা।
তবে শারদীয়া চলে যাবার পর উজান আর সামলাতে পারেনি নিজেকে। জীবনে একটা মানুষকেই বিশ্বাস করেছিল, ভালোবেসেছিল, সে ই যে এইভাবে ঠকিয়ে চলে যাবে, ভাবেনি! তাই আবার হারিয়ে গেছিল সেই আগের জীবনে। পার্টিস, মদ, নেশার মধ্যে দিনগুলো কাটাচ্ছিল ও। যেন জোর করে প্রমাণ করতে চাইছিল নিজেকে যে শারদীয়া চলে যাওয়াতে ওর কিছু আসে যায় না! উজানের কাছে কোন দাম নেই আর ওই মেয়েটার। তবে এই সময় তিস্তা উজানের সাথে ছায়ার মতন থাকতে শুরু করেছিল। নাইট ক্লাবে, অফিসে, বাড়িতে তিস্তা যেন জোর করেই উজানের কাছে আসতো। তবে উজান এই দিনগুলোতে এতটাই ড্রিঙ্ক করতে শুরু করেছিল যে সকাল থেকে রাত অব্দি খুব একটা সেন্সে থাকতো না ঠিক। তিস্তা এরই সুযোগ নিয়ে সারাক্ষণ উজানের কাছে আসার চেষ্টা করতো। আর উজান নিজেও আর আটকাতো না মেয়েটাকে। আর কার কথা ভেবেই বা আটকাবে! কেউ তো নেই ওর জীবনে। শারদীয়া তো একটা ডিলিটেড চ্যাপ্টার। যার সব অস্তিত্ব শেষ উজানের কাছে। তাই কিছুটা জোর করেই তিস্তাকে এলাও করতো নিজের কাছে।
যাইহোক, এইভাবেই দিনগুলো কাটছিল। কিন্তু শারদীয়া আজও ঠিক মানতে পারেনি উজানের সাথে সম্পর্কটা এইভাবে শেষ! হয়তো উজান খুব রেগে ছিল সেইদিন, তাই ও কথা শোনেনি কিছু শারদীয়ার। কিন্তু এই কদিনে একবার হয়তো ভেবেছে শারদীয়ার দিকটা। এখন শারদীয়া গেলে ওর কথাগুলো শুনবে উজান। এইসব এলোমেলো চিন্তার ভিড়েই কয়েক সপ্তাহ বাদে সেদিন রাতে এসেছিল উজানের বাড়ি ও। তবে আজ সব বদলে গেছে যেন। কারণ আজ উজানের বাড়ির দরজা খুলেছিল একটা নতুন মুখ, তিস্তা। শারদীয়া সেই মুহূর্তে থমথমে মুখে জিজ্ঞাসা করেছিল,
——-” উজান কোথায়? আর আপনি কে? ”
এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আগেই উজান ভিতর থেকে টলতে টলতে দরজার কাছে এসে জড়ানো গলায় বলেছিল,
——–” কে এসেছে তিস্তা? আর বাড়ির সব মেডসরা কোথায়? তুমি কেন দরজা খুলছো? ”
কথাটা বলেই ও খেয়াল করেছিল শারদীয়াকে। আর কয়েক সেকেন্ড যেন স্থির হয়ে গেছিল। তারপর প্রচণ্ড রেগে বলেছিল,
——–” তুমি এখানে! কি করে এলে তুমি এখানে? সিকিউরিটি কোথায়! এইভাবে বাইরের লোকজনদের ভিতরে এলাও করে কি করে! ”
কথাটায় শারদীয়ার যেন ধাক্কা লাগলো একটা। মাত্র এই কদিনে ও বাইরের লোক হয়ে গেল! কথাটা ভেবেই শারদীয়া ভাঙা স্বরে বলে উঠলো,
——–” অমিতদার কোন দোষ নেই। ও আমাকে চেনে বলেই ভিতরে ঢুকতে দিয়েছে। আমার কথা আছে কিছু তোমার সাথে। ”
এই কথায় উজান সাথে সাথেই বললো,
——-” কিন্তু আমার তোমার সাথে কোন কথা নেই। আর এরপর আর আমার বাড়িতে এলে আই উইল কল দ্যা পুলিশ.. তুমি এমনিই আমার বাড়িতে থেকে অনেক কিছু করেছো। নট এনিমোর.. ”
