#স্বপ্ন_জুড়ে_তুমি
#পর্ব_১১
#সামসুন_নাহার
সময়টা মধ্যরাতের কাছাকাছি। আকাশে সুন্দর একথালি রুপালী চাঁদ। তার সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছে আকাশময় জুড়ে।তারারা উজ্জ্বল চকচক করছে।বাইরের আকাশ ও পরিবেশ চারপাশ মনোমুগ্ধকর।যেন পরিবেশের সবাই একে অপরের সাথে খেলা করছে।সেটা যে কাউকে মুগ্ধ করতে পারে।
প্রিয়শা বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে আর বারবার মোবাইলে সময় দেখে যাচ্ছে।সময় এখন এগারোটা বেজে সাতান্ন মিনিট।আর কয়েক মিনিট পর প্রিয়শার জন্মদিন। প্রিয়শার সময় যেন কাটছেই না।প্রিয়শা অপেক্ষা করছে কখন বারোটা বাজবে আর কখন তার ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা নিবে।প্রিয়শার মনে প্রশ্ন জাগলো আচ্ছা তাহমিদের কি মনে আছে প্রিয়শার জন্মদিনের কথা।হয়তো আছে তাই তো প্রিয়শা নিজের মনের কথা বিশ্বাস করে অপেক্ষা করছে।
নিজ নিয়মে সময় চলতে চলতে একসময় রাত বারোটা বেজে গেল।প্রিয়শা অধির আগ্রহে অপেক্ষা করছে।বারোটা এক,বারোটা দুই বেজে গেল কিন্তু কেউ প্রিয়শাকে তার জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালো না।প্রিয়শা নিজের মোবাইলে আবার সময় দেখল।এখন বারোটা তিন।প্রিয়শা মন খারাপ করে বিছানায় বসতেই হঠাৎ মোবাইল তার আপন শব্দে বেজে উঠল।প্রিয়শার মুখের হাসিও ফুটে উঠল।প্রিয়শা কল রিসিভ করতে মোবাইলের অপাশ থেকে ভেসে আসল,
“আজ আকাশ বাতাস খুব খুশি
সঙ্গে আছে তাদের চাঁদ-তারা
মনের আনন্দে হাসছে গাইছে
খুশিতে হয়েছে আত্মহারা
শুভ জন্মদিন আমার প্রিয়”
প্রিয়শা হাসল।ফাইয়াজ আবার বলল,
“শুভ জন্মদিন আমার প্রিয় রানি।জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা তোমাকে।”
প্রিয়শা খুশিতে আত্মহারা হলো।হেসে বলল,
“থ্যাঙ্কিউ। আমার জন্মদিনে মনে রাখার জন্য।”
“আজ আমার প্রিয় এর জন্মদিন ।তোমার জন্মদিন আর আমি মনে রাখব না তা কখনো হয় নাকি। আমি তো জানি তুমি এতক্ষণ ধরে আমার ফোনের অপেক্ষা করছিলে। ”
ফাইয়াজের কথা শুনে প্রিয়শা কিছুটা লজ্জা পেয়ে বলল,
“হুম।”
ফাইয়াজ মৃদু হাসল। হেসে বলল,
“তাহলে একটা গিফট দিতে হয়।বলো কি গিফট দেই বলো তো।”
প্রিয়শা কিছু না বলে চুপ করে আছে।ফাইয়াজ হেসে বলল,
“ঝটপট নিচে আসো তো।আমি অপেক্ষা করছি।”
প্রিয়শা তড়িৎ গতিতে বলল,
“কই তুমি।”
“তোমার রুমের নিচে রাস্তায়।”
ফাইয়াজের কথা শুনে প্রিয়শা দৌড়ে নিজের ব্যালকনিতে আসল।এসে নিচে তাকিয়ে দেখল ফাইয়াজ মোবাইল কানে ধরে তার রুমের দিকে তাকিয়ে আছে।দেখতে কি সুন্দর লাগছে সুন্দর হাসি মুখটা দেখে।তবে প্রিয়শা তড়িৎ গতিতে বলল,
“তুমি এত রাতে এখানে কি করছ।”
“তোমাকে দেখতে আসছি আর সারপ্রাইজ দিতে আসছি।তাড়াতাড়ি নিচে আসো।”
“পাগল হয়েছে এত রাতে নিচে যাব।কেউ দেখলে কি হবে।”
“আমি যদি এত রাতে তোমার বাসার নিচে আসতে পারি। তাহলে তুমিও নিচে আসতে পারবে।”
প্রিয়শা চিন্তায় পরে গেল।সে কিভাবে নিচে যাবে।তার আব্বু বাসায় আছে।আব্বু বাসায় না থাকলে যাওয়া যেত।কিন্তু আব্বু বাসায় থাকা অবস্থায় এত রাতে বাইরে গেলে অবস্থা খারাপ হবে।আব্বু যে পরিমান রাগী। কি শাস্তি দিবে তা প্রিয়শা জানে না।তবে অনেক খারাপ হবে আব্বু জানলে।প্রিয়শার ভাবনার মাঝেই ফাইয়াজ আবার বলল,
“কি হলো প্রিয় এত কি ভাবছ।”
প্রিয়শা ভয়ে ভয়ে বলল,
“আমি যেতে পারব না।”
“তুমি চেষ্টা করলে পারবে।জানোনা ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়।”
“আমার ইচ্ছা থাকলেও আমি পারব না।”
“আমি কিছু শুনতে চাই না তুমি…”
ফাইয়াজের কথার মাঝেই প্রিয়শার দরজায় ঠকঠক শব্দে প্রিয়শা ভয়ে কেঁপে উঠল। মোবাইল হাত থেকে পরে গেল।প্রিয়শা মোবাইল না কুড়িয়ে ভয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আবার দরজায় ঠকঠক শব্দ হলো।ভয়ে কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে শুরু করল। প্রিয়শা ভয়ে ভয়ে মোবাইল কুড়িয়ে কল কেটে দিয়ে দরজা খুলল।
দরজা খুলে আদিলকে দেখে প্রিয়শা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল।তৎক্ষনাৎ আদিলকে টেনে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা লাগিয়ে এক নিশ্বাসে বলল,
“তুই আমার রুমের সামনে কি করছিস।এত রাতে দরজায় ঠকঠক করছিস কেন?আমি ভয় পেয়ে গেছি।আমি ভাবলাম আব্বু এসেছে।বল কেন এসেছিস এত রাতে?”
আদিল নিজের আপুর ভয়ার্ত ঘেমে যাওয়া মুখ দেখে হাসল। আদিল হেসে প্রিয়শাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
“শুভ জন্মদিনে বুবু।”
প্রিয়শা হেসে বলল,
“তুই আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে এত রাতে এসেছিস।”
আদিল বোনকে ছেড়ে দিয়ে বলল,
“হুম।তোমার জন্মদিল আর আমি মনে রাখব না।তা হয় নাকি।”
আদিলের কথায় প্রিয়শা হাসল।আদিল আবার বলল,
“আমার প্রিয় ভাই।”
আদিল হাসল বোনের কথা শুনে।তার বোন সবসময় তার প্রিয়।তার মন খারাপের সঙ্গী। আদিল হেসে প্রিয়শাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“বুবু চোখ বন্ধ করো তাড়াতাড়ি। ”
“কেন চোখ বন্ধ করতে হবে।”
“উফ!বেশি কথা না বলে চোখ বন্ধ করো। ”
প্রিয়শা আর কোনো কথা না বলে চোখ বন্ধ করল।চোখ বন্ধ করতেই আদিল প্রিয়শার হাতে কিছু দিল।প্রিয়শা চোখ খুলল।চোখ খুলে হাতে একটি নতুন ঘড়ি দেখে অবাক হয়ে আদিলকে বলল,
“এটা কি ভাই।”