কথাগুলো ভীষণ তীক্ষ্ণ স্বরে বললো উজান। কিন্তু শারদীয়া এবার আর চুপ থাকতে পারলো না, ভেজা চোখেই উত্তর দিল,
——–” আমি এতগুলো দিন এই বাড়িতে থাকলাম। আর তুমি আমাকে ওই একটা দিন দিয়েই জাজ করলে? সেদিন আমি কিছু করিনি উজান। আমার সাথে যেটা হয়েছে সেটা! ”
না, কথাটাকে ওর শেষ না হতে দিয়েই উজান বললো,
——-” আমার কোন ইন্টারেস্ট নেই তোমার এই বানানো কথাগুলোতে। যা হয়েছে সেদিন, সেটা আমি নিজের চোখে দেখেছি। এনিওয়েজ আমি তোমার সাথে এত কথা বলছি কেন! আসলে ভুলটা প্রথম থেকে আমারই। একটা রাস্তার মেয়েকে বাড়িতে তুলে আনা উচিতই হয়নি কখনো। নাও জাস্ট গেট লস্ট.. ”
কথাগুলো বলেই ও আর দাঁড়ালো না। চলে যাচ্ছিল ভিতরে। তবে সেই মুহূর্তে ওর পা টা হঠাৎ টলে গেল নেশার জন্য, আর তখনই তিস্তা ওকে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরলো। তারপর আস্তে গলায় বললো,
——” বি কেয়ারফুল বেবি..” , কথাটা বলেই উজানের গালে নিজের ঠোঁট ছুঁয়ে দিল শারদীয়াকে দেখিয়ে। তারপর উজানের হাত ধরে ওকে ঘরের ভিতরে নিয়ে গেল। শারদীয়া এই সময় যেন পাথরের মূর্তির মতন দাঁড়িয়ে ছিল এক জায়গায়। বুঝতে পারছিল মাত্র এই কদিনেই শারদীয়া আর কোথাও নেই উজানের জীবনে। তার জায়গায় উজান নতুন একজনকে পেয়ে গেছে। কথাটা ভাবতে ভাবতেই তিস্তা আবার এসেছিল দরজার সামনে। তারপর শারদীয়ার দিকে ওপর থেকে নিচ অব্দি তাকিয়ে বলেছিল,
——-” এখানে এসে আর লাভ নেই বুঝলে। নাও হি ইজ মাই ম্যান.. আর উজানের তো একটা ক্লাস আছে! ও কোনদিনই তোমাকে বিয়ে করতো না। জাস্ট কদিনের জন্য টাইম পাস করছিল। এখন টেস্টটা বদলে গেছে। আই মিন বেটার হয়েছে। অমি এখন এখানেই থাকি ওর সাথে। যাইহোক, গেট লস্ট..”
কথাটা শেষ করেই তিস্তা শারদীয়ার মুখের ওপর দরজাটা ভীষণ জোরে বন্ধ করে দিয়েছিল।

কিন্তু শারদীয়ার এই আওয়াজটা কানে লেগেছিল খুব। মনে হয়েছিল কেউ যেন খুব জোড়ে থাপ্পর মারলো ওর গালে অদৃশ্যভাবে। এতটা অপমান যে ও উজানের কাছে এসে পাবে কোনদিন, আসলে কখনো ভাবেনি। তাই হাত পা মুঠো হয়ে এসেছিল ওর। চোখ ফেটে উষ্ণ জল গড়িয়ে পড়েছিল গালে। বুঝেছিল ভালোবাসাটা তার মানে এক তরফাই ছিল! তাই এত সহজে এই দরজাটা বন্ধ হয়ে গেল আজ। উজান কোনদিন ছিলই না ওর সাথে। সবটাই বড়োলোকের খামখেয়ালিপনা; টাইম পাস।
কথাটা ভেবেই শারদীয়া আর দাঁড়ালো না। খুব জোড়ে পা চালিয়ে বেরিয়ে এলো রাস্তায়। সেই মুহূর্তে কান্নাটা যেন আর কিছুতেই আটকাতে পারলো না মেয়েটা। বুকের মধ্যে আসলে অজস্র কাঁচ এসে বিঁধছিল। তবে এই কান্নার মাঝেই ও মনে মনে বলে উঠলো ভীষণ কঠিন হয়ে,
——-” আর কখনো আসবো না তোমার কাছে উজান। আর কোনদিন না। আজ সব শেষ। ”

চলবে।