“ঘড়ি।আমার তরফ থেকে তোমার জন্মদিনের উপহার।”
“এটা আনার কি দরকার ছিল।”
আদিল মুখে হালকা হাসির রেখা টেনে বলল,
“আমার কাছে এই ঘড়ি কেনার টাকা ছিল তাই ঘড়ি কিনে নিয়ে আসছি।যখন আমার কাছে অনেক টাকা হবে তখন তোমাকে দামী উপহার দিব।”
“তুই ঘড়ি কেনার টাকা কই পাইছিস।”
আদিল কোনো কথা না বলে চুপ করে আছে।প্রিয়শা আবার বলল,
“আমি কিছু জানতে চেয়েছি বল।”
আদিল মাথা নিচু করে বলল,
“টিফিনের টাকা না খেয়ে কিনছি।আব্বুর কাছে চাইলে তো দিবে না।তাই টিফিনের টাকা দিয়ে।”
আদিল আর কোনো কথা বলল না।প্রিয়শা আদিলের দিকে তাকিয়ে আছে।তার ছোট ভাইটা তার জন্য টাকা জমিয়ে তার জন্মদিনের উপহার কিনে আনছে।প্রিয়শার চোখে পানি জমা হলো।প্রিয়শা আদিলকে জড়িয়ে ধরে বলল,
“অনেক বড় হয়ে গেছিস না।টাকা বাঁচানো শিখে গেছিস।তোকে আমি বলেছিলাম আমার জন্য এত কষ্ট করে উপহার আনতে।”
আদিল কোনো কথা না বলে শুধু হাসল।তখন প্রিয়শার মোবাইলে কল আসল।প্রিয়শা কল কেটে দিল।আবার কল আসলে আদিল প্রিয়শাকে জিজ্ঞেস করে বলল,
“কে আপু।এত রাতে কল দিচ্ছে।”
প্রিয়শা একটু হাসার চেষ্টা করে বলল,
“তাহমিদ।”
“তো ধরো কল। কেটে দিচ্ছো কেন?”
“বাইতে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে নিচে যেতে বলছে।”
আদিল অবাক হলো।পরক্ষণেই নিজেকে সামলিয়ে বলল,
“এত রাতে।সুন্দর ব্যাপার তো।যাও। এত রাতে কষ্ট করে আসছে।এত করে বলছে। ”
আদিলের কথা শুনে প্রিয়শা বিরক্ত হয়ে বলল,
“যাও বললে তো আর যাওয়া যায় না।বাসায় আব্বু আছে জানলে কি হবে।আমি যাব না বাবা।”
আদিল প্রিয়শাকে অভয় দিলে বলল,
“তুমি যাও। আমি পাহারা দিচ্ছি। আব্বু উঠলে আমি তোমাকে ডাক দিব।তখন চলে আসো।যাও এখন।”
প্রিয়শা ভীতু কন্ঠে বলল,
“আমার ভয় লাগছে।”
“যাও কিছু হবে না।”
প্রিয়শা ভয় ভয় করে বাইরে গেল।আদিল পাহারায় রয়েছে।প্রিয়শা বাইরে গিয়ে দেখল ফাইয়াজ মোবাইল কানে ধরে তার রুমের দিকে তাকিয়ে আছে।হয়তো আবার কল দিচ্ছে।প্রিয়শা ফাইয়াজের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলল,
“তাহমিদ।”
ফাইয়াজ হাসি মুখে ঘুরে তাকালো।সেই হাসি দেখে প্রিয়শা মুগ্ধ হল।প্রিয়শা যতবারই ফাইয়াজের হাসি দেখে ততবারই মুগ্ধ হয়।কি সুন্দর তার তাহমিদের হাসি।জ্যোৎস্নাময় রাতে সেই হাসি যেন আরও সুন্দর রুপ নিয়েছে। দেখলে শুধু দেখতে মন যায়।ফাইয়াজ হেসে বলল,
“আমি জানতাম তুমি আসবে।আমি ডাকব আর তুমি আসবে না তা কখনো হয় নাকি।”
প্রিয়শা হেসে বলল,
“বেশি জানো।আমি তো এমনি নিচে আসছি।”
প্রিয়শার কথা শুনে ফাইয়াজ কন্ঠে দুষ্টুমির রেশ ধরে বলল,
“তাহলে তোমাকে কিডন্যাপড করে আমার বাড়িতে নিয়ে যাই।”
ফাইয়াজের কথা শুনে প্রিয়শা উচ্চস্বরে হাসল।ফাইয়াজ প্রিয়শার হাসির দিকে তাকিয়ে মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় মোহময় কন্ঠে বলল,
“এভাবে হাসবে না প্রিয়।আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারব না।তোমার এই মনোমুগ্ধকর হাসি আমাকে নিয়ন্ত্রনহীন করে দেয়।ইশ!বুকে লাগে।”
প্রিয়শা তৎক্ষনাৎ লজ্জা পেয়ে হাসি থামিয়ে মুখ গম্ভীর করে বলল,
“কি জন্য এসেছ তাড়াতাড়ি বলো।আব্বু জেগে উঠলে খারাপ হবে।”
ফাইয়াজ হেসে বলল,
“চোখ বন্ধ করো।”
প্রিয়শা তাই করল।প্রিয়শা চোখ বন্ধ করতেই ফাইয়াজ দুই হাটু গেড়ে বসে প্রিয়শার হাত ধরে বলল,
“তুমি কি আমার হবে আমার ভালোবাসার প্রিয়।এই জ্যোৎস্না রাতে আকাশ-বাতাশ ,চাঁদ-তারা সবাইকে সাক্ষী রেখে আমি তোমার হতে চাই।আজীবন তোমার হয়ে থাকতে চাই প্রিয়।চাইলেও যে কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না।হবে আমার সুখ-দুঃখের সঙ্গী। হবে আমার প্রিয়তমা। হবে আমার বৃদ্ধ বয়সের কথা বলার সঙ্গী।”
ফাইয়াজ হাত ধরতেই প্রিয়শা চোখ খুলেছিল।ফাইয়াজের কথাগুলো প্রিয়শা মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় তাকিয়ে ছিল।খুশিতে আঁখিদ্বয়ে জল টলমল করছে।এই পানি কোনো দুঃখের কান্না না।এই কান্না সুখের।অতীব খুশির কান্না।সবকিছু যেন অবিশ্বাস্য।সুখেরা যেন হাতে ধরা দিয়েছে। প্রিয়শা কথা বলার জন্য শব্দ খুঁজে পাচ্ছে না।তার শব্দভান্ডারে যেন আজ শব্দ নেই।সব হারিয়ে গেছে তাহমিদ নামক ব্যক্তিতে।ফাইয়াজ প্রিয়শার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
প্রিয়শা শুধু মাথা উপর-নীচ করল।যার অর্থ সে রাজি।সে রাজি তার তাহমিদের বৃদ্ধ বয়সের সঙ্গী হতে।সে রাজী তার তাহমিদের প্রস্তাবে।
ফাইয়াজ প্রিয়শার উত্তর শুনে হাসল।পকেট থকে একটা ডায়মন্ড এর রিং বের করে প্রিয়শার অনামিকা আঙ্গুলে পড়িয়ে দিল।হাতে একটা গাঢ় করে চুমু খেল।ফাইয়াজ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলল,
“এভাবে আমার পাশে, আমার সঙ্গে থেকো।হারিয়ে যেও না কোথাও।আমি তোমাকে আগলে রাখব আমার সর্বোচ্চ দিয়ে। তোমাকে ছাড়া আমি ভালো থাকব না প্রিয়।তুমি আমার ভালো থাকার ঔষধ।”
প্রিয়শা কোনো কথা না বলে ফাইয়াজকে জড়িয়ে ধরল।চোখ থেকে পানি পরছে।সুখের আনন্দের পানি পরছে।প্রিয়শা বলল,
“আমিও থাকতে চাই তোমার সাথে আজীবন। তোমার হাত ধরে হাঁটতে চাই জ্যোৎস্না ভরা রাতে।তুমিও যে আমার ভালো থাকার ঔষধ। তোমাকে বিনা আমি বাঁচতে পারব না তাহমিদ।”
“আমাদের সব স্বপ্ন পূরন হবে।আমাদের কেউ আলাদা করতে পারবে না।”
কিছুক্ষণ নিরাবতায় কাটল সুখের মুহূর্ত। প্রিয়শা ফাইয়াজকে ছেড়ে দিয়ে নিজের অনামিকা আঙ্গুলের দিকে তাকালো। সেখানে নিজের ভালোবাসার মানুষের উপহার।প্রিয়শা আংটি দেখে বলল,
“আমার অনেক পছন্দ হয়েছে।খুব সুন্দর হয়েছে।”
“আমার দেওয়া সবকিছু তো তোমার কাছে সুন্দর লাগেই।আচ্ছা বলো তো আমার কোন জিনিসটা তোমার পছন্দ না।”
ফাইয়াজের কথা শুনে প্রিয়শা হাসল।হেসে বাচ্চাদের মত ঠোঁট ফুলিয়ে বলল,
“এই যে এখন বাড়ি যেতে হবে এটা।এটা আমার পছন্দ লাগছে না।মন চাচ্ছে তোমার সাথে তোমার হাত ধরে এই জ্যোৎস্না রাস্তায় হাঁটি।উপভোগ করি আজকের সুন্দর দিনের একটি সুন্দর রাত।”
ফাইয়াজ প্রিয়শার কথা শুনে হাসল।হেসে বলল,
“ঠিক আছে চলো।আজ আমরা দুইজনেই রাস্তায় হাতে হাত ধরে হাটি।”
“হুম।তোমার সাথে যাই আর আব্বু আমার অবস্থা শেষ করুক এটা চাচ্ছ তুমি।”
“আচ্ছা এখন এই ইচ্ছেটা পূরণ না হলেও আমরা বিয়ের পর অবশ্য পূরণ করব।তখন কেউ আর আমাদের বাধা দেওয়ার জন্য থাকবে না।”
প্রিয়শা হেসে বলল,
“আচ্ছা ঠিক আছে। এখন যাই আমি আদিল আব্বুর রুমের সামনে পাহারা দিচ্ছে।”
“আচ্ছা আজ যাচ্ছ যাও।তবে কালকে ভার্সিটি ছুটির পর আমরা ঘুরতে যাব।কালকে তুমি আমার সাথে যাবে। ঠিক আছে।”
“আচ্ছা যাব।কালকে বিকাল পর্যন্ত আমার সময় তোমার হাতে দিলাম জাহাপনা।”
প্রিয়শার কথা শুনে ফাইয়াজ হাসল। প্রিয়শা বলল,
“আসছি।”
প্রিয়শা বাড়ির দিকে যাওয়া শুরু করল। তখন ফাইয়াজ প্রিয়শার উদ্দেশ্যে বলল,
“প্রিয় শোনো একবার।”
প্রিয়শা পিছনে ঘুরল।ফাইয়াজ প্রিয়শার কাছে এসে প্রিয়শার কপালে একটা গাঢ় চুমু দিয়ে মোহময়ী আদুরে স্বরে বলল,
“প্রিয় আমার সকল চিন্তার দূর করার ঔষধ হয়ে আসো।বেশি অপেক্ষা করিয়ে দিও না।অপেক্ষা যে খুব খারাপ জিনিস।অপেক্ষা নামক জিনিসে আমি ভয় পাই।তোমাকে নিয়ে আমার ভয় দূর করে এসো আমার নীড়ে।”
“এই প্রিয় তোমার ছিল আর তোমার থাকবে।”
প্রিয়শা ফাইয়াজের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকল।কোনো কথা না বলে বাড়ির ভেতরে চলে গেল।প্রিয়শা বুঝতে পারল ফাইয়াজের মনে খুব ভয় কাজ করছে তাকে নিয়ে।তাদের পূর্ণতা নিয়ে।
……………………………..
“উফ!মা ঘুমাতে দাও তো।ফ্যান চালু করে দাও।গরম লাগছে অনেক।এত সকালে কেউ ঘুম থেকে উঠে।”
হালকা ঘুমে থাকা অবস্থায় রাগ নিয়ে প্রিয়শা উপরক্ত কথাটি বলল।বলার কিছুক্ষণ পর ফ্যান না চালু হওয়ায় গরম লাগা শুরু হলো।প্রায় প্রতিদিন এই কাহিনী চলে। প্রিয়শা বুঝল তার মা চলে গেছে রুম থেকে প্রিয়শা বিরক্তি নিয়ে উঠল। উদ্দেশ্য ফ্যান চালু করে আবার ঘুমানো।প্রিয়শা উঠে ফ্যান চালু করে পিছনে ঘুরে নিজের বিছানায় একজনকে বসা অবস্থায় দেখে অবাক হয়ে গেল।নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
#চলবে………………….